11/09/2024
কেয়ামতের আগে ঈসা (আ.)-এর পৃথিবীতে অবতরণ❤🕋
পরবর্তী আয়াতগুলো দ্বারাও তাই বুঝা যায়। এ প্রসঙ্গে তাফসিরকার মুজাহিদ (রহ.) বলেন, কেয়ামতের আগে ঈসা ইবনে মারিয়ামের আগমন কেয়ামতের নিদর্শন। তাহলে আয়াতের মর্মার্থ দাঁড়াল-নিশ্চিত বিষয় হলো, ঈসা (আ.)-এর অবতরণ কেয়ামতের নিদর্শন। অতএব এতে কোনো সন্দেহ করো না। (তাফসিরে তাবারি : ২১/৬৩১; তাফসিরে দুররে মানসুর : ৭/৩৮৭)।
ঈসা (আ.) কোথায় এবং কখন অবতরণ করবেন?
তিনি ফজরের নামাজের সময় অবতরণ করবেন। দামেস্কের উমাইয়া জামে মসজিদে তাকবিরে উলা বলা হয়ে যাবে এমন সময় অবতরণ করবেন। নামাজের জন্য প্রথম কাতারে দাঁড়াবেন। দায়িত্বরত মুসলিম ইমাম তখন শ্রদ্ধাভরে অনুরোধ করবেন, হে রুহুল্লাহ, আসুন, আমাদের ইমামতি করুন। তিনি বলবেন, না, তোমরা বরং একে অন্যের আমির। এটাই সেই সম্মান, যা আল্লাহ তায়ালা এই উম্মতকে দান করেছেন।’ (মুসলিম : ১৫৬)। অন্য হাদিসে আছে, দায়িত্বরত ইমাম হবেন ইমাম মাহদি। নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে এসছে, নবী ঈসা (আ.) জাফরানের রঙের দুটি পোশাক পরে এবং দুজন ফেরেশতার পাখার ওপর হাত রেখে দামেশক শহরের পূর্বে অবস্থিত সাদা মিনারের উপরে অবতরণ করবেন।’ (মুসলিম : ২৯৩৭)।
দাজ্জালকে হত্যা করবেন
পৃথিবীতে তখন দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। সে ধোঁকাবাজি ও শঠতার জাল বিস্তার করে নিজেকে মাসিহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াবে। এক পর্যায়ে সে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে। নবী ঈসা (আ.) ‘লুদ’ ফটকের কাছে তাকে হত্যা করবেন। মুজাম্মি ইবনে জারিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ঈসা ইবনে মারিয়াম দাজ্জালকে বাবে লুদে হত্যা করবেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৩৮৬৮৯)। লুদ হচ্ছে বাইতুল মাকদিসের পশ্চিমে উপকূলীয় নগরী তেল আবিব ইয়াফু থেকে রামাল্লাহগামী রাজপথের ধারে ফিলিস্তিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নগরী। বর্তমানে ইসরাঈল সেখানে একটি বিশাল বিমানবন্দর বানিয়ে রেখেছে। (আউনুল মা‘বুদ, মুহাম্মদ আবাদিকৃত : ১১/৩০২)।
সুবিচার প্রতিষ্ঠা : ঈসা (আ.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ। অচিরেই ন্যায় বিচারক শাসক হিসেবে ঈসা (আ.) তোমাদের মাঝে আগমন করবেন। তিনি ক্রুশচিহ্ন ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর হত্যা করবেন এবং জিযইয়া প্রত্যাখ্যান করবেন। ধন-সম্পদ প্রচুর হবে এবং তা নেওয়ার মতো কোনো লোক পাওয়া যাবে না। এমনকি মানুষের কাছে একটি সেজদা দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত বস্তু হতে শ্রেষ্ঠ হবে।’ (বুখারি : ৩৪৪৮)।
ঈসা (আ.) পৃথিবীতে থাকার সময়কাল? ঈসা (আ.) বর্তমানে চতুর্থ আসমানে আছেন। কেয়ামতের আগে পথিবীতে এসে ৪৫ বছর জীবিত থাকবেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ঈসা ইবনে মারিয়াম জমিনে অবতরণ করবেন। এরপর তিনি বিয়ে করবেন এবং তার সন্তানাদিও জন্মলাভ করবে এবং তিনি ৪৫ বছর অবস্থান করবেন। অতঃপর তিনি ইন্তেকাল করবেন। তাকে আমার সঙ্গে আমার কবরের সঙ্গে দাফন করা হবে। কেয়ামতের দিন আমি ও ঈসা ইবনে মারিয়াম একই কবরস্থান থেকে আবু বকর ও ওমরের মাঝখান থেকে উত্থিত হব।’ (মিশকাত : ৫৫০৮)।