26/06/2021
ইন্টারভিউ দেওয়ার পরে করণীয়
১। ইন্টারভিউ যখন শেষ, তখন আপনাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার কি আমাদের কাছে কিছু জানার আছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা উত্তর দেই, না। এটা আমাদের একটা কমন ভুল। “না” উত্তরটি দেয়ার সাথে সাথে আপনি কিন্তু পরবর্তী যোগাযোগের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছেন। আপনি রিক্রুইটারের কাছে জানতে চাইতে পারেন, কোম্পানির বেতন, পলিসি, সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে।
২। এরপর হাসিমুখে বলতে পারেন, “তাহলে স্যার কবে থেকে জয়েন করতে হবে?” ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে অন্যরকম মনোভাব তৈরি হবে, আপনার ভিন্ন রকম এই অ্যাপ্রোচে। তবে, এরকম স্মার্ট অ্যাপ্রোচে যাওয়ার আগে ইন্টাভিউয়ারের মানুসিকতা বুঝতে চেষ্টা করুন। এছাড়া আপনি কবে নাগাত ফলাফল জানা যাবে সেটা জিজ্ঞেস করতে পারেন।
৩। “স্যার, আমি যে কোন কাজ করতে পারবো, আমার ব্যাপারটা একটু দেখবেন।” অথবা, “স্যার, আমি ফ্যামিলি নিয়ে খুব সমস্যায় আছি, চাকরীটা আমার খুব দরকার” এরকম কথা বলে শেষ করলে হবে না। নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করবেন না। অন্তত এভাবে বলুন, “আশা করি খুব শীঘ্রই আপনাদের সাথে আবার দেখা হবে” অথবা, “আশাকরি, আপনাদের সাথে অচিরেই মিলেমিশে কাজ করতে পারবো”
৪। ইন্টারভিউ শেষে যিনি ইন্টারভিউ নিলেন, তার একটা কার্ড চেয়ে নিন।
৫। কোন কারনে যদি বুঝতে পারেন যে এই চাকরীটি আপনার হচ্ছে না, তাহলে সুযোগ বুঝে ইন্টারভিউয়ারের ফিডব্যাক নিন। আপনার ভুলগুলো জেনে নিন। তারা আপনাকে আপনার ভুল নিজ থেকে জানিয়ে দিবে এমনটা আশা করবেন না। এটা তাদের কাজ না। আপনাকে ফারদার কল করেনি, তার মানে আপনার চেয়ে বেটার কাউকে পাওয়া গেছে।
৬। বাসায় পৌছে ইন্টারভিউয়ারকে “থ্যাংক ইউ” মেইল দিন। এই ধরনের মেইলগুলোতে কি লিখবেন? আপনি এভাবে লিখতে পারেন, “আমি আপনাদের কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত (ইন্টারভিউ ডেট ও কোন পোস্টের জন্যে ইন্টারভিউ দিয়েছেন সেটা উল্লেক করুন)। ইন্টারভিউ থেকে আপনি কি কি শিখেছেন এরকম দুইটি পয়েন্ট উল্লেখ করুন। এরপর নিজের সবল দিকগুলো দিয়ে কিভাবে আপনি কোম্পানির উন্নতি করতে পারবেন ২-৩টি বাক্য লিখুন। শেষে গিয়ে পুনরায় কল পাওয়া বা সিলেক্টেড হওয়ার আশাবাদ জানিয়ে মেইল শেষ করুন।” মোট ৪ প্যারায় ৭-৮টি বাক্য লিখবেন।
৭। সামাজিক কোন গনমাধ্যমে ইন্টারভিউ খারাপ হলে কোন বাজে কমেন্ট করবেন না। এতে করে আপনার সাথে যারা পরিচিত, তারা আপনাকে আর রেফার করবে না। ধরুন, আপনি এসিআইতে ভাইভা দিয়েছেন। ভালো হয়নি, যাচ্ছে তাই লিখে পোস্ট দিলেন। আপনার ফেসবুকেই রয়েছে স্কয়ারের কেউ একজন। সে কি আপনাকে আর জীবনেও রেফার করবে? ভেবে দেখুন, গীবত বাজে জিনিস। নিজের ভাইয়ের গোস্ত খাওয়ার সামিল, মনে রাখবেন।
৮। ইন্টারভিউ দেওয়ার পর আমরা আর ফলোআপ করি না, এটা আমাদের মস্ত বড় ভুল। ফলো আপই যদি না করবেন, তাহলে গিয়েছিলেন কেন?
৯। বার বার ফোন দিয়ে রিক্রুইটারকে বিরক্ত করবেন না। এক সপ্তাহ পরে, থ্যাংক ইউ মেইলের নিচে, একটি ফলো আপ মেইল ড্রপ করতে পারেন। একটি মেসেজ দিতে পারেন।
১০। ইন্টারভিউ যারা দিতে গিয়েছে, তাদের সাথে পরিচিত হোন, তাদের কার্ড নিন, নম্বর নিন। নিজের সম্পর্কে তাদের জানান। তাদের মাধ্যমে আপডেট জানতে পারবেন। তাদের মাধ্যমে নতুন সুযোগও তৈরি হতে পারে।
রুমে ঢোকার সময়ের ইম্প্রেসান ও বের হবার সময় ইম্প্রেসান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাসিমুখে বের হন। আপনার হাসিমুখ ও স্কিলের এমন একটা ইমেজ ইন্টারভিউ রুমে দিয়ে আসুন, আপনাকে যেন তারা নিতে বাধ্য হয়।