অবস্থান
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ৪২৬.৫২ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত । পীরগাছা, উলিপুর এবং চিলমারি - উপজেলার উত্তরে; গাইবান্ধা সদর এবং সাদুল্যাপুর উপজেলার দক্ষিণে; চিলমারিএবং চর রাজিবপুর উপজেলার পূর্বে; পীরগাছা, মিঠাপুকুর এবং সাদুল্যাপুর - উপজেলার পশ্চিমে অবস্থিত ।
প্রশাসনিক এলাকা
সুন্দরগঞ্জ থানা ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয় । এটি ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১১০টি মৌজা এ
বং ১৮৭টি গ্রাম নিয়ে গঠিত । এদের মধ্যে সুন্দরগঞ্জ শহর এলাকা দুটি মৌজা নিয়ে গঠিত । শহরটি ২০০৩ সালে পৌরসভায় রূপান্তরিত হয় । শহরের আয়তন ৫ বর্গকি.মি. ।
ইতিহাস
সুন্দরগঞ্জ'র নাম করণের সঠিক কোন তথ্য না থাকলেও বিভিন্ন জনশ্রুতি বা কিংবদিন্তর মাধ্যমে "সুন্দরগঞ্জ" নামটা পাওয়া যায়। এই জনপদের উপর দিয়ে তিস্তা, ব্রক্ষপুত্র নদ ও ঘাঘট নদী প্রবাহিত। কতিথ আছে নদীর পার্শ্বে একটি গঞ্জ বা বাজার অবস্থান করতো। এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই গঞ্জর নাম ডাক ছিল।গঞ্জের লোকজনের আচার-আচারণ, স্বভাব-চরিত্র এবং চেহারা সুন্দর থাকায় এ জনপদের নাম হয় সুন্দরগঞ্জ। আর একটি কিংবদিন্ত প্রচলিত আছে। তাতে বলা হয়েছে তাজ হাটের রাজা গোপাল রায় বাহাদুরের পুত্র ছিল সুন্দর লাল বাহাদুর। তিনি খাজনা আদায়ের জন্য অত্র এলাকায় আসতেন ও মেলার প্রচলন করেন।বলা হয়ে থাকে রাজার পুত্রের নাম অনুসারে এলাকার নাম হয় সুন্দরগঞ্জ। বর্তমান সুন্দরগঞ্জ থানা ১৮৭৫ সালে ভবানীগঞ্জের উত্তারাংশ এবং চিলমারী নিয়ে গঠিত।
জনসংখ্যার উপাত্ত
জনসংখ্যা ৩৬০৬৭৫; পুরুষ ৫১.১৭%, মহিলা ৪৯.৮৩% মুসলিম ৮৯.৯৯%, হিন্দু ৯.৩০% এবং অন্যদের ০.৭১% ।
শিক্ষা
সাক্ষরতার হার ২৪.১% । পুরুষ ৩১.৯% এবং মহিলা ১৬.৫% । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ কলেজ ১২টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৬টি, মাদ্রাসা ৪৮টি, সরকারি স্কুল ১৪০টি প্রাথমিক, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৯টি, কমিউনিটি স্কুল ৯টি, স্যাটেলাইট স্কুল ৩৭টি, কারিগরী কলেজ (প্রস্তাবিত) ১টি।
সুপরিচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮১৪), কামার মনিরাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১০), বেলকা এম.সি. উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮ সালের), বামনডাঙ্গা এম.এন. উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অর্থনীতি
প্রধান পেশাসমূহঃ কৃষি ৪৮.৫৭%, কৃষি শ্রমিক ২৯.৬৪%, দিনমজুরি শ্রমিক ২.০৬%, বাণিজ্য ৬.৬৩.%, সেবা ২.৫৯%, মৎস্য ১.২৫%, অন্যান্য ৯.২৬% । জমি ব্যবহারঃ মোট আবাদযোগ্য জমি ৩৩২৩৪.০৯ হেক্টর, পতিত জমি ৪০৪.৬৯ হেক্টর । এক ফসলী ১২.২৯%, দ্বিফসলী ৭৪.২৯% এবং ত্রিফসলের জমি ১৩.৪২%; সেচের আওতায় আবাদি জমি ৭০% । কৃষকের মধ্যে ভূমি নিয়ন্ত্রণঃ ভূমিহীন কৃষক ৩৮%, স্বল্পজমির কৃষক ২৯%, মাঝারী জমির কৃষক ২৩% এবং ১০% ধনী কৃষক; মাথাপিছু আবাদি জমি ০.১০ হেক্টর । জমির মূল্যঃ প্রথম গ্রেড জমির বাজার মূল্য হেক্টরপ্রতি ৭৫০০.০১ টাকা । প্রধান শস্যঃ ধান, পাট, গম, চীনাবাদাম, তামাক, আখ, সরিষা, পেঁয়াজ এবং রসুন । বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় শস্যঃ তিসি, তিল, কৌন এবং বার্লি । প্রধান ফলঃ আম, কাঠাল, লিচু, কলা । মৎস্য, ডেইরি, পোল্ট্রিঃ পোল্ট্রি ২৫ , ডেইরি ৭, মৎস্য ১৭৫5, হ্যাচারি ১ ।