28/07/2024
💰প্রসঙ্গ যখন রেমিট্যান্স তাহলে কিছু কথা বলতেই হয় ,
তারিখটা সপ্তাহ তিনেক আগে , ইমার্জেন্সি টিকেট করে একটা জরুরি কাজে দেশে গিয়েছিলাম , দুবাই থেকে টিকেট পাইনি বিধায় আবুধাবি এয়ারপোর্ট হয়েই যেতে হয়েছে ,
১১৬০০০ টাকা দিয়ে টিকেট (নাম মাত্র বিজনেস ক্লাস ) , মাত্র ৫ ঘন্টার যাত্রা , বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট নাম্বার ১২৭ , ছোট্র একটা ফ্লাইট কিন্তু টিকেটের গলা কাটা দাম তারপরও বাংলাদেশ বিমানেই যেতে হয় কারণ আমি বাংলাদেশী , টাকাটা আমার দেশেই যাবে ,
চট্রগ্রাম বিমান বন্দরে পৌঁছে ইমিগ্রেশন প্রসেস শেষ করে বেল্ট থেকে ব্যাগেজ কালেক্ট করে বের হওয়ার সময় লাস্ট স্ক্যানিং এর জন্য যখন ব্যাগগুলি দিলাম তখন শুল্ক বিভাগের এক কর্মকতা আমাকে থামতে বলেন ,
জিজ্ঞেস করলেন ' আপনি কতদিন পর দেশে আসতেছেন ?
বললাম , এক মাস পর
তারা আমার পাসপোর্ট নিলেন , আমার ব্যাগ দুইটি খুলতে বললেন , আমি ব্যাগ দুইটি খুলে তাদের সামনে রাখলাম ,,,
কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তারা কোন প্রকার তল্লাশি করতেছে না দেখে অনুরোধ করলাম ভাই কি চেক করবেন কাইন্ডলি দ্রুত চেক করে আমাকে মুক্তি দিন , আমি খুব টায়ার্ড ,
একজন আমার দিকে কড়া চোখে থাকিয়ে শাসিয়ে বললেন , দাঁড়ায় থাকেন বেশি কথা বললে ব্যাগ দুইটি চিজ করে রেখে দেবো ,,,
প্রায়ই দেড়ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পর একজন ব্যাগ দুইটি উলটপালট করে চেক করে দেখলেন , জিজ্ঞেস করলেন , স্বর্ণ বা মোবাইল আনেন নি ?
বললাম , না ,
জিজ্ঞেস করলেন , তাহলে ঘনঘন দেশে আসতেছেন কেনো ?
আমি কুৎসিত এই প্রশ্নটার উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম , কারণ পতিতালয়ের একজন দালালও এমন প্রশ্ন করবে মনে হয় না , আমার দেশ আমি মাসে কয়বার যাতায়াত করবো তুই জিজ্ঞেস করার কে !
যাইহোক , তারা মোবাইল বা স্বর্ণ কোন কিছুই না পেয়ে কিছুটা হতাশ , বাড়িতে লাগানোর জন্য ছয়টা সিসি ক্যামেরা এবং একটা ডিভিআর ছিলো ল্যাগেজে , এবার তারা এগুলোর উপর সোয়ার হলো ,
বলল , ক্যামেরার উপর শুল্ক পে করতে হবে ,,,
আমি বললাম , আপনার আমাকে লিস্ট দেখান কোথায় লেখা আছে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ক্যামেরার উপর শুল্ক দিতে হবে ?
তাদের একজন পুনরায় একই ধমক দিয়ে বললেন , দশহাজার টাকা পে না করলে ক্যামেরাগুলো চিজ করে রাখবো ,,,
ইতিমধ্যে দুইঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেলো , আমি প্রচন্ড টায়ার্ড অনুভব করছি , এবং নিজের উপরও খুব অভিমান হচ্ছে কেনো এই দুর্ভাগা দেশে জন্ম নিলাম , পৃথিবীর অনেক দেশে ঘুরে বেড়ায় কিন্তু নিজের মাতৃভুমির মতো এমন হয়রানি কখনো শিকার হতে হয়নি
দশহাজার টাকা পে করার সময় বললাম , আপনারা ঘুম থেকে উঠে এসে ডিউটি করতেছেন আর আমরা সারারাত জার্নি করে এসেছি , আপনি মাত্র দশহাজার টাকার জন্য আমাকে দুইঘন্টা হয়রানি করেছেন , আপনার চেয়ে দ্বিগুন বেতনে আপনার মতো ৬০ জন কর্মচারী আমার অধীনে কাজ করে , কাজ কিভাবে করতে হয় আমিও অল্পস্বল্প জানি , দেশটাকে লাঠে তুলে ফেলেছেন ,,,,
সেদিন এরা শুধু আমাকে আটকে রেখেছিলো তা নয় , আরো অনেককেই দীর্ঘক্ষণ হয়রানি করেছে , একজনের কাছ থেকে পেয়েছে একটি OPPO মোবাইল , দাম সম্ভবত ১৬/১৭ হাজার টাকার বেশি হবে না , সেটার উপরও ট্যাক্স প্রদান করতে হবে ৫০০০ টাকা , ভোক্তভোগী লোকটার চেহেরায় অসহাত্বের বর্ণনা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়
মূল প্রসঙ্গে আসি , যারা এখন রেমিট্যান্স যোদ্ধাদেরকে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে পাম্পফট্টি দিচ্ছেন ' দেশের এয়ারপোর্টে প্রতিনিয়ত কি পরিমাণে মানসিক টর্চার করা হয় সেটা অন্য কেউ বুঝতে না পারলেও আপনার মতো একজন প্রবাসীর তো অনুধাবন করার কথা ,,,, প্রবাসীদের পক্ষে আপনার সরকারের কাছে আপনার ভূমিকা কি আগে সেটা একটু ব্যাখ্যা করুন
ব্যক্তিগত ভাবে আমি প্রতি বছরে দেশে কতটাকা রেমিট্যান্স পাটাই তা দেশের ব্যাংকে রেকর্ড আছে , বিনিময়ে কি পেয়েছি " এয়ারপোর্টে হয়রানি এবং গলাকাটা দামের বিমানের টিকেট , রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য বিশেষ কোন সুবিধা রাখা হয়েছে কিনা অন্তত আমার জানা নেই ,,,
দলকানা না হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হোন , আমাদের রেমিট্যান্স এর টাকা মেরে প্রধানমন্ত্রীর পিওন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হতে পারে , বেনজির হাজার হাজার কোটি টাকার ইল্ডিং বিল্ডিং বানাতে পারে , শালা আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশে টাকা পাটাই অথচ এয়ারপোর্টে আমাদের দুই আনা মূল্য নেই ,,,
আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন দলের জন্য দালালি করবেন না , যে জায়গাগুলোতে সমস্যা সেগুলোর সমাধান করতে বলুন ,,, দেশটা আপনার একার না , দেশটা সবার ' কেউ খাবে , কেউ খাবে না , তা হবে না।
✍ Arif Mohi Uddin