14/12/2024
কিশোর হেলাল হাফিজ প্রেম করতেন হেলেন নামে এক কিশোরী সাথে। নেত্রকোনায় তারা প্রতিবেশী ছিলেন!
দারোগার মেয়ের সাথে স্কুল শিক্ষকের ছেলের প্রেম মেনে নেননি দারোগা বাবু। মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন এক সিনেমা হলের মালিকের সাথে ঢাকায়। হেলাল হাফিজও চলেন আসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে।
তার এক মাত্র কবিতার বই বের হয়। নাম "যে জ্বলে আগুন জ্বলে!"হেলেনের স্বামী বইমেলা থেকে বইটি কিনে হেলেন কে উপহার দেন। হেলেন দেখেন পুরো কবিতার বই জুড়ে কবির আকুতি। তাকে না পাওয়ার।
হেলেন সে কবিতার বই পড়ার পর মানসিকভাবে আঘাত পেয়ে আস্তে আস্তে পাগল হয়ে যান। স্বামী তাকে তালাক দেয়। নেত্রকোনায় বাবার বাড়ি ফিরে যান হেলেন। তাকে শেকল দিয়ে ঘরে বেধে রাখতে হয়।
হেলাল হাফিজ নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারেননি। কিংবা সে প্রেম থেকে বের হতে পারেননি। তাই আর কখনো বিয়ে করেননি। খুব গুছিয়ে থাকতেন। গোছালো মানুষ ছিলেন। তাকে দেখে বোঝা যেতো না, ভেতরে ভেতরে তার ভেতর এতোটা ভাঙ্গন।
''যুগল চোখে জলের ভাষায় আসার সময় কেউ বলেনি
মাথার কসম আবার এসো
জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো
শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক,
চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি
বললো না কেউ তরুন তাপস এই নে চারু শীতল কলস।
লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম ।
ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয়
আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শুশ্রূষাহীন।
কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি।"
প্রেম ও দ্রোহের কবি চলে গেলেন, একাকিত্বের অবসান ঘটলো অবশেষে!
আমাদের বন্ধুমহলে কথা ফুরিয়ে গেলে আমরা হেলাল হাফিজকে কথোপকথনে যোগ করতাম। তিনি এতটাই প্রাসঙ্গিক ছিলেন আমাদের মাঝে। আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলো কিন্তু তিনি থেকে গিয়েছিলেন যার যার কাছে আলাদা ভাবে। আজ ব্যক্তি হেলাল হাফিজ ও চলে গেলেন। অমৃতলোকে ভালো থাকুক প্রিয় কবি ॥