ILmer Path

ILmer Path This is an Islamic channel in Bangladesh. We have a YouTube channel. Please Like, Share & Subscribe our channel "iLmer Path".

19/05/2024

بِسْمِ الله الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ قَالَ الشَّيْخُ الْإِمَامُ الْحَافِظُ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْمُغِيرَةِ الْبُخَارِيُّ رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى آمِينَ :
باب كَيْفَ كَانَ بَدْءُ الْوَحْىِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَوْلُ اللهِ جَلَّ ذِكْرُهُ (إِنَّا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ كَمَا أَوْحَيْنَا إِلَى نُوحٍ وَالنَّبِيِّينَ مِنْ بَعْدِ­­هِ)

বিসমিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহিম, ইমাম হাফিয আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী রহঃ বলেনঃ

পরিচ্ছেদঃ ১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রতি কিভাবে ওহী শুরু হয়েছিল এবং এ মর্মে আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ‘‘নিশ্চয় আমি আপনার প্রতি সেরূপ ওহী প্রেরণ করেছি যেরূপ নূহ ও তাঁর পরবর্তী নবীদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেছিলাম।’’ (৪: ১৬৩)

১। হুমায়দী (রাহঃ) ......... আলকামা ইবনে ওয়াক্কাস লায়সী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে ইরশাদ করতে শুনেছিঃ প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের অথবা কোন নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে, সেই উদ্দেশ্যই হবে তার হিজরতের প্রাপ্য।

হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীসটি বুখারী সহ বহু হাদীসের কিতাবের প্রথম হাদীস। উপরে হাদীসটির যে অনুবাদ করা হয়েছে, এতেই এর মর্ম উদ্ধার হয়ে যায় এবং ভাবার্থ প্রকাশের জন্য এর চাইতে অধিক কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু হাদীসটির বিশেষ গুরুত্বের দাবী এই যে, এর অর্থ ও তাৎপর্যের উপর আরো কিছু লিখা হোক।

হাদীসটির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে, উম্মতের উপর এই বাস্তব ও সত্য কথাটি তুলে ধরা যে, মানুষের সকল কর্মকাণ্ডের শুদ্ধাশুদ্ধ এবং এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও অগ্রহণযোগ্যতা নিয়্যতের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, পুণ্য কাজ বলে কেবল সেটাকেই ধরা হবে এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে সে কাজেরই মূল্যায়ন হবে, যা ভাল নিয়্যতে করা হবে। আর যে পুণ্য কাজ কোন হীন উদ্দেশ্যে ও খারাপ নিয়্যতে করা হবে, সেটা পুণ্য কাজ বলে গণ্য হবে না এবং আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্যও হবে না; বরং নিয়্যত অনুসারে সেটা অশুদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত হবে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে যদিও সেটা পুণ্য কাজই মনে হয়।।

সারকথা এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা কাজের সাথে নিয়্যতও দেখেন এবং বাহ্যিক অবস্থার সাথে অন্তরের অবস্থারও খবর রাখেন। তাই তাঁর দরবারে প্রত্যেক কাজের মূল্যায়ন আমলকারীর নিয়্যত অনুসারে করা হয়। একটি ভ্রান্তির নিরসন এখানে কেউ যেন এই ভুল ধারণা না করে যে, কাজের ফলাফল যেহেতু নিয়্যত অনুসারেই

হয়ে থাকে, তাহলে কোন মন্দ কাজও ভাল নিয়্যতে করলে সেটা পুণ্য কাজ বলে গণ্য হয়ে

যাবে এবং এর জন্য সওয়াব পাওয়া যাবে। যেমন, কেউ যদি এই নিয়্যতে চুরি অথবা ডাকাতি

করে যে, এর দ্বারা অর্জিত সম্পদ গরীব-মিসকীনের সাহায্যে ব্যয় করবে, তাহলে সে সওয়াবের

অধিকারী হতে পারবে। আসল কথা এই যে, যে কাজটি আদতেই মন্দ এবং যে কাজ করতে আল্লাহ্ ও রাসূল নিষেধ করেছেন, এমন কাজে ভাল নিয়্যতের প্রশ্নই আসতে পারে না। এগুলো সর্বাবস্থায়ই মন্দ এবং আল্লাহ্র ক্রোধ ডেকে আনে; বরং এমন খারাপ কাজে ভাল নিয়্যত করা এবং সওয়াবের আশা করা অধিক শাস্তির কারণ হতে পারে। কেননা, এটা আল্লাহ্র দ্বীন ও আহকামের সাথে এক ধরনের উপহাসের শামিল।

এখানে হাদীসটির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে নেক আমল সম্পর্কে এ কথাটি বলে দেওয়া যে, নেক কাজও যদি কোন অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়, তাহলে সেটা আর নেক আমল থাকবে না; বরং অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে তার ফল মন্দই হবে। যেমন, যে ব্যক্তি নামায খুব একাগ্রতা ও বিনয়ের সাথে আদায় করে, যাকে আমরা অত্যন্ত উচ্চ স্তরের নেক আমল মনে করি, সেখানে লোকটি যদি একাগ্রতা ও বিনয়ভাব এই জন্য অবলম্বন করে যে, মানুষ এর দ্বারা তার দ্বীনদারী ও খোদাভীতি সম্পর্কে ভাল মানোভাব পোষণ করবে ও তার সম্মান করবে, তাহলে এই হাদীসের দৃষ্টিতে তার এ বিনয়ভাব ও একাগ্রতার নামাযেরও আল্লাহ্ তা'আলার কাছে কোন মূল্য নেই। অথবা এক ব্যক্তি কুফরের দেশ থেকে ইসলামী রাষ্ট্রে হিজরত করে যায় এবং হিজরতের সকল কষ্ট-মুসীবত বরণ করে নেয়; কিন্তু এই হিজরতের দ্বারা তার উদ্দেশ্য আল্লাহ্ তা'আলার সন্তোষ অর্জন নয়; বরং এর মধ্যে পার্থিব কোন স্বার্থ ও উদ্দেশ্য লুকায়িত থাকে। যেমন, হিজরতের দেশে বসবাসকারী কোন মহিলাকে বিয়ে করার খাহেশ তাকে হিজরতে উদ্বুদ্ধ করল। এমতাবস্থায় এই হিজরত ইসলামের জন্য হিজরত হবে না এবং আল্লাহ্ তা'আলার দরবারে সে কোন প্রতিদানও পাবে না; বরং উল্টো সে শুনাহের ভাগী হবে। এটাই হচ্ছে এই হাদীসের মর্ম। বিরাট নেক আমলও এখলাছশূন্য হলে উহা জাহান্নামেই নিয়ে যাবে এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম তিন ব্যক্তিকে আল্লাহর আদালত থেকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার ফায়সালা দেওয়া হবে। সবার আগে ঐ ব্যক্তিকে হাজির করা হবে, যে জেহাদের ময়দানে শহীদ হয়েছিল। সে যখন আদালতে হাজির হবে, তখন আল্লাহ তা'আলা প্রথমে তাকে নিজের নে'আমতরাজির কথা স্মরণ করিয়ে দিবেন। সেও এগুলো স্মরণ করে স্বীকার করবে। তারপর তাকে বলা হবে, বল তো! তুমি এগুলোর কি হক আদায় করেছ এবং কি কাজ করে এসেছ? সে বলবে, হে আল্লাহ! আমি তোমার পথে জেহাদ করেছি এবং তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য আমার জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছি। আল্লাহ তা'আলা বলবেন! তুমি মিথ্যা বলছ। তুমি তো কেবল এই উদ্দেশ্যে জেহাদ করেছিলে যে, বীর বাহাদুর হিসাবে প্রসিদ্ধ হবে। আর দুনিয়াতে তো তোমার বীরত্বের আলোচনা হয়েই গিয়েছে। এরপর তাকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

অনুরূপভাবে একজন দ্বীনের আলেম ও কুরআনের আলেমকে আদালতে হাজির করা হবে। তাকেও আল্লাহ তা'আলা জিজ্ঞাসা করবেন ঃ তুমি কি আমল করে এসেছ? সে বলবে আমি তোমার দ্বীন ও তোমার কুরআনের জ্ঞান লাভ করেছিলাম এবং তা অন্যকেও শিক্ষা দিয়েছিলাম। আর এসব তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই করেছিলাম। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেনও তুমি মিথ্যাবাদী। তুমি তো নিজেকে আলেম ও কারী হিসাবে প্রকাশ করার জন্য ওসব করেছিলে। তারপর আল্লাহর নির্দেশে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর আরেক ব্যক্তিকে হাজির করা হবে, যাকে আল্লাহ তা'আলা প্রচুর ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। তাকেও জিজ্ঞাসা করা হবে যে, তুমি কি করে এসেছ? সে বলবে, হে আল্লাহ্। আমি পুণ্য অর্জনের কোন ক্ষেত্রই অবশিষ্ট রাখিনি; বরং সকল খাতে তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমি অর্থ ব্যয় করেছি। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন ঃ তুমি মিথ্যাবাদী। তুমি তো কেবল এই উদ্দেশ্যে তোমার সম্পদ ব্যয় করেছিলে যে, দুনিয়ার মানুষ তোমাকে বড় দানশীল বলবে। আর দুনিয়াতে তো তোমার দানশীলতার খুব সুনাম হয়েই গিয়েছে। তারপর তাকেও উপুড় করে জাহান্নামে ফেলে দেওয়া হবে। -মুসলিম

মোটকথা, আল্লাহর নিকট কেবল ঐ আমলই কাজে আসবে, যা বিশুদ্ধ নিয়্যতে অর্থাৎ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই করা হয়। দ্বীনের বিশেষ পরিভাষায় একেই এখলাছ বলা হয়। কুরআন মজীদে মুখলেছ ও অমুখলেছের আমলের একটি দৃষ্টান্ত পবিত্র কুরআনের নিম্নের দু'টি আয়াতে দান-খয়রাতকারী দুই শ্রেণীর মানুষের আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণীতে রয়েছে ঐসব লোক, যারা লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে নিজেদের সম্পদ কল্যাণখাতে ব্যয় করে থাকে। দ্বিতীয় শ্রেণীতে রয়েছে ঐসকল মানুষ, যারা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ দ্বারা গরীব, মিসকীন ও অভাবীদের সাহায্য করে। এ দুই শ্রেণীর মানুষের বাহ্যিক কর্মকাণ্ডকে দেখতে সম্পূর্ণ একই মনে হয়। মানুষের চোখ এর মধ্যে কোন পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে না। কিন্তু পবিত্র কুরআন বলে যে, যেহেতু তাদের নিয়্যত ও উদ্দেশ্য ভিন্ন, তাই তাদের আমলের ফলাফলও ভিন্ন হবে। এক শ্রেণীর মানুষের আমল বরকত ও কল্যাণে পরিপূর্ণ, আর অপর শ্রেণীর মানুষের আমল সম্পূর্ণ নিষ্ফল ও বিনষ্ট। আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ
كَالَّذِي يُنْفِقُ مَالَهُ رِئَاءَ النَّاسِ وَلَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلْدًا لَا يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِمَّا كَسَبُوا وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
তোমরা ঐ ব্যক্তির মত নিজেদের দান-খয়রাতকে বিনষ্ট করো না, যে নিজের সম্পদ লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে থাকে, অথচ সে আল্লাহ্ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন যে, একটি মসৃণ পাথরে কিছু মাটি জমে গেল (এবং এর উপর কিছু সবুজ ঘাস উৎপন্ন হয়ে গেল।) তারপর এর উপর প্রবল বৃষ্টিপাত হল এবং একে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তাই এই ধরনের রিয়াকার লোকেরা নিজেদের উপার্জিত সম্পদের কোন বিনিময় লাভ করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ এই অকৃতজ্ঞদেরকে হেদায়াত এর সুমিষ্ট ফল থেকে বঞ্চিতই রাখবেন। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৬৪)

অপরদিকে মুখলেছদের সম্পর্কে বলা হয়েছে
وَمَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ وَتَثْبِيتًا مِنْ أَنْفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍ بِرَبْوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلٌ فَآتَتْ أُكُلَهَا ضِعْفَيْنِ
যারা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এবং নিজেদের মনকে সুদৃঢ় ও ত্যাগ তিতীক্ষায় অভ্যস্ত করার জন্য নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাহে খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে টিলায় অবস্থিত সজীব বাগানের মত, যাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং এর ফলে দ্বিগুণ ফল দান করে। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৬৫)
এখানে যদিও উভয় ব্যক্তি বাহ্যত একইভাবে নিজেদের ধন-সম্পদ গরীব, মিসকীন ও অভাবীদের জন্য ব্যয় করেছে; কিন্তু একজনের নিয়্যত যেহেতু কেবল লোকদেখানোই ছিল, তাই মানুষের সামনে তার এই প্রদর্শনী সাময়িক বাহবা কুড়ানো ছাড়া আর কিছুই লাভ হল না। কেননা, তার এই অর্থব্যয়ের পেছনে এ ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্যই ছিল না। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় ব্যক্তি যেহেতু এ অর্থ ব্যয় ও ত্যাগ দ্বারা কেবল আল্লাহর সন্তোষ ও তাঁর অনুগ্রহ কামনা করেছিল, তাই আল্লাহ্ তা'আলা তাকে তার নিয়্যত অনুযায়ী ফল দান করেছেন।

সারকথা, এটাই হচ্ছে আল্লাহর নীতি ও তাঁর বিধান। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে এ কথাটিরই ঘোষণা দিয়েছেন। দুনিয়াতে বাহ্যিক অবস্থার উপর সকল ফায়সালা হয়ে থাকে, আখেরাতে নিয়্যতের উপর ফায়সালা হবে এই জগতে যেখানে আমরা বর্তমানে রয়েছি এবং যেখানে আমাদেরকে কাজ করার সুযোগ দিয়ে রাখা হয়েছে, এটাকে "আলমে যাহের" তথা দৃশ্য ও প্রকাশ্য জগত বলা হয়।
এখানে আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতি এবং সকল বোধ-বুদ্ধির সীমানা ও বাহ্যিক অবস্থা ও বিষয়াবলী পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এখানে আমরা কোন ব্যক্তির কোন বাহ্যিক আচার-আচরণ দেখেই তার ব্যাপারে ভাল অথবা মন্দ কোন মন্তব্য করতে পারি এবং এরই ভিত্তিতে তার সাথে আমরা নিজেরাও আচরণ করে থাকি। বাহ্যিক কর্মকাণ্ড ও আচার-আচরণের বাইরে তাদের নিয়্যত, অন্তরের রহস্য ও মনের গোপন অবস্থা উপলব্ধি করতে আমরা অক্ষম। এই জন্যই ফারুকে আযম হযরত ওমর (রাঃ) বলতেনঃ আমাদের কাজ হচ্ছে বাহ্যিক অবস্থা দেখে বিচার করা, আর গোপন অবস্থা আল্লাহর হাতে ছেড়ে দেওয়া।

কিন্তু আখেরাতের জগতে বিচারক হবেন আল্লাহ তা'আলা, যিনি সকল গোপন বিষয় সম্যক অবগত। তাই সেখানে মানুষের নিয়্যত ও মনের ইচ্ছা বিবেচনায় সকল বিচার ও সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। অতএব, মনে রাখতে হবে যে, এই জগতে বিধান প্রয়োগের বেলায় যেমন বাহ্যিক আমল ও কর্মই মূল বিষয় এবং কারো নিয়্যতের উপর এখানে বিচার করা যায় না, অনুরূপভাবে আখেরাতে বিষয়টি হবে এর সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ, আল্লাহ্ তা'আলা সেখানে বিচার ও ফায়সালা করবেন নিয়্যত দেখে। সেখানে বাহ্যিক আমল ও কর্মকে কেবল নিয়্যতের অনুগামী হিসাবে গণ্য করা হবে। হাদীসটির বিশেষ গুরুত্ব এই হাদীসটি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত তত্ত্বপূর্ণ অথচ সংক্ষিপ্ত বাণীসমূহের অন্তর্ভুক্ত। দ্বীনের একটা বিরাট অংশ এই হাদীস নিজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। তাই এটাকে ‘ক্ষুদ্র ঝিনুকের ভিতরে মহাসমুদ্র' বলা যায়। এই জন্যই কোন কোন ইমাম বলেছেন, ইসলামের এক তৃতীয়াংশ এই হাদীসে এসে গিয়েছে। আর বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে মহান ইমামদের এই কথায় কোন অতিরঞ্জন নেই; বরং তাদের কথাই যথার্থ। কেননা, মৌলিক দিক থেকে ইসলামের বিভাগ তিনটি : (১) ঈমান তথা আকীদা সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী, (২) আমল ও (৩) এখলাছ। যেহেতু এই হাদীস এখলাছের সম্পূর্ণ বিভাগকে তার অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে, তাই বলা যায় যে, ইসলামের এক তৃতীয়াংশই এখানে এসে গিয়েছে।

এখলাস এমন বস্তু যে, প্রত্যেক কাজে এবং প্রতিটি পদক্ষেপে এর প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশেষ করে আল্লাহর কোন বান্দা যখন কোন শুভ কাজের সূচনা করে, সে কাজটি আমল সংক্রান্তই হোক অথবা গবেষণাধর্মীই হোক, সেখানে সে প্রয়োজন অনুভব করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই বাণীটি চোখের সামনে থাকুক। এই জন্যই অনেক মনীষীকেই দেখা যায় যে, তাঁরা নিজেদের গ্রন্থসমূহ এই হাদীস দ্বারা শুরু করা খুবই পছন্দ করেছেন। যেমন, ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর অমরগ্রন্থ বুখারী শরীফকে এই হাদীস দ্বারাই শুরু করেছেন। তাঁর পরে ইমাম বগভী (রহঃ) তাঁর মাসাবীহ নামক হাদীসগ্রন্থকেও এই হাদীস দ্বারা শুরু করেছেন। তাঁরা যেন এই হাদীসটিকে কিতাবের 'প্রারম্ভিকা' বানিয়ে নিয়েছেন। হাফেযুল হাদীস আব্দুর রহমান ইবনে মাহদী (রহঃ) বলেন, কেউ কোন দ্বীনি কিতাব লিখতে চাইলে এই হাদীস দ্বারাই সেই কিতাবের সূচনা হোক, এটাই আমি উত্তম মনে করি। আমি নিজে কোন কিতাব লিখলে এর প্রতিটি অধ্যায়ের সূচনা এই হাদীস দ্বারাই করব। —ফতহুল বারী

হাদীসের শিক্ষাঃ

ক. মানুষের উচিত দীনী কাজ দ্বারা দুনিয়া নয়; বরং আখিরাত ও আল্লাহর সন্তুটি কামনা করা।

খ. হাদীছে যেহেতু আমলকে নিয়তের উপর নির্ভরশীল বলা হয়েছে, সেহেতু সেই যদি দীনী কাজ দুনিয়ার উদ্দেশ্যে করে, তবে তা প্রকৃতপক্ষে দীনী কাজ থাকে না, দুনিয়াবী কাজ হয়ে যায়, বাহ্যদৃষ্টিতে তাকে যতই দীনী কাজ মনে হোক না কেন।

গ. দুনিয়াবী জায়েয কাজ, যেমন পানাহার করা, বেচাকেনা করা, ঘর-সংসার কর ইত্যাদি যদি কেউ আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করে, তবে তা নিছক দুনিয়াবী কাজ থাকে না, তা ইবাদতেরও মর্যাদা লাভ করে।

ঘ. বর্জন করাটাও যেহেতু কাজ, যেমন চুরি না করা, মদপান না করা, দর্প না করা, ঝগড়া না করা, কারও মনে আঘাত না দেওয়া ্যাদি, সেহেতু এগুলো না করার ক্ষেত্রে যদি আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির নিয়ত থাকে, তবে এর দ্বারাও ছওয়াব পাওয়া যাবে।

ঙ. নিয়ত দ্বারা ছোট ও তুচ্ছ কাজও বড় ও মহৎ কাজে পরিণত হয়ে যায়। যেমন কারও সংগে হাসি দিয়ে কথা বলা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া, আপাতদৃষ্টিতে এগুলো বিশেষ বড় কোনও কাজ নয়, কিন্তু আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির নিয়তে করলে তাঁর কাছে এসব অনেক মর্যাদাপূর্ণ কাজে পরিণত হয়ে যায়। বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা আখিরাতে এসব আমলের অভাবনীয় পুরস্কার লাভের কথা জানা যায়।

চ. নিয়ত দ্বারা একই আমল বহু আমলে পরিণত হতে পারে। যেমন কেউ যদি মসজিদে গমন করে আর জামাতে নামায পড়ার সাথে সাথে এই নিয়তও রাখে যে, সে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেবে, মু'মিনদের দেখা পেলে সালাম দেবে, মু'মিনদের খোঁজখবর নেবে, রুগ্ন ব্যক্তির দেখা পেলে তার সেবা করবে ইত্যাদি, তবে বাস্তবে এসব কাজের অবকাশ না আসলেও কেবল নিয়তের কারণেও সে তার ছওয়াব পাবে। কাজ তো হয়েছে একটি অর্থাৎ মসজিদে গমন, কিন্তু নিয়ত যেহেতু ছিল বহুবিধ, তাই সে বহুবিধ আমলেরই ছওয়াবের অধিকারী হয়ে যাবে।

ছ. নিয়ত একান্তই মনের বিষয়। প্রত্যেকে কেবল তার নিজ মনের অবস্থাই জানে, অন্যের মনে কি আছে তা কেউ জানে না। সুতরাং আমলের ক্ষেত্রে কর্তব্য নিজ নিয়তের তদারকি করা, অন্যের নিয়ত নিয়ে কথা না বলা। অন্যের নিয়ত নিয়ে কুধারণা করা শুনাহ'র কাজ। এর থেকে বিরত থাকা জরুরি।

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১ (আন্তর্জাতিক নং ১)

তাহকীক: তাহকীক নিষ্প্রয়োজন

হাদীসের বর্ননাকারী: হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. (মৃত্যু ২৩ হিজরী)

"আইনস্টাইনের শেষ কথা কী ছিল " এটা জানা যায় নি। এটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে!প্রিন্সটন হাসপাতালে যখন আইনস্টাইন বুঝতে পারলেন, মৃত্...
12/10/2023

"আইনস্টাইনের শেষ কথা কী ছিল " এটা জানা যায় নি। এটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে!

প্রিন্সটন হাসপাতালে যখন আইনস্টাইন বুঝতে পারলেন, মৃত্যু কড়া নাড়ছে। শেষ মুহূর্তে তাঁর মুখটা নড়ে উঠল। কিছু একটা বলার চেষ্টা করছেন। শেষ বক্তব্য!

নার্স কানটা এগিয়ে নিয়ে এলেন আইনস্টাইনের মুখের সামনে। খুব আস্তে আস্তে কিছু কথা শোনা যাচ্ছে বটে, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছেন না তিনি। আইনস্টাইন চিন্তায় ফিরে গেছেন জার্মানির উলম শহরে। সেখানকার স্থানীয় জার্মান ভাষাতেই বলে উঠেছিলেন শেষ শব্দগুলি। আমেরিকান নার্সের কাছে সেই শব্দগুলি সম্পূর্ণ অপরিচিত। কাজেই হারিয়ে গেল সেই শেষ কথা। তারপরেই মারা যান আইনস্টাইন।

ঠিক কী বলেছিলেন তিনি? বিজ্ঞানের কথা? মানুষের কথা? নাকি পরমাণু বোমা নিয়ে আক্ষেপ? জানা যায়নি। জানা যাবে না কোনদিন…

04/01/2023

#মুসলিম_সভ্যতার_শিক্ষাব্যবস্থা

আস-সালামু আলাইকুম (আরবি: ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ‎‎) !!!ঘুম আসছে না? জেনে নিন সহজ টেকনিক----ঘুম যাদের কম হয় তাদের অস্বস্তির...
27/12/2022

আস-সালামু আলাইকুম (আরবি: ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ‎‎) !!!

ঘুম আসছে না? জেনে নিন সহজ টেকনিক----

ঘুম যাদের কম হয় তাদের অস্বস্তির শেষ নেই। দিনভর ক্লান্তি ও অবসাদ গ্রাস করে রাখে। দুশ্চিন্তা ও জীবন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। ঘুম কম হওয়ার অন্যতম কারণ অধিক সময় ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, যা মস্তিষ্কে ঘুম আসার কেমিক্যাল বের হতে বাধা দেয়। ঘুম আসছে না ভেবে ফোন হাতে নিয়ে একটু ফেসবুক দেখি তো করে করে আসলে ঘুম না আসার সময়কে বাড়িয়ে দেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঘুম নিয়ে আসার সহজ টেকনিক নিয়ে লিখেছেন ডা. অপূর্ব চৌধুরী।

স্লো নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস
* বিছানার প্রান্তে রিলাক্স হয়ে বসে ধীরে ধীরে পাঁচ সেকেন্ড নিঃশ্বাস নিন।
* দুই সেকেন্ড সেটা ধরে রাখুন।
* পরের পাঁচ সেকেন্ডে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।
* দশ সেকেন্ড পরপর পাঁচ মিনিট এমন করে স্লো নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়ুন।

এভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিলে শরীরে এটি কীভাবে কাজ করে!

সারাদিনে ব্যস্ত থাকলে আমাদের শরীরের নার্ভ, হরমোন এবং মাসলগুলো সবসময় টেন্স থাকে, এক্টিভ থাকে, রিলাক্স থাকে না। যাকে সহজ ভাষায় বলে ফাইট অথবা ফ্লাইট কন্ডিশন। এমন স্লো রিলাক্সিং ব্রেথ শরীরের প্যারাসিম্পেথেটিক নার্ভ এক্টিভিটি স্টিমুলেট করে। এটার কাজ শরীরের অঙ্গগুলোকে বার্তা দেওয়া যে, এখন রেস্টিং সময়, তোমাদের কাজ কমিয়ে দাও। শরীর এ বার্তা পেলে তার ইন্টেন্স এক্টিভিটির রাশ টেনে ধরে। শরীর রিলাক্স করতে শুরু করে এবং মস্তিষ্কের এক্টিভিটি কমে গিয়ে ঘুম আনায়।

Ref: https://qr.ae/prtMTG

এই ১০ উপায়ে গ্রিন টি খাবেন না---১. খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন টি খাবেন না। অনেকে মনে করেন, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন টি খেল...
19/12/2022

এই ১০ উপায়ে গ্রিন টি খাবেন না---

১. খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন টি খাবেন না। অনেকে মনে করেন, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন টি খেলে খাবারের অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রিন টি শোষণ করে নেবে। কিন্তু আদতে খাবারে যে প্রোটিন থাকে, তা হজমের আগেই গ্রিন টি খেলে হজমপ্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

২. খুব গরম অবস্থায় গ্রিন টি খাবেন না। তাতে আপনার ঠোঁট, জিহ্বা বা পাকস্থলীর ক্ষতি হতে পারে। সেরা ফল পেতে আট থেকে দশ মিনিট অপেক্ষা করে গ্রিন টি খান

৩. গ্রিন টি যেহেতু ‘ডিটক্স’, অনেকে মনে করেন, সকালে খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়া উচিত। কিন্তু একেবারে খালি পেটে খাওয়ার চেয়ে হালকা কিছু খেয়ে শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেম চালু করে তারপর গ্রিন টি খেলে ভালো ফল দেবে, নতুবা অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হলো দুবার খাবারের মাঝামাঝি খাওয়া।

৪. অনেকে গ্রিন টির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান। কেননা, চিনি অস্বাস্থ্যকর। ‘সাইলেন্ট হোয়াইট পয়জন’। তবে গরম অবস্থায় মধু মেশালে এর কার্যকারিতা অনেকটাই কমে যায়। তাই একান্তই মধু মেশালে পান করার আগে উষ্ণ গরম অবস্থায় গ্রিন টিতে মধু মেশাবেন।

৫. গ্রিন টির সঙ্গে ওষুধ খাবেন না। কেননা, বিভিন্ন ওষুধের উপাদান গ্রিন টির সঙ্গে মিশে জটিল উপাদান তৈরি করে। তাতে ওষুধের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।

৬. গ্রিন টি স্বাস্থ্যকর। তাই বলে আপনি যত খুশি তত গ্রিন টি খেতে পারেন না। চা বা কফির মতো গ্রিন টিতেও ক্যাফেইন থাকে। আর অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে অনিদ্রা, মাথাব্যথা, উদ্বেগ, আলসেমি—এগুলো চেপে বসতে পারে। আয়রন শোষণের পরিমাণও কমিয়ে দেয় ক্যাফেইন। দিনে দুই থেকে তিন কাপ গ্রিন টি খেতে পারেন।

৭. বাজারে এখন নানা ফ্লেভারের গ্রিন টি পাওয়া যায়। তবে ‘ন্যাচারাল ফ্লেভার’ গ্রিন টি খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।

৮. একটা গ্রিন টির কাপে দুটি টি-ব্যাগ মেশাবেন না। এতে অ্যাসিডিটির আশঙ্কা বাড়বে, হজমেও গোলযোগ হতে পারে।

৯. সকালে উঠেই খালি পেটে, দুপুর ১২টায়, সন্ধ্যায় খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পর বা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে গ্রিন টি খাবেন না। সম্ভব হলে দুবার ভারী খাবারের মাঝখানে গ্রিন টি খাবেন।

১০. গ্রিন টির সঙ্গে গুঁড়া দুধ, চিনি বা অন্য কোনো মসলা, লেবু কিছুই মেশাবেন না।

বাজারে এখন নানা ফ্লেভারের গ্রিন টি পাওয়া যায়। তবে ‘ন্যাচারাল ফ্লেভার’ গ্রিন টি খাওয়াই সবচেয়ে ভালো

সংগ্রিহত

18/12/2022

#এলিয়েন_সম্পর্কে_কোরান_ও_বিজ্ঞান #কুরআন_ও_বিজ্ঞান

11/12/2022

#সাবুদানা_খাওয়ার_স্বাস্থ্য_উপকারিতা_ও_অপকারিতা

শ্বাসকষ্ট মানেই কি অ্যাজমা?শীত এলেই যেমন আবহাওয়ার ধরন পাল্টায়, তেমনি রোগবালাইও নতুনভাবে আবির্ভূত হয়। শুষ্ক–শীতল বাতাসের ...
11/12/2022

শ্বাসকষ্ট মানেই কি অ্যাজমা?

শীত এলেই যেমন আবহাওয়ার ধরন পাল্টায়, তেমনি রোগবালাইও নতুনভাবে আবির্ভূত হয়। শুষ্ক–শীতল বাতাসের সঙ্গে হাজির হয় সর্দি, কাশি, হাঁচি, শ্বাসকষ্টের মতো অসুবিধা। সারা বছর আরামসে চলেফিরে বেড়ানো লোকজন আচমকা শ্বাসের কষ্ট নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। ঠান্ডায় শ্বাসকষ্ট মানেই বেশির ভাগ মানুষই ধরে নেন যে অ্যাজমার কারণেই এই সমস্যা। অ্যাজমাজনিত শ্বাসকষ্ট শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় বেড়ে যায়, এটা সত্যি; তবে শ্বাসকষ্টের আসলে শতেক কারণ রয়েছে, যা আমরা বেশির ভাগ সময়ই ধর্তব্যের মধ্যে আনি না।

আমাদের শরীরে বুকের দুই পাশে এক জোড়া ফুসফুস রয়েছে, যাদের কাজ হচ্ছে বাতাসের অক্সিজেন নিয়ে রক্তকে পরিশুদ্ধ করা। তাই ফুসফুসের যেকোনো সমস্যায় মৃদু থেকে তীব্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অ্যালার্জিজনিত রোগ অ্যাজমা বা হাঁপানি শীতের শ্বাসকষ্টের একটা অন্যতম প্রধান কারণ হলেও ফুসফুসের আরও অনেক রোগ আছে, যা থেকে রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে উপস্থিত হয়। হাঁপানির মতোই ব্রঙ্কাইটিস বা এমফাইসেমা রয়েছে (একসঙ্গে যাদের সিওপিডি বলা হয়), যাতে রোগী সারা বছর শ্বাসকষ্টে ভোগে, তবে শীতে তা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসে যক্ষ্মা, ক্যানসার বা নিউমোনিয়া হলে কিংবা ফুসফুসে যেকোনো কারণে পানি, রক্ত বা বাতাস জমা হলে, এসব রোগে শ্বাসকষ্টই মূল সমস্যা হিসেবে থাকে।

দুই ফুসফুসের মাঝখানে মধ্যমণি হয়ে বসে থাকা হৃদ্‌যন্ত্রটির নানান রোগেও শ্বাসকষ্টই কখনো কখনো প্রধান সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশেষ করে হার্ট ফেইলিউরে (হৃৎপিণ্ডের বৈকল্য) শ্বাসকষ্টের কারণেই রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে থাকে ধীরে ধীরে। এ ছাড়া হৃদ্‌যন্ত্রের জন্মগত ত্রুটি, হৃদ্‌যন্ত্রে রক্ত সঞ্চালনে বাধা বা হৃদ্‌যন্ত্রের চারপাশে পানি জমলেও মৃদু, মাঝারি বা তীব্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

ফুসফুস বা হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ছাড়াও আছে আরও অনেক কারণ। শরীরে রক্তস্বল্পতা হলে অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। অতি স্থূল মানুষের অল্প হাঁটাচলাতেই শ্বাসকষ্ট হয়। থাইরয়েড হরমোনের অভাবে শ্বাসকষ্টের অভিযোগ জানান অনেক রোগী। এমনকি কখনো কখনো অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হতে পারে অনেকেরই।

তবে যে কারণেই হোক না কেন, শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করা খুব জরুরি। কারণ বের করে সঠিক চিকিৎসা না হলে শ্বাসকষ্টের তীব্রতা বেড়ে তা যেমন রোগীর অসহনীয় শারীরিক কষ্টের কারণ হয়, আবার সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া না হলে তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। অ্যাজমার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে রোগী বছরের কিছু কিছু সময় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন; সঙ্গে কাশি, কফ এবং শ্বাসযন্ত্র থেকে বাঁশির মতো আওয়াজ হওয়ার মতো সমস্যা থাকতে পারে, সেই সঙ্গে অ্যালার্জির ইতিহাসও থাকে। সিওপিডি রোগী সাধারণত ধূমপায়ী হন এবং সারা বছরই শ্বাসকষ্ট, কাশি ইত্যাদির ইতিহাস থাকে। এভাবে রোগীর ইতিহাস পর্যালোচনা করে, সেই সঙ্গে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শ্বাসকষ্টের সঠিক কারণ নির্ণয় করে সময়োচিত চিকিৎসা প্রদান করা জরুরি। তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে শীত এলে ঠান্ডা, ধুলাবালু এড়িয়ে চলা। যেকোনো মৌসুমেই ধূমপান পরিহার করা। ঠান্ডা বা ধুলাবালুতে অ্যালার্জি থাকলে তার চিকিৎসা নেওয়া।

শীত আসুক নলেন গুড়ের সুবাস নিয়ে, রঙিন সবজির সতেজতা নিয়ে, হাপরের মতো বুকের ওঠানামা নিয়ে নয়। শ্বাসকষ্ট হলে ভয় না পেয়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে মুক্তি পেতে পারবেন অহেতুক জটিলতা থেকে।

Ref: * ডা. শাহনূর শারমিন: সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

সংগ্রিহত---

“রিজিক আর সম্মান”কারো হাতে নেই, আল্লাহপাকযোকে চান, তাকে এই গুরুত্বপূর্ণনেয়ামত দুটি দান করেন!!সুবাহানাল্লাহ!!!!!
01/12/2022

“রিজিক আর সম্মান”
কারো হাতে নেই, আল্লাহপাক
যোকে চান, তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ
নেয়ামত দুটি দান করেন!!

সুবাহানাল্লাহ!!!!!

চুলে লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা--লেবুর সাইট্রিক এসিড ও শক্তিশালী ভিটামিন সি চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য খুবই উপকার...
28/11/2022

চুলে লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা--

লেবুর সাইট্রিক এসিড ও শক্তিশালী ভিটামিন সি চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য খুবই উপকারী। তবে চুলের একেকটি সমস্যার সমাধানে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে লেবুর রস ব্যবহার করতে হবে। ওয়েবসাইটের এই পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।

খুশকি দূর করতে:
লেবুর রস খুশকি দূর করতে সবচেয়ে কার্যকর উপাদান। শ্যাম্পু করার আধা ঘণ্টা আগে মাথার তালুতে লেবুর রস লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। এবার শ্যাম্পু করে ফেলুন।

দেখবেন, একবার ব্যবহারেই খুশকি দূর হয়ে যাবে।

তেলতেলে ভাব দূর করতে:
অনেকের মাথার তালু তৈলাক্ত হওয়ার কারণে চুলও তেলতেলে হয়ে যায়। লেবুর শক্তিশালী ভিটামিন সি এ সমস্যার সমাধান করে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন মাথায় তেল দিয়ে ম্যাসাজ করার পর তুলার বলে লেবুর রস লাগিয়ে মাথার তালুতে লাগান। এই রস তালুর অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ দূর করতে সাহায্য করবে।

ঝলমলে চুলের জন্য:
একটি লেবুর রসের সঙ্গে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে চুলে লাগান। এই মিশ্রণ মাথার তালুতে লাগানোর প্রয়োজন নেই। আধা ঘণ্টা পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হয়ে ঝলমলে হবে।

চুল বৃদ্ধির জন্য:
নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে চুল ও মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এই মিশ্রণ দ্রুত চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

চুল পরিষ্কার করতে:
লেবুর রস চুলে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। এক চা চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে পাতলা মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার চুলে ও মাথার তালুতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এই মিশ্রণ চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার করতে বেশ কার্যকর।

27/11/2022

#খলিফা_হযরত_ওমর_ফারুক_রাঃ_এর_খিলাফতকালে_দুর্ভিক্ষ

পিঙ্ক সল্ট---
24/11/2022

পিঙ্ক সল্ট---

শিম খাবেন কেন?
21/11/2022

শিম খাবেন কেন?

মোগল সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের (১৮৩৭-১৮৫৭) মুকুট।১৮৬১ সালে রানী ভিক্টোরিয়া আরও দুটো সিংহাসনের সাথে এটিও ...
20/11/2022

মোগল সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের (১৮৩৭-১৮৫৭) মুকুট।

১৮৬১ সালে রানী ভিক্টোরিয়া আরও দুটো সিংহাসনের সাথে এটিও নিয়ে নেন। বর্তমানে এটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।

একদল আফ্রিকান হজ্জযাত্রী হজ্জে যাচ্ছেন, ১৯৩৪ সাল। মরক্কো-আলজেরিয়া-তিউনিশিয়া-লিবিয়া-মিশর হয়ে এরা মক্কা যেত । যখন যে দ...
19/11/2022

একদল আফ্রিকান হজ্জযাত্রী হজ্জে যাচ্ছেন, ১৯৩৪ সাল। মরক্কো-আলজেরিয়া-তিউনিশিয়া-লিবিয়া-মিশর হয়ে এরা মক্কা যেত । যখন যে দেশে দলটি পৌঁছাত তখন সে দেশের লোকেরা যোগ দিত।

Address

Khulna
9000

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ILmer Path posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ILmer Path:

Videos

Share

Category