Usman

Usman আকিদায় আশ'আরি, মাতুরিদী।
মাযহাব "ফিক্বহে হানাফি" অনুসারি।

পেজের পক্ষ থেকে আপনাদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।

দ্বীন প্রচার এবং ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারনা পৌঁছে দিতে আমি আপনাদের মাঝে ইসলামিক গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় তুলে ধরবো। এর পাশাপাশি, নিয়মিত শেয়ার করবো:

🔰 ওয়াজ
🔰 মাহফিল
🔰 কুরআন তেলাওয়াত
🔰 সুরা
🔰 কেরাত
🔰 ইসলামিক গান
🔰 গজল
🔰 হামদ
🔰 নাথ
🔰 সহ অন্যান্য ইসলামিক সচেতনতামূলক পোস্ট

দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে এবং ইসলামের প্রতি গভীর ধারণা লাভ করতে, পেজটি লাইক ও ফলো দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।

ধন্যবাদ।

মুজাফ্ফার বিন মুহসিনের লেখা "জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছ:)- এর ছালাত বইটি অজ্ঞতা, মূর্খতা, মিথ্যাচার, জালিয়াতি, আক্...
28/10/2025

মুজাফ্ফার বিন মুহসিনের লেখা "জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছ:)- এর ছালাত বইটি অজ্ঞতা, মূর্খতা, মিথ্যাচার, জালিয়াতি, আক্রোশে ভর্তি। তথাপি কথিত এই ডঃ. শাইখ এর এই জেনারেল শিক্ষিত মুসলমানদের কাছে ব্যাপক সমাদৃত এবং যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য। এই বই পড়ে অনেক সরল মুসলমান প্রতারিত হচ্ছে। মাযহাবের প্রতি তাদের বিদ্বেষ বাড়ছে। এই বই পড়ে তারা এই বইয়ের মিথ্যাচার গুলো পড়ে তাদের মনে এই কথা বদ্ধমূল হচ্ছে যে, মাযহাব মানেই কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী। তাই এই বইয়ের মিথ্যাচার অজ্ঞতা জালিয়াতি নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা পোষণ করলাম।

লেখক তার উক্ত বইয়ের 19 নম্বর পৃষ্ঠায় দলিল প্রমান সহ মাসালা জানার ব্যাপারী লিখেছে-
আল্লাহ তা'আলা বলেন
-فَسۡـَٔلُوۡۤا اَهۡلَ الذِّكۡرِ اِنۡ كُنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ
بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُر
সুতরাং তোমরা যদি না জানো তবে স্পষ্ট দলিলসহ আহলে জিকিরকে জিজ্ঞেস কর।

এই আয়াতের অর্থে সুস্পষ্ট বিকৃত করেছে। এই অর্থ কেউ করেননি। এখানে তিনি বিকৃতি করেছেন এভাবে بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ (দলিল প্রমাণসহ) বাক্যকে সম্পৃক্ত করেছেন فَسۡـَٔلُوۡۤا এর সাথে। যার অর্থ দাঁড়ায় দলিল সহ জিজ্ঞেস কর।

ভুলটা তিনি এখানেই করেছেন। ভুল নয় বরং আমরা বলবো তিনি ইচ্ছে করেই নিজেরদের স্বার্থে তার খায়েশাত পূরণ করার জন্য বিক্রিত করেছেন। অন্যথায় তিনি কোথাও এই অর্থ দেখাতে পারবেন না। চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি পৃথিবীর কেউই এই ধরনের অর্থ করেননি। তাহলে তিনি এই অর্থ কোথা থেকে করলেন??

বরং এর সঠিক অর্থ হবে দলিল প্রমাণ সহ নবী পাঠিয়েছি। بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ (দলিল প্রমাণসহ) এর সম্পর্ক হবে পূর্ববর্তী আয়াতের وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا (নবী পাঠিয়েছি) এর সাথে। স্বয়ং লামাযহাবীদের ওয়েব সাইট hadithbd থেকে হুবহু কপি পেস্ট দেয়া দেখুন
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِكَ اِلَّا رِجَالًا نُّوۡحِیۡۤ اِلَیۡهِمۡ فَسۡـَٔلُوۡۤا اَهۡلَ الذِّكۡرِ اِ
نۡ كُنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿ۙ۴۳﴾
আর আপনার আগে আমরা ওহীসহ কেবল পুরুষদেরকেই (১) পাঠিয়েছিলাম (২), সুতরাং তোমরা জ্ঞানীদেরকে (৩) জিজ্ঞেস কর যদি না জান,

بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ ؕ وَ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡكَ الذِّكۡرَ لِتُبَیِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ اِلَیۡهِمۡ وَ لَعَلَّهُمۡ یَتَفَكَّرُوۡنَ ﴿۴۴﴾
স্পষ্ট প্রমাণাদি ও গ্রন্থাবলীসহ (১)। আর আপনার প্রতি আমরা কুরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মানুষকে যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে (২), তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেন এবং যাতে তারা চিন্তা করে।
(১) আয়াতের এ অংশটুকু পূর্ববর্তী আয়াতের “আমরা পাঠিয়েছিলাম” এর সাথে সংশ্লিষ্ট। [ইবন কাসীর]

তখন আয়াতের পূর্ণ অর্থ হবেঃ “আমরা আপনার পূর্বেই শুধুমাত্র পুরুষ মানুষকেই ওহী দিয়ে পাঠিয়েছিলাম, তাদেরকে পাঠিয়েছিলাম স্পষ্ট প্রমাণাদি ও গ্রন্থাবলীসহকারে।” আয়াতের অপর অর্থ হচ্ছে যে, এ আয়াতটি পূর্বোক্ত আয়াতের ‘তোমরা যদি না জান’ কথার সাথে সংশ্লিষ্ট। তখন অর্থ হবে, যদি তোমরা স্পষ্ট প্রমাণাদি ও গ্রন্থ সম্পর্কে না জান তবে পূর্ববর্তী যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর। [ফাতহুল কাদীর]
بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ ؕ وَ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡكَ الذِّكۡرَ لِتُبَیِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ اِلَیۡهِمۡ وَ لَعَلَّهُمۡ یَتَفَكَّرُوۡنَ
তাদের প্রেরণ করেছি) স্পষ্ট প্রমাণাদি ও কিতাবসমূহ এবং তোমার প্রতি নাযিল করেছি কুরআন, যাতে তুমি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পার, যা তাদের প্রতি নাযিল হয়েছে। আর যাতে তারা চিন্তা করে। (সুরা আন নাহল ৪৪)

তাহলে এটা কি আল্লাহ তায়ালার কোরআনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট জালিয়াতি মিথ্যাচার ধোঁকাবাজি নয়???

তিনি কি এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত নন-
সূরা আন‘আম (৬:৯৩)
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ قَالَ أُوحِيَ إِلَيَّ وَلَمْ يُوحَ إِلَيْهِ شَيْءٌ وَمَنْ قَالَ سَأُنْزِلُ مِثْلَ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ ۗ
আর সেই ব্যক্তির চাইতে বড় জালেম আর কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে বা বলে যে, “আমার প্রতি ওয়াহী নাযিল হয়েছে” অথচ তার প্রতি কোন ওয়াহী নাযিল করা হয়নি, অথবা যে বলে, “আমি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার অনুরূপ কিছু নাযিল করব।”

২. সূরা ইউনুস (১০:১৭)
فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْمُجْرِمُونَ
অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তার চাইতে বড় জালেম আর কে? নিশ্চয়ই অপরাধীরা সফলকাম হয় না।

৩. সূরা হূদ (১১:১৮)
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا ۚ أُولَٰئِكَ يُعْرَضُونَ عَلَىٰ رَبِّهِمْ وَيَقُولُ الْأَشْهَادُ هَٰؤُلَاءِ الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَىٰ رَبِّهِمْ ۚ أَلَا لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الظَّالِمِينَ
আর সেই ব্যক্তির চাইতে বড় জালেম আর কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে? তারা তাদের প্রতিপালকের সামনে পেশ করা হবে এবং সাক্ষীরা বলবে, “এরা তারা, যারা তাদের প্রতিপালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলেছিল।” জেনে রাখো, জালিমদের উপর আল্লাহর অভিশাপ আছে।

৪. সূরা আন‘আম (৬:২১)
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ
আর সেই ব্যক্তির চাইতে বড় জালেম আর কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে? নিশ্চয়ই জালেমরা সফলকাম হয় না।

৫. সূরা নحل (১৬:১১৬)
وَلَا تَقُولُوا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَٰذَا حَلَالٌ وَهَٰذَا حَرَامٌ لِتَفْتَرُوا عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُونَ
আর তোমরা নিজেদের জিহ্বার বর্ণনায় মিথ্যা বলে দিও না— “এটা হালাল, এটা হারাম”— আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করার জন্য। নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে, তারা সফলকাম হয় না

আল্লাহ সহিহ বুঝ দান করুন। আমিন।

নিজের পায়ে শেকল দেওয়ার জন্য ইন্ডিয়ার বর্ডার পঞ্চগড় যেতে হয়! তার বাসায় জায়গা নেই?রুমে শেকল পড়েও তো বলতে পারত— ইসকন এসে আ...
28/10/2025

নিজের পায়ে শেকল দেওয়ার জন্য ইন্ডিয়ার বর্ডার পঞ্চগড় যেতে হয়! তার বাসায় জায়গা নেই?

রুমে শেকল পড়েও তো বলতে পারত— ইসকন এসে আমাকে মেরে শেকল দিয়ে গেছে!

এত কাঁচা নাটক কে করে, আরো চমৎকার এডিটিং দরকার।

পিতার পক্ষ থেকে ছেলে-মেয়ের জন্য কিছু উপদেশ-১. লজ্জাশীলতা। কেননা লজ্জা না থাকলে যে কোনো অন্যায় করা যায়। লজ্জা সব ধরনের কল...
28/10/2025

পিতার পক্ষ থেকে ছেলে-মেয়ের জন্য কিছু উপদেশ-

১. লজ্জাশীলতা। কেননা লজ্জা না থাকলে যে কোনো অন্যায় করা যায়। লজ্জা সব ধরনের কল্যাণ বহন করে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হাদীস-৫০৭১, ৫০৭২)

২. স্বভাব-চরিত্র ভালো কর। কেননা এটাই হবে নেকীর পাল্লায় সবচেয়ে ভারী। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৮৭৬/৯)

৩. কর্কশ ভাষা পরিহার কর। কেননা কর্কশ ভাষার পরিণাম জাহান্নাম।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৭৪১/৬৩)

8 .অহংকার করো না। কেননা অহংকারীর পরিণাম জাহান্নাম। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৭৪১/৬৩)

৫. আগেই সালাম দেয়ার চেষ্টা কর। কেননা আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম ব্যক্তি হচ্ছে প্রথমে সালাম প্রদানকারী। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৩৩৮২)

৬.অসহায় মানুষকে খাদ্য দাও। কেননা এর বিনিময় জান্নাত। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৯৩৯/৯৫)

৭.দু'কানে মানুষের ভালো কথা শ্রবণ কর। কেননা এর পরিণাম জান্নাত। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৭৪০/১০১)

৮.দুই কানে মানুষের মন্দ কথা শ্রবণ কর না। কেননা এর পরিণাম জাহান্নাম। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৭৪০/১০১)

৯. মুখ ও লজ্জাস্থান নিয়ন্ত্রণে রাখ। এটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলে পরিণাম জাহান্নাম। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৯৭৭/১০৫)

১০. মানুষের সম্পদ অবৈধভাবে গ্রহণ কর না। কেননা এতে অন্তরের উপর চাপ পড়ে যায়, যা কিয়ামত পর্যন্ত মিশে না। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৩৩৬৪/১৭৫)

১১. পিতামাতার সেবা কর। কারণ তারা জান্নাতের মাধ্যম।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-৯১/১৯১)

১২. কারো প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ কর না। তাহলে সর্বদা কল্যাণে থাকবে।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-৩৮৬/১৯৭)

১৩. তিনজন এক সাথে থাকলে তৃতীয়জন ছেড়ে দু'জন চুপে চুপে কথা বল না।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৪০২/২২৪৭)

১৪. মানুষকে অপমান কর না। কারণ এটাই সবচেয়ে বড় সুদ।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-৬০১/২৬২)

১৫. গভীর রাতে রাস্তায় চলাচল কর না। কারণ এসময় এমন প্রাণী চলে যাদের দেখা যায় না। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৫১৮/২৬৭)

১৬. রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরাও এটা তোমার জন্য সাদকা হবে।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৫৫৮/২৭৭)

১৭. কোনো বৈঠকে বসলে পশ্চিমমুখি হয়ে বস। কারণ প্রতিটি জিনিসের একটা মূল অংশ আছে। আর বৈঠকের মূল অংশ হচ্ছে পশ্চিম দিক।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-২৬৪৫/২৯৪)

১৮. মানুষের মুখের উপর প্রশংসা করো না। কারণ এতে তাকে যবেহ করা হয়। অর্থাৎ তার মধ্যে অহংকার এসে যায়, যা তার ধ্বংসের কারণ।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১২৮৪/৩১৮)

১৯. রাতের প্রথমাংশ পার হওয়ার পর গল্প করো না। কেননা এই সময় আল্লাহ তা'আলা এমন কতক সৃষ্টিজীব পাঠান, যা তোমাদের জানা নেই।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৭৫২, ৩১৬)

২০. ধৈর্যশীল হয়ে প্রশান্তির সাথে কাজ কর। কোনো সময় তাড়াহুড়া করে কোনো কাজ করো না। কেননা প্রশান্তি আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৭৯৫/৩২৬)

২১. কথা বলার পূর্বে সালাম দাও। কেউ সালাম দেয়ার পূর্বে কথা বলা আরম্ভকরলে তার উত্তর দিও না। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৮১৬/৩৪৭)

২২. পরিবারকে সংশোধন করার জন্য চাবুক এমন স্থানে রাখ, যেন পরিবার তা দেখতে পায়। কারণ এটাই তাদের জন্য শিষ্টাচার।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৪৪৬/৩৫৩)

২৩. প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নিও। কেননা এমন মানুষ মুমিন হতে পারে না, যে নিজে তৃপ্তিসহকারে খায় এবং প্রতিবেশি ক্ষুধার্ত থাকে।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৪৯/৩৮৭)

২৪.কাউকে দোষারোপ করো না, কাউকে অভিশাপ করো না, কাউকে অশ্লীল কথা বল না, কারো সাথে হীন আচরণ করো না। কেননা এমন মানুষ মুমিন হয় না। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৩২০/৩৮৮)

২৫. যে কাজ মানুষের সামনে করতে খারাপ মনে কর, তা গোপনেও করো না।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১০৫৫/৩৯৭)

২৬. রোদ ও ছায়ার মাঝে বস না। কেননা এরূপ বৈঠক শয়তানের বৈঠক।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-২৩৮৫/৪২৯)

২৭. দু'জন কোনো স্থানে বসে থাকলে, তুমি সেখানে অনুমতি ছাড়া যেও না।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-২৩৮৫/৪২৮)

২৮. একাকী বাড়িতে থেক না এবং একা সফর কর না।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-৬০/৪৩২)

২৯. মানুষ অনুগ্রহ করলে তার শুকরিয়া আদায় কর। কেননা যে মানুষের শুকরিয়া আদায় করে না, সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে না।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-৪১৬/৪৫৫)

৩০. এমন কথা আজ বল না, যার কৈফিয়ত কাল দিতে হবে।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-৪০১/৫২৭)

৩১. সালাত আদায় কর। কারণ সালাত বিহীন বাকি আমল বাতিল হবে।
(সিলসিলা সহীহ হাদীস-১৩৫৮/৫৯৮)

৩২. অত্যাচারিত ব্যক্তির বদদো'আ থেকে বেঁচে থাক, কাফের হলেও। কেননা এমন দোআ নিশ্চিতভাবে কবুল হয়। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৭৬৭/২৭৩৬)

৩৩. দুনিয়া থেকে সাবধান থাক। কেননা দুনিয়া সবুজ, সুন্দর, মনোহর মিঠা বন্ধু। (সিলসিলা সহীহ হাদীস-৯১৩/১১৯৬)

৩৪. সদা সত্য কথা বল। কেননা সত্যের পরিণাম জান্নাত।
(মুসলিম, মিশকাত হাদীস-৪৮২৪)

৩৫. কখনো মিথ্যা কথা বল না। কেননা মিখ্যার পরিণাম জাহান্নাম।
(মুসলিম, মিশকাত, হাদীস-৪৮২৪)

28/10/2025

বাচ্চাদের IQ ভাইরে ভাই 🧒 আল্লাহুম্মা বারিক লাহু।

বড় ছেলে খালিদ (৯ বছর) ছোট ছেলে জায়েদ (৬ বছর) কে বলতেছে," তোমার টিচার কোটির ও বেশী আছে, আকাশ থেকে পরে!" (টিচার এর নাম বৃষ্টি) 🌧️

উত্তরে ছোট ছেলে জায়েদ,"তোমার টিচার ও অনেক আছে, ধান খুললেই পাওয়া যায়!!" (টিচার এর নাম রাইসা থেকে রাইস) 🌾

বড় ছেলেটার টা বয়স অনুযায়ী তাও ঠিক আছে! 👌
ছোট টার টা পুরাই গুগলি ছিলো রে ভাই, আমারো বুঝতে বেশ কিছুক্ষণ লাগছে! 🏏😅

ফেসবুকে খাবারের ছবি দিলে কি কোন গুনাহ হবে ? জবাব: ফেসবুকে রান্নার ভিডিও বা খাবারের ছবি দেওয়া নিজে থেকে হারাম বা গুনাহ নয়...
28/10/2025

ফেসবুকে খাবারের ছবি দিলে কি কোন গুনাহ হবে ?

জবাব: ফেসবুকে রান্নার ভিডিও বা খাবারের ছবি দেওয়া নিজে থেকে হারাম বা গুনাহ নয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা মুবাহ (অনুমোদিত) কাজ অর্থাৎ না করলে পাপ নয়, করলে ততক্ষণে পাপ নয় যতক্ষণ না এর ভেতর কোনো অন্য হারাম উদ্দেশ্য বা ক্ষতি ঢুকে পড়ে।

কিন্তু সমস্যা হয় কখন? এ কাজটি গুনাহ বা অপছন্দনীয় হয়ে যায় নিম্নলিখিত অবস্থায়ঃ

১. রিয়া বা দুনিয়াবি গর্ব দেখানোর উদ্দেশ্যে দিলে। যেমন, “দেখো আমি কেমন খাবার বানাই, আমার লাইফ কত সুন্দর।” এটা রিয়া (দেখানো) বলে গণ্য হয়, যা আল্লাহর কাছে কঠিন গুনাহ।

২. অন্যের ঈর্ষা, কষ্ট বা হিংসা জাগানোর কারণ হলে অনেক মানুষ গরিব, অভাবী, অসুস্থ, যারা খাবার দেখতে পেয়েও খেতে পারে না।
এমন অবস্থায় লাভনীয় খাবারের ছবি পোস্ট করলে তাদের মনে কষ্ট জন্মাতে পারে, আর ইসলাম কাউকে কষ্ট দেওয়াকে গুনাহ হিসেবে দেখেছে।

৩. সম্ভাব্য অহংকার বা আত্মপ্রশংসা থাকলে খাবারের নাম, দাম, জায়গা এসব বলে প্রশংসা চাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে, সেটা নফসের প্রশ্রয় যা ঈমানের খাঁটি স্বভাবের বিপরীত।

আপনি যেটা উল্লেখ করেছেন, সেটিই ইসলামী আদবের মূল শিক্ষা-
রাসুলুল্লাহ সা: বলেন,
النبي ﷺ قال: «إذا طبخت مرقة فأكثر ماءها وتعاهد جيرانك»
(رواه مسلم)
অর্থঃ “তোমরা যখন ঝোল রান্না করো, তখন তার ঝোল বাড়িয়ে দিও এবং তোমার প্রতিবেশীদেরও খাওয়াও।”

এর মানে ইসলাম আমাদেরকে খাবার ভাগাভাগি ও পরোপকারে উৎসাহিত করেছে, কিন্তু দেখানো বা শুধু প্রদর্শনের জন্য খাবার প্রকাশ করতে বলেনি।

তাহলে কী করা উচিত?

যদি আপনি খাবারের ভিডিও বা ছবি শিক্ষামূলক, রেসিপি শেখানোর জন্য দেন, আর তাতে অহংকার বা রিয়ার উদ্দেশ্য না থাকে, তাহলে এতে কোনো গুনাহ নেই। কিন্তু যদি উদ্দেশ্য হয় “দেখানো, প্রশংসা পাওয়া, বা আকর্ষণ তৈরি করা”,
তাহলে তা অপছন্দনীয় (مكروه) বা কখনো গুনাহে পরিণত হতে পারে।

তাই খাবার পোস্ট করতে চাইলে উদ্দেশ্য ঠিক করুন: “আমি উপকার করছি, রেসিপি শেয়ার করছি, আল্লাহর নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।” আর ছবি এমনভাবে দিন যাতে দরিদ্র বা ক্ষুধার্ত মানুষকে আঘাত না করে এবং মাঝে মাঝে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যেতে পারে।

সহীহ হাদীসের আলোকে নামাযে নিরবে আমীন বলা সুন্নতআল্লামা আব্দুল মতীন দামাত বারাকাতুহুআমীন সম্পর্কেও কিছু লোক বাড়াবাড়ি করে।...
27/10/2025

সহীহ হাদীসের আলোকে নামাযে নিরবে আমীন বলা সুন্নত

আল্লামা আব্দুল মতীন দামাত বারাকাতুহু

আমীন সম্পর্কেও কিছু লোক বাড়াবাড়ি করে। তারা বলে নামাযে আমীন জোরে বলতে হবে। আস্তে বলা সুন্নতের পরিপন্থী। তাদের একথা সঠিক নয়। হাদীস শরীফ, অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ী’র আমল দ্বারা একথাই প্রমাণিত হয় যে, আমীন আস্তে বলাই সুন্নত।

নিমস্বরে আমীন বলা অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ীর আমল

ইমাম ইবনে জারীর তাবারী র. (মৃ.৩১১ হি.) তাঁর তাহযীবুল আছার গ্রন্থে বলেছেন,
وروي ذلك عن ابن مسعود وروي عن النخعي والشعبى وابراهيم التيمى كانوا يخفون بآمين والصواب ان الخبر بالجهر بها والمخافتة صحيحان وعمل بكل من فعليه جماعة من العلماء وان كنت مختارا خفض الصوت بها إذكان اكثر الصحابة والتابعين على ذلك . (شرح البخاري لابن بطال المتوفى ৪৪৯ه باب جهر المأموم بالتأمين، والجوهر النقى

অর্থাৎ ইবনে মাসউদ রা., ইবরাহীম নাখায়ী র. শা’বী র. ও ইবরাহীম তায়মী র. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা আমীন আস্তে বলতেন। সঠিক কথা হলো আমীন আস্তে বলা ও জোরে বলার উভয় হাদীসই সহীহ। এবং দুটি পন্থা অনুযায়ী এক এক জামাত আলেম আমলও করেছেন। যদিও আমি আস্তে আমীন বলাই অবলম্বন করি, কেননা অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ী এ অনুযায়ীই আমল করতেন। (দ্রঃ শারহুল বুখারী লিইবনে বাত্তাল,মৃত্যু ৪৪৯হিজরী; আল জাওহারুন নাকী, ২খ, ৫৮পৃ,)

ইবনে জারীর র. এর এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হলো যে, অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ীর আমল ছিল আমীন আস্তে বলা। তিনি নিজেও একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস হওয়া সত্ত্বেও আস্তে আমীন বলাকেই অবলম্বন করেছেন।

মদীনাবাসীর আমল:

মদীনা শরীফে ইমাম মালেক র. এর নিবাস ছিল। তিনিও ফতোয়া দিয়েছেন,
ويخفي من خلف الإمام آمين. المدونة-فى الركوع والسجود

অর্থাৎ মুকতাদী আস্তে আমীন বলবে। (আল-মুদাওয়ানা, ১খ.৭১ পৃ.)

মালেকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা আহমদ আদ দরদের র. লিখেছেন,
وندب الاسرار به اى بالتأمين لكل من طلب منه.

অর্থাৎ ‘মুকতাদীর জন্য আস্তে আমীন বলাই মুস্তাহাব।’

কুফাবাসীর আমল:

এমনিভাবে কূফায় পনের শত সাহাবী বসবাস করতেন। এই কূফার সাধারণ আমল ছিল আমীন আস্তে বলা। ইবনে মাসউদ, তাঁর শিষ্যবর্গ, ইবরাহীম নাখায়ী, ইবরাহীম তায়মী ও শা‘বী প্রমুখ কূফার বড় বড় ফকীহ ও মুহাদ্দিস সকলে আমীন আস্তে বলার পক্ষপাতি ছিলেন।

মজার ব্যাপার হলো ওয়াইল রা. এর মাধ্যমে বর্ণিত জোরে আমীন বলার হাদীসটি সুফিয়ান ছাওরী রা. এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সুফিয়ান ছাওরী ছিলেন আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীস অর্থাৎ হাদীস সম্রাট। অথচ তিনি নিজেও ছিলেন আস্তে আমীন বলার পক্ষে।

বোঝার সুবিধার্থে এখানে আমরা আলোচনাকে দুটি ভাগে ভাগ করব।

এক. ইমামের আস্তে আমীন বলা।

দুই. মুকতাদীর আস্তে আমীন বলা।

ইমামের আস্তে আমীন বলার দলিল:

عن وائل بن حجر قال: صلى بنا رسول الله صلى الله عليه و سلم فلما قرأ غير المغضوب عليهم ولا الضالين قال آمين وأخفى بها صوته.ورواه الترمذى رقم (২৪৮) واحمد فى المسند.رقم (১৮৮৫৪) . ورواه الحاكم فى المستدرك ) ২৯১৩)وقال:هذا حديث صحيح على شرط الشيخين و لم يخرجاه.وقال الذهبى فى التلخيص: على شرط البخاري ومسلم والطيالسى (১০২৪) والدارقطنى ১/৩৩৪ والبيهقى ২/৫৭ والطبرانى فى الكبير ২২/৪৩ رقم(১০৯،১১০،১১২)

অর্থ: ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমাদেরকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়লেন। তিনি যখন غير المغضوب عليهم ولا الضالين পড়লেন, তখন আমীন বললেন এবং আমীন বলার সময় তাঁর আওয়াযকে নিম্ন করলেন। তিরমিযী শরীফ (২৪৯); দারাকুতনী ১ম খ. ৩৩৪পৃ. বায়হাকী, খ.২ পৃ.৫৭।

এ হাদীসকে হাকেম র. সহীহ বলেছেন। যাহাবী র.ও তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছেন। ইবনে জারীর তাবারী র.ও এটিকে সহীহ বলেছেন। পেছনে তাঁর হুবহু বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। কাযী ইয়ায র.ও এটিকে সহীহ বলেছেন। (দ্র. শারহুল উব্বী, ৬খ, ৬০৮ পৃ.)

আমীন আস্তে বলার এ হাদীসটি ইমাম শো’বা র. কর্তৃক বর্ণিত। তারই সঙ্গী সুফিয়ান ছাওরী র.ও এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাতে জোরে আমীন বলার কথা এসেছে। অনেকে এ দুটি বক্তব্যের মধ্যে এভাবে সমন্বয় করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য কখনও জোরে আমীন বলেছেন।

যেমন জোহরের নামাযের কেরাআত আস্তে পড়াই ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিয়ম। কিন্তু মাঝে মধ্যে দু’একটি আয়াত তিনি জোরে বলতেন।

যাতে সাহাবীগণ বুঝতে পারেন জোহরের নামাযে কোন সূরা বা কতটুকু কেরাআত পড়া সুন্নত। একইভাবে শেখানোর জন্য কখনও কখনও তিনি আমীন একটু জোরে বলেছেন। আর অন্য সময় আস্তে বলেছেন। এর পক্ষে সহীহ হাদীস একটু পরে আসছে।

আমীন জোরে বলার পক্ষে যেসব মুহাদ্দিস ছিলেন, তাঁরা শো’বা র. কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের তুলনায় সুফিয়ান র. এর বর্ণিত হাদীসকে অধিক গ্রহণীয় আখ্যা দিয়েছেন এবং শো’বা র. এর বর্ণনার উপর কিছু আপত্তি উত্থাপন করেছেন। অন্যরা আবার এসব আপত্তির সন্তোষজনক জবাবও দিয়েছেন। (টীকা-১)

২. হযরত হাসান বসরী হতে বর্ণিত:

عن سمرة قال : سكتتان حفظتهما عن رسول الله صلى الله عليه و سلم فأنكر ذلك عمران بن حصين وقال حفظنا سكتة فكتبنا إلى أبي بن كعب بالمدينة فكتب أبي أن حفظ سمرة قال سعيد فقلنا لقتادة ما هاتان السكتتان؟ فقال إذا دخل في صلاته وإذا فرغ من القراءة ثم قال بعد ذلك وإذا قرأ ولا الضالين قال. وكان يعجبه إذا فرغ من القراءة أن يسكت حتى يتراد إليه نفسه.اخرجه الترمذى(২৫১) واللفظ له وابوداود (۷۸۰) واحمد ৫/۲۳

অর্থাৎ সামুরা রা. বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দুটি সাকতা (নীরবতা) স্মরণ রেখেছি। ইমরান ইবনে হুসাইন রা. এটা অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন, আমরা তো একটি সাকতা স্মরণ রেখেছি। পরে আমরা মদীনায় উবাই ইবনে কা’ব রা. এর নিকট পত্র লিখলাম। তিনি উত্তর লিখে পাঠালেন যে, সামুরা সঠিক স্মরণ রেখেছে। সাঈদ বলেন, আমরা কাতাদাকে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ দুটি সাকতা কোথায় কোথায় ছিল? তিনি বললেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করতেন। আর যখন কিরাআত পাঠ সমাপ্ত করতেন। এরপর কাতাদা বলেছেন, যখন ولا الضالين পাঠ শেষ করতেন। তিনি আরো বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পছন্দ ছিল, যখন তিনি কেরাত পাঠ সমাপ্ত করতেন তখন শ্বাস স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নীরব থাকতেন। তিরমিযী (২৫১); আবূ দাউদ (৭৮০); মুসনাদে আহমদ, (৫খ, ২৩ পৃ,)।

এ হাদীস থেকে বোঝা যায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দু’সময় নীরব থাকতেন। প্রথম নীরবতা তাকবীরে তাহরীমার পর। এসময় তিনি নিঃশব্দে ছানা পড়তেন। দ্বিতীয় নীরবতা সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর। এ সময় “আমীন” বলতেন। বোঝা গেল আমীন তিনি নিঃশব্দে বলতেন।

হাদিসটিতে কাতাদা প্রথমতঃ বলেছিলেন ২য় নীরবতা হতো কেরাত শেষ করার পর। পরে ব্যাখ্যা করে তিনি বুঝিয়ে দেন যে, কেরাত শেষ করা মানে সূরা ফাতেহার কেরাত শেষ করা। আর সম্পূর্ণ কেরাত শেষ করার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতটুকু নীরব থাকতেন যাতে শ্বাস স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এটা সামান্য নীরবতা হতো। আবূ দাউদ শরীফে (৭৭৯) কাতাদা র. হতে সাঈদে’র সূত্রে ইয়াযীদ র. এর বর্ণনায় স্পষ্ট উল্লেখ আছেــ
سكتة اذاكبر وسكتة اذا فرغ من قراءة غير المغضوب عليهم ولاالضالين

অর্থাৎ একটি সাকতা হতো তাকবীরে তাহরীমার পর, আরেকটি সাকতা হতো غير المغضوب عليهم ولاالضالين.বলার পর। দারাকুতনীও ইবনে উলায়্যার সূত্রে, তিনি ইউনুস ইবনে উবায়দের সূত্রে হাসান বসরী থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। {দ্রঃ ১ম খ, ৩৩৬পৃ, মুসনাদে আহমাদ ৫/২৩(২০৫৩০)}।

ইবনে হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে এ হাদীসের উপর শিরোনাম দিয়েছেন: ذكر ما يستحب ان يسكت سكتة اخرى عند فراغه من قراءة فاتحة الكتاب. অর্থাৎ সূরা ফাতেহা শেষ করার পর দ্বিতীয় বার নীরব থাকা মুস্তাহাব।

আল্লামা ইবনুল কায়্যিম হাম্বলী র.: যার তাহকীক ও গবেষণার উপর লা-মাযহাবীদেরও বেশ আস্থা আছে: তাঁর যাদুল মায়াদ গ্রন্থে লিখেছেন:
وَقَدْ صَحّ حَدِيثُ السّكْتَتَيْنِ مِنْ رِوَايَةِ سَمُرَةَ وَأُبَيّ بْنِ كَعْبٍ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ ذَكَرَ ذَلِكَ أَبُو حَاتِمٍ فِي ” صَحِيحِهِ ” وَسَمُرَةُ هُوَ ابْنُ جُنْدُبٍ وَقَدْ تَبَيّنَ بِذَلِكَ أَنّ أَحَدَ مَنْ رَوَى حَدِيثَ السّكْتَتَيْنِ سَمُرَةُ بْنُ جُنْدُبٍ وَقَدْ قَالَ حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ سَكْتَتَيْنِ سَكْتَةً إذَا كَبّرَ وَسَكْتَةً إذَا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضّالّينَ وَفِي بَعْضِ طُرُقِ فَإِذَا فَرَغَ مِنْ الْقِرَاءَةِ سَكَتَ وَهَذَا كَالْمُجْمَلِ وَاللّفْظُ الْأَوّلُ مُفَسّرٌ مُبَيّنٌ.انتهى.(১/৭৯)

অর্থাৎ সামুরা রা., উবাই ইবনে কা’ব রা. ও ইমরান ইবনে হুসাইন রা. (টীকা-২) থেকে সহীহ সনদে দুই সাকতার হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। এই হাদীস আবূ হাতিম {ইবনে হিব্বান র.} তাঁর “সহীহ” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। সামুরা রা. হলেন ইবনে জুনদুব। এ থেকে স্পষ্ট যে, সামুরা ইবনে জুনদ্বু রা.ও দুই সাকতার হাদীসটি বর্ণনা কারীদের একজন। তিনি তাঁর হাদীসে বলেছেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দুটি সাকতার কথা স্মরণ রেখেছি। একটি হলো তিনি যখন তাকবীর দিতেন । অপরটি হলো তিনি যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضّالّينَ পড়ে শেষ করতেন। কোন কোন বর্ণনায় হাদীসটি এভাবে উদ্ধৃত হয়েছে ; তিনি যখন কেরাত শেষ করতেন, তখন নীরব থাকতেন। এই বর্ণনাটি অস্পষ্ট। প্রথম বর্ণনাটি ব্যাখ্যা-সম্বলিত ও সুস্পষ্ট। (দ্রঃ, ১ম; ৭৯ পৃ,)

৩. হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন:

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ :إِذَا قَالَ الإِمَامُ ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقُولُوا آمِينَ فَانه مَنْ وَافَقَ قوله قول الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ .ورواه البخارى برقم -৭৮২ باب جهر المأمومين بالتأمين ومسلم )৪১০(

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলে শেষ করবে তখন তোমরা আমীন বলবে। কেননা যে ব্যক্তির আমীন বলা ফেরেশতাগণের আমীন বলার সঙ্গে মিলে যাবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। বুখারী শরীফ হাদীস নং ৭৮২; মুসলিম শরীফ হাদীস নং ৪১০

মুসলিম শরীফে আবূ মুসা আশআরী রা. এর বর্ণিত হাদীসেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِذَا قَالَ الإِمَامُ ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقُولُوا آمِينَ.

অর্থাৎ ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলে শেষ করবে, তোমরা তখন আমীন বলবে। (হাদীস নং- ৪০৪)

এ দুটি হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইমাম আমীন নিঃশব্দে বলবে। অন্যথায় এভাবে বলা হতো না যে, ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলবে, তোমরা তখন আমীন বলবে। বরং বলা হতো, ইমামকে যখন আমীন বলতে শুনবে তখন তোমরা আমীন বলবে। বিশেষ করে নাসাঈ শরীফে আবূ হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদীসটিতে সহীহ সনদে একথাও বর্ণিত আছে যে:
فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَقُولُ آمِينَ وَإِنَّ الإِمَامَ يَقُولُ آمِينَ.

অর্থাৎ কেননা ফেরেশতারাও এসময় আমীন বলে, ইমামও আমীন বলে। (হাদীস নং ৯২৭)

ইমামও এসময় আমীন বলে কথাটি তখনই বলা চলে যখন ইমাম নিঃশব্দে আমীন বলে। ফেরেশতাগণ যেমন নিঃশব্দে আমীন বলার কারণে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এসময় ফেরেশতাগণ আমীন বলে। তদ্রুপ ইমামও নিঃশব্দে বলার কারণে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এসময় ইমামও আমীন বলে।

সাহাবী এবং তাবেয়ীগণের আমল ও ফতোয়া

৪. উমর রা. এর ফতোয়া:

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ: قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ: يُخْفِي الإِمَامُ أَرْبَعًا -: التَّعَوُّذُ، وَ بسم الله الرحمن الرحيم وَآمِينَ، وَرَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. المحلى لابن حزم

অর্থ: আব্দুর রহমান ইবনে আবী লায়লা বলেন, উমর রা. বলেছেন, ইমাম চারটি বিষয় নিঃশব্দে পড়বে। আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও রাব্বানা লাকাল হামদ। (আল মুহাল্লা, ২/২৮০)

৫. ইবনে মাসউদ রা. এর ফতোয়া:

عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، كِلاهُمَا عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: يُخْفِي الإِمَامُ ثَلاثًا الاسْتِعَاذَةُ، وَ بسم الله الرحمن الرحيم وَآمِينَ. . المحلى لابن حزم

অর্থ: ইমাম তিনটি কথা নিঃশব্দে বলবে। আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন। (আল মুহাল্লা, ২/২৮০)

৬. উমর রা. ও আলী রা. এর আমল:

عن أبي وائل قال كان عمر وعلي رضي الله عنهما لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ ولا بالتأمين.رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/১৫০ رقم ১২০৮ قال حدثنا سليمان بن شعيب الكيساني نا علي بن معبد نا أبو بكر بن عياش عن أبي سعيد عنه

অর্থ: আবূ ওয়াইল র. হতে বর্ণিত। উমর রা. ও আলী রা. বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ ও আমীন স্বশব্দে পড়তেন না। (তাহাবী শরীফ ১/১৫০)

৭. ইবনে মাসউদ রা. এর আমল:

عن أبي وائل قال كان علي و ابن مسعود لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ ولا بآمين. رواه الطبراني في الكبير-৯৩০৪.وفي هذين الاثرين أبو سعد البقال، قال البخارى فيه مقارب الحديث كما فى علل الترمذى الكبير. وقال الهيثمى فى مجمع الزوائد২/১০৮ وهو ثقة مدلس

অর্থ: আবূ ওয়াইল র. বলেন, আলী ও ইবনে মাসউদ র. বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ ও আমীন স্বশব্দে পড়তেন না। তাবারানী, আল কাবীর (৯৩০৪); মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, (৪১৬০)
তাবেয়ীগণের আমল ও ফতোয়া

৮. ইবরাহীম নাখায়ী র. এর ফতোয়া:

عن حماد عن إبراهيم قال أربع يخفيهن الإمام بسم الله الرحمن الرحيم والإستعاذة وآمين وإذا قال سمع الله لمن حمده قال ربنا لك الحمد. عبد الرزاق- ২৫৯৬ وابن ابى شيبة فى المصنف-برقم ৪১৫৯

অর্থ: হাম্মাদ {আবু হানীফা র. এর খাস উস্তাদ ছিলেন} র. ইবরাহীম নাখায়ী র. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম চারটি কথা নিঃশব্দে বলবে, আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও রাব্বানা লাকাল হামদ। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক (২৫৯৬); মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা (৪১৫৯)

৯. ইবরাহীম নাখায়ী র. এর আমল

عن مغيرة عن ابراهيم انه كان اذا كبر سكت هنيهة ، واذا قال غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين سكت هنيهة.رواه عبد الرزاق برقم-২৮৫৮

অর্থ: মুগীরা র. বলেন, ইবরাহীম নাখায়ী র. তাকবীর দিয়ে কিছু সময় নীরব থাকতেন। আবার যখন غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين পড়তেন তখনও কিছু সময় নীরব থাকতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক (২৮৫৮)

জোরে আমীন বলা শিক্ষা দানের উদ্দেশ্যে ছিল

এমন কোন সহীহ হাদীস নেই, যেখানে স্পষ্টভাবে ইমামকে জোরে আমীন বলতে বলা হয়েছে। এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে জোরে আমীন বলেছেন, সে সম্পর্কেও সুফিয়ান ছাওরী র. এর সূত্রে বর্ণিত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. এর হাদীসটি ছাড়া অন্য কোন সহীহ হাদীস নেই।

সুফিয়ান ছাওরীর হাদীসটিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জোরে আমীন বলার যে উল্লেখ পাওয়া যায় তা ছিল শিক্ষা দানের উদ্দেশ্যে। হযরত ওয়াইল রা. ছিলেন ইয়ামানের নবাব খান্দানের মানুষ। তিনি ইসলাম গ্রহণ করে মদীনা শরীফে হাজির হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে নামাযে নিজের পেছনে প্রথম কাতারে জায়াগা করে দেন। যাতে করে তিনি দেখেশুনে নামায শিখতে পারেন। তাঁকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সে সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন নামাযে জোরে আমীন বলেছেন। এটা তাঁর সাধারণ নিয়ম ছিল না। সাধারণ নিয়ম হয়ে থাকলে তা শুধু ওয়াইল রা. কেন, অন্যান্য সাহাবীও তা বর্ণনা করতেন।

জোরে আমীন বলা যে শেখানোর জন্য ছিল তার প্রমাণ

ক. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন:

رأيت النبى صلى الله عليه وسلم دخل فى الصلاة ، فلما فرغ من فاتحة الكتاب قال آمين ثلاث مرات.رواه الطبرانى فى الكبير ১৬/১৮ وقال الهيثمى : رجاله ثقات

অর্থ: আমি দেখলাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করলেন। তিনি যখন সূরা ফাতিহা শেষ করলেন তখন তিনবার আমীন বললেন। তাবারানী, আল কাবীর ১৬/১৮ আল্লামা হায়ছামী র. বলেছেন, এর বর্ণনা কারীগণ বিশ্বস্ত।

এ হাদীস সম্পর্কে হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী র. বলেছেন:
الظاهر انه رآه فى ثلاث صلوات فعل ذلك. لا انه ثلّث التأمين. حكاه الزرقانى فى شرح المواهب ৭/১১৩

তিনবার আমীন বলার অর্থ এই নয় যে, এক রাকাতেই তিনবার আমীন বলেছেন। বরং এর অর্থ হলো তিন নামাযে তিনবার আমীন বলেছেন। তার মানে তিনি তিন নামাযে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমীন বলতে শুনেছেন। বাকি নামাযে শোনেন নি। অথচ এ যাত্রায় তিনি বিশ দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে অবস্থান করেছিলেন।

খ. নাসায়ী শরীফের বর্ণনায় হযরত ওয়াইল রা. বলেন:

فلما قرأ غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين قال آمين، فسمعته وانا خلفه.

অর্থ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين পড়ে শেষ করলেন তখন আমীন বললেন। আমি তাঁর পেছনেই ছিলাম। তাই তা শুনতে পেয়েছি। নাসায়ী (৯৩২), আলকুবরা (১০০৬)। ইমাম দারাকুতনী এই সনদকে সহীহ বলেছেন ১/৩৩৫(৫); তাবারানী ২২/২৩, ইবনে মাজাহ (৮৫৫)।

এ হাদীস থেকেও বোঝা যায়, তাঁকে শেখানোর উদ্দেশ্যেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমীন শব্দটি সামান্য জোরে উচ্চারণ করেছিলেন।

গ. অপর বর্ণনায় হযরত ওয়াইল রা. বলেন:

رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم حين فرغ من الصلاة حتى رأيت خده من هذا الجانب ومن هذا الجانب. وقرأ غير المغضوب عليهم ولا الضالين، فقال آمين يمد بها صوته ما اراه الا ليعلمنا. رواه أبو بشر الدولابي في الكنى والأسماء. قال النيموى : وفيه يحى بن سلمة ، قواه الحاكم وضعفه جماعة

অর্থ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে সালাম ফেরানোর সময় আমি তাঁর ডান গাল ও বাম গাল দেখেছি। আর তিনি غير المغضوب عليهم ولا الضالين পড়ার পর লম্বা আওয়াযে আমীন বললেন। আমার মনে হলো আমাদেরকে শেখাবার জন্যই তিনি এমন করেছিলেন। (দ্র.হাফেজ আবূবিশর আদ দূলাবী র. রচিত ‘আল কুনা ওয়াল আসমা’, ১ম খ, ১৯৭ পৃ., নং ১০৯০) সনদটি যঈফ।

ঘ.

হযরত ওয়াইল রা. কূফায় বসবাস করতেন। কূফার সাধারণ আমল ছিল আমীন আস্তে বলা। ওয়াইল রা., তাঁর দুই ছেলে আলকামা ও আব্দুল জব্বার এবং অন্যান্য শাগরেদদের কেউ জোরে আমীন বললে তা অবশ্যই বর্ণিত হতো। কিন্তু এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না । এতে প্রমাণিত হয় যে, তিনি নিজেও মনে করতেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যেই জোরে আমীন বলেছিলেন।

ঙ.

হযরত ওয়াইল রা. উক্ত হাদীসটি সুফিয়ান ছাওরীর সূত্রে বর্ণিত। তিনি নিজেও নিঃশব্দে আমীন বলতেন। (দ্র. আল মুহাল্লা, ২/২৯৫) এতে প্রতীয়মান হয় যে, তিনিও উক্ত হাদীসকে শিক্ষা দানের অর্থে গ্রহণ করেছেন।

মুহাম্মদ ইবনে নাসর আল মারওয়াযী (মৃত্যু ২৯৪ হি.) তার ইখতিলাফুল উলামা গ্রন্থে লিখেছেন, قال سفيان : آمين يخفيه সুফিয়ান বলেছেন, আমীন নিঃশব্দে বলবে। (নং ৫)

ইবনুল মুনযির (মৃত্যু ৩১৯ হি.) আল আওসাত গ্রন্থে বলেছেন :
وقال سفيان الثورى : فاذا فرغت من قراءة فاتحة الكتاب فقل آمين تخفيها.

অর্থাৎ সুফিয়ান ছাওরী র. বলেন, তুমি যখন সূরা ফাতেহা সমাপ্ত করবে তখন নিঃশব্দে আমীন বলবে। (দ্র. ৩/২৯৫)

মুকতাদীর আস্তে আমীন বলার দলিল

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ছিলেন। তালিম দেওয়ার উদ্দেশ্যে হলেও মাঝে মধ্যে জোরে আমীন বলার প্রমাণ তাঁর থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু এমন কোন সহীহ হাদীস পাওয়া যায় না যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুকতাদীকে জোরে আমীন বলতে বলেছেন, কিংবা তাঁর পেছনে সাহাবীগণ জোরে আমীন বলেছেন। এই কারণে ইমাম আবূ হানীফা র., ইমাম মালেক র. ও সুফিয়ান ছাওরী র. প্রমুখ বলেছেন, মুকতাদীরা আস্তে আমীন বলবে।

ইমাম শাফেয়ী র. এ সম্পর্কে কোন সহীহ হাদীস না পাওয়ার কারণে তাঁর পূবের্র মত পাল্টিয়ে বলেছেন, মুকতাদী আমীন আস্তে বলবে।

পেছনে আমাদের পেশকৃত দলিলগুলি দ্বারা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, ইমাম আমীন আস্তে বলবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও সাধারণ ভাবে আমীন আস্তেই বলতেন। ঐ দলিলগুলি থেকেই প্রমাণিত হয় যে, মুকতাদীরাও আমীন আস্তে বলবে। সাহাবীগণের আমল ও ফতোয়াও ছিল তদ্রুপ।

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেছেন:
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يُعَلِّمُنَا يَقُولُ لاَ تُبَادِرُوا الإِمَامَ إِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَالَ وَلاَ الضَّالِّينَ . فَقُولُوا آمِينَ. وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. اخرجه مسلم فى الصحيح )৪১৫(

অর্থ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শেখাতেন। তিনি বলতেন, ইমামের পূর্বে কিছু করো না। যখন ইমাম তাকবীর বলবে, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে। ইমাম যখন وَلاَ الضَّالِّينَ পড়ে শেষ করবে তখন তোমরা আমীন বলবে। ইমাম যখন রুকু করবে তোমরাও তখন রুকু করবে। আর যখন سمع الله لمن حمده বলবে, তোমরা তখন বলবে اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ । মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪১৫।

এ হাদীসে তিনটি নির্দেশ এসেছে, তোমরা তাকবীর বলবে, তোমরা আমীন বলবে, তোমরা রাব্বানা লাকাল হামদ বলবে। প্রথম ও তৃতীয়টি সকলের মতে নিঃশব্দে পড়তে হবে। হাদীসটির বর্ণনাধারা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দ্বিতীয় নির্দেশটিও নিঃশব্দে পালন করবে।

আল্লাহ কি “সময়” (الدهر) ? এক ভ্রান্ত সালাফি ব্যাখ্যার উন্মোচন-ইসলামী শরিয়তে ভাষা, আচরণ ও মনোভাবের প্রতিটি দিকেই আল্লাহ ...
26/10/2025

আল্লাহ কি “সময়” (الدهر) ? এক ভ্রান্ত সালাফি ব্যাখ্যার উন্মোচন-

ইসলামী শরিয়তে ভাষা, আচরণ ও মনোভাবের প্রতিটি দিকেই আল্লাহ তাআলার প্রতি শ্রদ্ধা ও তাকওয়া বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনেক সময় বিপদ-আপদ, কষ্ট বা দুঃখে মানুষ এমন কথা বলে ফেলে যা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলার মর্যাদার বিরোধী। যেমন- কেউ বলে, “এই কী খারাপ সময় এসেছে!”, “এই দিনটাই অশুভ ছিল!”, “এই দুনিয়া বড় নিষ্ঠুর!”, “সময়টা খুব খারাপ!” ইত্যাদি।

এই ধরনের বাক্য আরবদের মাঝেও প্রচলিত ছিল। তারা যখন বিপদে পড়ত, তখন বলত- “يا خيبة الدهر!” (হে ধ্বংস হোক এই সময়ের!)। অর্থাৎ তারা “সময়” বা “দিন”-কে তাদের বিপদের কারণ মনে করত। এজন্যই নবী করিম ﷺ স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: «يُؤْذِينِي ابْنُ آدَمَ، يَسُبُّ الدَّهْرَ، وَأَنَا الدَّهْرُ، بِيَدِي الأَمْرُ، أُقَلِّبُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ»
“আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়; সে দাহর (সময়)-কে গালি দেয়, অথচ আমিই দাহর। আমার হাতেই সমস্ত বিষয়। আমিই রাত্রি ও দিনকে পরিবর্তন করি।” (সহীহ বুখারী: ৭৪৯১, সহীহ মুসলিম: ২২৪৬)

সালাফিদের ভুল ব্যাখ্যা:

কথিত “সালাফি” মতবাদ অনুসারীরা এই হাদীসের বাহ্যিক অর্থ ধরে নিয়ে বলে বসে “দেখো! আল্লাহ নিজেই বলেছেন ‘أنا الدهر’ আমি দাহর (সময়)। অর্থাৎ আল্লাহই সময়।”

তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, যেহেতু হাদীসের বাহ্যিক শব্দে আল্লাহ নিজেকে “দাহর” বলেছেন, তাই আমাদেরও তা আক্ষরিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। এর মানে দাঁড়ায় “আল্লাহই সময়”, যা আল্লাহর সত্তার সঙ্গে সময়কে একাকার করে ফেলে! এভাবে তারা আবারও “تشبيه” (আল্লাহকে সৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করা) ও “تجسيم” (আল্লাহকে মাখলুকের বৈশিষ্ট্য আরোপ করা)-এর ফাঁদে পড়ে যায়। যে কোনো সময়িক বা স্থানের সঙ্গে আল্লাহকে সম্পর্কিত করা কুফরি প্রবণ ধারণা- কারণ সময়, স্থান, পরিবর্তন সবই সৃষ্ট, আর আল্লাহ সৃষ্টির ঊর্ধ্বে ও নিরপেক্ষ।

উক্ত হাদিস সম্পর্কে আহলুস সুন্নাহর তাবীল বা ব্যাখ্যা (ইমাম নববী রহ. ও অন্যান্য আলেমদের মতে)-

ইমাম নববী (রহ.) বলেন,
قال النووي في شرح مسلم: قال العلماء وهو مجاز وسببه أن العرب كان شأنها أن تسب الدهر عند النوازل والحوادث والمصائب النازلة بها من موت أو هرَم أو تلف مال أو غير ذلك فيقولون يا خيبة الدهر ونحو هذا من ألفاظ سب الدهر فقال النبي صلى الله عليه وسلم: لا تسبوا الدهر فإن الله هو الدهر أي لا تسبُّوا فاعل النوازل لإنكم إذا سببتم فاعلها وقع السب على الله تعالى لأنه هو فاعلها ومنزلها وأما الدهر الذي هو الزمان فلا فعل له بل هو مخلوق من جملة خلق الله تعالى ومعنى فإن الله هو الدهر أي فاعل النوازل والحوادث وخالق الكائنات والله أعلم.
আলেমরা বলেছেন, এই হাদীসটি রূপক (مجاز) অর্থে বলা হয়েছে। কারণ আরবদের অভ্যাস ছিল, যখন তাদের উপর কোনো বিপদ, দুঃখ, মৃত্যু, বার্ধক্য, সম্পদ নষ্ট হওয়া ইত্যাদি বিপর্যয় আসত, তখন তারা সময়কে গালি দিত এবং বলত “হায় দাহর! ধিক এই সময়কে!” ইত্যাদি।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমরা সময়কে গালি দিও না, কারণ আল্লাহই দাহর।" অর্থাৎ, তোমরা সময়কে গালি দিও না, যিনি সময়ের ঘটনাবলি ঘটান তাকেই গালি দেওয়া হয়ে যায়, কারণ সময়ের ঘটনা ও বিপর্যয়ের কার্যকর সত্তা আল্লাহ তাআলাই। তোমরা যখন সময়কে গালি দাও, তখন বাস্তবে তোমরা আল্লাহকেই গালি দাও, কারণ তিনিই এসব ঘটনার সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্ত্রক। আর “দাহর” অর্থাৎ “সময়” নিজে কোনো কাজ করে না; এটি আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি মাত্র। তাহলে “فإن الله هو الدهر” (আল্লাহই দাহর) বাক্যের অর্থ হলো- “আল্লাহই হলেন সমস্ত ঘটনা ও পরিবর্তনের কর্তা, তিনিই সৃষ্টির স্রষ্টা ও ঘটনার পরিচালনাকারী।” (শরহে মুসলিম- ৩/১৫)

শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন,
«وينبغي أن يُعلم أنه ليس من أسماء الله اسمُ “الدهر”، وإنما نسبته إلى الله تعالى نسبةَ خلقٍ وتدبير، أي: أنه خالقُ الدهر، بدليل وجود بعض الألفاظ في نفس الحديث تدل على هذا، مثل قوله تعالى: بِيَدِيَ الأَمْرُ أُقَلِّبُ لَيْلَهُ وَنَهَارَهُ، فلا يمكن أن يكون في هذا الحديث المقلِّبُ (بكسر اللام) والمقلَّبُ (بفتح اللام) واحدًا، وإنما يوجد مقلِّبٌ وهو الله، ومقلَّبٌ وهو الدهر، الذي يتصرف الله فيه كيف شاء ومتى شاء.» فتاوى العقيدة ج 1 / ص 163)
অনুবাদ: এটি জানা উচিত যে, “আদ-দাহর” (সময়) আল্লাহর নামগুলোর মধ্যে কোনো নাম নয়। বরং এর আল্লাহর প্রতি সম্পর্ক হলো সৃষ্টিকর্ম ও পরিচালনার দিক থেকে অর্থাৎ, আল্লাহই সময়ের সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্ত্রক। এর প্রমাণ একই হাদীসের অন্য অংশেই পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়েছে: “আমার হাতেই সব কাজ, আমি দিন ও রাত পরিবর্তন করি।” তাহলে এই হাদীসে “পরিবর্তনকারী” (المُقَلِّب যিনি দিন-রাত পরিবর্তন করেন) এবং “যাকে পরিবর্তন করা হয়” (المُقَلَّب দিন ও রাত, অর্থাৎ দাহর) দুজন এক হতে পারে না।
অতএব, “পরিবর্তনকারী” হলেন আল্লাহ তাআলা, আর “পরিবর্তিত” হচ্ছে দাহর (সময়) যাকে আল্লাহ তাআলা নিজের ইচ্ছামতো ও সময়ে সময়ে পরিবর্তন করেন। (ফাতাওয়া আল-আকীদাহ- ১/১৬৩)

শাইখ মুহাম্মদ ইবনে উছাইমীন রহ: এর ব্যাখ্যা-
وسئل الشيخ ابن عثيمين حفظه الله عن حكم سب الدهر : فأجاب قائلا: سب الدهر ينقسم إلى ثلاثة أقسام . القسم الأول : أن يقصد الخبر المحض دون اللوم : فهذا جائز مثل أن يقول " تعبنا من شدة حر هذا اليوم أو برده " وما أشبه ذلك لأن الأعمال بالنيات واللفظ صالح لمجرد الخبر . القسم الثاني : أن يسب الدهر على أنه هو الفاعل كأن يقصد بسبه الدهر أن الدهر هو الذي يقلِّب الأمور إلى الخير أو الشر : فهذا شرك أكبر لأنه اعتقد أن مع الله خالقا حيث نسب الحوادث إلى غير الله . القسم الثالث : أن يسب الدهر ويعتقد أن الفاعل هو الله ولكن يسبه لأجل هذه الأمور المكروهة : فهذا محرم لأنه مناف للصبر الواجب وليس بكفر ؛ لأنه ما سب الله مباشرة ، ولو سب الله مباشرة لكان كافراً ."
অর্থ: শাইখ ইবনে উছাইমীনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সময়কে বা “দোহর”কে অভিশাপ দেওয়ার বিষয়ে। তিনি উত্তর দিয়েছেন যে, এটি তিন ধরনের হতে পারে:

প্রথম প্রকার: যখন কেউ শুধু বিষয়টি বর্ণনা করে, কিন্তু নিন্দা বা অভিযোগের উদ্দেশ্য নেই। উদাহরণ: “আজকের তাপের জন্য আমরা ক্লান্ত” বা “আজকের ঠাণ্ডা সত্যিই কষ্টদায়ক” ইত্যাদি। এটি বৈধ, কারণ এখানে কেবল তথ্য জানানো হচ্ছে এবং বক্তব্যের নৈতিক কোনো ক্ষতি নেই।

দ্বিতীয় প্রকার: যখন কেউ সময়কে দায়ী বা কার্যকারী মনে করে, যেমন সময়কে বলে যে সে সব ঘটনা ঘটায়- সুন্দর বা খারাপ যাই হোক। এটি বড় শিরক (শিরকুল আকাল) কারণ এতে আল্লাহর সঙ্গে অন্যকেও সৃষ্টিকর্তা মনে করা হচ্ছে এবং ঘটনাগুলিকে আল্লাহর বাইরে কারো দোষারোপ করা হচ্ছে।

তৃতীয় প্রকার: যখন কেউ সময়কে অভিশাপ দেয় কিন্তু জানে প্রকৃত কার্যকারী আল্লাহ। এটি হারাম, কারণ এটি ধৈর্যের বিরুদ্ধে যায়। তবে এটি কুফুর নয়, কারণ এখানে আল্লাহকে সরাসরি অভিশাপ দেওয়া হয়নি। যদি আল্লাহকে সরাসরি অভিশাপ দেয়া হতো, তবে এটি কুফুর হতো। (ফাতাওয়া আল-আকীদাহ- ১/১৯৭)

হাফেজ ইবনে কাসির রহ: বলেন,
قَالَ الْحَافِظُ ابْنُ كَثِيرٍ - عِنْدَ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى : وَقَالُوا مَا هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا يُهْلِكُنَا إِلَّا الدَّهْرُ [الجاثية / 24]
قال الشافعي وأبو عبيدة وغيرهما في تفسير قوله صلى الله عليه وسلم : " لا تسبوا الدهر فإن الله هو الدهر " كانت العرب في جاهليتها إذا أصابهم شدة أو بلاء أو نكبة قالوا : " يا خيبة الدهر " فيسندون تلك الأفعال إلى الدهر ويسبونه. وإنما فاعلها هو الله تعالى فكأنهم إنما سبوا الله عز وجل لأنه فاعل ذلك في الحقيقة فلهذا نهى عن سب الدهر بهذا الاعتبار لأن الله تعالى هو الدهر الذي يصونه ويسندون إليه تلك الأفعال . وهذا أحسن ما قيل في تفسيره ، وهو المراد . والله أعلم
আল্লাহ তাআলার এই আয়াতের ব্যাখ্যা হলো: “আর তারা বলেছে, এটি শুধু আমাদের দুনিয়ার জীবন; আমরা মরে যাই এবং বাঁচি, আর আমাদের ধ্বংস করে না কেউ, শুধু সময়ই।” (সুরা আল-জাথিয়া, ২৪)

ইমাম শাফেয়ী, আবু উবাইদা ও অন্যান্য আলেমেরা বলেন, হাদিসে এসেছে: “সময়কে অভিশাপ দিও না, কারণ আল্লাহই সময়।” এর ব্যাখ্যা হলো- প্রাচীন আরবরা যখন কোনো দুঃখ, বিপদ বা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতো, তখন তারা বলত: “হায় দোহর!” এতে তারা বিপদ বা দুর্যোগের জন্য সময়কে দায়ী করত এবং সময়কে নিন্দা করত। কিন্তু প্রকৃতভাবে এই সব ঘটনা ঘটানোর ক্ষমতা রাখেন আল্লাহ। ফলে তারা, অজান্তেই, আল্লাহকেই দায়ী বা নিন্দা করছিল। তাই সময়কে অভিশাপ দেওয়া বা নিন্দা করা ঠিক নয়, কারণ প্রকৃত স্রষ্টা এবং নিয়ন্ত্রক আল্লাহ তাআলা। এই ব্যাখ্যা হলো সবচেয়ে সঠিক ও স্পষ্ট। (তাফসীর ইবনে কাসির- ৪/১৫২)

সুতারাং সালাফিদের মতে, হাদিসের বাহ্যিক অর্থ অনুযায়ী আল্লাহকে “দাহর” বলা হলে তা আক্ষরিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। তারা “أنا الدهر” অর্থাৎ আল্লাহই সময়, এমন ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল এবং বিপজ্জনক। এই তাবিলের ফলে আল্লাহকে সময়ের সঙ্গে একীকরণ করা হয়, যা শিরক ও কুফরের ঝুঁকি তৈরি করে।

আহলুস সুন্নাহর ব্যাখ্যা স্পষ্ট যে, আল্লাহই সমস্ত ঘটনার স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক, আর সময় (দাহর) তার সৃষ্টি মাত্র। সময় নিজে কোনো কার্যকারী নয়। তাই সময়কে দোষারোপ বা অভিশাপ দেওয়া হারাম, এবং সালাফিদের আক্ষরিক তাবিল সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। প্রকৃত ব্যাখ্যা অনুসারে, বিপদ বা দুর্যোগের জন্য কখনো সময়কে দায়ী করা যায় না; কারণ প্রকৃত দায় আল্লাহর ওপর।

Address

গ্রাম/হলহলিয়া, থানা/তাহিরপুর, জেলা/সুনাম গঞ্জ
Sylhet

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Usman posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category