Rj Nilanjan

Home
India
Uttarpara
Rj Nilanjan

08/12/2024

মুখে বরফ পুরে, কড়মড় করে চিবিয়ে, কী গান গাইলেন প্রভাতী মুখোপাধ্যায়, সেও এক দৃশ্য।

পুরো ভিডিওটা কোথায় দেখবেন, সেটা কমেন্টে লেখা রইলো।

08/12/2024

সংখ্যা কিস্যু নয় এইটা বুঝে গেছি।শুধু বুঝেছি মানুষ হিসেবে ভালো হবার চেষ্টা করতে হবে।যে অজস্র ভুল ত্রুটি করে এসেছি তা শুধরে নিতে হবে।লোকে যাতে এটা বলতে পারে, এই মানুষটা নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেছিলো।

লকডাউনে সবাই যখন পোস্ট বাড়াচ্ছে, আমি কমিয়েছিলাম।প্রায় বন্ধও করেছিলাম।অনিয়মিত হয়েছিলাম।মনের মধ্যে কী সাংঘাতিক টানাপোড়েন চলছিলো, অবসাদ চলছিলো বোঝানো যাবে না।বাইরে থেকে দেখে সবকিছু তো বোঝানো যায় না।তাই মনডে মোটিভেশান এর মতো সফল ভিডিও দিই নি।অফিসের চাপে কতসময় ভিডিও দেওয়া হচ্ছিলো না তখন।এখনো সময় পাই না।অল্প সময়ে অনেকের লেখা পড়ি ভালো লাগে।

এ কদিন আবার ভিডিও দিচ্ছি।কিছুটা পদ্মপাতায় জল হয়ে।মানে এই মানসিকতা নিয়ে, যে আমার কাজ পোস্টটুকু করা ব্যাস।আর কিচ্ছু নয়।বাকি আমার ছাত্রছাত্রী, আমার ছোট্ট পরিবার, এইটুকুর মধ্যে থেকে যাওয়া খুব সাধারণ মানুষ আমি।মাঝে মাঝে কথা বলতে ইচ্ছে হলে এখানে লিখি বা বলি।এটুকুই এর প্রয়োজনীয়তা।এর মাঝে এত মানুষ পাশে আছেন, এটা আনন্দের।কেউ রাস্তায় দেখা হলে, হাত নাড়লে মনে হয় এটাও তো আমার ছোট্ট পরিবারের একটা অংশ, যারা আমার অনিয়মিত পোস্টিং এ মুখ ফিরিয়ে নেন নি, লেখা দাওনি বলে চলে যান নি, পাশে থেকেছেন, আছেন, মেসেজ করেন, ক্লাস করার জন্য জানতে চান, বাড়ির খবর নেন।এদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা অপরিসীম।

পাশে থাকবেন এটুকুই বলার।আমি এই সংখ্যাটা নই।কোনো কেউকেটা নই।ভক্তকূলশিরোমণী নই।বিরাট কোনো পারফর্মার বা ক্রিয়েটর নই।আমি খুব সাধারণ একজন, পাশের বাড়ির একজন।যে প্রতিদিন শিখতে চায়, প্রতিদিন আগের দিনের ভুলটা শুধরোতে চায়।ব্যাস এটুকুই।আপনি পাশে আছেন, এটাই আমার পরম পাওয়া...

04/12/2024

সেজেগুজে বিয়ে : ৪ঠা ডিসেম্বর
কাগুজে বিয়ে : ১৪ই ফেব্রুয়ারী

তখন কী আর ভেবেছিলুম, এ হাসি আর হাসতে পারবো না 😜😜🤣🤣

যাই হোক।আমাদের বিয়ে বড় দু:খের বিয়ে।সেখানে প্রি ওয়েডিং ফটোশ্যুট হয় নি। প্রি ওয়েডিং ছবি না তুললে শাস্ত্রে সেটাকে বিয়ে বলে গন্য করে না।তাই আজও মনে করি আমাদের বিয়েটা ঠিক শাস্ত্রসম্মত নয়।টাকাপয়সা জমলে প্রি ওয়েডিং ফটোশ্যুট করে আবার বিয়ে করবো।অবশ্য যদি শ্রাবন্তী আর অনির্বাণ রাজি থাকে।আমি শ্রাবন্তী কে, গিন্নি অনির্বাণ কে।

আমাদের বিয়েতে সঙ্গীত বা হলদি হয় নি।পাতি গায়ে হলুদ হয়েছিলো।সঙ্গীত না থাকলে বিয়ে কুলীন হয় না।তাই আমাদের বিয়ে ভারি মধ্যবিত্ত।সেখানে সকালে নাক ডাকা থামিয়ে জল সইতে যাওয়া, তারপর আনন্দনাড়ু।পাড়ার স্টুডিওর ক্যামেরাদাদা ছবি তুলেছে।তাই লাল ঘষা মেঝে ছবিতে আছে, পিছনে প্ল্যাস্টিকের চেয়ার, কম আলো, আলনা থেকে ঝোলা জামাকাপড় ইত্যাদি।হেব্বি ম্যাড়মেড়ে। সাধে কী আর আমি এখনকার বিয়েগুলোকে হিংসে করি।শালা, কি দারুণ দারুণ সব ফটো তোলে রে ভাই।

গিন্নি মাঝেসাঝে বলে, তোমার হাফ বিয়ে আমার সাথে।বাকি হাফ ওই মানুষটার সাথে যে মালাবদলের মালা টা তোমার মাথা থেকে টেনে পরিয়েছে।ওই লোকটাকে খুঁজে তার সাথে থাকো!! কী জ্বালা।তুমি পুরো মালাটা পরাতে পারোনি তাতেও আমার দোষ।সাধে কী আর বিয়ে করতে ভয় পাই।নইলে যা পড়াশোনা করেছি, তাতে তিনচারটে বিয়ে করে ফেলা উচিত ছিলো।

আমার খুব ইচ্ছে ছিলো থিম করে বিয়ের প্যান্ডেল হবে।নলবনে রিসেপশান, ব্যুফে তে বিরিয়ানি।বাস্তবে হলো, বাড়ির পাশের মাঠে সরস্বতীপুজোর প্যান্ডেলের কাপড় খাটিয়ে খাওয়াদাওয়া।কারন আমার বাবার ব্যাঙ্কের পাসবই অনুপম খেরের মাথার মতো,ফাঁকা ,পুরো ফাঁকা। বিয়ের সময় আমি সাড়ে বাইশ, সুতরাং টাকা জমানোর প্রশ্নই নেই।শেষমেশ আমার সাইকেল, বাবার ভুঁড়ি, নিজেদের বাড়ি বন্ধক দিয়ে মাটন রান্না হলো।সাথে মিনারেলের বোতল।আসানসোলে তখন প্ল্যাস্টিকের গেলাসে কলের জল দেওয়া হয়।মিনারেল দেখে লোকে চমকে চমচম।বললো, ছেলে দুবাই এ কাজ করে বলে লপচপানি দেখাচ্ছে।আমরা তার পর ই এম আই করে আজও বোতলের দাম মেটাচ্ছি।

এই হলো আমাদের বিয়ের আংশিক গপ্প।যারা জিজ্ঞেস করছেন গিন্নি কেন দু রঙের শাড়ি, এক গোত্রতে বিয়ে কেন...বৌদির হাতে সাদা শাঁখা নেই কেন? তারা সমস্ত প্রশ্ন লিখতে থাকুন, পরের পোস্টে সব্বার জবাব দেওয়া হবে...

30/11/2024

প্রভাতী মুখোপাধ্যায়। এক অক্লান্ত সুরসাধিকা। বয়স যার কন্ঠে থাবা বসাতে পারেনি। সুরের সাম্রাজ্যে এতগুলো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যার নিষ্ঠা ও পরিশ্রম তরুন তরুনীদেরও হার মানাবে। একের পর এক সম্মান, রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পাওয়া পুরষ্কার, মুকুটে একের পর এক পালক। তাও কী অসম্ভব বিনয়ী। অহং তাকে স্পর্শ্ব করে না।

এরকম মানুষদের সাথে গল্প করার সুযোগ পেলে মনে হয়, নিজেরা কত অল্প জানার মোহে কত অহং করি। আর এইসব মানুষরা যারা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য পেয়েছেন, উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাহেবের কাছে তালিম পেয়েছেন, তারা নিরন্তর শিখিয়ে যান, তুমি আসলে কেউ নও, যদ্দিন পারো সুরের, শিল্পের বা সৃষ্টির ঈশ্বরের কাছে নতজানু হয়ে থেকো, প্রার্থনা কোরো, যেন মতিভ্রমে অহং না করে বসি।

পুরো আড্ডাটা কোথায় পাবেন, কমেন্টে জানালাম...

।। নীলাঞ্জন ।।

29/11/2024

শীতকালে

নিজের যে ছবিগুলো দেখলে ভয় পেয়ে যাই...

28/11/2024

এক নম্বর হওয়াটা সমস্যার নয়। সমস্যার হলো এক নম্বরে টিকে থাকা।

এক নম্বর হতে গেলে প্রথমেই যেটা লাগে, একটা টিম। দলগত প্রচেষ্টা। সব্বার শক্তি দুর্বলতা জানা। এবং শক্তি অনুযায়ী কাজ করা। বেশিরভাগ টিম ভালো কাজ করে না, কারন তারা অনেক ছোট ছোট উপদলে ভাগ হয়ে থাকে। এ ওর পিছনে কথা বলে, পিছন থেকে ছুরি মারা চলে। একে অন্যের উপর বিশ্বাস করে না।

ছবির এই টিম ভালো কাজ করে, কারন এখানে বস, বসিজম দেখায় না, বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করে দায়িত্ত্ব ছাড়ে, অভিভাবকের মতো আগলে রাখে, নিজের দক্ষতা বা এক্সপার্টাইজের অহং দেখায় না। বরং সেটাকে কাজে লাগায়। এগিয়ে দিয়ে বলে, তিনি আছেন সামলানোর জন্য। এতে টিমের কনফিডেন্স বাড়ে।

প্রমোশনের জন্য লড়াই হয়, সুস্থ লড়াই, তবে অন্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে নয়। একজনকে খারাপ প্রমান করে অন্যজনকে ভালো বলা হয় না এখানে। কেউ কোথাও আটকে গেলে অন্যজন এগিয়ে আসে সাহায্যের জন্য।

গালিগালাজ হয়, বকুনি খাওয়া হয়, লেগ পুলিং খুব হয়। লেফট ব্রেন রাইট ব্রেন এর কম্বিনেশান আছে এখানে।এই দলটা একনম্বর থাকে কারন এখানে কাজ হয়, কাজের সম্মান দেওয়া হয়। গুণের রেসপেক্ট করা হয়। ক্রেডিট নিয়ে নেওয়া হয় না। এখানে বসকে ভয় পায় না কেউ, সমস্যায় পড়লে সাহায্য চাইতে যায়। কাজের বা কাজের বাইরেও। কেউ পড়ে গেলে, চেষ্টা করে সবাই, যাতে সে উঠে দাঁড়ায়।

পর পর দু সপ্তাহ সিনেমার চ্যানেলগুলোর মধ্যে জি বাংলা সিনেমা এক নম্বরে। আবার। কারন আমরা সব্বাই একটা জয়ী দলের সদস্য। শুধু নম্বরে জয়ী নয়, ভদ্রতায়, মানসিকতায়, সহমর্মিতায়, চেষ্টায়।

আমি ভাগ্যবান এরকম একটা দক্ষ টিমের মেম্বার। এরকম ভিশনারি লিডারশিপের সান্নিধ্যে রয়েছি।

22/11/2024

যন্ত্রণা আসলে গয়নার মতো।আবৃত্তি, সঞ্চালনা বা কথা বলতে শিখতে আসা ছাত্রছাত্রীদের মাঝেমাঝেই বলি।যন্ত্রণা থাকলে সেটা পেরিয়ে শেখা যায়...এটা নীলাঞ্জনের জীবন থেকে শেখা, মাঝে মাঝেই বলি ক্লাসে।

বাণী বসুর সাথে যখন কথা হলো, তিনিও বলছিলেন, "লেখকের জীবনে, শিল্পীর জীবনে যন্ত্রণা থাকবেই।"তার পরে তিনি বলছিলেন তার জীবনের কথা।লেখার কথা।আরও কত গল্প, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সুচিত্রা ভট্টাচার্য, বিমল কর, তাদের জীবনের নানা কাহিনী।আজকে ইতিমধ্যে প্রকাশিত দ্বিতীয় পর্বে দেখবেন।সময় কোথা দিয়ে কেটে যাবে, বুঝবেন না।

একটা অভিজ্ঞতা শুনে মনে ছবিটা যেন দেখতে পারলাম।বাণী বসু বলছিলেন...

" 'মোম' টা যখন লিখতে শুরু করেছি তখন সন্ধ্যে সাড়ে ছটা হবে, সারারাত কিভাবে কেটে গেলো জানি না।সকাল ছটা নাগাদ হাত থেকে কলমটা পড়ে গেলো।লেখা শেষ।হাতও চলছে না"

মনে মনে ভাবছিলাম, এই হলো ডেডিকেশান।এই হলো স্পৃহা।এই হলো ডুবে যাওয়া, সৃষ্টিতে।এই মনোসংযোগ কবে পাবো ঠাকুর...

পর্বের লিংক কমেন্ট বক্সে দিলাম।আমার বিশ্বাস দেখলে ভালো লাগবে আপনার।

|| নীলাঞ্জন ||

20/11/2024

জীবনের গোলকধাঁধা টা বড্ড জটিল।কিছু কানাগলি তে আটকে গেলে, জীবন যেন থমকে যায়।তখন চেনা কাজ ভুল হল।চেনা সম্পর্ক অচেনা হয়।চেনা পথে ধাঁধা লাগে।চেনা কথা আটকে যায়।

তখন একটা রি সেট বাটন লাগে।নিজের জন্য সময় লাগে।তাড়াহুড়োর বদলে পরিকল্পনা লাগে।উতলা মন শান্ত করতে কিছুটা ডুবে যাওয়া লাগে,নিজের ভিতরে।

জাল কাটিয়ে বেরোতে হয়।চিন্তা সরিয়ে বেরোতে হয়।বন্ধ দরজাটা খুলে, অন্ধকার থেকে আলোয় বেরোতে হয়।ইচ্ছে করে না, মন সায় দেয় না, তবু নিজেকে হিঁচড়ে টেনে বের করতে হয়।এই বের করে আনা টা নিত্যদিনের লড়াই।হার থেকে জিত এ, বন্ধ দেওয়াল থেকে খোলা হাইওয়ে তে...

|| নীলাঞ্জন ||

#আমসত্ত্ব

18/11/2024

হ্যাপি বার্থডে সুপারস্টার...

বাবার পায়ের আওয়াজ শুনলে রিমোট বন্ধ করে বই নিয়ে বসে নাটক করতে জানে।

ঠাম্মার মোবাইল নিয়ে ঘরের দুর্লঙ্ঘ কোনে লুকিয়ে পড়তে জানে।

ফাঁকিবাজি শিল্প হলে, ইনি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি।

স্কুলে অজস্র গার্লফ্রেন্ড।

বাড়িতেও বাবা মা কে ইজিলি পটিয়ে ফেলেন।

দিদির জন্য জান দিয়ে দেন।অথচ দিদিই সারাদিন তাকে জ্বালাতন করেন।

এমনিতে হ্যাংলা নন, কিন্তু জন্মদিনে ডাডলি হয়ে যান, মানে গিফট হ্যাংলা।

পাপা তাকে বাগে পেলেই চটকে দেন...

নেহান ❤️❤️❤️

15/11/2024

বাণী বসু...যার লেখা পড়ে অনুভূতিরা অক্ষরের রূপ নেয়।

ছেলেবেলার একুশে পা, মৈত্রেয় জাতক বা অষ্টম গর্ভ যারা পড়েছেন তারা জানেন, বাণী বসু, একটা নেশার নাম।মহাভারতের নানা সূত্রকে যিনি খুঁজে বের করেছেন আপন নিয়মে। তার সাথে কথা বলার সুযোগ পাওয়াটা, একটা গল্পের মতো, ঘোরের মতো।তার লেখা উপন্যাস পড়ার মতোই, সে ঘোর থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগে।

লেখক বা লেখিকা কী করে তৈরি হয়? কেমন করে গড়ে ওঠে উপন্যাস? কেমন করে তৈরি করতে হয় রূপক।যারা লিখতে পারেন, তারা ভাবেন,"আরে, এ তো খুব সোজা"। কিন্তু যারা পারেন না, যারা শিখতে চান, বা যারা কৌতুহলে জানতে চান, তাদের কাছে সেই অজানার বাক্স খুলে বসলেন দিদিমণি।

শুক্রবার রাত নটায় পর্ব আসার কথা।তাড়াহুড়ো করে আগেভাগে রিলিজ করে দিলাম।তর আমারও সইছিলো না।আগে রিলিজ করলে কম মানুষ দেখবেন, অ্যালগোরিদম কীভাবে কাজ করবে, এসব ভেবে দেখলাম না।শুধু ভাবলাম, যারা বোঝার, তারা বুঝবে, যারা দেখার তারা দেখবে।

আমাকে জানাবেন, কেমন লাগলো এ পর্ব।লিংক কমেন্টে দিয়ে রাখলাম।

|| নীলাঞ্জন ||

08/11/2024

হৈমন্তী শুক্লাকে "প্রেম" নিয়ে কেন প্রশ্ন করেছেন? তাতে ইন্টারভিউটা একটু লঘু হয়ে গেলো ... এমন একটা কমেন্ট এসেছিলো ভিডিওর নিচে।

তাকে উত্তর লিখবো কী লিখবো না ভাবতে ভাবতে রিওয়াইন্ড করে দেখছিলাম সেই দিন টাকে। দিদির কাছে হুট করে পৌছে যাওয়া। তখন বেলা ১১টা। কাজ কম্ম শেষ করতে করতে প্রায় ১টা, বা তার বেশিই হবে। ও মা, রান্নাঘর থেকে থালা করে আসছে রাধাবল্লভী, তরকারি, মিষ্টি। কখন এসব অ্যারেঞ্জ করলেন তিনি?

যখন আমরা পৌছেছি, তখন কাউকে গান নিয়ে কিছু বোঝাচ্ছিলেন, হয়তো শেখাচ্ছিলেন।সেটা শেষ করে, ইন্টারভিউ নিয়ে টুকটাক কটা কথা বলে, সেজে গুজে বেরিয়ে এলেন।তার পর টানা ইন্টারভিউ। আর শেষ হতে না হতেই এত আয়োজন।

আমার টিমের বাচ্চাগুলো অবাক। তারকার বাড়িতে, এত বড় শিল্পীর বাড়িতে পাত পেড়ে খাবার সুযোগ, ক জনের হয়? আর কোন ফাঁকে কাকে দিয়ে এসব আনালেন, অলক্ষ্যে গৃহকর্ত্রী কিভাবে সামলালেন, সেটাই ধোঁয়াশা। এই বয়েসেও এত কিছু নিখুঁত ভাবে সামলান কিকরে।

সব্বার সাথে হাসিমুখে কথা বলা তার গুণ। জেনারেশান গ্যাপ তাকে স্পর্শ্ব করে না। সম্মান দেওয়া নেওয়া তো থাকবে, কিন্তু "প্রেম নিয়ে প্রশ্ন আমাকে করা হলো কেন", এই মহাজাগতিক গাম্ভীর্য বা ছদ্ম আবরণ তার কোনোদিনই ছিলো না। তাই তিনি আপন সব্বার।

মনে হয়েছিলো সেই যিনি কমেন্ট করেছিলেন, তাকে বলি, দ্বিতীয় পর্বের শেষের প্রশ্নটা আমি ওঁকে করিনি, উনি আমাকে করেছেন। প্লিজ একবার শুনবেন।এখানে জানাবেন, কী ছিলো সেই প্রশ্নটা।

আজ রাত নটায় দ্বিতীয় পর্ব।

07/11/2024

সে এক নিকষ কালো রাত।সেখানে পথজুড়ে আলো।

গ্রামের কালীপুজো দেখার এক অদ্ভুত শান্তি আছে।অজস্র ঝিকিমিকি টুনি দিয়ে চোখ ধাঁধানো নেই, কিন্তু মোটা মোটা মোমবাতি দিয়ে মন্ডপ আলো করা থাকে।ছায়া ছায়া রাস্তা পেরোতে হয় হাতের মোবাইল টর্চ জ্বালিয়ে।নেই এর লিস্ট টা লম্বা, মোড়ে মোড়ে বড় বক্স নেই, সবার সে সামর্থ্যও নেই।কারুর কারুর বাজনায় ভেসে আসে,"মায়ের পায়ে জবা হয়ে", বা "আমায় একটু জায়গা দাও মায়ের মন্দিরে বসি।" সব আওয়াজ কানে ধাঁধা দেয় না।শব্দ ব্রহ্মের দায়িত্বে একমাত্র ঢাক আর তার সঙ্গী কাঁসর।ঢাকিদের সতর্ক থাকতে হয়, বাজনা যেন বাদ না পড়ে।

সেইসব গ্রামে আছে ছোট ছোট দাওয়া।সব ঠাকুরেরই কাঠামো এক।রূপ এক।অল্প টাকায় তৈরি মূর্তি,কিন্তু মায়ের রূপ তাতে কমে না।রাত বাড়লে পরিবারের সবাই মিলে ফল কাটা বা পুজোর জোগাড়।ভাসানের আগে দেবীর বরণ।

সেই ভাসানে কোটি কোটি মানুষ নেই।মেরেকেটে হাতে গুনে এ বাড়ি ও বাড়ি মিলিয়ে শখানেক বা তাও হয়তো নয়।বিসর্জনের আগে কয়েকটা বাজি ফাটে।রাস্তায় টুনির বাহার নেই, তাও সেই বাজির আলো অনশকার চিরে দেয়।দেবীর পিছনে সেই আলো তৈরি করে এক অপরূপ দৃশ্যকল্পের।

যেখানে আড়ম্বরের আগে আন্তরিকতা থাকে, যেখানে বৈভবকে ঢেকে দেয় সবার চোখে মুখে ঊৎসাহ।এই প্রতিটা মূহুর্ত দামী, প্রতিটা পর্ব ঊদযাপনের।"এই দিনটা অল্প করে দেখি কাল তো শপিং মল আছেই" ভাবা জগৎ নয়।সবাই এই মুহুর্তের সবটুকু চেটেপুটে দেখে নিতে চায়।কেউ দেখে বাঁধানো ঘাট দিয়ে দেবী নামানোর আগাম প্রস্তুতি, কেউ হাঁ করে দেখে তুবড়ি, কেউ দেবীর দিকে করজোড়ে।জটিল কুটিল এই পৃথিবীতে কিছু আপাতদৃষ্টিতে সরল সাদা মানুষ।সেখানে ভাসানের শেষবেলাতে সবার মনের মধ্যে দেবী প্রপন্নার্থী হরে, আপনিই সব্বার ঊর্ধ্বে, আপনিই পরম, তাই তাকে দেখে দেখে আঁখি না ভরে।

নিকষ কালো অন্ধকারের মাঝে বিরাট রূপসাগর থাকে।ঢাক বেজে চলে তালে তালে।সব্বাই মুগ্ধ হয়ে দেবীর রূপলাবণ্যে মোহিত।কে বলে কালীর রং কালো।জগতের সব কালীমা শুষে নিয়ে তিনি আলো হয়ে থেকে যান।

|| নীলাঞ্জন ||

04/11/2024

কী পেলাম না, সেটা নিয়ে দু:খের সময় অফুরান।কী পেলাম, সেটা নিয়ে ভাবার সময় কই।

একটা সময়ে আপনি গুনতে থাকেন।না পাওয়ার লিস্ট টা।কে আপনার ক্ষতি করেছে, কে আপনাকে ঠকিয়েছে, কোন প্রাপ্য সন্মান বা অর্থ থেকে বঞ্চিত হলেন, কিংবা কি হবার ছিলো কী হলেন।কী হলো না সেটা নিয়ে আমাদের জীবনের বেশি সময় বরাদ্দ।কী হলো, কী হয়েছে, সেটা সেলিব্রেটের সময় কই?

তাই কমদামি জামাটায় হাসি বরাদ্দ হোক।একজন বন্ধুকেই 'তুই সেরা' বলাটা থাক।ঘরের কোনটা আপন হোক, গাদাগাদি ভিড়ের মাঝে জানালার ধারের সিটটা ভরিয়ে দিক একরাশ খুশি।যে জীবনটা রয়েছে, যে কাজটা পারছেন, যে হাসিমুখ শান্তি দিচ্ছে, সেই পাওয়াটাও গুরুত্ত্ব পাক।

না পাওয়ার সমুদ্রে, পাওয়াটা হয়ে উঠুক এক ব-দ্বীপ, যেটা হয়ে থাক এক জীবনের সফলভাবে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞান।

|| নীলাঞ্জন ||

#আমসত্ত্ব

03/11/2024

রবিবারের লেখা ২/২১

মাতালরা উৎসবে ভেদ করে না।

কালী হোক বা চড়কষষ্ঠী, ক্রিসমাস হোক বা নবান্ন, মদ্যপরা বোতল হাতে রেডি। মাঝে মাঝে মনে হয়, মাতালদের মতো অনুশাসন আমি আজও কারুর মধ্যে দেখিনি। সেকেন্ড অক্টোবর ড্রাই ডে, গোটা সংসার দু তারিখে গিয়ে আবিষ্কার করে কিছু না কিছু ভুলেছে, “এই যাহ, কালকে অফিসে অমুক ফাইলটা জমা করা হয় নি”, “এই যাহ, কালকে ছেলের স্কুলের মাইনের লাস্ট ডেট ছিলো”। কিন্তু কখনো কোনো মাতালকে বলতে শুনবেন না, “এই যাহ, আজকে ড্রাই ডে, কোথায় পাবো”... কদাপি কদাপি নয়। মাতালরা দুর্দান্ত প্ল্যানার।ড্রাই ডে তে মদ পাওয়া যাবে না, তারা আগাম স্টক মজুত করে রেখেছে, ট্যুরে গিয়ে দোকান বন্ধ থাকবে, তারা আগে থেকে কিনে ব্যাগে ঢুকিয়ে রেখেছে, সাহারা মরুভূমির মাঝে মদ পাওয়া যাবে না, তারা মরুদ্যানে স্টক করে রেখেছে। অপরিকল্পিত পুরুষ-নারী কর্ম-চারী দেখা যায়, কিন্তু অপরিকল্পিত মাতাল আপনি পাবেন না।

মদ্যপরা অসম্ভব ভালো ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার, বাজেট ফ্রেন্ডলি। ধরুন পকেটে টাকা নেই, তারা জানেন কাকে ধরলে টাকা পাওয়া যাবে। অল্প টাকা পাওয়া গেছে, কুছ পরোয়া নেই, তারা ওই বাজেটে আউচ না করে পাউচ এ ম্যানেজ করবেন। বিদেশ থেকে ছেলে বাড়ি এসেছে, বাবা জানে না, কিন্তু পাড়ার মাতাল জানে।পৃথিবীর সমস্ত মাতাল, বিদেশ থেকে ফেরা চাকুরিরত ছেলের কাছ থেকে যে পরিমানে অর্থ আদায় করে তাতে দেশের জিডিপি ডবল হয়।জানতে পারলে অর্থমন্ত্রী মাতালদের নামে জাতীয় পুরষ্কার চালু করতেন।তিনি ব্যস্ত মানুষ, গরীব মাতালরা দেশের সম্পদ কী হারে বাড়াচ্ছে সেটা সম্পর্কে ধারনা পান নি, পেলেই ছুটে আসবেন বলে আমার বিশ্বাস।

কালীপুজোর ভাসানে আপনি সচেতন মাতাল পাবেন। এমনিতে কলকাতা ও বাংলায় কিছু আন্তর্জাতিক মানের মাতাল পাওয়া যায়।কেউ ভেউ ভেউ করে কাঁদে।দু পাত্তর পেটে পড়লেই তারা বন্ধুদের “সচ্চা ইয়ার” বলে সার্টিফিকেট দেন। কেউ কেউ দাবী করেন, অফিসে যত ভালো কাজ, সে করেছে, সমাজে যত ভালো কাজ, সে করেছে, সে কী করেছে সেটা কেউ বুঝলো না ইত্যাদী, যাই হোক। কালীপুজোর ভাসানের মাতাল আবার খুবই সচেতন। কিছু কিছু মাতাল, নিজেদের সামলাতে না পারলেও, দায়িত্ত্ব নিয়ে ট্রাফিক সামলান। ডিকচিক মিউজিক, কিছু মানুষ তেড়ে রাস্তার মধ্যেই ডান্স বাংলা ডান্সের মঞ্চ বানিয়েছে, এর মাঝে সচেতন মাতাল পাশের গাড়ি পাস করান। ততক্ষণে তিনি একটা গাড়িকে তিনটে গাড়ি দেখছেন। কিন্তু এক এক করে সবকটা গাড়িকে পাস করাবেন এইসান কসম খেয়ে তিনি গাড়ির বনেটে হুমড়ি খেয়ে পড়েন,কিন্তু দায়িত্ত্ব থেকে নড়েন না।এই নাচছে, এই হাসছে, এই কাঁদছে, এই গাড়ি দাঁড় করাচ্ছে, এই ছাড়ছে, সবেতেই তূরীয় আনন্দ, কেন আনন্দ, কিসে আনন্দ জানে না, তাও সে খুশি, মুখ থুবড়ে পড়েও খুশি, গানের সাথে নেচেও খুশি, জেনারেটারের সাথে নেচেও খুশি। বোধিপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী ছাড়া এত আনন্দ, আপনি ধরতে পারবেন না।

আমার এক বন্ধু এক মাতালের গল্প শুনিয়েছিলেন। কালীপুজোর রাতে নাকি সেই মাতাল বন্ধুকে হাবিলদার ধরেছে, বড়সাহেব এসে জিজ্ঞেস করলেন, কী করেছে ব্যাটা মাতাল। হাবিলদার বললেন,”স্যার, এ হলুদ ট্যাক্সির সামনে দাঁড়িয়ে ড্রাইভারকে গালিগালাজ করছিলো”।হাবিলদারের গা থেকে গন্ধ পেয়ে বড়সাহেবের সন্দেহ হয়। তিনি বলেন, ট্যাক্সির ড্রাইভারকে ডেকে আনো। হাবিলদার দুটো হেঁচকি তুলে বলে, এটাই তো সমস্যা স্যার। ট্যাক্সির ভিতরে কোনও ড্রাইভার ছিল না!

তবে মাতালদের কোনো দোষ আমি দেখি না। আপনি প্যান্ডেল দেখে মূর্তি দেখে সেলফি তোলেন, মাতালরা টলতে টলতে প্রণাম করে। আপনি পরিচিত দেখলে মুখ ঘুরিয়ে চলে যান, মাতালরা ঠিক, “জ্যেঠু, ভাআআল্লো ত্তোওও” বলে কান এঁটো করা হাসি হাসে। আপনি পাওনাদার দেখলে পালিয়ে যান, মাতালরা ধার বাকি থাকলেও দোকানে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়, “আজ দিয়ে দে, কাল ঠিক দিয়ে দেবো”।মাঝে মাঝে মনে হয়, রাজনীতি ব্যাপারটা নেশার মতো,তাই মাতাল আর রাজনীতিকরা প্রতিশ্রুতি দেয়, পালন করে না।

আমার হয় বিপদ। একে আমি মাতাল নই,তায় প্রাইভেট যব, তায় বিবাহিত। একা গাড়ি করে ফিরলে পুলিশ ধরে গাড়ি দাঁড় করায়। মেশিনে ফুঁ দিয়ে খুব সন্দেহের চোখে তাকায়। একলা মানুষ, শুক্রবার গভীর রাতে বাড়ি ফিরছে মদ না খেয়ে, এ ব্যাটা নির্ঘাৎ জঙ্গি।তারপর ছেড়ে দেয়।

একদিন গাড়ি নেই, হেঁটে ফিরছি, গভীর রাতে পুলিশ দাঁড় করিয়েছে, পুলিশের আগে আমি অবাক। মনে মনে ভাবছি, সত্যিই কী আমি নেশা করেছি? আসলে হয়তো আমি গাড়িই চালাচ্ছি, কিন্তু এতটাই নেশা হয়ে গেছে ভাবছি হাঁটছি। নইলে পুলিশ খামোখা দাঁড় করালো কেন, আমি তো গাড়িতে নেই। তাই পুলিশ কিছু বলবার আগেই বলে ফেলেছি,”মেশিনে ফুঁ দেওয়াবেন?”

ততক্ষণে পুলিশ নি;সন্দেহ, আমি নির্ঘাৎ মাতাল, নইলে হেঁটে যেতে যেতে কে মেশিনে ফুঁ দিতে চায়।খুব গম্ভীর হয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, "এত রাত্রে কোথায় চললেন?"

বললাম, আজ্ঞে বক্তৃতা শুনতে।
পুলিশ মুখ বেঁকিয়ে বললেন, মাতাল নাকি, এত রাত্রে কোন বক্তা শোনাবে বক্তৃতা শুনি।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, আজ্ঞে বক্তব্য রাখবে আমার স্ত্রী।আমি একাই শুনবো সে কথা। কারন বাজার করতে বলেছিলো,অফিসে লেট, ভুলে গেছি।

|| নীলাঞ্জন ||

#লসাগু_গসাগু

03/11/2024

আজকের পৃথিবীতে দশ হাজার সাবস্ক্রাইবার টা কোনো সংখ্যাই নয়।একটা সময় ছিলো যখন ইউটিউবে দশ হাজার মানে সে কুলীন ক্রিয়েটার।এখন সে সংখ্যাটা ন্যুনতম লাখ।তবুও সাধারণ মানুষ আমি, সাধারণ সংখ্যাতেই খুশি।

আবার, আজকাল সংখ্যা নিয়ে মাতি না।যবে থেকে ইউটিউবে টুকটাক ভিডিও পোস্ট করছি তবে থেকে স্থিরকরেছি ভালো বলা তে গুরুত্ব দেবো, সংখ্যায় নয়, কোটি নয় উচ্চকোটি হওয়াটা আমার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।

এই পোস্ট টা সেই দশ হাজারের জন্য, যারা আমার অনিয়মিত পোস্টিং টা দেখে নি, আমার খারাপ অডিও বা ঠিকঠাক এডিট না করা ভিডিও নিয়ে ভাবেন নি।।আমার মাইক্রোফোন বা আলো নিয়ে ভাবেন নি।যারা ভালোবেসে একসাথে এসেছেন।আমার কুর্নিশ তাদের, যারা এই ভালোবাসার নজরানা দিয়েছেন।

একটাই জবান দিতে পারি তাদের, যে, নিয়মিত হবো, ভিডিওতে বা পোস্টে...

|| নীলাঞ্জন ||

02/11/2024

রেডিওতে কাজ করার সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হতো কামাই করলে। অবধারিত পরের দিন প্রচুর মানুষ জিজ্ঞেস করবেন,"দাদা, কাল কেন আসেন নি"। অর্থাৎ এখানে একজন নয়, দশ লক্ষ শ্রোতাই আপনার বস। তাই সে সময় চিরকাল ওই দশলক্ষ বসকেই তুষ্ট করতে চেয়েছি, অফিসের একজন পদাধিকারীকে নয়।

রেডিও ছেড়ে দেবার পর, কুঁড়েমি বাসা বাঁধলো।"ওই ভিডিও কোনো একসময় দিলেই হবে" বা "লেখা লিখলেই হবে" ধরনের কুঁড়েমি এলো মজ্জায় মজ্জায়। মিস হতে শুরু করলো কনটেন্ট পোস্ট।তাই মাঝে মাঝেই নির্ধারিত দিন মিস হয়। হৈমন্তী শুক্লার সাথে কথা বলার এই ভিডিওটা যেমন। এক বছর আগের ইন্টারভিউ, এক বছর পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো এই ছিলো শুক্রবার রিলিজের, দিচ্ছি আজ শনিবার রাত নটায়। সাধে কী আর আমার টিমমেম্বার রা বলে, "দাদা তুমি নিজেকে সিরিয়াসলি নাও না, বাকি সব্বাই তোমাকে সিরিয়াসলি নেয়"।

যাই হোক, আড্ডায় আসি। হৈমন্তী শুক্লার সাথে গল্প করা মানেই গানের খনিতে ডোবা। নানা মুহুর্ত, নানা ঘটনা, কত কিংবদন্তী। এই গল্পেও উঠে এলেন পন্ডিত রবিশংকর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে থেকে শুরু করে কত মানুষ। মন খোলা গল্পের ফাঁকে হৈমন্তী শুক্লা শোনালেন গান শেখার অনুভব করার শিক্ষা, যা গানের শিক্ষার্থীদের জন্য হতে পারে জীবনবেদ।

দিদির বাড়িতে খাওয়াদাওয়া কী হলো, সেসব পরের পোস্টে। আপাতত এটা বলার যে গল্পের ছলে এই আড্ডার প্রথম পর্ব পারলে দেখবেন।আপনাদের ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস।

|| নীলাঞ্জন ||

01/11/2024

বর্ধমানের এক গ্রাম সৈদপুর।সেখানে মা বুড়োমার বরণ...

27/10/2024

রবিবারের লেখা ২/২০

আমার জমানোর ফান্ডা খুব সহজ। এক মাসে হাজার টাকা জমিয়ে, তিন মাসের মধ্যে সেটা তুলে ফেলা।

আমি অদ্ভুত ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার,আমার কখনো লস হয় না। এই যে এত বড় রিসেশান গেলো, এই যে শেয়ার মার্কেট ভোটের পর এত ওঠানামা হলো, এই যে আদানি নিয়ে এত বিতর্কে লোকজনের এত লস হলো, এই যে কোভিডে বাজারে ধস নামলো, কোনো কিছুই আমাকে টসকাতে পারে নি।কারন আমার ইনভেস্টমেন্ট আর সলমন খানের বউ এর সংখা একই,শূন্য।

আমি আজ জমিয়ে কালকেই তুলে নিই। শেয়ার মার্কেট বন্ধ হবার সময় টাকা রেখে, খুলতে না খুলতেই তুলে নেওয়া আমার স্বভাব, কারন রাতের মধ্যেই দেখি মশারি কিনতে হবে, পাপোশ ছিঁড়ে গেছে, সকালে মাছ আনার টাকা নেই। তাই যতক্ষনে শেয়ার মার্কেট বোঝে আমার টাকা এসেছে, ততক্ষনে আমার টাকা তুলে নেওয়া হয়ে গেছে।বুঝতেই পারছেন, আর্যভট্ট শূন্য আবিষ্কার করেছিলেন ঠিকই, আমি তার সফল প্রয়োগ করেছি। শূন্যকে আর কত কমাবে রিসেশান।

আমার এক বন্ধু ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার।সে আমাকে বলেছিলো, ভাই, মাসে মাসে হাতে যা একস্ট্রা পড়ে থাকবে, সেটা কিছু না ভেবে জমিয়ে দেবে।কয়েকদিন পরে দেখবে কত্ত টাকা হয়ে গেছে। আরে বাবা সেটা তো আমিও চাই,কিন্তু সেটা করলে তাহলে মুদিখানার দোকান আর ক্রেডিট কার্ডের ধার শোধ করব কি দিয়ে?

এমনিতেই আমি অনেক কিছুই বুঝি না, ছেলেবেলায় স্যার বলতেন আমি ফিজিক্স বুঝিনা,গিন্নি বলে ভালোবাসা বুঝি না, বস বলে কাজ বুঝি না, বন্ধু বলে মিউচুয়াল ফান্ডের এক্সেল বুঝি না।আমি অনেক চেষ্টা করেছি এগুলো বোঝার, কিন্তু দেখেছি,রাজনীতি, প্রেম,গিন্নির মন আর মিউচুয়াল ফান্ডের এক্সেল বোঝা খুব কঠিন। বাইরে থেকে একরকম দেখায়, ভিতরটা সম্পূর্ণ আলাদা।

আজকাল ইউটিউবে অজস্র ভিডিও পাওয়া যায়।নানা ফিনান্স এক্সপার্টরা বলেন, চল্লিশে এসে ফিনান্সিয়ালি ফ্রি হয়ে যাও।আরে, শপিং মলের অফার থেকে আজও ফ্রি হলাম না,গিন্নির খ্যাচখ্যাচ থেকে ফ্রি হলাম না, ছেলে মেয়ের স্কুলের ডিফল্টার হওয়া থেকে ফ্রি হলাম না, ফিনান্সিয়ালি ফ্রি হয়ে যাবো?মামদোবাজি?

কেউ আবার চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বোঝানোর চেষ্টা করে। আমি মনে মনে ভাবি, এরা কেসি নাগের ধর্মপুত্র নাকি?!এত কঠিন জিনিস বোঝে কিকরে। কেউ কেউ আবার স্বপ্ন দেখায়, কুড়ি বছর বয়েস থেকে জমালে আজ আপনি কী হতেন।আমি মনে মনে বলি, আরে কুড়ি বছর আগে আমি চাকরি না পেয়ে টিউশানি করে মোবাইলের বিল ভরতাম।ইনফ্লুয়েন্সার বলে, ভুল করেছেন, খরচ লিমিটে রাখা উচিত ছিলো, মোবাইল না কিনে কবুতর পুষলে যে একশো টাকা সেভ করতেন, তা দিয়ে জাঙ্গিয়া না কিনে জীবন কিনতেন।

কেউ বলে মাসে এত জমালেই আপনি কুড়ি বছর পরে কোটিপতি। তার পরেই বাড়ি গাড়ি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ফরেন ট্যুর। আমি মনে মনে হিসেব করি, এত দেরিতে শুরু করছি, কুড়ি বছর পরে ষাট। ষাটে থাইল্যান্ডে ওয়াকিং স্ট্রিটে ঝিঙ্কু মামণিদের দেখে কি “ভালো থেকো নাতনি” বলে আশীর্বাদ দেবো? তারপরে মাসের ইন্সটলমেন্ট দেখে চোখ চড়কগাছ। অত টাকা মাসে হাতে থাকলে তো শ্যাওলা ধরা মেঝেটার জন্যে ফিনাইল কিনতাম বাপ।

তবু আমি মন দিয়ে দেখি, বোঝার চেষ্টা করি বিশেষজ্ঞের মতামত। কারুর চল্লিশে এক কোটি, কারুর দশ কোটির জমা পুঁজি, মানে কর্পাস। আমার জমা বলতে, বাথরুমের চৌবাচ্চায় অর্ধেক জল, তাতে মশা। সহজে রিটার্নে ডেঙ্গি।গদি ফাটা, কপাস তুলো।

সেদিন যেমন শুনছিলাম এক ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইসার বললেন, তার বাবা তাকে ফিনান্স শিখিয়েছেন, তারা ভীষন মধ্যবিত্ত ছিলেন, এতটাই যে তার বাবার শেয়ার মার্কেটে সেই বিরানব্বই সাল থেকে আছেন! তিনিও উত্তরাধিকার সূত্রে সেই জ্ঞান পেয়েছেন। তিনি যখন প্রথম ইনভেস্ট করেছিলেন, বাবা হেল্প করেছিলেন।পরিষ্কার বুঝলাম, বাবার সম্পত্তির খবর চেপে গেলেন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলাম, অন্যরা বাবার কাছ থেকে সম্পত্তি, ফিনান্সের জ্ঞান পায়। আমি বাবার কাছ থেকে পেয়েছি, ভুঁড়ি।

তাই,আপনি ইনভেস্টমেন্ট করছেন, আমি চাকরি চলে যাওয়ার ভয় করছি।আপনি সিপ (SIP) করছেন,আমি সিপ করছি না… চায়ের ভাঁড়ে। কারন ফুটপাতের গুমটি আমার কাছে এখনো দুশো টাকা পায়। আপনি ফান্ডে ইন্টারেস্ট পাচ্ছেন, আমি কম স্যালারির ফান্ডে(ফাঁন্দে) পড়িয়া বগা কান্দে রে হয়ে গেছি।

ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার বন্ধু একদিন বললো, যে লাইফস্টাইল মেনটেন করছেন, তাতে রিটায়ারমেন্ট এর সময় হাতে সাত কোটি টাকা থাকতে হবে। আমি তীব্র প্রতিবাদ করে প্রথমেই বলেছিলাম, এটা লাইফস্টাইল? এটা বাণপ্রস্থের সাধুদের কাছ থেকে কপি করা জীবন।মাটন ছুঁতে পারি না বলে ভেগান, প্রোটিনের জন্য নিউট্রেলা সেদ্ধ, ট্যুর বলতে গাদাগাদি করে দীঘা, তুমি একে লাইফ তায় স্টাইল বলো অ্যাডভাইজার বাবু।

ভেবে দেখেছি, এ জন্যেই ভীষ্ম ইচ্ছামৃত্যু নিয়েছিলেন।নইলে সুস্থ সবল বৃদ্ধ, আজীবন বেঁচে থাকতে পারেন, তিনি খামোখা মরতে গেলেন কেন। নির্ঘাৎ শেষ বয়েসে এসে আবিষ্কার করেছিলেন, সেভিংস হয় নি, সিস্টেমেটিক উইথড্রয়াল প্ল্যান সম্ভব নয়। তখন তো বার্ধক্য ভাতা ছিল না, তাই হয়তো ভেবে দেখলেন, না খেতে পেয়ে মরার চেয়ে শরশয্যায় মরা বেটার।

অনেকে ভাবেন আমি বোধহয় অমুক পার্টি সমর্থন করে অমুকশ্রী তমুকশ্রী কে সমর্থন করি, না দাদা, সম্পূর্ণ নিজের প্রয়োজনে। বুড়ো বাজেটের শরশয্যায় না থেকে ভাতের জন্য ভাতা তো থাকবে!!

এখন তাই হেরা ফেরির পরেশ রাওয়াল মোডে আছি। সেই পরেশ রাওয়াল যিনি টাকা আসার আগেই স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাড়ি মার্বেল করবেন, বেডরুমে ফোয়ারা লাগাবেন, আমিও তাই।ভারি চশমা নাকে তুলে ভাবছি। ভেবে ভেবে হোমি জাহাঙ্গির ভাবা।

আপাতত আজ রাতে তিনশো টাকা মিউচুয়াল ফান্ডে জমিয়ে হিসেব করছি ক আলোকবর্ষ পরে কোটিপতি হবো।বেশ হ্যাপি হ্যাপি ফিলিং হচ্ছে গাইজ। সেই আনন্দে কাল সকালে মাটন কিনবো, ওই তিনশো টাকা তুলেই।

|| নীলাঞ্জন ||

#লসাগু_গসাগু

Address

Uttarpara

Website

https://www.instagram.com/rjnilanjan/

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Rj Nilanjan posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Rj Nilanjan:

Videos

মুখে বরফ পুরে, কড়মড় করে চিবিয়ে, কী গান গাইলেন প্রভাতী মুখোপাধ্যায়, সেও এক দৃশ্য। পুরো ভিডিওটা কোথায় দেখবেন, সেটা কমেন্টে লেখা রইলো।

পুরো ইন্টারভিউ টা দেখলে ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস #SeriouslyBolchiWithNilanjan

প্রভাতী মুখোপাধ্যায়। এক অক্লান্ত সুরসাধিকা। বয়স যার কন্ঠে থাবা বসাতে পারেনি। সুরের সাম্রাজ্যে এতগুলো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যার নিষ্ঠা ও পরিশ্রম তরুন তরুনীদেরও হার মানাবে। একের পর এক সম্মান, রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পাওয়া পুরষ্কার, মুকুটে একের পর এক পালক। তাও কী অসম্ভব বিনয়ী। অহং তাকে স্পর্শ্ব করে না। এরকম মানুষদের সাথে গল্প করার সুযোগ পেলে মনে হয়, নিজেরা কত অল্প জানার মোহে কত অহং করি। আর এইসব মানুষরা যারা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য পেয়েছেন, উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাহেবের কাছে তালিম পেয়েছেন, তারা নিরন্তর শিখিয়ে যান, তুমি আসলে কেউ নও, যদ্দিন পারো সুরের, শিল্পের বা সৃষ্টির ঈশ্বরের কাছে নতজানু হয়ে থেকো, প্রার্থনা কোরো, যেন মতিভ্রমে অহং না করে বসি। পুরো আড্ডাটা কোথায় পাবেন, কমেন্টে জানালাম... ।। নীলাঞ্জন ।।