20/12/2023
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন-২০২৪
চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীবৃন্দ
First Digital Media / Archive of Patiya
★ OFFICIAL PAGE ★
[email protected]
Patiya, Chittagong
Patiya
4370
Be the first to know and let us send you an email when voiceofpatiya.com posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.
Send a message to voiceofpatiya.com:
Voice of Patiya পটিয়ার প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল মিডিয়া / অনলাইন নিউজ পোর্টাল। পটিয়াকে অনলাইনে সমৃদ্ধ করার সাথে সাথে পটিয়ার গণমানুষের কথা প্রচার করা Voice of Patiya’র একমাত্র লক্ষ্য। পটিয়ার প্রধান প্রধান সমস্যাগুলোর সংবাদ, তথ্য, পটিয়ার সমসাময়িক বিষয়বস্তুসহ দেশ-বিদেশের সংবাদ প্রচারের জন্য Voice of Patiya আছে আপনার পাশে। আমাদের সাথে যুক্ত হতে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবে লাইক, ফলো, কমেন্ট, শেয়ার, সাবস্ক্রাইভ করে একটিভ থাকুন।
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৪৫ সালে পটিয়ায় একটি থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮৪ সালে এটিকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ১৯৩০ এর দশকে এখানে ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী, বিশেষতঃ যুগান্তর দল ও চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন অভিযানের সাথে জড়িত বিপ্লবীরা এখানে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে কালারপোল সংঘর্ষে বিপ্লবী স্বদেশ রায় ইংরেজ সেনাদের গুলিতে নিহত হন। ১৯৩৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে গৈড়লা গ্রামে বিপ্লবী দলের অধিনায়ক সূর্যসেন ও ব্রজেন্দ্রসেন ইংরেজ সেনাদের হাতে ধরা পড়েন। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর দুটি বোমারু বিমান পটিয়া সদরে কয়েকদফা বোমা হামলা চালিয়ে অনেক বেসামরিক লোককে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ৩মে মুজাফফরাবাদ গ্রামে পাকবাহিনী ও রাজাকার-আলবদর সদস্যরা অসংখ্য ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয় এবং নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ১৯২৯ সালে পটিয়া উপজেলার রশিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী আবদুল গফুর হালী। তাঁর লেখা অসংখ্য আঞ্চলিক ও মাইজভান্ডারী গান সারা বাংলাদেশে জনপ্রিয়। আবদুল গফুর হালীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘মেঠো পথের গান’।
ষষ্ঠ শতকে পটিয়াসহ সমগ্র চট্টগ্রাম সমতট রাজ্যভুক্ত হয়। সপ্তম শতক অবধি সমতটের খড়ুগ রাজবংশের রাজাদের দ্বারা শাসিত হয়। অষ্টম শতকে ধর্মপালের রাজত্বকালে তা পাল সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল। নবম শতকে পটিয়াসহ চট্টগ্রাম আবার হরিকেল রাজ্যভুক্ত হয়। দশম শতক থেকে সপ্তদশ শতকের মধ্যবর্তী সময় অর্থাৎ ১৬৬৬ সন পর্যন্ত সাময়িক বিরতি থাকলেও চট্টগ্রাম সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল আরাকান রাজ্যভুক্ত ছিল। বৌদ্ধযুগে চট্টগ্রাম ‘চক্রশালা’ নামে বহির্বিশ্বে পরিচিত ছিল। এ চক্রশালা পটিয়া সদর থেকে দুই মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। আরাকান শাসকরা চক্রশালায় তাদের রাজধানী স্থাপন করে। রাজা মেং ফালোং (সেকান্দার শাহ) এর শাসনকালে (১৫৭১-৯৩ খ্রি.) ‘চক্রশালা’ রাজধানী ছিল যেখানে চট্টগ্রামের দক্ষিণাংশ ও কক্সবাজার তার দখলে ছিল। পটিয়াসহ পুরো চট্টগ্রাম মোগল সাম্রাজ্যভুক্ত হয় সম্রাট আকবরের বাংলা বিজয়ের আরো ৯০ বছর পূর্বে ১৬৬৬ সনে তার প্রপৌত্র সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে। ব্রিটিশ শাসনের আগে এতদঞ্চল আরাকান আমলে ‘চক্রশালা’, মোগল আমলে ‘চক্রশালা পরগণা’ এবং ব্রিটিশ শাসনের প্রথম দিকে ‘চাকলা’ নামেই পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ সরকার দক্ষিণ চট্টগ্রামের কেন্দ্র পটিয়ায় ১৯১০ সালে ৫ জন মুন্সেফ নিয়ে মহকুমা মুন্সেফ কোর্ট স্থাপন করে এবং তদানীন্তন পাঁচ থানার প্রশাসনিক কার্য পরিচালনার জন্য একজন সার্কেল অফিসার (ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট) নিয়োগ করে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে পটিয়ার ও রাউজানের কিছু অংশ নিয়ে রাঙ্গুনিয়া থানা গঠিত হয়। পরবর্তীতে পটিয়াকে ভেঙে ১৮৯৮ সালে আনোয়ারা, ১৯৩০ সালে বোয়ালখালী ও ১৯৭৬ সালে চন্দনাইশ এবং সর্বশেষ ২০০০ সালে পটিয়া উপজেলার অধীনে কর্ণফুলী থানা গঠিত হয় (পরবর্তীতে এসব থানাকে উপজেলাতে উন্নীত করা হয়)। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান আমলে পটিয়া মহকুমা (জেলা) হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পটিয়াকে মহকুমা থেকে উপজেলাতে পরিণত করা হয়।
বাঙালি জাতির ইতিহাসে যে ক’টি বীরত্ব গাঁথা রয়েছে সে সবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বীরত্বগাঁথা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। পৃথিবীর খুব কম জাতি রয়েছে, যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে, স্বাধীনতার জন্য প্রাণদিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে যারা অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁদের সুবাদেই বাঙালি জাতি শত শত বছর পরাধীনতার শৃঙ্খলে থাকার পরও বীরের জাতিতে পরিণত হয়েছিল। এই মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে বীর প্রসবিনী পটিয়া। বৃটিশ শাসনামল হতে শিক্ষা দীক্ষায় অগ্রসর পটিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ছিল অগ্রভাগে। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম তথাকথিত 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার' অন্যতম আসামী বিভূষি ভূষণ চৌধুরী প্রকাশ মানিক চৌধুরী ছিলেন পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ গ্রামের সূর্যসন্তান (এই সূর্য সন্তানের জন্য আমরাও গর্বিত)। ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও সুলতান কুসুমপুরী বিজয়ী হওয়ার পর হতেই মূলত ঐতিহাসিক পটিয়া আন্দোলন সংগ্রামে মুখরিত হয়ে উঠে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের সেই কালো রাতে যখন বর্বর পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নামে ঢাকায় নিরস্ত্র প্রতিরোধের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে, ওই ঘটনা আঁচ করতে পেরে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে প্রথম বিদ্রোহকারী ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালী সেনা ক্যাপ্টেন অলি আহমদ, মেজর জিয়াউর রহমান ও তাঁর সাথীরা ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র দখলে নেন। সন্ধ্যার দিকে সেখান থেকে 'I Major Zia, under the blessing of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, declare myself as provisional head of the state.' বলে মেজর জিয়াউর রহমান নিজেকে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২৬ মার্চ তৎকালীন আওয়ামীগ নেতা এম.এ. হান্নান বঙ্গবন্ধু পক্ষ হতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ২৭ মার্চ পুনরায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষ হতে `I, Major Ziaur Rahman, do here by declare the Independence of Bangladesh, On behalf of our great national leader the supreme commander Sheikh Mujibur Rahman' বলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে পটিয়াবাসী তথা সারা দেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়। (তথ্যসূত্র: কর্ণেল অব. ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম)