14/04/2020
যে সমস্ত সম্পদের যাকাত আসেনাঃ-
ব্যবসায়ীক পন্য ছাড়া ঘরের যেসব আসবাবপত্র কাপড়-চোপড়, থালা-বাটি, হাড়ি-পাতিল, আলমারী-সোকেজ, পড়ার বই ইত্যাদিতে যাকাত আসে না। নিজে বসবাস করা বা ভাড়া দেয়ার উদ্দেশ্যে যে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা হয় কিংবা যে জমি ক্রয় করা হয়, সে ঘর-বাড়ী ও জমির মূল্যের উপর যাকাত আসেনা। তবে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত বাড়ী ও জমির মূল্যের উপর যাকাত আসবে।
১/ কারখানার উৎপাদনের কাজে যে মেশিন, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র ব্যবহার হয়, অনুরূপভাবে যে সমস্ত গাড়ি ও যানবাহন ব্যবহার হয় তার মূল্যের উপর যাকাত আসেনা; বরং এ কারখানা থেকে উৎপাদিত পন্যের উপর যাকাত আসবে।
২/ রিকশা, বেবি, বাস, ট্রাক ও লঞ্চ ইত্যাদি যা ভাড়ায় চালানো হয় তার মূল্যের উপর যাকাত আসেনা। আবশ্য এসব যানবাহন যদি কেউ ব্যবসার নিয়তে রাখে তাহলে তার মূল্যের উপর যাকার আসবে। এক কথায় উৎপাদনের জন্য যে সমস্ত বস্তু মধ্যস্ততা হয় তার উপর যাকাত আসবে না, (তবে এ বিষয়ে বিশেষ লক্ষনীয়, যে ব্যক্তির একাধিক কলকারখানা বা একাধিক গাড়ি বাড়ি রয়েছে তার যাকাতে বিষয়টি ভিন্নরূপ অর্থাৎ যে কারখানার উৎপাদন দ্বারা এবং যে গাড়ি বাড়ির উৎপাদন দ্বারা তার অধীনস্ত লোকজনের জীবিকা নির্বাহের জন্য অপরিহার্য সে গাড়ি বাড়ি ও কলকারখানা ব্যতিত সমস্ত কলকারখানা ও গাড়ি বাড়ির সরঞ্জামের মূল্যের উপর যাকাত আসবে) শুধুমাত্র উৎপাদিত বস্তু এবং অর্থ-কড়ি ও অপ্রয়োজনীয় বস্তু যা ব্যবহার করার জন্য নয়, এমন জিনিসের মূল্যের উপর যাকাত আসবে। আর সোনা-রূপার ক্ষেত্রে ব্যবহারের হোক বা ব্যবসার জন্য হোক সর্বাবস্থায় তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
৩/ যদি কারো নিকট ব্যবহারের উদ্দেশ্যে হীরা, মণি-মুক্তা বা দামি কোন পাথর ইত্যাদি থাকে, তাহলে তার মূল্যের উপর যাকাত আসবে না। আর যদি এ নিয়ত রাখা হয় যে, এটা একটা সঞ্চয়, প্রয়োজনে বিক্রি করে নগদ অর্থ অর্জনকরা যাবে, তবে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে।
৪/ ঋনগ্রস্থের উপর যাকাত ওয়াজিব নয়। হ্যা, যদি এ পরিমাণ সম্পদ থাকে যে, ঋন পরিশোধ করার পর অবশিষ্ট সম্পদের মূল্য সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্য সমপরিমাণ হয়, তবে যাকাত ওয়াজিব হবে।
৫/ সরকারী চাকরীজীবির ক্ষেত্রে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। তবে যে টাকা চাকরীজীবি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত জমা রাখে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।