20/06/2022
অহংকার
আত্মার রোগ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। হাদিসে আছে "যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার আছে সে জাহান্নামে যাবে।" এখন কিভাবে বুঝব আমার মনে অহংকার আছে কি না আর এর প্রতিকার কি?ত্বরিকতের পরিভাষা অনুযায়ী অহংকার এর ৪ টি স্তরঃ
১. উজব
২. কিবর
৩. তাকাব্বুর
৪. ইস্তিকবার।
সহজভাবে বললে ৪ স্তর হল যথাক্রমে অহংকারের বীজ, চারাগাছ, বড়গাছ এবং ফসল।
১)উজবঃ প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার মধ্যে কোন গুণ আছে কিনা এবং এজন্য আপনার প্রশংসা পাওয়া উচিত কি না। গুন বলতে ধন সম্পদ, সৌন্দর্য, বংশ, মেধা, ইলম,আমল ইত্যাদি যে কোন কিছু হতে পারে। অন্তর যদি আমার নিজের কিছু গুণ আছে এবং আমি এর জন্য প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য তাহলে বুঝতে হবে আমার মনে অহংকার এর বীজ আছে।
২)কিবরঃ যখন এই মনে মনে প্রশংসা পাওয়ার আকাংখা মানুষ মুখে প্রকাশ করে এবং অন্যের প্রশংসা না পেলে মনে কষ্ট পায়, তখন বুঝতে হবে আমার মনের অহংকার এর বীজ চারাগাছে রূপান্তরিত হয়েছে।
৩)তাকাব্বুরঃ এই স্তরে এসে একজন ব্যক্তি নিজের যেসব গুণের জন্য অন্যের প্রশংসা কামনা করে সেসব গুণ যার মধ্যে নেই তার থেকে নিজেকে বড় মনে করে এবং তুলনা করা শুরু করে। যেমনঃ আমার বাড়ি গাড়ি আছে, অমুকের তো নেই, আমার শিক্ষা ইলম আমল মেধা আছে, অমুক তো মুর্খ। আমি দেখতে সুন্দর অমুক তো দেখতে অসুন্দর। এই সমস্ত মনোভাব অন্তরে আসলে বুঝতে হবে আমার মনে অহংকার এর চারাগাছ বড়গাছে রূপান্তরিত হয়েছে।
৪)ইস্তিকবারঃ এটা অহংকার এর সবচেয়ে ভয়াবহ স্তর।এই স্তরে এসে একজন অহংকারী ব্যক্তি তার গুণের অপব্যবহার করে। নিজের যে গুণ অপরের মধ্যে নাই সে ব্যক্তি কে সমাজে বা লোক সম্মুখে নানাভাবে তাচ্ছিল্য করে বা অত্যাচার করে। শক্তিশালী দুর্বলের উপর অত্যাচার করে, শিক্ষিত ব্যক্তি অশিক্ষিত ব্যক্তিকে জনসম্মুখে লাঞ্চিত করে।
এই ৪ স্তরের কোন স্তরে আমি আছি এখনি যাচাই করে অন্তরের চিকিৎসা করা জরুরি।
কিভাবে অহংকার রোগের চিকিৎসা করব?
যখনই মনে আসবে আমার অমুক গুণ এর জন্য আমি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য তখন ই অন্তর কে বুঝাতে হবে আমার কোন গুণ আমার নিজস্ব নয়। সকল গুণ আল্লাহ তা'আলার দেওয়া। তিনি ই একচ্ছত্র প্রশংসার মালিক। প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য একমাত্র তিনি ই। এই জন্য আমার গুণ গুলোর আল্লাহর কাছে বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করব। এছাড়া সালামের প্রসার করতে হবে ব্যাপকভাবে। হাদিসে আছে যে আগে সালাম দেয় সে অহংকার থেকে মুক্ত।
উপরের আমল গুলো নিয়মিত করতে পারলে আশা করা যায় এই ভয়াবহ আত্মিক ব্যধি থেকে মুক্তি লাভ করা যাবে।
আল্লাহ তা'আলা সকল কে এই রোগ থেকে হিফাজত করুন, আমিন।
(সংগৃহীত)