মুন্তাখাব হাদিস Muntakhab Ahadith

মুন্তাখাব হাদিস Muntakhab Ahadith মুন্তাখাব হাদিসের ছয় ছিফাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত ও রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর হাদিস পেতে ফলো করুন

23/12/2024
22/12/2024

মাওলানা সাদ সাহেবকে কে আমির বানাইল?
মাওলানা সাদ সাহেব কি স্বঘোষিত আমির?
#সকলের #জেনে #রাখা #দরকার
১। জীবনের একেবারে শেষের দিকে হজরতজী মাওলানা ইনআমুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। এমতবস্থায় কোন এক রায়বেন্ড সফরের সময় হাজী আব্দুল ওয়াহাব সাহেব দামাত বারকাতুহুম পরবর্তী আমীর মনোনয়নের প্রসঙ্গ উঠান। রায়বেন্ডের বিভিন্ন হযরতগণ মাওলানা যুবায়েরুল হাসান সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে মনোনয়নের পরামর্শ দেন। হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁদের আশ্বস্ত করেন যে, এখানে নয়, নিজামুদ্দিন ফিরে গিয়ে এ ব্যাপারে মাসোয়ারা করা হবে।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টঃ হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহির দ্ব্যর্থহীন কথা – এই মাসোয়ারার জন্য মোনাসেব জায়গা নিজামুদ্দিন।

২. নিজামুদ্দিন ফিরে গিয়ে হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উলামাকেরামদের সাথে পরামর্শ করলে, মাওলানা উবাইদুল্লাহ বালিয়াভি রহমাতুল্লাহি আলাইহি মতামত দেন যে, হজরতজী যেহেতু সারা জীবন সকল কাজে শুধুমাত্র সীরতের অনুসরণই করেছেন, তাই এক্ষেত্রেও নিজে থেকে কিছু না করে বরং সীরতে ফারুকীর অনুসরণে এক জামাত বানিয়ে যেতে পারেন, যাঁরা নিজেদের মধ্যে মাসোয়ারা করে একজন আমীর বানিয়ে নিবেন।
এই পরামর্শ অনুসারে তিনি ১০ জনের একটি জামাত বানান। এই জামাতে ছিলেন –
১. মাওলানা ইজহারুল হাসান সাহেব রহ. ভারত
২. মাওলানা যুবায়েরুল হাসান সাহেব রহ. ভারত
৩. মাওলানা উমার সাহেব রহ. পালানপুরী ভারত
৪. মাওলানা সাঈদ আহমাদ খান সাহেব রহ. মদিনা
৫. মুফতী যাইনুল আবিদীন সাহেব রহ. পাকিস্তান
৬. হাজী আব্দুল ওয়াহাব সাহেব হাফিজহুমুল্লাহ পাকিস্তান
৭. ভাই আফজাল সাহেব রহ. পাকিস্তান
৮. হাজী আব্দুল মুকিত সাহেব রহ. বাংলাদেশ
৯. মিয়াজী মেহরাব সাহেব রহ. ভারত
১০. মাওলানা সাদ সাহেব দামাত বারকাতুহুম

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টঃ
মাওলানা ইব্রাহীম সাহেব এবং মাওলানা আহমাদ লাট সাহেব তুলনামূলক সিনিয়র ছিলেন। তাঁদের চেয়ে জুনিয়রদেরও হজরতজী মাওলানা ইনআমুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি শূরার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের দুজনকে হজরতজী পছন্দ করেন নি। এর পিছনে কি হেকমত ছিল তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।

তাই মাওলানা ইব্রাহীম সাহেব বা মাওলানা আহমাদ লাট সাহেবরা যা দাবি করছেন, অর্থাৎ হজরতজী ইনআমুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি একক আমীরের বদলে একদল শূরার মাধ্যমে এই মেহনত চালানোর ইচ্ছুক ছিলেন বলে যা দাবি করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। যেসব মজলিসে এসব আলোচনা হয়েছে তাঁরা ঐসব মজলিসে ছিলেন না।
৩. হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহির ইন্তেকালের পরে তাঁর বানানো জামাত পরবর্তী আমীর মনোনীত করার জন্য মাসোয়ারায় বসেন। বেশির ভাগ রায় মাওলানা যুবায়েরুল হাসান সাহেব এবং মাওলানা সাদ সাহেবের দিকে আসে।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টঃ
মাওলানা সাদ সাহেবের যোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য করুন। তখন পর্যন্ত তাঁর বয়স ত্রিশ পার হয়নি। তা সত্ত্বেও অনেক প্রবীণ ও গ্রহণযোগ্য আলেম ও সাথীগণ তাঁকে ইমারতের জন্য সবচেয়ে উপযোগী বিবেচনা করে তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন।
৪. তিনদিন যাবৎ মাসোয়ারা করেও একজনের ব্যাপারে একমত হতে না পেরে তিনজনের উপরে মারকাজ ও মেহনতের জিম্মাদারী অর্পণ করা হয়। তাঁরা হলেন মাওলানা ইজহারুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা যুবায়েরুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং মাওলানা সাদ সাহেব।
এটা কোন শূরা ছিল না। বরং ঐ মাসোয়ারার ফয়সাল মিয়াজী মেহরাব সাহেবের দস্তখত করা ফয়সালা(মিয়াজি মেহরাব সাহেবের ঐ দস্তখত করা ফয়সালা আলোচনার শেষে সংযুক্ত করা আছে, কারো সন্দেহ থাকলে তাহকিক করতে পারেন) অনুসারে তিনজন জিম্মাদারী নিয়ে চলবেন। তিনজনের উপরে জিম্মাদারী কেন দেওয়া হল, উপস্থিত আলেমদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে মিয়াজী মেহরাব রহমাতুল্লাহি আলাইহি মাসোয়ারার সাথী তথা শূরাদের একমত না হতে পারাকে অজুহাত হিসাবে দেখান।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টঃ
৪.১. এখানে কোন শূরা বানানোর উমুর ছিল না। ছিল আমীর বানানোর উমুর।
৪.২. একজনকে আমীর বানাতে ব্যর্থ হয়ে তিনজনকে জিম্মাদারী দেয়া হয়।
৪.৩. তিন সদস্য বিশিষ্ট কোন শূরা বানানো হয় নি, বরং তিনজনের উপরে জিম্মাদারী অর্পণ করা হয়েছে।
৪.৪. কোন শূরা বানানো হয়নি বলেই কেউ ইন্তেকালে করলে কি হবে কিভাবে তাঁর স্থলে নতুন শূরা নেয়া হবে এ ব্যাপারে কোন ফয়সালা হয়নি।
৪.৫. মাওলানা ইজহারুল হাসান অল্প কিছুদিন পরই ইন্তেকাল করেন, তখনও বাকি শূরাগণ প্রায় সকলেই জীবিত ছিলেন। বিশেষ করে হাজী সাহেবই হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে প্রথম পরবর্তী জিম্মাদার মনোনয়নের তাকীদ দিয়েছিলেন। তখন হাজী সাহেব বা অন্য কেউই শূন্যপদ পূরণের কোন দাবি উঠান নি। কেননা তাঁরা খুব ভালো ভাবেই তাঁদের নিজেদের ঐ মাসোয়ারা সম্পর্কে জানতেন যে, এরপর থেকে বাকি দুইজন জিম্মাদারী নিয়ে চলবেন। বর্তমানে একজন রয়েছেন, সেই একজনই জিম্মাদারী নিয়ে চলবেন।
৪.৬. এটা ইমারত বলেই উপস্থিত উলামাদের থেকে আপত্তি উঠেছে যে তিনজন কেন। শূরা হলে হয়ত অন্য প্রশ্ন উঠত।
৪.৭. হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ১০ জনের একটি জামাত বানিয়ে জিম্মাদারী দেন নিজেদের মধ্যে একজনকে পরবর্তী আমীর হিসাবে মনোনয়ন করার জন্য। এই ১০ জন মাসোয়ারা করে একজন বেছে নিতে ব্যর্থ হলেও তিনজনের ব্যপারে একমত হন। অর্থাৎ বাকি ৭ জন সর্বসম্মতিক্রমে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। এরপর যদি আবারো আমীর মনোনয়নের ইস্যু উঠে তাহলে তাঁদের এই মাসোয়ারার ফয়সালা অনুসারে তা এই তিনজনের মধ্য থেকেই হতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অমোঘ নিয়মে বর্তমানে শুধু মাওলানা সাদ সাহেবই বাকি আছেন। তিনি ইন্তেকাল করলে এরপরে পরবর্তী আমীরের মাসোয়ারা হতে পারে। আপাততঃ এ ব্যপারে নতুন কোন মাসোয়ারার জরুরত নেই।
৪.৮. বর্তমানে বিভিন্ন সময়ে হাজী সাহেবের নামে যেসব আবেগ ব্যবহার (ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলিং) করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হয় সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং তাঁর অসুস্থতার সুযোগে তাঁর সুনাম ও গ্রহণযোগ্যতা অপব্যবহারের অপচেষ্টা মাত্র। কেননা হাজী সাহেবরাই এই মাসোয়ারাতে ফয়সালা করেছিলেন যে, তাঁরা জিম্মাদারীতে থাকবেন না। এ ব্যাপারে হাজী সাহেবের কোন অভিমত থাকলে আরো আগেই তুলতেন।

পাঠকদের দিলের প্রশান্তির জন্য এই তিন হযরতের কিছু বৈশিষ্ট্য ও কর্মধারা সম্পর্কে জানা জরুরি।
(ক) মাওলানা ইজহারুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ছিলেন বয়োবৃদ্ধ। মাওলানা সাদ সাহেবের মাতামহ। দুর্বলতা সত্ত্বেও তিনি কাশিফুল উলূম মাদ্রাসার জিম্মাদারী সামলাতেন। এছাড়া মারকাজের মসজিদওয়ার জামাতের জিম্মাদারীও তাঁর উপরে ছিল। (এই দায়িত্বকে আমাদের প্রচলিত মসজিদগুলোর সেক্রেটারির সাথে তুলনা করা যায়। অর্থাৎ মারকাজের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।) এছাড়া প্রতিদিন রাতে তিনি মিম্বরে হায়াতুস সাহাবাহ পড়তেন। হায়াতের একটা লম্বা সময় ধরে তিনি এই দায়িত্বগুলো সামলিয়েছেন। এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্বসমূহ পালন করেন।
(খ) মাওলানা যুবায়েরুল হাসান সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বেশ ভারী ছিলেন। এবং শারীরিক ভাবে খুব একটা সক্ষম ছিলেন না। তিনি মোটামুটি সারাক্ষণ দুআ এবং যিকিরে মশগুল থাকতেন। ১৯৮০ সালের হজ্জ সফরে শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রায় বেশির ভাগ সময় তাঁকে সাথে সাথে রাখেন। এবং এক পর্যায়ে তাঁকে খিলাফত দান করেন। যখন তিনি মারকাজে ফেরত আসেন তখন আমি (মাওলানা মেহবুব) সেখানে ছিলাম। আমি তাঁর হাবভাবের মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা দুআ কান্নাকাটিতে মশগুল থাকতেন। ফলশ্রুতিতে তাঁর শরীর ভারী হয়ে যায়। [শায়খুল হাদীস রহমাতুল্লাহি আলাইহির বিশিষ্ট খলিফা মাওলানা ইউসুফ মুত্বলা দামাত বারকাতুহুমের বিভিন্ন মুজাকারায় জানা যায়, শায়খুল হাদীস রহমাতুল্লাহি আলাইহি মাওলানা সাদ সাহেবকে ভবিষ্যতের আমীর হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন। তখনও মাওলানা সাদ সাহেব শিশু মাত্র। শায়খুল হাদীস রহমাতুল্লাহি আলাইহি তৎকালীন মারকাজের জিম্মাদার সাথীদের উদ্দেশ্যে এক চিঠিতে বিশেষ ভাবে নির্দেশ দেন যে, শিশু সাদ সাহেবের যেন এমন তরবীয়ত হয় যাতে তিনি পরবর্তীতে এই কাজের জিম্মাদারী আদায় করতে পারেন। তাই ভবিষ্যৎ ইমারতের অন্যতম দাবিদার মাওলানা যুবায়ের সাহেবের মেহনতের রুখ পাল্টে দিয়ে তিনি যেন মাওলানা সাদ সাহেবকেই ইমারতের একমাত্র উত্তরসূরি মনোনয়ন করলেন।]
(গ) মাওলানা সাদ সাহেব দামাত বারকাতুহুম ছিলেন প্রাণশক্তিতে ভরপুর এক কর্মচঞ্চল তরুণ। হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে শুরু থেকেই বিভিন্ন সফরে নিজের সাথে নিয়ে চলতেন। মূলতঃ হজরতজীর আশীর্বাদেই মাওলানা সাদ সাহেব দাওয়াতে তাবলীগের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে একেবারে কচি বয়স থেকেই পরিচিত ছিলেন
তাই ১৯৯৫ সালের পরে এই তিনজনের মধ্যে প্রধানত সাদ সাহেবই জিম্মাদারী পালন করতেন। মাওলানা ইজহারুল হাসান এবং মাওলানা যুবায়েরুল হাসান রহিমাহুমুল্লাহ খুশি মনে তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে চলতেন এবং সহযোগিতা করতেন। এভাবেই সাদ সাহেবের নেতৃত্বে সব কিছু সুন্দর ভাবে চলছিল।এর প্রমান পাওয়া যায় বিগত ২২ বছর ধরে টঙ্গি ইযতেমায় গুরুত্ব পূর্ণ বয়ান ও রাওনগি হেদায়েতের মত গুরুত্ব পূর্ণ আমল তিনি করতেন।

২০১৪ সালের ১৪ই জানুয়ারী টঙ্গী ইজতেমা চলাকালীন ফজর বাদ মাসোয়ারায় বিভিন্ন দেশের ১৫০ জন জিম্মাদার সাথীর উপস্থিতিতে উনাকে আমির হিসেবে সব সাথী মেনে নেন। আট দিন ধরে এরই আলোচনা, মাসোয়ারা এবং মরাত্তাব করার প্রক্রিয়া চলতে থাকে।২২শে জানুয়ারী বাদ মাগরিব মাওলানা যুবায়ের সাবের কামরায় বাংলাদেশের ১০ জন শুরার উপস্থিতিতে চূড়ান্ত ফায়সালার কাগজে দস্তখত করেন মাওলানা ফারুক সাব। কেউ এর বিরোধিতা করেননি। ২০১৭ সালের সেই ফায়সালার কাগজের কপি আলোচনার শেষে সংযুক্ত করা আছে, কারো সন্দেহ থাকলে তাহকিক করতে পারেন

এ পর্যায়ে তিনটি প্রশ্ন উঠে…
ক) ১৯৯৫ সালে কেন একজন আমীর মনোনীত করা গেল না?
জবাবঃ উম্মতের ঐক্যই সর্বাগ্রে। হায়াতুস সাহাবাহ থেকে আমরা দেখেছি আবু যার রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মত অনেক কট্টর সাহাবীও শুধুমাত্র উম্মতের ঐক্যের খাতিরে ফরজ নামাজেও ব্যত্যয় করেছেন; তিনি মুসাফির হওয়া সত্ত্বেও শুধু আমীরুল মুমিনীনের অনুসরণের খাতিরে কসর আদায় না করে সম্পূর্ণ নামায আদায় করেছেন। আমীরুল মুমিনীন উসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সাথে তাঁর অনেক ইখতিলাফ সত্ত্বেও তিনি মুখালিফাত করেননি। বরং শেষ জীবনে আমীরের ফয়সালা মেনে নিয়ে নির্জনবাস করেছেন। উম্মতের ঐক্য এতই প্রাধান্য রাখে যে, শরীয়তে উম্মতের ঐক্য ধরে রাখার জন্য শরীয়তের সীমার মধ্যে সর্বাত্মক ছাড় দেওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে।
১৯৯৫ সালের উল্লিখিত মাসোয়ারাতে মূলতঃ দুজনের পক্ষে রায় আসে। মাওলানা যুবায়ের সাহেব এবং মাওলানা সাদ সাহেব। এর বাইরে শুধুমাত্র মাওলানা ইজহারুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহির নাম আলোচনায় আসে। অন্য কারো নাম আলোচনায় আসেনি।
সে সময়ে ভারতের প্রভাবশালী সাথীদের মধ্যে এই দুইজনের ব্যাপারে বেশ জোড়ালো সমর্থন ছিল। আলীগড় ও দিল্লির প্ৰভাবশালী বড় বড় দুনিয়াবী লাইনের সাথীদের একচেটিয়া রায় ছিল যুবায়ের সাহেবের পক্ষে। অন্যদিকে মাওলানা সাদ সাহেবের পক্ষে ছিলেন মেওয়াতী ও দিল্লীর সাধারণ সাথীরা। এতে সাথীদের মধ্যে বিভক্তির আশঙ্কা দেখা দেয়।
হজরতজীর বানানো জামাত তথা শূরাগণ তিনদিন মাসোয়ারা করেও একমত হতে পারেন নি। তাই শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে তিনজনের উপরে জিম্মাদারী ন্যস্ত করেন।
বলাবাহুল্য আজ মাওলানা সাদ সাহেবের একক নেতৃত্বের উপর ফিৎনার প্রেক্ষিতে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, আজকের বাস্তবতা সেই দিনই বুযুর্গদের চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়েছিল।

খ) যদি তিনজনের শূরা বানানো হয়ে থাকে তাহলে মাওলানা ইজহারুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহির ইন্তেকালের পর বিশ বছর পার হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর স্থলাভিষিক্ত কাউকে মনোনয়ন দেয়া হল না?
জবাবঃ হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সীরতে ফারুকীর অনুসরণে দশ জনের একটি জামাত বা শূরা বানান পরবর্তী আমীর মনোনয়নের জন্য। এই জামাত বা শূরা ১৯৯৫ সালে হজরতজীর ইন্তেকালের পরে পরবর্তী আমীর মনোনয়নের জন্য মাসোয়ারাতে বসেন। কিন্তু তাঁরা পরপর তিনদিন মাসোয়ারা করেও একজনের উপরে একমত হতে ব্যর্থ হন। তাই অপারগতা বসত তিনজনের উপরে এই মেহনত ও মারকাজের জিম্মাদারী অর্পণ করেন। এটা কোন শূরা ছিল না, বরং জিম্মাদারী ছিল। তাঁদের উদ্দেশ্য তিনজন নয় বরং একজনই ছিল। তাই একজনের ইন্তেকালের পরেও শূন্য স্থান পূরণের কোন কথা উঠেনি।
উল্লেখ্য যে, হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহির অন্যান্য শূরাদের সকলেই তখন পর্যন্ত হায়াতে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা কেউই এই কথিত শূন্যপদ পূরণের দাবি জানান নি। পক্ষান্তরে আজ যারা দাবি উঠাচ্ছেন তারা কেউই হজরতজীর বানানো শূরাতে ছিলেন না। এমনকি মাওলানা যুবায়েরুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি হায়াতে থাকতেও তারা দাবি উঠান নি। এতেই তাদের ভাঁওতাবাজি পরিষ্কার হয়।
গ) কেন মাসোয়ারাতে তিনজন জিম্মাদার বাছাই করে নেয়ার সিদ্ধান্তে মুফতী জয়নুল আবেদীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হাজী আব্দুল ওয়াহাব সাহেব দামাত বারকাতুহুম আপত্তি করেন? কেনই বা মাওলানা সাঈদ আহমাদ খান সাহেব হতাশা ব্যক্ত করেন। (তবে সকলেই ফয়সালা কবুল করেন।)
জবাবঃ শুধু তাঁরাই নন, উপস্থিত উলামাকেরামদের অনেকেই এই ফয়সালায় অবাক হন এবং হতাশ প্রকাশ করেন। এঁদের মধ্যে মাওলানা আশেকে ইলাহী বুলন্দশহরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি অন্যতম। এমন কি ঐ মাসোয়ারার ফয়সাল মিয়াজী মেহরাব সাহেব এবং সে সময়ের প্রধানতম দাঈ মাওলানা উমার পালানপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহিও ফয়সালা ঘোষণার সময় অনেক কান্নাকাটি করেন।
কুরআন, হাদীস ও আসারে সাহাবাতে নির্দেশনা খুবই পরিষ্কার এবং প্রামাণ্য যে, আমীর একজনই হবেন। শরীয়তে সম্মিলিত শূরার ফায়সালা অথবা রোটেশন বা পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতির ফয়সালের কোনই অবকাশ নেই।
শরীয়তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিরও কোন স্থান নেই যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের উপরে ফয়সালা হবে। বরং শরীয়তের অনুমোদিত পদ্ধতি হল মাসোয়ারা। সেখানে পরামর্শ হবে, বিভিন্ন উমুরের উপরে পরামর্শে উপস্থিত সাথীরা স্বতস্ফূর্ত রায় দিবেন। পরিশেষে আমীর ফয়সালা করবেন। আমীরের উপরে বাধ্যবাধকতা নেই যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের উপরে ফয়সালা করতে হবে। বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ, সংখ্যালঘিষ্ঠ এমন কি একক রায়ের উপরেও ফয়সালা করতে পারেন। মোনাসেব মনে করলে আমীর সকল রায়ের বিপরীতেও ফয়সালা করতে পারেন। এমনকি আমীর কোন মাসোয়ারা ছাড়া নিজ সিদ্ধান্তে ফয়সালা করবেন, এটাও শরীয়তে নিষিদ্ধ নয়। আমীরকে মাসোয়ারা করে ফয়সালা করার জন্য অনেক তাকীদ দেয়া হয়েছে কিন্তু বাধ্যতামূলক করা হয়নি। সংক্ষেপে আমীরের জন্য মাসোয়ারা জরুরত এবং কর্তব্য কিন্তু জরুরী বা অত্যাবশ্যক নয়। কিন্তু আমীরের ফয়সালা শরীয়ত বিরোধী না হলে মান্য করা সব সময়েই জরুরী।
এখানে আরো লক্ষণীয় হাজী সাহেব দামাত বারকাতুহুম তিনজনকে জিম্মাদারী দেয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। এতেই বুঝা যায়, তিনি কোন ক্রমেই শূরার পক্ষপাতী ছিলেন না। আজ কথিত আলমী শূরা গং যে দাবি করছে যে, হাজী সাহেব শূরা বানিয়েছেন, তার কোন সত্যতা নেই।

◆ আমীর মনোনয়নের বিভিন্ন পদ্ধতিঃ
শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আমীর মনোনয়নের বেশ কয়েকটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হল –
১. যদি কোন ব্যক্তি কোন ব্যাপারে জিম্মাদারী গ্রহণ করেন অর্থাৎ কোন একটি দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ঐ দায়িত্বের সকল কিছু আঞ্জাম দেন, তাহলেই তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঐ দায়িত্বের জিম্মাদার তথা আমীর হন। যেমন, মাওলানা ইলিয়াস রহমাতুল্লাহি আলাইহি এভাবেই এই কাজের আমীর ছিলেন। তাঁর মেহনত তথা দায়িত্ব আদায়ই তাঁকে জিম্মাদার বানিয়েছে। সীরতে এমন অসংখ্য ঘটনা পাওয়া যায়। উম্মতের কঠিন হালতের মধ্যে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু নিজেই উম্মতকে ঐক্যবদ্ধ করার জিম্মাদারী কাঁধে নেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা নিজেই হিম্মত করে উমাইয়াদের জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জিম্মাদারী নেন। এমন আরো অনেক ঘটনা আছে।
মাওলানা সাদ সাহেব দামাত বারকাতুহুম গত প্রায় দুই দশক ধরে নিজেই দায়িত্ব নিয়ে মারকাজের এবং মেহনতের জিম্মাদারী আদায় করে আসছেন এবং মাওলানা যুবায়েরুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহিও কখনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন নি। বরং সব সময় সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। এবং সব সময় বড় বড় জিম্মাদারী ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব মাওলানা সাদ সাহেবের উপরেই ছেড়ে দিতেন। এখানে উল্লেখ্য হযরত হাসান রদ্বিয়াল্লাহু আনহুও মুআবিউয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর অনুকূলে জিম্মাদারী ছেড়ে দিয়েছিলেন। যুবায়েরুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি যেন সেই সীরতে তৈয়্যেবার অনুসরণ করলেন।
২. যদি কোন ব্যক্তির ব্যাপারে লোকজন শলাপরামর্শ করে বায়আত হন, তাহলেও তিনি আমীর হন।
হযরত আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এভাবেই খলীফা হয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পরে আনসারগণ একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে একজন আমীর নিযুক্ত করেন। তখন মুহাজিরগণ সেখানে যান, উমার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষে কিছু কথা রাখেন। এরপর লোকজন আবুবকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষে বায়আত হন। এখানে কোন আনুষ্ঠানিক মাসোয়ারা বা ফয়সাল ছিল না। বরং তাৎক্ষণিক ভাবে উমার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু জিম্মাদারী নিয়ে কিছু কথা বললে, (কিছু ব্যতিক্রম বাদে) অন্যান্য সাহাবীগণ প্রভাবিত হন এবং আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর অনুকূলে বায়আত হন।
হযরত মাওলানা যুবায়েরুল হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহির ইন্তেকালের পরে মেওয়াত ইজতেমায় কয়েক লক্ষ মানুষ নিজে থেকেই মাওলানা সাদ সাহেব ইমারতের ব্যাপারে বায়আত হন ও সমর্থন ব্যক্ত করেন। নিজামুদ্দিনের জন্য শূরা গঠন করা হয়। শূরাগণও মাওলানা সাদ সাহেবের ইমারতের উপরে একমত হন।

◆ কথিত আলমী শূরা যেভাবে গঠিত হয়ঃ
মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের বক্তব্য অনুসারে ২০১৫ সালে এই শূরা গঠন হয় এবং একটি কাগজে লিখে হাজী সাহেবের কাছে পেশ করা হয়। হাজী সাহেব স্বাভাবিক ভাবে এই কাগজে সাইন করেন নি। বরং ১০১ বার ইস্তেখারার দুআ পড়ে সাইন করেন। এরপর মাওলানা সাদ সাহেবের কাছে পাঠানো হয়। তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, “কোন আলমী শূরা নেই। শুধু আলমী মাসোয়ারা আছে।”
কয়েকটি প্রশ্নের উদ্রেক হয়ঃ
১. আলমী শূরা কে গঠন করে?
২. কেন এটা গঠন হল? কি দরকারে গঠন করা হয়েছে?
৩. কেন মাওলানা সাদ সাহেবের সাথে আলোচনা করা হল না? শুধুমাত্র নিজেরা নিজেরা গঠন করে তাঁকে এটা গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল।
৪. হাজী সাহেব দামাত বারকাতুহুম নিজেও হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহির শূরার সদস্য ছিলেন। কেন তাঁর সাথেও আগে থেকে কোন আলোচনা করা হল না?
৫. হাজী সাহেব কেন স্বাভাবিক ভাবে এই ডকুমেন্টে দস্তখত করেন নি?
৬. বাংলাদেশের কিছু সাথীকে কথিত আলমী শূরার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁরাও দাবি করেছেন তাঁদের কোন মতামত নেয়া নি। তাঁরা কিছুই জানতেন না। কারো কোন মতামত না নিয়ে কেন এভাবে শূরা বানানো হল?
এসব প্রশ্নের উত্তর তাবলীগী মেহনতের প্রায় শত বছর ধরে চলে আসা মোবারক উসূলের মধ্যে পাওয়া যাবে না। উত্তর খুঁজতে হলে এক অশুভ চক্রের পলিটিক্স বুঝতে হবে।
সম্পূর্ণ ব্যাপারটি খোলাসা করতে গেলে এক নোংরা অধ্যায় প্রকাশিত হবে এবং সম্ভাব্য গীবতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
তাই সংক্ষেপে শুধু এতটুকুই বলি এই চক্র মাওলানা সাদ সাহেবকে অমর্যাদা করতে চায়। তারা মাওলানা সাদ সাহেবকে আমীর হিসাবে চাচ্ছে না।
কেউই ফিৎনার উর্দ্ধে নয়, বিশেষ করে যখন আমরা কিয়ামতের নিকটবর্তী হচ্ছি। ইতিহাসের পাতায় এসব ঘটনা পরিপূর্ণ আছে যেখানে অনেক বড় বড় আলেম এবং আল্লাহওয়ালা মানুষও আরো বড় বড় ফিৎনায় লিপ্ত হয়েছেন। তাই একথা নিশ্চিত যে, যে কোন যোগ্যতার মানুষই হোক না কেন, কেউই ফিৎনার উর্দ্ধে নয়। উদাহরণের জন্য শেইখ আওওয়ামার আদাবুল ইখতিলাফ দেখা যেতে পারে।
কিয়ামতের অন্যতম একটি আলামত ব্যপক ভাবে মিথ্যাকে সত্য হিসাবে উপস্থাপন করা হবে এবং সত্যকে মিথ্যা।
আজ ন্যায়নিষ্ঠ ভাবে প্রতিষ্ঠিত ইমারতের বিরোধিতা করে খবিসা আলমী শূরা গং নিজেদের হক দাবি করছে এবং সারা দুনিয়াতে মিথ্যার সয়লাব বইয়ে দিচ্ছে।

◆ আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়:
• নিজে আমীর হওয়া সত্ত্বেও হযরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আমীরের সুন্নাত বিলুপ্ত করেছেন, এসব দাবি আষাঢ়ে গল্পকেও হার মানায়। কোন আমীর বা খলীফাই শরীয়তের সামান্য একটা বিষয়ও পরিবর্তন করার অধিকার রাখেন না। তাই এমন পরিবর্তন কেউ করে থাকলেও তা দ্রুত বাতিল করাই শরীয়তের বিধান।
হজরতজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জীবনের প্রতিটি কাজ সীরতের অনুসরণেই করেছেন। জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে তিনি শরীয়তের খেলাপ কাজ করবেন, এমন দাবি তাঁর শানে জঘন্যতম অপবাদ। বরং হাজী সাহেব দামাত বারকাতুহুম পরবর্তী উত্তরসূরি মনোনয়ন করার পরামর্শ দিলে তিনি নিজামুদ্দিন ফিরে শীর্ষ আলেমদের সাথে পরামর্শ করে সীরতে ফারুকীর অনুসরণে পরবর্তী আমীর মনোনয়নের জন্য ১০ জনের একটি জামাত বানান। এভাবে তিনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমস্ত কাজে সীরতে তৈয়্যেবার অনুসরণ করার উপরেই অটল থেকেছেন।
• তিনজনের উপরে জিম্মাদারী অর্পণ করা এটা হজরতজীর প্রকৃত মানসা নির্দেশ করে না। বরং এটা ছিল শূরাদের অপারগতা।
হজরতজীর মানসা যদি এমনই হত, তাহলে হাজী আব্দুল ওয়াহাব সাহেব দামাত বারকাতুহুম বা মুফতী জয়নুল আবেদীন রহমাতুল্লাহি বিরোধিতা করতেন না। মাওলানা সাঈদ আহমাদ খান সাহেবও দুঃখপ্রকাশ করতেন না। একই ভাবে অন্যান্য শূরাগণও কান্নাকাটি করতেন না।
• যদি শূরাই প্রকৃত মানসা হত, তাহলে শূরায়ী নেজামের অন্যান্য বিষয় নিয়েও পরিষ্কার নির্দেশনা থাকত। হজরতজী না উঠালেও অন্যান্যরা উঠাতেন। যেমন শূন্যপদ কিভাবে পূরণ হবে বা নতুন শূরা কিভাবে নেয়া হবে ইত্যাদি। বিশেষ করে হজরতজীর বানানো জামাতের অনেকেই ছিলেন বেশ বয়স্ক এবং অসুস্থ। তাই এমন দাবি উঠাই স্বাভাবিক ছিল।
• ১৯৯৫ সালের মাসোয়ারায় যা ঘটে ছিল সেটা একটা ব্যতিক্রম এবং জরুরত। বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে অপারগতা বশত তিনজনের উপরে জিম্মাদারী দেয়া হয়েছিল। এটাকে দলীল বানানো নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির একটা অজুহাত মাত্র।
• আমাদের দ্বীন পরিপূর্ণ। কিয়ামত পর্যন্ত পাকিজী মুকাম্মেল দ্বীনের ভিতরে নতুন কিছু সংযোজন বিয়োজনের কোন জরুরত নেই। শরীয়তে কুরআন হাদীস ও সীরতে তৈয়্যেবার বাইরে কোন ব্যক্তির নামে অজুহাত পেশ করার কোন অবকাশ নেই।
• আমরা কিয়ামতের অনেক আলামতের কথা জানি, যেমন এক জামানা আসবে যখন এমন প্রাচুর্য হবে যে, যাকাত নেওয়ার কেউ থাকবে না। এমন আরো অনেক আলামতের কথা আছে। কিন্তু এমন কোন জামানা কি আসবে যখন কোন আমীরের প্রয়োজন পড়বে না? বরং এটাই আছে যে মুসলমান আমীরের সন্ধানে হন্য হয়ে ঘুরবে।
• আলমী শূরা গং এবং তাদের সহযোগীরা যেভাবে পর্যক্রমিক ফয়সাল চাচ্ছেন, এটা কি ইসলামী জীবনের সর্ব ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন করতে পারবেন? যেমন বিভিন্ন মাদ্রাসায় মুহতামিমের বদলে শূরা, বা বিভিন্ন ইসলামী দলে আমীরের বদলে পর্যায়ক্রমিক শূরা অথবা কোন খানকায় একজন হযরতের বদলে সমমর্যাদার একাধিক মুসলেহ?
• আলমী শূরাদের আরো একটি দাবি ছিল দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সক্রান্ত। এটা কি শরীয়তে প্রমাণিত যে, আমীর সাহেবকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মত মানতেই হবে? উম্মতের বিজ্ঞ অভিজ্ঞগণ সংখ্যালঘিষ্ঠ হবেন এটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় কারো ফিকির বা অন্তরের ব্যাকুলতার কারণে একজন সাধারণ মুসলমানের অন্তরেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সর্বোত্তম রায় ঢালতে পারেন। যেমন একটি মশহুর উদাহরণ হল, নামাজে ডাকার পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য মাসোয়ারা।
• মুসনাদে আহমাদে একটি হাদীস নকল করা হয়েছে, আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে কোন মাখলুকের আনুগত্য নয়। কিন্তু আলমী শূরা গং কম্যুনিস্ট ও গণতন্ত্রীদের থেকে এমন এক পদ্ধতি আমদানী করেছে যা শরীয়তের প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতির সুস্পষ্ট খেলাপ।
এ কথা আজ দিবালোকের মতই পরিষ্কার যে, মাওলানা সাদ সাহেবের ইমারত শরীয়তের শক্তিশালী দলীল এবং তাবলীগের উসূলের দ্বারা খুবই যথাযথ ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরপরও যারা বিরোধিতা করছেন তারা যে অন্য কোন দুরভিসন্ধি দ্বারা প্রভাবিত এটা বুঝতে খুব বেশি জ্ঞানী হওয়া লাগে না। এঁদের জন্য দুআই একমাত্র ভরসা। কেননা তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের দিলের দরজা বন্ধ করে রেখেছেন। তাই তাদের দিলে এখন হাজারো দলীলও ঢুকবে না।

19/12/2024
02/10/2023

সূরা মারইয়াম-এর অন্তর জুড়ানো তেলাওয়াত (বাংলায় উচ্চারণ ও অনুবাদসহ)

04/09/2023

ছয় ছিফাতের মুজাকারাঃ-
মাস্তুরাতদের (মহিলা) জন্য-

আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দ্বীনি মজলিসে বসার এবং দ্বীনি কথা বলা ও শোনার তৌফিক দান করেছেন। এইজন্য আমরা অন্তর থেকে শুকরিয়া আদায় করে বলি, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালার তৌফিক ছাড়া কেউ নেক আমল করতে পারে না, গুণাহ থেকেও বাঁচতে পারেনা। আল্লাহ তায়ালা হায়াত ও মউতের মালিক, সুস্থতা ও অসুস্থতার মালিক, ইজ্জত ও বেইজ্জতের মালিক। এক কথায় সমস্ত কিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ তায়ালার হুকুমেই দিন-রাত হয়, গরিব-বড়লোক হয়, ফকির-বাদশাহ হয়। আল্লাহ তায়ালার হুকুমেই মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়, জমিন থেকে ফসল হয়। আল্লাহ তায়ালার হুকুম ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়তে বা পড়তে পারে না। ঐ আল্লাহ তায়ালার হুকুম মানা এবং তাঁর রাসুল (সাঃ) এর তরিকায় চলার মধ্যেই দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ-শান্তি ও কামিয়াবি।

আল্লাহ তায়ালার দরবারে কেউ যদি নিজেকে কবুল করাতে চায়, তবে আল্লাহ তায়ালা তার বাহ্যিক চেহারা-সুরত, ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি ইত্যাদি দুনিয়াবী কোন যোগ্যতা দেখেন না। আল্লাহ তায়ালা দেখেন বান্দার গুণ বা ছিফাত। যেই গুনগুলো সাহাবা (রাঃ) রাসুল (সাঃ)-এর সাথে থেকে মেহনত করে অর্জন করেছিলেন। সেই গুণগুলোর মধ্যে থেকে কয়েকটি গুণ মেহনত করে অর্জন করতে পারলে দ্বীনের উপর চলা সহজ।

গুণগুলোর মধ্যে প্রথম গুণ হলো ঈমানের গুণ। আর ঈমানের কালেমা হলো লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)। যার অর্থ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহ তায়ালার রাসুল। আমরা দুচোখে যা কিছু দেখি বা না দেখি আল্লাহ তায়ালা ছাড়া সব কিছুই মাখলুক। মাখলুক কোন কিছুই করতে পারে না আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা ছাড়া। আল্লাহ তায়ালা সব কিছু করতে পারেন নিজ কুদরত দ্বারা। একমাত্র রাসুল (সাঃ)-এর তরিকায় দুনিয়া ও আখেরাতে সুখ-শান্তি ও কামিয়াবী।

যে ব্যক্তি একীন ও এখলাসের সাথে একবার "লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলে, আল্লাহ তায়ালা তার পিছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। সে যদি আশি বৎসরের কাট্টা কাফেরও হয়, তবুও আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ করে দেন।

ঈমানের গুণ অর্জন করার জন্য ৪ টি কাজ করাঃ-
1. আল্লাহ তায়ালার বড়াই-বড়ত্বের কথা বেশি বেশি আলোচনা করা,
2. আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নবী-রাসুলদের প্রতি প্রকাশিত মোজেযাসমূহের আলোচনা করা,
3. আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সাহাবি (রাঃ)-এর প্রতি প্রকাশিত সাহায্য ও মদদের আলোচনা করা,
4. ঈমান সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোচনা করা।

ঈমানের গুণ অর্জন করার পাশাপাশি নামাজের গুণ অর্জন করা। নামাজ হলো আল্লাহ তায়ালার কুদরতি খাজানা বা ভাণ্ডার থেকে নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস চেয়ে নেওয়ার মাধ্যম। রাসুল (সাঃ) যে ভাবে নামাজ আদায় করেছেন, সাহাবা (রাঃ)-দের যেভাবে নামাজ আদায় করা শিখিয়েছেন সেভাবে নামাজ আদায় করার যোগ্যতা অর্জন করার চেষ্টা করা।

যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াকে জরুরী মনে করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের এহতেমাম করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরস্কার দান করবেনঃ-
1. দুনিয়াতে রিজিকের পেরেশানি দূর করবেন।
2. কবরের আজাব হটিয়ে দিবেন।
3. ডান হাতে আমলনামা দান করবেন।
4. পুলসিরাত বিজলীর ন্যায় পার করাবেন।
5. বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদার নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে একটি মহল দান করবেন।

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পরে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। এই নামাজ এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ সুবহে সাদেকের পূর্ব পর্যন্ত পড়া যায়। রাত্রের শেষ অংশে এই নামাজ পড়া উত্তম। এই সময় আল্লাহ তায়ালা নিকটতম আসমানে এসে বান্দা- বান্দীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কে আছো অভাবী? আমার কাছে চাও, আমি তার অভাবকে দূর করে দিব। কে আছো অসুস্থ? আমার কাছে চাও, আমি তাকে সুস্থ করে দিব, ইত্যাদি।

সূর্যোদয়ের কিছু সময় পরে এশরাকের নামাজ পড়া যায়। এশরাকের প্রথম দুই রাকাতের লাভ একটি কবুল হজ্ব ও ওমরার সওয়াবের সমান। এর পরে আরো দুই রাকাত এশরাকের নামাজ পড়লে আল্লাহ তায়ালা তার সারাদিনের জিম্মাদার হয়ে যান।

সুর্যোদয়ের দুই-আড়াই ঘন্টা পরে চাশতের নামাজ পড়া যায়। হাদিসের মধ্যে এসেছে, মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। এই ৩৬০ টি জোড়ার পক্ষ থেকে প্রতি দিন সদকা করা ওয়াজিব। যদি কেউ দুই রাকাত চাশতের নামাজ আদায় করে তবে সেই ৩৬০ টা জোড়ার পক্ষ থেকে সদকা আদায় হয়ে যাবে এবং তার আমলনামায় যদি সমুদ্রের ফেনা পরিমানও গুনাহ থাকে তবে তা মাফ হয়ে যাবে, চাশতের নামাজ বারো রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।

যোহরের ওয়াক্তের শুরুতেই চার রাকাত জাওয়ালের নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের গুরুত্ব তাহাজ্জুদ নামাজের মত।

মাগরিবের নামাজের পরে ছয় রাকাত আওয়াবিনের নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের সওয়াব বারো বছরের এবাদতের সমান।
এছাড়াও সালাতুল হাজত, সালাতুত তওবা, সালাতুস শুকরিয়া, সালাতুল এস্তেখারা, তাহিয়্যাতুল ওজু, সালাতুত তাসবিহ আদায় করা যায়।

নামাজের গুণ অর্জন করার জন্য ৪ কাজ করাঃ-
1. নামাজের বাহিরকে সুন্দর করা,
2. নামাজের ভিতরকে সুন্দর করা,
3. নামাজের পাবন্দি করা,
4. নফল নামাজ বেশি বেশি আদায় করা।

নামাজসহ অন্যান্য আমলগুলোকে সুন্দর করার জন্য এলেমের গুণ অর্জন করা। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার আদেশ ও নিষেধকে রাসুল সাঃ-এর তরিকায় জেনে নেওয়া।

যে ব্যক্তি এলেম অর্জন করার জন্য কোন রাস্তা অবলম্বন করবে, আল্লাহ তায়ালার তার জান্নাতের রাস্তাকে সহজ করে দিবেন। তার চলার পথে ফেরেস্তারা নূরের পাখা বিছিয়ে দেন, সকল মাখলুক তার জন্য মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে থাকে।

এলেমের গুণ অর্জন করার জন্য ৪ কাজ করাঃ-
1. ফাযায়েলের এলেম ফাযায়েলে আমল ও ফাযায়েলে সাদাকাত কিতাব থেকে জেনে নেওয়া।
2. সিফতের এলেম মুন্তাখাব হাদিস কিতাব থেকে জেনে নেওয়া।
3. তরবিয়াতের এলেম হায়াতুস সাহাবা (রাঃ) কিতাব থেকে জেনে নেওয়া।
4. মাসায়েলের এলেম নির্ভরযোগ্য হক্কানি আলেমের থেকে মাহরাম পুরুষের মাধ্যমে জেনে নেওয়া।

এলেমের গুণ অর্জন করার পাশাপাশি জিকিরের গুণ অর্জন করা। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় আল্লাহ তায়ালার ধ্যান ও খেয়াল অন্তরে পয়দা করা।

যে ব্যক্তি জিকির করতে করতে নিজের জিহ্বাকে তরতাজা রাখবে, সে হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
যে ব্যক্তি জিকির করে তার অন্তর জিন্দা, আর যে জিকির করে না তার অন্তর মুর্দা।

জিকিরের গুণ অর্জন করার জন্য ৪ কাজ করাঃ-
1. আফজাল জিকির- কোরআন তেলাওয়াত করা। কোরআনকে দুইভাবে তেলাওয়াত করা। ফজিলতপূর্ণ আয়াত ও সূরাগুলোকে ওজিফা বানিয়ে প্রতিদিন তেলাওয়াত করা, কোরআনকে খতম করার নিয়তে প্রতিদিন তেলাওয়াত করা।
2. সকাল-বিকাল তিন তাসবিহু আদায় করা। "সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আল্লাহু আকবার" সকালে ও বিকালে ১০০ বার করে পড়া। যেকোন আস্তাগফার সকালে ও বিকালে ১০০ বার করে পড়া। যেকোন দরুদ শরীফ সকালে ও বিকালে ১০০ বার করে পড়া।
3. প্রত্যেক কাজের শুরু, মাঝে ও শেষে যেসকল মাসনুন দোয়া আছে সেগুলো আদায় করা।
4. রাতের সুবিধাজনক সময়ে দোয়া ও কান্নাকাটি করা।

জিকিরসহ অন্যান্য গুণ অর্জন করার সাথে সাথে আখলাককে সুন্দর বানানো। অর্থাৎ সমস্ত মাখলুকের উপর এহসান করার মত এবং মুসলমানের সম্মান জেনে কদর করার মত একরামের গুণ অর্জন করা।

যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের একটি একরাম করার চেষ্টা করে আল্লাহ তায়ালা তাকে এক বছর মসজিদে এতেকাফ করার সওয়াব দান করেন।
যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের একটি উপকার করে দেয়, আল্লাহ তায়ালা তার ৭৩ টি উপকার করে দেন।

একরামের গুণ অর্জন করার জন্য ৪ কাজ করাঃ-
1. ছোটদের স্নেহ করা, বড়দের সম্মান করা এবং আলেমদের তাজিম করা।
2. সমস্ত মাখলুকের উপর দয়া করা। কেননা, এক তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে এক খারাপ মহিলাকে আল্লাহ তায়ালা মাফ করে জান্নাত দান করেছেন। আবার এক বিড়ালকে খেতে না দিয়ে কষ্ট দেওয়ার কারণে এক নেককার মহিলাকে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামে পাঠিয়েছেন।
3. কেউ জুলুম করলে তাকে মাফ করে দেওয়া।
4. গীবত-শেকায়েত না করা। গীবত করার দ্বারা নিজের কষ্টার্জিত নেক আমল যার গীবত করা হয় তার আমলনামায় চলে যায়। যার গীবত করা হয় তার বদ আমল গিবতকারীর আমলনামায় জমা হয়।

প্রত্যেক কাজ আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে করার মত সহিহ নিয়তের গুণ অর্জন করা।

আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে সামান্য পরিমাণ নেক আমল করলে আল্লাহ তায়ালা এই নেক আমলের সওয়াবকে পাহাড় পরিমান বাড়িয়ে দেন। আবার আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য ব্যতিত অন্য কোন উদ্দেশ্যে পাহাড় পরিমাণ নেক আমল করলেও আল্লাহ তায়ালা তাকে সামান্য সওয়াব দিবেন না।

সহিহ নিয়তের গুণ অর্জন করার জন্য ৪ কাজঃ-
1. প্রত্যেক কাজের শুরু, মাঝে ও শেষে নিয়তকে যাচাই করা।
2. নেকির কাজ করতে পারলে শুকরিয়া আাদায় করা।
3. গোনাহের কাজ হয়ে গেলে এস্তেগফার করা।
4.
এই গুণগুলো জিন্দেগিতে ফিট করার জন্য এবং দ্বীন ও দ্বীনের মেহনত শিখার জন্য আল্লাহ তায়ালার দেওয়া জান, মাল ও সময় নিয়ে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় মাহরাম পুরুষের সাথে বের হওয়া।

যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হয়ে নিজের প্রয়োজনে ১ টাকা খরচ করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ৭ লক্ষ টাকা সদকা করার সওয়াব দান করবেন। আর মেহমানদারীর নিয়তে ১ টাকা খরচ করলে ২০ লক্ষ টাকা সদকা করার সওয়াব দান করবেন।
যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হয়ে ১ টা নেক আমল করবে আল্লাহ তায়ালা এই নেক আমলের সওয়াবকে ৪৯ কোটি গুণ বাড়িয়ে দিবেন ।

এই জন্য-
1. যারা পূর্বে কখনো আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হইনি, তারা ৩ দিনের জন্য বের হওয়ার নিয়ত করি।
2. যারা পূর্বে ৩ বার ৩ দিনের জন্য বের হয়েছিলাম, তারা ১০/১৫ দিনের জন্য বের হওয়ার নিয়ত করি।
3. যারা পূর্বে ১০/১৫ দিনের জন্য বের হয়েছিলাম, তারা ১ চিল্লা অর্থাৎ ৪০ দিনের জন্য বের হওয়ার নিয়ত করি।
4. যারা পূর্বে ১ চিল্লা অর্থাৎ ৪০ দিনের জন্য বের হয়েছিলাম, তারা ২ মাসের জন্য বিদেশ সফর করার নিয়ত করি।
5. নিজেদের ঘরে প্রতিদিন ৫ আমলের সাথে তালিম করার নিয়ত করি।
6. নিজেদের মাহরাম পুরুষদেরকে মসজিদ ভিত্তিক ৫ কাজ করার জন্য এবং দ্বীন ও দ্বীনের মেহনত শিখানোর জন্য আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় ৩ দিন, ১ চিল্লা, ৩ চিল্লার জন্য বের করার নিয়ত করি।

প্রতি শনিবার আছরের আজানের প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে এখানে তালিম শুরু হয়। আমরা নিজেরাও আসবো, অন্য মা-বোন, খালা, ইত্যাদি মহিলাদের নিয়ে আসার ফিকির করবো। কেননা, আমার-আপনার ফিকিরের কারনে যদি একজন মানুষও দ্বীনের বুঝ পেয়ে যায় এবং সে দ্বীনের উপর চলে, তবে এটা আমার-আপনার নাজাতের উসিলা হয়ে যাবে। আমি-আপনি মুক্তি পেয়ে যাবো। সবার নিয়ত আছে তো ইনশা-আল্লাহ? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।

31/08/2023

হযরত ইমরান ইবনে হাত্তান (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আবু যার রাযিঃ এর খেদমতে হাজির হইলে তাহাকে দেখিলাম, একটি কালো কম্বল জড়াইয়া একা মসজিদে বসিয়া আছেন। আমি আরজ করিলাম, হে আবু যার! এই নির্জনতা ও একাকিত্ব কেমন? অর্থাৎ আপনি সম্পূর্ণ একা এবং সবলোক হইতে আলাদা হইয়া থাকা কেন অবলম্বন করিলেন? তিনি জবাব দিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ-কে এরশাদ করিতে শুনিয়াছি, মন্দ লোকের সংশ্রবে বসার চাইতে একা থাকা ভাল। সৎ লোকের সংশ্রবে বসা একা থাকার চাইতে উত্তম। কাহাকেও ভাল কথা বলিয়া দেওয়া চুপ থাকার চেয়ে উত্তম। মন্দ কথা বলার চেয়ে চুপ থাকা উত্তম। (বায়হাকী)
facebook.com/ahadith.muntakhab
youtube.com/
instagram.com/kmdkanon
tiktok.com/
#অহেতুক_কথা_ও_কাজ_থেকে_বিরত_থাকা #মুন্তাখাব_হাদিস

19/08/2023

আলহামদুলিল্লাহ
আপনাদের সকলের সহযোগিতায় ১৪০০+ ফলোয়ার হয়ে গেছে। এইভাবেই সবাই সবার পাশে থাকবেন বলে আশা করি।

06/08/2023

হযরত আবু কাবশাহ আনসারী (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই এরশাদ করিতে শুনিয়াছেন যে, আমি কসম খাইয়া তিনটি জিনিস বর্ণনা করিতেছি এবং উহার পর একটি কথা বিশেষভাবে তোমাদিগকে বলিব। উহা ভালভাবে স্মরণ রাখিও। (তিনটি কথা যাহার উপর আমি কসম খাইতেছি, তন্মধ্যে প্রথমটি এই যে,) সদকা করার দ্বারা কোন বান্দার মাল কম হয় না। (দ্বিতীয় এই যে,) যাহার উপর জুলুম করা হয় এবং সে উহার উপর সবর করে আল্লাহ তায়ালা এই সবরের কারণে তাহার সম্মান বৃদ্ধি করিয়া দেন। (তৃতীয় এই যে,) যে ব্যক্তি লোকদের নিকট ভিক্ষার দরজা খুলে আল্লাহ তায়ালা তাহার উপর অভাবের দরজা খুলিয়া দেন। অতঃপর তিনি এরশাদ করিলেন, একটি কথা তোমাদিগকে বলিতেছি উহা স্মরণ রাখিও। দুনিয়াতে চার প্রকারের মানুষ হয়। এক ঐ ব্যক্তি যাহাকে আল্লাহ তায়ালা মাল ও এলেম দান করিয়াছেন। সে (আপন এলেমের কারণে) নিজের মালের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে। (অর্থাৎ তাঁহার মর্জির খেলাপ খরচ করে না, বরং) আত্মীয়তা রক্ষা(য় খরচ) করে এবং সে ইহাও জানে যে, এই মালের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার হক রহিয়াছে (কাজেই নেক কাজে মাল খরচ করে)। এই ব্যক্তি কেয়ামতের দিন সর্বোত্তম মর্তবায় অবস্থান করিবে। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যাহাকে আল্লাহ তায়ালা এলেম দান করিয়াছেন, কিন্তু মাল দেন নাই। সে খাঁটি নিয়ত রাখে এবং এই আকাঙ্খা করে যে, যদি আমার নিকট মাল থাকিত তবে আমিও অমুকের মত (নেক কাজে) খরচ করিতাম। (আল্লাহ তায়ালা) তাহার নিয়তের কারণে (তাহাকেও প্রথম ব্যক্তির ন্যায় একই সওয়াব দান করেন।) এইভাবে তাহাদের উভয়ের সওয়াব সমান সমান হইয়া যায়। তৃতীয় ঐ ব্যক্তি যাহাকে আল্লাহ তায়ালা মাল দিয়াছেন, কিন্তু এলেম দান করেন নাই। সে এলেম না থাকার দরুন নিজের মালের মধ্যে গোলমাল করে (অপাত্রে খরচ করে)। না সে এই মালের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, না আত্মীয়তা রক্ষা করে। আর না ইহা জানে যে, এই মালের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার হক রহিয়াছে। এই ব্যক্তি কেয়ামতের দিন নিকৃষ্টতম মর্তবায় থাকিবে। চতুর্থ ঐ ব্যক্তি যাহাকে আল্লাহ তায়ালা না মাল দিয়াছেন, না এলেম দিয়াছেন। সে এই আকাঙ্খা করে যে, যদি আমার নিকট মাল থাকিত তবে আমিও অমুকের অর্থাৎ তৃতীয় ব্যক্তির ন্যায় (অপাত্রে খরচ) করিতাম। এই নিয়তের কারণে তাহার গুনাহ হয় এবং তাহার ও তৃতীয় ব্যক্তির গুনাহ সমান সমান হইয়া যায়। অর্থাৎ ভাল অথবা মন্দ নিয়ত অনুপাতে সওয়াব ও গুনাহ হয় যেমন ভাল অথবা মন্দ আমলের উপর হইয়া থাকে। (তিরমিযী)
#এখলাসে_নিয়ত #মুন্তাখাব_হাদীস #দাওয়াত_ও_তাবলীগ

Address

Shaistaganj

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মুন্তাখাব হাদিস Muntakhab Ahadith posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share