মাসিক রেনেসাঁ-Renesa

মাসিক রেনেসাঁ-Renesa মুহিবুর রহমান সুহেল সম্পাদিত মাসিক র?

জাপানের তাকামায়া গ্রামে একজন জ্ঞানী ও বৃদ্ধ কৃষক বাস করতেন। কৃষক লোকটির একটা সুন্দর ও শক্তিশালী ঘোড়া ছিল। কৃষি কাজে , ...
07/04/2024

জাপানের তাকামায়া গ্রামে একজন জ্ঞানী ও বৃদ্ধ কৃষক বাস করতেন। কৃষক লোকটির একটা সুন্দর ও শক্তিশালী ঘোড়া ছিল। কৃষি কাজে , ভারী জিনিস বহনে ও নিত্যদিনের চলা ফেরায় ঘোড়াটিকে তিনি ব্যবহার করতেন।
একদিন ঘোড়াটি হারিয়ে গেলো। তাকে আর খুঁজে পাওয়া গেলো না। কৃষকের স্ত্রীর খুব মন খারাপ। কিন্তু কৃষক লোকটির কোন অস্থিরতা নেই। তার কোন আফসোস নেই। হারিয়ে যাওয়া ঘোড়ার জন্য তার কোন দুঃচিন্তা নেই। তাকে দেখে মনে হচ্ছে কোন কিছুই যেন হারায়নি।
আসে পাশের প্রতিবেশীরা এসে বললো, "তোমার কি দুর্ভাগ্য ! একটা মাত্র ঘোড়া তাও হারিয়ে গেলো "
এই কথা শুনে কৃষক লোকটি একটু মৃদু হেসে বললো , "হতে পারে"
তার কিছুদিন পর ঘোড়াটি আবার কৃষকের বাড়ি ফিরে আসলো এবং তার সাথে আরোও তিনটি বন্য ঘোড়া।
কৃষকের বাড়িতে অনেক আনন্দ। শুধু হারানো ঘোড়া ফিরে আসেনি, তার সাথে আবার আরোও তিনটা ঘোড়া।
প্রতিবেশীরা আবার দেখতে আসলো। সবাই লোকটিকে বলতে থাকলো, "তোমার কি সৌভাগ্য, হারানো ঘোড়া ফিরে পেয়েছো সেই সাথে আবার তিনটা বাড়তি ঘোড়া"
কৃষক আগের মতই হাসি মুখে বললো, "হতে পারে"
দুই দিন পর কৃষকের একমাত্র ছেলে একটা বন্য ঘোড়ায় চড়তে চেষ্টা করে। কিন্তু ঘোড়া থেকে ছিটকে পড়ে যায় এবং পড়ে গিয়ে তার পা ভেঙে ফেলে।
এই খবর শুনে প্রতিবেশীরা এসে খুবই আফসোস করলো। কৃষককে দুঃখ করে বললো, "এমন করে ছেলের পা ভেঙে গেলো, সত্যিই বড় দুর্ভাগ্য!"
কথা শুনে কৃষক লোকটি মুচকি হেসে বললো,
"হতে পারে"
পরদিনই কৃষকের বাড়িতে রাজার সৈন্যরা এসে হাজির। যুদ্ধের জন্য তারা গ্রামের যুবক ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে যেতে এসেছে। কিন্তু কৃষকের ছেলের ভাঙা পা দেখে তাকে না নিয়েই চলে গেলো।
এইবার প্রতিবেশিরা এসে সবাই বললো, "তোমারতো দেখছি অনেক বড় সৌভাগ্য, ছেলেকে আর যুদ্ধে গিয়ে মরতে হবে না"
মৃদু হেসে কৃষকের একই উত্তর, "হতে পারে"

আমাদের জীবনের ঘটনাগুলোও অনেকটা একইরকম। কোন ঘটনা কি প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে তা আমরা আগে থেকে জানি না বা জানতে পারি না। তাই, সাময়িক যে ঘটনা ভালো সেটা পরে ভালো নাও থাকতে পারে, ঠিক তেমনিভাবে খারাপ ঘটনার পিছনেও অনেক ভালো কোনো ফল থাকতে পারে।
জীবনে অন্ধকার যেমন আসবে, ঠিক তেমনিভাবে আলোও আসবে। সুখ এবং দুঃখ দুটিই আমাদের জীবনের অংশ।

ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত

বউয়ের সাথে রাগ করে একটা পার্কে এসেছি।  পার্কের ভেতরে ঢুকতেই হঠাৎ একটি রঙ্গনফুলের গাছের পাশে বসে থাকা বৃদ্ধ লোক চোখে পড়লো...
10/03/2024

বউয়ের সাথে রাগ করে একটা পার্কে এসেছি। পার্কের ভেতরে ঢুকতেই হঠাৎ একটি রঙ্গনফুলের গাছের পাশে বসে থাকা বৃদ্ধ লোক চোখে পড়লো। বৃদ্ধ লোকটার নিরব কান্না আমার রাগটাকে কোথাও হাওয়া করে দিলো। বেঞ্চির সাথে হেলান দিয়ে তাঁর নিরব কান্নার সাক্ষী হয়তো রঙ্গন ফুল আর আমিই হলাম। এই বয়সে জীবনের একাকিত্ব বড্ড পোড়ায়। তাহলে উনি কী সেই কারনেই কাঁদছেন? কিন্তু তাঁর ওই নিরব কান্নায় কোথাও যেন অসহায়তা অনেকাংশে জুড়ে আছে। এক-পা দু-পা করে আমি এগিয়ে গেলাম। তাঁর পাশের খালি জায়গাটা দখল করলাম। আমার উপস্থিতি হয়তো উনি টের পেলেন। একটু সরে গিয়ে আমায় জায়গা করে দিলেন। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো,তিনি তাঁর চোখের জল মুছলেন না। আমি একটু আশ্চর্য হলাম। আমাকে দেখে একটু লজ্জিত হয়েও উনার চোখের জল মোছা উচিত ছিলো। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। তাঁর কী কোন বিষেস কারণ আছে। এবার যেন আমার কৌতুহল আরো বেড়ে গেলো। আমি তাঁর কাঁধে হাত রেখে বললাম।

_ ও চাচা কাঁদছেন কেন? কেউ বকেছে। অবশ্য ছোট্ট বাচ্চাদের একটু বকা দিলেই তাঁরা কেঁদে দেয়। আপনি তো আর বাচ্চা নন! কি ঠিক বলিনি।

আমার কথায় তিনি কোন ভাবভঙ্গি প্রকাশ করলেন না,সেটা তাঁর চেহারা দেখে বুঝলাম। তাই আরো একটু কাছে এগিয়ে গিয়ে বললাম।

_ আমি তো আপনার ছেলের মতো! ভেতরের কষ্টটা একটু খুলে বলুন।

এবারের কথাটা হয়তো তাঁর মনে ধরেছে। তাই তিনি চোখের জল মুছে আকাশ পানে তাকালেন। আমিও উনার দেখাদেখি আকাশের ওই তিব্র কড়া রোদের দিকে তাকালাম। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই আমার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়তে রইলো। পকেট থেকে রুমালটা বের করে চোখটা মুছে নিলাম। বৃদ্ধ
লোকটা তখনো আকাশ পানে চেয়ে আছে৷ আমি কয়েক সেকেন্ড তাকাতে পারিনি,আর সে এখনো তাকিয়ে আছে আশ্চর্য। কিছু বলতে উদ্যোগ হলে তিনি হঠাৎ মুখ খুললেন।

_ বুঝলে বাবা, মা জোর করে এক গরীব ঘরের মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দিয়েছিলো। না ছিলো রূপ না ছিলো ভালো কোন গুন। এটাই ভাবতাম এবং ভেবে এসেছি। বাবা ছোট বেলায় মারা যাওয়ায়,মা কষ্ট করে মানুষ করেন। তাই তাঁর কথা ফেলতে না পেরে সিদ্ধান্ত নিলাম ওই গেয়ো মেয়েকে বিয়ে করবো। করলাম বিয়ে। কিন্তু কেন জানি মেয়েটার সাথে আমার বনি বনাত হতো না। তাই তাঁর ভালো খারাপ দু'টোই আমার অসয্য লাগতো। যখনই ভাবতাম ওর সাথে আমার সারাজীবন কাটাতে হবে,বিশ্বাস করো মাথাটা যন্ত্রণায় ফেটে যেত। তবুও মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতাম না। কিন্তু কিছু চাপা রাগ থেকে প্রায় ওকে ঘর বন্দী করে মারতাম। আর বেচারি চুপচাপ সয্য করে নিতো। তারপর কয়েক বছর পর ওর কোল আলো করে জন্ম নিলো আমার সন্তান। খোকার জন্মের দিন মনে হলো,জীবনে হয়তো এই প্রথম কোন কাজ সে করেছে। আমি ছুটে গিয়ে ছেলেকে কোলে নিলাম। এ-গালে ও-গালে চুমুতে ভরিয়ে দিলাম! অথচ যাঁর মাধ্যমে মহান আল্লাহ ওকে আমার ঘরে দিলেন তাঁর খবর একবারও নিলাম না। এভাবেই দিন কেটে বছরে গড়িয়ে গেলে। আগে ওকে বকাঝকা করার কোন কারণ খুঁজে না পেলেও এখন খোকার সূত্র ধরে ওকে আমি প্রায়শই হুমকিধামকি দেই। আর ও চুপচাপ শুনে যায়। খোকার তিন বছর বয়সে মা মারা গেলো। এবার যেন আমি হাতে চাঁদ পেলাম। কথায় কথায় গায়ে হাত তোলা বাবা-মা তুলে কথা বলা এটাই যেন আমার কাজ হয়ে উঠলো। শুধুমাত্র মায়ের শেষ ইচ্ছার জন্য ওকে কখনো ছেড়ে দিতে পারিনি। যাক সে-সব কথা! আসল কথা বলি। ওকে পছন্দ করতাম না বলে,ওর ভালোটাও মনে হতো খারাপ। আমি যখন কোন খাবার আনতাম খোকার জন্য! তখন ও সেটা অল্প কিছু খোকাকে দিতো, বাকিটা রেখে দিতো। আর খোকা তো কান্নাকাটি করে বাড়ি মাথায় তুলতো। আর খোকার কান্না দেখে আমি ভুল ঠিক বিচার না করেই ওকে রাগারাগি করতাম। এটাও বলতাম আমি চলে গেলে তুই খাবি এগুলো। আর ও অসহায়ের মতো তাকিয়ে বলতো।
_ তুমি যা ভাবছো তা না। বাচ্চাদের একসাথে খাবারের সব দিয়ে দিলে,ওদের নজর সব সময় বেশি থাকবে। যখন অভাবের জন্য কম কিছু পাবে,তখন ওদের হবে না।
আর ওর এই কথা শুনে ওকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বাকি রেখে দেওয়া খাবার খোকাকে এনে দিতাম। এভাবেই আমি আমার খোকাকে ছোট থেকেই চোখ বড় বানিয়ে দেই। যা চাইতো সেটা সাথে সাথে দিয়ে দেওয়া। যখন লাগবে বলতো,তখনই প্রশ্ন না করে সেটা কিনে দেওয়া। নিজের পছন্দের খাবার না খেয়ে ওকে দিয়ে দেওয়া! মানে একপ্রকার ওকে বেপথে দেওয়ার মতো সব কাজ আমি করেছি। এভাবে সময় গড়িয়ে বহুবছর কেটে গেছে। আমার বয়স ষাটের দশকে গিয়ে ঠেকেছে। ওই বয়সেও আমি আমার স্ত্রীর সাথে আগের মতোই ব্যবহার করেছি। আমার দেখাদেখি ছেলেটাও মা'কে পছন্দ করতো না। কারণ আমি তাঁকে বেপথে চলতে শিখিয়েছি,আর তাঁর মা বাঁধা দিয়েছে সেই পথে হাঁটতে। মেরেছে, বকা দিয়েছে বুঝিয়েছে। সে বড়দের অসম্মান করেলেই তাঁর মা তাঁকে বকা দিতো,আমি কোলে টেনে নিয়ে উল্টো স্ত্রীকে বকতাম। কিছু নেই বলে যখন খোকা মিথ্যা বলতো,তখন ওর মা বুঝাতো! এভাবে মিথ্যা বলতে নেই। আর আমি সেই মিথ্যাকে গুরুত্ব দিয়ে খোকাকে সেই জিনিস এনে দিতাম। ঝগড়া মারামারি করে খোকা বাড়ি ফিরলে ওর মা রাগ করে যখন ভাত দিতো না। আমি স্ত্রীকে দু'টো কড়া কথা শুনিয়ে খোকাকে পাশে বসিয়ে খাবার খাওয়াতাম। খোকা বড় হলো,বড় হলো তাঁর চাহিদা। বিয়ে করালাম জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে। আমার স্ত্রী বললো,যে বিয়েতে যত কম আয়োজন হবে,সেই বিয়েতে আল্লাহর রহমত তত। ছেলে মা'কে ধমক দিয়ে বললো। _ আমার বাবা-র কি কম আছে নাকি? তোমার তো আমার সব কিছুতেই অসুবিধা। কোন ভাগ্যে তোমার গর্ভে আল্লাহ আমাকে দিলেন আমি বুঝি না।
আর আমি সব কথায় ছেলেকে সায় দিতাম। একদিন রাতের বেলায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমার স্ত্রী বললো। - যেভাবে ছেলেটাকে মানুষ করেছো,আমার তোমায় নিয়ে বড্ড ভয় হয়। কবে জানি তোমার ছেলে তোমার কলার ধরে বলবে! এটা আমার চাই মানে চাই। আমি হয়তো সেদিন দেখা'র জন্য বেঁচে থাকবো না। আর বেঁচে থাকতেও চাই না। শুধু প্রার্থণা করি,সেদিন এই অভাগীর কথা যেন মনে পড়ে তোমার চোখের জল না ঝড়ে। যদি সত্যি ঝড়ে না! আমি যদি দেখতে পাই সইতে পারবো না। প্লিজ তুমি সেদিন আমার কথা ভেবে কেঁদো না কিন্তু। আর ওর কথা গুলো শুনে বললাম। কানের ধারে প্যানপ্যান করো না-তো ঘুমাও। কিন্তু আমি কি কোন দিনও ভেবেছিলাম সেই রাত ছিলো শেষ রাত আমাদের পাশাপাশি শোয়ার। ঘুম থেকে উঠে সেদিন হয়তো আমি প্রথম দেখলাম ও এখনো আমার পাশে শুয়ে আছে। জীবনের প্রায় সাইত্রিশ বছর ওর সাথে কাটিয়ে এই প্রথম ওর আগে আমার ঘুম ভেঙেছে। বেপারটা কেন জানি সাধারণ মনে হয়নি আমার। ওকে নিশ্চুপ হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে আমার খুব ভয় হলো। খুব ভয়! ছোট বাচ্চাদের যেমন কেউ চমকে দিলে ভয় পায়, ঠিক তেমন ভয়। আমি খুব নরম করে সেদিন ওকে ডেকেছিলাম। আর মনে মনে বলছিলাম, আমি যা ভাবছি তা যেন সত্যি না হয়। কিন্তু আমার ভাবনা মিথ্যা করে দিয়ে ও সেদিন ওঠেনি। আমি হঠাৎ খাট থেকে নিচে পড়ে গেলাম। চিৎকার করে খোকাকে ডাক দিলাম। খোকা আর খোকার বউ ছুটে এলো। অল্প সময়ের মধ্যে পুরো এলাকায় খবর ছড়িয়ে গেলো ও আর পৃথিবীতে নেই। জোহর বাদ দেওয়া হলো মাটি। ওর চলে যাওয়াতে হয়তো কেউ কষ্ট পায়নি,তাই আমাদের বাড়িটা মৃত বাড়ি মনে হয়নি। রাত বারার সাথে সাথে সকল আত্মীয় স্বজনরা বাড়িতে চলে গেলো। রইলাম শুধু আমি খোকা,খোকার বউ। ওরা নিজেদের মতো করে ঘরের দুয়ার আঁটকে দিয়ে শুয়ে পড়লো। আমি বারান্দায় বসে রইলাম প্রায় অনেক রাত। যখন ঘরে এলাম,তখন বুকটা ধক করে উঠলো। ওই প্রথম আমি ওর শূন্যতা অনুভব করলাম। মনে করতে রইলাম ওর সকল কথা। আস্তে আস্তে সব কিছু পাল্টে গেলো। যে সন্তানের কাছে আমি বেস্ট বাবা ছিলাম! আজ তাঁর কাছে বোঝা হয়ে উঠলাম। এখন আর আমার খাবারের খোঁজ কেউ নেয় না। খোকা তো জানেই না,আমি ঠিক মতো তিনবেলা খাবার খাই কিনা। অথচ নিজের পছন্দের খাবার গুলো নিজে না খেয়ে ওকে খাইয়েছি। আজ ওর কথা বড্ড মনে পড়ে। ও বলতো সন্তান হচ্ছে নরম কাঁদার মতো,যেমন গড়বে তেমন গড়াবে। আমি ওকে খারাপ গড়েছি তাই ও খারাপ হয়েছে। কখনোই আমি ওর কথার গুরুত্ব দেইনি। ও বলেছিলো,ছেলেকে মানুষ করো,মানুষের মতো দেখতে অমানুষ নয়। সেদিন এই কথার জন্য ওকে কি মা'রটাই না দিলাম। নিজের বলতে আজ আর কিছু নেই। সব নিয়ে গেছে খোকা। শেষ সম্বল বলতে আছে বাড়িটা। আজ সেটার জন্যও আমার দিকে তেড়ে এসেছে। বলে আমার ব্যবসার জন্য টাকা দরকার। তুমি যদি ভালোয় ভালোয় না দেও দরকার হলে তোমায় খুন করবো। আর কি বলবো বলো তো? আজ মনে হচ্ছে সেদিন রাতের বলা কথা গুলো। ও হয়তো সঠিকটা জানতো। আজ আমি আমার জীবনের কর্মফল পাচ্ছি। এটাই আমার পাওয়ার ছিলো। আমার ভুল ছিলো না,ছিলো অন্যায়! হ্যা অন্যায়। আজ আমি কাঁদছি কেন এটা তো হওয়ারি ছিলো। হ্যা হওয়ারি ছিলো।

এই একটা কথা বলতে বলতে বৃদ্ধ লোকটা সামনের দিকে চলে গেলো। আস্তে আস্তে আমার চোখের আড়াল হয়েও গেলো। আমি কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে ভাবলাম। তাহলে আজ আমার স্ত্রী যে কথা গুলো বললো সেটা পুরোপুরি সঠিক। আমার সাত বছরের ছেলেটা আমার পকেট থেকে বিশ টাকা না বলে নিয়েছে। এই জন্য আমার স্ত্রী আমার ছেলেকে বকেছে,যাঁর জন্য ছেলে আজ খাবার খায়নি দুপুরে। অনেক বোঝানোর পরেও যখন ছেলে খাবার খায়নি। তখন ছেলেকে দু'টো চড় দিয়েছে। অন্যায় করবে আবার রাগ দেখাবে এই ঘরে সেটা হবে না। আজ বিশ টাকা নিয়েছো,কাল ত্রিশ টাকা। আস্তে আস্তে তোমার লোভ বারবে। ঘরে পাবে না, বাইরে চোখ যাবে। অফিস থেকে ফিরে ঠিক এগুলোই শুনলাম। ছেলের গালের লাল হয়ে যাওয়া চড়ের দাগ দেখে মাথা গরম করে স্ত্রীকে গালাগাল দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমার টাকা নিয়েছে ওর কি সমস্যা। কিন্তু এখানে এসে বুঝলাম টাকা আমার নিলে কি হবে। সন্তান আমার চুরি করেছে। কোন কিছু না বলে নেওয়া মানেই চুরি। তাহলে আমিও তো ওই চাচার মতো নিজের সন্তানকে ভুল পথে পরিচালনা করছি। বাড়িতে গিয়ে আগে আমাকে ছেলেকে বুঝাতে হবে। তারপর ছেলের মায়ের রাগ ভাঙতে হবে। কারণ সে তো ভুল নয় সঠিকটা বোঝাচ্ছে আমার সন্তানকে। আমার সন্তান যেন কোন ভুল পথে পা না বারায়। তাহলে ভুল তো আমার, আমার স্ত্রী নয়।

সমাপ্তি

ভুল_শিক্ষা

06/03/2024
প্রার্থনা__সুফিয়া কামাল        তুলি দুই হাত করি মুনাজাত                     হে রহিম রহমান   কতো সুন্দর করিয়া ধরণী       ...
04/03/2024

প্রার্থনা
__সুফিয়া কামাল

তুলি দুই হাত করি মুনাজাত
হে রহিম রহমান
কতো সুন্দর করিয়া ধরণী
মোদের করেছ দান,
গাছে ফুল ফল
নদী ভরা জল
পাখির কন্ঠে গান
সকলি তোমার দান।

মাতা,পিতা,ভাই
বোন ও স্বজন
সব মানুষেরা
সবাই আপন
কতো মমতায়
মধুর করিয়া
ভরিয়া দিয়াছ প্রাণ।
তাই যেন মোরা
তোমারে না ভুলি
সহজ সরল
সৎ পথে চলি
কতো ভালো তুমি,
কত ভালোবাসো
গেয়ে যাই এই গান।

কান্ডারী হুঁশিয়ার__ কাজী নজরুল ইসলামদুর্গম গিরি, কান্তার মরূ, দুস্তর পারাবারলংঘিতে হবে রাত্রি নিশিথে যাত্রীরা হুশিয়ার ।দ...
26/02/2024

কান্ডারী হুঁশিয়ার
__ কাজী নজরুল ইসলাম

দুর্গম গিরি, কান্তার মরূ, দুস্তর পারাবার
লংঘিতে হবে রাত্রি নিশিথে যাত্রীরা হুশিয়ার ।
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ ,
ছিড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মত?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যত ।
এ তুফান ভারী ,দিতে হবে পাড়ি , নিতে হবে তরী পার।।

তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান !
যুগ যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান ,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে ,দিতে হতে হবে অধিকার।।
অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানেনা সন্তরণ
কান্ডারী ! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন ।

‘‘হিন্দু না ওরা মুসলিম ?” ওই জিজ্ঞাসে কোন জন ?
কান্ডারী ! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র
গিরি সঙ্কট , ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ ,
পশ্চাৎপদ -যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ।
কান্ডারী ! তুমি ভুলিবে কি পথ ? ত্যেজিবে কি পথ -মাঝ ?
করে হানাহানি , তবু চলো টানি ,নিয়াছ যে মহাভার ।
কান্ডারী ! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর ,

বাঙালীর খুনে লাল হ‘ল যেথা ক্লাইবের খঞ্জর !
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর !
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার !
ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান ,
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান
আজি পরীক্ষা , জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ ?
দুলিতেছে তরী , ফুলিতেছে জল ,কান্ডারী হুশিয়ার !

অভিযান– কাজী নজরুল ইসলামনতুন পথের যাত্রা-পথিক                চালাও অভিযান !উচ্চ কণ্ঠে উচ্চার আজ –               “মানুষ ম...
24/02/2024

অভিযান
– কাজী নজরুল ইসলাম
নতুন পথের যাত্রা-পথিক
চালাও অভিযান !
উচ্চ কণ্ঠে উচ্চার আজ –
“মানুষ মহীয়ান !”
চারদিকে আজ ভীরুর মেলা ,
খেলবি কে আর নতুন খেলা ?
জোয়ার জলে ভাসিয়ে ভেলা
বাইবি কি উজান ?
পাতাল ফেড়ে চলবি মাতাল
স্বর্গে দিবি টান্ ।।

সমর সাজের নাইরে সময়
বেরিয়ে তোরা আয় ,
আজ বিপদের পরশ নেব
নাঙ্গা আদুল গায় ।

আসবে রণ-সজ্জা করে ,
সেই আশায়ই রইলি সবে !
রাত পোহাবে প্রভাত হবে
গাইবে পাখি গান ।
আয় বেরিয়, সেই প্রভাতে
ধরবি যারা তান ।।
আঁধার ঘোরে আত্নঘাতী
যাত্র-পথিক সব
এ উহারে হানছে আঘাত
করছে কলরব !
অভিযানে বীর সেনাদল !
জ্বালাও মশাল, চল্ আগে চল্ ।
কুচকাওয়াজের বাজাও মাদল ,
গাও প্রভাতের গান !
ঊষার দ্বারে পৌছে গাবি
‘জয় নব উত্থান !’

একুশের কবিতা– আল মাহমুদফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ         দুপুর বেলার অক্তবৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়?         বরকতেরই রক্ত।হা...
20/02/2024

একুশের কবিতা
– আল মাহমুদ

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
দুপুর বেলার অক্ত
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়?
বরকতেরই রক্ত।

হাজার যুগের সূর্যতাপে
জ্বলবে, এমন লাল যে,
সেই লোহিতেই লাল হয়েছে
কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে!

প্রভাতফেরির মিছিল যাবে
ছড়াও ফুলের বন্যা,
বিষাদগীতি গাইছে পথে
তিতুমীরের কন্যা।

চিনতে নাকি সোনার ছেলে
ক্ষুদিরামকে চিনতে?
রুদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিলো যে
মুক্ত বাতাস কিনতে?

পাহাড়তলির মরণ চূড়ায়
ঝাঁপ দিল যে অগ্নি
ফেব্রুয়ারির শোকের বসন
পরলো তারই ভগ্নী।
প্রভাতফেরি, প্রভাতফেরি
আমায় নেবে সঙ্গে,
বাংলা আমার বচন, আমি
জন্মেছি এই বঙ্গে।

পাখির মতো_আল মাহমুদআম্মা বলেন, পড়রে সোনা   আব্বা বলেন, মন দে;   পাঠে আমার মন বসে না   কাঁঠালচাঁপার গন্ধে।   আমার কেবল ইচ...
17/02/2024

পাখির মতো
_আল মাহমুদ

আম্মা বলেন, পড়রে সোনা
আব্বা বলেন, মন দে;
পাঠে আমার মন বসে না
কাঁঠালচাঁপার গন্ধে।
আমার কেবল ইচ্ছে জাগে
নদীর কাছে থাকতে,
বকুল ডালে লুকিয়ে থেকে
পাখির মতো ডাকতে।
সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে
কর্ণফুলীর কূলটায়,
দুধভরা ঐ চাঁদের বাটি
ফেরেস্তারা উল্টায়।
তখন কেবল ভাবতে থাকি
কেমন করে উড়বো,
কেমন করে শহর ছেড়ে
সবুজ গাঁয়ে ঘুরবো!
তোমরা যখন শিখছো পড়া
মানুষ হওয়ার জন্য,
আমি না হয় পাখিই হবো,
পাখির মতো বন্য।

রূপাই– জসীম উদ্‌দীনএই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল,কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল!কাঁচা ধানের পাতার মত ক...
10/02/2024

রূপাই
– জসীম উদ্‌দীন

এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল,
কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল!
কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া,
তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া |
জালি লাউয়ের ডগার মত বাহু দুখান সরু,
গা-খানি তার শাওন মাসের যেমন তমাল তরু |
বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল,
বিজলী মেয়ে পিছলে পড়ে ছড়িয়ে আলোর খেল |
কচি ধানের তুলতে চারা হয়ত কোনো চাষি,
মুখে তাহার জড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি।

কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি,
কালো দাতের কালি দিয়েই কেতাব কোরান লেখি
জনম কালো, মরণ কালো, কালো ভূবনময়;
চাষীদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয়।
সোনায় যে-জন সোনা বানায়, কিসের গরব তার’
রং পেলে ভাই গড়তে পারি রামধনুকের হার |
কালোয় যে-জন আলো বানায়, ভুলায় সবার মন,
তারির পদ-রজের লাগি লুটায় বৃন্দাবন |
সোনা নহে, পিতল নহে, নহে সোনার মুখ,
কালো-বরণ চাষির ছেলে জুড়ায় যেন বুক |

যে কালো তার মাঠেরি ধান, যে কালো তার গাঁও!
সেই কালোতে সিনান করি উজল তাহার গাও।
আখড়াতে তার বাঁশের লাঠি অনেক মানে মানি,
খেলার দলে তারে নিয়েই সবার টানাটানি
রজারির গানে তাহার গলা উঠে সবার আগে,
‘শাল-সুন্দি-বেত’ যেন ও, সকল কাজেই লাগে
বুড়োরা কয়, ছেলে নয় ও, পাগাল লোহা যেন,
রূপাই যেমন বাপের বেটা, কেউ দেখেছ হেন?
যদিও রূপা-নয়কো রূপাই, রূপার চেয়ে দামি,
এক কালেতে ওরই নামে সব গাঁ হবে নামি।

অবাক বিস্ময়: এই নামের নদীগুলো বাংলাদেশে আছে!🥰💜চাঁপাইনবাবগঞ্জে আছে ‘পাগলা’ নদী আর কুমিল্লায় আছে ‘পাগলি’। 'সতা’ নদ আছে নেত...
09/02/2024

অবাক বিস্ময়: এই নামের নদীগুলো বাংলাদেশে আছে!🥰💜

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আছে ‘পাগলা’ নদী আর কুমিল্লায় আছে ‘পাগলি’। 'সতা’ নদ আছে নেত্রকোনায়, ‘সতি’ আছে লালমনিরহাটে, 'মহিলা' নদী দিনাজপুরে, পুরুষালি’ নদী ফরিদপুরে, ‘মাকুন্দা’ আবার সিলেটে।

সিলেটে আছে ‘ধলা’ নদী আর দিনাজপুরে আছে ‘কালা’ নদী, হবিগঞ্জে আছে ‘শুঁটকি’ নদী, পঞ্চগড়ে আছে ‘পেটকি’, আবার পাবনায় আছে ‘চিকনাই’ নদী। ‘বামনী’ নদী আছে নোয়াখালীতে, ‘ফকিরনি’ আছে নওগাঁয়।

চুয়াডাংগায় ‘মাথাভাঙ্গা’, নীলফামারীতে ‘চুঙ্গাভাঙ্গা’, হবিগঞ্জে ‘হাওরভাঙ্গা’, সাতক্ষীরায় ‘হাঁড়িয়াভাঙ্গা’, পটুয়াখালীতে ‘খাপড়াভাঙ্গা’, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘নাওভাঙ্গা’, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আছে ‘ছিটিভাঙ্গা’।

বাগেরহাটে ‘পুঁটিমারা’ লালমনিরহাটে ‘সিঙ্গীমারা’, খুলনায় ‘শোলমারা, খাগড়াছড়ির ‘গুইমারা’, সাতক্ষীরায় ‘সাপমারা’, পঞ্চগড়ে ‘ঘোড়ামারা’, হবিগঞ্জে ‘হাতিমারা', চুয়াডাঙ্গায় ‘ভাইমারা’ ও সুনামগঞ্জে ‘খাসিয়ামারা’ নামে নদী আছে।

ফরিদপুরে আছে ‘কুমার’, চট্টগ্রামে আছে ‘ধোপা’, নওগাঁয় আছে ‘গোয়ালা’, আর সিরাজগঞ্জে আছে ‘গোহালা’। ঢাকী’ আছে খুলনায় আর ‘বংশী’ নদী আছে সাভারে।

'লুলা’ নদী সিলেটে, ‘খোড়া’ নদী নীলফামারী, ‘বোকা’ নদী ছাতক আর ‘খ্যাপা’ নদী সিলেটে। আবার মগরা’ নদী নেত্রকোনা, ‘ফটকি’ নদী মাগুরা, মঘা’ নদী ময়মনসিংহ, ‘ল্যাঙ্গা’ নদী গাইবান্ধা, ‘হাবড়া’ নদী সাতক্ষীরা, এবং ‘হোজা’ নদী রাজশাহী।

লঙ্কা’ নদী বরিশালে, ‘গুড়’ নদী নাটোরে। ‘ক্ষীর’ নদী ময়মনসিংহে, ‘লোনা’ নদী ঠাকুরগাঁওয়ে। ‘নুনছড়া’ আছে সিলেটে, ‘কালিজিরা’ বরিশালে, সুনামগঞ্জে আছে ‘লাউগাঙ’ আর ‘লাচ্ছি’ নদী আছে ঠাকুরগাঁওয়ে।

পটুয়াখালীতে আছে ‘পায়রা’, খুলনায় আছে ‘ময়ূর’, দিনাজপুরে আছে ‘শুক’ (টিয়া), সিলেটে ‘সারি’ (শালিক), বাগেরহাটে আছে ‘বগী’, সিলেটে ‘কুড়া’, রাজশাহীতে আছে ‘কোয়েল’, রাজবাড়ীতে ‘চন্দনা’, পঞ্চগড়ে আছে ‘ডাহুক’, সুনামগঞ্জে ‘ডাহুকা’, মৌলভীবাজারে আছে ‘মুনিয়া’।

পাবনায় আছে ‘কমলা’, সুনামগঞ্জে ‘খুরমা’, কুমিল্লায় ‘কালাডুমুর’ নদী। সিলেটের জকিগঞ্জে আছে ‘তাল’ ও ‘কুল’ নামে দুই গাং।

ফেনীতে আছে ‘মুহুরী’, মৌলভীবাজারে ‘জুড়ী’, রংপুরে আছে ‘কাঠগড়া’ নদী। আর যশোরে আছে ‘টেকা’, বরিশালে ‘পয়সা’, সিরাজগঞ্জে ‘দশসিকা’, জামালগঞ্জে আছে ‘দশানী’ নদী।

বিষখালী নদী ঝালকাঠি/বরগুনায় আর নির্বিষখালী’ নদী মাগুরায়। বালু নদী গাজীপুরে, বালিখাল হবিগঞ্জে, বালুখালী চট্টগ্রামে আর বালুভরা নওগাঁয়।

'ঘাগড়া' আছে পঞ্চগড়ে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘ঘুঙ্গুর’, আর নরসিংদীতে ‘কাঁকন’। আবার ‘ছেঁড়া’ নদী খুলনায় ‘ফুটা’ নদী টাঙ্গাইলে।

ভোলায় ‘কলমি’, শরীয়তপুরে ‘পালং’, মাদারীপুরে ‘ময়নাকাঁটা’, বরিশালে ‘লতা’ আর সিলেটে আছে ‘শ্যাওলা’ নদী।

কলকলিয়া হবিগঞ্জে, হলহলিয়া কুড়িগ্রামে, ঝনঝনিয়া গোপালগঞ্জে, ঝপঝপিয়া খুলনায়, জিরজিরা জামালপুরে, গড়গড়া গাজীপুরে।

তথ্যসূত্র:
ক। বাংলাদেশের নদনদী- ম. ইনামুল হক
খ। উইকিপিডিয়া
গ। প্রথম আলো।

কপি পোস্ট

আসমানী– জসীম উদ্‌দীনআসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না প...
07/02/2024

আসমানী
– জসীম উদ্‌দীন
আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।
একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে,
তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে।
পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক-খান হাড়,
সাক্ষী দিছে অনাহারে কদিন গেছে তার।
মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ-রাশি
থাপড়েতে নিবিয়ে দেছে দারুণ অভাব আসি।
পরনে তার শতেক তালির শতেক ছেঁড়া বাস,
সোনালি তার গা বরণের করছে উপহাস।
ভোমর-কালো চোখ দুটিতে নাই কৌতুক-হাসি,
সেখান দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু রাশি রাশি।
বাঁশির মতো সুরটি গলায় ক্ষয় হল তাই কেঁদে,
হয় নি সুযোগ লয় যে সে-সুর গানের সুরে বেঁধে।
আসমানীদের বাড়ির ধারে পদ্ম-পুকুর ভরে
ব্যাঙের ছানা শ্যাওলা-পানা কিল্-বিল্-বিল করে।
ম্যালেরিয়ার মশক সেথা বিষ গুলিছে জলে,
সেই জলেতে রান্না-খাওয়া আসমানীদের চলে।
পেটটি তাহার দুলছে পিলেয়, নিতুই যে জ্বর তার,
বৈদ্য ডেকে ওষুধ করে পয়সা নাহি আর।

কবরজসীম উদ্‌দীন  (রাখালী কাব্যগ্রন্থ)এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।এতটুক...
01/02/2024

কবর
জসীম উদ্‌দীন (রাখালী কাব্যগ্রন্থ)

এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!
সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি
লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।
যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত
এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।
এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।

বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।
শাপলার হাটে তরমুজ বেচি দু' পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।
দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,
সন্ধাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে!
হেস না­ হেস না­ শোন দাদু, সেই তামাক মাজন পেয়ে,
দাদি যে তোমার কত খুশি হত দেখিতিস যদি চেয়ে!
নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, এতদিন পরে এলে,
পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখিজলে।
আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়,
কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়!
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়,
আমার দাদীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।

তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি
যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।
শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,
গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।
এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,
গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে।
মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি, মাটিতে মিশায়ে বুক,
আয়-আয় দাদু, গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।

এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,
কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু! পরাণ যে মানে না।
সেই ফালগুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি,
বা-জান, আমার শরীর আজিকে কী যে করে থাকি থাকি।
ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,
সেই শোওয়া তার শেষ শোওয়া হবে তাহা কী জানিত কেউ?
গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে,
তুমি যে কহিলা বা-জানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?
তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,
সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!

তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দুহাতে জঢ়ায়ে ধরি,
তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিতে সারা দিনমান ভরি।
গাছের পাতার সেই বেদনায় বুনো পথে যেতো ঝরে,
ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো-মাঠখানি ভরে।
পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,
চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।
আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,
হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।
গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,
চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।

ঊদাসিনী সেই পল্লী-বালার নয়নের জল বুঝি,
কবর দেশের আন্ধারে ঘরে পথ পেয়েছিল খুজি।
তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,
হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।
মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, বাছারে যাই,
বড় ব্যথা র’ল, দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;
দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষী আমার ওরে,
কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।
ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন­জলে,
কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণ­ব্যথার ছলে।

ক্ষণপরে মোরে ডাকিয়া কহিল­ আমার কবর গায়
স্বামীর মাথার মাথালখানিরে ঝুলাইয়া দিও বায়।
সেই যে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,
পরাণের ব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু­ছায়,
গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায় লুটায়ে পড়েছে গায়।
জোনকি­মেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,
ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, রহমান খোদা! আয়;
ভেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়!

এখানে তোর বুজির কবর, পরীর মতন মেয়ে,
বিয়ে দিয়েছিনু কাজিদের বাড়ি বনিয়াদি ঘর পেয়ে।
এত আদরের বুজিরে তাহারা ভালবাসিত না মোটে,
হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত ঠোঁটে।
খবরের পর খবর পাঠাত, দাদু যেন কাল এসে
দুদিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির দেশে।
শ্বশুর তাহার কশাই চামার, চাহে কি ছাড়িয়া দিতে
অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক শীতে।
সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে ফোটে না সেথায় হাসি,
কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিছে ভাসি।
বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত দিন,
কে জানিত হায়, তাহারও পরাণে বাজিবে মরণ­বীণ!
কী জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল না ফিরে,
এইখানে তারে কবর দিয়েছি দেখে যাও দাদু! ধীরে।

ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,
কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।
বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,
পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়।
আমার বু­জীর তরেতে যেন গো বেস্ত নসিব হয়।

হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,
রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।
ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,
অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!
ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,
তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।
বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।

একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।
সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।
কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।
আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,
দাদু! ধর­ধর­ বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।
এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,
কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুম­ভোলা মোর যাদু।
আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,

ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিয়ে ঘন আবিরের রাগে,
অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।
মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।
জোড়হাত দাদু মোনাজাত কর, আয় খোদা! রহমান।
ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু­ব্যথিত প্রাণ।

আমি যদি আরব হতাম___কাজী নজরুল ইসলামআমি যদি আরব হতাম মদিনারই পথএই পথে মোর চলে যেতেন নূর নবী হজরত।পয়জার তাঁর লাগত এসে আমা...
28/01/2024

আমি যদি আরব হতাম
___কাজী নজরুল ইসলাম

আমি যদি আরব হতাম মদিনারই পথ
এই পথে মোর চলে যেতেন নূর নবী হজরত।

পয়জার তাঁর লাগত এসে আমার কঠিন বুকে
আমি ঝর্ণা হয়ে গলে যেতাম অমনি পরম সুখে
সেই চিহ্ন বুকে পুরে
পালিয়ে যেতাম কোহ-ই-তুরে
সেথা দিবানিশি করতাম তার কদম জিয়ারত

মা ফাতেমা খেলত এসে আমার ধূলি লয়ে
আমি পড়তাম তার পায়ে লুটিয়ে ফুলের রেণু হয়ে
হাসান হোসেন হেসে হেসে
নাচত আমার বক্ষে এসে
চক্ষে আমার বইত নদী পেয়ে সে ন্যামত।

আমার বুকে পা ফেলে রে বীর আসহাব যত
রণে যেতেন দেহে আমার আঁকি মধুর ক্ষত
কুল মুসলিম আসত কাবায়
চলতে পায়ে দলত আমায়
আমি চাইতাম খোদার দীদার শাফায়ত জিন্নত।।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের শিক্ষক , জনাব আসিফ মাহতাব শিক্ষাব্যবস্থার কিছু অসঙ্গতি নিয়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। তার ...
22/01/2024

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের শিক্ষক , জনাব আসিফ মাহতাব শিক্ষাব্যবস্থার কিছু অসঙ্গতি নিয়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। তার চাকুরি নাকি খেয়ে ফেলা হচ্ছে।

কয়েক ঘন্টা আগে তিনি লিখেছেন- ‘আজকে আমি ব্র্যাকে রেগুলার ক্লাস নিয়েছি। আমাকে এইমাত্র ফোন করে জানানো হয়েছে যে, আমি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ক্লাস না নিতে না যাই। আমি জানি না হটাৎ করে এই সিদ্ধান্ত তারা কেন নিলো। আমাকে কোনো কারণ তারা দেয়নি।‘

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক Asif Mahtab কীসের প্রতিবাদ করেছেন? পাঠ্যপুস্তকে শরীফ-শরীফার সেই গল্পের পৃষ্ঠাগুলো ছিঁড়ে ফেলেছেন, যেখানে ট্টান্সজেন্ডারবাদকে (প্রথমে স্বনামে, বর্তমানে বেনামে) প্রমোট করা হয়েছে।

প্রতিবাদের এক দিনের মাথায় খবরটি শুনতে হলো। তবে কি প্রতিবাদের এই অধিকার চর্চাকে সহ্য করতে পারছে না একটি বিশ্ববিদ্যালয়?

মনে রাখা উচিত, আসিফ মাহতাব একা নন। তার সাথে রয়েছে এদেশের লক্ষ লক্ষ ইসলাম প্রিয় ছাত্র জনতা।

পন্ডশ্রম– শামসুর রাহমানএই নিয়েছে ঐ নিল যাঃ! কান নিয়েছে চিলে,চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে।কানের খোঁজে ছুটছি মাঠে, ...
20/01/2024

পন্ডশ্রম
– শামসুর রাহমান

এই নিয়েছে ঐ নিল যাঃ! কান নিয়েছে চিলে,
চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে।
কানের খোঁজে ছুটছি মাঠে, কাটছি সাঁতার বিলে,
আকাশ থেকে চিলটাকে আজ ফেলব পেড়ে ঢিলে।

দিন-দুপুরে জ্যান্ত আহা, কানটা গেল উড়ে,
কান না পেলে চার দেয়ালে মরব মাথা খুঁড়ে।
কান গেলে আর মুখের পাড়ায় থাকল কী-হে বল?
কানের শোকে আজকে সবাই মিটিং করি চল।

যাচ্ছে, গেল সবই গেল, জাত মেরছে চিলে,
পাজি চিলের ভূত ছাড়াব লাথি-জুতো-কিলে।
সুধী সমাজ! শুনুন বলি, এই রেখেছি বাজি,
যে-জন সাধের কান নিয়েছে জান নেব তার আজই।

মিটিং হল ফিটিং হল, কান মেলে না তবু,
ডানে-বাঁয়ে ছুটে বেড়াই মেলান যদি প্রভূ।
ছুটতে দেখে ছোট ছেলে বলল, কেন মিছে
কানের খোঁজে মরছ ঘূরে সোনার চিলের পিছে?

নেইকো খালে, নেইকো বিলে, নেইকো মাঠে গাছে;
কান যেখানে ছিল আগে সেখানটাতেই আছে।
ঠিক বলেছে, চিল তবে কি নয়কো কানের যম ?
বৃথাই মাথার ঘাম ফেলছি, পন্ড হল শ্রম।

কাজলা  দিদি___যতীন্দ্রমোহন বাগচীবাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওইমাগো, আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?পুকুর ধারে, নেবুর ত...
13/01/2024

কাজলা দিদি
___যতীন্দ্রমোহন বাগচী

বাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই
মাগো, আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?
পুকুর ধারে, নেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাই জ্বলে,
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই;
মাগো, আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?
সেদিন হতে দিদকে আর কেনই-বা না ডাকো,
দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?

খাবার খেতে আসি যখন দিদি বলে ডাকি, তখন
ও-ঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো,
আমি ডাকি, - তুমি কেন চুপটি করে থাকো?
বল মা, দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে!
দিদির মতন ফাঁকি দিয়ে আমিও যদি লুকোই গিয়ে-
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে?
আমিও নাই দিদিও নাই কেমন মজা হবে!

ভুঁইচাঁপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল,
মাড়াস নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল;
ডালিম গাছের ডালের ফাঁকে বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে,
দিস না তারে উড়িয়ে মা গো, ছিঁড়তে গিয়ে ফল;
দিদি এসে শুনবে যখন, বলবে কী মা বল!

বাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই
এমন সময়, মাগো, আমার কাজলা দিদি কই?
বেড়ার ধারে, পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোঁপে-ঝাড়ে;
নেবুর গন্ধে ঘুম আসে না- তাইতো জেগে রই;
রাত হলো যে, মাগো, আমার কাজলা দিদি কই?

খোকার সাধ- কাজী নজরুল ইসলামআমি হব সকাল বেলার পাখিসবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,‘হয়...
03/01/2024

খোকার সাধ
- কাজী নজরুল ইসলাম
আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।
সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,
‘হয়নি সকাল, ঘুমো এখন’- মা বলবেন রেগে।
বলব আমি, ‘আলসে মেয়ে ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয়নি সকাল- তাই বলে কি সকাল হবে না ক?
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’
ঊষা দিদির ওঠার আগে উঠব পাহাড়-চূড়ে,
দেখব নিচে ঘুমায় শহর শীতের কাঁথা মুড়ে,
ঘুমায় সাগর বালুচরে নদীর মোহনায়,
বলব আমি ‘ভোর হল যে, সাগর ছুটে আয়!
ঝর্ণা মাসি বলবে হাসি’, ‘খোকন এলি নাকি?’
বলব আমি নই কো খোকন, ঘুম-জাগানো পাখি!’
ফুলের বনে ফুল ফোটাব, অন্ধকারে আলো,
সূয্যিমামা বলবে উঠে, ‘খোকন, ছিলে ভাল?’
বলব ‘মামা, কথা কওয়ার নাই ক সময় আর,
তোমার আলোর রথ চালিয়ে ভাঙ ঘুমের দ্বার।’
রবির আগে চলব আমি ঘুম-ভাঙা গান গেয়ে,
জাগবে সাগর, পাহাড় নদী, ঘুমের ছেলেমেয়ে!

মাসিক রেনেসাঁ সাহিত্য পত্রিকার পক্ষ থেকে সবাই কে জানাই ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা।
01/01/2024

মাসিক রেনেসাঁ সাহিত্য পত্রিকার পক্ষ থেকে সবাই কে জানাই ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা।

সর্ববৃহৎ উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বিমানের ভিতরকার দেয়ালের উপাদান তৈরিতে কাজ করতে গিয়ে একদিন তার মনে হল, আমি এখ...
30/12/2023

সর্ববৃহৎ উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বিমানের ভিতরকার দেয়ালের উপাদান তৈরিতে কাজ করতে গিয়ে একদিন তার মনে হল, আমি এখানে কি করছি! আমার সব গবেষণা, উদ্ভাবন তো বিদেশের এদের কাছে চলে যাচ্ছে, এদের কাজে লাগছে। আমার দেশের কাজে তো লাগছে না!

আমেরিকার সর্বোচ্চ সুবিধা ছেড়ে তিনি দেশে ফিরে আসলেন। বানালেন পলিথিনের বিকল্প পাটের তৈরি বিশ্বে চমক সৃষ্টিকারী সোনালি ব্যাগ। বানালেন পাটের তৈরি ঢেউটিন, পাট দিয়ে হেলমেট, টাইলস, গরুর হাড় থেকে উন্নত জিবানুকরন উপাদান, চিংড়ির খোসা দিয়ে বানিয়েছেন প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ, সামুদ্রিক শেওলা থেকে বানিয়েছেন উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহায়ক সার, লালশাকের মতো সবজির উৎপাদন সময় কমিয়ে এনেছেন অর্ধেক।

পরিবারে তাকে সবাই চিনে খসরু নামে। বাল্যকাল থেকেই মেধাবী ছাত্র খসরুর আগ্রহ ছিল সাইন্টিফিক এক্সপেরিমেন্টের প্রতি। ছোটবেলায় বিজ্ঞান বইয়ের ছবি আঁকা পরীক্ষাগুলো বাসায় নিজে নিজে করে দেখতেন। কখনও সফল কখনও ব্যর্থ, ব্যর্থতা তাকে থামায়নি বরং গবেষণার প্রতি আরও আগ্রহী করে তোলে।

কাজ করেছেন জার্মানিতে ডিএএডি এবং অ্যাভিএ’র সহকর্মী হিসেবে, জাপানে জেএসএসএস, এমআইএফ এর ফেলো হয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি) এবং অস্ট্রেলিয়ায় আইএইএ এর সহযোগী হিসেবে।

১৭ টি বই এবং একটি পেটেন্টসহ ৬০০ টির বেশি প্রকাশনার লেখক, সহ-লেখক।

তিনি পাট ভালোবাসেন। বলেন, আমি যেখানেই যাই, হাতে করে একগাছি পাট নিয়ে যাই। এইটা তো একান্তই আমাদের।

পাটের তৈরি পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগ উনার আলোড়নসৃষ্টিকারী উদ্ভাবন। পরিবেশ রক্ষায় যেখানে দুনিয়া জুড়ে চলছে আন্দোলন, প্রায় বাহাত্তুরটি রাষ্ট্র আইন করে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে পলিথিনের ব্যবহার। সবাই খুঁজছে পলিথিনের বিকল্প। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বাজার বসে উন্মুখ হয়ে বসে আছে।

সোনালি ব্যাগ সেই জাদুর বিকল্প। সোনালি ব্যাগ, মাটিতে পুতে রাখলে এক থেকে ছয়াসের মধ্যে পচে যায়, পরে পরিণত হয় জৈব সারে। পানিতে ফেললে একমাসের মধ্যে পানিতে দ্রবীভূত হয়ে মাছের খাদ্যে রুপান্তরিত হয়ে যায়।

দুনিয়া পাল্টে দেয়া এই উদ্ভাবক বিজ্ঞানি মোবারক আহমদ খান।

সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে গিয়েছিল বহু আগেই। কিন্তু তারপর? দুইহাজার দুই সালে পথিলিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হয়েছিল। বাকিটা ইতিহাস। বর্তমান বাজারে পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি। বাজারে সোনালি ব্যাগের দেখা নেই। বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশী পণ্য হিসেবে সোনালি ব্যাগের প্রচারণা নেই।জানি না তার উদ্ভাবিত সোনালি ব্যাগের ভবিষ্যৎ।

বিজয়ের মাসে মহান এই বাংলাদেশী বিজ্ঞানীকে জানাই বাঙালি জাতির পক্ষথেকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

কালেক্টেড

খোকার সাধ- কাজী নজরুল ইসলাম আমি হব সকাল বেলার পাখিসবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,‘হয...
29/12/2023

খোকার সাধ
- কাজী নজরুল ইসলাম

আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।
সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,
‘হয়নি সকাল, ঘুমো এখন’- মা বলবেন রেগে।
বলব আমি, ‘আলসে মেয়ে ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয়নি সকাল- তাই বলে কি সকাল হবে না ক?
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’
ঊষা দিদির ওঠার আগে উঠব পাহাড়-চূড়ে,
দেখব নিচে ঘুমায় শহর শীতের কাঁথা মুড়ে,
ঘুমায় সাগর বালুচরে নদীর মোহনায়,
বলব আমি ‘ভোর হল যে, সাগর ছুটে আয়!
ঝর্ণা মাসি বলবে হাসি’, ‘খোকন এলি নাকি?’
বলব আমি নই কো খোকন, ঘুম-জাগানো পাখি!’
ফুলের বনে ফুল ফোটাব, অন্ধকারে আলো,
সূয্যিমামা বলবে উঠে, ‘খোকন, ছিলে ভাল?’
বলব ‘মামা, কথা কওয়ার নাই ক সময় আর,
তোমার আলোর রথ চালিয়ে ভাঙ ঘুমের দ্বার।’
রবির আগে চলব আমি ঘুম-ভাঙা গান গেয়ে,
জাগবে সাগর, পাহাড় নদী, ঘুমের ছেলেমেয়ে!

Address

Maulvi Bazar

Telephone

+8801737185814

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মাসিক রেনেসাঁ-Renesa posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share