07/12/2023
নতুন কারিকুলাম বাতিলের আন্দোলন নয় বরং এ প্রোগ্রেসিভ মডেলের শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবন্ধকতা দূর করার আন্দোলন ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আন্দোলন জোরদার করুন ঃ
নতুন কারিকুলাম নিঃসন্দেহে বিশ্ব মানের ও যুগোপযোগী । প্রশিক্ষণ লব্ধ শিক্ষক তার শ্রেণিকক্ষে একটা চমকপ্রদ পদ্ধতির শিখন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাবেন। প্রতিটি সেশনের শ্রেণিকার্যক্রম শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হবে শিখনচক্রের চারটি ধাপ অনুসরণ করে- প্রেক্ষাপট নির্ভর অভিজ্ঞতা বিনিময় - প্রতিফলনমূলক কাজ - বিমূর্ত ধারণায়ন/তত্ত্ববদ্ধকরণ - সক্রিয় পরীক্ষণ/পর্যবেক্ষণ এই শিখন আবর্তন অনুসরণ করে। এখানে শিক্ষক যে শিখন পেডাগোজিতে অভ্যস্থ হবেন তা দ্বারা শিক্ষার্থীদের শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চালিত করে যুগের দক্ষ ও মানবিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। আগামী প্রজন্মকে আসছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মুখামুখি হতে এবং পরিবর্তনশীল যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে অভিযোজন করার সক্ষমতা অর্জন করতে উদ্ভূত নতুন পরিস্থিতিতে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম মোক্ষম হাতিয়ার ।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল এর বাস্তবায়ন ক্ষেত্র হিসেবে আমাদের এই দেশটির আর্থসামাজিক ব্যবস্থাটি এতটাই বৈষম্যমূলক যে একদিকে বিত্তহীন জনসাধারণের জন্য এলাকায় এমপিওভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অপর্যাপ্ত এবং এতে পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব, ভবন সংকট, পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষের অভাব অন্যদিকে শিক্ষকদের বেতনকাঠামো মানবেতর অবস্থায় থাকার ফলে শিক্ষকদের মানসম্পন্ন হয়ে না ওঠা ও মেধাবীদের এ পেশা থেকে দূরে রাখা ইত্যাদি সংকট থেকে আমরা মূক্ত হতে পারছি না তার কারণ এ রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাটি একটা সর্বগ্রাসী বৈষম্যমূলক বলয়ের মধ্যে আটকে আছে। এইসকল বাস্তব পরিস্থিতিতে নতুন এ সুপার প্রোগ্রেসিভ শিক্ষা পদ্ধতিটির বাস্তবায়নের ফলাফল বিকৃতভাবে পরিবর্তিত হয়ে নতুন এক আঙ্গিকে প্রাইভেটেলাইজেশনে পর্যবসিত হওয়ার আশংকাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরন প্রকৃয়াটি আগামী দিনে যেন আরও দানবীয় রূপ পরিগ্রহ না করে তার প্রতিরোধে সচেতন ও সোচ্চার হওয়া খুবই জরুরী তবে তা নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে নয় বরং এর বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে।