24/09/2024
Talukder
তোফাজ্জেলের পরিবারের মধ্যে একজন খুনি আছে !!!
তোফাজ্জেল আমার ফুফাতো ভাই + দুধ ভাই (আমরা একই মায়ের দুধ খেয়ে আমরা বড় হইছি )
তোফাজ্জেলকে যারা মেরে ফেলেছে তারা তো অবশ্যই খুনি !! কিন্তু আমার মতে তোফাজ্জেলের আরো দুজন খুনি অপরাধীর নামের খাতা থেকে বাদ পরে গেছে, সেই দুইজন হলো ওর (একমাত্র ভাবি এবং ভাইয়ের শ্বাশুড়ি)
অনেক পরিবারে ভাবি আছেন যারা মায়ের মতো আদর, স্নেহ দিয়ে আগলে রাখেন কিন্তু তোফাজ্জেল এতোটাই হতোভাগা ছিলো কোন দিন ভাবির হাতে একপ্লেট ভাত খেতে পারে নাই । আজ সেই পাগলাটা ভাতের খোঁজেই মারা গেলো !!
তোফাজ্জেলের পরিবারের শেষ আশ্রয়স্থল ছিলো ওর একমাত্র ভাবি, যে কিনা ওর সাথে কুকুর বিড়ালে মতো আচরন করতো !!
তোফাজ্জেল সুস্থহোক সে সেটা কখনোই চায় নাই , কেন চায় নাই জানেন ??? কারন তোফাজ্জেল সুস্থ হলে সমস্ত সম্পত্তিতে ভাগ বসাবে !!
তোফাজ্জেলকে যখন ফজলুল হক হলের ছাত্ররা অত্যাচার করতে ছিলো,তখন অভাগাটা, নিরুপায় হয়ে ভাবিকেই কল দিতে বলেছিলো, হয়তোবা ও ভেবেছিলো ভাবির মনটা আমার জন্য একটু হলেও কাঁদবে । ওর ভাবি ফোন পেয়ে কি করেছিলো জানেন ??? সে মোবাইল চোরের বিচার ছাত্রদেরকেই করতে বলেছিলো এবং এটাও বলেছিলো যে, তাকে যেন এ ব্যাপারে আর ফোন দেয়া না হয়। এই বলে রাতে ফোনটা বন্ধ করে ঘুমিয়ে গেছিলো !!!
তোফাজ্জেলের বড় ভাই যখন রাজারবাগ পুলিশ হসপিটাল মৃত্যু সজ্জায় তখন ভাইয়ের সেবা যত্ন তোফাজ্জেল করতো। ঐ সময় ওর ভাবি এবং তার মা কতোটা মানসিক টর্চার করতো আমি তার জলজ্যান্ত প্রমান !!
তোফাজ্জেল কখনো যদি ক্ষুধার জ্বালায় ভাবির কাছে একপ্লেট ভাতের আশায় যেতো, গ্রামের বাড়িগুলোতে যখন পাগলা কুকুর বাড়িতে ডুকলে লাঠি দিয়ে তাড়া করতো,ঠিক ওর ভাবিও সেইম কাজটা করতো ওর সাথে !!
তোফাজ্জেলের ভাই পুলিশের এসআই ছিলো,যে জীবিত অবস্থা মোটামুটি ভালো একটা সম্পত্তির রেখে গেছেন , যেটার পরিমান কয়েক কোটি টাকা যেমন( পেনশন + তিনটা জীবনবীমা + এফডিআর + চরদুয়ানী ব্রিজের পাশে দুই তিনটা দোকান + নাসির ভাইয়ের কিছু পারসোনাল জমি রাখা + তার বাবার সম্পত্তি) বলা ভালো, তোফাজ্জেলের ভাবি তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। এই কারনে তোফাজ্জেল সুস্থ থাকুক সে সেটা কখনোই চায় নাই !!
তোফাজ্জেল বাবা- মা, প্রেমিকা হারিয়ে যখন পাগল প্রায় , ওর ভাই মানসিক ডক্টর দেখিয়েছে , সেটার জন্য কতোনা অশান্তি ছিলো বৌ আর শ্বাশুড়ি সাথে,ওর পিছনে কেন টাকা নষ্ট করবে !!
তোফাজ্জেল একপ্লেট ভাত খেতে বসলে কতো না কথা শুনাতো ভাবি , এটা আমার স্বামীর উপার্জন, তুই উপার্জন করে খা। তোফাজ্জেলের একপ্লেট ভাতের বড়ই অভাব ছিলো !!
ওর ভাই যখন রাজারবাগ পুলিশ হসপিটালে ভর্তি, আমি প্রায় রান্না করে নিয়ে যেতাম ভাইয়ার জন্য । ক্ষুধার্ত তোফাজ্জেল ভাবির ভয়ে প্লেটে ভাত নিতো না , আমাকে চোখের ইশারা দিয়ে বলতো ওকে যেন ভাত দেই ...... ওরে ভাত !! ( আসলে ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবীর গদ্যময় পূর্নিমা - চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি )
কি বলবো কষ্টের কথা , ওর ভাই যখন অসুস্থ ছিলো , তাকে দেখতে অনেকেই ফল নিয়ে যেতো। অনেক ফল না খাওয়ার কারনে পঁচেও যেতো, ঐ ফল খাওয়ার অধিকার ছিলো শুধু ওর ভাই - ভাবি এবং বাচ্চার ( একদিন ওর ভাবি ফল বের করতে গিয়ে একটা আঙ্গুর ফ্লোরে পরে যায় আমার সামনেই, তখন তোফাজ্জেল ঐ আঙ্গুর ফলটা লুকিয়ে মুখে দেয়, আমাকে ইশারা দিয়ে বলে অর্ধেক খাবি ??এই দৃশ্য দেখে আমি হসপিটালের বাথরুমে গিয়ে কেঁদেছিলাম , কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারি নাই কারন,ওর ভাই বার বার অনুরোধ করতো তানি দোহাই লাগে কিছু বলিস না , তোফাজ্জেলকে আল্লাহ দেখবেন।
এ রকম অত্যাচারের বর্ননা হাজারটা আছে যেটা বলে শেষ করা যাবে না, ওর ভাবি এতোটা নিষ্ঠুর যেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না !!
এখন আসল কথায় আসি,তোফাজ্জেলের মৃত্যু পরে একমাত্র গার্ডিয়ান হিসেবে দাঁড়িয়েছে ওর একমাত্র ভাবি !! সে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছে, কান্নার অভিনয় করছে,সব ধরনের সাহায্য সহোযোগিতা সে নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নিবে। আমার একটাই প্রশ্ন, সে কোন অধিকারে নিচ্ছে ? যে তোফাজ্জেল জীবিত অবস্থা তার থেকে একটু ভালোবাসা পায় নাই, এখন আসছে গার্ডিয়ান হিসেবে। কেন একমাত্র গার্ডিয়ান হিসেবে দাড়িয়েছে জানেন ? সে এখন তোফাজ্জেল মৃত্যুর বড় একটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পেতে পারে !! ভাবি এইটুকু মাথায় রাখেন, আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না, তোফাজ্জেলের এই অবস্থা পিছনে আপনিও দায়ী ।
আপনারা একটা প্রশ্ন করতেই পারেন,ভাবি তো খারাপ ছিলো কিন্তু এর আত্নীয় স্বজনেরা কি করছে ? হ্যা, মানছি ভাই ওর যতোটুকু ভালোবাসা, যত্ন দরকার ছিলো ততটুকু দিতে পারি নাই কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি ওকে ভালো রাখার !!
তাই,দয়া করে কোন মিডিয়ার পারসোন বা কোন সংস্থা ওর ভাবিকে তোফাজ্জেলের মৃত্যু ব্যাপারে কোন কাজে লাগাবেন না। তোফাজ্জেল আর ফিরে আসবে না,ওর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ, কোন সাহায্য সহোযোগিতা, ওর ভাবি বা আমরা আত্মীয় স্বজন যারা আছি কারোর দরকার নাই। কেউ যদি কিছু করতে চান তাহলে, ওর উদ্দেশ্য করে মসজিদে মিলাদ পরিয়ে দিয়েন যার জন্য তোফাজ্জেলের আত্না শান্তি পাবে। বা হাজারো অসহায় তোফাজ্জেলে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় একপ্লেট ভাতের জন্য, এটা তাদের পিছনে ব্যয় করবেন ।
বিঃদ্রঃ এই লেখাটা পড়ার পরে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না।।
কর্তৃপক্ষ যারা ক্ষতিপূরণ দিবেন আমার মনে হয় তদন্ত না করে দেওয়া ঠিক হবে না।
সত্যিই এরকম ঘটনা যদি ঘটে থাকে তাহলে এই ভিকটিমের, ক্ষতিপূরনের টাকা দিয়ে মসজিদ মাদ্রাসা করে দেয়া যেতে পারে।