Halal BD

Halal BD 'হালাল মানেই রহমত'
(3)

25/09/2024

ওযুর শুরুতে যারা বিসমিল্লাহ পড়েন না ....

31/08/2024
29/08/2024

আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাইতে গিয়ে যে ব্যাক্তি মজা করে সে কি আসলেই মুসলমান ?

27/08/2024

রাসূল (ছাঃ) এর কাছে যে/না করার অনুমতি চাইলেন এক যুবক, রাসূল (ছাঃ) কি তাকে অনুমতি দিয়েছিলেন?

26/08/2024

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের যে বক্তব্য শুনে হানাফি আলেম নিজের আক্বীদা চেঞ্জ করেছিলেন সেই বক্তব্য আপনাদের জন্য আরো একবার পুনঃপ্রচার করা হলো।

19/08/2024

কেউ যদি আপনাকে কোন হাদীছ বলে তাহলে তার রেফারেন্স জানতে চাওয়া আপনার ঈমানী দায়িত্ব, তবে মনে রাখবেন কোন বড় হুজুর রেফারেন্স হতে পারে না।

18/08/2024

নিজের সম্পদকে কিভাবে নিজের সম্পদ বানাতে হয় ?
বাক্য না বুঝলে দেখেনিন সক্ষিপ্ত ভিডিওটি .....

17/08/2024

রিজিকের মালিক আল্লাহ। কোথা থেকে রিজিক আসবে বুঝতেই পারবেন না।

আসসালামু'আলাইকুম...আগামীকাল ১৮/০৪/২০২৪ ইং, রোজ : বৃহস্পতিবার, বাদ মাগরিব।*  ""বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ"' কেন্দ্রীয় সভাপ...
17/04/2024

আসসালামু'আলাইকুম...
আগামীকাল ১৮/০৪/২০২৪ ইং, রোজ : বৃহস্পতিবার, বাদ মাগরিব।
* ""বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ"' কেন্দ্রীয় সভাপতি- শায়েখ শরীফুল ইসলাম মাদানী★ বিরল উপযেলায় নিম্নোক্ত ঠিকানায় এক জরুরী বৈঠকে অংশগ্রহন করবেন। স্থান:- রাণীপুকুর বাঘরাপারা (মসজিদ), বোর্ড হাট,বিরল,দিনাজপুর। উক্ত জরুরী বৈঠকে আপনাদের সকলের উপস্থিতি একান্তভাবে কামনা করছি।
🔰আহ্বানেঃ
Ali
সভাপতি
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ
বিরল উপযেলা শাখা।

🔰হিফযুল হাদীছ প্রতিযোগিতা'২০২৪(সকলের জন্য উন্মুক্ত)🔴তারিখ: ২৯-০৩-২০২৪, শুক্রবার৷ বিকাল ৩ টা। স্থান: বারো বিঘা পুরাতন জাম...
20/03/2024

🔰হিফযুল হাদীছ প্রতিযোগিতা'২০২৪
(সকলের জন্য উন্মুক্ত)
🔴তারিখ: ২৯-০৩-২০২৪, শুক্রবার৷ বিকাল ৩ টা।
স্থান: বারো বিঘা পুরাতন জামে মসজিদ, আমতলী, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর।

🔰সিলেবাসঃ নির্ধারিত ২৫টি হাদীছ।

✍️নিয়মাবলী: প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত ১০টি হাদীছ লিখতে হবে৷

🔴১ম পুরস্কার: বই + ৫০০/-
🔴২য় পুরস্কার : বই+ ৩০০/-
🔴৩য় পুরস্কার: বই+ ২০০/-

রেজিস্টেশন লিংক: https://forms.gle/LtATtQc9uGadpV3NA

সিলবাস পেতে যোগাযোগ করুন:
জিহাদ ইসলাম- 01839300897
হোয়াটসঅ্যাপ- 01762009209

রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, "আল্লাহ ঐ ব্যক্তির মুখ উজ্জল করুন যে আমার কথা শুনেছে, যথাযথভাবে তা স্মরণে রেখেছে ও মুখস্থ করেছে এবং প্রচার করেছে। কেননা অনেক জ্ঞানের বাহক নিজে জ্ঞানী নয় (সে অন্যের নিকট জ্ঞান বহন করে নিয়ে যােয়) এবং অনেক জ্ঞানের বাহক তার চাইতে অধিকতর জ্ঞানীর নিকটে জ্ঞান বহন করে নিয়ে যায় (ইবু মাজাহ হা/২৩০: তিরমিযী হা/২৬৫৮;)।

01/03/2024

🔴 হিফয বিভাগের উদ্বোধন ও মাসিক তাবলীগ ইজতেমা
স্থানঃ দারুলহাদীছ সালাফিয়্যাহ্ মাদ্রাসা, মধ্য আটরাই, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।

মাদ্রাসার আবাসিক ভবনের কাজ চলমান.....
অনুদান পাঠানোর ঠিকানা
ইসলামী ব্যাংক হিসাব নং- ২০৫০৭৭৭০২১৫২৪৩৬০০
অফিস মোবাইল : ০১৭৬৫-৮৫৯০৮৯ ( বিকাশ, নগদ,রকেট)
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ : ০১৭৩৫-৪৭৪০৭২ (বিকাশ, নগদ)

01/03/2024

🔴 হিফয বিভাগের উদ্বোধন ও মাসিক তাবলীগ ইজতেমা

স্থানঃ দারুলহাদীছ সালাফিয়্যাহ্ মাদ্রাসা, মধ্য আটরাই, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।

মাদ্রাসার আবাসিক ভবনের কাজ চলমান.....
অনুদান পাঠানোর ঠিকানা
ইসলামী ব্যাংক হিসাব নং- ২০৫০৭৭৭০২১৫২৪৩৬০০
অফিস মোবাইল : ০১৭৬৫-৮৫৯০৮৯ ( বিকাশ, নগদ,রকেট)
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ : ০১৭৩৫-৪৭৪০৭২ (বিকাশ, নগদ)

অবশেষে পীস টিভিতে১৭ই সেপ্টেম্বর ২০০৯। বাদ আছর ফাতাওয়া বোর্ড চলছিল। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীর প্রফেসর...
07/02/2024

অবশেষে পীস টিভিতে

১৭ই সেপ্টেম্বর ২০০৯। বাদ আছর ফাতাওয়া বোর্ড চলছিল। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব (বোর্ড প্রধান), আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ (সদস্য) মাওলানা বদীউযযামান (সদস্য) ও আমি উপস্থিত ছিলাম। মাগরিবের আযানের পূর্ব মুহূর্ত। হঠাৎ মোবাইলে রিং বেজে উঠল। দেখলাম বিদেশী নম্বর। রিসিভ করে সালাম দিলাম। প্রত্যুত্তরে জবাব এল, ‘আমি নূরুল ইসলাম বলছি মুম্বাই থেকে। আমি ডক্টর ছাহেবকে চাচ্ছি। উনার বাসার নম্বরে ফোন দিলে এই নম্বরে ফোন করতে বলা হয়েছে।’ মোবাইল ফোনটি স্যারের হাতে দিয়ে বললাম, ইন্ডিয়া থেকে আপনার ফোন এসেছে। মোবাইল হাতে নিয়ে সালাম বিনিময়ের পর স্যার বললেন, আমাদের এখানে মাগরিবের সময় হয়ে গেছে। আপনি আধা ঘণ্টা পরে ফোন করুন, ছালাতের পর কথা হবে।

মাগরিব ছালাতের পর আবার ফোন আসল। বেশ দীর্ঘ সময় ধরে কথা হল। আমরা সবাই অধির আগ্রহে বসে আছি। স্যার ফোন রেখে বললেন, আব্দুর রাযযাক ছাহেব আলহামদুলিল্লাহ পড়ুন। আনন্দের সাথে তিনি জানালেন, বাতিলরা যখন দেশে আমাদের দাওয়াতী কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে, আল্লাহ তখন আমাদের জন্য আন্তর্জাতিক দুয়ার খুলে দিতে চাচ্ছেন। ডা. যাকির নায়েক পীস টিভিতে আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উনারা পিস টিভির বাংলা বিভাগ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই আমার কাছে ছহীহ আক্বীদার আলোচক চেয়েছেন। এভাবেই শুরু হল আমাদের নতুন অভিযাত্রা। কয়েকদিন পরই আমীরে জামা‘আতের নির্দেশে ড. সাখাওয়াত ভাই বক্তা হিসাবে ১২ জনের নাম নির্বাচন করে তাদের সবার বায়োডাটা ও অডিও-ভিডিও বক্তব্যের ক্লিপ মুম্বাইয়ে পাঠিয়ে দিলেন। তারপর অপেক্ষার পালা।

৫ই মে ২০১০ বুধবার। মাগরিবের ছালাতের আযানের মুহূর্ত। ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় অফিসে বসা। মোবাইল বেজে উঠল। বললেন, ‘মুম্বাই থেকে নূরুল ইসলাম বলছি। আপনাদের যে তালিকা পাঠানো হয়েছিল তাদের মধ্য হতে আমাদের নির্বাচনী বোর্ড ৬ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করেছেন। সেই ৬ জন কে? আমার ধারণা ছিল যে, আমার নাম সেই তালিকায় নেই। কেননা আমি তো জুনিয়র মোস্ট। এরপরও বললাম, নামগুলো কি জানতে পারি? উনি একের পর এক বলে গেলেন- ‘প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, মুযাফ্ফর বিন মুহসিন এবং আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল মাদানী (সভাপতি, আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা যেলা)। এরপরে যোগ হয়েছেন শাহ ওয়ালিউল্লাহ (ইমাম, সোবহানবাগ মসজিদ, ঢাকা) এবং সঊদী আরব থেকে হাফেয আখতার। আপনাদের নামে ফ্যাক্স যোগে ইনভাইটেশন লেটার পাঠালাম। অতি সত্বর পাসপোর্ট করে ভিসার আবেদন করুন। আগামী জুনের ১৭ তারিখ থেকে আপনাদের প্রোগ্রাম শুরু হবে।’ অতঃপর কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের আলোচনার বিষয় জানিয়ে দেওয়া হল।

ব্যস্ততার কারণে আমীরে জামা‘আত সফর বাতিল করলেন। তাই আমরা তিনজন পাসপোর্ট করলাম। ইনভাইটেশন লেটারসহ ভিসার জন্য ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে আবেদন করলাম। বিনা বাক্যে পাসপোর্ট ফেরত দিল দূতাবাস। অন্যের মাধ্যমে চেষ্টা করেও ভিসার কোন ব্যবস্থা করা গেল না। অবশেষে পীস টিভি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে এসে প্রোগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নিল। তার সাথে ডা. যাকির ছাহেবও আসবেন বলে জানানো হল। ৩১ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ পর্যন্ত তারা বক্তব্য রেকর্ড করবেন। আমরা প্রস্ত্ততি নিলাম বিষয় অনুযায়ী। ঢাকায় আমাদের জন্য হোটেলও ভাড়া করা হল। বিভিন্ন স্টুডিও প্রস্ত্তত করা হল। ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর চীনমৈত্রী (বঙ্গবন্ধু) সম্মেলন কেন্দ্রে ওপেন প্রোগ্রাম হবে বলে ভাড়া করা হল। মুম্বাই থেকেও জানানো হল, তারা প্রায় ত্রিশ জন ভিসার আবেদন করেছেন। ৩১ শে আগস্ট বাংলাদেশে আসবেন। পরে তারা জানালেন, বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে। আমরাও নিরাশ হলাম, আর পীস টিভিতে আলোচনা করার সুযোগ হল না।

ডিসেম্বরের শেষে আবার প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয় মুম্বাইয়ে। আমাদের জন্য আবার দাওয়াতপত্র পাঠানো হল। এবার আমরা ভারতীয় দূতাবাসের রাজশাহী অফিসে আবেদন করলাম স্থলপথে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এখানেও বার বার ঘুরানো হল। অবশেষে ৯ জানুয়ারী ২০১১ দেখা করার জন্য বললেন স্থানীয় অফিস প্রধান। সে মোতাবেক সাক্ষাৎ করলাম। কিন্তু তিনি বলে দিলেন, ১৩ জানুয়ারী আসুন। বুঝা গেল এবারেও তারা ভিসা দিবে না।

ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে আসছি। তখন বিকাল ৩.২০। রুমে ঢুকছি। মুম্বাইয়ের ফোন। জিজ্ঞেস করলেন, ভিসা কি পেয়েছেন? বললাম, না। তিনি বললেন, পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে তো? দিয়েছে। তিনি বললেন, তাহলে আমরা আলহামদুলিল্লাহ পড়ি! আমি হতবাক। বাঁকা করে বললেন, তাদের ভিসার আর দরকার নেই। রাত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১১ দুবাইয়ে আপনাদের প্রোগ্রাম শুরু হবে। আপনাদের পাসপোর্টগুলো স্ক্যান করে ইমেইলে পাঠিয়ে দিন। আমরাই ভিসা করে দিচ্ছি। ফালিল্লাহিল হামদ।

অতঃপর চলে আসল সেই কাংখিত শুভক্ষণ। সিদ্ধান্ত হল ১৮ ফেব্রুয়ারীতে যাওয়ার। কিন্তু আবারও বাধা। কারণ তাবলীগী ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারী। যাহোক ইজতেমার ঠিক পরদিনই যাত্রাক্ষণ নির্ধারিত হল।

আরেকটা কথা, যখন দুবাইয়ে প্রোগ্রামের সিদ্ধান্ত হল, তখন পীস টিভি কর্তৃপক্ষ আরো কয়েকজন আলোচক নেওয়ার জন্য আমীরে জামা‘আতের সাথে পরামর্শ করলেন। অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও তাদের সাথে যোগাযোগ করলেন। ফলে সে সূত্রে ড. মুছলেহুদ্দীন (ঢাকা), হারুণ হুসাইন (সিলেট), সাইফুদ্দীন বেলাল (দিনাজপুর), ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী (ঠাকুরগাঁ) প্রমুখ আমাদের সাথে সঙ্গী হলেন। নির্ধারিত ১৮ তারিখেই তাঁরা রওয়ানা হয়েছিলেন।

১৯ই ফেব্রুয়ারী রাত ৯.১৫ মিনিটে আমাদের ফ্লাইট। সকাল ৯টায় আমি ও শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আমীরে জামা‘আত আমাদের দীর্ঘ নছীহত করলেন এবং রাস্তা পর্যন্ত এসে বিদায় দিলেন। দুপুরের পর ঢাকায় উত্তরখানে গিয়ে মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল মাদানীর বাসায় উঠলাম। সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম তিন জন এক সঙ্গে। আমার প্রথম বিদেশযাত্রা। আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল মাদানী ছাহেবের অভিজ্ঞতা অনেক। আর আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ওস্তাদজীর একবারের হজ্জের অভিজ্ঞতা। বিমানবন্দরে ঢুকেই আমানুল্লাহ মাদানী আমাদেরকে নিয়ে বিমানের টিকিটটা নিয়ে নিলেন। একটু পরেই আসলেন জনাব শাহ ওয়ালিউল্লাহ ও সদ্য যোগ হওয়া ইউসুফ আব্দুল মাজীদ (ঢাকা)।

এরপর নতুন অভিজ্ঞতা। ইমিগ্রেশনে গিয়ে আটকা পড়লাম। প্রশাসনের লোকেরা দীর্ঘক্ষণ আমাদের বসিয়ে রাখল। কোথায় যাবেন, কেন যাবেন, আপনাদের কে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইত্যাদি প্রশ্ন। তিন ঘণ্টা পর যখন বিমানের সকল যাত্রী উঠে গেছে তখন সত্বর বিমান ছেড়ে যাবে বলে আমাদের জন্য বার বার এনাউন্স করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা ঠায় দাঁড়িয়ে। বিরাট অনিশ্চয়তার ছাপ সবার চোখেমুখে। অবশেষে তারা নিজেরাই আমাদের বিষয়ে তদন্ত করল এবং ছাড়পত্র দিল। ফালিল্লাহিল হামদ!

অপেক্ষায় থাকার কারণে আমাদের টাকা ভাঙিয়ে ডলার করা হল না। বিমান ছাড়ার মুহূর্ত। সবাই বিমানে উঠে গেছেন। আমি নেই। গেটে আটকে গেছি। দেশীয় টাকা দুই হাযারের বেশী নিয়ে যেতে দিবে না। আমি বললাম, আমাদের তো সুযোগই দিলেন না, দুবাই বিমান বন্দরে ডলার চেঞ্জ করে নেব। একজন আমাকে যাওয়ার জন্য ইঙ্গিত দিলেন, আমি যেতে থাকলাম। কিন্তু অন্যজন বাধা দিলেন। বিমানের গেট থেকে বার বার সংকেত দেওয়া হচ্ছে। আমি মাঝে আটকানো। পরে একটু রেগে গিয়ে চলে গেলাম। বিমানে উঠে সিটে বসার পরে দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার পেরেশানী কমল। ভারাক্রান্ত মনে একটু দম ধরে থাকলাম। আয়নায় নিজের থমথমে চেহারা দেখে চেতনা ফিরল।

বিমান ছাড়ল রানওয়েতে অনেকক্ষণ অবস্থান করার পর। তখন রাত্রি ৯.৩৭ মিনিট। ভাগ্য ভাল যে সিট ছিল জানালার পাশেই। নীচের দিকে তাকিয়ে দেখা যাচ্ছিল আলোর বৈচিত্র্য। বিশেষ করে বিমান যখন দুবাই ছুঁই ছুঁই, তখন সাগরের মাঝে দেখা যাচ্ছিল অতি স্বচ্ছ ও পরিষ্কার চাঁদ ও তারা। যেন আকাশের দিকে তাকিয়ে যা দেখি তার চেয়েও হাযার গুণে সুন্দর। ঝকঝকে তারাগুলো যেন সাগরের মাঝেই তৈরি রয়েছে। অতঃপর দুবাইয়ের সারি সারি বিল্ডিং। পুরো দেশটি যেন এক তারার মেলা, মুক্তখচিত। নিপুণভাবে কোন শিল্পী যেন সাজিয়েছে। সবই উপভোগ করছিলাম বিমান থেকে। খানিকবাদে দেখতে দেখতেই বিমান ল্যান্ড করল। সুবহানাল্লাহ! কি বিশাল বিমানবন্দর আর কত যে বিমান!!

তখন রাত্রি ১টা ৪০ মিনিট। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ইমিগ্রেশনে অনেক ভিড়। বেশ দেরী হল। অবশেষে বের হলাম। মার্নিশ নামে এক ব্যক্তি আসল। সে আমাদের জন্য অপেক্ষমাণ ড্রাইভার। গাড়ীতে উঠে সর্ববৃহৎ বিল্ডিং বুর্জ খলীফার পাশ দিয়ে আমাদের নিয়ে গেল ক্যাসল আল-বারশা হোটেলে। প্রথমবারের মত দেখলাম দীর্ঘদিনের পরিচিত সেই শায়খ নূরুল ইসলাম ভাইকে। তিনিই আমাদেরকে রিসিভ করলেন। আগে থেকেই হোটেলের সীট বরাদ্দ ছিল। সেখানে গিয়ে উঠলাম। হালকা নাস্তার পর শায়খ নূরুল ইসলামের মোবাইল থেকে আমাদের পৌঁছার খবর জানালাম আমীরে জামা‘আতকে ।

অতঃপর হোটেলে সাক্ষাৎ হল সঊদী আরব থেকে আসা হাফেয আখতার মাদানী (নওগাঁ), লন্ডন থেকে আসা ড. আবুল কালাম মাদানী (যশোর), ড. আব্দুস সালাম (সাতক্ষীরা), ড. আব্দুর রহমান (বাগেরহাট)-এর সাথে। তারা লন্ডনে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আর সফরের শেষভাগে এক সপ্তাহের জন্য গেলেন অধ্যাপক ড. লোকমান হুসাইন (প্রফেসর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া) ও ড. আহমাদুল্লাহ ত্রিশালী (ময়মনসিংহ)।

২০শে ফেব্রুয়ারী। দুপুর আড়াইটার দিকে প্রোগ্রামে যেতে হবে। হোটেলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছি। গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকছেন হাফেয আখতার, হারুণ হুসাইন। উভয়েরই মাথায় সঊদী রুমাল। হাফেয আখতার ভাইকে সহজে চিনতে পারলেও হারুণ ছাহেবকে চিনতে দেরী হয়েছে। ইতোমধ্যে কুশল বিনিময়। আমি নাম বলতেই বললেন, ‘তুমিই মুযাফফর। তোমাকে দেখার ইচ্ছা ছিল। আমি হারুণ হুসাইন।’

গাড়িতে উঠে চললাম মিরদিফ সিটির পথে। রাস্তার দুই পার্শ্বে খেজুর গাছ। একেকটি গাছ বিরাট পাতার বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সবগুলোই সমান সৌন্দর্য বহন করছে। কারণ উপরের শাখাটি যত সুন্দর, নীচের শাখাটিও অনুরূপ। পৌঁছলাম এক সুসজ্জিত বিল্ডিংয়ে। প্রোগ্রাম রেকর্ডের প্রথম অভিজ্ঞতা। মানুষ নেই। শুধু ক্যামেরাকে সামনে রেখে বলছি, সম্মানিত উপস্থিতি!! ক্যামেরাই যেন দর্শক শ্রোতা। দীর্ঘ সফরে কয়েক ক্যাটাগরীতে প্রোগ্রাম ধারণ করা হয়েছিল যেমন- (ক) একক বক্তব্য বা টিভি টক। এটা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায় (খ) দারস (নির্বাচিত গ্রন্থ)। এটা হয়েছে জিতে ও মিডিয়া সিটিতে (গ) গ্রুপ ডিসকাশন। এটা হয়েছে মিডিয়া সিটিতে।

প্রোগ্রাম চলতে থাকল। খাওয়া-দাওয়ায় প্রথম দিকে সমস্যা হলেও পরে তা কেটে যায়। দেশীয় খাবারের সাথে কোন মিল নেই। ভাত পাওয়া যায় অনেক কষ্টে। বাঙালী তরি-তরকারী তো সোনার হরিণ। উন্নত মানের হোটেলে অনেক রকমের খানা থাকলেও আমার পসন্দ হয়নি। আব্দুর রাযযাক ওস্তাদজীরও একই অবস্থা। অবশেষে পাশের পাকিস্তানী হোটেলে খাওয়া-দাওয়া শুরু হল। প্রথম দিন। হোটেলের নিয়ম অনুযায়ী খাবারের শুরুতেই অনেক সালাদ দিল। দেখতে প্রায় ঘাসের মত। সবাই টেবিলে বসা। আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ চাঁপাই দেশীয় ভঙ্গিতে ফোড়ন কেটে বললেন, ‘আমরা গরু নাকি, ঘাস খেতে দিয়েছে?’ হা.হা..।

প্রথম দিনই পরিচয় হয়েছিল দেশীয় ভাই আলী রেযা (নারায়ণগঞ্জ) ও সাজীদ (নরসিংদী)-এর সাথে। ভাই আলী রেযা দুবাইয়ের প্রায় সব দাঈ সেন্টারগুলোর সাথেই পরিচিত। ডা. যাকির নায়েকের সাথেও তার ভাল সম্পর্ক। ফলে পীস টিভি কর্তৃপক্ষের সাথে তিনি সময় দেন। উভয়েই উচ্চ বেতনের চাকরী করেন অনেক দিন যাবৎ। অফিস টাইমের পর তার গাড়ীতে করে বিভিন্ন শহরে আমাকে নিয়ে যেতেন। প্রায় সময় সাজীদ ভাইও থাকতেন। সেই সুবাদে দেখা হল, ১৬৩ তলাবিশিষ্ট বিশ্বের সর্বোচ্চ টাওয়ার বুর্জ খলীফা, বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝর্ণা, দুবাই মল, ইমারত মল, ডলফিন টাওয়ার, শারজাহ শহর ইত্যাদি।

৭ই মার্চ সোমবার। গেলাম জনবহুল শহর দিয়ারাতে। এতদিন মনে হয়েছে দুবাইতে লোকসংখ্যা তেমন নেই। কিন্তু সেখানে গিয়ে মানুষের সন্ধান পেলাম। সাজীদ ভাই আমাকে নিয়ে গেলেন এক আতরের সেন্টারে। আগেই বলে রেখেছিলেন পীস টিভিতে আলোচনা করার জন্য বাংলাদেশ থেকে আহলেহাদীছ শায়খরা এসেছেন। ভিতরে ঢুকেই দেখা ভাই আতীফের সাথে। দেশের বাড়ী তার মুম্বাই। কিন্তু ৩০ বছর যাবৎ সেখানে থাকে পিতা-মাতা ভাই বোনসহ। ঊর্দূতে তার সাথে কথা হল। আমার যাওয়াতে তিনি অত্যন্ত খুশী হলেন। বাংলাদেশের অবস্থা জানতেই জিজ্ঞেস করলেন, ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে কি চেনেন? তার পরিচয় দিতেই তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, তিনি কি এখনো কারারুদ্ধ? বললাম, প্রায় এক বছর যাবৎ বাইরে আছেন আল্লাহর রহমতে। এরপর অনেক কথা। যখন বললাম আহলেহাদীছদের বিশাল তাবলীগী ইজতেমার কথা, তখন তিনি খুশী হয়ে বললেন, বাংলাদেশে এত আহলেহাদীছ আছে? আমার ধারণা সেখানে শুধু বিদ‘আতীদের ইজতেমা হয়? খুশী হয়ে বললেন, আগামী ইজতেমার কথা আমাকে জানাবেন। আমি আপনাদের সাথে শরীক হব। এরপর তার পরিচিত বরিশালের এক ভাইকে পরিচয় করিয়ে দিলেন যে, ইনি ইলিয়াসী তাবলীগের অনুসারী। একটু দাওয়াতী কাজ করুন আপনার ভাষায়। অনুরূপ আরেক ভাইকে ডেকে নিয়ে বললেন, ইনি হলেন, মওদূদীপন্থী জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী আর ইনি হলেন চরমোনাই আক্বীদার মানুষ। একটু দাওয়াত দিন। আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন। আমি সবার সাথে পরিচিত হলাম। বেশ কিছুক্ষণ কথা হল। তারা জানালেন, ভাই আতিফ আমাদেরকে অনেক এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। সঠিক দ্বীনটি প্রায়ই বুঝেছি। আমাদের জন্য দো‘আ করবেন। আমি তাদেরকে মাসিক আত-তাহরীক ও ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পড়ার আহবান জানালাম এবং সাজীদ ভাইয়ের নিকট থেকে সংগ্রহ করার জন্য বললাম।

আমার নিজের কিছু কাজ সেরে ফেললাম। এখন বিদায়ের পালা। আতীফ ভাই প্রথমে সবচেয়ে দামী আতর হাদিয়া দিলেন আমীরে জামা‘আতের জন্য। আমার হাতে একটি দিয়ে রসচ্ছলে বললেন, পসন্দ না হলে আপনার ঘরে শুধু রেখে দিবেন। তবুও আমাদের মনে রাখবেন। অতঃপর আমাদের সকল আলোচককে ১৬ তারিখে দাওয়াত দিলেন। আমাদের নিয়ে হোটেলে একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করবেন এজন্য। আমি সম্ভবপর ওয়াদা দিলাম। অতঃপর আলী রেযা ভাইয়ের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে তার বাড়ীতে গেলাম। মনে পড়ে তার শিশু বাচ্চা তালহার কথা। ফুলের মত ফুটফুটে সুন্দর। রাত ভারী হয়ে গেল। গাড়ীতে করে আমাকে রেখে গেলেন হোটেলে।

সেদিন শুক্রবার। ১১ই মার্চ। সকালে প্রোগ্রাম ছিল না। আলী রেযা ও সাজীদ ভাইয়েরও অফিস বন্ধ। তিনজনে গেলাম আবুধাবীতে। যাওয়ার পথে নানা দৃশ্য তো দেখা হলই। তার মধ্যে ব্যতিক্রম দেখলাম একটি লেক। লেকের পার্শ্বে রয়েছে একটি ফুলের গাছ। এত সুন্দর ও বড় ফুলের গাছ হয় সেটা কখনো ধারণায় ছিল না। সেখান থেকে গেলাম বিশ্বের ৩য় বৃহত্তম শেখ যায়েদ মসজিদ দেখতে। সৌন্দর্যমন্ডিত এই মসজিদের পাথর, নকশা, ঝাড়বাতি, কার্পেট সবই ব্যতিক্রম। পুরো মসজিদে মিলে একটি কার্পেট। তৈরি করতে সময় লেগেছে মাত্র ১০ বছর। তবে মসজিদের উত্তরপার্শ্বে রয়েছে শেখ যায়েদের কবর। পার্শ্বে ছোট্ট ঘর থেকে একজন হাফেয কুরআন পড়ছেন। কবরের কাছে আছে সাউন্ড বক্স। এই তেলাওয়াত ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে চলে। হাফেযদের বেতন অনেক। ছবি তুলতে গেলে মিসরী রক্ষীবাহিনী বাধা দেয়। আমি তার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ি। ছবি তোলা নাজায়েয, কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কবরপূজা জায়েয? একটু সামনে কুরআন পাঠরত হাফেযকেও বললাম। তখন সাথী ভাই আমাকে নিষেধ করলেন। তবে মসজিদটা যে কত সুন্দর তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। দুর্ভাগ্য হল, বাংলাদেশী ভাইয়েরা আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন মর্মে আসছিলেন। কিন্তু গাড়ীতে সমস্যা হওয়ায় মাঝপথে আটকে যান। তাদের সাথে আর দেখা হল না।

১৩ই মার্চ আমাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য আসলেন পীস টিভির ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজিমুদ্দীন। আলী রেযা ভাইয়ের সাথে সরাসরি আসলেন আমার রুমে। ডা. যাকির নায়েকের পক্ষ থেকে আমাদের সালাম জানালেন। তিনি আপনাদের সাথে দেখা করার ইচ্ছা করলেও সঊদী আরব থেকে কাতার এসে সময় বেশী লাগছে। হাফেয আখতার, আমানুল্লাহ মাদানী সবাই মিলে তার সাথে আলোচনা চলল প্রোগ্রাম রেকর্ডের বিভিন্ন দিক নিয়ে। ইতিমধ্যে আসলেন জনাব আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ। আলী রেযা ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন- এই শায়খ আলোচকদের মধ্যে মুরববী ও অনেক সম্মানের অধিকারী। অতঃপর তার সৌজন্যে পার্শ্বে হোটেলে সর্বোন্নত খানার ব্যবস্থা করা হল। খাবার শেষে আমাদের সবাইকে একটি করে দামী ঘড়ি উপহার দিলেন। প্রথমেই খোঁজ করলেন, শায়খ আব্দুর রাযযাককে। কিন্তু তিনি ইতিমধ্যে রুমে চলে গেছেন। অবশেষে আমাকে ধরিয়ে দিলেন তার ছাত্র হিসাবে। তারপর অন্যদেরকে হাতে তুলে দিলেন। পীস টিভির পক্ষ থেকে এটাই ছিল আমাদের জন্য একমাত্র উপহার।

১৫ই মার্চ আমাদের প্রোগ্রাম শেষ। সেদিন প্রোগ্রাম চলছিল জাহাজের উপর। দুবাইয়ের পাশ দিয়ে যে সাগর ও লেক রয়েছে তার মাঝে। সাগরের ঢেউ ও মনোরম দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করাই এর উদ্দেশ্য। কেন যেন এই সৌভাগ্য উস্তাদ-শাগরেদেরই হল। রেকর্ডের পরিচালক ইযহার ফারীদী। ধূমপানে অভ্যস্ত এক বিচিত্র মানুষ। যা ছিল আমাদের জন্য অসহ্যকর। সামনে ধূমপান করার সাহস তার হত না। দুর্গন্ধ পেলে উস্তাদযী কড়া ভাষায় ধমকে দিতেন আর ধূমপান ছাড়ার নছীহত করতেন। অবশেষে ফরীদী ছাহেব অঙ্গীকার করলেন যে, এই অভ্যাস তিনি ত্যাগ করবেন। শেষের দিন প্রোগ্রাম থেকে বিদায়ের মুহূর্তে আমাদেরকে সাক্ষী রেখে নিজের কাছে রক্ষিত সিগারেটের প্যাকেট ডাস্টবিনে ফেলে তিনি উস্তাদযীর কাছে হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করলেন- হে আল্লাহ! আমি আর কোনদিন ধূমপান করব না। আমাকে এই ওয়াদা পালনের তাওফীক দাও! আমীন! মুম্বাই থেকে আসা শেখ আব্দুল মতীন বললেন, এতদিন তিনি কারো নছীহত গ্রহণ করেননি। এটা আপনাদের বড় পাওয়া। ফালিল্লাহিল হামদ।

১৬ই মার্চ পুরো দিন ছুটি পেলাম। আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, হাফেয আখতার ও আমি তো আনন্দে আটখানা। কারণ আমাদের প্রতি খুশি হয়ে তারা দুবাই ঘুরার সুযোগ দিলেন। প্রোগ্রামের হিসাব শেষ। টিভি টকে আমার বিষয় ছিল- (১) শরী‘আত অনুসরণের মূলনীতি (২) যঈফ ও জাল হাদীছের কুপ্রভাব (৩) ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) (৪) ইসলাম ও জাহেলিয়াত (৫) সমাজ সংস্কার (৬) দাওয়াতী কাজে সফলতার স্বরূপ (৭) আমলে ছালেহ (৮) তাকবওয়া ও তার দৃষ্টান্ত (৯) ইসলাম বনাম ফের্কাবন্দী (১০) ইত্তেবায়ে রাসূল (ছাঃ) (১১) তরুণদের প্রতি আহবান (১২) অহির বিধানের অনুসরণ। মোট পর্ব হয়েছে ৯০টি। আর গ্রুপ ডিস্কাশন প্রায় ৮২টি।

ভাই আলী রেযা ও সাজীদ শেষবারের মত সময় দেওয়ার জন্য আমাকে নিয়ে লাইব্রেরী গেলেন। আমার গবেষণার জন্য কোন গ্রন্থ পাই কি-না সেজন্যই বের হওয়া। সেই সাথে আতিফ ভাইয়ের প্রোগ্রামে যোগ দিতে হবে। লাইব্রেরীতে গিয়ে বই দেখছিলাম আর দু’একটি নির্বাচন করছিলাম। শেষে হিসাব করার ইচ্ছা হল। সামনে গিয়ে দেখি বাছাইকৃত বইগুলোর মধ্যে একটি বই ‘আল-ইন্তিছার লিআহলিল হাদীছ’ অর্থাৎ ‘আহলেহাদীছদের বিজয়ের স্বরূপ’ এক ভাই হাতে নিয়ে দেখছেন। আমাকে আরবীতে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি নিবেন? কোন্ দেশ থেকে এসেছেন? বাংলাদেশ থেকে। আপনি কি আহলেহাদীছ? বললাম, অবশ্যই। বুকে জড়িয়ে ধরলেন। সাথে সাথে বললেন, বইগুলো সব আমার পক্ষ থেকে উপহার। আপনি দাম দিবেন না। ইতিমধ্যে পাশ থেকে ভাই আলী রেযা ও সাজীদ আমার যাওয়ার কারণ ও পরিচয় দেন। এরপর সংক্ষেপ কিছু কথা। নাম খালিদ আল ওয়ালীদ। কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্র। আগ্রহের সাথে তার মোবাইল নম্বরটা আমার মোবাইলে দুই বার সেভ করে দিলেন। কারণ যেন ভুলে না যাই। বুঝলাম আহলেহাদীছদের মর্যাদা সর্বত্রই কত বেশী!

এবার দিয়ারার পথে। ভাই আতিফের কাছে অনেকে অপেক্ষা করছেন। আমাদের একটু দেরী হয়ে গেছে। অবশেষে পৌঁছলাম। ইতিমধ্যে অন্যরা আবুধাবী ঘুরে রাত্রে দিয়ারাতে পৌঁছে গেছেন পীস টিভির গাড়ীতে। আমি তাদেরকে নিয়ে আতিফ ভাইয়ের নিকট আসলাম। তবে সবাই নন। আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল, হাফেয আখতার বললেন, আমরা আবুধাবীতে না গিয়ে এখানে আসাই ভাল ছিল। কিন্তু আমরা সময় দিতে পারলাম না। আতীফ ভাইসহ তার আমন্ত্রিত ভাইয়েরা আমাদের সাথে কুশল বিনিময় করলেন। অনেক দূর থেকে এসেছিলেন পাকিস্তানী ভাই ওছমান। তার সাথে আমি বেশ সময় দিলাম। অন্যরা চলে গেলেন। তাদেরকে প্রত্যেকের জন্য উন্নত মানের খানা সাথে দিয়ে দিলেন। আরো হাদিয়া দিলেন আতর। প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পার্কিং পর্যন্ত তাদের বিদায় দিলেন। শেষে আতীফ ভাই বললেন, পৃথিবীতে আর যদি সাক্ষাৎ নাও হয় তবে আল্লাহ যেন আমাদেরকে জান্নাতুল ফেরদাঊসে সাক্ষাৎ করান। চোখে অশ্রু টলমল করছে!

আমার রওনা হতে দেরী হল। ওছমান ভাই আমাকে হোটেলে রেখে আসার কথা জানালেন। রাত্রি প্রায় সাড়ে ১২টা। তখন হোটেলের উদ্দেশ্যে বের হলাম। কিন্তু বিদায় কি সহজ। মাত্র ২/৩ সপ্তাহে কত আপনই না হয়ে গেছেন এই ভাইয়েরা। আলী রেযা ভাইয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারলাম না। কণ্ঠ আড়ষ্ট হয়ে গেল। পাশে বসা সাজীদ ভাই। তারও অবস্থা একই। কিন্তু বিদায় বড় নিষ্ঠুর। কিছুই মানে না। সবকিছুই তার জন্য ছাড়তে হয়। অতঃপর রাত্রি দেড়টার দিকে পৌঁছলাম হোটেলে। এবার ওছমান ভাইকে বিদায় জানিয়ে শেষ করলাম দুবাইয়ের সফর।

পরের দিন ১৭ মার্চ। সকাল ৯টার দিকে বের হলাম। আমরা দুবাইকে বিদায় জানিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে বিমানে চেপে বসলাম। ৪ ঘণ্টার সফর শেষে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামলাম রাত্রি সাড়ে ৮টায়। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে দেখলাম সংগঠনের অনেক ভাই খুশির ঝিলিক নিয়ে আমাদেরকে রিসিভ করার জন্য উপস্থিত। রাজশাহী থেকে গাড়ী নিয়ে গেছেন যুবসংঘ-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুর রাকীব, সোনামণি সংগঠনের কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন, রাজশাহী বিশববিদ্যালয়ের সভাপতি ছোটভাই হাফেয মুকাররম। এছাড়া ঢাকা থেকে এসেছেন আন্দোলনের অর্থ সম্পাদক কাযী হারুন, ঢাকা যেলা যুবসংঘের সাধারণ সম্পাদক ফযলুল হক সহ আরো অনেকে। এদিকে আমীরে জামা‘আত আমাদেরকে বিসিভ করার জন্য অপেক্ষায় আছেন। অবশেষে আমরা পৌঁছলাম রাত পৌনে চারটায়। তখনও তিনি জেগে ছিলেন। গাড়ি থেকে নামতেই বুকে জড়িয়ে ধরলেন। আর বললেন, আমি আল্লাহর কাছে বলেছি, আল্লাহ তুমি সসম্মানে সুস্থ শরীরে পৌঁছে দিও। আমরা মসজিদে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করলাম। তিনি আমাদের বিদায় জানালেন।

আমীরে জামা‘আতের মাধ্যম দিয়ে পীস টিভির সন্ধান পাওয়ায় আমরা তঁঁার কাছে কৃতজ্ঞ। সেই সাথে কৃতজ্ঞতা জানাই ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদেরকে। বাংলা ভাষাভাষীদের নিকট ছহীহ দাওয়াত পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য পীস টিভি কর্তৃপক্ষকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। অনেক দেশীয় ভাই আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। এটা ছিল কেবলই সংগঠনের বরকত। তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ পীস টিভির সাথে জড়িত সকল ভাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন- আমীন!!

-ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি,
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ।

https://www.tawheederdak.com/article_details/724

24/01/2024

🔴 LIVE চলছে..... ওয়াজ মাহফিল
মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ

স্থানঃ পীরগঞ্জ, রংপুর।

03/01/2024

বই বিতরণ চলছে....
মধ্য আটরাই দারুলহাদীছ সালাফিয়্যাহ মাদরাসা, আটরাই, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।

Address

Rajshahi

Telephone

01742869888

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Halal BD posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Halal BD:

Videos

Share

Category