Valobasi Kobita

Valobasi Kobita Honesty is the best to win

20/12/2024

সিদ্ধান্ত নিয়েছি,
আরেকবার ভীষণ রকম প্রেমে পড়ব।
ঠিক করেছি, আরেকবার কাউকে খুব করে ভালোবাসবো।

তবে এবার একশো ভাগ সত্যিকারের প্রেম চাই এবার আমার
হোক সেটা কৈশোরের প্রথম প্রেমের মত সরল, সাদা সিধে
সামান্য চোখের দেখা, হাতে হাত ছোঁয়ায় জীবন ধন্য হওয়া প্রেম,
অথবা যৌবনের নেশা জাগানো মাতাল করা প্রেম।

আমি চাই এবার আমার একটা গভীর প্রেমের গল্প হোক।

রবি ঠাকুর এর অমিত লাবন্য, শরৎচন্দ্রের দেবদাস পার্বতী,
সমরেষ এর মাধবী অনিমেষ এর প্রেম কেও ছাপিয়ে যাক,
আমার প্রেম কালজয়ী সব প্রেমের উপন্যাসকেও হার মানাক

আমার প্রেমের গভীরতা,
এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাক
যোগ্য প্রেমিক পেলে,
এবার আমি আলেকজান্দ্রিয়ার ক্লিওপেট্রা হব, স্পারটার হেলেন হব।

প্রেমিক হিসেবে শামস ই তাবরিজ এর মত পাগল কাউকে পেলে
আমিও এবার জগত সংসার ছেঁড়ে জালালুদ্দিন রুমি হব।

মুখে ভালোবাসি বলা প্রেম অনেক হয়েছে
আমি একটা সত্যিকারের প্রেম চাই......!

আজকাল একটা একশ ভাগ বিশুদ্ধ প্রেমের জন্য খুব তৃষ্ণা জাগে।
আজকাল তথাকথিত প্রেমিকদের আবেগমাখা প্রেমের কথাও

কবি উপন্যাসের নিতাই মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে ইচ্ছে করে
ভালবেসে মিটলো না আশ, কুলালো না এ জীবনে।
হায়! জীবন এত ছোট ক্যানে,এ ভুবনে?’

মরে যাবার আগে একবার আমি সত্যিই,
একটা সত্যিকারের প্রেম চাই।

14/12/2024

অদ্ভুত সুন্দর একটা প্রেম। প্রেম। শুভ দাশগুপ্ত। Valobasi Kobita

13/12/2024

শোক আর আঘাত দিতে দিতে যারা হৃদয়টাকে কঠিন করে তোলে, তারা আর কেউ নয়, আমাদের খুব কাছের মানুষজন। যাদের আমরা বিশ্বাস করি, যাদের কাছে ভালো থাকা আশা করি, যাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকে সবচাইতে বেশি। মূলত তারাই আমাদের কঠিন হতে বাধ্য করে, তারাই অনুভূতি নষ্ট করে দেয়!

লেখায়: মোঃ ফাহাদ মিয়া

Shout out to my newest followers! Excited to have you onboard! Shout out to my newest followers! Excited to have you onb...
11/12/2024

Shout out to my newest followers! Excited to have you onboard! Shout out to my newest followers! Excited to have you onboard! Atanu Adak, Sutapa Mandal, Mithun Cokroboti

09/12/2024

Good night

08/12/2024

ফাইনালি আমার আর সুমনার। ডিভোর্সটা হয়ে গেল, সত্যি বলতে আমি কখনোই চাইনি যে এটা হোক। কিন্তু আমি এমন একটা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি আমার ঠিক ভুল বিচার ক্ষমতা সব লোপ পেয়েছে। যাওয়ার সময় ও বলে গেল যে - "দুঃখ পেয়োনা, তোমার থেকে যা পেয়েছি তা আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হয়ে থাকবে।"
অবাক হয়ে ভাবছি কি এমন দিয়েছি আমি ওকে দুঃখ ছাড়া? মা ওকে জড়িয়ে খুব কেঁদেছে বলেছে - "আমাকেও সাথে নিয়ে যা মা।"
কিন্তু ও চলে গেল, আর তার পরেই কয়েকটা মাসের মধ্যে আমি বুঝে গেলাম জীবনের কতো বড় ভুল করেছি আমি।
চাকরী সূত্রে মাকে নিয়ে গ্ৰাম থেকে শহরে আসা আমার। প্রথম প্রথম খুব অসুবিধা হতো শহরের আদব কায়দা আধুনিকতার সাথে মানিয়ে নিতে, তার পর ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়লাম। মা আর আমার সংসার, বেশ ভালোই চলছিল। ছোটবেলাতেই বাবা মারা গিয়েছিল, মা একাই অনেক কষ্ট করে আমাকে বড় করেছে। সারাদিন মা একা বাড়িতেই থাকে। ছুটি পেলে মাকে নিয়ে চলে যাই কোনো এক পাহাড়ের কোলে। মজা করে কাটাই কয়েকটা দিন, পাহাড় যেনো আমাকে টানে সবসময়। মা এখন বলে-"বয়স হয়েছে শরীর টানে না আর আমার গিয়ে কাজ নেই।"
তাই অগত্যা কখনো একা আর কখনো বা বন্ধুদের সাথে চলে যাই পাহাড়ের ডাকে। আমি মনপ্রাণ দিয়ে একজনকে ভালোবাসি সে হল আমার কলিগ তৃষা।আমাদের সম্পর্কটা কয়েকমাস এগিয়েছে। আমি বারবার তৃষাকে বলি বাড়িতে সব কিছু জানাতে, ও খুব বেশি গা করেনা। বলে-"এই তো দিব্যি আছি বিয়ে করে হবেটা কি?"
বছর ঘুরলো আমাদের সম্পর্কের একটা বছর কেটে গেল, তৃষার সাথে দিব্যি সময় কাটে। নামি রেষ্টুরেন্টে খাওয়া কিংবা লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়া দুজন মিলে। মা মাঝে মাঝেই বলে-"আর একা একা ভালো লাগে না আমার, এবার একটা বৌমা নিয়ে আয় বাড়িতে।"
আমি জানি তৃষাকে মা মেনে নেবে। আমার পছন্দকে মা কখনো না করবে না। কিন্তু যতো দিন যেতে লাগলো তৃষা যেনো বদলে যেতে থাকলো। নতুন বসের সাথে তার ওঠাবসা, এমনকি দেখতাম বসের গাড়িতেই ওর রোজকার যাতায়াত। আমি খুব রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম-"এসব কি হচ্ছে তৃষা?"
ক্রূর হাসি হেসে ও বললো-"পরিমল, আমার প্রমোশন দরকার।"
কিছু দিনের মধ্যেই ও আমাদের সম্পর্কটাকে অস্বীকার করলো। অফিসের সবাই আমাকে বললো-"দুঃখ পেয়ো না পরিমল। এরকম মেয়েরা টাকার জন্য সব করতে পারে।"
ওরা তো বোঝেনি ওই মেয়েটাকে আমি আমার সব ভালোবাসা উজাড় করে দিয়ে বসে আছি।
দিনের পর দিন কাটতে লাগলো চোখের সামনে আর আমি দেখতে পারছিলাম না এসব। খুব কষ্ট হতো,বিমর্ষ দেখাতো আমাকে। মা জিজ্ঞেস করতো কারণ কিন্তু চুপ থাকতাম। কিছুদিন পর শুনলাম তৃষা নতুন বসকেই বিয়ে করবে ঠিক করেছে। বাড়ি ফিরে চুপচাপ বসেছিলাম মনে হচ্ছিল জীবন থেকে সব খুশি হারিয়ে যাচ্ছে আমার। তখন মা আমার পাশে বসে সুমনার ছবিটা দেখিয়ে বলেছিল-"দেখতো বাবা পছন্দ হয় কিনা? তোর মামার বাড়ির কাছেই বাড়ি। অভাগী বাপ মা হারা, খুব ভালো মেয়ে।"
সেদিন ওই শ্যামলা মেয়ের ডাগর চোখটা দেখে মনে হয়েছিল কতো মায়া। মা আর দেরি করেনি দেখাশোনা শুরু করে। মায়ের জোরজবরদস্তিতে একদিন যাই সুমনার গ্ৰামে, ওখানেই ওকে প্রথম দেখি ওকে। ওর সাথে যখন কথা বললাম, ওকে আমার জীবনের সব অতীত খুলে বললাম। আমি সেদিন ওকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। হাসি মুখে বলেছিল-"অতীত ভুলে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়াই মানুষের ধর্ম‌। আপনাকে আমার খুব ভালো লেগেছে, আপনার এই সৎ আর সুন্দর মানসিকতার জন্য।"
কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায় আমাদের। সুমনাকে মা খুব ভালোবাসে, সুমনা বাড়িতে পড়াশোনা করে। মা ওকে বলে-"তোকেও প্রতিষ্ঠিত হতে হবে তুই আমার ছেলের বৌ বলে ওর উপর নির্ভর করে চলবি আমি তা কখনোই চাই না।" আমিও ওকে আঁকড়ে বাঁচি, ও আমার স্ত্রীর থেকে ভালো আমার বন্ধু। এইভাবে মাস তিনেক কাটলো, সুমনা বিভিন্ন জায়গায় চাকরীর ইন্টারভিউ দেওয়া শুরু করলো।
কিন্তু আমি অফিস গিয়ে দেখতাম অন্য চিত্র। তৃষা আমার সাথে এখন নিজে থেকেই কথা বলতে আসে। প্রায় ফোন করে, আমি তৃষাকে বোঝানোর চেষ্টা করি আমি এখন বিবাহিত আমার স্ত্রী আছে। তৃষার কথা শুনে চমকে উঠলাম ও বললো বস নাকি ওকে ঠকিয়েছে। বস নাকি বলেছিল আমার সাথে সম্পর্ক রাখলে আমার বড়সড় ক্ষতি করে দেবে। আমি অবাক হয়ে ভাবলাম বসের সাথে আমার শত্রুতা কিসের? কিন্তু আমার প্রথম ভালোবাসাকে অবিশ্বাস করতে পারলাম না। তৃষা আমাকে প্রায় দিন বলতে লাগলো-"আমরা কি আবার নতুন করে শুরু করতে পারি না?"
আমি বলতাম-" না অন্যায় হবে তাহলে সুমনার সাথে।"
ফোন রাখতে বললে সুইসাইড করার ভয় পর্যন্ত দেখাতো আমাকে। এইভাবে আমি খুব অসহায় হয়ে পড়ছিলাম দিনের পর দিন।
আস্তে আস্তে সুমনার সাথে আমার দূরত্ব তৈরি হতে থাকলো। একদিন সুমনা বললো-" আমি রাতে তোমাদের সব কথা শুনেছি। আমি চাই তুমি খুশি থাকো। তোমরা আবার নতুন করে শুরু করো, তোমায় এইভাবে কষ্ট পেতে দেখতে আমার ভালো লাগে না।"
সেদিন আমি অবাক হয়েছিলাম মেয়েটার ত্যাগ দেখে।সুমনা বললো-"আমি স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই সংসারের মায়ায় নিজেকে জড়াতে চাই না আর‌। তোমাকে জানিয়ে রাখি একটা চাকরি আমি পেয়ে গেছি। আমি ঠিক করেছি কিছু দিনের মধ্যেই এ শহর ছেড়ে দূরে চলে যাবো‌। ডিভোর্স পেপার রেডি করো।"
আমার সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে হয়ে গেল ডিভোর্সটা।
আমি অনেকবার বলেছিলাম মাসে মাসে টাকা পাঠিয়ে দেবো যোগাযোগটা অন্তত রাখতে। কিন্তু মেয়েটা বড্ড অভিমানী চলে গেছে সে আমাকে একা করে। এখন মনে হয় সুমনার জায়গাতে আর কাউকে বসাতে পারবো না।সব নিয়ে গেলেও সুমনা একটা জিনিস নিয়ে যেতে ভুলে গেছিল, ওর লেখা ডায়েরী। পড়তেই চোখে জল চলে এলোএলো, কতো স্বপ্ন ছিল মেয়েটার আমাকে নিয়ে।আফসোস করতে থাকলাম কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, কয়েক মাসের মধ্যে বিনা দোষে তৃষা আমার উপর আনলো শ্লীলতাহানির অভিযোগ। সেই যাত্রায় বস এসে বাঁচালো আমায়, অফিসের কলিগরাও আমার পাশে দাঁড়ালো। বস মানুষটা যে এতো সরল আমি ভাবতে পারিনি। তিনি প্রমাণ করলেন তার সাথেও এইভাবে তৃষা তার সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে চেয়েছিল। বস বুঝে যাওয়ায় বেঁচে গেছেন। মা কেঁদে বললো বাড়ি থেকে আমার লক্ষী চলে গেছে, তৃষাকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা হল। এরপর কেটে গেছে পঁচিশটা বছর। আর নতুন করে সংসার করার স্বপ্ন আমি দেখিনি। মায়ের মৃত্যুর পর বড় একা হয়ে পড়েছি। সময় কাটে সুমনা আর ওর ডায়েরির লেখা পড়ে। বয়েসের তুলনায় যেনো একটু বেশি বুড়িয়ে গেছি আমি। কিন্তু ওই পাহাড় যে আজও আমায় টানে।
একবার পাহাড়ে উঠতে গিয়ে বেশ হাঁফিয়ে পড়লাম আমি। তখনই দেখলাম এক উজ্বল তরুণকে। ছুটে এসে বললো-"আঙ্কেল আপনার কষ্ট হচ্ছে?"
পাথরের উপর বসিয়ে জল খেতে দিল। ছেলেটার সাথে আলাপ হয়ে বেশ ভালো লাগলো। বললো-"জানেন আঙ্কেল এই পাহাড় আমাকে টানে তাই ছুটি পেলেই মাকে নিয়ে চলে আসি।"
আমি বললাম-"আর বাবা?"
ছেলেটা বললো-"বাবা তো নেই।"
ছেলেটার মধ্যে যেনো নিজেকে তরুণ বেলাকে খুঁজে পেলাম। যে কদিন ছিলাম প্রায়দিনই দেখা করতাম ছেলেটার সাথে। বলে যেতাম নিজের জীবনের সব কথা।বলতাম আমি এই বয়সে কতোটা একাকী, অসহায়। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম-"তোমার মা কি বেরোন না?"
ছেলেটা বলেছিল-"মায়ের শরীরটা খারাপ, তবে আপনার সব গল্প আমি মাকে বলি।"
চলে যাওয়ার সময় খুব কষ্ট হল কদিনে ছেলেটার উপর বড় মায়া পড়ে গেছিল।
কয়েক সপ্তাহ পর ছুটির দিনে বারান্দায় বসে খবরের কাগজ পড়ছি, দেখলাম একটা গাড়ি এসে থামলো বাড়ির সামনে। এগিয়ে গিয়ে যা দেখলাম বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার সামনে দাঁড়িয়ে সুমনা। বয়স হয়েছে বটে কিন্তু ওই কাজল কালো চোখ দুটো আগের মতোই মায়াবী। বললো- "আমি ভেবেছিলাম তুমি তৃষার সাথে দিব্যি সংসার করছো। কিন্তু পাহাড়ে গিয়ে আবিরের মুখে তোমার কথা শুনে খুব কষ্ট হল। মনে হল এখন আমাকে আর আমাদের ছেলেকে তোমার খুব দরকার।" "আমাদের ছেলে?"-অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
সুমনা বললো-'হ্যাঁ আমি তো যাওয়ার সময় বলেই গেছিলাম তোমার কাছ থেকে একটা খুব দামী জিনিস নিয়ে যাচ্ছি।"
দেখলাম পাহাড়ে দেখা সেই সুদর্শন তরুণ নেমে এলো আমার দিকে। এসে মুচকি হেসে বললো -"তাহলে আঙ্কেল আপনিই আমার বাবা তাইতো?"
জড়িয়ে ধরলাম ছেলেকে। আমাদের দুজনের চোখে জল। আমি কখনো ভাবিনি,যে পাহাড়ের প্রতি আমার এতো আকর্ষন সেই পাহাড়ই আমাকে শেষ বয়সে ফিরিয়ে দেবে আমার পরিবার। ছেলে বলে উঠলো-"বাবা অনেক দূর থেকে গাড়ি চালিয়ে এসছি,একটু বিশ্রাম দরকার। তোমার এখন তোমাদের এতোদিনের রাগ অভিমান মেটাও।
সমাপ্ত
লেখা
Priya deb chakraborty

03/12/2024

চার বছরের প্রেম চার মিনিটে ডিসমিস। চার মিনিট হবে না। হবে এক মিনিট। মাত্র দু-তিনটে বাক্য।
নির্মাল্য হঠাৎ মাঝ রাতে ফোন করে বলল, কিছু মনে করো না, বাপ-মায়ের চাপাচাপিতে বিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছি। আগামীকাল ওরা আমায় আশীর্বাদ করতে আসবে। আর যোগাযোগ রেখো না। নাম্বার ডিলিট করে দিও। আর হ্যাঁ, চার বছর পরে তোমায় একটা সত্যি কথা বলি। আমার বাড়ি পায়রাডাঙ্গা নয়। পাঁচবেড়িয়া। রানাঘাটের পরের স্টেশন। আগেরটা নয়।
নির্মাল্যর সঙ্গে কলেজে পরিচয়। আলাপ প্রেম ঘনিষ্ঠতা সব তখন।
ওর বিয়ের খবরটা মানতে পারিনি সহজে। অনেকদিন আপসেট ছিলাম। প্রায় দু'বছর লেগেছিল ভুলতে।
ইদানিং চাকরি সূত্রে প্রতিদিন পায়রাডাঙ্গা, পাঁচবেড়িয়া হয়ে আড়ংঘাটা যেতে হয়। যতবার পাঁচবেড়িয়া পার হই ততবার নির্মাল্যর কথা মনে পড়ে। মনে হয় ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে নাবি। তারপর ছুটে চলে যাই ওর কাছে।
আবার ভাবি না থাক। ওর স্ত্রী আছে। বাবা-মা, ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন আছে। পাড়া-প্রতিবেশী আছে। মান-সম্মান আছে। হঠাৎ করে গিয়ে উঠে কি পরিচয় দেব! কি বলবো! কোন কারণে যদি ওর স্ত্রী জানতে পারে প্রাক্তন প্রেমিকা বাড়ি অব্দি ধাওয়া করেছে তাহলে সাংসারিক অশান্তিতে ডুবে যাবে নির্মাল্য। সেটা ভালো হবে না।
কিন্তু মন মানে না। কোন কথা শুনতে চায়না। কিছুদিন যাবৎ এমন মনে হচ্ছে যেন পাগল হয়ে যাব।
একদিন স্কুলের কলিগ সুমনাদিকে সব খুলে বললাম। দিদি খুব দিল দরিয়া। খুব মিশুকে। বয়স হয়ে গেলেও কারণে-অকারণে মারাত্মক খিস্তি দিতে ওস্তাদ। অনেক ছেলেই এ বিষয়ে উনার কাছে নস্যি।
সব শুনে সুমনাদি আগে হেসে নিল। তারপর গম্ভীর হলো। শেষে নির্বাক হয়ে চেয়ে রইলো অনেকক্ষণ। দীর্ঘ সময় পর গভীর শ্বাস টেনে বলল, 'মরেছিস'।
মরেছিস শব্দটা আমার জন্য সঠিক বিশেষণ। দু'বছর আগে বিবাহিত একজন পুরুষের প্রতি এখনো টান আছে এটা ভেবে নিজেই অবাক হই। কিন্তু মন না বুঝলে কি করবো! মনের ওপর জোর খাটাতে পারি না।
গতকাল সরস্বতী পুজো হয়ে গেছে। আজ বিসর্জন। ক্লাস অফ।
হঠাৎ সুমনাদি কোথা থেকে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বড়দিকে বলে এসেছি। চ।
আমি একেবারে আকাশ থেকে পড়লাম। বিস্মিত হয়ে বললাম সত্যি সত্যি যাবে নাকি?
নিশ্চয়ই! ওদের বাড়ির পাশেই স্কুল। অনেকে পরিচিত আছে আমার। রথ দেখা কলা বেচা দুটোই হবে। চ চ!
বেশি চেঁচামেচি করলে বিষয়টা জানাজানি হয়ে যাবে ভেবে চুপিচুপি বেরিয়ে এলাম। স্কুলের সামনে থেকে একটা টোটো বুক করে সুমনাদি জুত হয়ে বসে বলল, একেবারে আমার ডিটো তুই। আমারও এমন ভূত চেপে ছিল একবার। বরের সঙ্গে এক বছর সংসার করার পরেও সেই ছোকরাকে ভুলতে পারিনি সহজে। প্রেম শক্ত আঠার মতো বুঝলি। ওই যে কথায় আছে না পিরিতি কাঁঠালের আঠা। বলেই সুমনাদি অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।
আমার ভারী লজ্জা করতে লাগলো। আড়ংঘাটা রেল গেটের কাছে এসে সুমনাদির হাত ধরে বললাম, থাক না দিদি! যাবার দরকার নেই। সামনাসামনি দেখা হয়ে গেলে কেলেঙ্কারি হবে। চলো ফিরে যাই।
সুমনাদি কনফার্ম ফিরবে না। যাবেই।
আড়ংঘাটা পার হলেই ফাঁকা মাঠ। মাঠের মধ্যে দিয়ে সুন্দর পাকা রাস্তা। দুদিকে সবুজ শাকসবজিতে রঙিন জমি। যেন সেজে আছে বিয়ে বাড়ির কণের মতো।
এদিকটা কোনদিন আসিনি। সবগুলো বাড়ি মনে হচ্ছে নির্মাল্যদের। এক ফুট করে টোটো এগোচ্ছে আর পালস রেট বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। হৃদপিন্ডের শব্দ শুনতে পাচ্ছি রীতিমত।
একটা সুন্দর মত বাড়ির সামনে এসে সুমনাদি লাফ দিয়ে নেবে আমার দিকে চেয়ে হেসে বলল, এসে গেছি। নাম।
বিস্মিত হয়ে সুমনাদিকে বললাম, এসে গেছি মানে! এটা তো স্কুল নয়! কার বাড়ি ঢুকতে চাইছো? আমি যাব না।
আমার হাত ধরে হিড় হিড় করে টেনে নামিয়ে আরেকবার হেসে বলল, এটা নির্মাল্যদের বাড়ি নয়। আমার এক বন্ধুর বাড়ি। আয় একটু চা খেয়ে যাই।
তাও ভাল। ভেবেছিলাম নির্মাল্যদের বাড়ি। মারাত্মক কেলেঙ্কারি হয়ে যেত।
বাড়িটি চমৎকার। এখানে এত সুন্দর মকান যিনিই বানাক না কেন তার রুচিবোধ আছে। উঠোনের দুদিকে রংবাহারি অনেক ফুল গাছ। দোতলার ঝুল বারান্দাটি বাড়িটিকে আরো সুন্দর করে তুলেছে।
রাস্তা থেকেই সুমানাদি চিৎকার করতে শুরু করল। খিস্তি দিতে শুরু করল।
সুমনাদির বিকট আওয়াজ শুনে দরজা খুলে যে ছেলেটি আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালো তাকে দেখে মনে হচ্ছিল এখানেই অজ্ঞান হয়ে যাব। এতো নির্মাল্য! জেনে বুঝে শেষ পর্যন্ত এখানে আনলো! এমন কাজ করতে পারলো সুমনাদি!
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। নির্মাল্যের মুখ দেখতে পাচ্ছি না। কি করবো কি বলবো এই মুহূর্তে ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছিল এখানে বজ্রপাত হলে বেঁচে যেতাম।
হঠাৎ নির্মাল্য এসে আমার হাত ধরে বলল, কি কান্ড! আমাদের বাড়ি চিনলে কি করে! চলো উপরে চলো! নিশ্চয়ই এই বুড়িটা ধরে এনেছে! মা কাজটা কিন্তু তুমি ঠিক করো নি।
মা! নির্মাল্য কি তবে সুমনাদির ছেলে! এটা সুমনাদির বাড়ি!
সুমনাদি এতক্ষন চুপ করে ছিল। হঠাৎ ছেলের হাত থেকে ছাড়িয়ে আমায় বুকে টেনে নিয়ে বলল, তোর কথা অনেক পরে জানতে পেরেছিরে মল্লিকা! অনেক পরে বুঝতে পেরেছি ছেলে আমার তোকে না পেলে বাঁচবে না। আমার শাসনে ও মরেই যেত। নিজে আঘাত পেয়েও আঘাতের মর্ম বুঝিনি। আমায় তোরা দুজনাই ক্ষমা করিস রে! মিথ্যে ফোনটা আমি ওকে করতে বাধ্য করেছিলাম সেদিন। আমায় তোরা ক্ষমা করিস! বলেই সুমনা দি আরো শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।
গ্রামের কোন নির্জন পথে কোন অচেনা গাছে দুটি কোকিল যেন একে অপরকে মিষ্টি স্বরে ডাকছে। যেন বলছে, বসন্ত এসে গেছে।
বসন্ত এসে গেছে।

বাবুরাম মণ্ডল
সংগৃহীত

02/12/2024

যেদিন আমি টের পাইলাম, আমার বুকে সমুদ্র সমান আফসোস। যে আফসোসকে প্রশ্রয় দিলে আমি ধীরে ধীরে তলিয়ে যাবো, নিঃশেষ হয়ে যাবো।

ঠিক সেদিন থেকে আমি না পাওয়ার সমস্ত আফসোসকে উড়িয়ে দিলাম। আমি ভেবে নিলাম, যা কিছু আমার হয় নাই, তা কখনোই আমার হওয়ার ছিলোনা।
যা কিছু আমি পাই নাই, তা পাইলে বরং আরো কষ্ট হইতো। এইটারে মিথ্যা সান্ত্বনা বলাই যায়, কিন্তু যে মিথ্যা আমারে ভালো থাকতে দেয়, সে মিথ্যারে আমি চোখ বুজে ভালোবাসি ।

লেখা
সু'হা'সি'নী

25/11/2024

খুব ভালো লাগলো গল্পটা

ফাইনালি আমার আর সুমনার ডিভোর্সটা হয়ে গেল, সত্যি বলতে আমি কখনোই চাইনি যে এটা হোক। কিন্তু আমি এমন একটা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি আমার ঠিক ভুল বিচার ক্ষমতা সব লোপ পেয়েছে। যাওয়ার সময় ও বলে গেল যে -"দুঃখ পেয়োনা, তোমার থেকে যা পেয়েছি তা আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হয়ে থাকবে।"
অবাক হয়ে ভাবছি কি এমন দিয়েছি আমি ওকে দুঃখ ছাড়া? মা ওকে জড়িয়ে খুব কেঁদেছে বলেছে - "আমাকেও সাথে নিয়ে যা মা।"
কিন্তু ও চলে গেল, আর তার পরেই কয়েকটা মাসের মধ্যে আমি বুঝে গেলাম জীবনের কতো বড় ভুল করেছি আমি।
চাকরী সূত্রে মাকে নিয়ে গ্ৰাম থেকে শহরে আসা আমার। প্রথম প্রথম খুব অসুবিধা হতো শহরের আদব কায়দা আধুনিকতার সাথে মানিয়ে নিতে, তার পর ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়লাম। মা আর আমার সংসার, বেশ ভালোই চলছিল। ছোটবেলাতেই বাবা মারা গিয়েছিল, মা একাই অনেক কষ্ট করে আমাকে বড় করেছে। সারাদিন মা একা বাড়িতেই থাকে। ছুটি পেলে মাকে নিয়ে চলে যাই কোনো এক পাহাড়ের কোলে। মজা করে কাটাই কয়েকটা দিন, পাহাড় যেনো আমাকে টানে সবসময়। মা এখন বলে-"বয়স হয়েছে শরীর টানে না আর আমার গিয়ে কাজ নেই।"
তাই অগত্যা কখনো একা আর কখনো বা বন্ধুদের সাথে চলে যাই পাহাড়ের ডাকে। আমি মনপ্রাণ দিয়ে একজনকে ভালোবাসি সে হল আমার কলিগ তৃষা।আমাদের সম্পর্কটা কয়েকমাস এগিয়েছে। আমি বারবার তৃষাকে বলি বাড়িতে সব কিছু জানাতে, ও খুব বেশি গা করেনা। বলে-"এই তো দিব্যি আছি বিয়ে করে হবেটা কি?"
বছর ঘুরলো আমাদের সম্পর্কের একটা বছর কেটে গেল, তৃষার সাথে দিব্যি সময় কাটে। নামি রেষ্টুরেন্টে খাওয়া কিংবা লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়া দুজন মিলে। মা মাঝে মাঝেই বলে-"আর একা একা ভালো লাগে না আমার, এবার একটা বৌমা নিয়ে আয় বাড়িতে।"
আমি জানি তৃষাকে মা মেনে নেবে। আমার পছন্দকে মা কখনো না করবে না। কিন্তু যতো দিন যেতে লাগলো তৃষা যেনো বদলে যেতে থাকলো। নতুন বসের সাথে তার ওঠাবসা, এমনকি দেখতাম বসের গাড়িতেই ওর রোজকার যাতায়াত। আমি খুব রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম-"এসব কি হচ্ছে তৃষা?"
ক্রূর হাসি হেসে ও বললো-"পরিমল, আমার প্রমোশন দরকার।"
কিছু দিনের মধ্যেই ও আমাদের সম্পর্কটাকে অস্বীকার করলো। অফিসের সবাই আমাকে বললো-"দুঃখ পেয়ো না পরিমল। এরকম মেয়েরা টাকার জন্য সব করতে পারে।"
ওরা তো বোঝেনি ওই মেয়েটাকে আমি আমার সব ভালোবাসা উজাড় করে দিয়ে বসে আছি।
দিনের পর দিন কাটতে লাগলো চোখের সামনে আর আমি দেখতে পারছিলাম না এসব। খুব কষ্ট হতো,বিমর্ষ দেখাতো আমাকে। মা জিজ্ঞেস করতো কারণ কিন্তু চুপ থাকতাম। কিছুদিন পর শুনলাম তৃষা নতুন বসকেই বিয়ে করবে ঠিক করেছে। বাড়ি ফিরে চুপচাপ বসেছিলাম মনে হচ্ছিল জীবন থেকে সব খুশি হারিয়ে যাচ্ছে আমার। তখন মা আমার পাশে বসে সুমনার ছবিটা দেখিয়ে বলেছিল-"দেখতো বাবা পছন্দ হয় কিনা? তোর মামার বাড়ির কাছেই বাড়ি। অভাগী বাপ মা হারা, খুব ভালো মেয়ে।"
সেদিন ওই শ্যামলা মেয়ের ডাগর চোখটা দেখে মনে হয়েছিল কতো মায়া। মা আর দেরি করেনি দেখাশোনা শুরু করে। মায়ের জোরজবরদস্তিতে একদিন যাই সুমনার গ্ৰামে, ওখানেই ওকে প্রথম দেখি ওকে। ওর সাথে যখন কথা বললাম, ওকে আমার জীবনের সব অতীত খুলে বললাম। আমি সেদিন ওকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। হাসি মুখে বলেছিল-"অতীত ভুলে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়াই মানুষের ধর্ম‌। আপনাকে আমার খুব ভালো লেগেছে, আপনার এই সৎ আর সুন্দর মানসিকতার জন্য।"
কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায় আমাদের। সুমনাকে মা খুব ভালোবাসে, সুমনা বাড়িতে পড়াশোনা করে। মা ওকে বলে-"তোকেও প্রতিষ্ঠিত হতে হবে তুই আমার ছেলের বৌ বলে ওর উপর নির্ভর করে চলবি আমি তা কখনোই চাই না।" আমিও ওকে আঁকড়ে বাঁচি, ও আমার স্ত্রীর থেকে ভালো আমার বন্ধু। এইভাবে মাস তিনেক কাটলো, সুমনা বিভিন্ন জায়গায় চাকরীর ইন্টারভিউ দেওয়া শুরু করলো।
কিন্তু আমি অফিস গিয়ে দেখতাম অন্য চিত্র। তৃষা আমার সাথে এখন নিজে থেকেই কথা বলতে আসে। প্রায় ফোন করে, আমি তৃষাকে বোঝানোর চেষ্টা করি আমি এখন বিবাহিত আমার স্ত্রী আছে। তৃষার কথা শুনে চমকে উঠলাম ও বললো বস নাকি ওকে ঠকিয়েছে। বস নাকি বলেছিল আমার সাথে সম্পর্ক রাখলে আমার বড়সড় ক্ষতি করে দেবে। আমি অবাক হয়ে ভাবলাম বসের সাথে আমার শত্রুতা কিসের? কিন্তু আমার প্রথম ভালোবাসাকে অবিশ্বাস করতে পারলাম না। তৃষা আমাকে প্রায় দিন বলতে লাগলো-"আমরা কি আবার নতুন করে শুরু করতে পারি না?"
আমি বলতাম-" না অন্যায় হবে তাহলে সুমনার সাথে।"
ফোন রাখতে বললে সুইসাইড করার ভয় পর্যন্ত দেখাতো আমাকে। এইভাবে আমি খুব অসহায় হয়ে পড়ছিলাম দিনের পর দিন।
আস্তে আস্তে সুমনার সাথে আমার দূরত্ব তৈরি হতে থাকলো। একদিন সুমনা বললো-" আমি রাতে তোমাদের সব কথা শুনেছি। আমি চাই তুমি খুশি থাকো। তোমরা আবার নতুন করে শুরু করো, তোমায় এইভাবে কষ্ট পেতে দেখতে আমার ভালো লাগে না।"
সেদিন আমি অবাক হয়েছিলাম মেয়েটার ত্যাগ দেখে।সুমনা বললো-"আমি স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই সংসারের মায়ায় নিজেকে জড়াতে চাই না আর‌। তোমাকে জানিয়ে রাখি একটা চাকরি আমি পেয়ে গেছি। আমি ঠিক করেছি কিছু দিনের মধ্যেই এ শহর ছেড়ে দূরে চলে যাবো‌। ডিভোর্স পেপার রেডি করো।"
আমার সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে হয়ে গেল ডিভোর্সটা।
আমি অনেকবার বলেছিলাম মাসে মাসে টাকা পাঠিয়ে দেবো যোগাযোগটা অন্তত রাখতে। কিন্তু মেয়েটা বড্ড অভিমানী চলে গেছে সে আমাকে একা করে। এখন মনে হয় সুমনার জায়গাতে আর কাউকে বসাতে পারবো না।সব নিয়ে গেলেও সুমনা একটা জিনিস নিয়ে যেতে ভুলে গেছিল, ওর লেখা ডায়েরী। পড়তেই চোখে জল চলে এলোএলো, কতো স্বপ্ন ছিল মেয়েটার আমাকে নিয়ে।আফসোস করতে থাকলাম কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, কয়েক মাসের মধ্যে বিনা দোষে তৃষা আমার উপর আনলো শ্লীলতাহানির অভিযোগ। সেই যাত্রায় বস এসে বাঁচালো আমায়, অফিসের কলিগরাও আমার পাশে দাঁড়ালো। বস মানুষটা যে এতো সরল আমি ভাবতে পারিনি। তিনি প্রমাণ করলেন তার সাথেও এইভাবে তৃষা তার সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে চেয়েছিল। বস বুঝে যাওয়ায় বেঁচে গেছেন। মা কেঁদে বললো বাড়ি থেকে আমার লক্ষী চলে গেছে, তৃষাকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা হল। এরপর কেটে গেছে পঁচিশটা বছর। আর নতুন করে সংসার করার স্বপ্ন আমি দেখিনি। মায়ের মৃত্যুর পর বড় একা হয়ে পড়েছি। সময় কাটে সুমনা আর ওর ডায়েরির লেখা পড়ে। বয়েসের তুলনায় যেনো একটু বেশি বুড়িয়ে গেছি আমি। কিন্তু ওই পাহাড় যে আজও আমায় টানে।
একবার পাহাড়ে উঠতে গিয়ে বেশ হাঁফিয়ে পড়লাম আমি। তখনই দেখলাম এক উজ্বল তরুণকে। ছুটে এসে বললো-"আঙ্কেল আপনার কষ্ট হচ্ছে?"
পাথরের উপর বসিয়ে জল খেতে দিল। ছেলেটার সাথে আলাপ হয়ে বেশ ভালো লাগলো। বললো-"জানেন আঙ্কেল এই পাহাড় আমাকে টানে তাই ছুটি পেলেই মাকে নিয়ে চলে আসি।"
আমি বললাম-"আর বাবা?"
ছেলেটা বললো-"বাবা তো নেই।"
ছেলেটার মধ্যে যেনো নিজেকে তরুণ বেলাকে খুঁজে পেলাম। যে কদিন ছিলাম প্রায়দিনই দেখা করতাম ছেলেটার সাথে। বলে যেতাম নিজের জীবনের সব কথা।বলতাম আমি এই বয়সে কতোটা একাকী, অসহায়। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম-"তোমার মা কি বেরোন না?"
ছেলেটা বলেছিল-"মায়ের শরীরটা খারাপ, তবে আপনার সব গল্প আমি মাকে বলি।"
চলে যাওয়ার সময় খুব কষ্ট হল কদিনে ছেলেটার উপর বড় মায়া পড়ে গেছিল।
কয়েক সপ্তাহ পর ছুটির দিনে বারান্দায় বসে খবরের কাগজ পড়ছি, দেখলাম একটা গাড়ি এসে থামলো বাড়ির সামনে। এগিয়ে গিয়ে যা দেখলাম বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার সামনে দাঁড়িয়ে সুমনা। বয়স হয়েছে বটে কিন্তু ওই কাজল কালো চোখ দুটো আগের মতোই মায়াবী। বললো- "আমি ভেবেছিলাম তুমি তৃষার সাথে দিব্যি সংসার করছো। কিন্তু পাহাড়ে গিয়ে আবিরের মুখে তোমার কথা শুনে খুব কষ্ট হল। মনে হল এখন আমাকে আর আমাদের ছেলেকে তোমার খুব দরকার।" "আমাদের ছেলে?"-অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
সুমনা বললো-'হ্যাঁ আমি তো যাওয়ার সময় বলেই গেছিলাম তোমার কাছ থেকে একটা খুব দামী জিনিস নিয়ে যাচ্ছি।"
দেখলাম পাহাড়ে দেখা সেই সুদর্শন তরুণ নেমে এলো আমার দিকে। এসে মুচকি হেসে বললো -"তাহলে আঙ্কেল আপনিই আমার বাবা তাইতো?"
জড়িয়ে ধরলাম ছেলেকে। আমাদের দুজনের চোখে জল। আমি কখনো ভাবিনি,যে পাহাড়ের প্রতি আমার এতো আকর্ষন সেই পাহাড়ই আমাকে শেষ বয়সে ফিরিয়ে দেবে আমার পরিবার। ছেলে বলে উঠলো-"বাবা অনেক দূর থেকে গাড়ি চালিয়ে এসছি,একটু বিশ্রাম দরকার। তোমার এখন তোমাদের এতোদিনের রাগ অভিমান মেটাও।
সমাপ্ত।

Priya deb chakraborty

25/11/2024

দুঃখ পুষতে নেই!
চায়ের ধোঁয়া'র সাথে উড়িয়ে দিতে হয়!
তারপর বাঁচতে হয়, হাঁসতে হয়,
দুঃখ পুষলে মানুষ কাঁদতে ভুলে যায়,

পাথর হয়ে যায় ,অনুভূতি মরে যায় সযত্নে!

সংগৃহীত

22/11/2024

যেদিন থেকে তোমার সাথে আমি কথা বলা কমিয়ে দেবো। সংগৃহীত Valobasi Kobita

19/11/2024

আমি সুন্দরী নই,
সাদামাটা সাধারণ এতটাই যে,
কারোও গল্পে নায়িকা হওয়া যায় না।

আমি সুচিস্মিতা নই,
বরং হাসলে আমাকে খারাপই লাগে।
আমি সুবক্তা নই,
মেপে কথা, পরিমিত আলাপ আমার দ্বারা হয় না।
উল্টে প্রাণ খুলে কথা বলতেই ভালোবাসি,
সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলতেই শান্তি লাগে মনে।
বিদ্যেবতী বা বুদ্ধিমতী কোনোটাই আমার বিশেষণ নয়,

অতি সাধারণ নগণ্য একটা মেয়ে, এতটাই যে,
কারও কবিতায় কল্পিত নারী হওয়া যায় না।

আমি ভীষণ একগুঁয়ে, জেদি, নাছোড়বান্দা ধরণের।
বারণ শুনি কিন্তু অকারণে বারণ মানি না।
অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে পারি না কোনোদিন।
কথায় কথায় চোখে জল আসে ঠিকই কিন্তু সেটা অস্ত্র নয় বরং আড়াল করি।
আমি ভীষণ রকম ভঙ্গুর কিন্তু টের পেতে দিই না,
পাছে আঘাতকারীর অনুকম্পা হয়।
আমি আদতে অচল আজকের দুনিয়ায়,
সবাই যখন ভীষণ ভাবে আধুনিক আমি তখন
পুরোনো দিনে বাঁচি।
প্রাগৈতিহাসিক বলে ঠাট্টা করে অনেকে আড়ালে জানি,
তবু বদলাতে ইচ্ছে করে না।

আধুনিকতার বিরোধী নই তবে বিশ্বাস করি,
আধুনিকতা পোশাকে নয় মনে হয়।
আমি আল্লাহ বিশ্বাসী কিন্তু কুসংস্কারে নয়।
আমি মনে করি কাউকে দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার হলো সময় যা ক্রয় করা যায় না।
আমি প্রার্থনায় বিশ্বাসী কিন্তু ভণ্ডামিতে নয়।
লোক দেখানো লৌকিকতা আমার আসে না,
যেটুকু মন থেকে আসে সেটুকুই করি।
আমি বদমেজাজি, কঠোর এটা জেনেও পাল্টাতে পারি না নিজেকে।
নিজের অসহয়তা যতটা না পীড়া দেয় তার চেয়েও বেশি পীড়িত হই, প্রিয়জনের অসহায় অবস্থায়।
আমি এরকমই, হয়তো তাই আজ পর্যন্ত কারও প্ৰিয় হয়ে উঠতে পারি নি।
লেখা- সংগ্রহীত

19/11/2024

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাটিতেছি। বনলতা সেন ।জীবনানন্দ দাশ। Valobasi Kobita

12/11/2024

যে কোন সম্পর্কে আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার হলো দুজন মানুষের একসাথে কথোপকথনের মুহূর্তটা। এটা কাব্য, কবিতা, গান, উপন্যাসের প্রিয় লাইন কিংবা খুব আবেগপূর্ণ কিছু হতে হবে এরকম না.....।
সাধারণ কথোপকথন......।
একে অপরের সম্পর্কে জানা.....,
স্বপ্নগুলো সম্পর্ক জানা.....,
তার একান্তই দুঃখবোধের সাথে পরিচয় হওয়া........, ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা......,
মাস শেষে শূন্য পকেটের যাযাবর জীবন.....,
নিজেদের ভেতরকার দূরুত্ব কিংবা সাধারণ সাংসারিক কথাবার্তা......।
এই যে প্রেম- ভালোবাসা কিংবা আবেগপূর্ন হাওয়ায় ভাসানো স্বপ্নের বাহিরে আমাদের রোজনামচা জীবনের এই কথাগুলো জানা.......,
বলতে পারা, বুঝতে পারা এগুলোই জীবনের সবচেয়ে কাল্ট মোমেন্টস...।
আমাদের সুখের গল্প কিংবা হাওয়ায় ভাসানো প্রেমময় কথা বলার জন্য অনেক মানুষই থাকে কিংবা জীবনে এরকম অনেকেই আসে.....।
কিন্তুু আমাদের জীবনের সমস্যাগুলোর কথা শুনবে..., স্বপ্নগুলো সম্পর্কে জানবে এবং আমাদের একান্তই দুঃখবোধের সাথে পরিচয় হয়ে একটুখানি ভরসা হয়ে পাশে থাকবে.....,
আমাদের পরিস্থিতিগুলো কিছুটা আমাদের মতো করে বুঝবে এমন মানুষ আমাদের জীবনে খুব কমই আসে। আর একসময় তারাও বিরক্ত কিংবা ক্লান্ত হয়ে পাশে থাকার বদলে দূরুত্বটাকেই বেছে নেয়.....।
মানুষ কথা বলতে চায়....,
মন খুলে নিজের কথাগুলো কাউকে না কাউকে জানাতে চায়....।
শুধু কথা বলে জীবনের অর্ধেক সমস্যা সমাধান করা যায়....।
শুধু প্রয়োজন হয় সেই কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনা এবং বুঝতে পারার মতো একটা নির্দিষ্ট মানুষের....।
মতের অমিল থাকতে পারে....,
পছন্দের হের- ফের হতে পারে তবুও একসাথে বসে কথা বলে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ....।
গুরুত্বপূর্ণ এরকম একটা মুহূর্ত বাঁচিয়ে রাখার...... ।
ঋতর স্বর

10/11/2024

তুমি সম্পর্কটা ঝুলিয়ে রেখেছ, আমি বুঝে গিয়েছি তুমি দায়িত্ব নিতে চাচ্ছ না।
তুমি গুরুত্ব কমিয়ে দিছ,
আমি বুঝতে পেরেছি তুমি দুরত্ব চাইছ।
ইদানীং তোমার খুব বেশি ঘুম পায়,
আমি বুঝে গিয়েছি কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছ।।
তাই ছ্যাচড়ামি না করে, তোমার থেকে আমার আত্মসম্মান বাঁচিয়ে রাখা জরুরী তাই নিঃশব্দে সরে এলাম।।
ভালো থাকো।।

অপরাজিতা

10/11/2024

তুমি সম্পর্কটা ঝুলিয়ে রেখেছ, আমি বুঝে গিয়েছি তুমি দায়িত্ব নিতে চাচ্ছ না।
তুমি গুরুত্ব কমিয়ে দিছ,
আমি বুঝতে পেরেছি তুমি দুরত্ব চাইছ।
ইদানীং তোমার খুব বেশি ঘুম পায়,
আমি বুঝে গিয়েছি কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছ।
তাই ছ্যাচড়ামি না করে, তোমার থেকে আমার আত্মসম্মান বাঁচিয়ে রাখা জরুরী তাই নিঃশব্দে সরে এলাম।
ভালো থাকো।।

অপরাজিতা

09/11/2024

ভালোবাসতে বলি না আমায়।
শুধু অকপটে স্বীকার করে নাও, তুমি আমায় ভালোবাসোনি কখনো।

শুধু স্বীকার করো, মায়া লাগে না আমার মলিন মুখখানা দেখে। আমার এই একাকিত্ব, হতাশায় হাবুডুবু খাওয়া, সময়ের হেরফেরে নিজেকে ভুলে যাওয়ায় তোমার কিচ্ছু যায় আসে না।

আমি তো ভালোবাসতে বলিনি।
ভালোবাসা কী জোর করে হয়? হাত জোর করে ভিক্ষা চেয়ে পয়সা পাওয়া যায়, তবে ভালোবাসা নয়।

শুধু স্বীকার করে নাও, পৃথিবীতে অনুভূতি সবার প্রতিই আসে না। এই ভনিতার খেলায় আমি ভালো নেই!

আমি তো দয়া ভিক্ষা চাইনি কখনো।
ভালোবাসা পাইনি বলে এই বোকা বানানোর খেলায় আমি প্রতিযোগী হতে চাইনি। শুধু অকপটে স্বীকার করে নাও, ভালোবাসোনি কখনো।

ভালোবাসলে মানুষের ব্যবহারে ভালোবাসার আচরণ পরিলক্ষিত হয়। যাকে ভালোবাসা যায়, তাকে অবহেলা-অনাদরে ফেলে রাখা যায় না। পৃথিবীতে মানুষ তো তাকেই সবচেয়ে সুখী দেখতে চায়, যাকে সে সত্যি ভালোবাসে।

এই যে এতকাল আমি একা পথ হাঁটি, ক্লান্ত ভীষণ– দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরে! একাকিত্ব, হতাশায় রোজ একবার করে ম রে যাই! কই? আমার জন্য আফসোস হয় তোমার? কখনো না বলতেই বুঝেছো, আমি ভালো নেই? এই যে এত করে ভুলেছি নিজের অনুভূতি, তুমি যত্ন নিয়েছো আমার? নাওনি তো।

আমায় ভালোবাসো না, শুধু স্বীকার করে নাও...
পৃথিবীতে ভালোবাসা না পেয়েও কাঙ্গাল হয়ে বেঁচে থাকে মানুষ। তবে যে ভালোবাসা মন থেকে আসেনি, যে অনুভূতি সত্যি নয়, সেই ভালোবাসা পেয়ে মানুষ বারবার মরেছে!

শুধু স্বীকার করো, ভালোবাসা না।
ব্যাস, কোনোদিন তোমার মুখের দিকে ফিরেও তাকাবো না। ভালোবাসার অধিকারে লিখবো না শত কবিতা। দোষারোপ নয়, তোমার প্রতি গভীর সম্মানে মাথা নিচু করে চলে আসবো নীরবে।

তুমি বলো, আমায় ভালোবাসো। আর আমি বলি, তা ঠিক কতক্ষণ পর্যন্ত? আমি তো ভালোবাসতে বলিনি তোমায়। শুধু স্বীকার করে নাও, এতদিন যা করেছো সব অভিনয়, সবই ছলনা, ভনিতা ছাড়া কিচ্ছু নয়– আর কিছু নয়। তোমার ভালোবাসা পাওয়ার চেয়ে, এই নিরেট সত্য শোনার আনন্দ আমার কাছে ঢের ভালো।

লেখায়:
মোঃ ফাহাদ মিয়া

09/11/2024

"সে আমার না হোক"তবুও সে জানুক পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে ক্ষুদ্র একটি মানুষ তাকে এক আকাশ সমান ভালোবাসে!সে জানুক তাকে এক পলক দেখার জন্য কেউ আজও অপেক্ষা করে বসে থাকে, সে জানে তাকে আর কোনোদিন পাওয়া সম্ভব নয়,তবুও সে ভালো থাকুক দুনিয়ার সকল সুখ তার হোক,,!!
হটাৎ আমরা অপরিচিত হয়ে গেলাম, অথচ কথা ছিল সারাজীবন পাশে থাকার.!
কোথায় যেনো একটা লেখা পড়েছিলাম। লেখাটা কেনো জানি মাথা থেকে সরাতে পারিনা দীর্ঘ একটা সময় যাবত। "তোমাকে একজন পেয়েছে মানে, আরেকজন কি বিভৎস ভাবেই না তোমাকে হারিয়েছে।"
লেখাটা খুব ছোট, কিন্তু পৃথিবী সমান বিশাল কথাটার গভীরতা। কেউ একজন দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর, কাউকে নিজের করে পাওয়ার স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে; অপেক্ষা করে যাচ্ছে।
অথচ অন্য কেউ কোনো অপেক্ষা ছাড়া, সাধনা ছাড়াই তাকে নিজের করে পেয়ে গেলো। সে জানেও না সে যাকে নিজের করে পেলো, তাকে পেতে একজন কতশত দিন ধরে ক্ষুধার্ত ভিক্ষুকের মত তার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলো
সংগৃহিত

Address

Ranaghat

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Valobasi Kobita posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Valobasi Kobita:

Videos

Share