Dainik Dabanal

Dainik Dabanal “সাপ্তাহিক রণাঙ্গন” কালের বিবর্তনে “ Daily News Paper that has been Publishing from Rangpur city since 1971.
(1)

14/09/2020
14/09/2020
16/03/2018
24/08/2017
" ইনকিউবিটরে অবচেতন বাংলাদেশ "ইনকিউবিটর শব্দটির সাথে পরিচিত অনেক আগ থেকেই কিন্তু এর সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে গত ১৭ মার্চ, ১৭ ত...
16/08/2017

" ইনকিউবিটরে অবচেতন বাংলাদেশ "

ইনকিউবিটর শব্দটির সাথে পরিচিত অনেক আগ থেকেই কিন্তু এর সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে গত ১৭ মার্চ, ১৭ তে।সাধারনণত ইনকিউবিটর এর বাংলা প্রতিশব্দ কৃত্রিম উপায়ে নব জাতককে বিশেষ তাপমাত্রায় রেখে দেয়ার একটি টিউব বিশেষ বা প্রসঙ্গত এর অনেক অর্থ হতে পারে। দিনটি অবশ্য অন্য কারণেও গুরুত্ববহ কারণ এই দিনটিতেই জন্ম নিয়েছেন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবেও আমরা পালন করি। আমি সৌভাগ্যবান বটে! রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে সিজার করানো হবে। একদিকে নুতনকে বরণ করে নিবার প্রস্তুতি অন্যদিকে স্ত্রীর জন্য চিন্তা।

স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে ওটিতে পাঠালাম। অনেকক্ষণ হয়ে যাচ্ছে বাচ্চার কোন খবর নেই। এদিকে ভিতর থেকে বলা হলো বাচ্চার বাবা কে? আমি নুতন টাওয়েল নিয়ে হাজির হলাম।একজন শিশু ডাক্তার আমাকে বললেন, আপনার একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান হয়েছে ওর ওজন ৪.৫ কেজি, কিন্তু ওর শ্বাস কষ্ট হচ্ছে এবং মুভমেন্ট খুব কম। আপনারা তাড়াতাড়ি রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে যান এবং ইনকিউবিটরে রাখতে হবে। একথা শুনে আমি বের হয়ে এসেছি আর স্তব্ধ হয়ে গেছি। পরে আমার ও আমার শশুরালয়ের লোকজন বাচ্চাকে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে যায়। আর বিপত্তি শুরু সেখানেই।

কর্তব্যরত ডাক্তার নার্সরা মুমূর্ষু নবজাতক কে ভর্তি নিতে আপত্তি জানায় এবং উচ্চবাচ্য করে।কে এখানে পাঠিয়েছে? কেন নিয়ে এসেছেন? ইনকিউবিটরে রাখা যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। পরে একজন ভিআইপির রেফারেন্সে আমার সন্তানকে ১১ নং টিউবে আর একটি শিশুর সাথে রাখা হয়। আমরা কৃতজ্ঞচিত্ত হৃদয়ে হাসপাতাল পরিষেবায় তুষ্ট হলাম। কিন্তু সেই তুষ্টতা যেন ক্রমেই বিষদায়ক হয়ে উঠছে। এদিকে নবজাতকের মা অন্য একটি হাসপাতালে অন্যদিকে কিছুক্ষণ পর পর বাচ্চার জন্য এক একটি টেস্ট। টেস্ট এর ব্যবস্থা হাসপাতালে থাকলেও নার্সরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম্বার দিয়ে বললো ওদের সাথে যোগাযোগ করেন পরে তাদের কথামতো বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় সব টেস্ট করালাম। আমরা তাতেও ভ্রুকুটি কাটিনি বরং নিষ্পাপ সন্তানের সুচিকিৎসায় আমার বৃদ্ধ বাবা, অসুস্থ মা সহ যে সব আত্নীয়রা আছে তারা হাসপাতালের ফ্লোরকে বিছানা বানিয়ে ক্রমাগত প্রার্থনা করে যাচ্ছে। আর এটাই স্বাভাবিক।

একটি শিশু যখন জন্মগ্রহ করে তখন সে তার প্রতিকূলতাকে বরণ করে নিয়েই পৃথিবীতে আসে। তাই বলে এরকম প্রতিকূলতা কোন পরিবারের কাম্য নয় আর কাম্য নয় সেই সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটিরও। আসলে পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র অপ্রস্তুত হলেও যারা পৃথিবীর নিমন্ত্রণ পেয়ে নববার্তা নিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে আসে তারা যদি জানতো যে এই পৃথিবী তাদের জন্য কতটা অপ্রসন্ন তবে ক্ষোভে তারা ভূমিষ্ঠই হতোনা। পরীক্ষা করে দেখা হলো বাচ্চাটির গ্লুকোজ লেভেল একেবারে কম আর এজন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে। বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হবার পর এমনিতেই দুধ পায়নি। তার উপর কিছুক্ষণ পর পর টেস্ট এর নামে সূচ দিয়ে রক্ত বের করার বৃথা চেষ্টা।

এক একসময় চিকিৎসা শুরু কিন্তু আমরা কেউ শিশুটির কাছে যেতে পারছিনা। কারণ ইনকিউবেটর রুমে কেবল একজন মাত্র মহিলা থাকার পারমিশন আছে আর সেখানে সারাক্ষণ আমার অসুস্থ মা দাড়িয়ে আছে আর কোন খবরাখবর আমার মায়ের কাছ থেকে পাই। এদিকে আমি একটি ঔষধ কোম্পানীতে চাকুরী করার সুবাদে আমার এক প্রাক্তন বসকে আমার সন্তানের এ অবস্থা জানানোর পর সেই শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বিকাশ মজুমদার সাহেবকে একটু ভিজিট করার অনুরোধ করলাম তার মারফতে। উনি তখন চেম্বারে রীতিমত প্রাইভেট প্রাকটিস নিয়ে ব্যস্ত। বিভাগীয় প্রধান পর দিন সকালে আসলেন এবং অনুরোধমত ঐ ১১ নং টিউবের রোগী দেখে চলে গেলেন। খবর পেলাম উনি এসেছিলেন। কি পরম সৌভাগ্য আমার সন্তানের!

আপডেট জানার জন্য কর্তব্যরত জুনিয়র ডাক্তারদের উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করলাম আমার সন্তানের হাল হকিকত। এবার ডাক্তাররা আমাকে সরাসরি জানালেন আপনার বাচ্চার ওজন খুব কম। মাত্র ১.৫ কিলো।সমস্যা আছে,স্যার ট্রিটমেন্ট দিয়ে গেছে। আর আপনারা স্যারকে জানিয়েছন কেন? আমরা কি কম করছি!একথা শুনে আমার চক্ষু চরকগাছ। তাইতো আপনারা কি করছেন তাতো দেখছি এখানে। আপনারা বলছেন আমার বাচ্চার ওজন ১.৫ কিলো আর ভূমিষ্ঠ হবার সময় ওর ওজন রেকর্ড অনুযায়ী ৪.৫ কিলো এবং আমি জোড় দিয়ে বলতে পারি এই স্ক্যানুতে আমার বাচ্চার ওজন সবচেয়ে বেশি।

এই একদিনে ৩ কিলো গায়েব! একথা শুনে ডাক্তাররা দৌড়ে ঐ ১১ নং টিউবে গেল দেখলো তারা ভুল করে আমার বাচ্চাকে না দেখে অন্য দুবর্ল্ বাচ্চাটিকে দেখেছে আর ট্রিটমেন্ট লিখেছে আমার বাচ্চার শীটে। এদিকে ৪৮ ঘন্টা পার হতে চলছে আমার সন্তানের মুখে জলটুকু পরেনি। ডাক্তারদের কথা স্যালাইন চলছে বলে কোন কিছু মুখে দেয়া যাবেনা। একমত আমিও। একসময় স্যালাইন শেষ হলো। তিনদিনের দিন কোন এক ডাক্তার এসে দুধ খাবার পারমিশন দিলেন। বাচ্চার মার তখনো ব্রেস্টমিল্ক সিক্রেশন হচ্ছিলনা। ডাক্তাররা সাধারনত মায়ের বুকের শাল দুধ খেতেই সাজেস্ট করে থাকেন, আমার সন্তানের ক্ষেত্রেও এর বিপরীত ঘটেনি।

এবার আমরা সবাই একটু স্বস্তি পেলাম এই ভেবে যে যাক অন্তত ৭২ ঘন্টা পর আমার অসুস্থ সন্তানটি মায়ের বুকের দুধ খেতে চলছে। সাধারণত পোস্ট অপারেটিভ মায়েদের উচ্চমাত্রায় ড্রাগ নেবার জন্য ব্রেস্টমিল্ক সিক্রেট হতে চায়না তবুও কৃত্রিম উপায়ে একটু দুধ বের করার জন্য চেষ্টা। অবশেষে রক্ত সদৃশ কয়েকফোটা দুধ খাওয়ানোর জন্য একটি কাচের গ্লাসে করে নিয়ে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি তখন আমার এক কলিগের সাথে রিপোর্ট করতে এসেছিলাম।

এই কয়েকফোটা দুধ খাওয়ানোর জন্য যেরকমভাবে আমার বৃদ্ধ বাবা আর অসুস্থ মাকে কতোটা হয়রানী হতে হয়েছে সেটুকু না লিখার লোভ সংবরণ করতে পারলামনা বলেই আজকের এই কলাম লিখা। গ্লাস ঢেকে যখন দুধ নিয়ে স্ক্যানুতে প্রবেশ করা হলো তখন নার্স বলে ওঠলেন চামুচ কই? পরে একটি নতুন চামুচ কিনা হলো এবং আমার বাবা সেই চামুচ নিয়ে হাজির। এরপর বলা হলো এটি গরম পানিতে ধুয়ে আনেন। কথামতো একচায়ের দোকানে সেটাকে গরম পানিতে ধুয়ে আনা হলো।এর পর আর এক ডাক্তার এসে বললো,কে চামুচ আনতে বলছে? বাচ্চার মাকে নিয়ে আসেন। এর পর আর এক ডাক্তার বললেন বাচ্চাকে নিয়ে মায়ের কাছে নিয়ে খাইয়ে আনেন। আর এক ডাক্তার বললেন নিয়ে যাওয়া যাবেনা অক্সিজেন নল খোলা যাবেনা।

অত:পর একজন সিদ্ধান্ত দিলো ড্রপার নিয়ে আসেন। আমার বাবা আমাকে ড্রপারের কথা বললেন এবং আমি একটি প্যারাসিটামল ড্রপ কিনতে বললাম যার মধ্যে একটি নতুন ড্রপ পাওয়া যাবে এই ভেবে। বেলা গরিয়ে যাচ্ছে এখনো বাচ্চাটি দুধ পেলোনা ভেবে আমি নিজেই চলে আসলাম। পরে সেই ড্রপারটিকেও নীচে গিয়ে গরম পানিতে ধুয়ে আনলাম আর স্ক্যানুতে পাঠিয়ে দিলাম। এবার আর এক জুনিয়র ডাক্তার আমার মায়ের উপর চড়াও হয়ে বললো কে আনতে বলেছে বাইরের ড্রপার? সিস্টারকে বললেন ড্রপার আনুন! তখন একটি ভর্তি কার্টুন থেকে হাজারো পেডিয়েট্রিক ড্রপ থেকে একটি ড্রপ দিয়ে কয়েকফোটা দুধ খাওয়ানো হলো।

এরপর থেকে দিনে তিন চার বার কৃত্রিম উপায়ে দুধ বের করে হাসপাতালের সরবরাহকৃত ড্রপার দিয়ে আমার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো হলো। আস্তে আস্তে বাচ্চাটি সুস্থ হতে চলছে। তাদের এই কো-অর্ডিনেশনের অভাব আমাকে ভীষণ পীড়িত করে তবু সব ভুলে গেলাম। বাচ্চাটিকে এবার স্ক্যানু থেকে জেনারেল ওয়ার্ড এ শীফ্ট করা হলো। সেখানে বেড পাওয়া পরম সৌভাগ্যের বিষয়। এক একটি বেডে দু'তিনজন বাচ্চাকে কোলে নিয়ে তাদের অভিভাবকরা কোন রকম বসে থাকে। এতে রোগীর লোকেরা মোটেই বিব্রত হয়না। রাউন্ডের সময় কিছু ইন্টার্ন ডাক্তাররা একটু বেশিই ডাক্তারি ভাব দেখায়। এরি মধ্যে আমার বাচ্চার আবার খিচুনি শুরু হয়।

আমি দৌড়ে একজন ইন্টার্ন ডাক্তারকে ডাকলাম সে নেড়েচেড়ে দেখলেন।বললো রিফ্লাক্স কম। আমি ফার্মা সেক্টরে চাকুরী করার সুবাদে তার কাছে জানতে চাইলাম এই রিফ্লাক্স টা আসলে কি? উনি আমাকে বললেন এটা বুঝাতে হলে আমার একঘণ্টা সময় লাগবে। আপনি বুঝবেন না।বাংলাদেশের অনেক ডাক্তার আছে যারা সেফিক্সিমসহ অনেক ড্রাগের ডোজেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানেনা সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ।এবিষয়ে আরেক দিন আলোকপাত করবো। আমি বললাম আমারও একঘণ্টা সময় নেই আপনি শুধু এক কথায় বলুন এটা কি বুঝাচ্ছে।

এই কথাটা জানা আমার মোটেও অপরাধ নয়। আসলে মেডিকেল টার্ম এ রিফ্লাক্স শব্দটা একেক রোগের ক্ষেত্রে এক এক অর্থ বুঝায়। আর এটা জানতে চেয়েছি বলে আমার সন্তানের ট্রিটমেন্ট শীট ছুড়ে ফেলে চলে গেলেন। আমি তখন উত্তেজিত হয়ে অন্য সব ডাক্তারদের জড়ো করলাম এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে সমন্বয়হীনতা দেখিছি তা বললাম। তারা একি কথা বললো। সরকারী হাসপাতালে এর চেয়ে বেশী আশা করাটা ঠিক না।

পরে তারা রিলিজ নিতে বললেন অর্থাৎ (পরোক্ষ ভাবে প্রাইভেট চেম্বারে দেখাতে বললেন)। চিকিৎসা চলবে বাইরে অগত্যা প্রফেসর বিকাশ মজুমদারকে দিয়ে নিয়মিত দেখাতে হবে। অবশ্য দু'একজন ডাক্তার ভালো আচরণও করেছে। তার মধ্যে রেজিস্ট্রার ডাঃ মণিকাকে সব অভিযোগ জানানোর পর শেষে একটু টেক কেয়ার নিয়েছে। তারপরে আমার বাবুকে রিলিজ নিয়ে সেই বিভাগীয় প্রধান বিকাশ মজুমদারের চেম্বারে আসলাম। আমার বাবুকে দেখেই গালে একটা চুমু দিলেন। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে দেখলেন। আমি স্তম্ভিত হলাম যেখানে আমার বাবুকে চুমু খেয়েছে বলে খুশি হবার কথা! কিন্তু আমি তো চুমু খাওয়ার দৃশ্য দেখতে চাইনি।

আমি চেয়েছিলাম ঐ হাসপাতালে আরো যারা আছে তাদের গায়ে মাথায় যেন একটু হাত বুলিয়ে অন্তত ১০ মিনিট সময় খরচ করে সমন্বয়হীনতা দূর করে। এক বাচ্চাকে দেখতে গিয়ে যেন ভুল করে অন্য বাচ্চার চিকিৎসা না দেয়। সামান্য ড্রপারের জন্য যেন গ্রামের অসুস্থ বৃদ্ধ অভিভাবকদের যেন তিন তলায় বারবার উঠানামা না করায়। আমি একজন উচ্চশিক্ষিত যুবক এবং ফার্মা সেক্টরে গত সাত বছর থেকে জড়িত থাকার পরেও যদি এতো ভোগান্তি পোহাতে হয় আর আমার পরিবারকে এতো নিগৃহীত হতে হয় তবে যারা ডাক্তার, নার্স আর হাসপাতালের সাথে পরিচিত নয় তাদের অবস্থা কতোটা করুন তা অনুমান করতে কোন দার্শনিক হবার প্রয়োজন আছে কি!

মোদ্দা কথা, সেদিন আমার সন্তানকে আমি ইনকিউবিটরে দেখিনি,দেখেছি সমগ্র বাংলাদেশকে। আমার সন্তানও বড় হয়ে হতে পারে একজন সেনা নায়ক,হতে পারে একজন ডাক্তার বা প্রকৌশলী কিংবা হতে পারে একজন সমাজ সংস্কারক। কেবল আমার সন্তান নয় ঐ স্ক্যানুতে যে নবজাতক শিশুগুলো আছে যারা অসহায়ভাবে টিউববন্দী হয়ে তাপ নিচ্ছে তারা যে একদিন বড় হয়ে মহান মানুষ হবেনা তার কি গ্যারান্টি আছে?

স্বাস্থ্য সেবা পরিষেবা এই শব্দগুলো সেদিন আমার কাছে অপরিচিত লাগছিল।কিসের এতো ঢাক ঢোল? কিসের এতো বাজেট? কারজন? এই প্রশ্নগুলো ততোদিন উঠে আসবে যতদিন না ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট ও লোকবল বাড়ানোর আগে সরকারকে অবশ্যই চাকরিরত ডাক্তার নার্সদের সেচ্ছাচারিতা বন্ধে কাযর্ক্র পদক্ষেপ নিতে হবে। এমনিতেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। কমিশন বাণিজ্য,কোম্পানি কর্তৃক উৎকোচ উপঢৌকনাদি কমন বিষয়।তার উপর স্বাস্থ্য পরিষেবার নামে যদি কাউকে হয়রানীর স্বীকার হতে হয় আর দায়িতশীল ঊর্ধ্বতনরা যদি প্রতিকারের বদলে নিশ্চুপ দর্শকের কাতারে চলে আসে তখন তো হুমায়ূন আজাদের মতো আমিও বলবো, বাংলাদেশ, তোমার কাজ কি শুধু চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা?

লেখকঃ মোঃ বায়েজীদ হোসেন,
ফার্মা ব্যক্তিত্ব এবং পিএইচডি গবেষক,
এআইইউ,ক্যালিফোর্নিয়া।

রংপুর জেলার পর্যটন অঞ্চল/দর্শনীয় স্থান সমূহ ভিন্নজগত ভিন্নজগতের আকর্ষণ: বেসরকারিভাবে প্রায় ১শ’ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই ব...
11/07/2017

রংপুর জেলার পর্যটন অঞ্চল/দর্শনীয় স্থান সমূহ

ভিন্নজগত

ভিন্নজগতের আকর্ষণ: বেসরকারিভাবে প্রায় ১শ’ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই বিনোদন কেন্দ্রটি সারাক্ষণ নানা জাতের পাখির কোলাহলে মুখরিত থাকে। এর গাছে গাছে দেখা যায় নানান প্রজাতির পাখি। সন্ধ্যা হলেই তারা তাদের নীড়ে ফিরে আসে। ভিন্নজগতে শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি হাজারও বৃক্ষ। এখানে দর্শনার্থীরা গাছের ছায়ায় সারাটা দিন ঘুরে বেড়াতে পারেন। ভিন্নজগতের প্রধান ফটক পার হলেই তিন দিকের বিশাল লেক ঘেরা নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা শেষ হলেই সামনে পড়বে লোহার ১টি ব্রিজ। ব্রিজটি পার হলেই ভিন্নজগতের ভেতর যেন আরেকটি ভিন্নজগত।
এখানে রয়েছে আধুনিক বিশ্বের বিস্ময় এবং দেশের প্রথম প্লানেটোরিয়াম। রয়েছে রোবট স্ক্রিল জোন, স্পেস জার্নি, জল তরঙ্গ, সি প্যারাডাইস, আজব গুহা, নৌকা ভ্রমণ, শাপলা চত্বর, বীরশ্রেষ্ঠ এবং ভাষা সৈনিকদের ভাস্কর্য, ওয়াক ওয়ে, থ্রিডি মুভি, ফ্লাই হেলিকপ্টার, মেরি গো রাউন্ড, লেক ড্রাইভ, সুইমিং পুল স্পিনিং হেড, মাছ ধরার ব্যবস্থা। একই সঙ্গে রয়েছে অন্তত ৫শ’টি পৃথক দলের পিকনিক করার ব্যবস্থা। শুধু ভেতরেই রয়েছে অন্তত ৮/৯শ’ গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা। কটেজ রয়েছে ৭টি। রয়েছে থ্রি স্টার মডেলের ড্রিম প্যালেস।
এখানকার জলাশয়ে রয়েছে নৌভ্রমণের সুবিধা। শিশুদের জন্য রয়েছে ক্যাঙ্গারু, হাতি, ঘোড়াসহ নানা জীবজন্তুর মূর্তি।
ভিন্নজগতের জলাশয়ের চারধার জুড়ে রয়েছে পরিকল্পিতভাবে রোপিত নানা জাতের শোভাবর্ধনকারী গাছ।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন, বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে প্রচুর মানুষ বেড়াতে আসেন এখানে।
বগুড়া থেকে ভিন্নজগতে বেড়াতে আসা দম্পতি ফারহানা কবীর ও আহসান কবীর জানান, উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রের চেয়ে এই বিনোদন কেন্দ্রে নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব কিছুই সুন্দর। ভিন্নজগতে থাকা-খাওয়ারসহ সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। একই কথা জানান, পঞ্চগড়, নাটোর থেকে আসা অনেকেই।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা: ভিন্নজগতে রয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখানে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় বেশকিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত আছেন।
এ ব্যাপারে ভিন্নজগতের মালিক মোস্তফা কামাল জানান, ভিন্নজগত উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিনোদন কেন্দ্র।
তিনি বলেন, এখানে যারা বেড়াতে আসেন তাদের নিরাপত্তার দায়দায়িত্ব এখানে যারা কর্মরত আছেন তাদের।
প্রবেশ মূল্য: ভিন্নজগতের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। এছাড়া ভেতরের প্রতিটি রাইডের জন্য আলাদা করে ৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
থাকা-খাওয়া: রংপুরে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল রয়েছে। এখানে থ্রি স্টারসহ বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক হোটেল রয়েছে। ভাড়া ৩শ’ থেকে ৫ হাজার টাকার পর্যন্ত।
এ ব্যাপারে ভিন্নজগতের মালিক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘‘দর্শনার্থীদের থাকার জন্য ১টি প্যালেস রয়েছে, যার কক্ষগুলো অত্যাধুনিক। এখানে রাত্রি যাপন ও খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’’
দাম সম্পর্কে তিনি জানান, মৌসুমের চাহিদা অনুযায়ী মূল্য নেওয়া হয়ে থাকে।

কেরামতিয়া মসজিদ ও মাজার

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
কেরামতিয়া মসজিদ সম্পর্কে আলোচনার আগে যার নামের সঙ্গে এ মসজিদটির সর্ম্পক একামত্মভাবে জড়িত তাঁর সর্ম্পকে একটু আলোকপাত করা প্রয়োজন।
১৮০০০-১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশে ইসলামি সংস্কার আন্দোলনের সর্বাপেক্ষা সফলকাম ব্যক্তি ও গৌরবান্বিত ব্যক্তি মাওলানা কেরামত আলী (রাঃ) জৈনপুওে ১২১৫ হিজরী ১৮ মহরম জন্মগ্রহণ করেন। সারা জীবন তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য আত্মনিয়োগ করেন। রংপুরে তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন এবং কেরামতিয়া মসজিদে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
উলিস্নখিত মসজিদটি আয়তাকার । এর আভ্যমত্মরীন পরিমাপ৪২র্-০র্র্*১৩র্-০র্।এর পূর্ব ও পশ্চিম দেওয়ালের প্রসত্মতা ৩র্-৩র্ এবং উত্তর ও দক্ষিন দিকের দেওয়ালের প্রশসত্মতা ২র্-১০র্।সম্ভবতঃ আধুনিকায়ন ও সংস্কার হেতু পরিমাপের ক্ষেত্রে কিছুটা বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।সমতল ভূমি হতে মসজিদের উচ্চতা ১৮র্ -০র্।
মসজিদটির তিনটি (উঁচু) গোলাকার গম্বুজ বিশিষ্ট। গম্বুজগুলো অষ্টকোণী ড্রামের উপর ভর করে নির্মিত। প্রতিটি গম্বুজের নিমণাংশে মারলন অলংকরণ রয়েছে এবং গম্বুজের মধ্যবর্তী স্থানে প্রস্ফুটিত পদ্মফুলের উপওে কলসমোটিফ ফিনিয়াল বা চূড়া স্থাপিত দেখা যায়।
মসজিদটির প্রতিটি কোণে অষ্টভূজাকৃতি সত্মম্ব রয়েছে যার শীর্ষদেশে শোভা পাচ্ছে কিউপলা। এছাড়াও নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে বিভিন্ন খিলনাকৃতি ও প্যানেলের অলংকরণের পাশাপাশি ব্যান্ডের উপস্থিতিও লÿ্য করা যায়। এছাড়াও মিহরাব,খিলান ও প্রধান প্রবেশদ্বারের উভয় পাশে অষ্টকোণাকৃতি সত্মম্ভেও সন্নিবেশ দেখা যায় যার শীর্ষদেশে কিউপলা স্থাপিত রয়েছে। অপরদিকে উভয় খিলানের এবং পূর্বদিকের অপর দু’প্রবেশদ্বারের ও উলেস্নখিত দরজার (উত্তর ও দক্ষিনে কোণে অবস্থিত) উভয়দিকে ক্ষীন সত্মম্ভ (বিলা্ষ্টার) মূল দেওয়ালের সাথে যুক্ত দেখা যায়।এ সত্মম্ভগুলোর শীর্ষদেশ একামত্মাজ পত্র পলস্নব দ্বারা সুশোভিত এবং নিমণাংশও কলসাকৃতি প্রকৃতির ।
এ মসজিদেও প্যারাপেট বা ছাদের কিনারায় মারলন অলংকরণ লব্য করা যায়। প্রধান প্রবেশদ্বারগুলো চতুকৌণিক খিলনাকৃতি এবং প্রতিটি প্রবেশদ্বারের উভয় দিকেও পিলাষ্টারের সন্নিবেশ রয়েছে।
প্রতিটি প্রবেশদ্বাওে মিহরাব ও খিলানের আভ্যমত্মরীণ উদগত অংশের (ফ্রেনটনের)উপরিভাগে মারলন অলংকরণের সাথে লতাপাতা জড়ানো ফুলের নকশা দ্বারা সুশোভিত করা হয়েছে । এ মসজিদেও উত্তর ও দক্ষিনদেওয়ালে অবস্থিত কথিত দরজার কাঠামো পরিলক্ষিত হয়। সম্ভবতঃ এগুলো আলো বাতাস প্রবেশ ও বেরম্নবার জন্যই পথ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল বলে প্রতীয়মান হয় । এ দরজার কাঠামেগুলোর কিয়দংশ মসজিদেও মূল দেওয়ালের বর্ধিত আভ্যমত্মরীণ উভয় ক্ষেত্রে উদগত দেখা যায় এবং শীর্ষদেশে মারলন অলংকরণ লক্ষে করা যায়।
এ মসজিদের প্রতিটি গোলাকার গম্বুজের (আভ্যমত্মরীণ) নিচে সারিবদ্ধভাবে মারলন অলংকরণ দেখা যায় এবং গম্বুজগুলো স্কুইন্স ও পেনডেনটিভ (ঝুলমত্ম) খিলানের আর্চের উপর ভর করে সুকৌশলে নির্মাণ করা হয়।
মিহরাবের বহির্কাঠামোর উপরে মারলন অলংকরণ এবং তার উভয়দিকে স্থাপিত অষ্টকোণাকৃতি সত্মম্ভগুলোর নিমণাংশও কলসাকৃতির । এ মসজিদের স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্যগুলো মুঘল স্থাপত্যশৈলীকেই স্মরণ করিয়ে দেয় । মসজিদগাত্রে কোন শিলালিপি ছিল না বলে জানা যায়। ফলে সঠিক নির্মাণকাল অজ্ঞাত থেকেই যায়।
কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকার মহাখালী, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর এবং গাবতলী থেকে রংপুরগামী বেশ কয়েকটি বিলাস বহুল এসি ও নন এসি বাস রয়েছে। এসব বাসের ভাড়া ৫শ’ টাকা থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টায় রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। রংপুরে ট্রেন ভাড়া ২শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। ঢাকা থেকে রংপুর আসতে সময় লাগবে সাড়ে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। ট্রেনে লাগবে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা। রংপুর থেকে সরাসরি ভিন্নজগতে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাইভেটকারের ভাড়া ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা এবং মাইক্রোবাসের ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা।

টাউন হল রংপুর

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
দেশের দশম সিটি কর্পোরেশন রংপুরের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র ঐতিহ্যবাহী রংপুর টাউন হল। এটি শুধু একটি অডিটোরিয়াম বা হল নয় অনেক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সামাজিক গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের সূতিকাগার। রংপুর অঞ্চলের সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রাণ কেন্দ্র এই টাউন হল থেকেই অনেক ক্ষণজন্মা পুরোধা ব্যক্তিত্ব বাঙালী সংস্কৃতির মুক্ত চিন্তার পথ দেখিয়েছেন। বহু সামাজিক, রাজনৈতিক সংস্কারের সাক্ষী রংপুর টাউন হল।
রংপুরের অনেক স্থাপনার সাথে মিশে রয়েছে কাকিনার রাজা মহিমা মহিমা রঞ্জন রায়ের নাম। নিজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব বেশী না থাকলেও তিনি ছিলেন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। শিক্ষার প্রতি অগাধ ভালবাসা থেকে অনগ্রসর বাঙালিকে সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লাইব্রেরীর জন্য জমি দান করেন তিনি। এখনো রংপুর টাউন হল, কৈলাশরঞ্জন স্কুল, রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী তারি মহিমার গৌরব গাথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এই অঞ্চলের নাট্যচর্চা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিকাশের জন্য ১৮৮৫ সালে তৎকালীন রঙ্গপুর নাট্য সমাজ (রংপুর ড্রামাটিক এ্যাসোসিয়েশন বা আর.ডি.এ) একটি রঙ্গ মঞ্চ বানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। এক্ষেত্রেও এগিয়ে আসেন কাকিনার রাজা মহিমা রঞ্জন রায়। ১৮৯১ সালে রংপুরের উৎসাহিত নাট্য সমাজকে একটি রঙ্গশালা প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ১০ বিঘা ৩ কাঠা জমি ইংরেজ সরকারের বরাবরে লিখে দেন। ১৮৯৬ সালে সেক্রেটারি অফ স্টেট ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ও রংপুর নাট্য সমাজের মধ্যে যে দলিল সম্পাদিত হয়, সেই দলিল অনুযায়ী রংপুর নাট্য সমাজ তা মালিকানার অধিকারী হয়।
জমির মালিকানা লাভের পর প্রথমে এখানে একটি চালা ঘরে নাট্য চর্চার শুরু হয়। সূচনালগ্নে এর নাম ছিল "রংপুর নাট্য সমাজ গৃহ"। এই রঙ্গ মঞ্চে প্রথম নাটক হিসেবে মঞ্চস্থ হয় মধুসূদন দত্তের "শর্মিষ্ঠা"। টাউন হল ক্যাম্পাসেই রয়েছে অবিভক্ত ভারতের অন্যতম প্রাচীন লাইব্রেরিগুলির একটি রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী। যা স্থাপিত হয়েছিল ১৮৫৪ সালে। রংপুর পাবলিক লাইব্রেরীকে কেন্দ্র করেই লাইব্রেরী ভবনের একাংশে প্রতিষ্ঠিত হয় রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদ যা কলকাতার বাইরে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের প্রথম শাখা। পাশেই রয়েছে স্থপতি তাজ উদ্দিন চৌধুরীর ডিজাইনে করা আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর অপূর্ব নিদর্শন রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ৭০'র দশকের শেষভাগে এই শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রংপুর অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের মা দীপালী সমজদার।
রংপুর টাউন হল শুধু আনন্দ, চিত্ত বিনোদন বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূতিকাগার নয়। অনেক বেদনা ও কষ্টের মিশে আছে এর সাথে । হলের ইট পাথরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে আছে ৭১ এর স্মৃতি গাথা। বীরাঙ্গনাদের আর্ত চিৎকার, গুমোট চাপা কান্না। পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় এই টাউন হলকে বানিয়েছিল 'নারী নির্যাতন' কেন্দ্র। যুদ্ধের বিভীষিকায় অসংখ্য নারী এখানে সম্ভ্রম হারিয়েছে, অনেক মুক্তিকামী মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়েছে। আর সেই বিভীষিকাময় দিনের স্মৃতি ধারণ করে এখনও দাঁড়িয়ে আছে রংপুর টাউন হল।
কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো পরিবহন হলো গ্রীন লাইন এবং টি আর ট্রাভেলস। এছাড়া এ রুটে আগমনী পরিবহন, এস আর, শ্যামলী, হানিফ, কেয়া ইত্যাদি পরিবহনের সাধারণ বাস চলাচল করে। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ছাড়ে এসব বাস।

রংপুর চিড়িয়াখানা

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
রংপুর জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিনোদন কেন্দ্র এই চিড়িয়াখানা। ক্লান্তবির্পযস্তও বিষন্ন মনকে সতেজ করতে এবং অনাবিল আনন্দ উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার সৌন্দর্য পিপাসু ও ভ্রমণ বিলাসীগণ বেড়াতে আসেন এই চিড়িয়াখানায়। রংপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রংপুর বিনোদন উদ্যান চিড়িয়াখানা। এই বিনোদন উদ্যান চিড়িয়াখানায় রয়েছে ২৬ প্রজাতির জীবজন্তু ও পাখুপাখালী। উলেস্নখযোগ্য সিংহ ,রয়েল বেঙ্গল টাইগার ,চিতা বাঘ, জলহসত্মী,হায়েনা, ভালুক, বানর, বেবুন, হরিণ, ময়না ,টিয়া ,ঈগল, শকুন, সারস ,বক,ঘড়িয়াল,অজগর সাপ প্রভৃতি।
এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন বনজ, ফলজ এবং ঔষুধি গাছের মনোলোভা সারি। রয়েছে নয়ানাভিরাম লেক ও শিশুপার্ক।
রংপুর বিনোদন উদ্যান চিড়িয়াখানা মোট ২২ দশমিক ১৭ একর জমির উপর অবস্থিত ।১কোটি ৮০ লাখা ১ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৯৮৮ সালের ১৪ আগস্টে এর নির্মাণ কাজশুরুহয় এবং ১৯৯৯ সালের জুন মাসে এর নির্মাণ কার্যক্রম শেষ হয়। জনসাধারণের জন্য এটি উম্মুক্ত করে দেয়া হয় ১৯৯১ সালের ১৪ই জুন। এই চিড়িয়াখানা দেখা-শুনার জন্য রয়েছেন একজন ডেপুটি কিউরেটর এবং একজন জু অফিসার সহ ১৬ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

08/07/2017

“সাপ্তাহিক রণাঙ্গন” কালের বিবর্তনে “ ১৯৮১ সালের ২৭ মে “দৈনিক দাবানল ” প্রকাশিত হয়

07/07/2017
07/07/2017
বর্নিল আয়োজনে রংপুর ক্যাডেট কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালননিজস্ব প্রতিবেদকবর্ণিল সব আয়োজনে পালিত হলো রংপুর ক্যাডেট কলেজের...
07/07/2017

বর্নিল আয়োজনে রংপুর
ক্যাডেট কলেজের
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্ণিল সব আয়োজনে পালিত হলো রংপুর ক্যাডেট কলেজের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব। এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে শুক্রবার বসেছিল নবীন-প্রবীনদের মিলন মেলা।
সকালে ক্যাম্পাসে জাতীয় ও কলেজ পতাকা উত্তোলনের পর বিশাল আনন্দ শোভাযাত্রা অংশ নেন নবীন-প্রবীণ ক্যাডেটরা। শোভাযাত্রাটি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। এতে নেতৃত্ব দেন কলেজের অধ্যক্ষ আমীরুল ইসলাম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খান, মেজর খালেকুজ্জামান, ফেরদৌস আলম মুকুল প্রমুখ। পরে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপন, রক্তদান এবং অসহায়দের নগদ অর্থপ্রদান করা হয়।

Address

Station Road
Rangpur
5400

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dainik Dabanal posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Dainik Dabanal:

Share

Nearby media companies