20/09/2024
কৃষিকথা চ্যানেলে কৃষক ও কিষাণি ভাই বোনদের নিয়ে মজার একটি খেলা খেলেছি আমরা আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ লোক কৃষক। কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ দেশ ভরে ওঠে ফসলের সমারোহে। আমরা পাই ক্ষুধার আহার। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বিদেশে রফতানি করে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়। বলতে গেলে, কৃষকই আমাদের জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি; আমাদের জাতির প্রাণ।
বর্তমান অবস্থা : বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। কিন্তু বাঙালি কৃষকের অসহায় ও দরিদ্র জীবনের কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে নি। বাংলার কৃষক আজো শিক্ষাহীন, বস্ত্রহীন, চিকিৎসাহীন জীবন-যাপন করছে। দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে, কমেছে কৃষি জমির পরিমাণ। জমির উর্বরতাও গেছে কমে। ফলে বাড়তি মানুষের খাদ্য যোগানোর শক্তি হারিয়েছে এ দেশের কৃষক। পৃথিবী জুড়ে চাষাবাদ পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটেছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উন্নত দেশ কৃষকের শক্তি বৃদ্ধি করছে। কিন্তু এ দেশে এখনো মান্ধাতার আমলের চাষাবাদ ব্যবস্থা বহাল আছে। বাংলার কৃষকও ভোঁতা লাঙল আর কঙ্কালসার দুটো বলদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ – কোনো কিছুই মোকাবেলা করার কৌশল ও সামর্থ্য কৃষকের নেই। - তবে ধীরে ধীরে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত পদ্ধতি প্রয়োগের গুরুত্ব বাড়ছে । সম্প্রতি ব্যাংক, এন জিও, সমবায় সমিতি বা মহাজনের ঋণের টাকায় আর উচ্চ ফলনশীল বীজের সাহায্যে কৃষিতে ফলন বেড়েছে । কিন্তু ক্ষেতের ফসল কৃষকের ঘরে ওঠার আগেই ব্যাংক, এন জিও, সমবায় প্রতিষ্ঠান কিংবা মহাজনের ঋণ পরিশোধ করতে হয় । তাই কৃষকের শোচনীয় অবস্থার পরিবর্তন হয় না। এখনো তারা নানা রোগ-শোক, অশিক্ষা-কুশিক্ষা, দারিদ্র্য ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
কৃষকের উন্নয়ন: বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। দেশীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদানও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তাই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কৃষকের উন্নয়ন প্রয়োজন । বাংলার কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আজ সবচেয়ে বেশি দরকার চাষাবাদে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রবর্তন । কৃষক যেন স্বল্পমূল্যে উন্নত বীজ, জৈব ও রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক পায় তার ব্যবস্থা করা । প্রয়োজনে কৃষককে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করতে হবে । আবার কৃষক তার ফসলের যেন ন্যায্য দাম পায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে । আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষকই অশিক্ষিত । তাদের শিক্ষিত করে তুলতে হবে । আধুনিক কৃষি-যন্ত্রাপাতি ব্যবহার করার জন্য তাকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে । সারা বছর বিভিন্ন ফসল ও রবিশস্য চাষাবাদের পাশাপাশি কুটিরশিল্পে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে হবে । সেই সঙ্গে কৃষকের চিত্তবিনোদন ও রোগ-ব্যাধির চিকিৎসারও সুবন্দোবস্ত করতে হবে।