05/03/2023
রাতের কাওরানবাজার। আমার সামনেই প্যান্টশার্ট পরা কেতাদুরস্ত এক ভদ্রলোক এসে মুরগির গিলা-কলিজা-গলা মিলিয়ে কেজিখানেক কিনলো, আর সাথে চেয়ে নিলো ওই ট্রের এক কোনায় রাখা দুইপিস ভালো মাংস। অভিযোগের সুরে বলতে লাগলো যেই টাকা বেতন পাই, তাতে করে এইদামে আস্ত মুরগি কেনা আর সম্ভব না। আগে সোনালি কিনতাম। ব্রয়লার ছুঁয়েও দেখতাম না, সেই ব্রয়লার এখন ২৫০ টাকা কেজি! ভাবতে পারেন?
এই গিলা-কলিজা দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। কিন্তু ঘরে তো ছোট ছেলে আছে, সে তো এসব বুঝেনা। তার তো গলা-গিলা ভালো লাগেনা, খাইতে চায়না এসব। তাই তার জন্য জাস্ট দুইপিস ভালো মাংস নিলাম।
নিশ্চয়ই ঘরে ফিরে ওইগুলো রান্না করার পর ছেলের পাতে
ওই দুইপিছ ভালো মাংস তুলে দিতে দিতে এই অসহায় বাবা বলতে থাকবে ওই মাংস তার ভালো লাগেনা, ছেলেকে হয়ত বুঝাতে থাকবে যে মুরগির গলার মাংসই তার সবচেয়ে প্রিয়!
আপনারা কাউয়ার মত কা কা করে উন্নয়নের পর উন্নয়নের ছবক শুনিয়ে দেশটারে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর বলে হাতেতালি দিতেই পারেন, কিন্তু আপনাদের ওইসব উন্নয়নের
গান শুনতে শুনতে আমার চোখে ভাসতে থাকবে ওই প্যান্টশার্ট পরা লোকটার কথা, যে একজন চাকরিজীবী হয়েও একটা সামান্য ব্রয়লার মুরগি কিনতে না পেরে রাতের বেলায় মুরগির জাস্ট গলা-গিলা কিনে একটা পোটলায় করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বাড়ি যাচ্ছে!
এই দীর্ঘশ্বাসটাই কি আমাদের সাধের স্মার্ট বাংলাদেশ?
- Saiyed Abdullah