02/08/2021
বুদ্ধ: গ্রাফিক গাইড (কালেক্টর’স এডিশন)
লিখেছেন: রুপন শ্রী বড়ুয়া
*
"নট ফর সেল ক্লাব" নিয়ে আসছে গ্রাফিক গাইড বুদ্ধ। এর ফলে আমরা গৌতমবুদ্ধ এবং বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে সাধারণ একটি ধারনা পাবো। বুদ্ধকে নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে। আমরা অধিকাংশই বুদ্ধকে জানি সেসব বই থেকে। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ পালি ভাষায় লিখিত। ২০বছর আগেও বৌদ্ধ ধর্মের ধর্মগ্রন্থ ত্রিপিটকের বাংলা অনুবাদ ছিল না। ফলে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা বৌদ্ধরাও ধর্মগ্রন্থ পড়ার সুযোগ পায়নি। শুধুমাত্র কয়েকটি সূত্র, পঞ্চশীল, অষ্টশীল এসব জানে। আর এখন ত্রিপিটকের বাংলা অনুবাদ থাকলেও সবার পড়াও সম্ভব নয়। কারন সম্পূর্ণ ত্রিপিটক কিনতে আনুমানিক বিশ হাজার টাকা লাগে। আবার তা পড়তেও হয়ত সারাজীবন লেগে যাবে। চুরাশি হাজার স্কন্দ নিয়ে ত্রিপিটক গঠিত। তৎমধ্যে বিরাশি হাজার গৌতমবুদ্ধের বাকী দুই হাজার তাঁর শিষ্যদের। আবার ত্রিপিটকের বাংলা অনুবাদও এতটাই উচ্চ মার্গীয় যা সহজেই বুঝা সম্ভব নয়। আবার মহাযানী গ্রন্থ এখনো অনুবাদ হয়নি। তবে মহাযানী গ্রন্থ ও ত্রিপিটক ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ আছে অনেক আগে থেকেই আছে।
যে সমস্ত লেখকগণ বুদ্ধকে নিয়ে বই লিখেছেন সেসব বইয়ের গৌতমবুদ্ধ আর বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের গৌতমবুদ্ধ অনেকাংশেই অমিল। ফলে কালে কালে গৌতমবুদ্ধকে নিয়ে অনেক গুজব গজিয়েছে যা অজ্ঞ, বিজ্ঞ, ছোট নাস্তিক, বড় নাস্তিক, গুরু নাস্তিকও পোস্টাতে দেখা যায়। যেকোন ধর্মকে বা ধর্ম প্রচারককে চূড়ান্তভাবে জানতে সেই ধর্মের ধর্মগ্রন্থই অথেনটিক হয়।
প্রশ্ন একটাই! ত্রিপিটক কি গৌতমবুদ্ধ লিখেছে? না, লিখেনি। (কিন্তু যারা মিথগুলো প্রচার করেন তা কি গৌতমবুদ্ধ লিখেছে?) তবে মহাযানীরা দাবি করেন একমাত্র লোটাস সূত্র গৌতমবুদ্ধের স্বহস্তে লিখা। সেটার প্রমাণও নাকি তাঁদের আছে। ত্রিপিটক গৌতমবুদ্ধ না লিখলেও যারা লিখেছেন তাঁরা সবাই অর্হৎ। তাঁরা অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত নির্ভুল বলতে পারেন এমনকি তাঁরা চাইলে আজীবন জীবিতও থাকতে পারেন যখন খুশি তখন নির্বাণ লাভ করতে পারেন।
অনেককেই পোস্টাতে দেখা যায়, বৌদ্ধ ধর্ম নাস্তিক্যবাদী ধর্ম, ঈশ্বর বলে কেউ নেই, গৌতমবুদ্ধ নিজেকে পূঁজা করতে বলেননি, আমি বুদ্ধ বলেছি বিশ্বাস করিও না, গৌতমবুদ্ধ বেদ বিরোধী ছিলেন এরকম অনেক মিথ।
আমার দৃষ্টিতে বৌদ্ধ ধর্ম সনাতন ধর্মের একটা এলিল কারন বৌদ্ধ ধর্মেও স্বর্গ-নরক, পূণঃজন্ম, নির্বাণ (মোক্ষলাভ), ব্রহ্মা, মহাব্রহ্মা, দেবরাজ ইন্দ্র, গাছ রক্ষক দেবতা, বাঁশ রক্ষক দেবতা, নগর রক্ষক দেবতা এরকম আরো দেবতার অস্তিত্ব আছে। আবার বুদ্ধ নিজেই ব্রহ্মা, মহাব্রহ্মা, সর্বশক্তিমান, অজেয়, সর্বদর্শী। জগৎ যখন সৃষ্টি হল তখন বুদ্ধ ছিলেন শুন্যব্রহ্মলোকে। তাহলে তিনিই কি আদি কারন!
বুদ্ধ কি আমাদের মতো মানুষ ছিলেন? ধর্মগ্রন্থ কিন্তু তা বলে না। কারন গৌতমবুদ্ধ জন্মের পরপরই হাঁটছেন এবং কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন "এই পৃথিবীতে আমি অগ্র, আমি জ্যেষ্ট এবং আমি শ্রেষ্ঠ, ইহাই আমার সর্বশেষ জন্ম, আর আমার পুণজম্ম নাই।"