06/01/2024
🥀~~~~~~গভীর রাতের চাহিদা~~~~~~~~~🥀
❤️🥀!!......পর্ব-৩৯ (অন্তিম পর্ব)......!!❤️🥀
🥀------------------------****************------------------------🥀
ফোরাম আহমেদ কে উদ্দেশ্য করে বলল একজন অফিসার, স্যার ১ ঘন্টার মধ্যে যাহ করার করতে হবে। এর মধ্যে আপনি চাইলে পালিয়ে দেশ ও ত্যাগ করতে পারেন।
- ওকে ওয়েট এ্যান্ড সি।
- আর অনেক থ্যাংকস আইজিপি। আজকে তুই না থাকলে ফাঁশির কাষ্ঠে উঠতে হত আমার।
- স্যার যার সহায়তায় আমার পজিশন আজকে উপরমহল পর্যন্ত আর সে থাকবে পুলিশ কাস্টাডিতে ? এটা আমি মেনে নিতে পারিনি আমার স্বজ্ঞানে।
- আইজিপিকে বুকে জড়িয়ে নিল ফোরাম। কতক্ষণ মোলাকাত করার পর বেড়িয়ে গেল ফোরাম।
রেজন বাসায় সবাই আমাদের পথ চেয়ে বসে আছে। তাড়াতাড়ি পা বাড়িয়ে বাড়িতে গমন করতে হবে। সালা তোদের বাড়িতে ঘুরতে আসায় বৃথা। আমার মেয়ে কত মানা করল যেন তোদের বাসায় না যাই কিন্তুক ওর কথা উপেক্ষা করে চলে আসলাম তোদের বাসায়। আর এসেই অসৌজন্যমূলক আচরণের স্বরুপ আমাকে পায়ে হেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিস, সালা কিপ্টে একটা রিক্সা পর্যন্ত নিস নাই।
- রেজন বাঁকা হেসে বলল, তোদের বাসায় থাকলে কি এমন অসাধ্য সাধন করতি?
- ভাই তোর বকবকানি শোনার মুড নেই আমার সো প্লিজ স্টপ ইওর মাউথ । ইফ ইউ টক এনিমোর দেন আই কিল ইউ।
হঠাৎই আদনান নিজেই শুরু করল এই এই দোস্ত।
- হ্যাঁ মেরি এক্স বন্ধু বল।
- অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আদনান জিজ্ঞেসের চাদরে আটকিয়ে ধরল রেজনকে, এক্স বন্ধু?
- কাঁচুমাচু মুখে রেজন বলল, না মানে এখন যেহেতু আপন বউয়ের বড় ভাই আর এখন আমরা চাইলেও আগের মতো ফ্রেন্ড হিসাবে সকল কথা শেয়ার করতে পারি না, জমিয়ে আড্ডা দিতে পারি না সেই সূত্রে বলা যেতে এক্স বন্ধু তুই আমার।
- ওয়েট ওয়েট। ওয়াট ডু ইউ মিন বাই আপন বউ? কয়টা বউ তোর?
- মুচকি হাসি হেসে রেজন বলল , ২ টা বউ আমার ভাই। আর তোর বোন ২ নাম্বার বউ আমার।
রেজনের কথা শুনে যেন আদনান আকাশ থেকে পড়ল। তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু যেন কি না ২ টা বিয়ে করেছে আর সে বিষয়ে তার অজ্ঞাতা!
আর তাহলে কি তানিশা সতীনের ঘর করছে? কই আগে তো রেজন বা তানিশা কেউ এই বিষয়টা আমাকে জানানোর প্রয়োজনবোধ করেনি। তাহলে কি ওরা আমার থেকে এই চরম সত্য কথা গুলো লুকিয়ে রেখেছিল? আর ক্যান লুকিয়ে রাখবে? তাহলে কি রেজন তানিশাকে হুমকি দিয়ে এসব বলতে মানা করছে? না তানিশা এখন পর্যন্ত জানে না যে রেজন অন্য একটা বিয়ে করেছে? রেজনের কথায় ভাবনার সুতো ছিঁড়ে যায় আদনানের।
- প্রশ্ন সূচক মনোভাব প্রছন্ন করেছে রেজন কি হয়েছে বিষয়টা জানতে। কিন্তুক আদনান এক নজরে চেয়ে আছে রেজনের মুখের দিকে।
- কি হয়েছে ভাই? এভাবে তাকিয়ে থাকার মানেটা কি?
- ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আদনান বলল, ভাই তুই ২ টা বিয়ে করেছিস এটা তো আমাকে আগে বলিস নাই ।
- উচ্চস্বরে হেসে বলল রেজন, ভাই আমার প্রথম বউ কোলবালিশ।
- যাক বাবা আমি আবার কি না কি ভেবে বসে ছিলাম।
- শালা তোর তো চিন্তাধারা ই নেগেটিভ। চল তাড়াতাড়ি বাসায় যাই।
- আচ্ছা আদনান আর একটা কথা তুই সেদিন ওই জঙ্গল থেকে তানিশার আগে কিভাবে ফিরলি বাসায়?
- সেটা তো আমিও জানি না। আমি ভাবছিলাম তোর সাথে ছিল।
- কি হতে পারে ভাই তাহলে সেদিন ওর সাথে?
- সেটাই তো রহস্য থেকে গেল।
।
রেজনদের বাসার গেট বাহির হতে তালা দেওয়া। এই রাতের বেলায় সবাই কোথায় যাবে বাড়িঘর ছেড়ে? না তানিশার ব্যাথা উঠেছে। যার জন্য হয়তো ভাবিরা নিয়ে গিয়েছে হাসপাতালে। কিন্তুক এমনটা হলে তো ভাবি বা যে কেউ আমাকে ফোন করার কথা। কিন্তুক ফোন ক্যান করল না? তাহলে কি আমার ফোন সচল অবস্থায় নেই? সুইচ অফ হয়ে গিয়েছে কি ফোনটা?
রেজন ফোনটা বের করে দেখল, ফোনটা সচল আছে যার মানে সুইচ অফ নেই। বাট ফোন ক্যান করল না?
রেজন তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতেই নাকে রক্তের গন্ধ কিছুটা ভেসে আসল। রেজন তাড়াহুড়ো করে মেইন দুয়ারের সামনে চলে আসে। দুয়ারটা ভিতর থেকে লক করা। দুয়ার আর ফ্লোর এর মাঝে কিঞ্চিৎ জায়গায় ছিল সেটা দিয়ে কিছুটা রক্ত বাহিরে বের হয়ে এসেছে।
রেজন আর আদনান দুজন ই আতঙ্কিত। ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে দুজনের। রেজন আর আদনান দৌড়ে পিছন দুয়ারে সামনে চলে আসে। আর এসে দেখল পিছন দুয়ার উন্মোচন করা সম্পুর্ন ভাবে। ঘরের সবগুলো লাইট অফ করা। অন্ধকার ভিড়ে ধরেছে একেবারে। রেজন ফোনের আলো দিয়ে সুইচবোর্ড খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুইচ অন মুডে দিলেও লাইট জ্বলছে না। যার মানে হয়তো বিদ্যুৎ নেই নয়তো সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও করা হতে পারে।
আদনান ভীতু পায়ে মেইন সুইচ অন করে দেয় যার নিমিত্তে সাড়া ঘর আলোকিত হয়ে যায়। আর আলো আসার সাথে সাথে অন্ধকার লুকিয়ে যায় নিজের গন্তব্যে। অন্ধকার কেটে যেতেই আদনান আর রেজন থ মেড়ে গেল। তাকিয়ে দেখল যেভাবে বস্তা সাজিয়ে রাখে একটার উপর একটা ঠিক ওইভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে মাথাবিহীন লাশ গুলো। মাথা গুলো খুব ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে আলাদা করে একটা জায়গায় রেখে দেওয়া হয়েছে।
ভালোবাসার সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল আজকে। মনে হচ্ছে যেন লাশের স্তুপ জমেছে বাড়িতে। স্ট্যাচু হয়ে আছে আদনান আর রেজন। বিশাল ড্রায়নিং রুমটা পুরোদমে যেন রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে। দুয়ারের পাশে তানহা আর নির্জনের মাথা পড়ে রয়েছে। মাথা থেকে রক্ত পড়ছে টপটপ করে।
- রেজনের ক্যান জানি মনে হচ্ছে তানহা আর নির্জন কাক্কু কাক্কু বলে ডাকছে। অস্পষ্ট হলেও ভেসে আসছে বারবার কণ্ঠ গুলো। চক্ষু দিয়ে জল অঝোরে গড়িয়ে পড়ছে কিন্তুক মুখে কোন ভাষা নেই। বাবা মায়ের লাশের দিকে তাকানোর অবস্থা নেই। অবস্থা নেই কারো মুখের দিকে তাকানোর। আজকে একসাথে একাধিক কবর খুঁড়তে হবে রেজনকে। সবার লাশ ই নিজ কাঁধে বহন করতে হবে।
""রেজনের আর বাবা ডাক শুনার ভাগ্য কপালে জুটলো না। নিষ্পাপ শিশু গুলো আলো দেখল না এই পৃথিবীর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চোখে ধরা পড়ল না বাচ্চা গুলোর। কি অপরাধ করেছিল জন্ম না নেওয়া বাচ্চা গুলো? যার জন্য মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হলো?
কোন অপরাধ না করেই মারা যেতে হলো বাচ্চা গুলোকে। টুইন বেবি নিয়ে কি কি করবে এমন প্লান এঁটে রাখা মানুষটারও আজকে জায়গা হয়েছে লাশের স্তুপে। সবার মাথা আলাদা করা হলেও ছোট বাচ্চা দুটোর মাথা আলাদা করতে পারিনি ফোরাম। এটার জন্য আফসোস করা উচিত ফোরামের।
অল টাইম বাড়ি মাতিয়ে রাখা নির্জন ও তানহার স্থান ও হয়েছে লাশের স্তুপে। আর্দশবান ভাবিকেও লুটিয়ে রাখা হয়েছে স্তুপে।
ফোরামের একটা অভ্যাস ছিল লাশের মাথা নিয়ে ফুটবল খেলা কিন্তুক আজকে হয়তো ফুটবল খেলতে পারিনি ফোরাম কারণ ১ ঘন্টা সময় ছিল জাস্ট ফোরামের হাতে।
রেজন শুধু চেয়ে আছে এক নজরে লাশ গুলোর দিকে। লাশের গন্ধ আকাশে ভাসে কথাটা মনে পড়ে গেল আজকে, লাশের গন্ধ আকাশে ভাসছে আজকে রেজনদের বাসায়।
আজকে থেকে রেজনকে আর কেউ ল্যাপটপে কাজ করার সময় ডিস্টার্ব করবে না। কেউ আর চুল বেঁধে চাইবে না। কেউ আর লোমশ থাকা বুকে ঘুমাতে চাইবে না। বুকের লোমের মধ্যে হয়তো আর কেউ হাত দিয়ে বিলি কাটবে না। আজকের পর থেকে আর হয়তো রেজনকে কাউকে হাত বুলিয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে না। আজকের পর থেকে আর হয়তো রেজনকে কারো ভেজা চুল মুছিয়ে দিতে হবে না। আর হয়তো কাউকে রেজনের খাইয়ে দিতে হবে না। আর চাইলেও কাউকে ভালোবাসা দিয়ে কাছে টেনে নিতে পারবে না। আর হয়তো কেউ গভীর রাতে কোন কিছু খাওয়ার বাহানা ধরবে না। আর না বাহানা ধরবে ঘুরতে যেতে। না পারবে আজকে থেকে রেজন, বাহানা ধরা মানুষকে রান্না ঘরে পিছন থেকে জাপ্টে ধরবে। আর স্বপ্ন ভঙ্গ হলো আজকে বাবা ডাক শুনার। বাইনা ধরার মানুষটা যে এখন গভীর তন্দ্রাঘোরে আছে। চাইলেও এই তন্দ্রা ভঙ্গ হবে না কোনদিন।
কে আর আজকে থেকে কাক্কু কাক্কু বলে জাপ্টে ধরবে রেজনকে ? কে? কে ? আর হয়তো কখনো কাক্কু ডাকটা শুনা হবে না রেজনের। আর নির্জন কখনো ওর বাবার কথা জানতে চাইবে না। কারণ নির্জন ওর বাবার কাছে চলে গিয়েছে। আজকে থেকে আর রেজনের কারো জন্য চকলেট কিনতে হবে না।
আর আজকে থেকে ছোটভাই বলে কেউ ডাক দিবে না। আর রেজনও ভাবি বলে ডাকতে পারবে না। আর রেজনের ভাবিও নিজের হাজবেন্ড এর সাথে সাক্ষাৎ করতে পাড়ি জমিয়েছে।
আর বাবা মা সে তো কবে থেকেই তাঁর বড় ছেলের সঙ্গে দেখার করবার জন্য পথ চেয়ে বসে ছিল। আজকে হয়তো দেখা করতে পারবে নিজের বড় ছেলের সাথে। সকল সখ্যতা ত্যাগ করে পাড়ি জমিয়েছে সবাই ছেজন ভাইয়ার সাথে দেখা করতে। নিষ্ঠুরতম পৃথিবীতে আর কেউ আত্মীয় বলতে কেউ থাকল না রেজনের। কাছের মানুষগুলোকে এভাবে হারিয়ে ফেলবে সেটা কখনো ভাবনার জগতে আসেনি রেজনের।
মনে হচ্ছে যেন রেজন মারা যাবে। এতটা কাতর হয়ে গিয়েছে। রেজনের এমন অবস্থা দেখে লেখকের মনে পড়ে গেল "" জননেত্রী শেখ হাসিনার কথা "। কিভাবে ছিলেন উনি পুরো পরিবারকে হারিয়ে? কিভাবে? কিভাবে? জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবনী থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয় সকল হতাশা থেকে। পুরো পরিবার হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ানো সত্যিই অস্বাভাবিক ব্যাপার। স্যালুট নেত্রী তোমায়। অদম্য ভালোবাসা তোমার জন্য। কিছু বেইমানের জন্য হাজারো মানুষ ভালোবাসার মানুষ গুলো ছাড়া একাকী জীবনযাপন করতে হয় এটার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা। আর ফোরাম সে তো অর্থলোভী মানুষ হয়তো দেশ ত্যাগ করে বিদেশে আবার ক্রাইমের রাজ্য বিস্তার ঘটাবে।
🥀---------------------------------সমাপ্তি-------------------------🥀
বিঃদ্রঃ পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে জানাতে কেউ ভুলবেন না। আর এত দিন গল্পটার সঙ্গে থাকার জন্য থ্যাংকস। আর গল্পটা রিয়েল তাই এভাবে শেষ করতে হলো। কিন্তুক একটা কথা পুরো গল্পটা বাস্তব না কিছু কাল্পনিকও আছে। ভালো থাকবেন সবাই। আর প্রিয় মানুষদের গল্পটা সাজেস্ট করবেন।
ভালো থাকবেন সবাই