21/04/2023
# # #জীবনের অনুভূতিগুলো খুব সুন্দর আবার অনেক কঠিক সাথে জটিলতাও কম না।
# # # # # # হঠাৎ ইফতার খুলতে বসে,, আমি ট্যাব থেকে ওযু করে আসতেই দেখি ভাবি আর বাবা মায়ার চাহনি নিয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে তাদের দিকে আমি তাকাতেই তাদের চোখে টবটব করে চোখের পানি পড়ছে। শেষমেস বাবা আর ভাবির মায়ের কথা মনে পড়ে গেল,,, ভাবি বাবা হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলো বলতে লাগল একটা বছর পার হয়ে গেল তোমার মাকে হারিয়েছি,, তোমার মা বিহীন ইফতার,,, সাথে তো ভাবির কান্নায় থামছে না । বাবা বলতে লাগলো আল্লাহ আমার ছেলের হায়াত তুমি বাড়িয়ে দাও আমি তো সবই দেখলাম বুঝলাম,, আমার হায়াত আমার ছেলেকে দাও।
আসলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ বাবা-মা। তাদের সমান কেউ হবে না।
# # # #আমার বয়স ছোট (২৩)হতে পারে কিন্তুু কষ্টটা জীবনের সীমাহীন
স্টুডেন্ট হিসেবে কখনোই খারাপ ছিলাম না। যখন পড়ালেখা আরো তীক্ষ্ণ হলাম তখন ক্লাস ফাইভ এ। শুরু হয়ে গেল আমার জীবনের কষ্ট হঠাৎ মায়ের পেট ব্যাথা,, অনেক ডক্টর দেখালাম কাজ হলো না। শেষমেস মায়ের ধরা পড়ল ডায়াবেটিস 😪😪।
# # # #ডায়াবেটিস একটা বছর হলোও না,, মায়ের চোখের দৃষ্টি কমতে লাগলো শুরু হয়ে গেল আমাদের ফ্যামিলির কষ্ট।ভাইয়া তখন বাইরে। শুরু হলো বাবার আর আমার কষ্ট
সেভেন এ ওঠলাম,, সেভেন না শেষ করতেই মায়ের ২ চোখের দৃষ্টি ৯০% শেষ😪😪।
# # #তারপর বাবা ছেলে মিলে ফ্যামিলির পুরো কাজ। হয়ত কোন কোন দিন প্রাইভেট বা স্কুল দেরি হয়ে যায় তখন বিভিন্ন অযৌক্তিক কথা বলে বেঁচে যেতাম। লজ্জায় বলতে পারতাম না স্যার বাড়ির কাজ করতে দেরি হয়ে গেছে। আপু দের কি বলবো ওনারাও আর কিভাবে আসবে প্রতিদিন ওনাদের সংসার ছেড়ে। বাস শুরু হয়ে গেল একটার পর একটা পরিক্ষা 😪😪।
# # #আলহামদুলিল্লাহ জে এস সি এক্সাম দিলাম,, ভালো ফলাফল আসলো। তারপর ক্লাস নাইন এ ওঠলাম,,ভালোই চলছিলো,,মাকে ডক্টর দেখাতে দেখাতে শেষমেষ বলল (ক্লাস নাইন এর শেষ দিক) ৬ টা চোখের অপারেশন করা লাগবে,, বাস পরিবারের সবার মাথায় হাত। কিন্তুু তখন আমি ধৈর্য হারা হয়নি। কোথায় কি করতে হবে মাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। এভাবে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে শেষমেশ আমার চলে আসলো (এস এস সি) পরীক্ষা সাথে মায়েরও শেষ অপারেশন।
# # # #এস এস সি এক্সাম দেওয়া শুরু করলাম ,, বাসা থেকে কয়েকটা দিলাম আর বাকিগুলো দিলাম মেডিকেল থেকে।
তবুও আমি ধৈর্য হারা হয়নি আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ এস এস সি রেজাল্ট ভালোই আসলো সাথে মায়েরও চোখের দৃষ্টি পুরোপুরিভাবে ফিরে পেল। তখন মনে হল একটা ধাপে যাক সার্থক হলাম।
# # # #কলেজে ভর্তি হবার জন্য আবেদন শুরু হলো। বড় আপা বলল বাইরে পাঠিয়ে দিব কিন্তুু ভাইয়া বলল আপা বাসায় তো কেউ নাই তখন আব্বা আর মার কি হবে!???থাক চাঁপাইতেই ভর্তি করো। হয়ে গেলাম নাবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে ভর্তি। বেশ চলছিলো সুখি পরিবার,,, কিন্তুু এ সুখ আর বেশি দিন টিকে রইল না ৫-৬ মাস যেতেই শুরু হয়ে গেল আবার অশান্তি 😪😪
# # #২০১৭ শেষ দিকে বড় আপার বিশাল বড় অসুখ ধরা পরল (দুইটা কিডনি ড্যামেজ)।মাথায় যেন বিশাল বড় চাপ চলে আসলো,, চলে গেলাম রাজশাহী,, শুরু হয়ে গেল রাজশাহীতে পড়ালেখা আর বড় আপার খেদমত। তারপর শুরু হলো ডায়ালাইসিস। এটা যে কি কষ্ট ছিল বলে প্রকাশ করা যাবে,,, কারন আপার কষ্ট গুলো খুব কাছে থেকে দেখেছিলাম। সেই রকম পড়াই আর মন বসতো না। এভাবে চলতে থাকে আমার আর মেজো আপার জীবন যুদ্ধ তবুও যেন ধৈর্য হারা হয়নি বরং সবাইকে বুঝিয়ে আগলে রেখেছিলাম।
# # #এর মধ্যে একজনের কথা বলেই নয় ২০১৬ সালের শেষ দিকে আমার জীবনে একজন আসে সে এখনও আছে। সে আপা রে এমন ভাবে বুঝাতো বা হাসাতো মনে হতো ওনি সুস্থ মানুষ। এভাবেই মেডিকেল টা হয়ে পড়ল মনে হয় আমাদের বসতবাড়ি। কিন্তুু দেখতে দেখতে আমার ২০১৮ সালে( এইচ এস সি) এক্সাম চলে আসলো।
# # # #এই দিকে বড় আপার শরীর ক্রমগতভাবে খারাপ হতে থাকে। শেষমেস আমার রসায়ন পরিক্ষার মাঝে আপাকে হারায়।তো পরীক্ষা দিতে যেতাম না কিন্তু দুলাভাই বলল তোর আপার স্বপ্ন পূরণ হবে না পরীক্ষাটা দিয়ে আয়। কোন রকম চোখ ভর্তি পানি নিয়ে পাস করার সমান লিখে চলে আসলাম। সেদিন মনে হয়েছিল জীবনটা আমার কোথায় এত পরিশ্রম আমার আর মেজো আপার কোথায় গেল??? ভেঙে পড়েছিলাম অনেক টাই। এর মাঝে ভাইয়ার বিশাল বড় একটা কাহিনী ছিল সেটাও আমরা ট্রাভেলস করেছি।আসতে আসতে সবাই একটু স্বাভাবিক হলো।
# # # #এবার আমার এইচ এস সি পরিক্ষার রেজান্ট দিলো,,, রেজাল্ট দেখে নিজের রেজাল্ট নিজেই বিশ্বাস করতে পারিনি এতটাই খারাপ হয়েছিল।সাথে সমাজ নামক মানুষের অনেক আজে বাজে মন্তব্য তবুও কারো কথায় কান দি নাই এগিয়ে গেছি নিজের গতিতে। তবুও আলহামদুলিল্লাহ ওই রেজাল্ট নিয়ে ২ জায়গায় পাবলিক এ চান্স হয়ে যায়।
# # # # #২০১৯ সালে আবার পরিক্ষা দিলাম কিন্তুু মেডিকেল এ হলো না।। শেষমেস ইউনিভার্সিটি নামক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এ চলতে থাকলো আমার জীবন।
# # # # # #২০২০ সালে শেষের দিকে করোনার সাথে সাথে আমার মরণব্যাধি ক্যান্সার এই রোগ ধরা পড়ল। তবুও কখনোও ধৈর্য হারা হয়নি। আল্লাহকে বলতাম এটাই আমার অনেক সুখ। কিন্তুু দেখতে দেখতে ৩ বছর হয়ে গেল এ জীবন টাভেলস করতে করতে 😪😪😪😪।
#৳ # #এর মাঝে ২০২২ সালে মা মারা গেল কিন্তুু এখন অধৈর্য হয়ে পড়ছি।কেন জানি আর ধৈর্য ধারণ করতে পারছি না।
# # #আমার জীবনে এরকম দিন আসবে কখনো ভাবি নি আল্লাহ। মানুষের কাছে হাত পাতা কত যে কষ্ট,,লজ্জা নিকৃষ্ট এর কাজ,,,, না হলে মনে হয় বুঝতাম না। আল্লাহ আমায় মাপ করো। বড্ড ক্লান্ত হাপিয়ে পড়েছি। আরো অনেক কিছু লিখার ছিলো কিন্তুু চোখ অন্য কথা বলছে।
আল্লাহ হাফেজ