ইসলাম মানুষকে পথ দেখায়

ইসলাম মানুষকে পথ দেখায় 🌛আসুন আমরা সবাই ইসলামের পথে থাকি।
এবং পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ পড়ি 🌙
📿📿

@তিন মুসাফির ও আটটি রুটি শিক্ষামূলক ইসলামিক গল্প@

একবার দুই পথিক পথ চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তাদের ক্ষুধাও লেগেছিল ভীষণ। খাওয়া-দাওয়া করার জন্য দু’জন মিলে একটা সুবিধাজনক জায়গায় গিয়ে বসে পড়লো। এরপর পুটলি থেকে বের করে নিলো যার যার খাবার। একজনের রয়েছে পাঁচটি রুটি। অন্য জনের তিনটি। তারা যখন খাবার খাওয়ার জন্য তৈরি হলো তখন সেখানে এসে হাজির হলো এক মুসাফির। তার বেশভূষা একদম সাদাসিধে। সে বললো,ভ

াই আমি অভুক্ত। খুব ক্ষুধা লেগেছে। আমার কাছে কোনো খাবার নেই। তোমরা আমাকে কিছু খাবার দাও। পথিক দু’জন মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলো। মনে মনে ভাবলো, তারা দু’জন খাবে আর একজন মুসাফির না খেয়ে থাকবে, এ কেমন কথা? তারা মুসাফিরকে তাদের সঙ্গে খেতে বসার অনুরোধ করলো। তিনজন একসঙ্গে খেতে বসলো। একজনের পাঁচ রুটি। অন্যজনের তিন রুটি। মুসাফিরের শূন্য হাত। তবু তারা রুটি বণ্টনে কোনো তারতম্য করলো না। তারা ভাবলো, কারো সঙ্গে খাবার না থাকতে পারে, কিন্তু ক্ষুধা তো আর কম লাগেনি। তাছাড়া এক সঙ্গে খেতে বসে একজন বেশি খাবে আর একজন কম খাবে, তাই বা কেমন করে হয়? তিনজন সমান সমান রুটি খেলো। খাওয়া-দাওয়া শেষ- এবার বিদায়ের পালা। মুসাফির চলে যাবার সময় পথিক দু’জনকে আটটি দিরহাম বখশিস দিলো। বললো, ভাই, আমি শুধু তোমাদেরটাই খেলাম। তোমাদের কিছুই খাওয়াতে পারলাম না। এই নাও আটটি দিরহাম। তোমরা দু’জনে ভাগাভাগি করে নাও। মুসাফির চলে গেল। কিন্তু সমস্যা বাঁধলো দিরহাম ভাগ করা নিয়ে। যার পাঁচটি রুটি সে বললো, আমার পাঁচটি রুটি ছিল। সুতরাং আমি পাবো পাঁচ দিরহাম। আর তোমার তিনটি রুটির জন্য পাবে তিন দিরহাম। কিন্তু তিন রুটিওয়ালা এ হিসাব মানতে রাজি হলো না। সে বললো, না, আমি তোমার হিসাবে রাজি নই। আমরা দু’জন খেয়েছি সমান সমান। সুতরাং তুমি পাবে চার দিরহাম। প্রথমজন বললো, তা কি করে হয়? তুমি তিন রুটির জন্য চার দিরহাম পাবে। আর আমি পাঁচ রুটির জন্য চার দিরহাম পাবো? এটা কি কোনো আইনের কথা হলো? এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বেঁধে গেল তর্ক। কারো কথায় কেউ রাজি নয়। কিছুতেই তারা মীমাংসায় আসতে পারছে না। অবশেষে একজন বললো, শোন এভাবে বিবাদ করে তো কোনো লাভ নেই। চলো,আমরা আমিরুল মোমেনীন হযরত আলী (রাঃ) এর কাছে যায়। তিনি যে বিচার করেন, তাই আমরা মেনে নেবো। এরপর দু’জন মিলে গেল হযরত আলী (রাঃ)-এর কাছে। তারা সব কথা খুলে বলে ন্যায় বিচারের জন্য ফরিয়াদ জানালো। হযরত আলী (রাঃ) মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনলেন। কিছুক্ষণ তিনি মনে মনে কি যেন ভাবলেন। পরে বললেন, তিনজনে সমান খেয়েছো তো? উভয়ে ঘাড় নেড়ে বলল, হ্যাঁ। হযরত আলী (রাঃ) বললেন, তা হলে এ নিয়ে এত বিবাদ কিসের? হিসাব তো একেবারে পানির মতো সোজা। যার পাঁচটি রুটি সে পাবে সাত দিরহাম। যার তিনটি রুটি সে পাবে এক দিরহাম। এমন হিসাবের কথা শুনে দুজনেই অবাক হয়ে গেল! সাত দিরহাম আর এক দিরহাম ভাগ হলো কোন হিসাবে তারা কিছুতেই বুঝতে পারল না। হিসাব বুঝতে না পেরে দু’জনই হা করে তাকিয়ে রইল হযরত আলী (রাঃ)-র দিকে। ইমাম আলী (রাঃ) তাদের মনের কথা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন, তোমরা ছিলে তিনজন। রুটি আটটি। খেয়েছ সমান সমান। একেকটি রুটিকে তিন টুকরো করলে আটটি রুটি চব্বিশ টুকরো হয়। সুতরাং তোমরা একেক জন খেয়েছ আটটি করে টুকরা। মুসাফির লোকটা আট টুকরোর জন্য আট দিরহাম দিয়েছে। হযরত আলী (রাঃ) বললেন, এবার আসা যাক, কে কতটুকু পাবে সে হিসাবে। দ্বিতীয় জনের তিনটি রুটিতে নয় টুকরো হয়েছে। নয় টুকরোর আট টুকরো সে নিজে খেয়েছে। মাত্র এক টুকরো পড়েছে মুসাফিরের ভাগে। সুতরাং সে এক দিরহামের বেশি কিছুতেই পেতে পারে না। আর একজনের পাঁচ রুটিতে হয়েছে পনেরোটি টুকরো। তার মধ্যে সে নিজে খেয়েছে আট টুকরো। বাকি সাত টুকরো খেয়েছে মুসাফির। সুতরাং সে পাবে সাত দিরহাম। হযরত আলী (রাঃ)-র হিসাবের কথা শুনে পথিক দু’জন বিস্মিত হলো। তাঁর বিচার বুদ্ধির পরিচয় পেয়ে দারুণভাবে মুগ্ধ হলো। তারা আর কোনো ওজর আপত্তি না করে নীরবে মেনে নিলো বিচারের রায়।

Address

Lohagara Narail
Khulna
7512

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ইসলাম মানুষকে পথ দেখায় posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share