Md Abul Hasan Official

29/01/2024

15/01/2024

সবুর করো যতক্ষন না আল্লাহ ফায়সালা করেন, আর তিনিই উত্তম ফায়সালা কারী।

(সূরা ইউনুস, আয়াত-১০৯)

12/12/2023

**সাহাবিকে কল্যাণের যে ৩ দরজার কথা বললেন নবিজি (সা.)**

মুআজ (রা.) একদিন আমি নবিজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। নবিজি (সা.) বললেন, আপনি অনেক বড় বিষয় জানতে চেয়েছেন। তবে এটা তার জন্য সহজ হবে, যার জন্য মহান আল্লাহ সহজ করে দেবেন। এক আল্লাহর ইবাদত করুন; তার সাথে কোন কিছু শরিক করবেন না। নামাজে আদায় করুন, জাকাত আদায় করুন, রমজানের রোজা রাখুন এবং কাবা ঘরের হজ্জ পালন করুন।
রাসুল (সা.) বললেন, আপনাকে কি কল্যাণের দরজাসমূহ চিনিয়ে দেবো? রোজা ঢালস্বরূপ, সদকা গুনাহ মুছে দেয় যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয় আর মধ্যরাতে মানুষের নামাজ। তারপর তিনি পাঠ করলেন,

তারা শয্যা ত্যাগ করে ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে। আমি তাদেরকে যে জীবিকা দান করেছি, তা থেকে ব্যয় করে। তাদের সৎকর্মের পুরস্কারস্বরূপ তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কী জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তা কেউ জানে না। (সুরা সাজদা: ১৬, ১৭)
তারপর রাসুল (সা.) বললেন, আমি কি আপনাকে দীনের মূল, তার স্তম্ভ, তার উচ্চতম চূড়া সম্পর্কে বলবো? মুআজ বললেন, অবশ্যই বলুন, হে আল্লাহর রসূল! রাসুল (সা.) বললেন, দীনের মূল হচ্ছে ইসলাম বা আল্লাহর ইচ্ছায় নিজেকে সমর্পন করা, তার স্তম্ভ নামাজ এবং তার উচ্চতম চূড়া জিহাদ।

রাসুল (সা.) আবার বললেন, আমি কি আপনাকে সে সবের মূল সম্পর্কে বলে দেব? মুআজ বললেন, অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রসূল! রাসুল (সা.) জিহ্বা দেখিয়ে বললেন, এটা সংযত রাখুন! মুআজ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা যে কথা বলি তারও কি হিসাব দিতে হবে? রাসুল (সা.) বললেন, কী বলো হে মুআজ! মানুষকে তাদের জিহ্বার সংঘটিত পাপ ছাড়া অন্য কিছু কি অধোমুখী করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে?

**সূত্র: সুনানে তিরমিজি**

07/12/2023

গল্পের নামঃ ঠিক করি নাই।
পর্ব-১

বুকের ডান পাশটা হটাৎ করে ব্যাথা করতে লাগলো, তাকিয়ে দেখলাম, রক্ত বের হচ্ছে, তার মানে গুলি লেগেছে, চারদিকে যেন অন্ধকার দেখছি, বুড়ির কথা খুব মনে পড়ছে, মেয়েটাকে আর সত্যিটা বলাই হলো না, আমার মৃত্যুর পর সব জানতে পারবে।
এপর্যন্ত ভাবেছি মনে আছে, আর কিছু মনে নাই,

১০ মাস আগের কথা,
একদিন বিকেলে আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, একটা মেয়ে রিক্সা ওয়ালার সাথে ঝগড়া করছে। আমি ঘটনা টা দেখে একটু দাঁড়ালাম, অনুমান করতে পারলাম ভাড়া নিয়ে সমস্যা, মেয়েটা ১৫ টাকা ভাড়া দিবে রিক্সাওয়ালার দাবি ২০ টাকা। মেয়েটাকে দেখে মনে হলো সে কোন দাওয়াতে বা অনুষ্ঠানে যাচ্ছে, কারণ খুব সুন্দর করে সেজেছে; হটাৎ মেয়েটা রিক্সাওয়ালাকে চড় মেরে বসলো।
এটা দেখে আমি ও আশপাশের মানুষ অবাক হয়ে গেলাম!

লোকটির চোখ দিয়ে ফোটা ফোটা পানি পড়তে লাগলো, মেয়ের বয়সের একটা মেয়ের কাছে এভাবে অপমান হয়তো উনি স্বপ্নেও কল্পনা করে নি,
আমি আর থেমে থাকতে পারলাম না!
একটু সামনে আগালাম মেয়েটাকে ডাক দিলাম.....
আমি- এই যে শুনছেন! বলে কষে একটা চড় দিলাম গালে!
(পরিবেশটা থম থমে হয়ে গেছে)

মেয়েটা- আপনার এত বড় সাহস? আপনি আমাকে চিনেন? আমার গায়ে হাত তুলছেন?
আমি- কে আপনি? যেভাবে একজন রিক্সাওয়ালার সাথে ৫ টাকার জন্য ঝগড়া করলেন, টা দেখে মনে হলো, আপনি অর্থের ফকির না, স্বভাবের ফকির! কারণ যে ভাবে সেজেছেন বুঝায় যাচ্ছে, আপনার বাবা ফকির না। ৫ টাকার জন্য বাবার বয়সি একটা মানুষের গায়ে হাত তুললেন, ওনারা গরীব বলে কোন দাম নাই?

মেয়েটা- আমি আপনাকে ছাড়বো না......
আমি- এই নেন আমার কার্ড!
মেয়েটা- এটা আবার কোন ধরণের কার্ড!
আমি- আমি কখন কোথায় থাকি নিজেও জানি না, এখানে আমার ফোন নাম্বার, আমার ফেসবুক আইডি, আমার ইমেইল নাম্বার দেওয়া আছে, কোন সময় আসতে হবে ডাক দিয়েন। আর চাচা,(রিক্সাওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে) আপনি বাবার বয়সী, আপনার বড় মন নিয়ে এই ছোট মনের মেয়েকে মাফ করে দিবেন, এরা তো বাপের খাই আর অন্য বাপের ছেলেদের ধ্বংস করে, এরা কষ্ট বুঝবে না।

মেয়েটি- এই যে আপনার কিন্তু অনেক বেশি কথা, আপনাকে দেখে নিবো।
আমি- কি বার বার দেখে নিবো দেখে নিবো বলছেন, দেখতে পাচ্ছেন না? এর বেশি কিছু দেখার অধিকার আপনার নাই, ওটা আমার বউয়ের অধিকার।
মেয়েটা- তোমাকে….....
আমি-চুপ! কিছু পারলে করবেন।

এরপর আমি হাঁটা দিলাম!
তখন আমাকে পিছন থেকে ডাক দিলো। আমি পিছন ঘুরে তাকালাম, দেখলাম একটা মেয়ে
আমি- জি আমাকে বলছেন?
মেয়েটি- জি আপনাকে, আপনার নাম কি?
আমি- আমি আকাশ !
মেয়েটি- আমি সাদিয়া , আপনার সাথে মিনিট পাচেক কথা বলতে পারি?
এতো সুন্দরী একটা মেয়ে যদি আমার মতো ছেলের কাছে ৫ মিনিট সময় চাই তাহলে কি না বলতে পারি?

আমি-হ্যাঁ অবশ্যই।
সাদিয়া- চলেন ঐ দিকে যায়!
আমি- ঠিক আছে।
সাদিয়া- আপনি কি করেন?
আমি- এই তো আকাশের তারা গুণী।
সাদিয়া- আজব তো...!
আমি- মানে বেকার ছেলে।
সাদিয়া- ইস! তাহলে তো সমস্যা.....
আমি- কেন চাকুরী করলে কি হতো? আমাকে বিয়ে করতেন নাকি?(একটু মনের কথা বের করার চেষ্টা)
সাদিয়া- হয়তো। আচ্ছা মেয়েটাকে চড় মারতে ভয় লাগলো না আপনার?
আমি- ভয়! আমি ভয় কে ভয় করি, আর অন্য কিছু না, আর আমার কিছু হয়ে গেলে কাদার কেউ নাই।
সাদিয়া- কেন আপনার প্রেমিকা নাই?
আমি- প্রেম করার সময় নাই। আর বেকার টেনশানে আমি আকাশ ১০০ হাত দূরে।
সাদিয়া- কেন? ভালোবাসা কি খারাপ জিনিস?
।।
আমি- না খারাপ না, কিন্তু এই ধরেন, আপনি আমার প্রেমিকা,
সাদিয়া- অন্য মেয়ে দিয়ে কি উদাহারণ টা দেওয়া যেত না?
আমি- দেওয়া যেত, কিন্তু আপনি অনুভব করতে পারতেন না?
সাদিয়া- ঠিক আছে বলেন,
আমি- আপনি আমাকে ফোন করলেন, নাম্বার অফ! এরপর আমি যখন ফোন করবো আপনি প্রথমে এক গাদা কথা শুনাবেন, অথচ আমার কি হয়েছিলো, আপনি প্রশ্ন করবেন না,
সাদিয়া- আচ্ছা তারপর,

আমি- ধরেন আপনি আমাকে বিকেল ৪ টায় দেখা করার জন্য ডাক দিলেন, আমি আসতে ১০ মিনিট লেট করলাম, শুরু হয়ে গেলো আপনার কাহিনি..... আধা ঘণ্টার মিটিং এ আপনার রাগ ভাঙ্গাতেই আমার ২৫ মিনিট শেষ, আর বেকার ছেলের পকেটের যে বারোটা বাজবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।
সাদিয়া- আর কিছু?
আমি- আরও অনেক আছে, যেমন ধরেন, আমি নীল শার্ট পছন্দ করি, আপনি একটা লাল টি-শার্ট নিয়ে বললেন এটা পরতে, আমি আপনার পছন্দ সম্মান করি, কিন্তু এটাও তো বুঝতে হবে, কাকে কীভাবে ভালো লাগে।

সাদিয়া- ঠিক কথা, কিন্তু ওটা তো মেয়ের ব্যাপারেও হতে পারে।
আমি- আপনার কথায় লজিক আছে, আচ্ছা ধরেন, মেয়েটা বোরখা পরে না, আমি চাই আমার বউ বোরখা পরুক, তখন এক ঝামেলা, বিয়ে করা বউ হলে না হয়, বকে পরিয়ে দিবো, কিন্তু প্রেমিকাকে বকলে পরের দিক থেকে ব্রেকআপ। তাহলে এতো ঝামেলা নিয়ে প্রেম করার কি দরকার?
সাদিয়া- বুঝেছি, আপনার দারা প্রেম করা হবে না, আচ্ছা ঐ দিকে চলেন, কফি খেতে খেতে কথা বলি।

আমি- আমি কফি পছন্দ করি না।
সাদিয়া- কি পছন্দ করেন?
আমি- রাস্তার ধারে এই তো চা।
সাদিয়া- ধরেন যে আপনার প্রেমিকা সাথে আছে, তাহলে কি তাকে ঐ রাস্তার ধারে নিয়েই চা খাবেন?
আমি- আমি তো প্রেম করবো না, প্রেমিকা আসবে কোথায় থেকে?
সাদিয়া- আচ্ছা যদি বউ হয়।
আমি- চা খাবো না।

সাদিয়া- হা হা হা, সত্যি আপনি অদ্ভুত।
আমি- প্রয়োজন আবিষ্কারের মূল মন্ত্র। মানে যখন বউ হবে তখন ভেবে দেখবো, এখন চলেন কফি খেতে যায়।
সাদিয়া- আপনি না বললেন, খাবেন না।
আমি- আমি বলেছি, পছন্দ করি না, খাবো না এটা তো বলি নি।সাদিয়া- সত্যি আপনি আজব মানুষ, আর কফি খাবো না। চটপটি পছন্দ করেন?
আমি- ফুচকা।
সাদিয়া- উফফ! ঠিক আছে চলেন,

এরপর পাশের এক দোকানে আমারা ২ প্লেট ফুচকা খেলাম, বিলটা আমি দিতে যাচ্ছিলাম কিন্তু সাদিয়া দিতে দিলো না,
আমি- আমি বিল দেয়, আপনি মেয়ে মানুষ, বিল দিবেন খারাপ দেখায়।
সাদিয়া- আপনি বেকার, আর আমি একটা কোচিং করায়, মাস গেলে হাত খরচের কিছু টাকা পেয়ে যায়।
আমি- ঠিক আছে দেন।
সাদিয়া- আপনি চাকুরীর চেষ্টা করছেন না?
আমি- কয়েকটা সরকারী চাকুরীর পরীক্ষা দিয়েছি, ঐ দিকেই চেষ্টা আছে।
সাদিয়া- বেসরকারি শুরু করছেন না কেন?
আমি- এখন বিয়ে করবো না তাই
সাদিয়া- আপনাকে এক প্রশ্ন করলে, সোজা ভাবে উত্তর দেন না কেন? যে মেয়ে আপনাকে বিয়ে করবে, সে তো সারা জীবন কাঁদবে।
আমি- মেয়েটাকে বলবো, সে যেন ইতিহাস নিয়ে পড়ে।
সাদিয়া-কেন?
আমি- আমি এক রহস্য, সারা জীবন পাশে থাকেলেও আমাকে চিনতে পারবে না তাই।
সাদিয়া- সেটাই তো দেখছি। আচ্ছা আপনার ফোন নাম্বার টা দিবেন।
আমি- এই নেন, আমার কার্ড।
সাদিয়া- বেকার ছেলে, আবার ভিজিটিং কার্ড! অদ্ভুত!
আমি- মানুষ ছোট থেকেই বড় হয়, আর মানুষ বেকার হতে পারি, স্বপ্ন তো বেকার না। আর ১০০০ কার্ড ছাপাতে মাত্র ৫০০ টাকা লাগে। তাও আমি আবার ৪৫০ টাকা দিয়েছি।
সাদিয়া- হা হা হা।
আমি- আচ্ছা আজ আসি।
সাদিয়া- এখন কোথায় যাবেন?
আমি- বাড়ী,
সাদিয়া- আপনার বাড়ী কি এই শহরেই?
আমি- হ্যাঁ তবে দূরে।
সাদিয়া- ঠিক আছে যান, ভালো থাকবেন।

বেশ কয়েক দিন পর!
একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসলো,
আমি- আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন?
মেয়েটা- আমি সাদিয়া.....
আমি-ওহ, কেমন আছেন? তা কি মনে করে এতদিন পরে?

সাদিয়া- আপনার সাথে জরুরী দরকার ছিল, যদি একবার আমাদের বাসায় আসতেন।
আমি- সরাসরি বাসা? মতলব তো ভালো লাগছে না, ধরে বেঁধে আবার বিয়ে দিবেন না তো? আচ্ছা পাত্রীটা কে?
সাদিয়া- ধরুন আমি।
আমি- এখন কিন্তু বেকার, কিছু কিনে দিতে পারবো না, আর মহরানাও বাকী।
সাদিয়া- মহরানা তো বাকী চলবে না,

আমি- টাকা কোথায় পাবো?
সাদিয়া- কেন? আপনি হাদিস পড়েন না?
আমি- পড়ি, এখন সব তো মনে থাকে না?

সাদিয়া- একদিন হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বসে আছে, এক মেয়ে আসলো, উনি বলল, উনি বিয়ের উপযুক্ত, বিয়ে করতে ইচ্ছুক, তখন এক সাহাবী বললেন, আপনি যদি অনুমতি দেন, তবে আমি এই মেয়েকে বিয়ে করতে চাই,

আমাদের মহানবী বললেন, তুমি মহরনা বাবদ কি দিতে পারবা? সাহাবী বললেন, আল্লাহ্‌ কসম! আমার কাছে একটা দীনার ও নাই, এই বলে সাহাবী মন খারাপ করে বসে গেলো। তখন মহানবী (সঃ) বললেন, তুমি কি কি সূরা জানো? সাহাবী বললেন, আমি এই এই সূরা জানি।

মহানবী (সঃ) বললেন, তাহলে তুমি এগুলো বিয়ের পর তোমার বউ কে শিখিয়ে দিবে, আর এটাই তোমার মহরনা,
এরপর তাদের বিয়ে হয়ে গেলো......।

আমি- জি, বুঝলাম, কিন্তু এখনকার বাস্তবে, টাকা জিনিসটা অনেক মূল্যবান।
সাদিয়া- এর চাইতেও মূল্যবান, হলো, বিশ্বাস, ভালোবাসা, আর সম্মান।
আমি- আমি তো আপনার থেকে কম হাদিস জানি, আর কি দিবো ওটাই ভাবছি।
সাদিয়া- আপনি সিগারেট খান? বা কোন নেশা করেন?

আমি- না কোন নেশা করি না, তবে সিগারেট খাই।
সাদিয়া- আমার বিয়ের মহরানা হবে, আপনি আর জীবনেও সিগারেট খাবেন না, কোন নেশা করবেন না।
আমি- আপনি কি সিরিয়াস?
সাদিয়া- হ্যাঁ, দুপুরের আগেই চলে আসেন। আব্বু আপনার সাথে কথা বলবে।

আমি সাদিয়াদের বাড়ী যাবার জন্য রেডি হচ্ছি, আজ শুক্রবার, এজন্য পাঞ্জাবীটা বের করে পড়লাম!
আম্মু- কিরে এতো সকালে, পাঞ্জাবী পরে কোথায়?
আমি- একটু শহরে যাবো,
আম্মু- এভাবে আর কতো দিন? কবে চাকুরী পাবি? আর কবে তোর বিয়ে দিবো?
আমি- হবে হবে, সব হবে।
আম্মু- তোর জন্য একটা মেয়ে খুজি?
আমি- বেকার ছেলেকে কে বিয়ে করবে?
আম্মু- আমার সোনার টুকরা ছেলে, কতো মেয়ে করবে?
আমি- সোনার দাম কমে গেছে...।
আম্মু- অন্য কোথাও খুজা আছে নাকি?
আমি- এখন ও ঠিক নাই, তখন হয়ে যেতে পারে।
আম্মু- শোন, কালো হলেও মেনে নিবো, কিন্তু যেন ভদ্র বাড়ীর মেয়ে হয়!
আমি- আচ্ছা,
আম্মু- কখন আসবি?
আমি- বিকেলে।
আম্মু- আচ্ছা ভালো যা,

শহরে গিয়ে আগে নামায পড়লাম! মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখলাম, ৩ টা মিসকল, আর ২ তা ম্যাসেজ!
আমি আতিয়া কে কল দিলাম।
আমি- এই তো আসছি, নামায পড়ছিলাম।
আতিয়া- ঠিক আছে আসেন।

১০ মিনিট পর আমি তাদের বাসায় গেলাম, দেখলাম একজন ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছে, সাদিয়া আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো।

আমি- আসসালামু আলাইকুম
সাদিয়ার আব্বু- ওয়ালাইকুম আসসালাম বসো!
আমি- জি, ধন্যবাদ।

তারপর আমাকে একের পর এক প্রশ্ন করেই গেলো, আর আমি উত্তর দিয়েই গেলাম, জানি এই রকম হবে, এজন্য বাসা আসার আগে, এক পিচ কেক, আর একটা 7up খেয়ে তার পর বাসায় ঢুকেছি।
সাদিয়ার আব্বু- সবই তো বুঝলাম, কিন্তু আতিয়া বলল, তুমি নাকি এখন ও কিছু করো না, তো বাবা হিসাবে বেকার ছেলের সাথে কীভাবে বিয়ে দেয়? সামনে আমি হজে যেতে চাই, তাই মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে তারপর হজে যাবো ভাবছি,

আমি- আমি যে এক বারেই বেকার তা না, একটা বিদেশী সংস্থাতে চাকুরী করি, কিন্তু ওদের কাজ যে ১২ মাস হয় সেটা না, এজন্য বলি যে আমি বেকার।
আতিয়ার আব্বু- যদিও কতো আয় করো, প্রশ্ন তা ঠিক না তারপর ও মেয়ের জীবন বলে কথা, তাই জিজ্ঞেস করছি।
আমি- যখন কাজ করি, প্রায় ১৫ হাজার টাকা চলে আসে।
সাদিয়ার আব্বু- ঠিক আছে, তোমার বাবা কে বলো আমাদের বাড়ী আসতে, আমরা কথা বলবো। এখন চলো, খেয়ে নাও।
আমি- জি আচ্ছা।

আমি কোন, বিদেশী সংস্থাতে চাকুরী করি না, তবে আমি বেকার ও না, কিন্তু আমি যা করি সেটা বলা যাবে না। আর ওটা আমি আমার পরিবার ও জানে না আমি কি করি।
সাদিয়ার আব্বু- কি ভাবছো চলো।
আমি- চলেন।

সে দিন বিকেলে চলে আসার পর, আমার মাথায় একটা জিনিস ই ঘুরতে লাগলো, আমার কি এই মেয়েকে বিয়ে করা ঠিক হবে, যে আমাকে এতো বিশ্বাস করে, এতো ভালোবাসে আমাকে? কিন্তু আমার ও তো নিজের জীবন আছে, আছে বেঁচে থাকার অধিকার, আছে একটু স্বপ্ন দেখার, তবে কেন না? আমি কেন পারবো না।

আরও কয়েকদিন পরের কথা.....

আজ আমার আর সাদিয়ার বিয়ে,
আর মহরানা হিসাবে, ২ ভরি সোনা, এগুলো অবশ্য আম্মুর পুরনো মালা ছিল, ঐ গুলো। আর সাদিয়ার সাথে আমার যে মহরানা, ঠিক হয়েছে সেটা ও আছে, তবে ওটা অলিখিতি ভাবে, ওটা বিশ্বাসের ওপর।

সন্ধার পর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি,
একজন- কিরে শালা, বিড়ি ধরা!
আমি- না রে, আর খাবো না।
অন্যজন- যা, বাবা! প্রথম দিন থেকেই এতো ভালো হয়ে গেলি, ভাবি পা কই?
আমি- কাল সকালে এসে পা ধরিস।
অন্যজন- আরে ভাবি তো এখন এখানে নাই, খেয়ে নিয়ে চকলেট খেয়ে নিবি।
।।
আমি- তাহলে তো তাকে ধোঁকা দেওয়া হয়ে যাবে, আর সামান্য একটা সিগারেটের জন্য ঐ মানুষকে ধোঁকা দিবো? যে সামান্য বিশ্বাসের ওপর একটা বেকার ছেলেকে বিয়ে করলো।
অন্যজন- আচ্ছা তুই মাঝে মাঝে ঢাকা যাস, করিস কি? কোম্পানি তে চাকুরী করলে ভালো করে কর, কি যে করিস বুঝি না
।
আমি- করবো, এখন বিয়ে হয়ে গেছে না?
অন্যজন- তুই চাইলে আমার এক বড় ভাই, ঢাকায় থাকে, আমি তার সাথে কথা বলবো।
আমি- না, বন্ধু এখন থাক, আচ্ছা আমি যাই।
অন্যজন- হ্যাঁ, যা, আর শোন, ভাবীকে আমাদের তরফ থেকে সালাম দিস, আমারাও বেকার, ইচ্ছা থাকলেও স্পেশাল ভাবে কিছু দিতে পারলাম না।

রাত ১১ টা!
আমি ঘরে গেলাম!
সাদিয়া- আজ সিগারেট খেয়েছেন?
আমি- কিছুটা চমকে গিয়ে, না খায় নি, বলেছি না যে আর খাবো না।
সাদিয়া- খুশী হলাম।
আমি- এখন বেশি টাকা নাই, তাই দামী কিছু দিতে পারলাম না, এই নাও
সাদিয়া- আমি তো আপনার কাছে দামী কিছু চাই নি।

আমি- তারপর ও কিছু দেওয়া আমার দায়িত্ব।
সাদিয়া- কি আছে, এই প্যাকেটে?
আমি- দেখো!

সাদিয়া নিজেই প্যাকেট টা খুলল,
সাদিয়া-ওয়াও! নীল শাড়ি,
জানি না, সাদিয়া শাড়ি সত্যি পছন্দ করেছে নাকি আমাকে খুশী করার জন্য বলছে,
আমি- তোমার পছন্দ হয়েছে?
সাদিয়া- হ্যাঁ অনেক, এই শাড়ি আমার ভালো লাগে নি, তার ওপর অনেক ভারি, আর রং টাও পছন্দ না,
আমি- হয়েছে, থাক! এতো খুশী হবার কিছু নাই।
সাদিয়া- এই শাড়ি টা এখন পরি?
।।
আমি- না থাক, কাল সকালে পরো।
সাদিয়া- ঠিক আছে, আপনার পছন্দ গুলো অনেক দামী, যেমন ধরুন আমাকে পছন্দ করেছেন।
আমি- হা হা হা হা.........।।
সাদিয়া- হাঁসার কি হলো?
আমি- আমি তোমাকে পছন্দ করেছি নাকি তুমি আমাকে?
সাদিয়া- বিয়ে তো করেছেন। তাহলে আপনিও আমাকে পছন্দ করেন।
আমি- জি না।
সাদিয়া- তাই নাকি? দেখা যাবে।
আমি- হম, দেখো।

সাদিয়া- আচ্ছা আপনার নীল রং পছন্দ?
আমি- না, দোকানে এই একটাই ভালো শাড়ি ছিল। তাই নিয়ে আসলাম।
সাদিয়া- আপনাকে নিয়ে আর পারলাম না। আচ্ছা আপনার প্রেমিকা ছিল না?
আমি- হ্যাঁ ছিল তো।
সাদিয়া- কি হয়েছে ওর?

আমি- ওকে বলেছি, তোমার সাথে সংসার করতে ভালো না লাগলে ওকে বিয়ে করে নিবো।
সাদিয়া- ইস্ম শখ কতো, মেরে হাড্ডি ভেঙ্গে দিবো। আমার স্বামীর ওপর আর কারো কোন অধিকার নাই,
আমি- ও তাই বুঝি? এতো ভালোবাসা কবে থেকে?
সাদিয়া- যে দিন প্রথম দেখেছি, ঐ মেয়েকে চড় মারতে।
আমি- আচ্ছা! আমি দেখেছি, ছেলেরা মেয়েদের কোন উপকার করলে মেয়েরা তার প্রেমে পড়ে, ছবি বা নাটকেও সেটা ই দেখায়, কিন্তু তুমি তো দেখছি উলটো।

সাদিয়া- দেখেন, একটা মেয়ে বিপদে পড়লে, অনেক ছেলেই সাহায্য করে, কিন্তু একজন বয়স্ক মানুষ বিপদে পড়লে কতো জন আসে, তার ওপর যদি সেটা একটা সুন্দরী মেয়ের বিরুদ্ধে হয়, ওখানে অনেক জন তো ছিল, কেউ আসলো না কেন? কিন্তু যদি ওখানে ঐ মেয়ে বিপদে পড়তো অনেক ছেলে আসতো।

তাহলে এখন আপনি বলেন, আমি কি মানুষ চিনতে ভুল করেছি?
আমি- আর কি বলবো, কিন্তু ভালো মানুষ দিয়ে, পেটের ভাত হয় না।
সাদিয়া- আবার সেই একি কথা? আমি কি আপনার কাছে খুব বেশি কিছু চেয়েছি? একজন মানুষের যেসব মৌলিক প্রয়োজন, ওগুলো দিতে পারলেই আমি খুশী।
আমি- ঠিক আছে।

পরের দিন সকালে সাদিয়ার ডাকে আমার ঘুম ভাংলো, দেখি নীল শাড়ি পড়ে একেবারেই রেডি, এবার মেয়েটাকে সত্যি খুব সুন্দর লাগছে...।
সাদিয়া- এই, কি দেখছেন? উঠেন, নাস্তা হয়ে গেছে।
আমি- তোমাকে একটু দেখছি।
সাদিয়া- কেন, আমাকে নাকি পছন্দ না,
আমি- আরে ওটা তো লাল শাড়ি পড়া একটা মেয়েকে বলেছিলাম।

সাদিয়া- এখন?
আমি- একটা নীল পরীকে দেখেছি, আর এই পরীর প্রেমে না পড়ে কি থাকা যায়?
সাদিয়া- থাক, আর ঢং দেখাতে হবে না। এখন উঠেন, নাস্তা খেয়ে বাজার করে নিয়ে আসেন।

আমি নাস্তা করে বাজার করতে গেলাম।। বাজার শেষ করে অনেক খুশী হয়েই বাড়ীর দিকে আসছিলাম,
হটাৎ একটা ফোন আসলো!
আমি- আসসালামু আলাইকুম ।
ফোন ভয়েস- বাসর রাত কেমন কাটলো?
আমি- আপনি কীভাবে জানলেন যে আমি বিয়ে করেছি?

ফোন ভয়েস- তুমি কখন কি করো, সব খবর রাখি, এখন বাজার করে বাড়ী যাচ্ছ, যাক ওটা কথা না, আজ সোমবার, বুধবারের মধ্যে তুমি ঢাকা আসবে, তোমাকে এতো দিন যে জন্য ট্রেনিং করলাম, এখন তার পরীক্ষা, আর এখানে ফেল করলে চলবে না।
আমি- আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও আমি আপনাদের ভরসা নষ্ট করবো না।
ফোন ভয়েস- তোমাকে অনেক কষ্ট করে তৈরি করেছি, এটা তুমি ভালো করেই জানো।
আমি- জি স্যার! আমি জানি।
ফোন ভয়েস- ঠিক আছে, এই দুই দিন সাদিয়ার সাথে সময় কাটাও, মেয়েটা অনেক ভালো। এখন রাখি।
আমি- জি স্যার! আসসালামু.......

চলবে>>>>>>>>

লিখালিখিঃ মোঃ আবুল হাসান

Call now to connect with business.