Do Something Different - DSD

Do Something Different - DSD Its not about earning fame or getting popularity. It is just share the Knowledge everyone because of a better lifestyle.

Our Dream, Our Destination!
স্বাধীন বাংলাদেশ ২৪ এর জন্য ভিন্ন কিছুর প্রত্যয়ে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গিকার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি...
সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে সাথেই থাকুন 💪❤️

প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) এর গোপনীয় প্রতিবেদনে জুলাই ৩১ হতে আগষ্ট ০৫ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার সার ...
03/12/2024

প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) এর গোপনীয় প্রতিবেদনে জুলাই ৩১ হতে আগষ্ট ০৫ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার সার সংক্ষেপ।

জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি স্মারকঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়াল থেকে সংগৃহীত
22/11/2024

জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি স্মারক

ঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়াল থেকে সংগৃহীত

11/09/2024

রঙ মেখে শুয়ে ছিল...

গনহ*ত্যা
11/09/2024

গনহ*ত্যা

কতোটা অমানবিক হইলে একটা মানুষ এই রকম ভয়াবহ বন্যায়—না একটা শব্দ উচ্চারণ, না ফটোশুট, না টিস্যু দিয়ে নাক মুছা, না শোডাউন, ন...
26/08/2024

কতোটা অমানবিক হইলে একটা মানুষ এই রকম ভয়াবহ বন্যায়—
না একটা শব্দ উচ্চারণ, না ফটোশুট, না টিস্যু দিয়ে নাক মুছা, না শোডাউন, না বন্যা কবলিত এলাকায় হেলিকপ্টারে পরিদর্শন করে নিজের ফোনে ভিডিও ধারন করা।

হুট করে এসে বললেন ; তোমাদের জন্য ১'হাজার কোটি টাকার ফান্ড ব্যবস্থা করলাম।

আজব!!

কেমন্ডা লাগে, এই স্বাধীনতাই কি আমরা চেয়েছিলাম?😒

বিচারক হয়েও কাঠ গড়ায় দাঁড়াতে হয় !!  নিশ্চয় আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী!"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন...
26/08/2024

বিচারক হয়েও কাঠ গড়ায় দাঁড়াতে হয় !! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী!
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?''
মানিক আমাদের শিখালো 'ক্ষমতা,অহংকার অতি ক্ষুদ্র জিনিস! এই আছে তো এই নাই!
আল্লাহ ই দেয়, আল্লাহ ই নিয়ে নেন, চিরকালের জন্য কিছুই নেই!❤️

সেভেন সিস্টার্স কি?ভারতের ৭ টি প্রদেশকে একত্রে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। প্রদেশগুলো হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, ন...
22/08/2024

সেভেন সিস্টার্স কি?
ভারতের ৭ টি প্রদেশকে একত্রে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। প্রদেশগুলো হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুনাচল ও মণিপুর।

এদের সবার ভৌগোলিক পরিবেশ ও রাজনৈতিক পরিবেশ এক ধরনের৷ পাশাপাশি এদের অবস্থান ভারতের মূল অংশ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্নও বটে। এই রাজ্যগুলির সাথে মূল ভূখন্ডের যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ ও নেপালের মাঝে সামান্য একটি করিডোর আছে (আপনাদের সুবিধার্থে জায়গাটি লাল বৃত্ত দিয়ে দেখালাম)। তাই এদেরকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়ে থাকে।

এই সাত রাজ্যের মোট আয়তন ২,৬২,১৮৪ বর্গকিলোমিটার, ভারতের প্রায় ৪ শতাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত। দক্ষিণ-পশ্চিমে বাংলাদেশের সাথে ১,৫৯৬ কিলোমিটার (৯৯২ মাইল) আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে।

গোলাম নাফিজ। ছেলেটা মাত্র স্কুল শেষ করে কলেজে ভর্তি হয়েছিল। ৪ আগস্ট ফার্মগেটে বন্ধুদের সাথে সেও আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। সে...
19/08/2024

গোলাম নাফিজ। ছেলেটা মাত্র স্কুল শেষ করে কলেজে ভর্তি হয়েছিল। ৪ আগস্ট ফার্মগেটে বন্ধুদের সাথে সেও আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। সেখানে পুলিশ তাকে গুলি করে। এরপর রিকশাচালক নূর মোহাম্মদ তাকে নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের একটি হাসপাতালে ঢুকতে গেলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বাধা দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক। পরে ১৭ বছরের গোলাম নাফিজকে নিয়ে রিকশাচালক খামারবাড়ির দিকে চলে যান। তাকে আর বাঁচানো যায়নি।

নাফিজের পরিবারের লোকেরা অনেক খুঁজেও নাফিজকে পায়নি। পরে পত্রিকায় সাংবাদিক জীবন আহমেদের এই হৃদয়ভাঙা ছবিটা দেখে পরিবারের লোকজন বুঝতে পারে তাদের ছেলে শহীদ হয়েছে।

নাফিজের বাবা গোলাম রহমান লাশ আনার পর নিজেই ছেলেকে গোসল করান। বলেন, ‘ছেলের লাশ নিজেই গোসল করাই। কী যে কষ্ট।’

নাফিজের কিছু বন্ধুও তার সঙ্গে ৪ আগস্ট ঘটনাস্থলে ছিল। জানাল, গোলাগুলি শুরু হলে তারা বাসায় চলে যেতে পারলেও নাফিজ আর যেতে পারেনি। গোলাম রহমান খাতা–কলম নিয়ে সময় ধরে ধরে সেদিনের ঘটনার কথা জানতে চাচ্ছিলেন ছেলের বন্ধুদের কাছে। বললেন, ছক করে দেখতে চাচ্ছেন আসলে তিনি কোনোভাবে ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারতেন কি না।

ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদে বলেন, ছেলেটাকে যদি হাসপাতাল পর্যন্ত নিতে পারতেন, তাহলে হয়তো বাঁচত—এটাই তাঁর আক্ষেপ। তবে তাঁর তোলা ছবি দেখে মা–বাবা তাঁদের সন্তানের লাশ খুঁজে পেয়েছেন, এটা ভেবে একটু সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করেন তিনি। আওয়ামী লীগ নেতাদের বাধার মুখে নাফিজকে ফার্মগেটের হাসপাতালে নিতে পারেননি বলে জানান তিনি।

২৪ এর গণহত্যা
ঢাকা, বাংলাদেশ।

গুম খুনের ফ্লো চার্ট। খুনী হাসিনার সঙ্গীসাথীদের চিনে রাখেন।
17/08/2024

গুম খুনের ফ্লো চার্ট। খুনী হাসিনার সঙ্গীসাথীদের চিনে রাখেন।

 #আয়নাঘরের_দিনলিপিসন্ধ্যার পর আমাদের সেলের সামনে যেই গার্ড থাকতো। সেই  কু লাঙ্গার একরাতে আমাকে এসে ডেকে বললো, উঠ যাওয়া ল...
17/08/2024

#আয়নাঘরের_দিনলিপি

সন্ধ্যার পর আমাদের সেলের সামনে যেই গার্ড থাকতো। সেই কু লাঙ্গার একরাতে আমাকে এসে ডেকে বললো, উঠ যাওয়া লাগবে আমাদের সাথে। এটা বলেই জমটুপিটা পরিয়ে সেল থেকে বের করে উপরের দিকে নিয়ে যায় । তিনটা ফ্লোর হাটতে হয়েছে।ভিতরে নিয়েই চেয়ারের সাথে বেধে ফেলে।তারপর ওরা আমার চারপাশে বসে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসতে লাগলো।এবং সুন্দর করে বলতে লাগলো, তোরে কিন্তু ক্রস ফা য়ার দেওয়ার কথা, আমরা চাই না তোরে হারাইয়া তোর বোন আর মা অসহায় হইয়া পরুক। ( ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইল করার চেষ্টা করছিল,যাতে আমি গলে গিয়ে তাদের ফাদে পা দেই) আমরা যা বলমু সেভাবে তুই কিছু স্বীকারোক্তি দিবি, তাইলে আমরা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। তখন আমি বললাম, আমি কোন মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে পারবো না। সত্য হলে সেটা স্বীকার করতে হাজারবার প্রস্তুত। তারপর তারা আমার বাবা মাকে নিয়ে যেসব কথা বললো, আমি শুনে শুনে শুধু কাঁদতেছিলাম। সেদিন যেই পরিমাণ চোখের পানি ঝরছিল। সারাজীবনে কেঁদেও মনে হয় না এতো পানি ঝরছে। গায়ের পাঞ্জাবিটা ভিজে শেষ। অনেক কাকুতি মিনতি করলাম। তারপর চারপাশ থেকে বেধরক কিল গুশি মারা শুরু করলো, কু*** বাচ্চা বেশি সত্যবাদী হইছস? তোর সত্যবাদী দেখাইতেছি বলেই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাত পায়ের হাড়গুলো গুড়া করে ফেলার মতো অবস্থা করেছিল। সেদিন হাত নাড়ানোর মতো শক্তিটাও ছিল না। রশি খুলে যখন সেলে নিয়ে যাবে তখন দাড়াচ্ছি না দেখে কান ধরে, দাড়ি টেনে বলছিল ভং না ধরে তাড়াতাড়ি দাঁড়া। আমাদের আরও কাজ আছে। তঁরে দিয়ে আসা লাগবে। কেন দাঁড়াচ্ছি না আবারও মারা শুরু করলো ( আমি দাড়াতে পারছিলাম না)। এবার আমি চেয়ার থেকে পরে গেলাম। সেদিন কি হইছিল পরে আমি জানি না আর।

ঘুম ভাঙ্গার পর দেখি আমি সেলের মধ্যে।পুরা শরীরের যন্ত্রণায় কোঁকড়াচ্ছিলাম। গায়ে প্রচুর জ্বর। উঠে বসা তো দুরের কথা এপাশ ওপাশ করার শক্তিও নাই। অনেক কষ্টে ঘাড় ফিরিয়ে দেখি নিচের ফাঁকা দিয়ে ৩-৪ লোকমা খাওয়ার মতো লাউ সবজি আর পঁচা ভাত দেওয়া। যার বাজে দুর্গন্ধ নাকে আসছিল। তখনই বমি করে দেই।

শরীরে শক্তি না থাকায় খাবার পর্যন্ত হাত নিতে পারিনি। প্রচুর জ্বর আর ব্যাথার তীব্রতায় ঘুমিয়ে গেছিলাম। দুপুরের খাবার দেওয়ার জন্য যখন বাটিগুলো নিতে আসছিল তখনও আমি ঘুমাচ্ছিলাম। সেই খাবারটাই দুপুরে খাওয়ার জন্য বললো। চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে ঘুম ভাঙ্গাইছে। কিন্তু বসার মতো শক্তি নাই। হাত পা ফুলে গেছে সব। আমি গার্ডকে চাচা আঙ্কেল বলে অনেক রিকুয়েষ্ট করছিলাম যে, আমাকে একটু ভালো পানি আর ওষুধ কিনে দেন। আমি মরে যাচ্ছি। এটা বলা মাত্রই, জমিদারের বাচ্চা কয় কি! এখানে খাইতে আর ঘুমাইতে আইছস? গো লামের বাচ্চা আবার পানি ওষুধ চায়। আমি ; আঙ্কেল আমি ব্যাথায় মরে যাচ্ছি প্লিজ আঙ্কেল! একটু ব্যবস্থা করে দেন না। কোনোভাবেই তার মন গলানো গেল না।কই দেখি কি হইছে তোর! এসব বলে, যেখানে ফুলে গেছে সেসব জায়গা জোরে জোরে চাপ দিতে দিতে বললো, এসব ব্যাপার না। তুই ভালোই আছস বলে গেটে তালা দিয়ে চলে গেল। শীতকাল, ফ্লোরে পাতলা একটা ছেঁড়া ফাটা কম্বল, তার উপর কম্বলটা ভিজাইয়া দিয়ে গেছে। একদিকে পচা ভাতের গন্ধ আরেকপাশে বমি করা। ফ্লোরটা ভিজা। সেরাতে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলাম, আল্লাহ আমাকে আজকেই তোমার কাছে নিয়ে যাও, নয়তো ইবরাহীম আঃ- কে যেভাবে নমরুদের আগুন থেকে নিজের কুদরতিতে রক্ষা করেছিলে সেভাবে তোমার কুদরতি শক্তিতে আমার কষ্টটা লাঘব করে দাও।চিৎকার করে কাঁদছিলাম আর আল্লাহকে ডাকিতেছিলাম।

#আয়নাঘর

দেখতে দেখতে রমজান মাস চলে আসলো। ভেবেছিলাম অন্যান্য দিন গুলোতে যা কিছু করতো না কেন রমজানে হয়তো কিছুটা মারধর, পঁচা নষ্ট খা...
17/08/2024

দেখতে দেখতে রমজান মাস চলে আসলো। ভেবেছিলাম অন্যান্য দিন গুলোতে যা কিছু করতো না কেন রমজানে হয়তো কিছুটা মারধর, পঁচা নষ্ট খাবার থেকে রেহাই পাবো। ইন্ডাস্ট্রিয়াল এডজাস্ট ফ্যান অলওয়েজ চালু থাকতো, যাতে ভেতরের কোন আওয়াজ বাহিরে না যায় এবং বাহিরের কোন আওয়াজ ভেতরে না আসে।একরাতে ইলেক্ট্রিসিটির বিচ্ছিন্নতার কারণে নাকি কোন কাজের কারণে সেই ফ্যান প্রায় ১০-১৫ মিনিটের মতো অফ ছিল সিওর না। সময়টা শেষ রাতের দিকে, মসজিদের মাইক থেকে সাহরি খাওয়ার এলান হচ্ছে। বুঝলাম যে, রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে। দেরি না করে সামহাও ওজু করে দুরাকাত তাহাজ্জুদ পরে আল্লাহর কাছে এই রমজানের উসিলায় জিন্দানখানা থেকে মুক্তির দোয়া করলাম। তারপর গার্ডকে সাহরি দেওয়ার জন্য ডাকলাম। সারারাত নেশারকরে মহিলাদের সাথে কলে নোংরা কথাবার্তা বলে তখন ঝিমাচ্ছিল। অনেকগুলো ডাক দেওয়ার পরও আসলো না। সেলের মধ্যে থাকা পানির বোতলটা নিক্ষেপ করলাম তার চেয়ারে। যাতে আওয়াজ শুনে তার ঘুম ভাঙে। কাজ হলোও। কিন্তু যে উদ্দেশ্য ডাকলাম, তার কিছুই হলোনা।

(ভালো খারাপ যে অবস্থায় থাকতাম না কেন! তেল মাড়িয়ে কথা বলতে হতো)
আঙ্কেল! রোজা রাখবো, সাহরি খাওয়ার কিছু নাই।

কি বললি তুই? রোজা রাখবো তো! সাহরি খাওয়ার কিছু নেই। সাহরি লাগবে।

মাতালের মতো আবোলতাবোল বকে চলে গেল। সাহরিও খাওয়া হলো না আর। রুচি না থাকাসত্বেও বাধ্য হয়ে সেলের মধ্যে থাকা কমোডের পাশে টেপ থেকে পানি খেয়ে রোজার নিয়ত করলাম। সকালের নির্ধারিত টাইমে নাস্তা দিয়ে গেল গন্ধযুক্ত বাটিতে করে। ২টা রুটি ছিল। না খেয়ে রেখে দিছি ইফতারে খাবো। নাস্তা দেওয়ার আনুমানিক দেড় দুই ঘন্টা পর কয়েকজন সেলের সামনে দিয়ে হাটাহাটি করছিল। ভেতর থেকে ডাকলে একজন আসে, তখন আমি একটা কুরআন শরীফ দেওয়ার কথা বলি। জিজ্ঞাসা করা হয় কোরআন দিয়ে করবি কি? আমি বললাম যে, রমজান মাস তো! তাই চাচ্ছিলাম একটু কুরআন তেলাওয়াত করি। কুরআন তেলোয়াত করে তোর লাভ কি? তোর আল্লায় কি তোরে বাচাইতে পারবো? বুঝাতে পারবো না ভেতরটা ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছিল তখন। পাল্টা রিএকশন দেখাই নাই। দেখালে আবারও মারবে। কিছু না বলেই চলে গেল।

কিছুক্ষণ পর ২জন আমার সেলে আসলো। যাদের হাতে লাঠি। অতোটা বুঝতে পারিনি যে, ওরা আমাকে পেটাতে আসছে। গেট থেকে তালা খুলে ভেতরে আসলো। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু, তুই নাকি রোজা রাখছস? সত্যি কইরা ক, কে তোরে এই খবর দিছে? তোরে কিছু করমু না। সহজ স্বীকারোক্তি দিলাম যে, এভাবে জানছি। কেউ এসে বলেনি। আমার কথা তাদের মনপুত হলো না। বাবা মা ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে বিশ্রীভাবে গালাগাল করা শুরু করলো, ওই ওরে এভাবে হইবো না, বাইর কর। সেল থেকে বের করেই আমাকে জমটুপি পরিয়ে গাড়িতে উঠালো। কেমন যেন মনে হচ্ছিল, একই জায়গায় বারবার ঘুরিয়ে কাছের কোথাও নিয়ে গেল। ভিতরে নিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু, আ* **য়দা তা***বা** নের সাথে জড়িত কিনা? তাদের সাথে জড়িত কাউকে চিনে থাকলে নাম বলতে। তাহলে ছেড়ে দিবে। আদতে তাদের সম্পর্কে তখন আমার নূন্যতমও ধারণা ছিল না। আমি তাদেরকে চিনি না, তাদের সম্পর্কে জানি না বললে উরুর উপর লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু হয়। অল্প কয়েকটা বাড়ি দেওয়ার পর আমার তৃষ্ণা লেগে যায়, পুরোদমে হাঁপাচ্ছিলাম। আবার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলো, রোজার ব্যাপারে কে তরে ইনফর্ম করছে? কুরআন দিয়া কি করবি? সব ঘটনা খুলে বললাম। মানতে নারাজ তারা। শুরু হয় পেটানো। এবার চেয়ার থেকে উঠিয়ে হাত পিঠ মোড়া করে বেধে লাথি, পেটানো শুরু হয়।খুব সম্ভবত রাবার জাতীয় কিছু বা কারেন্টের মোটা তার দিয়ে তাদের একজন পিঠে বাড়ি মেরেছিল। ফলে সেই জায়গা কেটে রক্ত বের হতে থাকে। প্রায় পুরা রমজান জুড়েই কোন কিছুর সাথে হেলান দিয়ে বসা, পিঠ নিচু করে ঘুমাইতে পারিনি। উপুড় হয়ে শুইতে শুইতে বুকের খাঁচা গুলো ব্যস্ততা হয়ে যেতো। যেই দাগ আমার ছোট্টবোন এখনো পর্যন্ত যতবার দেখেছে তাকে ততবার কান্না করতে দেখছি।

ওইদিন আর বেশি কিছু করেনি। গাড়িতে করে সেলে রেখে চলে যায়। এরপর থেকে আর কখনো সাহরি চাইনি। সাহরির জন্য রাতের খাবার আর আর দুপুরের খাবার দিয়ে ইফতার সারতাম।মাঝে মাঝে ভাগ্য ভালো থাকলে রুটি দিলে সেখান থেকে একটা দিয়ে সাহরি খেতাম আরেকটা দিয়ে ইফতার করতাম। ইফতার তুলনামূলক একটু দেরিতেই করতাম। কয়টা বাজে সেটা বুঝার কোন উপায় ছিল না। প্রতিবেলা খাবারের মধ্যে কি পরিমান গ্যাপ থাকে তার উপর ধারণা করে সবকিছু করতে হতো।

প্রায় তিন বা চারদিন পর আবারও কুরআন শরীফ চাইলাম। দেওয়া হলো না। পরেরদিন পুনরায় চাই, না দিলে চিল্লাফাল্লা করতে থাকি ভাবি হয়তো রাগ করে দিয়ে যাবে, এটা দিলে তাদের কিই আসে যায়! সেদিন হাত বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে যায়। শ্বাস ফেলতে কষ্ট হচ্ছিল,চোখের নোনা পানি সেদিন সব মুখে ঢুকেছিল। নিয়ত করে ফেলি যতদিন না দিবে ততদিন আমি চাইতেই থাকবো। এভাবে ধুকে ধুকে মরার চাইতে তাদের জুলুম সহ্য না করতে পেরে হয় আল্লাহর কাছে চলে যাবো নয়তো মুক্তি পেয়ে বের হবো।

কয়েকদিন পর তাদের দিলে আল্লাহ একটু দয়া দিলেন। আমাকে একটা কুরআন শরীফ এনে দিয়ে গেল শুধু রমজানে পড়ার জন্য, আর সতর্ক করলো যদি উল্টা কিছু করতে দেখি তোর লা*শ কু**ত্তাকে খাওয়াবো। আমি চুপ থাকলাম।

দেখে দেখে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারতাম। ছোট্ট ছোট্ট ৬টা সুরা মুখস্থ ছিল আগে থেকেই। কুরআন খতম করার সিদ্ধান্ত নেই। কয়েক পারা পড়ার পর হঠাৎ একদিন মুখস্থ করার চিন্তা আসে। সেদিন থেকে কুরআনের হাফেজ হওয়ার লক্ষ্যে পরা শুরু করি। আল্লাহর রহমতে রমজানের বাকী দিন গুলোতে ৪পারা মুখস্থ করে ফেলি। তখনও আমি জানতাম না যে, ঈদ শেষ হয়ে দুদিন পার হয়ে গেছে। আমার থেকে এসে কুরআন শরীফ নিয়ে গেল। সেদিনের খারাপ লাগাটা বলে বুঝানোর ভাষা আমার নেই। পায়ে ধরেছিলাম মারেন কা* টেন, কুরআন শরীফটা রেখে যান। নিয়েই গেল। সেই কয়টা দিন যখন কুরআনের একেকটা আয়াত পড়তাম হৃদয়ে কতটা প্রশান্ত অনুভব করতাম তা ব্যক্ত করতে গেলে একটা বই লেখা যাবে। সেই ৪পারার প্রতিটা পৃষ্ঠাতে কতো শত ফোটা চোখের পানি পরেছে, যার কারণে এক পৃষ্ঠার কালি অন্য পৃষ্ঠাতে ছেপে যেতো। যতদিন কুরআনটা কাছে থাকতো ততক্ষণ কেমন যেন এক অলৌকিক প্রশান্তি পেতাম।

(দ্বিতীয় পর্ব)
প্রথম পর্বের লিংক কমেন্টে পাবেন..

#আয়নাঘর

ছবিটি শ-হী-দ গোলাম নাফিজের।তরতাজা এক কিশোর, বয়স মাত্র ১৭ বছর। এবার এসএসসি দিয়েছে। বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুলে এন্ড কলেজের ...
13/08/2024

ছবিটি শ-হী-দ গোলাম নাফিজের।

তরতাজা এক কিশোর, বয়স মাত্র ১৭ বছর। এবার এসএসসি দিয়েছে। বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুলে এন্ড কলেজের ছাত্র ছিলো সে। নাফিজ এ আন্দোলনের এক অকুতোভয় বীর।

নাফিজ শ-হী-দ হয় ৪ই আগস্ট। সে রাতে বাড়ি ফিরে নি। বাবা-মা আশেপাশে খুঁজে পান নি। পরদিন সকালে রিকশায় নিথর ছবিটি পত্রিকা ও ফেইসবুক ছড়িয়ে পড়ে। তা দেখে তার মা তাকে শনাক্ত করে। মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বাঁধা নিথর দেহের ছবিটি 'মানবজমিন' পত্রিকায় ছাপা হয়।

"ওই যে দেখেন, ছেলেটা রিকশার রডটা ধইরা রাখছিল। কত খুঁজলাম, তখন যদি ছেলেটারে পাইতাম, বাঁচানোর জন্য একটু চেষ্টা করতে পারতাম। ছেলের বুকের মধ্যে লাগা গু★লি পিঠের দিক দিয়া বাইর হইয়া যায়। পরে তো শুনি আমার চাঁদের মতো ছেলেটা মর্গে আছে।"

— গোলাম রহমান, শ-হী-দ গোলাম নাফিজের বাবা।

৬ অক্টোবর ২০১৯।রাত  ৮.১৩।বুয়েট শেরেবাংলা হলের ১০১১  নাম্বার কক্ষে ঘুমাচ্ছিলো একটা ছেলে। একই ব্যাচের তানিমসহ তিনজন এসে তা...
13/08/2024

৬ অক্টোবর ২০১৯।
রাত ৮.১৩।
বুয়েট শেরেবাংলা হলের ১০১১ নাম্বার কক্ষে ঘুমাচ্ছিলো একটা ছেলে। একই ব্যাচের তানিমসহ তিনজন এসে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে।
-- বড় ভাইয়েরা তোকে ডাকছে। ২০১১ তে আয়।
-- কেনো?
-- গেলেই দেখতে পাবি।
-- কখন যাওয়া লাগবে?
-- এখনই। তোর ল্যাপটপ এটা?
-- হ্যাঁ।
-- মোবাইলটাও দে।
--কেনো?
-- দিতে বলছি তাই দিবি। ভাইরা বলছে।
মোবাইল, ল্যাপটপ এবং ছেলেটাকে নিয়ে তারা রওনা দিলো ২০১১ নাম্বার রুমের উদ্দেশ্যে। এই ছেলেটা কোন সাধারণ ছেলে ছিলো না। বুয়েটের EEE বিভাগে ২০১৮ সালে ভর্তি হওয়া এই ছেলের নাম আবরার ফাহাদ রাব্বি। অসাধারণ মেধাবী এই ছেলে ঢাবি 'ক ইউনিট' ভর্তি পরীক্ষায় ১৩ তম হয়েছিলো। চান্স পেয়েছিলো ঢাকা মেডিকেলেও। বড় ভাইদের ডাকে ২০১১ নাম্বার রুমের দিকে পা বাড়ানো আববার তখনো জানতো না, "অনন্ত মহাকালে এই যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে"।

আবরারের অপরাধ ছিল তাদের চোখে মারাত্মক! ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়েছে সে। আবরারেরই রুমমেট মিজানের সন্দেহ, "আবরার শিবির করে।" তাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আজ এই আয়োজন। কক্ষে ঢোকার পরই মোবাইল আর ল্যাপটপ চেক করা শুরু করে তারা। তেমন কোন প্রমাণ না পেয়ে রুমে থাকা রবিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
-- এদিকে আয়। চশমা খোল।
আবরার চশমা খোলার পর রবিন প্রচন্ড জোরে তার গালে কয়েকটি চড় মারে। হাত দিয়ে গাল চেপে বসে পড়ে আবরার। এরই মধ্যে মোরশেদ কাঠের তৈরি শক্ত ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে আসে। ইফতি প্রথমে রবিনের মতোই গায়ের জোরে থাপ্পড় মারে আবরারকে। এরপর হাতে তুলে নেয় ক্রিকেট স্ট্যাম্প। পিঠে, পায়ে, পায়ের তালুতে, হাতে সর্বশক্তিতে মারতে থাকে। প্রচণ্ড শক্তিতে মারার কারণে কয়েক বাড়ি দেওয়ার পরই স্ট্যাম্প ভেঙে দুই টুকরা হয়ে যায়। আবরার ততক্ষণে চিৎকার দিতে দিতে লুটিয়ে পড়েছে মেঝেতে। সেই চিৎকার শুনে আশেপাশের রুমের জানালা ভয়ে দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। এহতেসামুল, রাব্বি ও তানিম আরেকটি নতুন স্ট্যাম্প নিয়ে আসে। এবার অনিক স্ট্যাম্প হাতে তুলে নেয়। একাধারে মাটিতে লুটিয়ে থাকা আবরারের সারা শরীরে আঘাত করতে থাকে। প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি আঘাত করে অনিক নিজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মেঝেতে পড়ে কাতরাতে থাকে আবরারের শরীর। সঙ্গে সঙ্গে মুজাহিদ ও শামিম স্কিপিং রোপ (মোটা দড়ি) দিয়ে মারতে শুরু করে। আবরার তখন বাঁচার জন্য আকুতি-মিনতি করে কিন্তু তাতে কারো মন গলেনি। কারো মধ্যেই মনুষ্যত্ব ফিরে আসেনি। বরং জীয়ন এগিয়ে এসে অনিক থেকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে আবরারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে সর্বশক্তিতে মারতে থাকে।

রাত সাড়ে দশটা। অমানুষিক মার খেয়ে মেঝেতে লুটিয়ে গোঙাতে থাকে আবরার। ইফতি ধমক দিয়ে টেনে দাঁড় করায়। তারপর সর্বশক্তিতে কয়েকটি চড় মারে। এরপর আবার স্ট্যাম্প দিয়ে পেটাতে থাকে।

রাত এগারোটা। ২০১১ নাম্বার কক্ষে এসে হাজির হয় এস এম মাহমুদ সেতু। এসেই সবাইকে জিজ্ঞেস করলো,
-- কি অবস্থা? কিছু বাইর হইছে?
-- না, কোন কিছু বলতেছে না।
-- মারতে থাক।
সেতুর নির্দেশে আবরারকে আবার ক্রিকেট স্ট্যাম্প, স্কিপিং রোপ দিয়ে মারা শুরু হয়। ইফতি ও অনিক আবরারকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে মারতে থাকে। হাতের কনুই দিয়ে পিঠে প্রচণ্ড আঘাত করে। উৎসাহিত হয়ে তখন সবাই মিলে প্রচন্ড শক্তিতে আবরারকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি চড়-থাপ্পড়, লাথি মারতে থাকেন। আবরারের কুঁকড়ে যাওয়া শরীর থেকে তখন শুধু গোঙানি শোনা যাচ্ছিলো।

রাত সাড়ে এগারোটা। কিছুক্ষণের জন্য রুম থেকে বের হওয়ার আগে অনিক ও রবিন অন্যদের বলে যায়,
-- তোরা অর কাছ থেকে যেমনেই হোক তথ্য বের কর।
এবার মনির ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে আবরারকে পেটাতে শুরু করে। তাবাখখারুল, নাজমুস সাদাত, তানিম, জেমি আবরারকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। বাইরে থেকে আবার রুমে ঢুকে অনিক হাতে ক্রিকেট স্ট্যাম্প তুলে নেয়। এরপর আবরারকে প্রচন্ড জোরে একটানা আরও ৪০ থেকে ৫০টি আঘাত করে। মুমূর্ষু আবরার তখন বমি ও প্রস্রাব করে ফেলে। ব্যথায় চিৎকার করার মতো শক্তিও অবশিষ্ট নেই। বাঁচার জন্য ইশারা-ইঙ্গিতে কাকুতি-মিনতি করে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়। শ্বাসকষ্ট দেখে ইফতি আবরারের মাথার নীচে বালিশ দেয়। পরপর আরো কয়েকবার বমি করে আববার। এমন অবস্থায় আবরারকে হলের বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ধুয়ে মুছে জামা কাপড় বদলানো হয়।

রাত সাড়ে বারোটা। ইফতি ও মেহেদীর নির্দেশে আবরারকে ধরাধরি করে ২০০৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে আসা হয়। ইফতি মোশাররফ হলের মেস বয় জাহিদ হাসানকে ডেকে আসে। ২০১১ নম্বর রুমে আবরারের বমি তাকে দিয়ে পরিষ্কার করানো হয়।
২০০৫ নম্বর কক্ষে আনার পর ইফতি বলে,
-- তোরা এবার অর থেকে তথ্য বাইর কর। বুয়েটে কে কে শিবির করে বাইর কর।
দুই-একজন আবরারের মুমূর্ষু অবস্থা দেখে ভয়ে ভয়ে বললো,
-- ভাই, অবস্থা বেশ খারাপ। হাসপাতালে নেওয়া দরকার।
এই কথা শোনার পর রবিন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন।
-- যা বলছি তাই কর। এইগুলি সব নাটক। ভং ধরছে। তোরা শিবির চেনস না। শিবির চেনা কষ্ট।

রবিনের রেগে ওঠা দেখে সবাই ভয়ে জলদি আবরারকে আবার ইন্টারোগেট শুরু করে। কিন্তু আবরারের মুখ থেকে কোন শব্দ আসে না। নিশ্চল, নিস্তেজ পড়ে থাকা দেহ কোন সাড়া না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আবার আরেক দফা পেটানো শুরু হয়।

রাত দুইটা। সিদ্ধান্ত হয় আবরারকে হল থেকে বের করে পুলিশে দেওয়া হবে। মেহেদী চকবাজার থানা পুলিশকে ফোন দেয়, "হলে একটা শিবির ধরা পড়েছে। এসে নিয়ে যান।" চকবাজার থানা পুলিশ একটা টহল দল পাঠায় শেরে বাংলা হলের গেইটে। কিন্তু দেরী হওয়ায় গেইট থেকে পুলিশকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

রাত আড়াইটা। ইফতি, মুজাহিদ, তাবাখখারুল ও তোহা মিলে নিশ্চল আবরারকে তোশকে করে হলের দোতালার সিঁড়িতে এনে রেখে দেয়। সিঁড়ির লাইটের আলোয় আবরারের খালি গায়ে তখন স্পষ্ট কালো কালো দাগ। সারা শরীরে স্ট্যাম্পের বাড়ির কারণে কালশিটে পড়ে আছে। চোখ বন্ধ। তবে চেহারায় কোন যন্ত্রণার ছাপ নেই। বরং সেখানে প্রশান্তির চিহ্ন। নিষ্ঠুর অমানুষদের এই পৃথিবী ছেড়ে স্রষ্টার সান্নিধ্যে চলে যাওয়ার প্রশান্তি।

রাত তিনটা। খুনীরা বুয়েটের চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনে। চিকিৎসক আবরারের দেহ পরীক্ষা করে ঘোষণা দেন সে মারা গেছে। তড়িঘড়ি করে ক্রিকেট স্ট্যাম্প, তোষক, বালিশ, আবরারের ল্যাপটপ, চাপাতি হলের ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ এর কক্ষে নিয়ে রেখে দেওয়া হয়। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রাসেল আবরারের মৃতদেহ হলের নিচে নামানোর পর তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বুয়েটের চিকিৎসককে চাপ দেন। খুনীরা সিদ্ধান্ত নেয় আবরারের লাশ গুম করে ফেলা হবে। কিন্তু ততক্ষণে কিছু শিক্ষার্থী দেখে ফেলায় তার নতুন পরিকল্পনা করে। আবরারের লাশের সাথে কিছু মাদক দিয়ে গণপিটুনিতে মারা যাওয়ার নাটক সাজানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আবরারের সহপাঠীদের দৃঢ়তায় সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

৭ অক্টোবর ২০১৯। ভোরের আলো ফোটার আগেই বুয়েটের শিক্ষার্থীরা উপহার পায় এক সতেজ তাজা লাশ। পাঁচ ঘন্টা অমানুষিক নির্যাতনে মৃত ফর্সা শরীরটার সবখানে শুধু লাল আর কালোর মিশ্রণ। দেশের পক্ষে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস আবরার ফাহাদ রাব্বিকে পৌঁছে দিয়েছে অনন্ত মহাকাশের পথে।

***

লেখা- মারুফ হাসান,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 #আয়নাঘর নামা।(১০ই এপ্রিল'২২) ৮ রামাদান, সবে মাত্র ইফতার করে বের হয়েছি। গন্তব্য স্টারটেক কম্পিউটার এর যার্ম কিনতে যাবো ।...
13/08/2024

#আয়নাঘর নামা।

(১০ই এপ্রিল'২২)
৮ রামাদান, সবে মাত্র ইফতার করে বের হয়েছি। গন্তব্য স্টারটেক কম্পিউটার এর যার্ম কিনতে যাবো । আমার এক রিলেটিভ আমার জন্য ওয়েট করছেন। মাত্রই বাসা থেকে বের হয়েছি, পেছনে থেকে ডাক আসল, "ভাইই, একটু এদিকে আসেন।" পেছনে তাকিয়ে দেখি তিনজন ব্যক্তি। কাছে যেতেই জিজ্ঞাসা করল,"নাম শাওন কিনা?" আমি হ্যাঁ বলতেই বলল, চলেন আমাদের সাথে যেতে হবে? আমি বললাম, "আপনারা কারা? আমি কেন যাবো?"
উত্তর আসল আপনার সাথে কিছু কথা আছে । আমি বললাম,"এখানে বলেন?" বলে, এখানে বলা যাবেনা । কথা বলতে বলতে সাদা রঙের এক মাইক্রোবাস হাজির। কিছু বুঝে উঠার আগেই মাইক্রোবাস থেকে দুইজন অস্ত্রধারী বের হয়ে আসল।

আমি ভয়ে উঠে যেতে বাধ্য হলাম। মাইক্রোবাসে উঠার সাথে সাথে আমার থেকে ফোন, মানিব্যাগ সব কেড়ে নিয়ে, কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলা হয় । সাথে সাথেই গাড়িতে চড়-থাপ্পর, লাথি শুরু হয় যায়। তখনও আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমার অপরাধ কোথায়? আমার সাথে কি হতে যাচ্ছে।

পরে তাদের ইচ্ছেমতো গন্তব্য স্থানে নামানো হয়, লিফটে চড়ে এক রুমে আনা হলো। চোখ খোলে দিলো। চোখ খোলতেই দেখতে পাই, আমি কোন এক অফিসের ভেতরে । নানা ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন করা হয়, "আমি এদের চিনি কিনা ? আমি কোন সংগঠন করি ? তাবলীগে কেন গিয়েছিলাম ? দাড়ি রেখেছি কেন? সাদাকা কোথায় করি?" এসব নানান রকম অদ্ভুত প্রশ্ন । তাদের পছন্দ মত জবাব না পেয়ে , চালানো হয় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। সারারাত মারধর করার পর সেহরীর সময় চোখ বেঁধে লিফটে করে সিটিটিসির সেই বিখ্যাত সাত তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। (অবশ্য তখনও জানতাম না এটা সেই বিখ্যাত সাত তলা)

একা ছোট্ট এক রুমে বন্দী রাখা হয়। সেখানে না ছিল কথা বলার অনুমতি , না ছিল শব্দ করার । এমন নি খাবার পানি চাইলেও অকথ্য ভাষায় গালীগালাজ করা হতো । বাধ্য হয়ে বাথরুমের পঁচা গন্ধ পানি খেয়ে থাকতে হতো। দেয়া হতো নষ্ট পঁচা বাসি খাবার। মাঝে মাঝে তাদের ইচ্ছামত ডেকে এনে বিভিন্ন অপরাধ স্বীকার করার জন্য চালানো হতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সবচেয়ে বেশি অপমানিত হয়েছে আমার দ্বীন। পড়ার জন্য কোরআন চেয়েছিলাম, এই অপরাধে শোনতে হয়েছে গালিগালাজ। এভাবেই কেটে যায় পুরো একশত দিন। এই ১০০ দিনে না আমি জানতে পেরেছি আমার পরিবার কেমন আছে? না আমার পরিবার জেনেছি আমি কোথায় আছি ? আদৌ বেঁচে আছি কিনা? আমার পরিবার এই ১০০ দিন পাগলের খোঁজেছে । আমার বোন, আমার বাবা এমন কোন থাকা, ডিবি অফিস কিংবা র‍্যাব অফিস বাদ রাখেননি। মর্গে মর্গে খোঁজে ফিরেছে আমাকে। জীবনের দুইটি ইদ কাটিয়েছি সেখানে । আমাকে ছাড়া আমার পরিবারের দূর্বিষহ জীবনে কেটেছে। আমার মাকে হারিয়েছি এক বছরও হয় নি, তার মাথায় আমাকে কিডন্যাপ করে তুলে নেয়া হয় ।

একদিন সন্ধাবেলায় আমাকে ডাকা হয়। বলা হয়, "তোর জন্য সুখবর আছে । তুই যা করছোস চাইলে তোকে ক্রস ফায়ার দেয়া যায় । কিন্তু দিব না। তোকে ছোট খাট একটা মামলা দিব। তুই তাড়াতাড়ি ছাড়া পাবি। কিন্তু তোর দিক থেকেও আগায়া আসতে হবে। কোর্টে গিয়ে বলবি; তুই জঙ্গি ছিলি, আর তোকে ধরসে ১৬ তারিখ (১৬ জুলাই) । যদি না বলস তোকে ১০ টা মামলা দিবো , তাও অস্ত্র সহ । ক্রস ফায়ার দিবো।"

এরপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় কোর্টে। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আজ্জওয়াজালের প্ল্যান ছিলো ভিন্ন। গত ১০০দিনের শারীরিক নির্যাতনে শরীরের যে হালত ছিলো, তাই আমার জন্য রহমত স্বরূপ হয়েছে। ম্যাজ্রিট্রেট আমার শারীরিক অবস্থা দেখেই প্রথমেই জিজ্ঞেস করে," সত্য করে বলো তোমাকে কবে ধরেছে । তোমার শরীরের এই অবস্থা কেনো?" আমি তাকে সব খুলে বললে সে আমাকে অভয় দেয় যে সমস্যা নাই । এরপর আমাকে যারা মামলা দেয় তাদের ডেকে এনে জবাবদিহিতা করে এবং আমার পরিবার কে জানাতে বলে। দীর্ঘ ১০০ দিন পর আমার পরিবার জানতে পারে আমি জীবিত। এরপরেও তাদের কথা অনুযায়ী মিথ্যা না বলায় ম্যাজিস্ট্রের এর কক্ষ থেকে কোর্টের জেলে নিয়ে যাবার সময় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া চলমান থাকে ।

এরপর জেলে কেটে যায় দীর্ঘ সময় । কোন প্রমান জবানবন্দী না থাকা সত্বেও জামিন পেতে সময় লাগে ৮ মাস । প্রায় এক বছর পর ২৩ সালের ১ম রামাদানে আমি বেরিয়ে আসি । ৮ম রামাদানের বন্দিত্ব শেষ হয় পরের বছর ১ম রামাদানে । এভাবেই কথিত জঙ্গি নাটকের স্বীকার হতে হয় আমাকে । আমার আর আমার ফ্যামিলির উপর দিয়ে যে ঝড় গিয়েছে, আমি চাইনা তার উপর দিয়ে আর কেও যাক । আমি আজও জানিনা কেন আমাকে তারা বন্দী করেছিল ? কি অপরাধ ছিল আমার?

#আয়নাঘরনামা

হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন- "অধ্যাপক ইউনূস যখন নোবেল পুরস্কার পান, তখন আমি নাটকের একটা ছোট্ট দল নিয়ে কাঠমান্ডুর হোটেল এভারেস্...
12/08/2024

হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন- "অধ্যাপক ইউনূস যখন নোবেল পুরস্কার পান, তখন আমি নাটকের একটা ছোট্ট দল নিয়ে কাঠমান্ডুর হোটেল এভারেস্টে থাকি। হোটেলের লবিতে বসে চা খাচ্ছি, হঠাৎ আমার ইউনিটের একজন চেঁচাতে চেঁচাতে ছুটে এসে বলে- ‘স্যার, আমরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছি। স্যার, আমরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছি।’ সে বলেনি কিন্তু অধ্যাপক ইউনূস নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
সে বলেছে আমরা পেয়েছি। অধ্যাপক ইউনূসের এ অর্জন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্জন। আমার মনে আছে, এই আনন্দ সংবাদ শোনার পর আমি শুটিং বাতিল করে উৎসবের আয়োজন করি। সেই উৎসবের শিখা আমি বুকের ভেতর এখনো জ্বালিয়ে রেখেছি। দেশের বাইরে যখন আমি সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে যাই, তখন আগের মতো হীনম্মন্যতায় ভুগি না। কারণ, এই সবুজ পাসপোর্ট অধ্যাপক ইউনূসও ব্যবহার করে থাকেন।"
[আমাদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস]

-------------সংগ্রহীত

// "কলেজ পালিয়ে যে বই পড়া হচ্ছে, বাসায় জানে?" শুনে চমকে উঠলাম। হাতে তখন আবু ইসহাকের পদ্মার পলিদ্বীপ। এক রাশ আতঙ্ক নিয...
12/08/2024

// "কলেজ পালিয়ে যে বই পড়া হচ্ছে, বাসায় জানে?"
শুনে চমকে উঠলাম। হাতে তখন আবু ইসহাকের পদ্মার পলিদ্বীপ। এক রাশ আতঙ্ক নিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি, হাফিজুর ভাই।
আমার মুখে হাসি চলে আসে। হাফিজুর ভাই আর যাই হোক, বই পড়ার জন্য বাসায় বিচার দেবে না, আমি জানি।
লাইব্রেরিতে জোরে কথা বলা যায় না। ফিসফিস করে বললাম, চলো বাইরে যাই। পড়তে বিরক্ত লাগতেসে।
রাজশাহী সেন্ট্রাল লাইব্রেরি নিউ ডিগ্রী কলেজের পাশেই। বহু পোলাপাইন এখানে বসে ফোন টিপতে আসে, প্রেম করতে আসে। আমি সত্যিকার অর্থেই বই পড়তে আসতাম।
বই পাইলে আমার মাথা কোনকালেই ঠিক থাকতো না।
তবে হাফিজুর ভাই ছিলো বইয়ের চেয়েও ইন্টারেস্টিং। এলাকার বড় ভাই। কলেজের বড় ভাই। তবে রাজনীতি করতেন আমার উল্টোটা। আমি তখন অনিমেষ পড়ে বাংলাদেশে বাম বিপ্লবের স্বপ্ন দেখি। আর হাফিজুর ভাই শিবির করে দেশে ইরানি স্টাইলে ইসলামি বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেন।
কঠিন তর্ক করতাম সেই সময়। বেশিরভাগ সময়ই হাফিজুর ভাই আমার সাথে তর্কে হেরে যেতেন। তখন তো বুঝি নাই, এখন বুঝি উনি ইচ্ছা করে হারতেন আমাকে খুশি করার জন্য।
একবার কোন এক কারণে ইস্কুল থেকে বাসায় আসবো। রিকশা নাই। হাফিজুর ভাই দেখে বললেন, আমার সাইকেলে উঠো। দিয়ে আসি। আজকে ধর্মঘট।রিকশা পাবা না।
ছোটবেলা থেকেই আমি নাদুস নুদুস। সেই আমাকে নিয়ে গ্রীষ্মের দুপুরে ভাই হাপাতে শুরু করলেন। থামলেন দুইবার। আমার খটকা লাগলো। ভাইয়ের শক্তি এতো কম কেন?
বাসায় এসে দেখি আব্বুও আমাকে নিতে গেছে। আমি চলে এসেছি। আম্মু বললো, কীভাবে এলি? আমি বললাম হাফিজুর ভাই এর সাইকেলে।
আম্মু আতকে উঠলো। ওর সাইকেলে তুই উঠেছিস কেন? জানিস না ওর ক্যানসার?
আমি কিছু বলি না। এতো হাসিখুশি মানুষেরও ক্যান্সার থাকে? কই কোনদিন বলেনাই তো?
হাফিজুর ভাই মূলত ছিলেন লিউকোমিয়ার রোগী। তিনমাস পর পর রক্ত চেঞ্জ করতে হতো। অথচ এই লোকটা কত বড় অভিনেতা চিন্তা করেন, আমাদের কাউকে কখনও জানতে দেয় নাই।
এরপর ঐ লাইব্রেরির কাহিনী।
লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে মালোপাড়ার দিকে একটা একটা ঘর দেখালেন। বললেন, কোচিং দিচ্ছি। তুমি তো সায়েন্স এ থাকবা, আর্টসে গেলে পড়তে পারতা।
ভাই তখন পড়েন রাজশাহী ইউনিভার্সিটির পাবলিক এডমিনস্ট্রেশনে।
আমি ভাবলাম, যাক। আড্ডার আর ঝগড়ার আরেকটা জায়গা আমাদের হলো।
আমি যখনই বাম বিপ্লব নিয়ে কোন বই পড়তাম, ভাইকে বিপরীতে কল্পনা করতাম। কল্পনায় তাকে হারিয়ে দিয়ে বিরাট মজা পেতাম।
এমনই একদিন হুট করে আব্বু এসে বললো শালবাগানে রাবির এক টিচার খুন হয়েছে।
সারাদেশে হইচই পড়ে গেল। আমরা আগ্রহ নিয়ে ওয়েট করতে শুরু করলাম। আব্বু বাজার না করেই চলে এসেছে। পরদিন আম্মু বললো ডিম নিয়ে আয় দোকান থেকে।
আমি ডিম আনতে গেছি। দোকানে অনেক ভীড়। সম্ভবত বাংলা ভিশনে বলা হলো, রাবির টিচার হত্যা মামলায় হাফিজুর রহমান নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আমি বাসায় আসলাম দৌড়াতে দৌড়াতে। আম্মুকে বললাম, হাফিজুর ভাইকে পুলিশ ধরেছে। আম্মু বললো ধুর, এইটা এই হাফিজুর না। অন্য হাফিজুর। যে ছেলে বড় গলায় একটা কথা বলতে পারে না, তারে পুলিশ কেন ধরবে?
অথচ আম্মুর জানা ছিলো না, একটা মাছি না মারতে পারা মানুষকে সাধারণ পুলিশ ধরতে না পারলেও হাসিনার পুলিশ ধরতে পারে।
হাফিজুর ভাইয়ের বাবার ভাষ্য ছিলো, ফজরের নামাজ পড়ে ভাই ঘুমাইছিলো। বাসা থেকেই ডিবি তারে তুলে নিয়ে যায়। ইভেন প্যান্ট পরার সুযোগ তারে দেওয়া হয়নি। টি শার্ট আর লুঙ্গি পরা অবস্থাতেই তাকে তুলে নেওয়া হয়।
সবচে বড় কথা, একজন ক্যান্সারের রোগীকে ওষুধ নেওয়ার সুযোগও পুলিশ তাকে দেয়নাই।
তাকে ৫ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছিলো যতদূর মনে পড়ে।
দুইদিনের মাথায় অনেক চেষ্টা চরিত করে ভাইয়ের বড় ভাই ওষুধ নিয়ে সেলে যাইতে পারছিলেন।
বাট তার আর দরকার হয় নাই।
কারণ এর কিছুক্ষণ পরেই হাফিজুর ভাই পুলিশ হেফাজতে মারা যান। বড় ভাইয়ের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তাকে ওষুধ দূরের কথা, পানিও খাইতে দেওয়া হয় নাই।
হাফিজুর ভাইয়ের লাশ আসার পর অদ্ভুতভাবে বৃষ্টি নামলো। এলাকার সমস্ত মানুষ হাউমাউ করে কানতে লাগলো। আমার দাদির মৃত্যুর পরেও আব্বুরে আমি কানতে দেখিনি। অথচ সেইদিন আব্বুও পারলো না, বললো, এই ছেলেটারেও এমনে মেরে ফেললো?
হাফিজুর ভাইয়ের বড় ভাই বললেন, ছোটবেলা থেকেই আমাকে খুব জ্বালাইসে। তিন মাস পর পর রক্ত দিতে হতো, কত ঝামেলা। আমার আর কোন ঝামেলা থাকলো না। বলে শিশুর মতো কানতে লাগলেন।
আমি দেখলাম, লাশ নিয়ে আসা পুলিশ সদস্যরা রুমাল দিয়ে চোখ মুছতেসে।
এই মৃত্যুর পর এই পরিবারটাই তছনছ হয়ে গেল। ভাইয়ের বাবা স্ট্রোক করলেন, মা প্যারালাইজ হলেন। এতো জুলুম সহ্য করা তাদের পক্ষে আর সম্ভব হয়নি, মানুষ কতই বা আর পারে?
রেজাউল করিম হত্যা মামলা নিয়ে সবার আগ্রহ শেষ হলেও আমার হয়নি। আমি শেষদিন পর্যন্ত এই মামলার খোঁজ খবর রেখেছি।
চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের সেই লিস্টে সম্ভবত সাতজনের নাম ছিলো। না, সেখানে হাফিজুর রহমান নামে কোন নাম ছিলো না।
এর অর্থ হলো, ইভেন হাসিনার বানানো করাপ্টেড কোর্টও এই মামলার সাথে তার নূন্যতম সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করতে পারেনি।
তাহলে আমার হাফিজুর ভাইকে মরতে হলো কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দূরের কথা, এই প্রশ্ন করার স্বাধীনতাও আমরা পাইনি কোনদিন।
৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকেরই অনেকের কথাই মনে পড়েছে। আমার মনে পড়েছে হাফিজুর ভাইয়ের কথা।
কলেজ পালিয়ে যে বই পড়া হচ্ছে, বাসায় জানে?
আমি খুব শক্ত ছেলে। অথচ যতবার এই কথাটা মনে পড়ে, আমি আর চোখ খোলা রাখতে পারি না।
হাফিজুর ভাই হিরো নন। ছিলেন না কোনদিন। তিনি অনিমেষ ছিলেন না, ক্ষুদিরাম ছিলেন না, ছিলেন একজন ক্যান্সারের রোগী। সাধারণ রাজনীতি করা পাবলিক ইউনিভার্সিটির একজন সাধারণ ছাত্র।
সেই মানুষটাকেও শেখ হাসিনা খুন করিয়েছিলেন। তাকে ওষুধ তো দূরের কথা, পানিও খাইতে দেওয়া হয়নি।
আজকাল বিকেলে বৃষ্টি হলেই হাফিজুর ভাই এর কথা মনে পড়ে খুব। মনে পড়ে, ক্যান্সার আক্রান্ত একটা হাসিখুশি মানুষ নিজের অসুস্থতা ভুলে একটা রুম নিয়েছিলো কোচিং সেন্টার চালাবে বলে।
কিন্তু সেই কোচিংটা তিনি আর কখনও খুলতে পারেননি।
ভয়ঙ্কর খুনি ড্রাকুলা হাসিনার কাছে থেকে রক্তশূন্য একজন লিউকোমিয়ার রোগীও ছাড়া পায়নি। //

- সাদিকুর রহমান খান

একটি সম্পূরক প্রশ্ন - আওয়ামী মিডিয়া সেল মিথ্যা খবর ছড়িয়ে সাধারণ মানুষ হত্যার সহযোগী হয়েছে, তার প্রমাণ। এই মিডিয়া কর্মীদের কি বিচার হবে না?

12/08/2024

জাতির নিকট প্রশ্ন?
আয়নাঘরে আর ডিবি হারুনের ভাতের হোটেলে বহু আলেমকে যেতে দেখেছি কিন্তু কোনো পুরোহিতকে সেখানে দেখিনি। এদেশে 'সংখ্যালঘু' আসলে কারা?

Address

Shaheb Bazar
Rajshahi
6000

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Do Something Different - DSD posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Do Something Different - DSD:

Videos

Share