Gaanbaz

Gaanbaz GAANBAZ is a standard and High-Quality Music Video platform. The Videos published in this Page all a

১৯৯৫ সাল। 'দেহঘড়ি' শিরোনামে একটি অডিও এ্যালবাম বাজারে আসে। একটি অডিও ক্যাসেটে সাধারণ ১২টি ট্র্যাক থাকত; মানে ১২টি ভিন্ন-...
19/08/2023

১৯৯৫ সাল। 'দেহঘড়ি' শিরোনামে একটি অডিও এ্যালবাম বাজারে আসে।

একটি অডিও ক্যাসেটে সাধারণ ১২টি ট্র্যাক থাকত; মানে ১২টি ভিন্ন-ভিন্ন গান থাকত ।কিন্ত 'দেহঘড়ি' এমন একটি এ্যালবাম, যেখানে এপিঠ-ওপিঠ মিলিয়ে ১২টি ট্র্যাকই ছিল 'মন আমার দেহঘড়ি' শিরোনামের একটিই গান! যা ছিল বাংলা গানের ইতিহাসে প্রথম রক-লোকগীতি ফিউশন। গানটি দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল, এক গানে 'দেহঘড়ি' হয়েছিল সুপার হিট।

অডিও এ্যালবাম রিলিজ হলে শুধুমাত্র প্রথম দিনই ৩০,০০০ (তিরিশ হাজার) কপি ক্যাসেট বিক্রি হয়। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম দৃষ্টান্ত।

গায়ের রং কালো। মেদহীন লম্বা শরীর। মাথাভরা বাবরি চুল। হাতে ‘বওয়া’ নিয়ে মঞ্চে উঠে যখন দরাজ গলায় গেয়ে উঠতেন ‘মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি কোন মিসতিরি বানাইয়াছেন...’ তখন মঞ্চের সামনে বসা অগণিত শ্রোতা-দর্শক বিমোহিত হয়ে পড়তেন সেই সুরে।

তাঁর গায়কি ছিল অসাধারণ। বাংলার মটিঘেঁষা সুর অনন্য হয়ে উঠত তাঁর কণ্ঠে। পল্লিগীতি, মুর্শিদি, ভাওয়াইয়া, দেহতত্ত্ব, লালন-হাসনের গানসহ বৈভবময় লোকসংগীতে প্রায় সব ধরনের গানেই ছিল তাঁর সহজাত পারঙ্গমতা। তবে তাঁর একেবারে নিজের ক্ষেত্র ছিল জারিগান। এ ক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি। বলা যায় লোকসংগীতের এই বিশেষ ধারাটি তাঁর পরিচর্যাতেই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে নগরীর শ্রোতার কাছে উঠে এসেছিল।

তবে তাঁর এই শিল্পী হয়ে ওঠা অতটা সহজ ছিল না। দেশ স্বাধীনের পর হাইকোর্টে প্রতি বৃহস্পতিবার কাওয়ালী গানের আসর বসত। সেই আসরে রহমান বয়াতীর জন্য ১০ মিনিট সময় রাখা হতো বাংলা গান গাওয়ার জন্য এবং তিনি দুটো গান গাইতেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন অনুষ্ঠান প্রযোজক তাঁর গান শুনে তাঁকে টেলিভিশনে গান গাওয়ার অনুরোধ জানান এবং তিনি অডিশনে অংশ নেন। যখন জানতে পারেন রহমান বয়াতী আদি ঢাকার মানুষ তখন অডিশন কর্তারা জানিয়ে দেন তাঁকে দিয়ে গান হবে না। কারণ, পুরনো ঢাকার মানুষজন শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারেন না। আর যারা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারেন না, তাঁদেরকে দিয়ে গান হয় না!

দ্বিতীয়বার অডিশনে একই মন্তব্য করায় তৃতীয়বার তিনি নিজের বাড়ি নবাবগঞ্জ বললে অডিশনে পাশ হন এবং পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের বিশেষ গ্রেডের শিল্পী ছিলেন।

হ্যাঁ, বলছি আবদুর রহমান বয়াতীর কথা।
তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং প্রসিদ্ধ লোকসঙ্গীত শিল্পী।

রহমান বয়াতীর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি, ঢাকার দয়াগঞ্জে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। বাড়িতে গান-বাজনার চর্চা ছিল না। তবে তাঁর গানের গলা ছিল চমৎকার। শৈশব থেকেই তিনি মেতেছিলেন লোকগানের সুরে। পরে গান শিখেছেন বিক্রমপুরের বিখ্যাত লোকসংগীতশিল্পী আলাউদ্দিন বয়াতীর কাছে। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, সরকারি বিভিন্ন তথ্যচিত্র ও বিজ্ঞাপনের অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।

তিনি ১৯৮২ সালে ‘আবদুর রহমান বয়াতী’ নামে বাউল দল গড়ে তোলেন। বাজাতেন দোতারা, হারমোনিয়াম, খঞ্জনি ও ভায়োলিন।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, চীন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ৪২টি দেশে বাউল গান পরিবেশন করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি গান গেয়েছিলেন।

আবদুর রহমান বয়াতির অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে পাঁচ শতাধিক। এর মধ্যে জারিগানের ক্যাসেট তিন শতাধিক। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসব গান সংগ্রহ করে গেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনটি মিক্স অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে-

‘মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে...'
‘আমি ভুলি ভুলি মনে করি প্রাণে ধৈর্য্য মানে না’
‘আমার মাটির ঘরে ইঁদুর ঢুকেছে...’
‘মরণেরই কথা কেন স্মরণ কর না...’
‘মা আমেনার কোলে ফুটল ফুল...’
‘ছেড়ে দে নৌকা মাঝি যাবো মদিনা...’

এছাড়া 'খোদা বান্দা' শিরোনামে একটি উর্দু কাওয়ালী গান লিখেছেন, সুর করেছেন এবং গেয়েছেন।

তিনি ১৯৮৯ সালে হাফিজুদ্দিন পরিচালিত ‘অসতী’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৫ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেছেন।

১৯ আগস্ট ২০১৩ সালে রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আজ ১৯ আগষ্ট বাংলার বাউল সাধক কিংবদন্তি বাউল শিল্পী আব্দুর রহমান বয়াতির মৃত্যু বার্ষিকী।

গুণী এই শিল্পীর প্রয়াণ দিবসে GAANBAZ পরিবারের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা।

ওপারে ভালো থাকবেন প্রিয় মানুষ, গানের মানুষ।

আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনি...
16/08/2023

আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর বাবা ইশহাক চোধুরী এবং মা নুরজাহান বেগম।
তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর তাঁর বাবা চট্টগ্রাম শহরের জুবীলি রোড এলাকায় একটি বাড়ি ক্রয় করেন, যেখানে বাচ্চুর বেশিরভাগ কৈশর জীবন অতিবহিত হয়। ১৯৭৩ সালে তাঁর বাবা তাঁকে তাঁর ১১তম জন্মদিনে একটি গীটার উপহার দেন।

কৈশর জীবনের শুরুর দিকে তিনি ব্রিটিশ এবং আমেরিকান বিভিন্ন রক ব্যান্ডের গান শোনা শুরু করেন। তৎকালীন সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রক ব্যান্ড লেড জেপলিন, ডিপ পার্পল, কুইন, দ্য জিমি হেনড্রিক্স এক্সপেরিয়েন্স ইত্যাদি। তারমধ্যে জিমি হেনড্রিক্স এর গীটার বাজানো তাঁকে বেশি মুগ্ধ করেছিল।

তাঁকে গীটার শেখাতেন জেকব ডায়াজ নামের একজন বার্মিজ। যিনি তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রামে থাকতেন।

১৯৭৬ এর দিকে বাচ্চু তাঁর এক বন্ধুর থেকে ধার নিয়ে ইলেকট্রিক গীটার বাজাতেন, যা ছিল একটি টিস্কো গীটার। পরে যখন গীটারটির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখান, তাঁর বন্ধু তাকে গীটারটি দিয়ে দেন।

১৯৭৫ সালে তাঁকে সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয় এবং ১৯৭৯ সালে ওই স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করেন।

চট্টগ্রামে কলেজ জীবনে সহপাঠী বন্ধুদের নিয়ে তিনি "গোল্ডেন বয়েজ" নামে একটি ব্যান্ডদল গড়ে তোলেন। পরে নাম বদলে করা হয় "আগলি বয়েজ"। সেই ব্যান্ডের গায়ক ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ আর বাচ্চু ছিলেন গিটারিস্ট। সেই সময়ে তারা মূলত পটিয়ায় বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানে গান গাইতেন এবং শহরের বিভিন্ন ক্লাবে গান করতেন।

১৯৭৭ সালে তার নিজের ব্যান্ডে কাজ করার পাশাপাশি 'ফিলিংস' নামের একটি রক ব্যান্ডে যোগ দেন গিটার বাদক হিসেবে, যেখানে তিনি কাজ করেছিলেন জেমস এর সঙ্গে। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ওই ব্যান্ডে কাজ করেন।

১৯৮০ সালে ফিলিংস চট্টগ্রামের একটি ক্লাবে অনুষ্ঠান করছিল, তখন সেখানে উপস্থিত ছিল সোলস ব্যান্ডের নকীব খান। বাচ্চুর গিটার বাজানো দেখে মুগ্ধ হয়ে সোলসের গায়ক তপন চৌধুরীকে বাচ্চুর ব্যপারে বলেন। পরদিন রাতে তারা 'ফিলিংস' এর অনুষ্ঠান দেখতে আসেন এবং বাচ্চুকে সোলসে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বলেন।

বাচ্চু একই বছরের মাঝামাঝি সময়ে "আগলি বয়েজ" এর গায়ক কুমার বিশ্বজিৎ এর সাথে যোগ দেন। পরবর্তী দশ বছর সোলস এর মূল গিটার বাদক, গীতিকার এবং গায়ক (অনিয়মিত) হিসেবে কাজ করেন।

সোলসের সাথে চারটি অ্যালবামে কাজ করেছিলেন: সুপার সোলস (১৯৮২) যা ছিল বাংলাদেশের প্রথম গানের অ্যালবাম, কলেজের করিডোরে (১৯৮৫), মানুষ মাটির কাছাকাছি (১৯৮৭) এই অ্যালবামটিতেই বাচ্চুর সোলসের হয়ে গাওয়া প্রথম গান "হারানো বিকেলের গল্প" প্রকাশ পায়। সোলসের সাথে তার শেষ অ্যালবামটি ছিল ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট, যা প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৮৮ সালে।

১৯৯০ সালের শেষের দিকে বাচ্চু ব্যান্ডটি ছেড়ে নিজের ব্যান্ড লিটল রিভার ব্যান্ড গঠন করেন, যা পরবর্তী সময়ে 'লাভ রানস ব্লাইন্ড' বা সংক্ষেপে এল আর বি নামে জনপ্রিয়তা লাভ করে। সোলস ত্যাগ করার পরেও বাচ্চু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তপন চৌধুরী, নকিব খান এবং কুমার বিশ্বজিৎ এর সাথে অনুষ্ঠান করেছেন।

৯০ দশকের শেষদিকে বাচ্চু সোলস থেকে বের হয়ে আসার পর ১৯৯১ সালে ঢাকায় আসেন এবং 'ইয়েলো রিভার ব্যান্ড" নামের একটি ব্যান্ড গঠন করেন ৫ এপ্রিল ১৯৯১ সালে, এস আই টুটুল (কীবোর্ডস), সাইদুল হাসান স্বপন (বেজ গিটার) এবং হাবিব আনোয়ার জয় (ড্রামস)।

১৯৯১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তারা ভারতে অনুষ্ঠান করতে গেলে তাদের ভুলে "লিটল রিভার ব্যান্ড" নামে পরিচিত করানে হয়। নামটি বাচ্চু পছন্দ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর ব্যান্ড নামকরণ করেন।

১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে, এলআরবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রথম কনসার্ট করে। কনসার্টটি বামবা দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।

১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে, তাঁরা বাংলাদেশে প্রথম ডাবল অ্যালবাম: এলআরবি ১ এবং এলআরবি ২ প্রকাশ করেছিলেন। ব্যান্ডটির তৃতীয় স্টুডিও অ্যালবাম সুখ জুনে মুক্তি পায় এবং এটি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ রক অ্যালবামগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এতে "চলো বদলে যাই" গানটি ছিল যা বাচ্চুর সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ হিসাবে বিবেচিত।

১৯৯০ দশকে আরও কয়েকটি অ্যালবাম প্রকাশ করে এবং শীঘ্রই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রক ব্যান্ডের মধ্যে একটি হয়ে ওঠে।

১৯৯৬ সালে, তারা ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠান করেছিল, যা বাংলাদেশের বাইরে তাদের প্রথম কনসার্ট ছিল। এলআরবি নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন অনুষ্ঠান করা একমাত্র বাংলাদেশী ব্যান্ড।

একজন একক শিল্পী হিসেবেও তিনি সফলতা পেয়েছিল। তার প্রথম একক অ্যালবাম রক্ত গোলাপ, যা ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় অ্যালবাম ময়না (১৯৮৮) দিয়ে, তিনি তার একক কর্মজীবনের সফলতা অর্জন করেন এবং পরে কষ্ট (১৯৯৫) অ্যালবামটি প্রকাশ করেন, যা প্রচুর সফলতা অর্জন করে।

২০০৭ সালে তিনি দেশের প্রথম বাদ্যযন্ত্রগত অ্যালবাম সাউন্ড অফ সাইলেন্স প্রকাশ করেন।
বাচ্চু এল আর বি'র সাথে এবং একজন একক শিল্পী হিসেবে প্রচুর অ্যালবাম বিক্রয় করেছেন। বাচ্চু বাংলাদেশে একজন অন্যতম সেরা গীটারবাদরক এবং অন্যতম প্রভাবশালী গীটারবাদক।

এল আর বি'র সাথে ছয়টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার এবং একটি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন। ২০০৪ সালে বাচসাস পুরস্কার জিতেছিলেন সেরা পুরুষ ভোকাল বিভাগে। ২০১৭ সালে টেলে সিনে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার জিতেছিলেন।

বাচ্চু তার বান্ধবী ফেরদৌস চন্দনাকে বিয়ে করেছিলেন ১৯৯১ সালের ৩১শে জানুয়ারি। তাদের দু'টি সন্তান আছে। মেয়ে ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব এবং ছেলে আহনাফ তাজওযার আইয়ুব।

ছয় বছর ধরে ফুসফুসে পানি জমার অসুস্থতায় ভোগার পর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকায় নিজ বাসভবনে মারা যান।

আজ তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে GAANBAZ পরিবার তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।

ওপারে ভালো থাকবেন প্রিয় শিল্পী।

06/05/2023

বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের মেলা...

তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী...
25/05/2022

তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত।

তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ– দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম।

বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনি জীবনেও ছিলেন।

১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায় এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নজরুল। তাঁর ডাক নাম ছিল "দুখু মিয়া"।

১৯০৮ সালে তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। তখন তার বয়স মাত্র নয় বছর। পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তার শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে জীবিকা অর্জনের জন্য কাজে নামতে হয় তাঁকে। এসময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সাথে হাজি পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াযযিন হিসেবে কাজ শুরু করেন। এসব কাজের মাধ্যমে তিনি অল্প বয়সেই ইসলামের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান যা পরবর্তীকালে তার সাহিত্যকর্মে বিপুলভাবে প্রভাবিত করে। তিনিই বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার চর্চা শুরু করেছেন বলা যায়।

নজরুলের লেখার খাতার একটি পাতা : “তৌহিদেরই মুর্শিদ আমার মোহাম্মদের নাম”

মক্তব, মসজিদ ও মাজারের কাজে নজরুল বেশি দিন ছিলেন না। বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একটি লেটো (বাংলার রাঢ় অঞ্চলের কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক চর্চার ভ্রাম্যমাণ নাট্যদল) দলে যোগ দেন। তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লেটো দলের বিশিষ্ট উস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দূ ভাষায় তার দখল ছিল। এছাড়া বজলে করিম মিশ্র ভাষায় গান রচনা করতেন। ধারণা করা হয়, বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল লেটো দলে যোগ দিয়েছিলেন। এছাড়া ঐ অঞ্চলের জনপ্রিয় লেটো কবি শেখ চকোর (গোদা কবি) এবং কবিয়া বাসুদেবের লেটো ও কবিগানের আসরে নজরুল নিয়মিত অংশ নিতেন। লেটো দলেই সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্য গান ও কবিতা লিখতেন। নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। একইসাথে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ পুরাণসমূহ অধ্যয়ন করতে থাকেন। সেই অল্প বয়সেই তাঁর নাট্যদলের জন্য বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে চাষার সঙ, শকুনীবধ, রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ, দাতা কর্ণ, আকবর বাদশাহ, কবি কালিদাস, বিদ্যাভূতুম, রাজপুত্রের গান, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ এবং মেঘনাদ বধ।

একদিকে মসজিদ, মাজার ও মক্তব জীবন, অপর দিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের অনেক উপাদান সরবরাহ করেছে। নজরুল কালীদেবীকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা সঙ্গীতও রচনা করেন, নজরুল তাঁর শেষ ভাষণে উল্লেখ্য করেন - “কেউ বলেন আমার বানী যবন কেউ বলেন কাফের। আমি বলি ও দুটোর কোনটাই না। আমি শুধু হিন্দু মুসলিমকে এক জায়গায় ধরে নিয়ে হ্যান্ডশেক করানোর চেষ্টা করেছি, গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছি।”

১৯১০ সালে নজরুল লেটো দল ছেড়ে ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন। এই নতুন ছাত্রজীবনে তার প্রথম স্কুল ছিল রাণীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুল, এরপর ভর্তি হন মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে যা পরবর্তীতে নবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশন নামে পরিচিতি লাভ করে। আর্থিক সমস্যা তাকে বেশ দিন এখানে পড়াশোনা করতে দেয়নি। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। প্রথমে যোগ দেন বাসুদেবের কবিদলে। এর পর একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা এবং সবশেষে আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। এই দোকানে কাজ করার সময় আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহ'র সাথে তার পরিচয় হয়। দোকানে একা একা বসে নজরুল যেসব কবিতা ও ছড়া রচনা করতেন তা দেখে রফিজউল্লাহ তার প্রতিভার পরিচয় পান। তিনিই নজরুলকে ১৯১৪ সালে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। ১৯১৫ সালে তিনি আবার রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে যান এবং সেখানে অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৭ সাল পর্যন্ত এখানেই পড়াশোনা করেন।

১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষার না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। প্রথমে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের জন্য সীমান্ত প্রদেশের নওশেরায় যান। প্রশিক্ষণ শেষে করাচি সেনানিবাসে সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন। তিনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষভাগ থেকে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সৈনিক কর্পোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পর্যন্ত হয়েছিলেন। উক্ত রেজিমেন্টের পাঞ্জাবী মৌলবির কাছে তিনি ফার্সি ভাষা শিখেন। এছাড়া সহ-সৈনিকদের সাথে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে সঙ্গীতের চর্চা অব্যাহত রাখেন, আর গদ্য-পদ্যের চর্চাও চলতে থাকে একই সাথে। করাচি সেনানিবাসে বসে নজরুল যে রচনাগুলো সম্পন্ন করেন তার মধ্যে রয়েছে, বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী (প্রথম গদ্য রচনা), মুক্তি (প্রথম প্রকাশিত কবিতা); গল্প: হেনা, ব্যথার দান, মেহের নেগার, ঘুমের ঘোরে, কবিতা সমাধি ইত্যাদি। এই করাচি সেনানিবাসে থাকা সত্ত্বেও তিনি কলকাতার বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার গ্রাহক ছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রবাসী, ভারতবর্ষ, ভারতী, মানসী, মর্ম্মবাণী, সবুজপত্র, সওগাত এবং বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা। এই সময় তার কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং ফার্সি কবি হাফিজের কিছু বই ছিল। এ সূত্রে বলা যায় নজরুলের সাহিত্য চর্চার হাতেখড়ি এই করাচি সেনানিবাসেই। সৈনিক থাকা অবস্থায় তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। এ সময় নজরুলের বাহিনীর ইরাক যাবার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ থেমে যাওয়ায় আর যাননি। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হলে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙে দেয়া হয়। এরপর তিনি সৈনিক জীবন ত্যাগ করে কলকাতায় ফিরে আসেন।

তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়। স্থানীয় মসজিদে মুয়াযযিন হিসেবেও কাজ করেছিলেন। মক্তবে কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। কৈশোরে বিভিন্ন থিয়েটার দলের সাথে কাজ করতে যেয়ে তিনি কবিতা, নাটক এবং সাহিত্য সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করেন।

ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তাঁর বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালোবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন।

ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল, এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামা সংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন।

নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা "নজরুল গীতি" নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়।

মধ্যবয়সে তিনি পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন। এসময় তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ৭৭ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে GAANBAZ-এর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।

Address

Mirpur
1216

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Gaanbaz posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Gaanbaz:

Videos

Share

Nearby media companies


Other Music production in Mirpur

Show All

You may also like