'আমরা নিরপেক্ষ নই, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল'
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। শতাধিক বছরের সাংবাদিকতার উর্বরভুমি হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.) সহ তিনশত ষাট আউলিয়ার পূণ্যস্মৃতি বিজড়িত দেশের আধ্যাতিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদে ভরপুর, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য স্থান প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের অসংখ্য সংবাদপত্রের ভিড়ে যোগ হ
লো আরো একটি নতুন পত্রিকা ‘দৈনিক সিলেটের সময়’। চিরায়িত বসন্ত পেরিয়ে প্রকৃতিতে এখন আম-লিচুর ঘ্রাণে ছোটাছুটি করছে মৌমাছি। সোনালি ধানের শীষে ভরা ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে যাত্রা শুরু করলো সিলেটের সময়। ‘সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আমরা অবিচল’ এই অঙ্গীকার নিয়ে সংবাদ পরিবেশনে নিরপেক্ষতা, সততা তথা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার দ্বার উন্মোচনে আমরা সচেষ্ট থাকব। ন্যায়-নীতিনির্ভর সাংবাদিকতার চর্চা বরাবরই প্রাধান্য পাবে সিলেটের সময়। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের অগ্রগতিতে স্বাধীন পত্রিকা দেশের জনগণের শক্তিশালী বাহক। দৈনন্দিন জীবনের নানা অপরিহার্য তথ্য প্রতিদিন পাঠকের হাতে তুলে দেয় সংবাদপত্র। গণতান্ত্রিক যে কোনো দেশে তা সুস্থ গণতান্ত্রিক সমাজের দর্পণ। সমাজ জীবনের দৈনন্দিন পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পৃক্তায় এবং নিরন্তর তার বস্তুনিষ্ঠ উপস্থাপনায় সংবাদপত্র এখনও শক্তিশালী গণমাধ্যম। আমাদের এই অঞ্চলে সংবাদপত্রের বিকাশের পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ পথযাত্রা। নানা চড়াই-উতরাই আর ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আমাদের সংবাদপত্র অঙ্গন আজকের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। বর্তমানে একুশ শতাব্দীর তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর যুগে সাংবাদিকতায় এসেছে নানা বৈচিত্র্য এবং বেড়েছে সুযোগ-সুবিধা। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংবাদপত্র রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলের সংবাদপত্রের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর বারবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে। বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে দুষ্কৃতিপরায়ণ শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতার বীজ বপনে সংবাদপত্র সর্বদা নির্ভীক সৈনিকের মতো দায়িত্ব পালন করেছে। অসি অপেক্ষা মসি অধিকতর শক্তিশালী তা বিভিন্ন সময়ই দেখা গেছে। সুশাসন, মানুষের বাক-স্বাধীনতা, উদার মনমানসিকতা, গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা, মূল্যবোধ, আইনের শাসন, মানবাধিকার, তথ্য অধিকার, ন্যায়বিচার, সামাজিক শান্তি-সমঝোতা, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক তথা সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদপত্রের অবদান অনস্বীকার্য। এ ক্ষেত্রে গণমানুষের মাধ্যম হিসেবে সময়ের ধারাবাহিকতায় পাঠকের চাহিদামতো সংবাদ প্রকাশে সিলেটের সময়-এর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে সংবাদপত্র অঙ্গনে একটি পরিবর্তন লক্ষণীয়। বিশ্বজুড়ে অনেক সংবাদপত্র তাদের প্রিন্ট ভার্সন প্রকাশ বন্ধ করেছে নয়তো কমিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী প্রিন্ট মিডিয়ার এই প্রবণতা থেকে আমাদের দেশের অবস্থান ভিন্ন। বরং নতুন নতুন সংবাদপত্র বাজারে আসছে। কেবল তাই নয়, জাতীয় সংবাদপত্র রীতিমতো একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি আমাদের দেশের প্রিন্ট মিডিয়ার চেয়ে ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া তুলনামূলকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। তবে সে তুলনায় ছাপা সংবাদপত্রের পাঠক তেমন কমেনি। বিশেষ করে আঞ্চলিক সংবাদপত্রের চাহিদা এখনো বিদ্যমান। কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়, পুরো মানবসমাজের সুন্দর, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে নিরলসভাবে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে ‘সিলেটের সময়’ এই অঙ্গীকার আমরা পুনঃব্যক্ত করে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল আমাদের পথচলা শুরু হয়। ভবিষ্যতেও আমরা আপনাদেরকে পাশে পেতে চাই।