29/05/2022
তারেক রহমানের চাঁদাবাজির হাতিয়ার নাগরিক টিভি
বাংলাদেশবিরোধী ভয়ংকর অপতৎপরতায় নেমেছে স্বাধীনতাবিরোধী সাইবার সন্ত্রাসী চক্র । বিদেশে বসে তারেক রহমান বিশাল অর্থ ব্যয়ে ভাড়া করেছে সাইবার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাদের কয়েকজন সেনানিবাসে অবাঞ্ছিত ও চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা। কয়েকজন আছেন বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে বিদেশে আত্মগোপন করা ভুঁইফোড় হলুদ সাংবাদিক। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের চিহ্নিত করার পরও দেশের বাইরে থাকায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এই চক্র প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিবার, সরকার, বিচার বিভাগ ও দেশের ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের শীর্ষ এক ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রভাগান্ডা ছড়িয়ে তার কাছে ৬ কোটি টাকা চাদা দাবি করেছে । তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। সাইবার সন্ত্রাসীদের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। সম্প্রতি নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু লোক বিদেশে অবস্থান করে দেশের সমালোচনা করে এবং ভাবমূর্তি নষ্ট করে। আমরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে উন্নীত করেছি। এখন তাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা । আমার প্রশ্ন হলো, কী করে তারা এ শব্দগুলো উচ্চারণ করার সুযোগ পায়! আমরা বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তুলেছি বলেই তারা এটা বলার সুযোগ পেয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের কাছ থেকে সরকারের সমালোচনাকারীরা মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করে। যদি তারা নীতিমান হয় এবং তাদের কোনো আদর্শ থেকে থাকে, তাহলে তারা আমাদের তৈরি ডিজিটাল সিস্টেমগুলো কেন ব্যবহার করে?” ।
দেশের বাইরে থাকা এক ডজন শীর্ষ সাইবার সন্ত্রাসীকে চিহ্নিত করা গেছে। তারা হলেন- সুইডেন প্রবাসী ও নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, কানাডা প্রবাসী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর দেলোয়ার হোসেন, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ও কোর্ট মার্শালে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে অবসরে যাওয়া সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান, কানাডা প্রবাসী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন শহীদ ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস ও বিসিএস ’৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে আত্মগোপনে থাকা মোহাম্মদ শামসুল আলম, শিবির ক্যাডার ও কানাডা প্রবাসী নাজমুস সাকিব, কানাডা প্রবাসী কথিত ব্যারিস্টার এম রহমান মাসুম, কানাডা প্রবাসী কথিত সাংবাদিক ও ইউটিউব-ফেসবুকভিত্তিক ভুঁইফোড় চ্যানেল নাগরিক টিভির সিইও টিটো রহমান, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ মামলার আসামি হয়ে বিদেশে আত্মগোপন করা সাংবাদিক কনক সারোয়ার । এসব সাইবার অপরাধী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা অপপ্রচার ও গুজব রটিয়ে চলেছে। তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারায় বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) কর্মকাণ্ড অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
নাগরিক টিভির ৬ কোটি টাকা চাদা দাবিঃ
এক ভয়েস ক্লিপে শুনা যায় ভুয়া নাগরিক টিভির নাজমুস সাকিব ও টিটো রহমান দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ি গ্রুপের মালিককে ব্ল্যাকমেইল করে চাদা দাবি করেছে । গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায় এই চাদা দেওয়ার জন্য মিজান নামের একজনের ০১৭১৪০৪৫২২৪ নাম্বার দিয়ে ৪০ লাখ টাকা দিতে বলেন এবং এ এস এম সাইফুল হক সিটি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চের একাউন্ট নাম্বারে 1101008272001 বিশ লাখ টাকা একই ব্যাক্তির উত্তরা ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্রাঞ্চের একাউন্ট নাম্বারে ০০১২১০০২১১২৯৪ আরও বিশ লাখ টাকা । কমন হ্যান্ডওয়ার এন্ড ইনটেরিয়র সলিউশান এর ইসলামি ব্যাংক ফেনি ব্রাঞ্চে ২০ লাখ ।
এছাড়াও ভুয়া নাগরিক টিভি চক্র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর নাটক সাজিয়ে বিভিন্ন সময় চাদা বাজি করার তথ্য রয়েছে ।
ভুয়া নাগরিক টিভির প্রধান টিটো রহমানঃ
কানাডা প্রবাসী ক্রিমিনাল, কালপ্রিট ও সাইবার সন্ত্রাসীদের সংঘবদ্ধ চক্রের মাস্টারমাইন্ড সাংবাদিক নামধারী টিটো রহমান। তার পুরো নাম মোস্তাফিজুর রহমান টিটু ওরফে টিটো রহমান। দিনাজপুর পৌরসভার ইটগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা টিটো রহমান ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার আসামি। জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা টিটো নিজেই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার কারিগর আবদুস সালাম পিন্টুর ঘনিষ্ঠজন বলে দাবি করেন। কানাডায় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া একটি ফ্ল্যাটে থেকে সরকারের রিফিউজি ভাতা খান। আগের পরিচয় আড়াল করতে টিটো নিজেকে কানাডার নাগরিক টেলিভিশনের সিইও বলে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করেন। প্রবাসে থেকে ইউটিউব ও ফেসবুকভিত্তিক পেজ খুলে চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড। সস্তায় জনপ্রিয়তা পেতে তিনি সরকারবিরোধী চক্রকে সঙ্গে নিয়ে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নানা গুজব, মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালান।
কথিত এই ভুয়া সাংবাদিক টিটোর প্রধান উদ্দেশ্য দেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে বহির্বিশ্বে প্রমাণ করা। দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে আগুনসন্ত্রাসের দোসরদের সঙ্গে নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধীদের দোসর হিসেবে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৮ সালে সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার মাস্টারমাইন্ড এই টিটো। তার বিরুদ্ধে প্রবাসে বসে ব্ল্যাকমেলিং ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তা-ই নয়, সরকারবিরোধী জামায়াত-বিএনপির অর্থ নিয়মিত তার কাছে কানাডায় যায় বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। টিটো রহমান প্রতিদিনই মেজর দেলোয়ার হোসেন, কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান ও সাবেক ক্যাপ্টেন শহীদ ইসলামকে নিয়ে সরকারবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছেন।
জামাতের এজেন্ট নাজমুস সাকিবঃ
কানাডা প্রবাসী ও ছাত্রশিবিরের ক্যাডার নাজমুস সাকিব। কানাডায় বসে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ন্ত্রিত ইউটিউব চ্যানেলে দিনরাত মিথ্যাচার করেন তিনি। তিনি শিবিরের ক্যাডার ছিলেন। তারেক জিয়ার ক্যাডার পরিচয় দেওয়া নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। তার সঙ্গে তারেক রহমান ও জামায়াতের ব্যারিস্টার রাজ্জাকের যোগাযোগ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারকে টার্গেট করে অপতৎপরতা ছড়ানোই তার লক্ষ্য। জানা গেছে, নিউইয়র্ক ও লন্ডনে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর রেখে যাওয়া অর্থ নাজমুস সাকিবকে পাঠানো হয় প্রতি মাসে। এ ছাড়া লন্ডন থেকে যায় তারেক রহমানের অর্থ। এই টাকা দিয়ে নাজমুস সাকিব গং নাগরিক টিভি নামের একটি আইপি টিভি খুলে সরকারবিরোধী প্রচারণা পরিচালনা করছে।
এম রহমান মাসুম কানাডা প্রবাসী এবং ভুঁইফোড় অনলাইন নাগরিক টিভির আরেক বক্তা। নাজমুস সাকিব ও টিটো রহমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে সরকারবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত। তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কপালে শনি আছে। আপনারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন, আগুন জ্বলছে কিন্তু…। ’ এসব বক্তব্য দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মারাত্মক বিদ্বেষ ছড়ান। ব্যারিস্টার পরিচয় দেওয়া এম রহমান মাসুম সারা দেশে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার আসামি। কানাডা প্রবাসী মাসুম সাইবার সন্ত্রাসীদের সংঘবদ্ধ চক্রের একজন। বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে তার নাম। বিএনপি-জামায়াতের অর্থায়নে তিনি তৎপরতা চালাচ্ছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এম রহমান মাসুম ঢাকা মহানগর ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তিনি তারেক রহমান ও জামায়াত থেকে নিয়মিত অর্থ পান বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে তার এসব প্রপাগান্ডা মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। তার লাইভগুলোতে ভিউ নেই বললেই চলে।