30/11/2023
🌺*সামাজিক আদব-শিষ্টার: সালাম ও অনুমতি প্রার্থনা🌺👇🆗👇 🌹🆗🌹
--------✴[ শেষ-পার্ট: ]✴---------
*📚অন্যের ঘরে প্রবেশ: অনুমতি প্রার্থনার আদবের প্রতি যত্নবান হই*📚
💫আমাদের প্রয়োজনেই আমাদেরকে অন্যের কাছে যেতে হয়, অন্যের ঘরে প্রবেশ করতে হয়। সেক্ষেত্রেও ইসলামের অনন্য আদব-শিষ্টাচার রয়েছে। এবং এ আদব এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলা কুরআনে কারীমে এ বিষয়ে মুুমিনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
🌙একজন আদর্শ মুসলিম কখনো অন্যের ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারে না। এ তো আল্লাহ্ তাআলারই নিদের্শ। আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন--⤵
*یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُیُوْتًا غَیْرَ بُیُوْتِكُمْ حَتّٰی تَسْتَاْنِسُوْا وَ تُسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَهْلِهَا، ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ. فَاِنْ لَّمْ تَجِدُوْا فِیْهَاۤ اَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوْهَا حَتّٰی یُؤْذَنَ لَكُمْ، وَ اِنْ قِیْلَ لَكُمُ ارْجِعُوْا فَارْجِعُوْا هُوَ اَزْكٰی لَكُمْ ، وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِیْمٌ.*
✳*(তরজমা:) হে মুমিনগণ! নিজের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ করো না, যতোক্ষণ না অনুমতি গ্রহণ করো ও তাঁর বাসিন্দাদের সালাম দাও। এ পন্থাই তোমাদের জন্য উত্তম। আশা করা যায় তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে। তোমরা যদি তাতে কাউকে না পাও, তবুও যতোক্ষণ পর্যন্ত তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া না হয়, তাতে প্রবেশ করো না। তোমাদেরকে যদি বলা হয় ফিরে যাও, তবে ফিরে যেও। এটাই তোমাদের পক্ষে শুদ্ধতরো। তোমরা যা কিছুই করো, আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞাতো। *[সূরা নূর: ২৭-২৮]*
🏩কারো ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে অনাকাক্সিক্ষতো দৃশ্যের অবোতারণা হতে পারে। তেমনি খন্ডিতো কোনো দৃশ্যের কারণে মনে জন্ম নিতে পারে কুধারণা। কিংবা কোনো ঘটনার পূর্বাপর না জানার কারণে সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি হতে পারে। তেমনি অনুমতি ছাড়া অনাকাক্সিক্ষতো প্রবেশের কারণে মানুষের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে। তাই এতোসব সন্দেহ-সংশয়ের বেড়াজাল থেকে মুক্ত থাকতে এবং অপ্রীতিকর দৃশ্য বা ঘটনার অবোতারণা এড়াতে ইসলাম অনুমতি গ্রহণের কিছু আদব বর্ণনা করেছে। এখানে আমরা অনুমতি প্রার্থনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু আদব নিয়ে আলোচনা করছি:
✅*এক: অনুমতি চাওয়ার সময় দরজার মুখোমুখি দাঁড়াবে না। বরং দরজার ডান বা বাম পাশে দাঁড়াবে। যাতে দরজা খুললে ভেতরে দৃষ্টি না পড়ে। রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম)* এমনটিই করতেন। আলআদাবুল মুফরাদে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে বুসর (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে বর্ণিতো, তিনি বলেন--⤵
*أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ إِذَا أُتِيَ بَابًا يُرِيدُ أَنْ يَسْتَأْذِنَ لَمْ يَسْتَقْبِلْهُ جَاءَ يَمِينًا وَشِمَالًا فَإِنْ أُذِنَ لَهُ وإلا انصرف.*
✳*(অনুবাদ:) নবীজী *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম)* যখন কারো দরজায় যেতেন তখন অনুমতি চাওয়ার জন্য দরজার মুখোমুখি নয়; বরং ডানে বা বামেই থাকতেন। যদি তাঁকে অনুমতি দেওয়া হতো; (তাহলে প্রবেশ করতেন) অন্যথায় ফিরে আসতেন। *[আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১০৭৮]*
🌻অনুমতি গ্রহণের একটি মৌলিক ফায়দা হলো, দৃষ্টির হেফাজত। হযরত সাহল ইবনে সা‘দ (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে বর্ণিতো, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম)* বলেছেন--⤵
*إِنّمَا جُعِلَ الِاسْتِئْذَانُ مِنْ أَجْلِ البَصَرِ.*
✳*অর্থ: অনুমতি গ্রহণের বিধান দেওয়াই হয়েছে (অনাকাক্সিক্ষতো) দৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য। *[সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৪১]*
✅*দুই:* প্রথমেই সালাম দেবে। আর সালাম দেওয়ার অর্থই হলো অনুমতি চাওয়া। সালাম দেওয়ার আগে অনুমতি চাওয়া সঠিক পদ্ধিত নয়।
✅*তিন:* যখন ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চাওয়া হবে, তখন স্পষ্ট করে নিজের নাম বলবে, যে নামে সবাই তাকে চেনে-জানে। অস্পষ্ট কোনো শব্দে-পরিচয় দেবে না। যেনো তাকে সহজেই চেনা যায়।
📚রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম)* তাঁর সাহাবাদের এটি শিখিয়েছেন।হযরত জাবের (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন, একবার আমি আবার বাবার ঋণ পরিশোধের বিষয়ে কথা বলতে নবীজীর কাছে গেলাম। দরজায় আওয়াজ দিলে নবীজী জিজ্ঞেস করলেন- কে? বললাম, ‘আমি’। তখন নবীজী *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম)* বললেন--⤵
*أَنَا أَنَا*
আমি, আমি। (এটা আবার কী!) এভাবে ‘আমি’ বলে পরিচয় দেওয়াটা নবীজী অপছন্দ করলেন। *[সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৫০]*
❇অর্থাৎ তোমার পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে তো তোমার নাম বলো, স্পষ্টভাবে পরিচয় দাও। তা না করে ‘আমি’ বলার দ্বারা কী ফায়েদা। এর দ্বারা তো বোঝা যাবে না- দরজায় কে। সুতরাং স্পষ্ট করে নাম বলতে হবে।
✅*চার:* যখন ফিরে যেতে বলা হবে, তখন ফিরে যাবে। এমনকি অন্তরে এর জন্য কোনো সংকীর্ণতা অনুভব করবে না। কেনোনা, কুরআন-হাদীসে স্পষ্ট ভাষায় ফিরে যেতে বলা হয়েছে। হতে পারে তাঁর এমন ওজর রয়েছে যা সে তোমার কাছে বলতে পারছে না।
☝আল্লাহ্ তা'আলা আমাদেরকে জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলামী আদব মেনে চলার তাওফীক দান করুন। (আমীন..!)🔚
🌻DUA-MEI-YAAD-RAKHNA🌻