আচুক্কা-Acukka

আচুক্কা-Acukka Formerly unknown A$$.

07/07/2023

Allah Hafeez.

06/07/2023

মাসুদের ময়না ট্যাকারে ভালোবাসে।

03/07/2023

Cuming...

26/06/2023

মূলত মানব দৃষ্টির চোখ গোলাকৃতির কারণে আমরা পৃথিবীটাকে গোলাকার দেখতে উদ্ভুদ্ধ হই।
পৃথিবী মূলত ফ্লাট প্লানেট।

[পুনশ্চ: নেশাগ্রস্ত লোকদের কথায় কান দিবেন না। এরা সমাজের উচ্চস্তরের বোঝা। এদের দেখা মাত্রই এদের দোররা মেরে যথা দ্রুত সম্ভব স্থান থেকে বিতাড়িত করুন।]

জনস্বার্থে: দ্যা নেম ইজ বন্ড।

25/06/2023

সভা

পদ্মা পাড়ি দিয়ে গ্রামের বাড়িতে একেবারের জন্য ফিরে এসেছি। কারণ হিসেবে শহরে থাকবার কারণ ফুরিয়ে গিয়েছে। বেশ ধকল গিয়েছে গতকাল রাতে। পদ্মার চরে আমাদের ফেরী আটকে গিয়েছিল তাই সারারাত জেগে থাকা হয়েছে। অপেক্ষা করতে হয়েছে কখন এই বিশাল ক্ষিপ্ত জলরাশি হতে ছাড় পাওয়া যাবে। ভোর পেরিয়ে বাড়ি পৌঁছেছি। প্রশান্তির ঘুম দিয়ে উঠেছি মাত্র বৈকি..

- কেমন আছেন প্রফেসর সাহেব?

আমি মনের বিরক্তি গোপন করার প্রাণপণ চেষ্টা করতে করতে বললাম,"জ্বি ভালো আছি।"

ভদ্রলোক হাসিমুখে বললেন,"বসবো খানিকক্ষণ?"
- বসুন। আমি অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই বেরুব।

- আমাকে কি চিনতে পারছেন?
- জ্বি না।
- কাল রাতেই আপনার সাথে ভোরে ভ্যানে করে আসার সময় আলাপ হলো। ভোরে সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে ভ্যান পাওয়া খুব দুষ্কর। ভাগ্যক্রমে একটি ভ্যান পেয়ে আমরা দুজন একই জায়গার বলেই একসাথে এসেছিলাম।

চিনতে একটু কষ্ট হলেও আমি ভদ্রলোককে চিনতে পারলাম। এতগুলো ধকলে ঘুমঘুম ক্লান্ত চোখে সামান্য আলাপে সারা জীবন মনে রাখব আমার স্মৃতিশক্তি এত ভাল নয়।

ভদ্রলোক হাসিমুখে বললেন,"আমার নাম আনসার আলী। পোস্টাল সার্ভিসে ছিলাম। তিন বছর আগে রিটায়ার করেছি। বাবা ভিস্তিওয়ালা ছিলেন। এখনকার সময় এ পেশা নেই বললেই চলে। বড় শ্রম ও মর্যাদার কাজ ছিল বটে। যাই হোক, এখন আমি ঘরে বসেই থাকি। একটা খরগোশ কিনেছি।

- ভালো খুবই ভালো।

ভদ্রলোক বারান্দার খাটে বসেছেন। কৌতুহলী চোখে চারিদিক দেখছেন।

- প্রফেসর সাহেব আপনি কি ভূত-প্রেত এসব বিশ্বাস করেন?
- জ্বি না করিনা।
- শুনে ভালো লাগলো। আজকাল শিক্ষিত লোক দেখি এইসব বিশ্বাস করে। বেশ অদ্ভুত লাগে। ভেবে মনটা উদাস হয়। মানুষ চাঁদে যাচ্ছে বিশ্বাস করছে আবার ভূত বিশ্বাস করছে। রাস্তায় এক ভদ্রগোছের লোককে দেখেছি প্রত্যেক আঙ্গুলে দুটি করে পাথরের আংটি পড়তে।

আমি চুপ করে রইলাম আমার কাছ থেকে কোন উত্তর না পেলে ভদ্রলোকের হয়তো আলাপের উৎসাহ কমে যাবে। তিনি বিদায় হবেন।
- প্রফেসর সাহেব
- জ্বি
- আপনি কি কোইন্সিডেন্স বিশ্বাস করেন?
- আপনার প্রশ্নটি ঠিক বুঝতে পারলাম না
- কাকতালীয় ঘটনা
- আমি এখনও আপনার প্রশ্নটি বুঝতে পারছি না
- আরেকদিন আপনাকে বলব। আজ মনে হচ্ছে আপনি একটু বিরক্ত। তবে ঘটনাটা বলা শুরু করলে আপনার বিরক্তি কেটে যেত।

আমি ভদ্র লোকের কথায় সত্যিকার অর্থেই লজ্জিত বোধ করলাম। বিরক্ত নিশ্চয়ই হয়েছে কিন্তু সেই বিরক্তি ধরে ফেলবেন তা বুঝতে পারিনি।

- প্রফেসর সাহেব উঠি
- উঠবেন?
- জ্বি। আজকাল কোথাও বেশিক্ষণ বসিনা। রিটায়ার্ড মানুষদের কেউ পছন্দ করে না। সবাই ভাবে সময় নষ্ট করার জন্য এসেছি।

- আপনি আসবেন। আপনার সঙ্গে গল্প করব কোন অসুবিধা নেই। আজ অবশ্য একটু ব্যস্ত। অনেকদিন পর গ্রামে এসেছি তাই সবার সাথে দেখা সাক্ষাত করতেই বের হচ্ছি।

- গল্পগুজব আমি তেমন পারিনা। তবে একটা ব্যাপার আমার জীবনে আছে ওই গল্পটা ছাড়া আমি কোন গল্প জানিনা। গল্পটা খুবই ব্যক্তিগত। অল্প কয়েকজনকেই বলেছি। আপনাকেও কেন জানি বলার ইচ্ছা করছিল।

- অবশ্যই বলবেন

- আপনি যদি আমার বাড়ি হঠাৎ করেই আসতেন আমার খুব ভালো লাগতো। বেশি দূরে না আপনার বাসা থেকে কাছে ১৫ মিনিটের পথ। পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়।

- জ্বি আচ্ছা একদিন যাব।
- আমার নামটা আপনার মনে আছে তো?
- জ্বি আছে।
- নামটা বলুন তো?

আমি দ্বিতীয়বার লজ্জা পেলাম। । কারণ ভদ্রলোকের নাম কিছুতেই মনে করতে পারলাম না। ভদ্রলোকের সভাব খানাও এমন বিচিত্র যে আমার লজ্জা বুঝতে পেরেও জবাবের জন্য মাথা উঁচু করে অপেক্ষা করতে লাগলেন।

- নামটা বোধহয় আপনার মনে পড়ছে না তাই না?
- জ্বি না।
- মনে থাকার ও কথা না। কমন নাম আমার খুবই কমন, আনসার আলী। একদিন হঠাৎ করে আসবেন বাসায় ভালো লাগবে। ঘটনাটা বলব। শুনতে আপনার খারাপ লাগবো না।
- জ্বি আচ্ছা। আমি যাব খুব শিগগিরই একদিন যাবো।

এক বৃহস্পতিবার বিকেলে ভদ্রলোকের বাসায় উপস্থিত হলাম। লজ্জা কাটানোর জন্য এসেছি। গল্প শোনার জন্য নয়। ভদ্রলোক ঐ দিন আমাকে খুব লজ্জায় ফেলেছিলেন।

- আমার সংসার ছোট। একটা মাত্র মেয়ে। স্ত্রী মারা গেছে। সংসারের তুলনায় টাকা পয়সা বেশ ভালোই আছে। আপনি ঘুরে ঘুরে ঘর দেখুন আমি চা নিয়ে আসি।
- চা লাগবেনা।
- কেন লাগবে না। চা খেতে খেতে গল্প করব। আমার ঘটনাটা আপনাকে বলার জন্য এক ধরনের আগ্রহ অনুভব করছি
- কেন বলুন তো!?
- আপনি শিক্ষিত মানুষ। হয়তো কোন ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারবেন। আমার ঘটনাটি শুনে অবশ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলেও আমি নিরাশ হবো না। প্রতিটি বিষয়ের পিছনে একটা কার্যক্রান্ত থাকতেই হবে এমন তো কোন কথা নেই
ভাই ঘটনাটা তাহলে বলা শুরু করি..
কিছু কিছু মানুষ আছে পশু প্রেমিক। কুকুর, বিড়াল, গরু, ভেড়া এসব জন্তুর প্রতি তাদের অসাধারণ মমতা। রাস্তায় একজন ভিখিরি চিৎকার করে কাঁদলে সে ভিখিরির কাছে এগিয়ে যাবে না। কিন্তু একটা বিড়াল কুই কুই করে কাঁদলে ছুটে যাবে। বিড়ালটিকে আদর আক্ষেপ করবে। পানি খাওয়াবে। যাই হোক, মূল গল্পে ফিরে যাই।

আমি তখন ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। শীতকাল। কলেজ শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তখন পড়ি কুমিল্লা সিটি কলেজে। আমাদের বাসা নমপারায়।

একদিন বাসায় ফিরছি দিনটা মনে আছে-বুধবার। সন্ধ্যা মিলিয়ে গেছে। প্রচণ্ড শীত লাগছে। বাসার কাছাকাছি এসে দেখি পাড়ার তিন চারটা ছেলে কাগজ,শুকনো কাঠ এসব জড়ো করে আগুন জ্বালছে। আমাদের সামনের বাসার মন্টু কেও দেখতে পেলাম। বড় ত্যাদড় ছেলে। কোত্থেকে কার এক সদ্য জন্মানো ২-৩ দিনের ছাগলের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ছাগল ছানা-টির গায়ে একটা কাপড় পেচিয়ে দিয়েছে। ছাগল ছানাটিও মাথা বের করে আরামে শুয়ে রয়েছে কোলে।
আমি বললাম,"কি হচ্ছে রে মন্টু?"
মন্টু দাঁত বের করে হাসলো। অন্য একজন বলল,"মন্টু ছাগল কে কম্বল পড়িয়েছে শীত লাগছে তো তাই। বাকিরা সব হো হো করে হাসলো। ছেলেগুলোর বয়স দশ থেকে এগারো এর মধ্যে। এই বয়সের বালকরা সবসময় আনন্দে থাকে। নানান জায়গা থেকে আনন্দের উপকরণ খুঁজে বের করে নিয়ে আসে। ছাগল-কে কম্বল দিয়ে মোড়ানো হয়েছে এতেই তাদের আনন্দের সীমা নেই।
মানুষের সাধারণ প্রবৃত্তি হচ্ছে আনন্দে অংশগ্রহণ করা। আমিও ওদের দিকে এগিয়ে গেলাম। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমার এগিয়ে যাওয়াটা কেউ তেমন পছন্দ করছে না। মুখ চাওয়াচাই করছে। হয়তো ছোটরা চায় না তাদের মাঝে বড়রা অংশগ্রহণ করুক। আমাদের। আমাদের মন্টুকে খুবই বিরক্ত মনে হল। ওদের কাছে গিয়ে দাঁড়ানো মাত্রই কেরোসিন-এর গন্ধ পেলাম। হয়তো বাসা থেকে কেরোসিন এনে কেরোসিন ঢেলে আগুন করেছে। বালকরা কায়দা কানুন করতে খুবই ভালোবাসে।
- কেরোসিন দিয়েছিস নাকি?
কেউ কোন জবাব দিল না। মন্টু-র মুখ কঠিন হয়ে গেল।আমি ব্যাপারটা কিছুই বুঝতে পারলাম না । মন্টু বলল," আপনি চলে যান।" ।" তার গলা কঠিন চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ। তাকিয়ে দেখি ঝন্টুর কোলে ছাগলছানাটি ভিজে চুপচুপ করছে। বুকটা ধ্বক করে উঠল। এরা ছাগলছানাটির গায়ে কেরোসিন দিয়ে চুবিয়েছে নাকি!? নতুন কোন খেলা? একে আগুনে ছেড়ে দেবে না তো? শিশুরা মাঝে মাঝে নিষ্ঠুর খেলায় মেতে ওঠে।
আমি কড়া গলায় বললাম,"এই মন্টু তুই ছাগলটার গায়ে কেরোসিন ঢেলেছিস নাকি?"
মন্টু কঠিন মুখে বলল," তাতে আপনার কি?"
- কেন কেরোসিন ঢাল্লি?
মন্টু কিছু বলল না। অন্য্য একজন বলল,"ছাগলটিকে আগুনের মধ্যে ছাড়বে। এর গলায় ঘুংঘুর বাধা আছে। আগুনে ছারলে এর গায়ে আগুন লাগবে সে দৌঁড়াবে।
যত তাড়াতাড়ি দৌঁড়াবে তত তাড়াতাড়ি ঘুংঘুর বাজবে এটাই মজা।
আমি হতভম্ব। এরা বলে কি? ছেলেটার কথা শেষ হবার আগেই মন্টু ছাগলছানাটিকে আগুনে ফেলে দিল। দাও দাও করে আগুন জেলে উঠলো। ছাগল ছানা দৌঁড়ালো না। এক জায়গায় চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। হয়তো সে মানুষের নিষ্ঠুরতায় হতবঙ্গ হয়ে গিয়েছিল।
আমি আগুনের উপর লাফিয়ে পড়লাম। আমার শার্টে আগুন ধরে গেল। প্যান্টে আগুন ধরে গেল। এইসব কিছুই আমি গ্রাহ্য করলাম না। আমার একমাত্র চিন্তা বাচ্চাটাকে আগুন থেকে বের কর‍তে হবে।

আনছার সাহেব থামেলন।
আমি বললাম,"বের করতে পেরেছিলেন?"
- হ্যাঁ
- বাচ্চাটা বেঁচেছিল?
- না বাঁচেনি। বাঁচার কথাও না। আমার গায়ে থার্ড ডিগ্রি বার্ন হয়ে গেল। কুমিল্লা মেডিকেলে কিছুদিন থাকলাম। সেই সময় বার্ন-এর চিকিৎসার তেমন ব্যবস্থা ছিল না। আমাকে বাঁচানোর আশা একেবারে ছেরেই দিয়েছিল ডাক্তাররা। যাই হোক, বেঁচে গেলাম। তবে সেই বছর পরীক্ষা দিতে পারলাম না।

আনছার আলি নি:শ্বাস নেবার জন্যে থামামাত্র আমি বললাম,"আপনি একজন অসাধারণ মানুষ।"
- মোটেই না। বরং বড় বোকা। সা। সামান্য এক ছাগলের বাচ্চার জন্য নিজের জীবন দিতে বসেছিলাম। অবশ্যই একটা ছাগলের চেয়ে মানুষের জীবন মূল্যবান।
- আপনার গল্প শুনে মুগ্ধ হয়েছি।
- এটা কোনো গল্প ছিলনা। এটা গল্পের ভূমিকা। মূল গল্পে ফিরছি। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছি। শরীর তখনও দূর্বল। ডাক্তার বলে দিয়েছে প্রচুর রেস্ট নিতে। শুয়ে বসেই দিন কাটছে। আমার ঘরে রয়েছে বিরাট এক জানালা। জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকতে খুব একটা খারাপ লাগেনা। এক রাতের কথা। ঘুম ভেঙে গিয়েছে। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। ফকফকা জ্যোৎস্না। এই জ্যোৎস্নায় অদ্ভুত এক দৃশ্য চোখে পড়লো। রাজ্যের ছাগল এসে জড় হয়েছে বাসার সামনে। কেউ কোনো সাড়াশব্দ করছে না বা ছুটোছুটি করছে না। সব ক'টা মূর্তির মতোন দাঁড়িয়ে আছে। আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। ব্যাপারটা কি!
একসঙ্গে এতগুলো ছাগল এর আগে আমি কখনো দেখিনি। এমন জাতীয় আচরণের কথাও শুনিনি। আমাকে দেখে এরা সবাই আমার মুখের দিকে ফিরে তাকালো।
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, দেখি হঠাৎ তাদের মধ্যে একধরনের চাঞ্চল্য দেখা গেল। একে একে এরা চলে গেল। যেন ওদের কোনো গোপন অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে,এখন চলে যাচ্ছে।
এই ব্যাপার মাঝে মাঝে ঘটতে লাগল। তবে নির্দিষ্ট কোনো সময়ে নয়।
এ রকম একটা ঘটনা চাপা থাকার কথা নয়। সবাই জেনে গেলো। অনেকেই দুপুর রাতে ছাগলের দল দেখতে আসত। খবরের কাগজেও ঘটনাটা ছাপানো হলো। ক্যাপশন ছিল—ছাগলের কাণ্ড।
আমার ছোট বোন আমাকে খুব ক্ষেপাত। সে বলত," ছাগলের জন্য তুমি জীবন দিতে যাচ্ছিলে তাই তারা তোমাকে তাদের রাজা বানিয়েছে। তুমি হচ্ছ ছাগল রাজা।"

আমার বাবা বদলি হয়ে পাবনা চলে গেল। আমরাও গেলাম। সেখানেও একি কান্ড। যেখানেই গিয়েছি সেখানেই কাণ্ড ঘটত।
আজ আমার বয়স সাতষট্টি। আজও ওই ব্যাপার ঘটছে।

আমি আশ্চার্য হয়ে বললাম,"বলেন কি!?"

যা বলছি তার মধ্যে এক বর্ণও মিথ্যা নেই। ছাগলের ভাষা আমি জানি না। জানলে জিজ্ঞেস করতাম,"তোমরা কী চাও? এইসব তোমরা কেন কর?

- ব্যাপারটা কি আপনার পছন্দ হয় না?

- না, পছন্দ হয় না। একদিন দু'দিনের ব্যাপার হলে হয়তো পছন্দ হতো। একদিন দু'দিনের ব্যাপার তো নয়। দিনের পর দিন ঘটছে।

- ভবিষ্যতে আবারো হবে বলে কি আপনার ধারণা?'
- হ্যাঁ হবে। আজ রাতেও হতে পারে। আপনি কি দেখতে চান?'

বলতে বলতে আনছার সাহেবের চোখ-মুখ বিকৃত হয়ে গেল। যেন তিনি প্রচণ্ড রাগ করছেন। যেন এই মুহূর্তে চেঁচিয়ে উঠবেন। আমি বললাম,"আপনি মনে হয় পুরো ব্যাপারটায় খুব আপসেট। এতে আপসেট হবার কিছু নেই। পশুরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে— এতে রাগ হবার কী আছে? কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অধিকার নিশ্চয়ই পশুদেরও আছে।"

- এটা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কোনো ব্যাপার নয়। এটা একটা ভৌতিক ব্যাপার। সুপার ন্যাচারাল ব্যাপার।
- এর মধ্যে সুপার ন্যাচারালের অংশ কোনটি?
- পুরো ব্যাপারটিই সুপার ন্যাচারাল। এই অংশটি আপনাকে বলিনি বলে আপনি বুঝতে পারছেন না।
- বলুন শুনি।

- যে ছাগলছানাটিকে আমি বাঁচাতে চেয়েছিলাম সেই ছাগলছানাটি দলটার মধ্যে সব সময় থাকে। পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া একটা ছাগল। গলায় ঘুংঘুর বাঁধা। ছাগল ছানাটা মাথা দুলায় আর ঘুংঘুরের শব্দ হয়।

- আপনি ছাড়া অন্যরাও কি এই কুকুরছানাটা দেখে?

- না, আর কেউ দেখতে পায় না। শুধু আমি দেখতে পাই। দেখুন ভাই, আমি বিজ্ঞানের ছাত্র না। তবু অবৈজ্ঞানিক কোনো কিছুই আমি আমার জীবনে গ্রহণ করিনি। ভূত-প্রেত, ঝাড়-ফুক, পীর-ফকির কিছুই না। অথচ সেই আমাকেই কিনা সারাজীবন একটি অতিপ্রাকৃত বিষয় হজম করে যেতে হচ্ছে।

আমি বললাম,"আবার কখনো এ-রকম কিছু হলে আপনি দয়া করে আমাকে খবর দেবেন। "

তিনি জবাব দিলেন না।

আমি বিদায় নিয়ে চলে এলাম। তার পাঁচ মাস পর রাত দুটোয় টেলিফোন বেজে উঠল। আনছার সাহেব করেছেন। তিনি কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন,"ওরা এসেছে। আপনি আসবেন?"

শ্রাবণ মাসের রাত। বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ির বাইরে পা দিলেই এক হাঁটু পানি। এমন দুর্যোগের কোথাও যাবার প্রশ্নই ওঠে না। আমি টেলিফোন নামিয়ে বিছানার চাদরের নিচে ঢুকে পড়লাম।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

23/06/2023

অধিক মুঠোবাজি-র ফলে কুম্রো ফুলের মতোন নেতিয়ে পরে মূর্ছিত হয়েছে বন্ড ও তার নোটন। আমরা তার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।

গরুড় চঞ্চু আহারে আনিলো ভোজ্যফসকিয়া পড়িল চঞ্চু হইতে ভোজ্যের বর্জ্যএই বর্জ্য বড়ই ন্যায্য গোত্রবৃদ্ধিস্তর ঘটাইয়া দৃশ্যমান প...
22/06/2023

গরুড় চঞ্চু আহারে আনিলো ভোজ্য
ফসকিয়া পড়িল চঞ্চু হইতে ভোজ্যের বর্জ্য
এই বর্জ্য বড়ই ন্যায্য গোত্র

বৃদ্ধিস্তর ঘটাইয়া দৃশ্যমান পাইবে এক দৈত্যের পুত্র
দৈত্য-পুত্রের হইবে কান্ডে দণ্ডে পত্র
পত্রের সূত্রে জন্ম লইবে বল্লরি নামক অঙ্গ
সেই অঙ্গে ঝুলিয়া রইবে ভূত-প্রেত,মাছি যত উলঙ্গ

যদিও রইয়াছে ইহার বহুধরণের কার্য
তবুও করিবে ইহার বড় অগ্রাহ্য
কারণ হিসেবে বলিবে শুধুই,ইহার ফল বিষাক্ত
তাই সে হইয়াছে সবারই কাছে, অভিশপ্ত
শপ্ত দৈত্য, ধীরে ধীরে হইতেছে গুপ্ত
প্রকৃতির কাছে ইহা,কঠোর এক সত্য

জীবন প্রাণে হইলেও সে এক বটবৃক্ষ
দিন শেষে,বটবৃক্ষ-ও বড় বৃদ্ধ।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

21/06/2023

কালো মেঘে আসমান ছাইয়া গেলো,
বজ্রের কন্ঠে জমিন কাঁপিয়া উঠিলো।

দমকা হাওয়ায় ধূলিকণা উড়িতে লাগিলো,
দুনিয়ার সব জীব ছুটোছুটি করিতে থাকিলো।

নীরধর বাইয়া পানি গড়াইয়া পড়িলো,
পানির স্পর্শে লজ্জাবতী বুজিয়া গেলো।

তৃষ্ণার্ত মাটির তৃষ্ণা মিটিয়া গেলো,
কিন্তু ডাঙায় মণ্ডূক মাত্র আসিলো।

হেঁক বাইয়া কৈ নাচিতে আরম্ভ করিলো,
তবে জোয়ারে নদীর কূল ভাঙিলো।

বরিষা গড়াইয়া বরিষা গড়াইতে থাকিলেও,
তবুও না আমার দু:খ ফুরিলো।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

19/06/2023

শিবু

দোয়াত নিয়ে ল্যাম্পের উষ্ণ আলোয় লেখালেখি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি। এমন এক প্রশান্তির পরিবেশে বেশ ভালো একটা সময় পার করা যাবে।উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা সদ্য শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের মূলত কোনো গুরুত্বপূর্ণ করণীয় থাকে না। তাই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার জন্য একা রাজশাহীতে এসেছি বাড়িতে কাউকে না জানিয়েই। আসার সময় বাবার ছোট বাক্স থেকে বেশ কিছু টাকা আর গল্পের বই নিয়ে এসেছি। সাথে মুঠো ভর্তি কিছু কলম। এখানের বেশ পুরনো এক দোতলা বাঙলো-তে উঠেছি। বাড়িতে কেউ থাকেন না। বাড়ির দায়িত্বে রয়েছেন দেখভাল করার জন্য একজন মাঝামাঝি বয়স্ক লোক। লোকটি ক্ষত্রিয় বংশের হলেও তিনি এখন নিঃস্ব। পরিবারের কেউ এখানে থাকেন না বলেই জানিয়েছেন। স্ত্রী সন্তানেরা নাকি কোন এক সঙ্গত কারণে মারা গিয়েছে, অকাল মৃত্যু যাকে বলে। বাড়িটি বেশ নিস্তব্ধ ও জনশূন্য। চারিদিকে রাত হলেই ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুরু হয়ে যায়, দিনে গাছপালার জন্য চারিদিক থাকে অন্ধকার। বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে যিনি আছেন তার নাম শিবু সরকার। তিনি আমার থাকা খাওয়ার জন্য বেশ ভালোই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমার থেকে বয়সে বেশ বড় হলেও আমাকে তিনি বাবু বলে ডাকেন, এর কারণ অনুযায়ী হয়তো আমার পোশাক-আশাক, রীতি-নীতি, আচার-আচরণ বা পিতৃপরিচয়। নিজের থেকেও বড় কেউ বাবু বলে ডাকলে সেটা নিজের কাছেও ভালো লাগবে না তাই তাকে বারণ করতে বলাতে সে বলেন,"কি যে বলেন বাবু। আপনি আমাগের এইখানে আইসেন মেহমান হিসাবে। অতিথি নারায়ণের আরেক রূপ। আপনারে ন্যায্য মর্যাদা যত্ন আক্ষেপ না করলে যে আমার মহাপাপ। আমি অশিক্ষিত মানুষ এইখানে আছি পেটে দুই বেলা ভাত দেওনের লাইগা। আপনি সৃষ্টিকর্তার কৃপায় একদিন অনেক বড় শিক্ষিত ব্যক্তি হইবেন, মানুষের মতন মানুষ হইবেন। আপনারে কি তুই কইরা বলা যায়? আমার আর কপাল, ছিল দুই জমজ কন্যা। বেশ টুকটুকে ছিল ওরা। ওগের মাও ছিল বেশ সুন্দর। খুব চঞ্চল দুই বোন ছিল ওরা। ওরা দুই বোন এক লগে থাকতো, খেলতো আর খালি আমারে জ্বালাইতো।‌ওগের সাজা গুজার বেশ বায়না ছিল। হাঁট বারের দিন আইলেই হাঁট থেইকা লিপস্টিক, কাজল, চুরি, আলতা-সোনো না নিয়া আইলে ওগের মুখ হয়া থাকতো বেজার গম্ভীর। খাওয়া দাওয়া ছাইড়া দিত। ওগের মারও ছিল সাজা গোজায় বেশ পারদর্শী। আমার মেয়ে দুইজনই সারাদিন ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়া চোখে কাজল দিয়া কপালে টিপ দিয়া সারাদিন ঘুইরা বেড়াইতো। ওগের মা ওগের ফিতা দিয়া চুল বাইন্ধা দিত। কি যে দারুন লাগতো বাবু! আমার টুকটুকে দুইটা মেয়ে ওগের বায়না পূরণ করব না তো আর কাদের করব কন? তাই ওগো সব বায়না পূরণ করতে আমি মরিয়া হইয়া পড়তাম কিন্তু.."

শিবু কাকা থামলেন, তার চোখ ভিজে উঠেছে। দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস নিয়ে থেমে যান প্রতিবার-ই। পুরো কথা শেষ করেন না। জিজ্ঞেস করলে বলেন,"আপনি দুই দিনের লেইগা আইসেন শুধু শুধু গরিব দু:খি ঘরের এইসব কষ্টের কথা শুইনা কেন নিজের মনকে বেজার করবেন?"

নিচ থেকে শুনতে পেলাম শিবু কাকা ডাকছেন।
- বাবু? ও বাবু? তুমুল বৃষ্টিতে ঘুমায় গেছেন বুঝি?
- না ঘুমাইনি। বৃষ্টিতে কি করব তাই এখানকার অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু লিখছিলাম। আপনি কি বলতে এসেছিলেন বলুন।
- তেমন কিছু না বাবু। আইজগা রান্নার কিছু নাই। আমি সাইকেল নিয়া বাজারে যাইতাছি। আইজগা হাঁটবার। হাঁট বইছে। আবার এক সপ্তাহ পর হাঁট বইবো। কিন্তু ততদিনে কি খামু এর লাইগা এই বৃষ্টির দিনেও যাইতাছি সদাই কিনতে। আপনার লাইগা নিচে ডিম সেদ্ধ দিয়া রাখছি। আজকের মত খাইয়া লইয়েন। ভাবছি মুরগি পাইলে মুরগি আনুম। এই বৃষ্টিতে খিচুড়ি আর দেশি মুরগির ঝোল বেশ এক মুখো রচক খাবার।
- ঠিক আছে আপনি যান। আমি একা একা নিয়ে খেয়ে নিতে পারব। আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

শিবু কাকা বড় এক পলিথিন মুড়িয়ে সেটা কে রেইনকোট বানিয়েছেন। তিনি সাইকেল নিয়ে চলে গেলেন। আমি তাকে নিচে নামিয়ে দিয়ে উপরে এসে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আকাশে তখনও বৃষ্টির কোন কমতি নেই। ল্যাম্পের আলো ফুরিয়ে আসছে। নিচে রান্নাঘরে কেরোসিন। একেবারে নিভে অন্ধকার হওয়ার আগে ভাবলাম ল্যাম্প টিকে কেরোসিন ভর্তি করে নিয়ে আসি। আমি কেরোসিন আনতে নিচে নামলাম। নেমে রান্না ঘরের কাছে যেতেই মনে হল কে যেন ফিসফিস করে নিচু স্বরে কথা বলছে ও মিটিমিটি হাসছে। পরে কানে ভেসে আসলো আরেকটি কন্ঠ। কন্ঠ দুটো বেশ চিকন যেন কোন বাচ্চার। বাচ্চাদের কন্ঠস্বর শুনে মনে হল হয়তো পাশের কোথাও থেকে এসেছে আম কুড়োতে। এখন আমের সময়। হয়তো সে কারণেই এসেছে। আমি রান্না ঘরের দরজার কাছে যেতেই, দুটো বাচ্চার অবয়ব দৌঁড়ে কোথায় যেন মিলিয়ে গেল। ভাবতে লাগলাম হয়তো ভুল দেখেছি না হয় অন্ধকারে ভালো করে খেয়াল করতে পারিনি। কারণ চারিদিক ছিল কালো মেঘে ঘুটঘুটে অন্ধকার। রাতও নেমে এসেছে বলে নিভু নিভু ল্যাম্প-এর আলোতে খুব একটা বেশি দূরে দেখা বড়ই মুশকিল হচ্ছিল। বাচ্চারা হয়তো আমার উপস্তিতি টের পেয়ে ভয়ে পালিয়েছে।

আমি ল্যাম্পে কেরোসিন ভরলাম। নিজের রুমে ফিরে এসে ল্যাম্পটি টেবিলের উপর রেখে পুরনো আমলের খাটটিতে শুয়ে এক গল্পের বই পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, ঠিক এমন মুহূর্তে কে যেন বারান্দা দিয়ে ছুটোছুটি শুরু করে দিল। আবারও মুখ ভর্তি হাসা হাসির শব্দ। মনে হয় বাচ্চা দুটি আবার এসেছে। এবার তারা কথা বলছে আমি সেটা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।

-বুবু তুমি আজকে আমারে একবারো ধরতে পারো নাই। আমি হাজার লুকালেও তুমি আমারে ধরতে পারবা না। কিন্তু তোমারে আমি প্রত্যেকবারই খুঁজে বের করছি।

আমি বেশ চমকে উঠলাম এত রাতে এই নির্জন জায়গায় বাচ্চা কিভাবে আসবে!? এরা নিতান্তই ছোট শিশু। আমি নিজেকে শক্ত করে ভাবতে শুরু করলাম, একা রয়েছি তাই অজান্তেই মনের অগোচরে ভীতির জাল ছড়াচ্ছে। কিন্তু বাচ্চা দুটির খেলাধুলা শেষ হলো না। আমি বেশ সাহস করেই বললাম,

- কে? কারা ওখানে? এত রাতে এখানে কি করছো তোমরা?

বলা মাত্রই তাদের ছুটোছুটি থেমে গেল। সাথে থেমে গেল তাদের মৃদু আলাপও। আমি উঠে গিয়ে একবার দেখবো ভাবলাম। কিন্তু আমি এ বাড়িতে একা এবং নতুন। কোন দস্যু-দের উপদ্রব্য বা উপস্থিতি রয়েছে কিনা তারও জানা নেই। তাই ঘরে বসেই বলতে লাগলাম,

- তোমরা বাসায় যাও। এত রাতে এখানে এসেছ তোমাদের মা বাবারা চিন্তিত হবেন।

মনে হল যেন আমি বড়ই বোকার মতন একটি কথা বলে ফেলেছি। তারা কথাটিতে বেশ মজা পেয়েছে। উপহাসকৃত মুখ ভরা হাসিতে তারা ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। আমার এবার বেশ ভয় কাজ করতে শুরু করল। আমি সাহস নিয়ে বারান্দায় গেলাম। কিন্তু বারান্দায় যেয়ে খেয়াল করলাম আমি ছাড়া এখানে কারোরই কোন অবস্থান নেই। সবই নিজের মনের ভ্রম ছিল ভেবে নিশ্চিন্ত হয়ে রুমে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়লে তার কাল্পনিক চিত্র বাস্তবে দেখতে শুরু করে। আমিও হয়তো তারই এক চেতনায় ছিলাম। নিজেকে শান্ত করার পর শুনতে পেলাম এবার কে যেন ঝুমুর পায়ে হেঁটে আসছে আমার রুমের দিকে। আমি আবারো দরজার কাছে গিয়ে তাকিয়ে দেখি এক বেসম্ভব সুন্দর শয্যায় সজ্জিত এক নারী দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাকে আগে এ বাড়িতে কখনো দেখিনি। তার পরিচয় বা তার সম্পর্কে কিছু জানাও শোনাও নেই আমার।

- কে? আপনি কাকে খুঁজছেন?

সে মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
- জ্বি, আমাকে আপনি চিনবেন না। আপনার শিবু কাকার বেশ ঘনিষ্ঠ একজন আমি।

আমি একটু চিন্তা করে ভাবলাম হয়তো কাকার কোন আত্মীয় দূর থেকে এসেছেন। কিন্তু কোত্থেকে এসেছেন বা তার নাম,পরিচয় এগুলো আমার কিছুই জানা নেই। তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম,

-জ্বি, আপনি কে? আপনার পরিচয়?

- আমি মরিয়ম। আমি আপনাদের শিবু কাকার সাথে দেখা করতে এসেছি। আমাদেরকে সে বিদায় না দিয়েই চলে এসেছেন। তাই ভাবলাম তার কাছ থেকে শেষ বিদায়-টি নিয়ে ফিরে যাই।

আমি তার জটিল কথায় বিস্মিত হলাম। তার কথা ভালোভাবে বুঝে ওঠার আগে সে বলে উঠলেন,

- যদি কিছু মনে না করেন আমাকে এক গ্লাস পানি খাওয়াতে পারবেন? বড় তৃষ্ণার্ত আমি অনেক দিন ধরে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে বললেই চলে। আমার সাথে আমার দুটো বাচ্চাও রয়েছে। ওদেরও বেশ খিদা পেয়েছে। যদি ডিম দিয়ে দুটো ভাত দিতেন ওদের..

আমি কথা বাড়ালাম না। তাকে পানি দেওয়ার জন্য আমি আমার রুমে ফিরে আসলাম। মাটির কলসি থেকে পানি ঢালতে ঢালতে হঠাৎ খেয়াল হল, ডিম রান্না হয়েছে এ কথা তিনি কিভাবে জানলেন!? সেটা তো শুধু আমি আর শিবু কাকাই জানি!
ভাবতে লাগলাম হয়তো ডিম সহজলভ্য বলেই তিনি স্বাভাবিকভাবে এই কথা বলেছেন। অধিক দুশ্চিন্তায় একটু বেশি বেশি ভাবছি।
পানি নিয়ে বারান্দায় ফিরে গেলাম। কিন্তু বারান্দায় কারোর কোন অস্তিত্বও খুঁজে পেলাম না। বুঝতে আরম্ভ করলাম, আমি বেশ বড় এক গোলব-ধাঁধায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি। যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া হয়তো খুব সহজ নয়।

আমি বুকে সাহস যোগিয়ে নিচে নামলাম। নিচে যেয়ে দেখতে পেলাম শিবু কাকার সাইকেল রাখা। মনে এক হালকা প্রশান্তির অনুভূতি কাজ করতে শুরু করলো। কাকা কখন জানি হাঁট থেকে ফিরে এসেছেন। কিন্তু শিবু কাকাকে কোথাও দেখতে পেলাম না। বাইরের উঠানের দিকে আবছা আবছা আলোতে চোখ পড়তে দেখলাম তিনি কোদাল নিয়ে কি যেন করছেন, বুঝতে পারলাম তিনি বাড়ির সামনে থাকা গাছ তলায় মাটি খুঁড়ছেন।

বৃষ্টি যেন আরো বেড়েছে। আমি শিবু কাকার কাছে যেতে যেতে বলতে লাগলাম,

- আপনি কখন এসেছেন, আমাকে ডাকলেন না যে!?

শিবু কাকা কোন উত্তর দিলেন না। অন্ধকারে হয়তো খেয়াল করেননি আর প্রবল বৃষ্টিপাতের জন্য হয়তো শুনতে পাচ্ছেন না।
তার কাছে যাওয়ার জন্য সামনের দিকে এগোতেই আমার পা কিসের সাথে যেনো বাধলো। নিচে হাত দিতেই মনে হল কোন এক মানুষের পা। আমি চমকে উঠে বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে দেখতে পেলাম লাল শাড়ি পরা সেই নারী পাশে দুটি জমজ বাচ্চা মেয়ে শুয়ে রাখা হয়েছে। আমার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে শির শির করে উঠলো পুরো শরীর। কিছু না বুঝে উঠে আমি শিবু কাকার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম লাল চোখে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছেন আর বলতে লাগলেন,"ভয় পাবেন না বাবু, এর আর কেউ নয়, আমার স্ত্রী ও দুই মানিক।" আমি দেখলাম সে কবরের মতন কিছু একটা খুঁড়ে ফেলেছেন ততক্ষণে। নিচে মাটিতে শুয়ে থাকা লাশগুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি আর সহ্য করতে না পেরে নিজের হুশ হারিয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়লাম। এরপর কি হয়েছে আমার ঠিক তা জানা নেই।

চোখ খুলতেই নিজেকে দেখলাম আমি এক কুড়েঘরে শুয়ে আছি। পাশে মা কাঁদছেন। বাবা বেশ রেগে আছেন আমার দিকে। তারা নাকি আমাকে খোঁজার জন্য পত্রিকায় আমার নিখোঁজ খবর দিয়েছিলেন। এখানকার এক নাইট-গার্ড পত্রিকায় আমার ছবি দেখে আমার বাবা মাকে খবর পাঠিয়ে তাদেরকে ডেকেছেন। জানতে পারলাম পরদিন সকালে নাকি আমাকে সে খুঁজে পান ওই বাঙলোর উঠানে। কাছে যেতেই দেখেন আমার শরীরে প্রচন্ড জ্বর।

পুরো ঘটনা জানতে তাকে জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন,

- ভাগ্যিস আমি ওই রাস্তা দিয়ে যাইতে ছিলাম নইলে আপনার কি হইতো আল্লাই ভালো জানেন। ওই বাড়িতে কেউ থাকেন না। বহু আগে জমিদাররা থাকতেন। আর জমিদারের ছিল এক বিশিষ্ট রক্ষণাবেক্ষক। যার নাম ছিল শিবু। শিবু ছিল হিন্দুর ছেলে। তবুও সে জড়িয়ে ছিল মুসলমান জমিদারের সুন্দরী মেয়ের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে। তারা পালিয়ে বিয়েও করেছিল। এবং অনেক বছর পর ফিরে এসেছিল ফুলের মতন দেখতে ফুটফুটে যমজ দুই মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু তাদের সম্পর্ক কেউ মেনে নেয়নি। মেনে নেবেও বা কেন। বামন হয়ে চাঁদ ধরেছে যে সে। শিবুকে করা হয় নানা রকম অত্যাচার ও অপমান। শিবু, সেটা সহ্য করতে না পেরে এক রাতে সে বন্দি ঘর থেকে বের হয়ে মরিয়মকে পানির সাথে ও নিজের দুই সন্তানের প্রিয় খাবার ডিম ভাতের সাথে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলে এবং তাদেরকে মাটি চাপা দিতে উঠানে একটি কবর খুঁড়ে। ততক্ষণে লোক জানা জানি হয়ে যায়। জমিদার সাহেব বের হয়ে শিবুকে বন্দুক দিয়ে গুলি করে। শিবুও সেখানে মারা যায়।এভাবেই পেয়েছিল শিবু ও তার পরিবার নির্মম নিষ্ঠুর মৃত্যু।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

19/06/2023

স্বাস্থ্যবটিকা:
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে মুখ না ধুয়ে সারারাত ভেজানো রাঁজাগ রস খাবেন।
দেখবেন সারাদিনের কর্মে আপনার মস্তিস্ক-কে দুচে দিয়েছে।
ধন্যবাদ।

জনকল্যাণে;
প্রফেসর অয়নবন্ড।

17/06/2023

"?"
অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম

ইদের ছুটিতে ঢাকা যাচ্ছি। মেহেরপুর স্টেশনে বিখ্যাত শীত পড়েছে। পরণে মোটা জামার উপর উলের সইটার পরে চাদর মুড়ে বসে আছি। তবুও যেন বাতাস হুরহুর করে জামার ভিতর ঢুকছে। রাত তখন বাজে পনে এগারোটা। চারিপাশে বেশ কিছু লোকের উপস্থিতি থাকলেও নিভু নিভু আলোতে স্টেশনটি বেশ ভুতুড়ে বেশে রূপ নিয়েছে। স্টেশন মাস্টারের কাছ থেকে জানতে পারলাম কমলাপুর স্টেশন থেকে আগত মাঝপথে একটি ট্রেন ব্রিজ থেকে পড়ে অসংখ্য লোকের মৃত্যু ঘটেছে। তাই লোকাল ট্রেন বাদে সকল ট্রেন বন্ধ। আমাকে সেই ট্রেনেই যেতে হবে, সাথে আরও জানতে পারলাম ট্রেন দুই ঘন্টা লেটে চলছে। আমি কোনো করণীয় না পেয়ে সময় পার করার জন্য পাশের চার দোকান থেকে পুরনো খবরের কাগজ জোগাড় করে পড়তে শুরু করলাম। সামনের প্লাটফর্মে এক ভদ্রলোক বিশাল সাইজের চারটে ছাগল নিয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ছাগলগুলো বেশ অদ্ভুত। এরা চুপ করে থাকে, তারপর কিছুক্ষণ পর পর বিকট আওয়াজে একসাথে ডাকাডাকি শুরু করে। পরিস্থিতি বিগ্রে যাওয়ার মুহূর্তে আবার এরা একসাথে চুপ হয়ে যায়। এদের চ্যাঁচানোর ফলে আশে পাশে থাকা বাচ্চারা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে। এমন পরিবেশে নিজেকে সামলে রাখা বেশ কঠিন। আমি এসবে মন না দিয়ে খবরের কাগজ পড়ায় মন দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু কি পড়ছি নিজেও সেটা জানিনা।
শীত মনে হচ্ছে আরও বেড়েছে। আমি না পেরে উঠে গিয়ে পাশে থাকা দোকান থেকে একটি সিগারেট ও পান কিনে আনলাম। সিগারেট ধরিয়ে পান মুখে দিলাম। মুখ নাড়লে এক্সারসাইজ হবে এর ফলে শরীরও গরম থাকবে তাই পান কিনেছি। তাছাড়া শখের বসে মাঝে মাঝে মিঠা পান কিনে খাওয়া ছাড়া আমার পান খাওয়ার অভ্যাস নেই।

কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম আমার ডান দিক থেকে অন্ধকার দিয়ে এক ষাটোর্ধ লোক হেঁটে আসছেন। তীব্র শীতের কারণে হয়তো একটু বেঁকে গিয়েছেন। লক্ষ্য করলাম সে আমার দিকেই হেঁটে আসছেন। তিনি আমার পাশে বসেছেন। আমি মাস্টার রুমের সামনে থাকা গাছের নিচে বসে ছিলাম। লোকটির দিকে তাকাতে বুঝলাম লোকটি সনাতন ধর্মের ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম,"ট্রেনে করে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হচ্ছে?" সে উত্তরে কিছুই বলল না। হয়তো লোকটি শুনতে পাইনি ভেবে আমি আমার কাজে মন দিলাম। সেও আমার পাশে বসে রইলো দীর্ঘ সময় ধরে। এমন চুপচাপ আর নীরবতা আমাকে বেশ বিস্মৃতির মুখে ফেলছিল। অপরিচিত লোক হলেও তার ধূসর চেহারা আমার মনে বেশ প্রশ্ন জাগছিল। আমি আগ্রহ নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম,"আজ এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নাকি অনেক নিষ্পাপ শিশুসহ ট্রেনের সকল মানুষই নাকি মারা গিয়েছে। জানেন কি সেটা?"

নিম্ন গলায় উত্তর দিল,"হ্যাঁ।"
তার এমন গম্ভীর কণ্ঠ আমাকে বেশ ক্ষুব্ধ করলো, বুঝিয়ে দিলো তার হৃদয়ে বিশাল এক ঝড়। যে ঝড় হয়ত থামানোর কোনো উপয়া বস্তু নেই।
ভাবলাম হয়তো লোকটির ছেলে অথবা মেয়ে বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন বলে বাসা থেকে বিতাড়িত করেছে । আজকের দিনে সন্তান্দের এমন নিষ্ঠুরতম কাজে বেশ লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। লোকটির পরণে ছিল একটি হাফ হাতা শার্ট এবং অনেক পুরনো এক লুঙ্গি। বেশ উদাস থাকার কারণে হয়ত লোকটি এই তীব্র শীত-কে উপেক্ষা করে গিয়েছেন। আমি স্বাভাবিকভাবেই আমার চাদরটি গাঁ থেকে খুলে তাকে দিতে যাব এমন সময় তার শরীরে আমার হাত স্পর্শ হয় এবং তার শরীর বরফের মতোন ঠান্ডা হয়ে জমে গিয়েছে। তার শরীর এত ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে তবুও তিনি কিছুই টের পাচ্ছেন না!?
মনের অজান্তেই এক অজানা ভ্রম কাজ করতে শুরু করলো। লোকটির এমন অদ্ভুত সব আচরণ আমাকে কাবু করছিল। তাছাড়া স্টেশন বেশ ভয়ঙ্কর ও বিপদজনক আস্তানা। প্রায় সব ধরনের কর্মকাণ্ড-ই এখানে হয়ে থাকে। এমন সব কথা চিন্তা করতে করতে লোকটি হঠাৎ কথা বলতে শুরু করলো,

- আজ আমি মা কালীর দেখা পেয়েছি। সে এভাবে দেখা দিবে কখনো ভাবিনি। হয়ত এ কারণেই আজ আমার এই দুর্দশা।

সে কোন অবস্থার কথা বুঝাতে চাচ্ছিলো আমার বুঝতে বেশ জটিল লাগল কিন্তু পরক্ষণেই সেটা পরিস্কার হয়ে গেলো।

- আমি কলার ঝুড়ি নিয়ে ইঞ্জিনের সামনে বসে আসছিলাম। ভালো কলা পেয়েছি। ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো সে আশায় মনে বেশ প্রশান্তি কাজ করছিলো। কিন্তু গরিবের সুখ বেশিক্ষণ টেকে না। হঠাৎ উপরে তাকাতে, ট্রেনের আলোতে দেখি গাছের ডালে বসে মা কালী সিঁদুর দিচ্ছেন। আজ আমাবস্যা। মুহুর্তেই নিস্তব্ধ বোবা প্রকৃতি কেড়ে নিলো আমার মুখের উজ্জ্বল হাসি, আমার শরীরের রক্ত হিম শীতল হয়ে আসতে লাগলো, আমার মুখ দিয়ে কেন জানি কোনো বাক্য বের হচ্ছিল না। দেখতে পেলাম মা কালী আমাদের ট্রেনকে হাত দেখিয়ে থামতে বলছেন। ট্রেন মাস্টার সেটি খেয়াল না করে কালো শক্তির দেবী-কে অতিক্রম করতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তেই ট্রেন উলটে সোজা পানির নিচে তলিয়ে যায়। শত শত মানুষের কান্না ভেসে আসতে শুরু করে। মৃত্যু-র আর্তনাদে ব্যাকুল হয়ে পড়ে চারিদিক। কিন্তু উপরে থাকা কালি যেনো মেতেছেন এক বিকৃতি অসহ্য নৃত্য হাসিতে। সে চিৎকার দিয়ে দিয়ে প্রকাশ করছিলেন তার নিষ্ঠুর আনন্দ।
তার এই অভিশাপ কেড়ে নিয়েছে অজস্র মলিন প্রাণ।

তার কথা শুনে আমার মনে হতে লাগল লোকটা হয়ত তীব্র মানসিক আঘাতে এমন হয়ে গিয়েছেন। না হলে এমন সব আজগুবে কথা কিভাবে বলবেন। হয়তো বা প্রিয়জনের মৃত্যুর শোকে এমন সব অপ্রস্তুত কথা বলছেন।

শুনতে পেলাম আমার বাম দিক থেকে ট্রেন মাস্টার আমাকে ডাক দিতে দিতে এগিয়ে আসছেন। এসে বললেন,"এই যে আপনি যাবেন না? আপনার ট্রেন ছেড়ে দিল, এটা আজ শেষ ট্রেন। কখন ট্রেন এসেছে আমি খেয়াল করি নি। পাশে থাকা লোকটি-কে শান্তনা বাণী দিয়ে বিদায় জানিয়ে চলে আসব মুহুর্তে তাকাতেই দেখি, এ কি!! আমার পাশে থাকা কোনো মানুষের অস্তিত্বের চিহ্ন মাত্র নেই! আমি আকস্মিক দাঁড়িয়ে পড়লাম। নিজেকে বিশ্বাস করার জন্য স্টেশন মাস্টারকে জিজ্ঞেস করলাম, "আমার পাশে থাকা লোকটি কোথায় গেল?”
সে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুক্ষণ। আমি আবারও উত্তর জানতে চাওয়ায় সে জবাব দিল,"কই না তো। আপনি তো সেই ধরে একাই বসে আছেন এবং কি যেন বিড়বিড় করছিলেন।
নিজেকে এক নাটকীয়তার মুখে ফেলে অন্য এক দুনিয়ায় মগ্ন হলাম আমি।

ট্রেন বাঁশি ছেড়েছে, চলেছে তার গন্তব্যে..

17/06/2023

কাল রাতে বন্ড ব্ররে ফোন দিলাম। উনি বললেন, গরীব ফকিন্নিদের সাথে আমি রাত বারোটার পর দেখা করি না। তখন বাধ্য হয়ে, লদকা-লদকিতে লিপ্ত দারোয়ানকে ডিস্টার্ব দিয়ে গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করলাম। ভাবলাম, যা আছে কপালে। একবার মজনু চাচার দোকানে গিয়া দেখি খোলা আছে নাকি।

নতুন রাস্তার প্রায় শেষ মাথায় এই দোকান। পৌঁছাইতে পৌঁছাইতে দুইটা বাইজা গেলো। গিয়া দেখি এলাকায় কুকুর বলতে কোনো পশু পক্ষিও নাই। তবে দোকান খুলা। চাচা ক্যাসেটে পুরান বাংলা গান শুনতেসে। চা দিতে কইয়া বইসি, খালু কয়, ব্র, সনি ব্র তো আশে পাশেই আছে।

আমি অবাক হইয়া জিগাইলাম, কই?

কইলো, ডেউয়া গাছের নিচে বাইক দেখসি। ওইদিকে গিয়া দেখেন।

গেলাম। গিয়া দেখি হালায় খালিগায়ে রাস্তায় পাশে দাঁড়ায় আছে। গাঞ্জার গন্ধে অত্র রেডিয়াসে ঢুকা যাইতেসে না। আমি দূর থেইকা ডাইকা কইলাম, শাউয়ার নাতি তোর কি হইসে?

আমারে দেইখা শ্লায় হাউমাউ কইরা কাইন্দা দিয়া কইলো, দোস্ত আমারে বাঁচা! আধ ঘণ্টা ধইরা হিসু করতেসি কিন্তু হিসু আর শেষ হইতেসে না!

কথা শুনে বুঝলাম কত্তর বচ্চ এই দুনিয়াতে নাই। সে বর্তমানে বৃহস্পতি গ্রহের সর্বোচ্চ চূড়া গাজাসাকিতে অবস্থান করছে।

আপনারা কেউ নেশা করবেন না প্লিজ। কারণ নেশা মস্তিষ্ককে শুদে দেয়।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

16/06/2023

হৃদয় মাঙ্গে এক বৃষ্টিস্নাত রাত, মাগার নীরধরে বৃষ্টির বড়-ই অভাব।

লবণ দিয়া মেঘে, তৈরি হলেও কৃত্রিম বৃষ্টি,
ঘরে ঘরে হয়না, হেলিকপ্টার-এর সৃষ্টি।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

ঝড়ো হাওয়ার অন্তিম বিকেলে,পুষ্পকলিরা নাড়া দেয় ছাদে।সূর্য ডুবিয়া রাত্রি জ্ঞাপন করিলেওবেলারা ধরা দেয়না কোনো বশে।-অ্যাজট্রলগ...
16/06/2023

ঝড়ো হাওয়ার অন্তিম বিকেলে,
পুষ্পকলিরা নাড়া দেয় ছাদে।
সূর্য ডুবিয়া রাত্রি জ্ঞাপন করিলেও
বেলারা ধরা দেয়না কোনো বশে।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

16/06/2023

এই সিদ্ধ শহরকে একমাত্র বৃষ্টি প্রসিদ্ধ করতে পারে.

-প্রফেসর বন্ড।

16/06/2023

খণ্ডিত হৃদয়ের প্রতিটি টুকরো এখন প্রত্যেকটি নারীকে ভালোবাসে।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

15/06/2023

একবার আমি, সনি আর বন্ড অ্যাডমিশন এর লেইগা ঢাকা গেসিলাম পরীক্ষা দিতে। হঠাৎ দেখি বন্ড হাত পা চুলকাচ্ছে। তারপর আস্তে আস্তে ঘাড় আর মাথাও চুলকাতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর সে ডেস্ক থেকে পড়ে গেলো। আমি গিয়ে দেখি মুখ দিয়ে ফ্যানা বের হচ্ছে। স্যার ভয় পেয়ে বললেন, কি হইসে ওর!?

আমি কইলাম, স্যার মনেহয় হেরোইন সেবন করে ছেলেটা, গ্যারা উঠসে। নেশা না পায়া অজ্ঞান হয়া গেসে।

স্যার জিজ্ঞেস করলেন, ও কি তোমার ফ্রেন্ড?

- না স্যার। আজকে জীবনে প্রথম দেখলাম।

আমি আর সনি র‍্যাঙস ওকে ধরাধরি করে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলাম। তারপর সেখানে বই খুলে উত্তরগুলো মুখস্ত করে নিলাম তিনজনে। কিছু ম্যাথও ছিলো পরিক্ষায়। সেগুলো এক সিনিয়র ব্র সমাধান করে দিলো। পরে মুখস্ত উত্তর আর নকল সমেত আবার হলে ফেরত গেলাম। স্যারকে বললাম, স্যার ছেলেটা তিনদিন ধরে খায় নাই। ডক্টর বললো স্টমাক পুরা খালি ছিলো বলে অজ্ঞান হয়ে গেসিলো।

- বল কি!? খায়নাই কেন?

- স্যার শুনলাম ও ঢাকায় নতুন আসছে। কিছুদিন আগে ও ছিনতাই এর শিকার হয়। মেস ভাড়া দিতে না পারায় ওকে বের করে দেয়া হয়েছিলো। গত তিনদিন ও রাস্তায় ছিলো।

ঘটনা শুনে স্যার খুবই কষ্ট পেলেন। বললেন, এক্সামিনেশন শেষে দেখা করতে। খাতা জমা দিয়ে তার অফিসে যাওয়ার পর তিনি আমাদের তিনজনকেই কোর্স থেকে বের করে দিয়ে বললেন, শাউয়ার নাতিরা মগা পাইসস আমারে? আমি ঘাস খাই? তোরা কি করসস আমি বুঝিনাই মনে করসস?

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

12/06/2023

বহুদিন আগের এক দুপুরবেলার কথা। রাস্তাঘাট খাঁ খাঁ করছে। বন্ড-এর সেদিন ছিলো জনম দিবস। সেই দিবস উপলক্ষ্যে বার্থডে উইশ করার জন্য কল করি আমি বন্ড-কে। কলে তার আম্মাজান-কে পেয়েছি। বুঝলাম বন্ড তার সুগার বেবি-র সাথে কথা বলা নিয়ে রাঙা হাতে ধরা খেয়ে বেশ বিপদে রয়েছেন। তাই চাচীজান কল রিসিভ করেন। আমার বেডা কন্ঠ শুনে বড় স্বস্তি পেলেন তিনি। তিনি আমার সালাম এর জবাব শেষ করা মাত্রই বন্ড-কে বাথরুম থেকে গোসলরত অবস্থায় বের করে তার কানে ফোন গুজে দিয়ে বললেন,"দরকারি কল কথা বল!" আমি বন্ড-কে উইশ করলাম। কথা শেষে নিজেকে খুব ভাগ্যবান ভাবতে শুরু করে দিলাম। কারণ, আমার ফোনের মূল্যবান অর্থ অধিক শোষণ হইতে চাচিজান বাঁচাইয়া দিছেন।

ঘরে ফিরে আস্লাম। দেখি আব্বা টেলিভিশন দেখছেন। টেলিভিশনে চলছে মারদাঙ্গা বাংলা রোমান্টিক ছায়াছবি। মৌসুমী ওমর সানিকে স্কাউন্ডরেল বলে গালি দিয়েছে দেখে ওমর সানির হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। আমিও টেলিভিশন দেখতে বসে পড়লাম। টেলিভিশন দেখতে দেখতে বাসার নিচে বেয়াড়া কুকুরগুলো চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিল। এমন রোমান্টিক সিনেমা রেখে কুত্তা তাড়াতে যাওয়ার কোন মানেই হয় না তাই আমি কোনো আগ্রহ দেখালাম না। ফলস্বরূপ কপালে জুটলো বিশাল এক ঝাড়ি। আব্বা বিরক্ত হয়ে বললেন," কুকুরগুলো তারাই দিয়ে আয়।" আমি রাগে গজ গজ করতে করতে নিচে নামলাম। দেখলাম সেটা কোনো কুকুর না কুকুরেও অধম শেকশপিয়ার তানভীর দাঁড়িয়ে আছেন। বাবা-মার অগোচরে বন্ধুদের বাসা থেকে বাইরে বের করার জন্য আমরা যে কুকুরের ডাক ডাকতাম সিনেমার শোধনে তা ভুলে গিয়েছিলাম। শেক্সপিয়ার আমাকে দেখে চোখ মারলেন আমি কিছুই বুঝলাম না। আমাকে নিয়ে সে দেওয়াল টপকালেন, নিয়ে গেলে বন্ডের বাসায়। আমরা এখানেও মিনিট কয়েক ঘেউ ঘেউ করলাম। ভন্ড কিছুক্ষণ পর নেমে এলেন নিচে। শেকশ ব্র তাকেও চোখ মারলেন, আমি না বুঝলেও বন্ড ব্র দেখলাম বেশ ভালোই বুঝেছেন। আমরা বন্ডকে নিয়েও তাদের বাসার দেওয়াল টপকালাম। যেখানে সোজা রাস্তা রয়েছে সেখানে আমাদের এমন বানরের মতোন টপকা টপকি আমাকে বেশ পেইন খাওয়াইলো।
আমরা এক খোলা মাঠের কিনারায় গিয়ে দাঁড়ালাম। এখানে এ সময় সচরাচর জনৈক কাজ ছাড়া কেউ আসে না। বন্ড তার পকেট থেকে তিনটি বেনসন বের করে দিয়ে বললেন,"মেজো খালু বাসায় আইসে এই সুযোগে মাইরা দিলাম।" আমরা পুরান জামানার মানুষ বাসা থেকে যে চার আনা আটানা পেতাম তা দিয়ে বেনসন খাবার সৌভাগ্য হতো না। আমরা সিগারেটে আগুন দিলাম, দেয়ালে ঠেক দিয়ে আকাশে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে মনে হল আমরা অনেক বড় হয়ে গিয়েছি কিন্তু আমাদের তিনজনের-ই পরনে হাফপ্যান্ট। এদিকে শেকশপিয়ার আমাদেরকে বলে উঠলেন,"মেয়েদের দুদু দেখবি?"
আমরা মাথা নাড়ালাম।
পকেট থেকে সে তার বিদেশে আত্মীয় থেকে পাওয়া এইচপি ল্যাপটপ থেকে নগ্ন অপ্সসির চিত্র প্রিন্ট করে এনেছে এবং আমাদের সামনে তা তুলে ধরলেন । আমরা দেখে উত্তেজিত হলাম। সে আরও বললেন,"বিদেশী সব মেয়েদের নিপল পিংক হয়।"এসব বিষয়ে আমরা অজ্ঞ। জ্ঞানের পরিধি বাড়ানোর জন্য শেকশ ব্র-কে ধন্যবাদ দিতে যাব এমন সময় বন্ড প্রচন্ড আবেগের বশে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলেন। আমরা যখন তাকে দুই গ্লাস ঠান্ডা সিভিটা পান করিয়ে শান্ত করলাম, তখন সে কাতর কন্ঠে ব্যক্ত করেছিলেন তার কান্নার কারণ :"দোস্ত, বিদেশী মেয়েদের নিপল তো পিংক আমার বউয়ের এমন হবেনা ভেবেই আমার কান্নায় বুক ভেঙে যাচ্ছে..."
দেখলাম এই শুনে শেকশপিয়ার খানিক চুপ মেরে কিছু ভাব্লেন। হঠাৎ দশ রকম কিরা কেটে শিৎকার করে বলে উঠলেন একটা ধারালো ড্যাগার দিয়ে আজকেই তার নিজের নোটন কেটে ফেলবেন সে। যেই দেশে পিংক নিপল দেখার দুদন্ড শান্তি ও সুযোগের অবকাশ নেই সেই দেশে পুংদন্ড নিষ্প্রয়োজন।
অধিক উত্তেজনার বশে দুজনের সেদিন বুদ্ধিভ্রম হয়।

এভাবেই সব আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ডে কাটলো সেদিন। কেটে গেলো বছর খানেক। কয়েকদিন পর আমার নিজের জনম তারিখ রয়েছে। অদের কথা বেশ মনে পড়ছিল। আর আমি অদের থেকে বেশ দূরে থাকি এখন। অদের আসতে বলার জন্য আমি রিং দেই..
বন্ড নতুন মিশনারি পদে নতুন সব ঘাতক দের গলায় পাড়া দিয়ে রহস্য উন্মোচন করতে ব্যস্ত। তাই সে আস্তে পারবেন না। অন্যদিকে শেকশপিয়ার তার খালুর কাজের মেয়ের জামাইয়ের বড় বোনের পাশের বাসার ওয়াচ-ম্যানের পুসি-র গলায় কাঁটা বেধেছে বলে সেখানে রয়েছেন।
মূলত মানুষ বড় একা।

-অ্যাজট্রলগার মাইকেল্ফাম।

Address

Narayanganj

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আচুক্কা-Acukka posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share


Other Digital creator in Narayanganj

Show All