25/05/2023
বাকি প্রফেশনের কথা তেমন জানি না। কিন্তু ডাক্তারি একটা কেমন যেনো পেশা। পড়াশোনা করলে সংসার থাকে না,সংসার থাকলে পড়াশোনা হয় না।
বুড়া বয়সে ভাবতে হয়,বিয়ে করিবো নাকি কোচিং করবো। চাকরি করবো নাকি পড়তে যাবো। বাচ্চা নিবো নাকি বিয়ে করবো।
পড়বো,ওকে, বিসিএস না এফসিপিএস/এমডি?
সংসার করবো, ওকে চাকরী আর পড়া বাদ দিয়ে শান্তি পাবো?
চাকরী করবো ওকে। জামাই এক দেশে আর তুমি আরেকদেশে,মানায় নিতে পারবো?
বাচ্চা নিবো? ১ম বাচ্চার পর পড়াবো নাকি ২য় টার পর পড়বো?তখন ব্রেন চলবে তো?
মানে একটা বিচ্ছিরি অবস্থা। আর যদি কেউ ফাঁকিবাজ (সংসারে এবং পড়াশোনায়) তাহলে তার জীবন অন্ধকার। তাদের নিয়ে কিছু বলার নাই।
যারা জীবনে সাকসেসফুল( মানে ডিগ্রী, বাচ্চা,সংসার,চাকরি এবং শান্তি) হয়,তাদের কাছ থেকে শোনা ২ ধরনের কথা আছে।
১. সবই ভাগ্য।আলহামদুলিল্লাহ। আমি তেমন পড়ি নাই।তেমন সংসার নিয়া ভাবি নাই,বাচ্চা কবে হয়ে গেলো,সবই আল্লাহর ইচ্ছে।চাকরিও হয়ে গেলো। প্রিপারেশন ছাড়াই গেছিলাম ইন্টারভিউ দিতে।
২. অনেক কষ্ট করছি জীবনে। সকালে ৫ টায় উঠে পড়তে বসতাম। চুলায় ভাত দিয়ে, বই খুলে রাখছি পাশে। গায়ে হলুদ আর বিয়ের পড়ানোর মাঝের টাইমটাতেও পড়েছি। দিনে চাকরী ছিলো,রাত জেগে পড়েছি। প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দেয়ার সময় পড়েছি। বাসে,রিকশায় পড়েছি। বাচ্চার কান্না থামাতে পড়াগুলা সুর করে গেয়ে গেয়ে, পড়েছি।বাচ্চার পড়ার বয়স হওয়ার পড় দুজনে একসাথে পড়েছি। শপিং,ফেইসবুক, কারো বিয়ে-জন্মদিন, হানিমুন, কোথাও যাই নাই। খালি পড়েছি। চাকরি, বাচ্চা,জামাই সব সামলে এখন আমি এই অবস্থায় আসেছি। অনেক পরিশ্রম।
ফ্রাস্টেশন,ডিপ্রেশন, বাইপোলার মুড,এনজাইটি কি নাই এই প্রফেশনে। এই পেশায় পড়াশোনা না করা একটা পাপ। টাকা কামাতে না পড়া একটা লজ্জা।আর সংসার না হওয়া তো একটা বড় অপূর্ণতা। এতো কিছু হওয়ার পরেও দেখা যায় সন্তান হলেও,মানুষ হয় খুব কম। বাবা মা সময় দিতে পারে না।বেশী বয়সের বাবা মার জন্য সন্তানের জিনগত সমস্যা।
যাই হোক। তবুও এই প্রফেশন ভাল।মহৎ। এতো ব্যস্ততা, এতো চিন্তা,এতো স্ট্রেস থাকে অন্যদের রোগবালাই, অন্যদের ভাল থাকা নিয়ে,যে নিজের টা তেমন একটা মনে পড়ে না। যদি সব সময় এইসব মনে পড়তো,তাহলে ডাক্তারদের জন্য আলাদা করোনা হাসপাতাল না করা গেলেও,মানসিক হাসপাতাল করা লাগতোই।
©ইশরাত অবন্তি