19/06/2023
শিবু
দোয়াত নিয়ে ল্যাম্পের উষ্ণ আলোয় লেখালেখি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি। এমন এক প্রশান্তির পরিবেশে বেশ ভালো একটা সময় পার করা যাবে।উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা সদ্য শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের মূলত কোনো গুরুত্বপূর্ণ করণীয় থাকে না। তাই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার জন্য একা রাজশাহীতে এসেছি বাড়িতে কাউকে না জানিয়েই। আসার সময় বাবার ছোট বাক্স থেকে বেশ কিছু টাকা আর গল্পের বই নিয়ে এসেছি। সাথে মুঠো ভর্তি কিছু কলম। এখানের বেশ পুরনো এক দোতলা বাঙলো-তে উঠেছি। বাড়িতে কেউ থাকেন না। বাড়ির দায়িত্বে রয়েছেন দেখভাল করার জন্য একজন মাঝামাঝি বয়স্ক লোক। লোকটি ক্ষত্রিয় বংশের হলেও তিনি এখন নিঃস্ব। পরিবারের কেউ এখানে থাকেন না বলেই জানিয়েছেন। স্ত্রী সন্তানেরা নাকি কোন এক সঙ্গত কারণে মারা গিয়েছে, অকাল মৃত্যু যাকে বলে। বাড়িটি বেশ নিস্তব্ধ ও জনশূন্য। চারিদিকে রাত হলেই ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুরু হয়ে যায়, দিনে গাছপালার জন্য চারিদিক থাকে অন্ধকার। বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে যিনি আছেন তার নাম শিবু সরকার। তিনি আমার থাকা খাওয়ার জন্য বেশ ভালোই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমার থেকে বয়সে বেশ বড় হলেও আমাকে তিনি বাবু বলে ডাকেন, এর কারণ অনুযায়ী হয়তো আমার পোশাক-আশাক, রীতি-নীতি, আচার-আচরণ বা পিতৃপরিচয়। নিজের থেকেও বড় কেউ বাবু বলে ডাকলে সেটা নিজের কাছেও ভালো লাগবে না তাই তাকে বারণ করতে বলাতে সে বলেন,"কি যে বলেন বাবু। আপনি আমাগের এইখানে আইসেন মেহমান হিসাবে। অতিথি নারায়ণের আরেক রূপ। আপনারে ন্যায্য মর্যাদা যত্ন আক্ষেপ না করলে যে আমার মহাপাপ। আমি অশিক্ষিত মানুষ এইখানে আছি পেটে দুই বেলা ভাত দেওনের লাইগা। আপনি সৃষ্টিকর্তার কৃপায় একদিন অনেক বড় শিক্ষিত ব্যক্তি হইবেন, মানুষের মতন মানুষ হইবেন। আপনারে কি তুই কইরা বলা যায়? আমার আর কপাল, ছিল দুই জমজ কন্যা। বেশ টুকটুকে ছিল ওরা। ওগের মাও ছিল বেশ সুন্দর। খুব চঞ্চল দুই বোন ছিল ওরা। ওরা দুই বোন এক লগে থাকতো, খেলতো আর খালি আমারে জ্বালাইতো।ওগের সাজা গুজার বেশ বায়না ছিল। হাঁট বারের দিন আইলেই হাঁট থেইকা লিপস্টিক, কাজল, চুরি, আলতা-সোনো না নিয়া আইলে ওগের মুখ হয়া থাকতো বেজার গম্ভীর। খাওয়া দাওয়া ছাইড়া দিত। ওগের মারও ছিল সাজা গোজায় বেশ পারদর্শী। আমার মেয়ে দুইজনই সারাদিন ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়া চোখে কাজল দিয়া কপালে টিপ দিয়া সারাদিন ঘুইরা বেড়াইতো। ওগের মা ওগের ফিতা দিয়া চুল বাইন্ধা দিত। কি যে দারুন লাগতো বাবু! আমার টুকটুকে দুইটা মেয়ে ওগের বায়না পূরণ করব না তো আর কাদের করব কন? তাই ওগো সব বায়না পূরণ করতে আমি মরিয়া হইয়া পড়তাম কিন্তু.."
শিবু কাকা থামলেন, তার চোখ ভিজে উঠেছে। দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস নিয়ে থেমে যান প্রতিবার-ই। পুরো কথা শেষ করেন না। জিজ্ঞেস করলে বলেন,"আপনি দুই দিনের লেইগা আইসেন শুধু শুধু গরিব দু:খি ঘরের এইসব কষ্টের কথা শুইনা কেন নিজের মনকে বেজার করবেন?"
নিচ থেকে শুনতে পেলাম শিবু কাকা ডাকছেন।
- বাবু? ও বাবু? তুমুল বৃষ্টিতে ঘুমায় গেছেন বুঝি?
- না ঘুমাইনি। বৃষ্টিতে কি করব তাই এখানকার অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু লিখছিলাম। আপনি কি বলতে এসেছিলেন বলুন।
- তেমন কিছু না বাবু। আইজগা রান্নার কিছু নাই। আমি সাইকেল নিয়া বাজারে যাইতাছি। আইজগা হাঁটবার। হাঁট বইছে। আবার এক সপ্তাহ পর হাঁট বইবো। কিন্তু ততদিনে কি খামু এর লাইগা এই বৃষ্টির দিনেও যাইতাছি সদাই কিনতে। আপনার লাইগা নিচে ডিম সেদ্ধ দিয়া রাখছি। আজকের মত খাইয়া লইয়েন। ভাবছি মুরগি পাইলে মুরগি আনুম। এই বৃষ্টিতে খিচুড়ি আর দেশি মুরগির ঝোল বেশ এক মুখো রচক খাবার।
- ঠিক আছে আপনি যান। আমি একা একা নিয়ে খেয়ে নিতে পারব। আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
শিবু কাকা বড় এক পলিথিন মুড়িয়ে সেটা কে রেইনকোট বানিয়েছেন। তিনি সাইকেল নিয়ে চলে গেলেন। আমি তাকে নিচে নামিয়ে দিয়ে উপরে এসে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আকাশে তখনও বৃষ্টির কোন কমতি নেই। ল্যাম্পের আলো ফুরিয়ে আসছে। নিচে রান্নাঘরে কেরোসিন। একেবারে নিভে অন্ধকার হওয়ার আগে ভাবলাম ল্যাম্প টিকে কেরোসিন ভর্তি করে নিয়ে আসি। আমি কেরোসিন আনতে নিচে নামলাম। নেমে রান্না ঘরের কাছে যেতেই মনে হল কে যেন ফিসফিস করে নিচু স্বরে কথা বলছে ও মিটিমিটি হাসছে। পরে কানে ভেসে আসলো আরেকটি কন্ঠ। কন্ঠ দুটো বেশ চিকন যেন কোন বাচ্চার। বাচ্চাদের কন্ঠস্বর শুনে মনে হল হয়তো পাশের কোথাও থেকে এসেছে আম কুড়োতে। এখন আমের সময়। হয়তো সে কারণেই এসেছে। আমি রান্না ঘরের দরজার কাছে যেতেই, দুটো বাচ্চার অবয়ব দৌঁড়ে কোথায় যেন মিলিয়ে গেল। ভাবতে লাগলাম হয়তো ভুল দেখেছি না হয় অন্ধকারে ভালো করে খেয়াল করতে পারিনি। কারণ চারিদিক ছিল কালো মেঘে ঘুটঘুটে অন্ধকার। রাতও নেমে এসেছে বলে নিভু নিভু ল্যাম্প-এর আলোতে খুব একটা বেশি দূরে দেখা বড়ই মুশকিল হচ্ছিল। বাচ্চারা হয়তো আমার উপস্তিতি টের পেয়ে ভয়ে পালিয়েছে।
আমি ল্যাম্পে কেরোসিন ভরলাম। নিজের রুমে ফিরে এসে ল্যাম্পটি টেবিলের উপর রেখে পুরনো আমলের খাটটিতে শুয়ে এক গল্পের বই পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, ঠিক এমন মুহূর্তে কে যেন বারান্দা দিয়ে ছুটোছুটি শুরু করে দিল। আবারও মুখ ভর্তি হাসা হাসির শব্দ। মনে হয় বাচ্চা দুটি আবার এসেছে। এবার তারা কথা বলছে আমি সেটা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
-বুবু তুমি আজকে আমারে একবারো ধরতে পারো নাই। আমি হাজার লুকালেও তুমি আমারে ধরতে পারবা না। কিন্তু তোমারে আমি প্রত্যেকবারই খুঁজে বের করছি।
আমি বেশ চমকে উঠলাম এত রাতে এই নির্জন জায়গায় বাচ্চা কিভাবে আসবে!? এরা নিতান্তই ছোট শিশু। আমি নিজেকে শক্ত করে ভাবতে শুরু করলাম, একা রয়েছি তাই অজান্তেই মনের অগোচরে ভীতির জাল ছড়াচ্ছে। কিন্তু বাচ্চা দুটির খেলাধুলা শেষ হলো না। আমি বেশ সাহস করেই বললাম,
- কে? কারা ওখানে? এত রাতে এখানে কি করছো তোমরা?
বলা মাত্রই তাদের ছুটোছুটি থেমে গেল। সাথে থেমে গেল তাদের মৃদু আলাপও। আমি উঠে গিয়ে একবার দেখবো ভাবলাম। কিন্তু আমি এ বাড়িতে একা এবং নতুন। কোন দস্যু-দের উপদ্রব্য বা উপস্থিতি রয়েছে কিনা তারও জানা নেই। তাই ঘরে বসেই বলতে লাগলাম,
- তোমরা বাসায় যাও। এত রাতে এখানে এসেছ তোমাদের মা বাবারা চিন্তিত হবেন।
মনে হল যেন আমি বড়ই বোকার মতন একটি কথা বলে ফেলেছি। তারা কথাটিতে বেশ মজা পেয়েছে। উপহাসকৃত মুখ ভরা হাসিতে তারা ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। আমার এবার বেশ ভয় কাজ করতে শুরু করল। আমি সাহস নিয়ে বারান্দায় গেলাম। কিন্তু বারান্দায় যেয়ে খেয়াল করলাম আমি ছাড়া এখানে কারোরই কোন অবস্থান নেই। সবই নিজের মনের ভ্রম ছিল ভেবে নিশ্চিন্ত হয়ে রুমে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়লে তার কাল্পনিক চিত্র বাস্তবে দেখতে শুরু করে। আমিও হয়তো তারই এক চেতনায় ছিলাম। নিজেকে শান্ত করার পর শুনতে পেলাম এবার কে যেন ঝুমুর পায়ে হেঁটে আসছে আমার রুমের দিকে। আমি আবারো দরজার কাছে গিয়ে তাকিয়ে দেখি এক বেসম্ভব সুন্দর শয্যায় সজ্জিত এক নারী দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাকে আগে এ বাড়িতে কখনো দেখিনি। তার পরিচয় বা তার সম্পর্কে কিছু জানাও শোনাও নেই আমার।
- কে? আপনি কাকে খুঁজছেন?
সে মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
- জ্বি, আমাকে আপনি চিনবেন না। আপনার শিবু কাকার বেশ ঘনিষ্ঠ একজন আমি।
আমি একটু চিন্তা করে ভাবলাম হয়তো কাকার কোন আত্মীয় দূর থেকে এসেছেন। কিন্তু কোত্থেকে এসেছেন বা তার নাম,পরিচয় এগুলো আমার কিছুই জানা নেই। তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম,
-জ্বি, আপনি কে? আপনার পরিচয়?
- আমি মরিয়ম। আমি আপনাদের শিবু কাকার সাথে দেখা করতে এসেছি। আমাদেরকে সে বিদায় না দিয়েই চলে এসেছেন। তাই ভাবলাম তার কাছ থেকে শেষ বিদায়-টি নিয়ে ফিরে যাই।
আমি তার জটিল কথায় বিস্মিত হলাম। তার কথা ভালোভাবে বুঝে ওঠার আগে সে বলে উঠলেন,
- যদি কিছু মনে না করেন আমাকে এক গ্লাস পানি খাওয়াতে পারবেন? বড় তৃষ্ণার্ত আমি অনেক দিন ধরে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে বললেই চলে। আমার সাথে আমার দুটো বাচ্চাও রয়েছে। ওদেরও বেশ খিদা পেয়েছে। যদি ডিম দিয়ে দুটো ভাত দিতেন ওদের..
আমি কথা বাড়ালাম না। তাকে পানি দেওয়ার জন্য আমি আমার রুমে ফিরে আসলাম। মাটির কলসি থেকে পানি ঢালতে ঢালতে হঠাৎ খেয়াল হল, ডিম রান্না হয়েছে এ কথা তিনি কিভাবে জানলেন!? সেটা তো শুধু আমি আর শিবু কাকাই জানি!
ভাবতে লাগলাম হয়তো ডিম সহজলভ্য বলেই তিনি স্বাভাবিকভাবে এই কথা বলেছেন। অধিক দুশ্চিন্তায় একটু বেশি বেশি ভাবছি।
পানি নিয়ে বারান্দায় ফিরে গেলাম। কিন্তু বারান্দায় কারোর কোন অস্তিত্বও খুঁজে পেলাম না। বুঝতে আরম্ভ করলাম, আমি বেশ বড় এক গোলব-ধাঁধায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি। যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া হয়তো খুব সহজ নয়।
আমি বুকে সাহস যোগিয়ে নিচে নামলাম। নিচে যেয়ে দেখতে পেলাম শিবু কাকার সাইকেল রাখা। মনে এক হালকা প্রশান্তির অনুভূতি কাজ করতে শুরু করলো। কাকা কখন জানি হাঁট থেকে ফিরে এসেছেন। কিন্তু শিবু কাকাকে কোথাও দেখতে পেলাম না। বাইরের উঠানের দিকে আবছা আবছা আলোতে চোখ পড়তে দেখলাম তিনি কোদাল নিয়ে কি যেন করছেন, বুঝতে পারলাম তিনি বাড়ির সামনে থাকা গাছ তলায় মাটি খুঁড়ছেন।
বৃষ্টি যেন আরো বেড়েছে। আমি শিবু কাকার কাছে যেতে যেতে বলতে লাগলাম,
- আপনি কখন এসেছেন, আমাকে ডাকলেন না যে!?
শিবু কাকা কোন উত্তর দিলেন না। অন্ধকারে হয়তো খেয়াল করেননি আর প্রবল বৃষ্টিপাতের জন্য হয়তো শুনতে পাচ্ছেন না।
তার কাছে যাওয়ার জন্য সামনের দিকে এগোতেই আমার পা কিসের সাথে যেনো বাধলো। নিচে হাত দিতেই মনে হল কোন এক মানুষের পা। আমি চমকে উঠে বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে দেখতে পেলাম লাল শাড়ি পরা সেই নারী পাশে দুটি জমজ বাচ্চা মেয়ে শুয়ে রাখা হয়েছে। আমার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে শির শির করে উঠলো পুরো শরীর। কিছু না বুঝে উঠে আমি শিবু কাকার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম লাল চোখে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছেন আর বলতে লাগলেন,"ভয় পাবেন না বাবু, এর আর কেউ নয়, আমার স্ত্রী ও দুই মানিক।" আমি দেখলাম সে কবরের মতন কিছু একটা খুঁড়ে ফেলেছেন ততক্ষণে। নিচে মাটিতে শুয়ে থাকা লাশগুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি আর সহ্য করতে না পেরে নিজের হুশ হারিয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়লাম। এরপর কি হয়েছে আমার ঠিক তা জানা নেই।
চোখ খুলতেই নিজেকে দেখলাম আমি এক কুড়েঘরে শুয়ে আছি। পাশে মা কাঁদছেন। বাবা বেশ রেগে আছেন আমার দিকে। তারা নাকি আমাকে খোঁজার জন্য পত্রিকায় আমার নিখোঁজ খবর দিয়েছিলেন। এখানকার এক নাইট-গার্ড পত্রিকায় আমার ছবি দেখে আমার বাবা মাকে খবর পাঠিয়ে তাদেরকে ডেকেছেন। জানতে পারলাম পরদিন সকালে নাকি আমাকে সে খুঁজে পান ওই বাঙলোর উঠানে। কাছে যেতেই দেখেন আমার শরীরে প্রচন্ড জ্বর।
পুরো ঘটনা জানতে তাকে জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন,
- ভাগ্যিস আমি ওই রাস্তা দিয়ে যাইতে ছিলাম নইলে আপনার কি হইতো আল্লাই ভালো জানেন। ওই বাড়িতে কেউ থাকেন না। বহু আগে জমিদাররা থাকতেন। আর জমিদারের ছিল এক বিশিষ্ট রক্ষণাবেক্ষক। যার নাম ছিল শিবু। শিবু ছিল হিন্দুর ছেলে। তবুও সে জড়িয়ে ছিল মুসলমান জমিদারের সুন্দরী মেয়ের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে। তারা পালিয়ে বিয়েও করেছিল। এবং অনেক বছর পর ফিরে এসেছিল ফুলের মতন দেখতে ফুটফুটে যমজ দুই মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু তাদের সম্পর্ক কেউ মেনে নেয়নি। মেনে নেবেও বা কেন। বামন হয়ে চাঁদ ধরেছে যে সে। শিবুকে করা হয় নানা রকম অত্যাচার ও অপমান। শিবু, সেটা সহ্য করতে না পেরে এক রাতে সে বন্দি ঘর থেকে বের হয়ে মরিয়মকে পানির সাথে ও নিজের দুই সন্তানের প্রিয় খাবার ডিম ভাতের সাথে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলে এবং তাদেরকে মাটি চাপা দিতে উঠানে একটি কবর খুঁড়ে। ততক্ষণে লোক জানা জানি হয়ে যায়। জমিদার সাহেব বের হয়ে শিবুকে বন্দুক দিয়ে গুলি করে। শিবুও সেখানে মারা যায়।এভাবেই পেয়েছিল শিবু ও তার পরিবার নির্মম নিষ্ঠুর মৃত্যু।
-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।