14/10/2023
একজন মাকে দেখলাম, সন্তান শহীদ হয়েছেন এই আনন্দে রাস্তা দিয়ে ছুটছেন আর অশ্রুসিক্ত চোখে, হাসিমাখা মুখে সবাইকে এই খবর দিচ্ছেন।
দশকের পর দশক ধরে প্রতিদিন এই মায়ের সন্তানেরা নিহত হচ্ছে।
প্রতি মুহূর্তে হাত, পা, চোখ হারাচ্ছে।
পরিবার নেই, স্বামী নেই, স্ত্রী নেই, সন্তান নেই, খাবার নেই, পোশাক নেই।
কোনো কিছু নেই, কেবল যখন তখন ভয়ানক বুলেটে ঝাঝরা হয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা আছে।
দেশে দেশে মানবতার পক্ষে কথা বলা কোনো সংস্থা তাদেরকে নিয়ে কথা বলে না।
তাদের জন্য জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় অপরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আসে না।
তাদের বসতিতে অক্সিজেনের সরবরাহ হয় কি না, শিশুরা বিকশিত হওয়ার পরিবেশ পায় কি না, নারীরা স্বাস্থ্যসেবা পায় কি না, এমনকি বেঁচে থাকার জন্য ন্যুনতম খাবার পায় কি না, তা নিয়ে পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্র, জাতি বা সংস্থাকে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় না।
বুলেটের আঘাতে তাদের নিহত হওয়া, সবখানে সর্বত্র অপদস্থ হওয়া, আহত হওয়া, বিকলাঙ্গ হওয়া - সবকিছু বিশ্ববিবেকের কাছে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এগুলোকে তো এখন আর কেউ মানবাধিকার লংঘনও মনে করে না।!
এরা তো গত কয়েক দশক ধরে ক্রমাগত মরছেই।
নতুন করে এরা আর কি মারা যাবে?
অনেকেই বলছে, এরা আক্রমণ করেছে! মুসলিমরা আবার আক্রমণকারী হয় কীভাবে?
অথচ এই যে দশকের পর দশক ধরে তারা ঘরে-বাইরে তারা অবিরাম হামলার শিকার হলো, তা নিয়ে আমাদেরকে একটা খণ্ডবাক্যও ব্যয় করতে দেখা গেলো না।
এরা হামলাকারী হবে কেনো? এরা তো সবসময় হামলার মধ্যেই ছিলো।
এরাতো সবসময় আক্রান্ত হচ্ছিলো। প্রতিটা নিরাপদ সকাল দেখার জন্য প্রতিদিন কী অপরিমাণ যুদ্ধের ভেতর দিয়ে তাদের যেতে হয়েছে এবং হচ্ছে এর হিসাব লেখা আছে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘতম জাতিগত হত্যাকাণ্ডের খুনরাঙা ইতিহাসে।
সকল নিহত, বিকলাঙ্গ ও জীবনমৃত লোকেরা আরেকবার বাঁচার চেষ্টাই তো কেবল করছে।
আপনার অক্ষম পৌরষ তাদেরকে সমর্থন করার সাহস দেখাতে ব্যর্থ হলে, আপনি অবশ্যই ভণ্ড। আপনার সবকিছু মেকি। আপনার মানবপ্রেম সন্দেহাতীতভাবে পক্ষপাতিত্বের বীভৎস দোষে দুষ্ট।
আপনার যতটুক সাধ্য, ততটুকু দিয়ে তাদেরকে সমর্থন দিন। তাদের পাশে দাঁড়াতে না পারলেও সুবহি সাদিকের আগে তাঁদের জন্য রাব্বুল আলামিনের দরবারে হাত তুলুন।
সন্তানের শাহাদাতের খবরে খুশি হওয়া মায়েদেরকে মহান আল্লাহ যেনো জীবিত বিজয়ী সন্তানের কপালে অশ্রুসিক্ত স্নেহচুম্বন করার সুযোগ দিন।
অগণিত নিস্পাপ শিশু, অসংখ্য কিশোর, নববধু, স্বামী, মা-বাবা, সন্তান এবং অসংখ্য বয়োবৃদ্ধদের রক্তের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে স্বাধীন আকাশে মাথা উচু করে দাঁড়ানোর তৌফিক দান করুন।
৭ দশক ধরে অবিরাম বয়ে যাওয়া রক্তসাগরের অবসান ঘটুক।
মজলুম মুক্তি পাক। যালিম নিপাত যাক।