Usman

Usman আকিদায় আশ'আরি, মাতুরিদী।
মাযহাব "ফিক্বহে হানাফি" অনুসারি।

পেজের পক্ষ থেকে আপনাদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।

দ্বীন প্রচার এবং ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারনা পৌঁছে দিতে আমি আপনাদের মাঝে ইসলামিক গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় তুলে ধরবো। এর পাশাপাশি, নিয়মিত শেয়ার করবো:

🔰 ওয়াজ
🔰 মাহফিল
🔰 কুরআন তেলাওয়াত
🔰 সুরা
🔰 কেরাত
🔰 ইসলামিক গান
🔰 গজল
🔰 হামদ
🔰 নাথ
🔰 সহ অন্যান্য ইসলামিক সচেতনতামূলক পোস্ট

দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে এবং ইসলামের প্রতি গভীর ধারণা লাভ করতে, পেজটি লাইক ও ফলো দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।

ধন্যবাদ।

রাতে ঘুম ভেঙে গেলে যে দোয়া পড়বেন- ঘুমাচ্ছেন, এ অবস্থায় ঘুম যদি ভেঙ্গে যায়---- তখন এইটা পড়ে নিবেন--« ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ...
12/09/2025

রাতে ঘুম ভেঙে গেলে যে দোয়া পড়বেন-

ঘুমাচ্ছেন, এ অবস্থায় ঘুম যদি ভেঙ্গে যায়---- তখন এইটা পড়ে নিবেন--

« ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻚُ ﻭَﻟَﻪُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ، ﻭَﻫُﻮَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻗَﺪِﻳﺮٌ، ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻛﺒَﺮُ، ﻭَﻻَ ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻌَﻠِﻲِّ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ‏» ‏« ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔﺮْ ﻟِﻲ ».

অর্থ- “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুউচ্চ সুমহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। হে রব্ব ! আমাকে ক্ষমা করুন”।

উবাদা ইবনু সামিত (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “যদি কারো রাত্রে ঘুম ভেঙ্গে যায় অতঃপর সে উপরের যিকিরের বাক্যগুলো পাঠ করে এবং এরপর সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় অথবা কোনো প্রকার দু‘আ করে বা কিছু চায় তবে তার দু‘আ কবুল করা হবে। আর যদি সে এরপর উঠে ওযু করে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করে তাহলে তার সালাত কবুল করা হবে।” (সহীহ বুখারী, ১/৩৮৭, নং ১১০৩)

আল্লাহ তাআলার স্থানগত উচ্চতা নয়, মর্যাদা-ভিত্তিক ‘উচ্চতা’-ইমাম সাইফুদ্দীন আল-আমেদী ছিলেন প্রখ্যাত ইসলামী তত্ত্ববিদ ও মুত...
12/09/2025

আল্লাহ তাআলার স্থানগত উচ্চতা নয়, মর্যাদা-ভিত্তিক ‘উচ্চতা’-

ইমাম সাইফুদ্দীন আল-আমেদী ছিলেন প্রখ্যাত ইসলামী তত্ত্ববিদ ও মুতাকাল্লিম। তার কিতাব “غاية المرام في علم الكلام” কালাম (ইসলামিক তত্ত্ববিদ্যা) বিষয়ে একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ। গ্রন্থে তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস ও তাওহীদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন।

ইমাম সাইফুদ্দীন আল-আমেদী রহ: বলেন,
"معتقد أهل الحقّ أنّ البارئ لا يشبه شيئًا من الحادثات ولا يماثله شيء من الكائنات ولا له مكان يحويه ولا زمان هو فيه، أول لا قبل له وآخر لا بعد له، ليس كمثله شيء وهو السميع البصير"
অর্থ: আহলুস সুন্নাহ ও আহলুল হক-এর বিশ্বাস অনুযায়ী, স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা কোনো সৃষ্টি বা ঘটনার সাথে তুলনীয় নন। তিনি কোনো জীবিত বা অজীবিত সত্তার মতো নয়। আল্লাহর কোনো স্থান নেই যা তাঁকে ধারণ করে, এবং কোনো সময়ের অন্তর্ভুক্তও নন। তাঁর কোনো পূর্ব বা পর নেই। কোনো সত্তার সঙ্গে তাঁর তুলনা করা সম্ভব নয়। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদর্শী।" (গায়াতুল-মারাম ফি ‘ইলমিল-কালাম- প্রকাশক: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৯)

এবারত থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি যে, আল্লাহর সত্তা সম্পূর্ণভাবে অনন্য, সৃষ্টি ও সৃষ্টির সীমার বাইরে। তিনি স্থান ও সময়ের আওতায় নেই, এবং কোনো কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না। এই কালামের ভিত্তি অনুযায়ী, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থানগত বা সময়গত কোনো ভাবনা দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাঁর মর্যাদা ও ক্ষমতা অসীম এবং অপ্রতিরোধ্য।

প্রচলিত মিলাদ ও কিয়াম কি শরিয়ত সম্মত?ইসলামী শরী‘আতে মনগড়া ইবাদতের বৈধতা নেই। ইবাদতের মৌলিক বুনিয়াদ হলোঃ কুরআন এবং সুন্না...
12/09/2025

প্রচলিত মিলাদ ও কিয়াম কি শরিয়ত সম্মত?

ইসলামী শরী‘আতে মনগড়া ইবাদতের বৈধতা নেই। ইবাদতের মৌলিক বুনিয়াদ হলোঃ কুরআন এবং সুন্নাহ। এর বাইরে ইবাদতের নামে কোন কিছু করলে সেটা হবে বিদ‘আত ও গোমরাহী। হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ

“প্রত্যেক বিদ‘আত গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নামে টেনে নিয়ে যাবে।” (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নংঃ ১৫৭৮)

মিলাদ-কিয়াম বিদআত। কেননা আল্লাহর কিতাব, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহ, সাহাবাদের আমল এবং সম্মানিত তিন যুগের কোন যুগে এর কোন অস্তিত্ব ছিলনা। তাই আমরা এটাকে বিদআত বলি। কারণ যে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হবে, কোরআন বা সুন্নাহয় অবশ্যই তার পক্ষে দলীল থাকতে হবে। আর মিলাদ-কিয়ামের পক্ষে এরকম কোন দলীল নেই বলেই এটি একটি বিদআতী ইবাদত।

মিলাদ প্রসঙ্গ ও তার ইতিহাস:

মীলাদ এর আভিধানিক অর্থ জন্ম, জন্মকাল ও জন্ম তারিখ। পরিভাষায় মীলাদ বলা হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা বা জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনার মজলিস।

তবে আমাদের দেশে প্রচলিত মীলাদ বলতে বোঝায় ঐ সব অনুষ্ঠান, যেখানে মওজু’ রেওয়ায়েত সম্বলিত তাওয়ালূদ পাঠ করা হয় এবং অনেক স্থানে দুরূদ পাঠ করার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মজলিসে হাজির-নাজির হয়ে যান-এই বিশ্বাসে কিয়ামও করা হয়। এসব করা হলে মূলত সেটাকে মীলাদ মাহফিল মনে করা হয়, চাই তাতে রাসূলের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা হোক বা না হোক। পক্ষান্তরে এসব ছাড়া অর্থাৎ তাওয়ালূদ, সমস্বরে ভুল দরূদ তথা ইয়া নবী সালা-মালাইকা… এবং কিয়াম করা না হলে সেটাকে মীলাদ মনে করা হয় না।

মিলাদের ইতিহাস: মূলতঃ হিজরী ৬ষ্ঠ শতাব্দী পর্যন্ত এ ধরনের মিলাদ কোথাও অনুষ্ঠিত হয়নি। ৬ষ্ঠ হিজরী শতাব্দীর পর বাদশা মুজাফফররুদ্দীন আবু সাঈদ কৌকরী বিন আরবাল তিনি আমোদ-প্রমোদের জন্য এ বিদাতের সর্বপ্রথম উদ্ভোধন করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া- ১৩/১৫৯) যার প্রকৃত ইতিহাস এই–

বাদশা মুজাফফর ছিলেন একজন অপব্যয়ী শাসক। রাষ্ট্রীয় অর্থ তিনি সীমাহীনভাবে খরচ করতেন। মিলাদ-অনুষ্ঠানের প্রসার ও প্রচলনে অঢেল অর্থ খরচ করতেন। ইতিহাসবেত্তা ইমাম যাহাবী রহ. বলেন, তার মিলাদ মাহফিল-কাহিনী ভাষায় ব্যক্ত করার মত নয়। মিলাদ অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য ইরাকের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে এমনকি আলজেরিয়া হতেও মানুষের সমাগম ঘটত । মিলাদের দিন তার ও তার স্ত্রীর জন্য সুরম্য কাঠের গম্বুজাকৃতির তাঁবু তৈরী করা হত। সেখানে গান বাজনা ও খেলাধুলার আসর জমত। মুজাফফর প্রত্যহ আসরের পরে সেখানে আসত এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করত। অনুষ্ঠান কয়েক দিন যাবত চলত। অসংখ্য পশু জবাই করে আগত ব্যক্তিদের জন্য ভোজসভার আয়োজন করা হত। এ উপলক্ষে সে তিন লাখ দিনার বাজেট পেশ করত। ফকির-দরবেশদের জন্য দু’ লাখ এবং অতিথিদের জন্য এক লাখ দিনার। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা করেন, আমি দস্তরখানায় বিশেষ প্রজাতির একশত ঘোড়া, পাঁচ হাজার বকরীর মাথা, দশ হাজার মুরগি, এক লাখ গামলা, এবং তিন হাজার হালুয়ার পাত্র গণনা করেছি। (আল মিনহাজুল ওয়াজিহ ১৬২)

অন্যদিকে যে আলেম প্রচলিত মিলাদ প্রবর্তনে সাহায্য করেন তার নাম মাজদুদ্দিন আবুল খাত্তাব উমার বিন হাসান বিন আলী বিন জমায়েল। তিনি নিজেকে সাহাবী দাহেয়াতুল কালবি রাযি. এর বংশধর বলে দাবি করেন। অথচ তা ছিল মিথ্যা দাবি। কারণ দাহেয়াতুল কালবি রাযি. কোনো উত্তরসূরী ছিল না। তাছাড়া তার বংশধারায় মধ্যস্তন পূর্বপুরুষরা ধ্বংসের মধ্যে নিপতিত হয়েছিল। উপরন্তু উক্ত আলেমের পেশকৃত বংশধারায় অনেক পুরুষের উল্লেখ নাই। (মিজানুল ইতিদাল ১/১৮৬) উক্ত সরকারি দরবারী আলেম একটি পুস্তকও রচনা করেছিলেন। যে পুস্তকে মিলাদের রূপরেখা বর্ণনা করা হয়েছিল। ৬০৪ হিজরীতে শাসক মুজাফ্ফারকে পুস্তকটি উপহার দেন। এতে সে খুশি হয়ে তাকে দশ হাজার দিনার বখশিশ দেয়। এভাবে এখান থেকেই মিলাদুন্নবী উদযাপনের সূচনা হয়। (টিকা সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৫/২৭৪)

মিলাদপ্রথা আবিস্কারের পরে সে সময়ের মানুষ বছরে একটি দিনে (১২ রবিউল আউয়াল) তা উদযাপন করত এবং কয়েকদিন ধরে চলত। পরবর্তীতে কিছু মানুষ এটাকে সওয়াবের কাজ মনে করে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপলক্ষে উদযাপন করতে শুরু করে। আগে বড় ধরনের মাহফিলের আয়জন করা হত। বর্তমানে মনগড়া কিছু দুরুদ ও গজল গেয়ে শেষ করা হয়।

সুতরাং মীলাদ বলতে যদি এই অর্থ হয় যে, রাসূলের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা, তাহলে নিঃসন্দেহে তা কল্যাণ ও বরকতের বিষয়। কিন্তু যদি প্রচলিত অর্থ উদ্দেশ্য হয়, যা উপরে উল্লেখ করা হলো, তাহলে তা কুরআন সুন্নাহের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বিদ‘আত ও গোমরাহী।

কেননা শরী‘আতের ভিত্তি যে চারটি বিষয়ের উপর তথা কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াস, এই চারটির কোনটি দ্বারা উক্ত মীলাদ প্রমাণীত নয়।

দ্বিতীয়ত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাদেরকে সত্যের মাপকাঠি বলেছেন এবং যাদের যুগকে সর্বোত্তম যুগ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং যাদের আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে বলেছেন তারা হলেন সাহবায়ে কিরাম। তাদের কারো থেকে এজাতীয় মীলাদ প্রমাণিত নেই, এবং তাদের কারো যুগেই এর অস্তিত্ব ছিল না। এমনকি চার মাযহাবের ইমামগণের কারো যুগেও তার হদিস ছিল না। এক কথায় রাসূলের যমানা থেকে দীর্ঘ ছয়শত (৬০০) বছর পর্যন্ত এর কোন অস্তিত্ব ছিল না। বরং ৬০৪ হিজরীতে তার সূচনা হয়।

কিয়াম প্রসঙ্গ ও ইতিহাস:

কিয়াম শব্দের আভিধানিক অর্থ দাঁড়ানো। আর মুআশারা তথা সামাজিকতায় কিয়াম বলতে বোঝায় কারো আগমনে দাঁড়ানো। আর মীলাদের ক্ষেত্রে কিয়াম বলতে বোঝায় কোন মজলিসে সমস্বরে দরূদ পাঠ করার পর, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত মজলিসে হাজির হয়ে গেছেন,এই ধারণায় ইয়া নবী বলতে বলতে তাঁর সম্মানে দাঁড়িয়ে যাওয়া, এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুরূদ পাঠ করা।

এক. যখন উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা একথা প্রমাণিত হলো যে, প্রচলিত মীলাদ কুরআন সুন্নাহ ইজমা কিয়াস আমল দ্বারা সাব্যস্ত নয়, এবং খাইরূল কুরুনের যুগে তার কোন অস্তিত্ব ছিল না, তখন কিয়াম বৈধ হওয়ার তো কোন প্রশ্নই আসে না।

উপরোন্তু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় নিজের জন্য কিয়াম করাকে অপছন্দ করতেন। ফলে সাহাবায়ে কিরাম তাঁর প্রতি অপরিসীম মুহাব্বত ও ভালোবাসা থাকা সত্ত্বেও, তিনি যখন স্বশরীরে উপস্থিত হতেন তখন তাঁকে দেখতে পেয়েও সাহাবায়ে কিরাম দাঁড়াতেন না। সুতরাং যখন তিনি তাঁর জীবদ্দশায়ই তাঁর সম্মানে দাঁড়ানোকে অপছন্দ করতেন, তখন স্বয়ং রাসূলের অপছন্দনীয় বস্তুকেই রাসূলের জন্য সম্মানের বিষয় নির্ধারণ করা, নিজেদের অজ্ঞতা প্রকাশ করা কিংবা রাসূলের প্রতি অবজ্ঞা ও উপহাস করা ছাড়া, আর কী বা বলা যেতে পারে!! (আল্লাহ তা‘আলা আমাদের হিফাযত করুন)

দুই. হাদীস শরীফে আছে- হযরত আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

যে আমার কবরের নিকট এসে আমার উপর দুরূদ পাঠ করবে আমি তা সরাসরি শুনব, আর যে দূরে থেকে আমার উপর দুরূদ পাঠ করবে তা আমার নিকট পৌঁছানো হবে। (শুআবুল ঈমান হা.নং-১৫৮৩)

অন্যত্র আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

আল্লাহর কতক ফিরিশতা রয়েছেন, যারা গোটা পৃথিবীতে বিচরণ করতে থাকেন, এবং উম্মতের সালাম আমার নিকট পেশ করেন। (দারেমী, হা.নং-২৭৭৪)

সুতরাং তাদের কথা অনুযায়ী যদি রাসূল দরূদের মজলিসে সস্বশরীরে হাযির হয়ে থাকেন, তাহলে উল্লেখিত হাদীসের কী অর্থ থাকে? যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, ফিরিশতা দ্বারা দুরূদ পৌঁছানো হয়। মূলত এটা চরম অজ্ঞতার বর্হিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছুই না।

তিন. কুরআন এবং হাদীসের অসংখ্য দলীল দ্বারা একথা প্রমাণিত যে, রাসূল হাযির-নাযির নন। একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই হাযির-নাযির বা সর্বত্র বিরাজমান। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন- (তোহফায়ে আহলে বিদ‘আত, ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত ধারণা)

কিয়ামের ইতিহাস: এটি প্রচলিত মিলাদের অনেক পরে আবিষ্কার হয়েছে।

৭৫১ হিজরির কথা। খাজা তকিউদ্দিন ছিলেন একজন ভাব কবি ও মাজযুব ব্যক্তি। নবীজীর শানে তিনি কিছু কাসিদা (কবিতা) রচনা করেন। বরাবরের ন্যায় একদিন তিনি কাসিদা পাঠ করছিলেন এবং ভাবাবেগে হঠাৎ তিনি দাঁড়িয়ে কাসিদা পাঠ করতে লাগলেন। ভক্তরাও তাঁর দেখাদেখি দাঁড়িয়ে গেল। ঘটনা এখানেই শেষ। তিনি আর কখনো এমনটি করেন নি।

এখানে একটা বিষয় লক্ষনীয় যে, খাজা তকিউদ্দিন কবিতা পাঠ করতে করতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। এটি কোন মিলাদের অনুষ্ঠান ছিল না। তিনি অনিচ্ছাকৃত দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু মিলাদের জন্মের একশত বছর পরে বিদআতপন্থীরা এটিকে মিলাদের সাথে জুড়ে দেয় নবী হাজির নাজির বলে। ফলে কিয়ামজাত মিলাদ বিদআত হওয়ার বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠে।

সুতরাং ইসলামের চার খলিফার যুগ শেষ হয়ে আরো ৫ পাচঁ শতাব্দী অতিবাহিত হওয়ার পর ৬০৪ হিজরী সনে ইরাকের মুসেল শহরের বিলাসপ্রিয় ও ধর্মদ্রোহী বাদশা মুজাফফররুদ্দীন আবু সাঈদ কৌকরী বিন আরবাল এর নির্দেশে এক স্বার্থবাদী আলেম আবুল খাত্তাব উমার বিন হাসান বিন আলী বিন জমায়েল কর্তৃক উদ্ভাবিত মিলাদ নামক এই বিদআত এবং তারও একশত বছরের পরে আবিস্কৃত কিয়াম নামক এই বিদআত গ্রহন করার কোন অর্থই হতে পারে না। বরং কয়েকটি কারণে একে সাওয়াবের কাজ মনে করে করা হল বড় বিদআত।

প্রথম কারণ: আল্লাহ তা’আলা বলেছেন-وَمَآ ءأتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا অর্থাৎ, রাসূল যা কিছু নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক। (সূরা হাশর : ৭)

দ্বীতিয় কারণ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ অর্থাৎ, যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু প্রবর্তন করে যা এর অন্তর্ভূক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারী ২৬৯৭; মুসলিম ১৭১৮)

তৃতীয় কারণ: অন্যত্র তিনি বলেছেন-

فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ

অর্থাৎ, তোমাদের জন্য আবশ্যক আমার ও আমার পরবর্তী হেদায়াতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদার সুন্নাতকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরা যেভাবে দাঁত দিয়ে কোন জিনিস দৃঢ়ভাবে কামড়ে ধরা হয়। আর শরীয়তে নিত্য নতুন জিনিস আবিস্কার করা হতে বেঁচে থাক। কেননা সকল নবসৃষ্ট বস্তুই বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহী। (আবু দাউদ ৪৬০৭)

আর আমরা জানি, আমাদের নবী সকল নবীদের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ। তিনি সবার চেয়ে অধিকতর পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের পয়গাম পৌঁছিয়েছেন। যদি মিলাদ-কিয়াম আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত দ্বীনের অংশ হত আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কারণ হত, তাহলে অবশ্যই তিনি তা উম্মতের জন্য বর্ণনা করতেন বা তাঁর জীবনে একবার হলেও আমল করে দেখাতেন এবং তাঁর সাহাবীগণ বিশেষত খোলাফায়ে রাশেদা অবশ্যই তা করতেন। যেহেতু তাঁরা এমনটি করেছেন বলে বিদআতিদের কিছু মিথ্যা ও বানোয়াট কথা ছাড়া নির্ভরযোগ্য একটি বর্ণনাও পাওয়া যায় না, তাই প্রমাণিত হয় যে, ইসলামের সাথে এই মিলাদ-কিয়ামের কোন সম্পর্ক নেই বরং এটা বিদআত, যা থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে সাবধান থাকতে বলেছেন।

চতুর্থ কারণ: মিলাদ মাহফিলের মত বিদআত আমলের আবিস্কারের মাধ্যমে এ কথা প্রতীয়মাণ হয় যে, আল্লাহ তা’আলা দ্বীনকে এ উম্মতের জন্য পরিপূর্ণ করেন নি, তাই দ্বীনের পরিপূরক কিছু আবিস্কারের প্রয়োজন হয়েছে। তেমনি একথাও বুঝা যায় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের জন্য কল্যাণকর সকল বিষয়ের তাবলীগ বা প্রচার করেন নি। যে কারণে পরবর্তীতে আল্লাহর অনুমোদন ব্যতিরেকে শরীয়তে নতুন কিছু আবিস্কারের প্রয়োজন দেখা দেয়। এর মাধ্যমে তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চায়। এটা চুড়ান্ত পর্যায়ের অন্যায় ও ভুল। এটা আল্লাহর দুশমন ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান কর্তৃক তাদের ধর্মে নবপ্রথা সংযোজনের সাথে সামঞ্জস্য স্বরূপ এবং আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপর একধরণের অভিযোগও বটে! অথচ আল্লাহ তা’আলা তাঁর দ্বীনকে পরিপূর্ণ ও বান্দাদের জন্য সকল নিয়ামত সস্পূর্ণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন-

اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكَمْ نعْمَتِيْ وَ رَضِيْتُ لَكُم الإِسْلامَ دِيْنًا

আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পরিপূর্ণ করে দিলাম ও আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা: ৩)

প্রচলিত মীলাদের ব্যাপারে প্রসিদ্ধ উলামায়ে কিরামের উক্তি:

ইমাম সুয়ূতী রহ. বলেন,

প্রচলিত মীলাদ না কুরআন সুন্নাহর কোথাও আছে, না পূর্ববর্তী উম্মতের আদর্শ কোন ব্যক্তি থেকে প্রমাণিত। বরং তা সুস্পষ্ট বিদ‘আত, যার আবিষ্কারক হলো একদল পেটপূজারী। (আল-হাবী লিল ফাতওয়া: ১/২২২-২২৩)

হাফেয সাখাবী রহ. তার ফাতওয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেন,

এজাতীয় মীলাদ সর্বোত্তম তিন যুগের সালফে সালিহীনের কারো থেকে সাব্যস্ত নেই। বরং এর পরবর্তী যুগে সূচনা হয়েছে। (সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ: ১/৩৬২)

আল্লামা আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ মিসরী মালেকী রহ. বলেন,

চার মাযহাবের উলামায়ে কিরাম এজাতীয় প্রচলিত মীলাদ নিন্দনীয় হওয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত পোষণ করেন। (আল ক্বওলুল মু’তামাদ, পৃষ্ঠা: ১৬২)

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. লিখেছেন-প্রচলিত এই মীলাদ অনুষ্ঠান যা সালফে সালিহীনের যুগে ছিল না। যদি এ কাজে কোন ফযিলত ও বরকত থাকত , তবে পূর্বসূরীরা আমাদের চাইতে বেশী হকদার ছিলেন ,কারণ তারা নবী প্রেমের ক্ষেত্রে আমাদের চাইতে অনেক অগ্রগামী এবং ভাল কাজে অধিক আগ্রহী ছিলেন। (ইকতিজা উসসিরাতিল মুস্তাকিমঃ-২৬৫)

আফসোস ও বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এরূপ বিদআতি অনুষ্ঠান এমন সব মুসলমান দ্বারাও সংঘটিত হচ্ছে, যারা নিজদেরকে সুন্নি দাবি করে। তাকে বলতে হবে, যদি তুমি সুন্নি ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর অনুসারী হওয়ার দাবী রাখ, তাহলে বল, তিনি স্বয়ং বা তাঁর কোন সাহাবী বা তাঁদের সঠিক অনুসারী কোন তাবেয়ী কি একাজটি করেছেন? না এটা ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান বা তাদের মত আল্লাহর অন্যান্য শত্রুদের অন্ধ অনুকরণ? এধরণের মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর প্রতি ভালবাসা প্রতিফলিত হয়না। যা করলে ভালবাসা প্রতিফলিত হয়, তা হল তাঁর নির্দেশের অনুসরণ করা, তাঁর শিক্ষা দেয়া দুরূদ পাঠ করা, তাঁর সুন্নাতের প্রতি যত্নবান হওয়া, তিনি যা বলেছেন, তা বিশ্বাস করা, যা থেকে নিষেধ করেছেন, তা বর্জন করা। আল্লাহ যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, কেবল সেভাবেই তাঁর ইবাদত করা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

مَنْ أَحْدَثَ حَدَثًا أَوْ آوَى مُحْدِثًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ، لَا يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلَا عَدْلٌ، قَالُوا: وَمَا الْحَدَثُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: بِدْعَةٌ بِغَيْرِ سُنَّةٍ...

‘যে ব্যক্তি (দ্বীনের ভেতর) নতুন কোনো বিষয় উদ্ভাবন করল, অথবা নব উদ্ভাবনকারীকে আশ্রয় দিল তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও সকল মানব জাতির লানত। তার ফরয-নফল কোনো আমল কবুল হবে না। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নব উদ্ভাবন কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সুন্নাহ বাদ দিয়ে বেদআত অবলম্বন করা ...। -কিতাবুল মারাসীল আবু দাউদ, হাদীস ৫৩৫

মনে রাখতে হবে, কুরআন ও সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরা এবং খোলাফায়ে রাশেদীন ও তাবেয়ীদের প্রদর্শিত পথে চলার ভিতরেই রয়েছে মুসলমানদের জন্য ইহ ও পরকালীন কল্যাণ ও মুক্তি।

আল্লাহ সকলকে সহিহ বুঝ দান করুন। আমীন।

-------------    ❝ঈদে-মিলাদুন্নাবী !❞   --------------🎙️ইমাম তাজুদ্দীন ফাকেহানী (মৃ.৭৩৪ হি:) বলেন : —لا أعلم لهذا المولد...
10/09/2025

------------- ❝ঈদে-মিলাদুন্নাবী !❞ --------------

🎙️ইমাম তাজুদ্দীন ফাকেহানী (মৃ.৭৩৪ হি:) বলেন : —

لا أعلم لهذا المولد أصلا في كتاب ولا سنة، ولا ينقل عمله عن أحد من علماء الأمة، الذين هم القدوة في الدين، المتمسكون بآثار المتقدمين؛ بل هو بدعة أحدثها البطالون، وشهوة نفس اغتنى بها الأكالون.

❝আমি এই প্রচলিত মিলাদুন্নাবী’র কোনো ভিত্তি কুরআন বা সুন্নাহতে (হাদীসে) খুঁজে পাই না। আর, যারা দ্বীনের ক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ এবং সালাফদের আদর্শকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করেছেন, সেই উম্মতের কোনো আলেমের কাছ থেকে এই আমলের কোনো বর্ণনাও পাওয়া যায় না। বরং এটি এমন একটি বিদ'আত যা কিছু অলস ও অকর্মা লোক শুরু করেছে, বরং এটি এক ধরনের ব্যক্তিগত কামনা, যার মাধ্যমে পেটপূজারিরা নিজেদেরকে ধনী করে তোলে।❞

[ আল মাওরিদ ফি আমালিল মাওলিদ (পৃষ্ঠা ৮-৯) ]

🎙️ ইমাম সাখাবী (মৃ. ৯০২ হি:) তাঁর কিতাবে লিখেছেন ----
وقال الحافظ المؤرخ شمس الدين محمد بن عبد الرحمن السخاوي (ت ٩٠٢ هـ): فأجبت: لم ينقل عن أحد من السلف الصالح في القرون الثلاثة الفاضلة، وإنما حدث بعد،...

❝পূর্ববর্তী উত্তম তিন যুগের (সাহাবাগণ, তাবেয়ীদের ও তাবে-তাবেয়ীদের) কারো থেকে মিলাদুন্নাবী উৎযাপন বর্ণনা হয়নি (তাঁরা এসব করতেন না), এটা পরবর্তীকালে সৃষ্টি হয়েছে !...❞

( كتاب الأجوبة المرضية 1116/3 )
https://shamela.ws/book/17878/1112

🎙️ ইমাম মালেক (রহঃ) বলেছেন ---
فما لم يكن يومئذ دينا: لم يكن اليوم دينا

❝যেই কাজ সেই যুগে (সাহাবা ও সালাফের যুগে কার্যকারণ থাকা সত্ত্বেও) দ্বীন হিসাবে করা হয়নি, তা এই যুগে দ্বীনের অংশ হতে পারে না।❞

🎙️ ইমাম ইবনে হাজার হাইসামী (মৃ. ৯৭৪ হি:) তিনি মীলাদুন্নবী উদযাপন ও মীলাদ পালনের সমর্থক ছিলেন। মীলাদুন্নবী বিষয়ক তাঁর রচিত একটি গ্রন্থের নাম ‘‘ইতমামুন নি’মাতিল কুবরা আলাল আলাম বিমাওলিদি সাইয়িদি ওয়লাদি আদাম’’, সংক্ষেপে: ‘আন-নি’মাতুল কুবরা’। গ্রন্থটি প্রসিদ্ধ।

‘আন-নি’মাতুল কুবরা’-র মূল পান্ডুলিপিগুলোর বক্তব্য নিম্নরূপ:

أحمد الله أتم الحمد كله وأشكره أفضل الشكر وأشمله ... أكتب ورقات في بيان أصل عمل المولد النبوي... دعاني إلى ذلك اختلاف الناس في أصل عمل المولد وهل هو بدعة أو لا وإكثار القصاص والوعاظ في ذكر أخبار موضوعة وحكايات وأشعار مصنوعة غير مستحيين من الله ورسوله في الكذب عليهما عمدا تارة وجهلا أخرى، ومن ثم قال الأئمة يجب على كل عارف الإنكار عليهم باليد فاللسان فالقلب.... الفصل الأول في أصل عمل المولد. إعلم أنه بدعة لأنه لم ينقل عن أحد من السلف في القرون الثلاثة التي شهد النبي ﷺ بخيريتها؛ لكنها بدعة حسنة لما اشتملت عليه من الإحسان الكبير للفقراء ومن قراءة القرآن وإكثار الذكر والصلاة على النبي ﷺ..... إذا كان أهل الصليب اتخذوا ليلة مولد نبيهم عيدا أكبر فأهل الإسلام أولى بذلك وأجدر...

❝আল্লাহর প্রশংসা করছি সকল পরিপূর্ণ প্রশংসা এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সর্বোত্তম ও পূর্ণতম কৃতজ্ঞতা... মীলাদুন্নবী পালনের মূলভিত্তি বর্ণনা করার জন্য আমি একটি পুস্তিকা লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম....। এটি লিখতে আমি উদ্বুদ্ধ হলাম তার কারণ মীলাদ পালনের মূলভিত্তি বিষয়ে মানুষেরা মতভেদ করেছে যে তা বিদআত কি না। আর গল্পকার বক্তা ও ওয়ায়িজগণ ব্যাপকভাবে জাল হাদীস এবং ভিত্তিহীন গল্প ও কবিতা বলছেন। তারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ) থেকে একটুও লজ্জাবোধ করেন না- নির্লজ্জভাবে তাঁদের নামে মিথ্যা বলেন- কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে এবং কখনো মুর্খতার কারণে। এজন্যই ইমামগণ বলেছেন: প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব দায়িত্ব হাত দিয়ে, জিহবা দিয়ে বা অন্তর দিয়ে এদের প্রতিবাদ করা।... প্রথম পরিচ্ছেদ মীলাদ পালনের মূল ভিত্তি বর্ণনার জন্য। পাঠক জেনে রাখুন যে, মীলাদ পালন বিদআত; কারণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে তিন যুগের কল্যাণের সাক্ষ্য দিয়েছেন সে তিন যুগের সালফ সালিহীন কোনো ব্যক্তি থেকে এ কর্ম বর্ণিত হয় নি। তবে তা বিদআতে হাসানা বা ভাল বিদআত। কারণ এর মধ্যে অনেক ভাল কাজ অন্তর্ভুক্ত। যেমন দরিদ্রদের ব্যাপক কল্যাণ ও সহযোগিতা করা, কুরআন তিলাওয়াত করা, বেশি বেশি যিকর ও দরুদ পাঠ.....। ক্রুশের অনুসারী খৃস্টানগণ যদি তাদের নবীর জন্মের রাতকে সবচেয়ে বড় ঈদ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে তবে এ কাজে ইসলামের অনুসারীদের অধিকার অধিকতর। .....।❞

( ইবন হাজার হাইতামী, আন-নি’মাতুল কুবরা, মিসরের জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত পান্ডুলিপি, নং ৪৪৯, পৃষ্ঠা ১-৩ )

🎙️ ইমাম শামী (মৃ.৯৪২ হি:) বলেন : ----

وذكر محمد بن يوسف الصالحي الشامي (ت ٩٤٢ هـ) في كتابه : قال الحافظ أبو الخير السخاوي- رحمه الله تعالى- في فتاويه: عمل المولد الشريف لم ينقل عن أحد من السلف الصالح في القرون الثلاثة الفاضلة، وإنما حدث بعد، ثم لا زال أهل الإسلام في سائر الأقطار والمدن الكبار يحتفلون في شهر مولده صلى الله عليه وسلم بعمل الولائم البديعة المشتملة على الأمور البهجة الرفيعة ويتصدقون في لياليه بأنواع الصدقات ويظهرون السرور ويزيدون في المبرات ويعتنون بقراءة مولده الكريم ويظهر عليهم من بركاته كل فضل عميم. انتهى.

❝প্রচলিত মিলাদুন্নাবী উৎযাপনের প্রথা সাহাবা, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীদের যুগে কেউ করতেন না, বরং পরবর্তীকালে সৃষ্টি হয়েছে।...❞

( সাবলুল-হাদী ১/৩৬২ )
https://shamela.ws/book/1693/402

🎙️ ইমাম ইবনে হাজার হাইতামী (রহঃ) বলেন ---

وقال الحافظ ابن حجر الشافعي رحمه الله تعالى: أصل عمل المولد بدعة، لم تنقل عن أحد من السلف الصالح في القرون الثلاثة.
❝মূলত মিলাদুন্নাবী উৎযাপন একটি বিদয়াত। কারণ পূর্ববর্তী তিন যুগের কোনও সালাফদের থেকে এটি বর্ণিত হয়নি।❞
https://shamela.ws/book/21723/226

🎙️ ইমাম তাজউদ্দীন ফাকিহানী (মৃ.৭৩৪ হি:) বলেন ---

وقد قال أبو حفص عمر بن علي بن سالم بن صدقة اللخمي الإسكندري المالكي، تاج الدين الفاكهاني (ت ٧٣٤هـ) : فقلت وبالله التوفيق: لا أعلم لهذا المولد أصلا في كتاب ولا سنة، ولا ينقل عمله عن أحد من علماء الأمة، الذين هم القدوة في الدين، المتمسكون بآثار المتقدمين؛ بل هو بدعة أحدثها البطالون، وشهوة نفس اغتنى بها الأكالون، بدليل أنا إذا أدرنا عليه الأحكام الخمسة قلنا: إما أن يكون واجبا، أو مندوبا، أو مباحا، أو مكروها، أو محرما.... ولا جائز أن يكون مباحا، لأن الابتداع في الدين ليس مباحا بإجماع المسلمين...
أحدهما: أن يعمله رجل من عين ماله لأهله وأصحابه وعياله، لا يجاوزون [في] ذلك الاجتماع على أكل الطعام، ولا يقترفون شيئا من الآثام؛ فهذا الذي وصفناه بأنه بدعة مكروهة وشناعة،
( كتاب المورد في عمل المولد ، ص: 8 )
https://shamela.ws/book/36626/3

❝মিলাদুন্নাবী উৎযাপনের কোন ভিত্তি আমার জানা নেই কুরআন বা সুন্নাহে (হাদীসে), এবং এর আমল জাতির কোনো আলেম যাঁরা আমাদের আদর্শ তাঁদের থেকেও জানা যায়না।... বরং এটা বাতিল’দের পক্ষ হতে একটি বিদয়াতী কর্মকাণ্ড। আর আলেমদের ইজমা রয়েছে যে, বিদয়াত কখনো শরীয়ত হতে পারেনা।❞

🎙️ ইমাম ফাসী ইবনে হাজ আল-মালকী (মৃ. ৭৩৭ হি:) বলেন : ---

❝মিলাদুন্নাবী উৎযাপন একটি বিদয়াতী কর্মকাণ্ড !❞

قال أبو عبد الله محمد بن محمد بن محمد العبدري الفاسي المالكي الشهير بابن الحاج (ت ٧٣٧هـ): المولد أن ذلك بدعة !
( كتاب المدخل لابن الحاج, ج: 2 ,ص: 25 )
https://shamela.ws/book/11406/332

🎙️ মধ্যপ্রাচ্যের সুবিখ্যাত আলেমে-দ্বীন আবু বক্কর আল-জাযায়িরী (মৃ.২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ) বলেন : -----

❝মিলাদুন্নাবী উৎযাপন করা বিদয়াত !❞

أبو بكر الجزائري (1921- 2018 م): وفساد في الحكم والإدارة ظهرت بدعة المولد النبوي الشريف كمظهر من مظاهر الضعف والانحراف فكان أول من أحدث هذه البدعة الملك المظفر صاحب إربل من بلاد الشام....
ومن طريف ما يعلم في هذا الشأن أن السيوطي ذكر في كتابه الحاوي أن الملك المظفر مبتدع بدعة المولد قد أعد سماطا في أحد الموالد التي يقيمها وضع عليه خمسة.
( كتاب الإنصاف فيما قيل في المولد من الغلو والإجحاف, ص: 50 )
https://shamela.ws/book/12913/49

🎙️ ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (মৃ.৯১১ হি:) বলেন : ---

❝যদি মিলাদুন্নাবী উপলক্ষে অশ্লীলতা ও গানবাজনা পরিত্যক্ত করে শুধুমাত্র মিলাদুন্নাবী উৎযাপন করার নিয়তে অন্যান্য দ্বীনি ভাইদের আমন্ত্রণ করে দাওয়াত খাওয়ানো হয়, তবুও এটি বিদয়াত; কারণ এটি দ্বীনের মধ্যে নতুন সংযোজন। কারণ এটি পূর্ববর্তী সালাফদের থেকে প্রমাণিত নয়, আর দ্বীনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সালাফদের (সাহাবা, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীদের) অনুসরণ করা বেশি উপযুক্ত। তাঁদের কারো থেকেই প্রমাণিত নয় যে তাঁরা মিলাদুন্নাবী উৎযাপন করেছেন, আর তাঁদের জন্য যা যথেষ্ট ছিলো, তা পালন করাও আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে।❞

المؤلف: عبد الرحمن بن أبي بكر، جلال الدين السيوطي (ت ٩١١هـ): فإن خلا منه وعمل طعاما فقط ونوى به المولد ودعا إليه الإخوان، وسلم من كل ما تقدم ذكره، فهو بدعة بنفس نيته فقط؛ لأن ذلك زيادة في الدين وليس من عمل السلف الماضين، واتباع السلف أولى، ولم ينقل عن أحد منهم أنه نوى المولد، ونحن تبع فيسعنا ما وسعهم.
( كتاب الحاوي للفتاوي, ج: 1, ص: 228 )
https://shamela.ws/book/21723/225

যদিওবা ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহঃ) এক স্থানে এটিকে ❝বিদয়াতে-হাসানা❞ বলেছেন --
هو من البدع الحسنة
https://shamela.ws/book/21723/219

কিন্তু অন্যত্র আবার বলেন : ---- ❝এটিকে আমরা অপছন্দনীয় বিদয়াত বলে মনে করি, কারণ সালাফদের থেকে এটার প্রমাণ নেই।❞

بأنه بدعة مكروهة وشناعة؛ إذ لم يفعله أحد من متقدمي أهل الطاعة الذين هم فقهاء الإسلام وعلماء الأنام سرج الأزمنة وزين الأمكنة
https://shamela.ws/book/21723/220

ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহঃ) এক জায়গায় বলেন : ---
❝এটি বিদয়াত, সুতরাং বিদয়াত পালন করা জায়েজ নয়।❞
وهو بدعة لا تجوز،... فهو بدعة وارتكاب البدع لا يجوز،

https://shamela.ws/book/21723/218

🎙️ ইমাম ইবনে নাহাস (মৃ. ৮১৪ হি:) বলেন : ----

❝এটি একটি বিদয়াত, যা পূর্ববর্তী সালাফদের থেকে প্রমাণিত নয়।❞

المؤلف: محيي الدين أبو زكريا أحمد بن إبراهيم ابن النحاس الدمشقي (ت ٨١٤ هـ) : ثم قال: فإن خلا المولد من السماع وعمل طعاما فقط ونوى به المولد ودعا إليه الإخوان وسلم من كل ما تقدم ذكره فهو بدعة بنفس نيته: إذ أن ذلك زيادة في الدين وليس من عمل السلف الماضيين وإتباع السلف أولى بل أوجب من أن يزيد نيته مخالفة لما كانوا عليه.
( كتاب تنبيه الغافلين عن أعمال الجاهلين وتحذير السالكين من أفعال الجاهلين, ص: 499 )

https://shamela.ws/book/35453/486

🎙️ ইমাম জালালুদ্দিন কাসেমী (রহঃ) বলেন: ----

❝আর এমন কোনও আমল যা রাসূল (সাঃ) বা সাহাবায়ে-কেরামগণ করেননি, সেটা পরিত্যাগ করাই ভালো। আর এটিও একটি বিদয়াত।❞

المؤلف: محمد جمال الدين بن محمد سعيد بن قاسم الحلاق القاسمي (ت ١٣٣٢هـ) : ثم قال: لم يفعله النبي صلى الله عليه وسلم ولا أحد من الصحابة فلا شك في أن تركه أفضل من فعله بل هو بدعة.

https://shamela.ws/book/10541/75

🎙️ আর হাদীসে এসেছে ---

الحديث الذي أشرت إليه هو قول النبي صلى الله عليه وسلم: "خير القرون قرني، ثم الذين يلونهم، ثم الذين يلونهم". هذا الحديث الشريف يثني على أجيال المسلمين الثلاثة الأولى، وهم الصحابة، والتابعون، وأتباع التابعين، على التوالي.
❝রাসূল (সাঃ) বলেন, আমাকে যে যুগে পাঠানো হয়েছে (সাহাবাদের যুগ) উত্তম, তারপর পরবর্তী (তাবেয়ীদের) যুগ উত্তম, তারপর পরবর্তী (তাবে-তাবেয়ীদের) যুগ উত্তম !❞

সুতরাং সাহাবাদের, তাবেয়ীদের ও তাবে-তাবেয়ীদের যুগে যেটা দ্বীন ছিলোনা, আজ সেটা কিভাবে দ্বীন হয় ?

লা মাজহাবীরাই হচ্ছে মিলাদ কিয়ামের মত জগন্য বিদাতের আবিস্কারক !অবশেষে কতিপয় দ্বীনী ভাই ও আলেম ওলামাদের উছিলায় জানতে পার...
10/09/2025

লা মাজহাবীরাই হচ্ছে মিলাদ কিয়ামের মত জগন্য বিদাতের আবিস্কারক !

অবশেষে কতিপয় দ্বীনী ভাই ও আলেম ওলামাদের উছিলায় জানতে পারলাম যে মিলাদ ক্বিয়ামের আবিষ্কারক হলো গায়রে মুকাল্লিদ,, মুকাল্লিদগণ নয়। বাদশাহ মুযাফফর আদ্দীন আবু সাঈদ কাওকাবুরী ও তার দরবারি আলেম আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া মিলে মিলাদ ক্বিয়ামের আবিষ্কার করেছিলেন।
তিনি মিলাদের প্রথা চালু করেছিলেন তাও বছরে এক রবিউল আওয়াল মাসের বার তারিখে।
তার রেফারেন্স হচ্ছে,,
দারুল উলূম দেওবন্দের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা রশীদ আহমাদ গাংগুহী (রহ.)'র ফাতাওয়ার কিতাব— ফাতাওয়ায়ে রশীদিয়া, পৃষ্ঠা ২৪৫
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ১৩; পৃ. ১৯০; তারীখে ইবনে খাল্লিকান, ৪র্থ খণ্ড; পৃ. ১১৮—১১৯
সিয়ারু আ’লামিন নুবালা; খণ্ড ২০; পৃ. ৩৩৬; প্রকাশনায়ঃ মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ; প্রথম সংস্করণঃ ১৪২২ হি.
এখানে আরেকটা কথা বলা বাহুল্য যে,, শুধু কাওকাবুরীর দোষ দেয়া যায় না; সাথে তার দরবারি আলেমেরও দোষ দিতে হবে। সেই দরবারি আলেম-ই ত এইটার বৈধতা দিয়েছে।
সেই দরবারি আলেমের নাম আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া।
আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া মীলাদ মাহফিলের বৈধতা ব্যাখ্যা করে ‘‘আত তানবীর ফী মওলিদিল বাশীরিন নাজীর’' (যার অর্থঃ নবীজীর মীলাদ মাহফিলের নূর) নামক কিতাব লিখে। যার ফলে বাদশাহ কাওকাবুরী তাকে এক হাজার দিনার পুরষ্কার প্রদান করে।
উক্ত সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত দলিল-প্রমানাদির আলোচনা আপনাদের সমীপে নিম্নে পেশ করা হলো,,,
ইতিহাস পরিষ্কার সাক্ষী দেয়, মীলাদের প্রচলন করেছে লা-মাযহাবী। কোনো মাযহাবী নয়।
ইতিহাসের কিতাব থেকেই তা প্রমাণ করবো, ইনশাআল্লাহ।
এর আগেও বলেছি, আজ আবারও বলছি, সুন্নীদের মাঝে প্রথম মীলাদের আবিষ্কার করেছে, সাহিবুল ইবরিল (ইরাকের ইবরিলের শাসনকর্তা), আল মুযাফফর আবূ সাঈদ ইবনে যাইনুদ্দীন আলী আল কাওকাবুরী। জন্ম ৫৪৯ হিজরী সনে এবং ইন্তেকাল ১৪ ই রমযান, জুমু‘আর রাত ৬৩০ হিজরীতে। তিনি এবং তার দরবারী আলেম শায়খ আবুল খাত্তাব উমর ইবনে দাহিয়া (মৃ. ৬৩৩ হি.) মিলে প্রচলিত মীলাদ চালু করেছে সুন্নীদের মাঝে।
এর পূর্বে সর্বপ্রথম তা আবিষ্কৃত হয়, মিসরের ইসমাঈলীয় শিয়াদের হতে। সেটা লম্বা ইতিহাস। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা তাকী উদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে আলী আল মাকরিযী (রহ.) তাঁর বিখ্যাত কিতাব ‘‘আল খিতাত’' এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। আল খিতাত কিতাবটির কায়রো থেকে ১৯৯৭ সনে প্রথম সংস্করণ বের হয়।
এছাড়াও আল্লামা মুহাম্মাদ ইবনে বাখীত আল মূতী (রহ.) তাঁর ‘‘আহসানুল কালাম’' কিতাবে তাছাড়াও আল্লামা আলী মাহফূয (রহ.)ও এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
সেটা ছিল প্রথম আবিষ্কার। কিন্তু সুন্নীদের মাঝে প্রথম আবিষ্কার করে, ইবরিলের শাসনকর্তা- আল মুযাফফর এবং তার দরবারী আলেম আবুল খত্তাব মিলে। এ বিষয়ে সকল ঐতিহাসিকগণ একমত। আল্লামা ইবনে কাছীর (রহ.), আল্লামা ইবনে খাল্লিকান (রহ.), আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.), আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ.) সবাই একমত।
আল্লামা ইবনে কাছীর (রহ.) তাঁর বিখ্যাত ইতিহাসগ্রন্থ, যা সকলের নিকট এক বাক্যে গ্রহণযোগ্য ‘‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’' কিতাবের ১৩ নং খণ্ডে ১৯০ পৃষ্ঠায়, আল মুযাফফর আবূ সাঈদ ইবনে যাইনুদ্দীন আলী আল কাওকাবুরী সম্পর্কে আলোচনায় লিখেছেন,
ﻭﻛﺎﻥ ﻳﻌﻤﻞ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺍﻟﺸﺮﻳﻒ ﻓﻲ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻷﻭﻝ
ﻭﻳﺤﺘﻔﻞ ﺑﻪ ﺍﺣﺘﻔﺎﻻ ﻫﺎﺋﻼ . ﻭﻛﺎﻥ ﻣﻊ ﺫﻟﻚ ﺷﻬﻤﺎ ﺷﺠﺎﻋﺎ ﻓﺎﺗﻜﺎ ﺑﻄﻼ ﻋﺎﻗﻼ ﻋﺎﻟﻤﺎ ﻋﺎﺩﻻ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺃﻛﺮﻡ ﻣﺜﻮﺍﻩ . ﻭﻗﺪ ﺻﻨﻒ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺍﺑﻦ ﺩﺣﻴﺔ ﻟﻪ ﻣﺠﻠﺪﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺍﻟﻨﺒﻮﻱ ﺳﻤﺎﻩ : ‏( ﺍﻟﺘﻨﻮﻳﺮ ﻓﻲ ﻣﻮﻟﺪ ﺍﻟﺒﺸﻴﺮ ﺍﻟﻨﺬﻳﺮ ‏) ، ﻓﺄﺟﺎﺯﻩ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﺑﺄﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ، ﻭﻗﺪ ﻃﺎﻟﺖ ﻣﺪﺗﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻥ ﺍﻟﺪﻭﻟﺔ ﺍﻟﺼﻼﺣﻴﺔ، ﻭﻗﺪ ﻛﺎﻥ ﻣﺤﺎﺻﺮ ﻋﻜﺎ ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﺍﻟﺴﻴﺮﺓ ﻭﺍﻟﺴﺮﻳﺮﺓ . ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺴﺒﻂ : ﺣﻜﻰ ﺑﻌﺾ ﻣﻦ ﺣﻀﺮ ﺳﻤﺎﻁ ﺍﻟﻤﻈﻔﺮ ﻓﻲ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻤﻮﺍﻟﺪ ﻛﺎﻥ ﻳﻤﺪ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﺴﻤﺎﻁ ﺧﻤﺴﺔ ﺁﻻﻑ ﺭﺃﺱ ﻣﺸﻮﻱ، ﻭﻋﺸﺮﺓ ﺁﻻﻑ ﺩﺟﺎﺟﺔ، ﻭﻣﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺯﺑﺪﻳﺔ، ﻭﺛﻼﺛﻴﻦ ﺃﻟﻒ ﺻﺤﻦ ﺣﻠﻮﻯ، ﻗﺎﻝ : ﻭﻛﺎﻥ ﻳﺤﻀﺮ ﻋﻨﺪﻩ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺃﻋﻴﺎﻥ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻭﺍﻟﺼﻮﻓﻴﺔ ﻓﻴﺨﻠﻊ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﻭﻳﻄﻠﻖ ﻟﻬﻢ ﻭﻳﻌﻤﻞ ﻟﻠﺼﻮﻓﻴﺔ ﺳﻤﺎﻋﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﻈﻬﺮ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻔﺠﺮ، ﻭﻳﺮﻗﺺ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻣﻌﻬﻢ، ﻭﻛﺎﻧﺖ ﻟﻪ ﺩﺍﺭ ﺿﻴﺎﻓﺔ ﻟﻠﻮﺍﻓﺪﻳﻦ ﻣﻦ ﺃﻱ ﺟﻬﺔ ﻋﻠﻰ ﺃﻱ ﺻﻔﺔ، ﻭﻛﺎﻧﺖ ﺻﺪﻗﺎﺗﻪ ﻓﻲ ﺟﻤﻴﻊ ﺍﻟﻘﺮﺏ ﻭﺍﻟﻄﺎﻋﺎﺕ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﺮﻣﻴﻦ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ، ﻭﻳﺘﻔﻚ ﻣﻦ ﺍﻟﻔﺮﻧﺞ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﺧﻠﻘﺎ ﻣﻦ ﺍﻷﺳﺎﺭﻯ . ﺣﺘﻰ ﻗﻴﻞ ﺇﻥ ﺟﻤﻠﺔ ﻣﻦ ﺍﺳﺘﻔﻜﻪ ﻣﻦ ﺃﻳﺪﻳﻬﻢ ﺳﺘﻮﻥ ﺃﻟﻒ ﺃﺳﻴﺮ، ﻗﺎﻟﺖ : ﺯﻭﺟﺘﻪ ﺭﺑﻴﻌﺔ ﺧﺎﺗﻮﻥ ﺑﻨﺖ ﺃﻳﻮﺏ - ﻭﻛﺎﻥ ﻗﺪ ﺯﻭﺟﻪ ﺇﻳﺎﻫﺎ ﺃﺧﻮﻫﺎ ﺻﻼﺡ ﺍﻟﺪﻳﻦ، ﻟﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻌﻪ ﻋﻠﻰ ﻋﻜﺎ - ﻗﺎﻟﺖ : ﻛﺎﻥ ﻗﻤﻴﺼﻪ ﻻ ﻳﺴﺎﻭﻱ ﺧﻤﺴﺔ ﺩﺭﺍﻫﻢ ﻓﻌﺎﺗﺒﺘﻪ ﺑﺬﻟﻚ ﻓﻘﺎﻝ : ﻟﺒﺴﻲ ﺛﻮﺑﺎ ﺑﺨﻤﺴﺔ ﻭﺃﺗﺼﺪﻕ ﺑﺎﻟﺒﺎﻗﻲ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺃﻥ ﺍﻟﺒﺲ ﺛﻮﺑﺎ ﻣﺜﻤﻨﺎ ﻭﺃﺩﻉ ﺍﻟﻔﻘﻴﺮ ﺍﻟﻤﺴﻜﻴﻦ، ﻭﻛﺎﻥ ﻳﺼﺮﻑ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﺛﻼﺛﻤﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ، ﻭﻋﻠﻰ ﺩﺍﺭ ﺍﻟﻀﻴﺎﻓﺔ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﻣﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ
সংক্ষেপে কিছুটা অনুবাদ উল্লেখ করছি,
অর্থাৎ ‘‘সে রবীউল আউওয়াল মাসে মীলাদ মাহফিলের আয়োজন করতো। বাদশাহ’র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে শায়খ আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া মীলাদ মাহফিলের বৈধতা ব্যাখ্যা করে ‘‘আত তানবীর ফী মওলিদিল বাশীরিন নাজীর’' (যার অর্থঃ নবীজীর মীলাদ মাহফিলের নূর) নামক কিতাব লিখে। যার ফলে উক্ত বাদশাহ তাকে এক হাজার দিনার পুরষ্কার প্রদান করে। উক্ত বাদশাহ’র কোনো কোনো ঈদে মীলাদুন্নবী’র অনুষ্ঠানে পাঁচ হাজার ভূনা মাথা, দশ হাজার মুরগী এবং ত্রিশ হাজার হালুয়া বা মিষ্টির পাত্র থাকতো। …………’’
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ১৩; পৃ. ১৯০; তারীখে ইবনে খাল্লিকান, ৪র্থ খণ্ড; পৃ. ১১৮—১১৯]
ইমাম যাহাবী (রহ.) লিখেছেন,
ﻭﻗﺎﻝ ﺳﺒﻂ ﺍﻟﺠﻮﺯﻱ ﻛﺎﻥ ﻣﻈﻔﺮ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻳﻨﻔﻖ ﻓﻲ
ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺛﻼﺙ ﻣﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ
অর্থাৎ ‘‘ইমাম আল জাওযী বলেন, মুযাফফর উদ্দীন প্রতি বছর মীলাদ মাহফিলের জন্য তিন লাখ দীনার খরচ করতো।’'
[সিয়ারু আ’লামিন নুবালা; খণ্ড ২০; পৃ. ৩৩৬; প্রকাশনায়ঃ মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ; প্রথম সংস্করণঃ ১৪২২ হি.]
প্রমাণ হলো যে কে এই মীলাদ মাহফিলের আবিষ্কারক। এ বার প্রমাণ করবো, সে লা-মাযহাবী, মাযহাব অস্বীকারকারী ছিল।
আল্লামা আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ বসরী (রহ.) বলেন,
ﻛﺎﻥ ﻣﻠﻜﺎ ﻣﺴﺮﻓﺎ ﻳﺄﻣﺮ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺯﻣﺎﻧﻪ ﺃﻥ ﻳﻌﻤﻠﻮﺍ ﺑﺎﺳﺘﻤﺒﺎﻃﻬﻢ ﻭﺇﺟﺘﻬﺎﺩﻫﻢ ﻭﺃﻥ ﻻ ﻳﺘﺒﻌﻮﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻏﻴﺮﻫﻢ ﺣﺘﻰ ﻣﺎﻟﺖ ﺇﻟﻴﻪ ... ﺍﻟﺦ
অর্থাৎ ‘‘সে ছিল অপব্যয়ী বাদশাহ। সে তার সময়ের আলেমদের নিজেদের ইস্তিমবাত এবং ইজতেহাদ করে আমল করার নির্দেশ দিতো এবং তাদের যেকোনো মাযহাব অমান্য করার নির্দেশ দিতো; এ অবস্থায় কিছু স্বার্থান্বেষী আলেম ও ফুদ্বালার একটি দল তার প্রলোভনে আটকে পড়ে। তার কথা মতো, রবীউল আউওয়াল মাসে জশনে জুলূস, ঈদে মীলাদুন্নবীর অনুষ্ঠান শুরু করেছিল। সেই সর্বপ্রথম এই বিদ‘আত আবিষ্কার করেছিল।’’
আল্লামা মুইযুদ্দীন হাসান আল খোয়ারিজমী (রহ.) তাঁর ‘‘আল কওলুল মু’তামাদ’’ কিতাবেও উল্লেখ করেছেন।
এ বার দেখি, তার দরবারী আলেম শায়খ আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া কেমন ছিলেন?
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, আল্লামা হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) লিখেছেন,
ﻛﺜﻴﺮ ﺍﻟﻮﻗﻴﻘﻪ ﻓﻲ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺴﻠﻒ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻭﺧﺒﻴﺚ ﺍﻟﻠﺴﺎﻥ ﺃﺣﻤﻖ ﺷﺪﻳﺪ ﺍﻟﻜﺒﺮ ﻗﻠﻴﻞ ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻓﻲ ﺃﻣﻮﺭ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻣﺘﻬﺎﻭﻧﺎ
অর্থাৎ ‘‘সে ইমামগণের এবং পূর্ববর্তী সালাফে সালেহীন আলেমগণের সাথে বেআদবী করতো। সে ছিল অশ্লীল ভাষী, অহংকারী, নির্বোধ, দ্বীন সম্পর্কে সংকির্ণমানা এবং অলস।’'
[লিসানুল মীযান; খণ্ড ৪; পৃ. ৩৯৬; বৈরূত থেকে প্রকাশিত।]
কাওকাবুরী সম্পর্কে আল্লামা আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ বসরী (রহ.) বলেন,
ﻛﺎﻥ ﻣﻠﻜﺎ ﻣﺴﺮﻓﺎ ﻳﺄﻣﺮ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺯﻣﺎﻧﻪ ﺃﻥ ﻳﻌﻤﻠﻮﺍ ﺑﺎﺳﺘﻤﺒﺎﻃﻬﻢ ﻭﺇﺟﺘﻬﺎﺩﻫﻢ ﻭﺃﻥ ﻻ ﻳﺘﺒﻌﻮﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻏﻴﺮﻫﻢ ﺣﺘﻰ ﻣﺎﻟﺖ ﺇﻟﻴﻪ ... ﺍﻟﺦ
অর্থাৎ ‘‘সে ছিল অপব্যয়ী বাদশাহ। সে তার সময়ের আলেমদের নিজেদের ইস্তিমবাত এবং ইজতেহাদ করে আমল করার নির্দেশ দিতো এবং তাদের যেকোনো মাযহাব অমান্য করার নির্দেশ দিতো’’
সুতরাং বুঝা গেলো, মীলাদ-কিয়ামের উদ্ভাবক ছিল মাযহাব বিদ্বেষী, লা-মাযহাবী এবং গাইরে মুকাল্লিদ। তাহলে লা-মাযহাবীরা এত উঁচু গলায় চিল্লায় কেন?
আমার কিছু কথা:- এটা পরিষ্কার যে মিলাদ ক্বিয়ামের আবিষ্কার করে বাদশাহ মুযাফফর কাওকাবুরী। এটা জঘন্যতম বিদআত। কারন,,আল্লাহ যেদিন দ্বীন ইসলাম সাকসেসফুল করেছিলেন সেদিন এই প্রথাটি সেই দ্বীন ইসলামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তাই এটা ইসলামে নব আবিষ্কৃত প্রথা আর ইসলামে নব আবিষ্কৃতই বিদাত আর প্রতিটা বিদাতই পথভ্রষ্টতা আর পথভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম! তাহলে যারা আজ উচ্চ গলায় মিলাদ ক্বিয়াম জোড়ালোভাবে পালনের তাগিদ দিবে তারা বিদাতি। আর তারাই পথভ্রষ্ট আর তাদের পথভ্রষ্টাতার পরিণাম কি হবে জানেন? তাদের পথভ্রষ্টতার পরিণাম হবে জাহান্নাম।
আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন,
"শুনে রেখ! হাউজে কাউছারের কাছে তোমাদের সাথে আমার দেখা হবে। তোমাদের সংখ্যার আধিক্য নিয়ে আমি গর্ব করব। সেই দিন তোমরা আমার চেহারা মলিন করে দিওনা। জেনে রেখ! আমি সেদিন অনেক মানষু কে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালাব। কিন্তু তাদের অনেককে আমার থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হবে। আমি বলব : হে আমার প্রতিপালক! তারা তো আমার প্রিয় সাথী-সঙ্গী, আমার অনুসারী। কেন তাদের দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে? তিনি উত্তর দিবেন : আপনি জানেন না যে, আপনার চলে আসার পর তারা ধমের্র মধ্যে কি কি নতুন বিষয় আবিস্কার করেছে। (ইবনে মাজাহ)
অন্য এক বর্ণনায় আছে এর পর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই তাদের উদ্দেশে বলবেন :দূর হও! দূর হও!!
মিলাদ ক্বিয়াম নবি সা. থেকে শুরু করে সাহাবী,তাবেয়ী,ইমাম মুজতাহিদ, আমাদের আকাবিরগণ কেউই পালন করেন নি ও এর প্রচলনও করেন নি।
আর যে বাদশাহ মিলাদ ক্বিয়ামের প্রচলন ঘটাইছে সেকি শরিয়ত প্রণেতা!?
সুতরাং, বুঝতে পারচেন কি, যারা মিলাদ ক্বিয়াম করেন তারা আসলে কার অনুসরন ও কাকে খুশি করার জন্য মিলাদ ক্বিয়াম করেন??
অতএব,,এই জঘন্যতম বিদাত হতে বিরত থাকিতে আমি সকল মুসলমান ভাই-বোনদেরকে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।

Address

গ্রাম/হলহলিয়া, থানা/তাহিরপুর, জেলা/সুনাম গঞ্জ
Sylhet

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Usman posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share