30/07/2023
লেখাঃ টুম্পা
আজ যে ঘটনাটি শেয়ার করব সেটি আমার জানা অনেক ঘটনার মধ্যে খুবই ভয়ংকর একটি ঘটনা।
কথা না বাড়িয়ে চলে যাই ঘটনায়,,,,,
ঘটনাটি আমার কাছ থেকেই শুরু আমি যখন আমার মায়ের গর্ভে ঘটনাটি তখন ই শুরু হয়। আমার জন্ম একটি অঝোপারাগায় বললেই চলে। যেখানে তখন ও বিদ্যুৎ এর ছিটা ফোটাও যায়নি। আমার বাবা ঢাকায় চাকরি করত তাই সে সেখানেই থাকতো। আমি মা আর দাদী থাকতাম যাই হোক চলে যাই ঘটনায় আমার মা তখন ঘরের সব কাজ সেরে ফেলতো সন্ধ্যায় আগেই, আমাদের বাড়িটি বেরা দিয়ে ঘেরাও করা আর ১০/১২হাত দুরেই কলপার ছিল। সেখান থেকে ৫/৬হাত দুরে ছিল বিশাল একটি হিজল গাছ।
মা একদিন সব কাজ সেরে ঘরে উঠতেই আযান দিয়ে দিল মাগরিবের তখন তার মনে হলো পানি আানা বাকি!!! সে দেরি না করে কলপারে গেল আর পানি চাপা শুরু করলো তখন ও নাকি মা একটি কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিল কিন্তু পাত্তা দিচ্ছিল না। কল চাপা শেষ করেও দেখলো একই রকম ভাবে কোনে এক বাচ্চা কানতেছে। এবার ভালোভাবে খেয়াল করল কান্নার আওয়াজ টা হিজল গাছের কাছ থেকেই আসতেছে। মা একটু এগিয়ে গিয়ে দেখলো যে সত্যি একটু ২/৩বছরের বাচ্চা কানতেছে।
মা বলল কে গো তুমি?? এখানে এলে কিভাবে?? কানতেছো কেন??? কোন বাড়ির বাচ্চা?? এটা বলে মা একটু এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে বলল এসো আমার কোলে এসো।।
যেই না এটা বলেছে ওমনি ওই বাচ্চাটি একটি বিশাল আকৃতি ধারন করল আর বিকট ভাবে হাসা শুরু করল এটা দেখে মা বিরাট ভয় পেয়ে গেল আরো ভয় পেল এটা দেখে যে তার বিশাল আকৃতি কিন্তু মুখটা একটি বাচ্চার মতোই এবং অনেক দুর্গন্ধ। সেখানেই মা সেন্সলেস হয়ে গেল।
সেন্স আসলো পরে মাকে আমার দাদী বলল কেন তুমি সেখানে গেলে?? তোমাকে অনেক ডেকেছি তুমি শুনলেই না।।
এটা বলার পর মা অনেক ভয় পেয়েছে কারন মা কারো ডাক ই শুনেনি। এইছিল আমার জন্মের আগের ঘটনা,,,
এরপর
আমার জন্ম হলো আর জন্মের পর থেকেই নাকি আমি উপরের দিকে তাকিয়ে থাকতাম আর হাসতাম ও না কাদতাম ও না। অনেক খোজার পর এক হুজুরের কাছ থেকে একটি তাবিজ এনে দেওয়ার পর আমি স্বাভাবিক হই তবে হুজুর বলেছিল তাবিজ যাতে না হারায় বিশেস করে ১৩/১৪বছর বয়সে আমাকে সাবধানে রাখতে।।।।।।
ভালোই কাটলো দিন। ক্লাস ৬এ পরি তখন খেলতে গেলাম স্কুল থেকে দুরে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা এসে গোসেলে গেলাম তখন খেয়াল করলাম তাবিজ টি হাতে নাই। মাকে বললে যদি বকে তাই বললাম না ভাবলাম কাল ওই মাঠে গিয়ে খুজে আনবো। তবে না বলাটাই যে ভুল ছিল সেটা তখন ও বুজে উঠতে পারিনি,,,,,
রাতে শুয়ে জালানার দিকে তাকিয়ে ভাবছি কোথায় পরতে পারে???? তাবিজ ট??? আমার জালানা দিয়ে কলপার টা ভালোই দেখা যায় আর দুর হলেও হিজল গাছটাও ভালোই বোঝা যায়,,,,,
ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেলাম,,,,,,,,,,,
হঠাৎ কলচাপার আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল,, এত রাতে কে কল চাপে?? মা??? নাহ মা কেন এত রাতে যাবে!!!!!
একটি উকি দিলাম জালানা দিয়ে কই?? কেও নাইতো। এসে বসলাম ঘাঠে কলচাপা বন্ধ হলো তবে শুরু হলো এক বুক চাপা কষ্ট ভরা কান্নার আওয়াজ।।।। এত করুন গলায় সেই কান্না শরীর ভর করে দিল আমার।। এত রাতে কে কাদে??
মা???
নাহ!!!
মা কেন কাদবে??
এই ভাবতে ভাবতেই মনে হলো কান্নার আওয়াজ টা আমার জালানার পাশ দিয়েই আসছে মনে হচ্ছে জালানার কাছে বসেই কেও কাদছে???
কে????
কে কাদে????
কে????
কয়বার বলার পর হঠাৎ আযান দিয়ে দিল। কান্নারআওয়াজ টা কোথায় যেন মিলিয়ে গেল।ঘুম হলোনা আর।সকালেই মাকে বলব ভাবলাম কিন্তু মনে নেই।।
রাতে মা ডেকে বলল মাথায় তেল দিয়ে দেই আয়। গেলাম তখন মনে হলো আর বললাম মা কাল রাতে তুমি এতে রাতে কল চাপছো??? না থেমেই বললাম কান্না করেছো মা??? কাল রাতে????
এটা শুনে আমার দিকে মা অবাক এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সেই দৃষ্টি যেন এক ভয়ের দৃষ্ট। আমাকে জরিয়ে বলল কি হয়েছে বলতো?? তখন ই মা বুজলো আমার হাতে তাবিজ নাই। রেগে বলল তাবিজ কই??
আমি বললাম মা কোথায় যেন পরে গেছে!!!
মা বলল আচ্ছা আজ থেকে তুই আমার সাথে ঘুমাবি কাল হুজুরের কাছে যাব। রাতে খাওয়া শেষকরতেই দরজায় কড়া নারলো দরজা খুলে দেখি বাবা এসেছে।।
এখন প্রাকৃতিক ভাবেই আমাকে আমার ঘরেই থাকবে হবে।তবে এটা ভাবিনি আজ একা থাকাই আমার জীবনের বড় এক অধ্যায় হয়ে থাকবে যে অধ্যায় এর নাম ভয়।।
বেশি কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে গেছি। জোরে কলে কেও লাথি দিলে যেমন শব্দ হয় ঠিক তেমনি শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। বিরক্ত লাগছিল কাল রাতেও ঘুমাইনি কে???
তবে আজ কল চাপা নয় সেই কান্নার শুর ভেসে আসতেছে আমার কানে। এবার এর কান্না এক ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ আর যেটা আমার জালানাপাশ দিয়ে আসতেছে আর আমার শরীর আগে থেকেই ভাড়ী হয়ে আসতেছে আর এক অজানা ভয় এসে ভীর করছে আমাকে,,,,,,,,,
অনেক ভয়ে বললাম
কে??
কে????????
কে কাদে????
কে আপনি???
এটা বলেই জালানা খুলে দিলাম। মা বলেছিল জালানা না খুলতে তাও খুললাম। দেখলাম কেও নাই কোথাও।
এসে বিছানায় শুইলাম হঠাৎ এক শিতল বাতাসে ঘর ঠান্ডা হয়ে গেল আর সেই সাথে পচা ফটকা এক দুর্গন্ধ এসে ঘর ভরে গেছে এটা কি মাছ পচা নাকি কিসের গন্ধ বুজতে পারছিনা এমন গন্ধ নাক চেপে ধরে আছি তাও হচ্ছেনা।
ঘর শিতল হয়ে গেছে এত ঠান্ডা যে কাথা গায় দিয়েও হচ্ছেনা গরমের দিন তবুও। হঠাৎ আমি কারো উপস্থিতি অনুভব করতে পারছি। এটা বুজেই ভয় এ শরীর বরফ হয়ে যাচ্ছে কাওকে ডাকার শক্তি পাচ্ছিনা হাত পা নারতে পারছিনা।
তখনই মনে হলো কেও খাটের নিচে দৌড়াদৌড়ি করতেছে একবার এপাশ আবার ওপাশ এভাবে অনেকখন হচ্ছে। আমার গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছেনা।
ঠিক তখনই মনে হলে আমার পায়ের উপর কেও বরফের গোলা দিয়ে চেপে ধরেছে। সেই ঠান্ডা আর ব্যাথা কতখন সহ্য করেছি জানা নাই।
যখন চোখ মেলেছি দেখি আমি বাবার কোলে সবাই এসে দারিয়েছে। আমার গোঙানির আওয়াজ পেয়ে সবাই এসে দেখে আমি নাকি বিছানার অর্ধেক আর বাকি অর্ধেক নিচে পরে আছি। পরে সবটা বললাম।।।
কেও বিশ্বাস করলো আর কেও করলো না
তবে আমার মা খেয়াল করল আমার পায়ে কিছু একটা দাগ।
পরে দেখি যেখানে মনে হইছিল বরফ চেপে ধরেছে সেখানে একটা আঙুলের দাগ কয়টা আঙুল বোঝা যাচ্ছে না তবে দাগ টা আজ ও আছে হালকা।
এরপর সেখান থেকে বাবা আমাদের নিয়ে আসলো ঢাকা।
অনেক বছর পর গিয়েছি সেখানে অনেক উন্নত হয়েছে
তবে আজ ও আমি একা ঘুমাতে পারিনা মনে হয় কেও বুকের উপর উঠে বসেছে বা একটা দুর্গন্ধ পাই।
সেদিন কি ছিল জানিনা যদি সপ্ন হতো তাহলে হয়তো ওই দাগ টা আমি আজ ও বহন করতাম না।।
এই ছিল ঘটনা।।
যার কাছথেকে শোনার তার মতই বলার চেষ্টা করেছি
কেমন লাগলো জানাবেন
ভালো থাকবেন