K I Asif

K I Asif Alhamdulillah for Everything�

10/01/2025
(গল্প টা পড়ুন নিশ্চয় আপনি কাঁদবেন)বাবার রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ মনে হল একটু বাবার রুম থেকে ঘুরে আসি।অনেকদিন হল ব...
23/09/2023

(গল্প টা পড়ুন নিশ্চয় আপনি কাঁদবেন)

বাবার রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ মনে হল একটু বাবার রুম থেকে ঘুরে আসি।অনেকদিন হল বাবার রুমে যাওয়া হয় না।বিয়ের পর থেকেই বাবার সাথে আগের মত সময় কাটানো হয় না।শুক্রবারে সময় পেলেই বউকে নিয়ে ঘুরতে চলে যায়।বাবা গেছেন কিছু ঔষধ আনতে।আমি বাবার রুমে ঢুকে দেখি রুমটা খুব এলোমেলো।খুব অগোছালো।ঠিক যেমন একটা ছোট্ট বাচ্চার রুম।বাবার বয়স হয়েছে।শরীরটারও দিন দিন অবনতি ঘটছে।আমার সাথে তার অনেকদিন কথাতো দূরে থাক তার চেহারাটাও দেখি না।সারাদিন অফিস করে রাত করে বাসায় আসি।এসে খেয়ে দেয়ে ঘুমায় পড়ি।সকালে উঠে আবার অফিসে চলে যায়।বাবাকে নিয়ে ভাবার সময় আমার নাই।আমি জুইকে ডাক দিলাম।জুই বাবার রুমে এসে বলল,
-কি হয়েছে এতো চিৎকার করছো কেনো??
-বাবার রুমটা এত অপরিষ্কার আর অগোছালো কেনো??
-তো আমি কি করবো??
-কি করবে মানে?তোমাকে না বলেছি বাবার যত্ন নিতে।
-আমি কি প্রতিদিন শুধু ওনাকে নিয়ে পড়ে থাকবো নাকি।যত্তসব।বাড়ির আরো অনেক কাজ আমাকে করতে হয়।
-তাই বলে বাবার যত্ন নিবে না।
-কেনো?ওনাকে সময় মতো খাওয়াচ্ছি।সময় মতো ঔষধ দিচ্ছি এসব কি যত্ন নেওয়া না।
আমি কিছু বলিনি আর।জানি ওকে কিছু বলে লাভ হবে না।ও এমনই।খুব জেদি।ভালোবেসে বিয়ে করেছি।তাই এসব সহ্য করতে হচ্ছে।জুই চলে গেলো রান্নাঘরে।আমি চুপচাপ বাবার ঘর পরিষ্কার করতে লাগলাম।।রুমটা পরিষ্কার করার সময় চোখ পড়লো টেবিলে রাখা খাতাটার উপর।বাবা খাতা দিয়ে কি করছে।কৌতুহল বেড়ে গেল কি আছে তা দেখার জন্য।আমি খাতাটা নিয়ে প্রথম পেইজটা খুললাম।প্রথম পেইজে লেখা আছে আমার ডায়েরি।লেখাটা পড়ে খুব অদ্ভুদ লাগলো।আমি পরের পেইজ খুলতেই দেখি।মায়ের একটা পুরানো ছবি।আর তার নিচে লেখা আছে কলিজা।বাবা মাকে অনেক ভালবাসতো।কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর বাবা খুব পাল্টে গেলেন।মা যখন মারা যায় তখন আমি ইন্টারে পড়তাম।ঐসময় বাবা খুব ভেঙে পড়েছিলেন।আমি আর আপুরা মিলে অনেক কষ্টে বাবাকে সেই কষ্টটা ভুলাতে পেরেছি।আমরা তিন ভাই-বোন।আপুরা বড় আর আমি সবার ছোট।আমার আপুরা মানে ইরা আপু আর জান্নাত আপুর বিয়ে হয়েছে দুইবছর।তারপর থেকে বাবা আর আমি একা থাকি।জুই আর আমার বিয়ে হয়েছে ৬মাস হল।বাবা অনেক আগেই তার চাকরী থেকে রিটায়ার্ড হয়েছেন।আমি পরের পেইজটা উল্টালাম।সেখানে মাকে নিয়ে লেখা অনেক কবিতা আছে।আমি সব পড়ে একটু মুচকি হাসলাম।কয়েক পেইজ উল্টানোর পর লেখা আছে,
-আজ আমার ছোট্ট ছেলেটার বিয়ে।না ছোট্ট না অনেক বড় হয়েছে।সে এখন চাকরি করে।কাব্য এখন দ্বায়িত্ব নিতে শিখেছে।আজ তার বিয়ে।মেয়ে তার পছন্দের।আমি না দেখেই হ্যা করে দিই।আমার ছেলে মেয়ের আশা আমি কোনোদিন অপূর্ণ রাখিনি।তাই তাদের পছন্দ মতো সব করেছি।জুই মা দেখতে খুব মিষ্টি।দোয়া করি তারা যেনো সুখী হয়।
এভাবে কয়েক পেইজ পড়লাম সবগুলোতেই আমাকে নিয়ে লেখা।পরের পেইজ উল্টিয়ে দেখলাম,
-কাব্য এখন খুব ব্যস্ত।নিজের শরীরটাও দিনদিন অবনতি হচ্ছে।কাব্যের সাথে আগের মতো রাতের আকাশ দেখা হয় না।চায়ের দোকানে বসে আর চা খেতে খেতে বাপ-ছেলের আড্ডা দেওয়া হয় না।সারাদিন ঘরে বসে থেকে খুব বিরক্ত লাগে।তাই বউমাকে বলেছিলাম একটা ডায়েরি কিনে দিতে।কিন্তু বউমা আমাকে বলল,
-বাবা এই বয়সে ডায়েরি দিয়ে কি করবেন??
-কিছু না।একটু লিখালিখি করতাম।
-এত টাকা দিয়ে ডায়েরি না কিনে।অল্প দামে কিছু খাতা কিনে লিখলেই তো হয়।আমি কিছু না বলে খাতা কেনার টাকা নিয়ে নিলাম।এখন খুব লজ্জা হয় বউমার কাছ থেকে টাকা খুজতে।গতমাসে ঔষুধের টাকা খুজতে গিয়ে অনেক বকা শুনতে হয়েছিল।বলেছিল,
-এত দামী ঔষুধ না খেয়ে অল্প দামী ঔষুধ খেলেই তো হয়।
আমি সেদিনও কিছু বলিনি।কিছু কিভাবে বলব।কাব্যকে বললে সে ভাববে আমি মিথ্যা বলছি।সে তো আর আমার কথা ভাবে না।সে এখন নিজের ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত।আমি চাই না তার সুন্দর সংসারটাকে নষ্ট করতে।এখন যে ঔষুধগুলো খাচ্ছি সেগুলো খুব সস্তা।তাতেও কষ্ট নাই।ছেলের সাথে আছি এইটাই যথেষ্ট।তবে বউমা আমাকে একটুও সহ্য করতে পারে না।আমি কিছু বললেই সে বিরক্ত হয়।কোমরের ব্যাথাটা বেড়েছে।বউমাকে ডাক্তার দেখাতে যাবো বলে কিছু টাকা চাইতে গেলে বউমা বলে,
-সব ঢং।
তাই আর কিছু বলিনি।বাধ্য হয়ে এই মাসের ঔষুদের টাকাটা বাঁচিয়ে রেখেছি।ডাক্তার দেখাতে যাবো বলে।কালকে বউমা বলেছিল আমি নাকি তাদের সংসারের বোজা।তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজকে ডাক্তার দেখাতে যাবো।সেখান থেকে বাসায় এসে শেষবারের জন্য ছেলের মুখটা দেখে কালকেই বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবো।
আমি আর পড়তে পারছিনা।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।যেই বাবা আমাকে সামান্য কষ্ট কোনোদিন পেতে দেই নিই।সেই বাবা আজ হাজারো কষ্ট ভোগ করছে।জুই এতটাই নিচ।ছিঃ নিজেকে ওর স্বামী বলতেই লজ্জা হচ্ছে।আমি চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।কিছুক্ষণ পর বাবা ফিরে আসলো।এসে আমাকে দেখে বলল,
-বাবা আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
-কি বাবা??
-আমি কালকে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবো।আমাকে কি অফিসে যাওয়ার সময় আশ্রমে নামিয়ে দিবি।
-আচ্ছা বাবা।
কথাটি বলে বাবা চলে গেলো।আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিল না।আমার পাশে জুই ছিল।সে খুশি হয়েছে।আমাকে বলল,
-যাক এতদিনে আপদ বিদায় হবে বলে মনে হচ্ছে।কি বল কাব্য।
আমি কিছু বললাম না।রাতে জুইকে বললাম,
-এই শোনো কালকে আমরা ছুটিতে যাবো কক্সবাজার।তুমি তোমার কাপড় চোপড় প্যাক করে রাখিও।
-সত্যি বলছো তুমি??
-হ্যা সত্যি।
জুই খুশি হয়ে রান্না করতে চলে গেলো।বাবা আমাদের সাথে খাইনা অনেক দিন হল।আজকে আসলো খেতে।জুই আব্বার পছন্দের খাবার বানিয়েছে।বাবাতো কাল চলে যাবে তাই।বাবা নিস্তব্ধে খেয়ে চলে গেলো।তার চোখের কোণে অশ্রুগুলো ঠিকই দেখতে পেরেছিলাম।সকালে রেডি হলাম।গাড়িতে আমি,জুই আর বাবা বসে আছি।প্রথমে গেলাম জুইয়ের বাড়িতে।জুইকে বললাম,
-তোমার ব্যাগটা নাও।আর চল একটু তোমার বাবার সাথে দেখা করে আসি।
-কিন্তু ব্যাগ কেনো??
-আরে চলই না।
আমি জুইয়ের বাসায় গেলাম।বাবাও আসলো।বাবাকে নিয়ে এসেছি।সোফায় বসে আছি।জুইয়ের বাবা-মা আমাদের দেখে বলল,
-কিরে জামাই সাহেব অসময়ে যে??
-জ্বি আপনাদের জিনিষ আপনাদের বুঝিয়ে দিতে এলাম।
-আমাদের জিনিষ মানে??
-আপনাদের মেয়েকে।
পাশ থেকে জুই বলল,
-কি বলছো এসব কাব্য??
-হ্যা ঠিক বলছি।আর শুন তোর মত নিচ মেয়েকে বউ হিসেবে না রেখে।আমি সারাজীবন বউ ছাড়াই থাকবো।আর আমি ডিভোর্সের পেপার পাঠিয়ে দিব।সাথে তোর পাওনা সব টাকাও।
বাবা পাশ থেকে আমাকে থাপ্পড় দিয়ে বলল,
-ছিঃ কাব্য ছিঃ।তোকে আমি এজন্যেই মানুষ করেছি।নিজের বউয়ের সাথে কেউ এভাবে ব্যবহার করে।মাফ করবেন বেয়ান সাহেব।আমি কাব্যকে বুঝিয়ে বলবো সব।
জুইয়ের আব্বু আম্মু কিছু না বুঝে বলল,
-কাব্য বাবা কি হয়েছে খুলে বল??
বাবা হয়তো টের পেয়েছে।আমি বাবাকে বললাম,
-আব্বু তুমি গাড়িতে গিয়ে বস।আমি আসছি।
আব্বু যেতে রাজি না।বাধ্য হয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম,
-তোমাকে যেতে বলেছি যাও।
-আব্বু চলে গেলো।
তারপর জুইয়ের আব্বু বলল,
-জামাই সাহেব কি হয়েছে??আমার মেয়ে কি ভুল করেছে??
-কাব্য আমি কি করেছি??আমি তো তোমাকে অনেক ভালবাসি।
-চুপ কর তুই।তুর মতো মেয়ের মুখে ভালবাসি শুনতেই ঘৃণা লাগে।আর হ্যা আপনাদের মেয়েকে ভুলেও আমার চোখের সামনে যেনো না দেখি।
-আমার মেয়েটা কি করেছে সেটাতো বলো,
-কি করেনি সেটা জিজ্ঞেস করেন??যেই বাবা আমাকে এতটা বছর কষ্ট করে বড় করেছে।নিজে হাজারো কষ্ট সহ্য করে আমাকে মানুষ করেছে।নিজের কষ্টগুলোকে লুকিয়ে আমাদের ভাই-বোনের সুখের জন্য লড়াই করেছে।সেই বাবাকে আপনার মেয়ে আপদ বলে।বাবা শব্দটা মানে কি সেটা আপনার মেয়ে জানেনা।ওকে শিখিয়ে দিবেন।আর হ্যা জুই তুমিও শুনে রাখো,
-আমার বাবা তোমার কাছে আপদ।কিন্তু আমার কাছে সব কিছুর উর্ধে।আমার কাছে সবচেয়ে দামী।সবচেয়ে প্রিয়।
-জুই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-সরি কাব্য আমাকে ক্ষমা করে দাও।
-আমি পারবো না।ক্ষমা করা আমার পক্ষে সম্ভব না।তুমি বাবাকে আপদ মনে করো তাই না।বাবাকে এত কষ্ট দেওয়ার পর কিভাবে ভাবলে আমি তোমাকে মাফ করবো।তোমার জায়গা আমার মনেতো দূরের কথা আমার পায়ের নিচেও না।
আমি চলে আসলাম।গাড়ি স্টার্ট দিলাম।বাবা আমাকে বলল,
-কিরে বউমা কই??
-ও আজকের পর আর আসবে না।বাবা আমাকে মাফ করে দাও।আমি ভুলে গিয়েছি।ভুলে গিয়েছি তোমাকে সময় দিতে।তুমিই আমার কাছে সব।
এখন আমি আর বাবা চায়ের দোকানে বসে বসে চা খাচ্ছি।আর আড্ডা দিচ্ছি।হুমম বাবার চোখে খুশির ঝলক দেখতে পাচ্ছি।অনেকদিন পর বাবা হাসছেন।তার হাসিমাখা মুখটা দেখি না অনেকদিন হল।তাকে হাসতে দেখে মনের মাঝে এক আনন্দের ঝড় বয়ে যেতে লাগলো।বাবা ভালবাসি।অনেক ভালবাসি তোমায়।।।

-------------সমাপ্ত------------

#বাবা🌺

ফোন টিপতে টিপতে কলেজ যাচ্ছিলাম! এমন সময় একটা সুন্দরী আপু এসে বললেন,আমার ফোনে চার্জ নেই আপনার ফোনটা দেন তো-একটু বাসায় কথা...
22/09/2023

ফোন টিপতে টিপতে কলেজ যাচ্ছিলাম!
এমন সময় একটা সুন্দরী আপু এসে বললেন,
আমার ফোনে চার্জ নেই আপনার ফোনটা দেন তো-
একটু বাসায় কথা বলে দিয়ে দিচ্ছি ।
আমি হাসি মুখে ফোনখানা এগিয়ে দিলাম,
ডাটা অফ না করা-টাই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াইছে।
সুন্দরী আপুটা সবে মাত্র নাম্বারের দুইটা সংখ্যা তুলছে তখনি মেসেঞ্জারে তাসনিম মেসেজ আসছে একদম ফোনের স্ক্রিনের সামনে,
#বাবু তুমি খেয়ে নিও। তুমি না খেলে আমার পেটে ভাত হজম হয় না।

সুন্দরী আপুটা মেসেজ দেখে মুচকি হেসে বললেন, প্রেমিকা খুব ভালোবাসে দেখা যাচ্ছে।
একটু পরে আরেকটা আইডি থেকে সানজিদা'র মেসেজ,
জান তুমি তাড়াতাড়ি অনলাইনে আসো আমি তোমাকে মিস করতেছি।
এবার আপুটা চোখ ত্যাড়া করে বললেন,
বাহ দুইজন প্রেমিকা।

৬টা সংখ্যা লিখা শেষ হতেই জান্নাত মেসেজ দিলো,
বাবু আমার দম বন্ধ লাগছে তাড়াতাড়ি এসে চুমু দিয়ে অক্সিজেন দাও।
এই মেসেজ দেখে মন চাইছিল জান্নাতকে ধরে পিডাই,
এত ভালোবাসা দিতে কে বলছে?
ক্যান যে ডাটা অফ করলাম না।
আপুটা এবার রাগি রাগি চেহারা বানিয়ে বললেন, প্রেমিকাদের গোডাউন খুলে বসেছেন।

নাম্বার তুলে কথা বলা শেষ করে ফোনটা হাতে ধরিয়ে বললো, আপনার ফেসবুক #আইডিটা দিয়ে যান।
দেখতে হবে কিভাবে এতো মেয়ে পটাইছেন!
আপুটাকে আমার পেজ+আইডি দিয়ে চলে আসছি,
রাতে দেখি আইডিতে নক দিছে। প্রায় ১০০ টার মতো মেসেজ করার পর,
আপুটা বলতে শুরু করলেন তোমার পেজের গল্প গুলো কিন্তু অনেক ফানি ও মজার.!
আমিও যে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে।
তোমারে ছাড়া নিঃশ্বাস বন্ধ বন্ধ লাগছে..!

#সব মুসিবত কেনো যে আমার উপর এসে পরে,
এর কারণ খুঁজে পাই না..!!😷😑🙃🤦‍♂️

ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানো শেষে চলে আসার সময় বললাম, "তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল, কিছু দিন ধরেই বলতে চাচ্ছি। কিন্তু কিভাবে...
22/09/2023

ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানো শেষে চলে আসার সময় বললাম, "তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল, কিছু দিন ধরেই বলতে চাচ্ছি। কিন্তু কিভাবে যে বলি !"

ছাত্রী বললো, "কি বলবেন, বলেন,
কোন সমস্যা নেই"

আমি বললাম, "না থাক, আরেক দিন বলবো ।"

এরপর থেকে ছাত্রী প্রতিদিন পড়ানো শেষ হলে চলে আসার সময় জিজ্ঞেস করতো, "স্যার
আপনি না আমাকে কি যেনো বলতে
চেয়েছিলেন, আজকে বলেন!"

আমি এখনও উত্তর দেই, "আরেকদিন বলবো ।"

পঞ্চম দিনের মাথায় ছাত্রী জানালো, "স্যার, কালকে দুপুর বেলা পড়তে পারবনা, আমরা বেড়াতে যাব । ওখান থেকে সন্ধার সময় আসবো । সন্ধ্যার পরে পড়বো ।"

আমি বললাম, "আচ্ছা আমি সন্ধ্যার দিকেই আসবো ।"

পরদিন সন্ধ্যার সময় ওদের বাসায় গেলাম, গিয়ে তো আমি অবাক ! বাসা পুরো খালি, বাসায় ছাত্রী ছাড়া কেউ নেই ! আরও অবাক হয়ে লক্ষ্য
করলাম ,যে ছাত্রী সারা বছর সেলোয়ার কামিজ পরে, সে আজকে সুন্দর করে সেজে গুজে শাড়ি পরেছে ! একেবারে কড়া সাজ দিয়েছে ! এমনিতেই
তো মেয়েটা অনেক সুন্দর, সাজার
কারনে আজকে আরও বেশী সুন্দর
লাগছে ।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, "তোমার পরিবারের লোকজন কই ?? তাদের কে দেখছি না কেনো?

লাজুক হেসে ছাত্রী জবাব দিলো, "সন্ধ্যার দিকে বাড়ির সবাই মিলে মামাতো বোনের জন্মদিনে গেছে !
সবার আসতে আসতে রাত ১১ টা বেজে যাবে। আমি বলেছি আমার শরীর খারাপ লাগছে, আমি যেতে পারবো না, মিথ্যে বলে তাদেরকে পাঠিয়ে দিয়েছি !"

আমি বললাম, "আর আমাকে মিথ্যে
বলেছ যে দুপুরে তোমরা বেড়াতে যাবে ! এত মিথ্যে কথা শিখে গেছো ?!"

আমার কথা শুনে ছাত্রী খিল খিল
করে হাঁসতে লাগলো । বললো, "আপনার জন্যই তো এমন করলাম।
আপনি অনেক দিন ধরেই আমাকে কী যেনো একটা বলতে চাইছেন! অথচ লজ্জায় বলতে পারছেন না! আজকে বাসায় কেউ নেই, আজকে বলেন স্যার । কি বলতে চান ???"

আমি বললাম, "আসলে তোমাকে কথাটা কিভাবে যে বলি ! আমার
লজ্জা করছে । কিছু মনে করবে না
তো ?"

ছাত্রী বললো, "আপনার যা খুশি বলতে পারেন। আমার কোনো সমস্যা নেই, আমি কিছুই মনে করবো না । আপনার মনের কথাটা শোনার জন্যই তো আজকে সন্ধ্যার
দিকে আসতে বলেছি !"

আমি বললাম,"আসলে কথাটা হচ্ছে …
না থাক তুমি যদি ভুল কিছু মনে করো !"

ছাত্রী বললো , "প্লীজ স্যার বলেন, আমি কিছুই মনে করবো না ।"

বলেই গভীর দৃষ্টিতে আমার চোখের
দিকে তাকিয়ে রইলো !

আমি বললাম, "মানে কথাটা হচ্ছে
ইদানিং হাতটা খুব টানা টানি যাচ্ছে । তোমাদের এখানে প্রায় তিন মাসের বেতন আটকে আছে
#অনু_গল্প

জিয়া হলের ফিরোজের সম্পর্ক ছিল বঙ্গমাতা হলের এক মেয়ের সাথে। একসময় ওদের প্রেম দেখলে মনে হবে বেস্ট কাপল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড...
22/09/2023

জিয়া হলের ফিরোজের সম্পর্ক ছিল বঙ্গমাতা হলের এক মেয়ের সাথে। একসময় ওদের প্রেম দেখলে মনে হবে বেস্ট কাপল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। ফিরোজের পরিবার‌‌ও জানতো বিষয়টা। তারপর মেয়ে তার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করে‌। এরপর থেকে বঙ্গমাতা হলের সামনে কতশত রাত দাড়িয়ে থাকতো শুধু একটু দেখা করার জন্য হিসেব নাই।

ফিরোজ তার মাকে কথা দিয়েছিলো, ওই মেয়ের জন্য নিজের ক্ষতি করবে না। সেই কথা রাখতে পারে নি।

বেস্ট ফ্রেন্ড হিসেবে নিয়মিত খুঁজ খবর নেয়ার অংশ হিসেবে গত শুক্রবার(১৫-০৯-২০২৩) সকাল ১১ টায় ফোন দেই। জানতে পারি ওদের সম্পর্ক ঠিক করার জন্য ফিরোজের মা, বড় ভাই, ছোট ভাই ক্যাম্পাসে আসছে। মেয়েটা সবার নম্বর ব্লক লিস্টে রেখেছে। আমি ওদের কাছে যেয়ে আমার ফোন থেকে ফোন দেই। কথা না বলেই আমাকে ব্লক করে দিল!

মা ও পরিবার সুদূর গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা এসেও ব্যার্থ হয়ে বাসায় চলে যায়। ফিরোজকেসহ আমি গাড়িতে তুলে দেই। রবিবার ফিরোজ আবার ক্যাম্পাসে আসে। আমরা সারাদিন একসাথে ছিলাম, রাত ২ টা পর্যন্ত মুহসীন হলের ছাদে আড্ডা দিয়েছি। অনেক আলাপ করেছি। অনেক বুঝিয়েছি। ফিরোজের কষ্টের জায়গাটা হলো, বাসায় যেয়ে ফিরোজের মা মেয়েকে ফোন দিয়েছিল অন্য নম্বর দিয়ে। রিসিভ করার পর ফিরোজের মায়ের পরিচয় জানার সাথে সাথেই ফোন কেটে ব্লক দেয়। অথচ অনেক আগের ভিডিওতে দেখেছি ওর মার সাথে কত মুহাব্বতের সাথে কথা বলেছে। ওর নানার খুঁজ খবর নেয়ার পর ওর বাবার কথা জিজ্ঞেস করার সময় বলেছিল, " আর আমার বাবা কেমন আছে?"
সেই মেয়ে কিভাবে এত অপমান করতে পারলো!

ফিরোজ ওর মাকে কথা দিয়ে এসেছিল মেয়ের জন্য নিজের ক্ষতি করবে না। সেই কথা রাখতে পারেনি।

কতভাবে, কতজনের মাধ্যমে মেয়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। একটু দেখা করার জন্য সারারাত বঙ্গমাতা হলের সামনে দাড়িয়ে থাকতো। মেয়ের সাথেও আমাদের পরিচয় ছিল, ওদের প্রেম ভালোবাসা দেখে বেস্ট কাপল মনে হতো।
আহা ওদের প্রেম, বিয়ে...

ফিরোজের মা আমাকে ওদের বাড়ি যেতে বলতো, আজ যাচ্ছি। তবে ফিরোজের লা*শ নিয়ে...

আমি মেয়েদের অনুরোধ করব,কারো হাত ধরে রাখতে না পারলে প্লিজ অভিনয় করে কাউকে মৃ*ত্যুমুখে ঠেলে দিবেন না

সূত্রঃ ফিরোজের ঘনিষ্ট বন্ধু ©

গল্প অভিযোগ। #পর্ব _ 2 আমার ক্ষুধার কথা শুনে মেঘলা বললোঃ "দেখিঝুটা কিছু আছে কি না।"মেঘলার কথাটা শুনে বুকের ভিতরটা মুচড়েউ...
22/09/2023

গল্প অভিযোগ।
#পর্ব _ 2
আমার ক্ষুধার কথা শুনে মেঘলা বললোঃ "দেখি
ঝুটা কিছু আছে কি না।"
মেঘলার কথাটা শুনে বুকের ভিতরটা মুচড়ে
উঠলো। আমি আজ এত অবহেলিত? সব ওই
নুসরাতের জন্য। একটু পর মেঘলা একটা প্লেটে
কিছু ভাত সাথে আলু ভর্তা আর ডাল দিয়ে গেলো।
ক্ষুধার তাড়নায় দেখার সময় ছিলনা কেমন ছিল
খাবারগুলা। তবে খাবার গুলো কেমন টক টক
লাগছিল।মনে হয় নষ্ট খাবার গুলি আমাকে দেওয়া হইয়েছিল। এই ভাবেই চলছে আমার দিন। একদিন রাতে
খাবার খাইতে বসছি এমন সময় আব্বু এলো রুমে।
_রাফি,প্লিজ তুই আমাদের মুক্ত কর। তোর জন্য
এলাকায় যে সম্মান ছিল তা তো অনেক আগেই
চলে গেছে এখন অন্তত ঘরের শান্তি টুকু টা ও কেড়ে নিস না।
রাতে ঘুমানোর সময় বাবার বলা কথাটা চিন্তা করতে
লাগলাম। আসলেই তো! আমি তো শেষ হলাম
নুসরাতের জন্য। সাথে বাবা মায়ের সম্মান ও শেষ
করে দিলাম। এবার তাদের মুক্ত করে দিব।
যেখানে নুসরাত আমায় ছেড়ে অন্যের সাথে
খুব ভালোভাবেই সংসার করছে সেখানে আমি
উল্টো। আমি আর এই বাড়ি তে কাউকে আমার মুখ
দেখাবো না। কিন্তু যাবই বা আর কোথায়?
যেখানেই যাই তবে আমি আমার জীবনের এই
দুই বছরের গল্পটা পালটাতে চাই।
রাতে আব্বু আম্মুর জন্য একটা চিরকুট লিখলাম।
"বাবা আর আম্মু আজ থেকে তোমরা মুক্ত।
তোমাদের অবাধ্য সন্তান নামের কুলাঙ্গারকে
আর দেখতে হবে না। জানি না,আজ থেকে
আমার কোথায় স্থান হবে। তবে মৃত্যুর পর ও
আমার লাশ তোমাদের সামনে আসবে না এই
প্রমিস করছি। জন্মের পর থেকে কতই না
জ্বালিয়েছি তোমাদের। তবে আম্মু তোমার
দুধের ঋণ ছাড়া বাকি সব ঋণ শোধ করে দিব যদি
বেঁচে থাকি।"
মেঘলার জন্যও একটা চিরকুট লিখে আসলাম।
"আসলে তুই না থাকলে আমি জানতে ও পারতাম না
আমি কতটা নিচু স্থানে বাস করতাম এ বাড়িতে। আর
হ্যাঁ আজ থেকে এই নেশাখোরটাকে আর
দেখতে হবে না তোকে। ভালো থাকিস। আর
আব্বু আম্মুকে একটু দেখে রাখিস।"
বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলাম। কিন্তু যাবটা
কোথায় এখন! যাওয়ার মত বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয়
স্বজন ও তো নেই। সেই ভোর থেকে হাঁটা
শুরু করলাম। সন্ধ্যার দিকে প্রচুর ক্ষুধাও লাগছিল।
হাতে একটা ঘড়ি ছিল। নুসরাতের দেওয়া। ভাবলাম এটা
বিক্রি করে কিছু খেয়ে নেই। কিন্তু নুসরাতের
এই স্মৃতিটা কিছুতেই হারাতে চাচ্ছিলাম না। তাই আর কি
না খেয়ে বসে রইলাম। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে
ক্রমশ। আর এদিকে ক্ষুধাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে তার
সাথে৷ তাই আরেকটু হেঁটে মসজিদের অজুখানা
থেকে পানি খেয়ে নিলাম। রাত গভীর হওয়ার
সাথে সাথে ভয় হচ্ছে আমার। আশ্রয় হবে কি
রাতের? ১.০০ দিকে একটা বাড়ির গেট খোলা দেখা
যায়। আমি ভাবলাম রাতটা এখানেই কাটিয়ে দেই ।
সকালে ঘুম ভাঙ্গল একজন মহিলার ডাকে।
_ এই ছেলে এখানে ঘুমিয়ে আছো যে? তুমি
কে আর এখানেই বা ঘুমিয়ে ছিলে কেন।
_ আন্টি আমি আমার নিজের পরিচয় দেওয়ার মত কিছু
নেই। রাত অনেক হয়ে গিয়েছিল। আর থাকার জায়গা
ছিল না। পেটে অনেক ক্ষুধা থাকায় এখানে ঘুমিয়ে
গিয়েছিলাম। সরি আন্টি।
এই বলে আমি হাঁটা শুরু করলাম তখনই পেছন
থেকে ডাক আসলো আবার।
_ এই ছেলে --শোনো??
_ জী আন্টি বলুন।
_তোমায় দেখতে তো অনেক দুর্বল দেখা যাচ্ছে। রাতে খেয়েছো কিছু?
_ না আন্টি। এখন কোনো জায়গা থেকে পানি খেয়ে নিব।
_ পানি খেলে কি আর ক্ষুধা যায়? চলো আমার
সাথে। খেয়ে নিবে।
_ আন্টি রাতের আঁধারে আপনার বাড়িতে থেকেছি
এর জন্য আমায় কথা শুনাননি এতেই আমি কৃতজ্ঞ ।
_ এই বেশি কথা না বলে চলো খেয়ে নিবে।
পেটের ক্ষুধার কাছে শেষ পর্যন্ত আমাকে হার
মানতে হলো। আর কিছু না বলে উনার পিছু পিছু
বাসার ভিতরে ডুকলাম। ভিতরটা বেশ সুন্দর। একটু পর
আমায় খেতে দিল আন্টি। ক্ষুধা অনেক থাকায়
প্লেটের সব খেয়ে আমি আন্টির দিকে
তাকালাম।
_ বসো আমি আরো নিয়ে আসছি।
খাবার খাওয়ার পর আন্টি বললেনঃ- বাবা তুমি এখন
কোথায় যাবে।
_ আন্টি জানি না কোথায় যাব।
_ তুমি কি কাজ করতে পারবা?
_ কেমন কাজ আন্টি?
_ এই ধরো আমাদের বাসার অনেক কাজ ই থাকে।
তুমি কি করতে পারবা?
_ হ্যা পারব আন্টি। আপনি শুধু আমায় খেতে আর
থাকতে দিলেই হবে।
_ পাগল ছেলে। কাজ করলে খাওয়া আর থাকা ছাড়া ও
বেতন দেব ।
_ ঠিক আছে আন্টি। আমি আপনাদের সব কাজ
নিজের পরিবার মনে করে করব। মনে করার কি
আছে।!আজ এখানে ঠাঁই না হলে আমার যে না
খেয়ে মরতে হত। আচ্ছা আন্টি আপনি কি একাই
থাকেন এই বাড়িতে।
_ না,আমার সাথে আমার মেয়ে সোহানা থাকে। ও
নানু বাড়ি গেছে। আগামীকাল আসবে ।
_ আর আঙ্কেল?
_ তোমার আঙ্কেল গত দুই বছর আগে
আমাদের ছেড়ে ওপাড়ে চলে গেছে।
_ সরি আন্টি। আমি না বুঝে আপনাকে দুঃখ দিয়ে
দিলাম।
_ আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার নাম কি?
_ জী আন্টি রাফি।
_ লেখাপড়া করেছো কি?
_ আন্টি গত দুই বছর আগে ইন্টারে পাশ করতে
পারি নাই। আর তারপর লেখা পড়া করা হয়নি।
_ তোমার পরিবার নাই? ওরা কিছু বলে নাই?
_ প্লিজ আন্টি পরিবারের কথা বলবেন না। আমি
আমার ভংঙ্কর অতীত ভুলে যেতে চাই ।
_ ওকে তোমার কাজ হল আমাদের বাড়ীর বাগানটা
দেখে রাখা আর আমাদের সুবিধা অসুবিধা পাশে থাকা।
আর তুমি চাইলে স্টাডি ও নতুন করে শুরু করতে
পারো। এখন বিশ্রাম নাও। ওইটা তোমার রুম।
রুমে এসে ভাবতে লাগলাম। নিজের পরিবার রাস্তায়
ছুঁড়ে মারলো। আর অচেনা কেউ বলা যায় আমার
জীবন ফিরিয়ে দিলো। বড় আজব এই দুনিয়া!
পরের দিন বাগানটা ঘুড়ে দেখলাম। একটা গোলাপ
খুবই ভালো লাগলো। তাই গোলাপটা ছিঁড়ে নিলাম।
যেই ছিঁড়লাম ঠিক তখনই পেছন থেকে একটা
মেয়ের গলার শব্দ শুনতে পেলাম।
_এই ছেলে এখান থেকে ফুল ছেঁড়ার সাহস হয় কি করে তোমার?

#চলবে_

(১৮+ এলার্ট, প্রাপ্তবয়স্ক মনস্কদের জন্য)  আমি_দূর_হতে_তোমারে_দেখেছি #পর্ব_০২বউভাতের অনুষ্ঠানে মানুষ আসা শুরু করেছে কিন্ত...
22/09/2023

(১৮+ এলার্ট, প্রাপ্তবয়স্ক মনস্কদের জন্য) আমি_দূর_হতে_তোমারে_দেখেছি
#পর্ব_০২
বউভাতের অনুষ্ঠানে মানুষ আসা শুরু করেছে কিন্তু নতুন বউ এখনো ঘুম থেকে উঠেনি। সকালে ইহান উঠে চলে যাওয়ার পরপরই দরজা লক করে আবার শুয়ে পড়েছে রায়া। রাতের শারীরিক অত্যা**চারের রেশ এখনো কাটেনি৷ এসবের প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত যেন তার শান্তি নেই। সকাল দশটা থেকে ইহানের মা ইরিনা বেগম এবং বোন এশা ডেকেই যাচ্ছে কিছুক্ষণ পরপর কিন্তু রায়া কিছুতেই দরজা খুলছে না। বারোটার দিকে আর কোন উপায় না পেয়ে ইরিনা বেগম ছেলেকে কল দেন। ইহান সকাল থেকে কাজে ব্যস্ত। নিজের বিয়ের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাধেই এসে পড়েছে। মায়ের ফোন পেয়ে একটু ফাঁকা জায়গায় বেরিয়ে আসে ইহান।

" হ্যাঁ আম্মি বলো।"

" রায়া এখনো দরজা খোলেনি। পার্লার থেকে মেয়েরা এসে এগারোটা থেকে অপেক্ষা করছে। মানুষ আসা শুরু করেছে, বাড়ির এই অবস্থা দেখলে মান-সম্মানের বাকিটুকুও আর থাকবে না ইহান।"

" আমি আসছি আম্মি।"

ফোন কেটেই ইহান বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে৷ অনুষ্ঠান হলেও বাড়ির ভেতরে কোন হৈচৈ হট্টগোল নেই। সবাই বাহিরের দিকটাতেই আছে। ইহান বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই এশার সাথে দেখা হয়ে যায়। ইহানকেই ডাকতে যাচ্ছিল সে। ভাইকে দেখে আর এগোয় না। ইহান হাটতে হাটতেই বলে, " রায়া দরজা খোলেনি এখনও?"

" না। ভেতরে গান চলছে হয়তো আমাদের কারো কথা, ডাক ভেতরে পৌঁছাচ্ছে না। "

" আচ্ছা তুই মাকে বল রায়া এখনই দরজা খুলবে,আধাঘণ্টার মধ্যেই যেন রুমে পার্লারের মেয়েদের পাঠিয়ে দেয়।"

এশা সম্মতিসূচক মাথা নাড়িয়ে চলে যায়। ইহান নিজের রুমের দরজার সামনে গিয়ে দেখে দরজা তখনো ভেতর থেকে আটকানো। পকেট থেকে চাবিটা বের করে দরজা আনলক করে ভেতরে প্রবেশ করে সাথে সাথে আবার দরজা বন্ধ করে দেয় ইহান। রায়া খাটে হেলান দিয়ে বসেছিল। ইহানকে দেখে রীতিমতো থতমত খেয়ে যায় সে। রায়ার মুখের অবস্থা দেখে ইহান বাঁকাহেসে বলে, " কী ভেবেছিলি সারাটাদিন সবাই বাহিরে থেকে তোকে ডাকবে আর তুই এভাবেই বসে মজা দেখবি বড়কথা আমার সম্মান নষ্ট করবি? এটা আমি কী করে হতে দিই বল তো জান? ইহান শেখ-এর মান-সম্মান তোর হাইটের ডাবল উঁচুতে আছে লাফিয়ে লাফিয়েও ছুঁতে পারবি না। এখন জিদ না করে যা ফ্রেশ হয়ে আয়, বউ সাজতে হবে তো আবার।"

" আমি ফ্রেশ ও হব না, সাজবও না, এখান থেকে উঠবই না।"

" শরীরে এনার্জি নেই? আদর লাগবে? আগে বলবি না? " বলেই ইহান খাটের দিকে এগিয়ে যায়।
রায়া এবার নড়েচড়ে বসে। খাটের অন্যপাশে চলে যায় সে। রায়া উচ্চস্বরে বলে ওঠে, " একদম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। একদম ছোঁবেন না আমাকে।"

ইহান রায়ার পা ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে চুলের খোপা খুলে কপাল থেকে গলা পর্যন্ত আঙ্গুল বয়ে নিয়ে আসতেই রায়া ইহানের হাত খপ করে ধরে ফেলে। ইহানের দিকে কড়া মেজাজে তাকিয়ে বলে, " বলেছি না আমাকে স্পর্শ করবেন না? অনিষ্ট করে ফেলব কিন্তু, ধ্বং*স করে দেব সবকিছু।"

ইহান হাসতে হাসতে বলে, " আমি তো ধ্ব*ংশ হতেই বিয়ে করেছি তোকে। ইহান শেখ-এর বউ প্রলয়ঙ্কারী না হলে কি চলে? এখন বলুন ম্যাম এমনি এমনি ফ্রেশ হতে যাবেন নাকি এনার্জি লাগবে? হাফডোজে চলবে নাকি ফুউউল লাগবে?"

" আমি কিছুতেই রেডি হব না। "

ইহান রায়ার কোমর জড়িয়ে ধরতেই রায়া চোখ-মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়। ইহান রায়ার পেটে হাত বুলিয়ে গলায় মুখ গুজে দিতেই রায়া কেঁপে ওঠে। ধাক্কা দিয়ে ইহানকে সরিয়ে দেয় সে। অসহায় চোখে ইহানের দিকে তাকায় রায়া।

" কেন করছেন এমন? আমি সত্যিই শাওনকে ভালোবাসি। ওর জায়গায় আমি কাউকে ভাবতে পারব না। রাজনৈতিক রেশারেশির কারণে আমি কেন আমার ভালোবাসাকে বলি দেব? ও কালকে আমাকে নিতে আসতো, ও আমাকে অনেক ভা..."

রায়াকে কথা শেষ করতে দেয় না ইহান। রায়ার ঠোঁটে তার রাজত্ব চলছে। রায়া নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে এদিকে ইহান আরও শক্ত করে রায়ার হাত চেপে ধরেছে। রায়ার ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট ছোয়াতে ছোয়াতে রায়ার গলায় নেমে যায় ইহান। রায়াও তার শক্তি হারাতে চলেছে। রায়ার কোমর ধরে টেনে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসে ইহান। ইহানের এলোমেলো আচরণে ভয় পেয়ে যায় রায়া। হঠাৎ বলে ওঠে, " আমি তৈরি হয়ে নিচ্ছি, ছা-ড়ু- ন প্লি-জ।"
ইহান গলা ছেড়ে আবার ঠোঁটে হা*না দেয়। রায়া শুধু চোখ বন্ধ করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কিছুক্ষণ পর ইহান নিজেই রায়াকে ছেড়ে দেয়। বাহুতে ঠোঁট মুছে বলে, " ভালোবাসার মানুষের মুখে অন্যকারোর জন্য ভালোবাসার কথা শোনা যায় না। যতবার তুই ওই ছেলের কথা বলবি ততবার আমি এভাবেই তোর মুখ বন্ধ করে দেব। "

" ছয়মাস ধরে রিলেশনে গেছি আমি। এর আগে কোথায় ছিলেন আপনি? যখন আমি কারো সাথে নিজেকে ভালো রাখতে শিখেছি তখন আপনি আপনার ভালোবাসার কথা বলছেন? যাকে ভালোবাসি তাকে ছেড়ে এখন সোজা অন্যকাউকে বিয়ে করতে হয়েছে আমাকে। পৃথিবীর সব জোর জবরদস্তি শুধু আমার ওপর।"

" ক্লাস নাইনে পড়তি তুই, তখন থেকে তোর প্রতি আমার দূর্বলতা। আমি নিশ্চয়ই তখন তোর মন নিয়ে খেলতাম না? তোর বয়স কম ছিল সেসময়ে যাকে তাকে ভালো লাগে। তোর কি মনে হয় পাশাপাশি বাড়িতে থেকে প্রেম করলে শরীর মানতো? সামলাতে পারতি আমাকে? সবকিছু তছনছ হয়ে যেত রায়া। সম্মান হারাতি, আবেগ, মায়া, ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস সব চলে যেত। আমাকেও ভালোবাসতে পারতি না তুই। কত কষ্টে নিজেকে তোর থেকে আর ভালোবাসার অনিষ্ট থেকে দূরে রেখেছি সেটা শুধু আমি জানি। যখন সময় হলো কাছে পাওয়ার, অপেক্ষা করলাম ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ না করে কয়েক বছর আর সে কি না অন্যকাউকে ভালোবাসে? "

রায়া কান্না জড়ানো গলায় বলে, " খুব বেশি সময় নিয়ে ফেলেছেন আপনি। আমি আপনার কাছে নিজের ইচ্ছেতে কখনো ফিরতে পারব না। আমি শাওনকে ভালোবাসি, শাওনকেই ভালোবাসব। চাইছেন তো বউ সাজি? আপনার সম্মান আজ আমি রাখছি, কে সাজাবে পাঠিয়ে দেন আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।"

চেয়ারের ওপর রাখা তোয়ালে নিয়ে ইহানের সামনে থেকে চলে যায় রায়া। কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে তিনজন মেয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে। রায়া মুচকি হেসে তাদের কাছে গিয়ে বসে।

দুইটার দিকে রায়াকে আসনে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই দাঁড়িয়ে বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের সাথে কথা বলছে ইহান। রায়া চারদিকে খেয়াল করে দেখে নিজের জায়গায় বসে পড়ে। সবাই এসে ইহানের পাশাপাশি রায়ার সাথেও দেখা করে কথা বলছে।

ইহান পিছনের দিকে তাকাতেই রায়াকে দেখতে পায়। এতগুলো মানুষের মাঝেই মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে আছে সে। একজনের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল সে তার সাথে কথা শেষ না করেই রায়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।

" আমার হৃদয়হ*রণকারী তুই।"

পাশে থেকে হঠাৎ কথা বলায় বুঝতে পারে না রায়া। ইহানের দিকে বাঁকা হয়ে জিজ্ঞেস করে, " কিছু বললেন?"

" প্রলয়ঙ্কারী তুই, আমার হৃদয়ে প্রলয় ঘটিয়েছিস। হৃদয় হর*ণ করেছিস।"

" আপনার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক না। এসব অন্যকাউকে বলুন কাজে দিবে।"

" তোর সাথেই আমার প্রেমের সম্পর্ক, ভালোবাসার সম্পর্ক, সব ধরণের সম্পর্ক। "

" খুব তাড়াতাড়ি আমি শাও...."

রায়াকে থামিয়ে দিয়ে বলে, " এখন এত মানুষের মাঝে লিপকিস নিতে পারবি? আমার কিন্তু কোন সমস্যা নেই বেইব।"

দমে যায় রায়া। আর কিছু বলার সাহস করে না। এই লোকের ওপর বিশ্বাস নেই তার। যখন-তখন, যেখানে-সেখানে যা-তা করে ফেলতে পারে৷ রায়া ঘুরে অন্যদিকে তাকায়।

সবার সাথে দেখা সাক্ষাত করে অনুষ্ঠান শেষ করে নিজের রুমে ফিরতে ফিরতে রাত আটটা। রায়া রুমে আসার সাথে সাথে এশা এসে দরজায় নক করে। রায়া শাড়ি খুলতে গিয়ে আবার দরজার কাছে এসে এশাকে জিজ্ঞেস করে, " কী হয়েছে?"

" তুমি তো কিছু খাও নি তাই কাকি খাবার পাঠিয়েছে তোমার জন্য। নিয়ে আসব?"

" তোর কাকিকে বলে দে খাবারের সাথে কয়েক ফোঁটা বি*ষ যেন দিয়ে দেয়।"

" কী বলছ এসব? তুমি মাথা ঠান্ডা করো আপু দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুমি তো জানই ভাইয়া একটু রাগী কিন্তু খুব ভালো মানুষ। "

" রুমে আসবি? আমি চেঞ্জ করব, ফ্রেশ হব। এত মেকাপ দিয়েছে! মুখ ভুলকাচ্ছে।"

" না, তুমি তাহলে চেঞ্জ করো। "

" ঠিক আছে যা। কেউ ডাকলে বলবি আমি ব্যস্ত আছি।"

এশা সেখান থেকে চলে যেতেই রায়া দরজা আটকাবে এমন সময় ইহান এসে যায়। দরজা থেকেই রায়ার হাত শক্ত করে ধরে ভেতরে নিয়ে যায় ইহান। হাত শক্ত করে ধরায় রায়া ব্যথায় চিৎকার দিয়ে ওঠে। রুমের মাঝে এসে হাত ছেড়ে দেয় ইহান। রায়া ইহানের দিকে একপলক তাকাতেই খেয়াল করে ইহানের চোখ মুখ শক্ত করে আছে৷ নিশ্চয়ই কোন বিষয় নিয়ে রেগে আছে। রায়া মুচকি হাসে, করেছে তো অনেককিছুই কিন্তু কোনটার জন্য রেগে আছে কে জানে!
ইহান তাড়া পায়ে হেটে দরজাটা দ্রুম করে আটকে দেয়। ইহান এবার রায়ার সামনে এসে দাঁড়ায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে, " আমি পুরুষ মানুষ নই? কাউকে কিছু বললে ভেবে বলতে পারিস না? পুরুষ হতে হলে দম থাকতে হয়, ওটা আমার অনেক বেশিই আছে। আরও প্রমাণ চাই নাকি বিশ্বাস করতে?"

#চলবে........

বেশি বেশি লাইক কমেন্ট করতে ভুলবেন না কেউ 🖤🖤

যারা পড়ছেন তারা পেইজে ফলো দিয়ে ফেবারিট করে রাখবেন যেন পরবর্তী পর্ব প্রথমেই পেয়ে যান।

#সবার_আগে_নতুন_গল্প_পেতে_আইডিতে_ফলো_করুন

Address

Baushi, Barhatta
Netrokona
2440

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when K I Asif posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share