17/10/2023
রিক্সাচালকের স্ত্রী এইচএসসিতে গোল্ডেন পেয়েছে,ওনাকে নার্সিং এ পড়াবে শুনে বেশ অবাক হলাম।
আমি হেসে বললাম " কতটাকা লোন তুলবেন? "
" জে ১ লাখ টাকা।ঢাহা শহরে পাঠামু।বহুত টেহা লাগবো "
" এতো টাকার কিস্তি সামলাতে পারবেন? "
" পারমু ছার।মাঝ রাইত অব্দি রিসকা চালামু।এক বেলা খাওয়া কমায় দিমু।সব টেহা বউরে পাঠামু,হের যেন কোনো অভাব না হয় "
আমি লোন পাস করে বললাম " আজহার মিয়া,আরেকবার ভেবে দেখেন।বউকে পাঠাচ্ছেন ঢাকায়,ওখানে যদি....."
আমার কথা থামিয়ে দিয়ে আজহার মিয়া বললেন " না ছার,বউরে ম্যালা বিশ্বাস করি।হেয় আমারে ঠকাবো না।খুব ভালো ঘরের মাইয়া,আমারে বহুত পেয়ার করে "
" হু বুঝলাম।লোন পাস হইছে, পরশু এসে টাকা নিয়ে যাবেন "
আজহার সাহেব হাসি মুখে বেড় হলেন।তাকে দেখে অনেক সুখী মানুষ মনে হচ্ছে।রিক্সাচালক হয়ে বউকে নার্সিং পড়াবে,পরিণতি কি হবে কে জানে!
সেই হাসিটাই ছিলো ওনার মুখের শেষ হাসি।এরপর থেকে ওনাকে আর হাসতে দেখিনি।নীরব হৃদয়ে মুখ ভার করে প্রতি মাসে কিস্তির টাকা নিয়ে আসেন।সেদিন বললাম
" আপনার স্ত্রীর পড়াশোনা কেমন চলে? "
তিনি চোখের জল মুছতে মুছতে বললেন " ছার,হেয় আমারে আর চায় না।হাত,পা ধইরাও আটকাইতে পারি নাই "
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।আজহার মিয়াকে দেখে ভিষণ মন খারাপ হতে লাগলো।বেচারা স্ত্রীকে পড়াবে বলে লোন তুললো,স্ত্রী নেই!অথচ সে এখনো লোন পরিশোধ করছে!
সমাপ্ত
পরিশোধ
জয়ন্ত কুমার জয়