At Tolib Media

At Tolib Media •||অল্প কথায় লুকিয়ে থাকে হাজারো অনুভুতি||•

◑হক্কানি ঊলামায়ে কেরামদের ওয়াজ শুনতে পেজটি ফলো করুন।

10/05/2024

সর্বপ্রথম কেয়ামতের ময়দানে কে উঠবে?
🎙মুফতি আরিফ বিন হাবিব🌺❤️

29/02/2024

আজ বিয়ে করছি, আমার বউ
ট্রাফিক পুলিশ...
তো বাসর রাত শেষে সকালে
বউ : ১০০০ টাকা দাও
আমি : কেন?
বউ : জরিমানা।
আমি : কিসের জরিমানা?
বউ : নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য ৩০০
টাকা,
হেলমেট ছাড়া
ড্রাইভিং করার জন্য ৩০০ টাকা...
আর
ওভার স্পিডে গাড়ি
চালানোর জন্য ৪০০ টাকা....
মোট ১০০০ টাকা।
আমি : সবই বুঝলাম,,,,
কিন্তু শেষেরটার জন্য ৪০০ টাকা
কেন?
বউ : কারন, তোমার বোঝা উচিত
ছিল নতুন গাড়ি,
একটু
যত্নসহকারে আস্তে আস্তে চালাই।
যাতে কোন
স্পট না পরে।
কিন্তু তুমি সেটা বোঝনি।
না বুঝেই জোড়ে জোড়ে চালাইছো।
আর হেডলাইটাও দাগ
পরাই দিছো।
তাই ১০০ টাকা বেশি ধরা হয়েছে।
জীবন টাই লস

29/02/2024

আজ আমাদের বাড়িতে কি যেন হয়েছে।কিছুই ঘটে আসছে না। আত্নীয় স্বজনদের ভীড়,পাড়া প্রতিবেশীদের ভীড় কোথাও কোনো ফাঁক নেই। মানুষে জমজমাট।
ঘুম থেকে উঠেই আমি যেন শূন্যে ভাসছি।যেন মাটিতে আমার পা স্পর্শ‌ই হচ্ছে না।আম্মু, চাচি,চাচা সবাইকে এতো ডেকে বলছি কি হয়েছে কেউ কোনো উত্তর দিচ্ছে না।আম্মু বিছানায় শুয়ে আছে আর তার চারদিকে কয়েক জন মহিলা বসে আছে। চাচীর চোখ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। আব্বুকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। আব্বু কে পেলে শুনবো আজ আমাদের বাড়িতে কি হয়েছে। আব্বু কে কোনো ঘরে না পেয়ে যখন ঘর থেকে বাইরে গেলাম দেখেই আমার সমস্ত শরীরে যেন মৃতের প্রাণ ফিরে এলো। উঠানে একটা খাটিয়া রাখা হয়েছে। আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না আমাদের বাড়িতে কে মারা গিয়েছে।
আব্বুকে তো কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।
তাহলে কি আব্বু?
না,,,
আমার আব্বু আর এ পৃথিবীতে নেই?
চিৎকার করে কান্না করে উঠলাম।
লক্ষ করলাম কেউ আমার দিকে একবার ফিরেও তাকালো না। আমাদের বাড়িতে যে আত্নিয় স্বজন রা আসছে সকলের‌ই কান্না শুনে সকলে সেখানে ভিড় করছে। অথচ আমার কান্নায় কেউ আমার দিকে দেখছে পর্যন্ত না।
আমার আব্বু কিভাবে মারা যেতে পারে?
আব্বুর সমস্ত স্মৃতি আমার দৃষ্টি পটে ভেসে উঠছে অবিরত।কান্না করতে করতে গিয়ে খাটিয়ার কাছে গিয়ে পরে গেলাম।পাশের লোকটিকে কতবার করে বলছি একটু কাপড়টা সরান আমি আব্বুকে দেখব আমার কথা যেন শুনছেই না। হাজার বার বলার পরেও কেউ আমার কথা শ্রাবণ ই করলো না।
অবশেষে পাশের বাসার এক চাচা এসে বলল,দেখি চাদরটা একটু সরাও মুখটা একটু দেখে যায়। যে রকম ছিল আল্লাহ ওকে ক্ষমা করবে কিনা সন্দেহ।
মূহুর্তে মনে মনে বললাম, কেমন লোকটা আজ মৃত্যুর দিনে কি সব কথা বলছে?
আর আমার আব্বু তো খুব ভালো ছিল। আব্বু কত বলেছে ভালো হয়ে চলতে কখনো আব্বুর কথা শুনি নাই। নিজের ইচ্ছা মতো বন্ধু বান্ধব দের সাথে মজা করে বেড়িয়েছি।আরো কত কি? আব্বু বলত এসবের জন্য তোকে একদিন অনেক বড় খেসারত দিতে হবে তখন তুই কখনোই এর থেকে বের হয়ে আসতে পারবি না।
সময় থাকতে ভালো হয়ে যা।
খাটিয়ার পাশে বসে নিজ মনে বলতে লাগলাম, আব্বু আমি ভালো হয়ে গেছি । আমি আর কখনো তোমার কথায় অবাধ্য হবো না।
প্লিজ আব্বু ওঠো।
হঠাৎ খাটিয়ার পাশে বসে থাকা লোকটার কথা শুনে আমি তার দিকে তাকালাম। লোকটি বলল,কি আর দেখবা বাপু, মুরব্বিদের কখনো সম্মান করে নি । কোনো দিন এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ে নি।তার মুখ আর কি দেখবা।
আমি লোকটিকে মনে মনে অনেক করে গালি দিলাম। লোকটি এবার কাপড় সরাতেই আমি যা দেখলাম তা নিজ চোখে বিশ্বাস করতে পারলাম না

এটা দেখার জন্য আমি একদমই প্রস্তুত ছিলাম না।

এটাতো আমি,
কিন্তু আমি???
আমি তো এ,,,,
তাহলে ওটা কে??
তাহলে কি আমি মারা গেছি
বুক ফেটে কান্না আসছিল। আমি দুনিয়া থেকে কি নিয়ে কবরে যাব?
আমি তো কিছুই করি নি।

এক দৌড়ে বাড়ি থেকে বাইরে চলে গেলাম। দেখলাম আব্বু কাঁদছে আর কয়েক জনের তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। আব্বু খুব আফসোস করছে আমার জন্য।

কিছুক্ষণ পর কয়েক জন আমার শরীর টাকে গোসল করিয়ে আবার খাটিয়ায় রেখে দিল। সকলের মুখের চাহনি টা অস্বাভাবিক লাগছিল আমার কাছে। চারজন খাটিয়া ধরে আমার শরীর টাকে নিয়ে চলল।আম্মু, আব্বু, আত্নীয় স্বজন সকলেই অনেক করে কান্না কাটিতে যেন বাড়িটাও গুমড়ে গুমড়ে কাঁদতে লাগল। অতঃপর একটা জায়গায় আমার লাশটা কে জানাজা দিয়ে নিয়ে চলল গোরস্থানে। খুব সুন্দর করে একটা কবর তৈরি করা হয়েছে।
এখন আমার দেহটাকে রেখে মাটি চাপা দেয়া হবে । এখন আমি কি করব । কোনো উপায় না পেয়ে আমি আমার দেহের মাঝে স্থাপিত হলাম।আমাকে কয়েক জন ধরে কবরে শোয়াল।
মাটির চাপ আমার শরীর টাকে ঘিরে ধরলো। মাটিতে কেমন একটা অস্বাভাবিক গন্ধ। উপরের পায়ের আওয়াজ গুলো আমার কানে ভেসে আসছিল।আস্তে আস্তে সেগুলো স্থির হতে শুরু করল।
অবশেষে আর কোনো পায়ের শব্দ আমি শুনতে পেলাম না। সব নিস্তব্ধ।
হঠাৎ দুজন সাদা কাপড় পরিহিত আমার নিকট এলো।বলল,
বল তোর রব কে?
বল তোর ধর্ম কি?
বল তোর নবী কে?
আমি কোনোটার‌ই উত্তর দিতে পারলাম না।দুনিয়াতে থাকতে অনেক বার এগুলো মুখস্থ করেছি।সঙ্গে সঙ্গে দুজন আমাকে আমার দেহ থেকে নিয়ে একটা প্রকান্ড ঘরে নিয়ে গেল। সেখানে শুধু আগুনের ধোঁয়া। চারিদিকে উত্তাপ্ত বাতাস । মানুষের চিৎকারের শব্দ আমাকে যেন অতিষ্ট করে তুলল‌।
সঙ্গে সঙ্গে দুজন আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল উত্তাপ্ত আগুনে।আর বলতে বলতে চলে গেল,,
তোর বাকি হিসাব হবে কেয়ামতের মাঠে।

🍁🍁গল্প টা লিখতে গিয়ে আমি মৃত্যুকে উপলব্ধি করতে পেরেছি

29/02/2024

আমি আর প্রিয় বসে আছি এক প্রকোষ্ট গাছের গায়ে । ম্লান হয়ে পরে থাকা গাছটা নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে মৃত্তিকার পানে।
আজ যেন প্রিয় কে সব বলতে ইচ্ছে করছে।
নিজের আবেগ অনুভূতি গুলো আর দমিয়ে রাখতে পারছি না।
দুজনের মাঝে নিরবতা ব্যর্থ করে আমি শান্ত কন্ঠে বলতে শুরু করলাম,,,
-- "জান প্রিয়! ভালোবাসার সজ্ঞা আমার কাছে ছিল মূল্যহীন । এক সময় এই ভালোবাসা বলতে শুধুই জানতাম এমন এক সজ্ঞা যা ছিল অর্থহীন। সিনিয়র আপুদের জিজ্ঞেস করতেই কিছু একটা বলে কেটে পরতো।
হিহিহিহিহি,,,,,আমি কতো বোকা ছিলাম তখন।
জান প্রিয়! আমাদের ধর্মে বিবাহ এর আগে প্রেম ভালোবাসা করাটা এক প্রকার হারাম বলতে গেলে। এমনকি একজন বেগানা পুরুষের পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাটাও ফেতনার সমতুল্য।সেই সুবাদে ভালোবাসার সজ্ঞা বুঝতে অনেক সময় পেরিয়ে গেছে আমার। আচ্ছা তুমি কি আমাকে ভালোবার পূর্ণ সজ্ঞা দিতে পারবে ??"

প্রিয় চুপ!

চুপ করে থেকো না।বলো আমায় ।
কখনো কোনো পর পরুষের পানে চেয়ে দেখি নি। কেন জান? যদি তার মোহে পরে যাই।এ বড় ফেতনা। বয়সের ভার যখন নিজের মাঝে আশ্রয় বাধতে শুরু করল, অনুভবে , অদৃশ্যে , অজানায় কোনো এক আগন্তুক এর জন্য বুকের বাঁ পাশে ভালোবাসা জন্মাতে শুরু করল। তখন একবার ও জানতে ইচ্ছে হয় নি জানো। সে কে??? কোথায় তার নিবাস?? কি তার পরিচয়??
শুধু অনুভব করেছি তাকে। যার নাম অদৃশ্য ভালোবাসা।
জানো প্রিয়!
মোনাজাতে খুব করে চাইতাম।কখন সে দৃশ্য পটে ধরা দিবে। কতদিন আর এই অনুভব। অচেনা, অজানা হয়ে আড়াল হয়ে থাকবে সে?

অবশেষে প্রহর শেষ হলো। সে আসলো।স্বচোক্ষে তাকে দেখতে পেলাম। মনে বলে উঠলো,, - 'ধৈর্যের ফল বুঝি এমনই মধুর হয়'
হিহিঃ

এই প্রথম কোনো পুরুষের পানে দৃষ্টিভরে তাকিয়ে আছি। এতদিনের পুষে রাখা ভালোবাসা সব যেন তার পানে বিসর্জীত হতে চাইছে। বুকের ধুকবুকানি বেড়ে যায় যখন সে আমার হাতটি ধরে । কেন এমন আকর্ষণ,কেন এত মায়া তার পানে?? মনে হয় যেন সর্বক্ষন তার বুকে মাথা রেখে স্বর্গ পানে ছুটতে।তার উসখুস চুলে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে।নামাজ শেষে তার কোলে ঢুলে পরতে।
এখন‌ কেমন হয় জান?
বুকের ভিতর খা খা করে উঠে।তার জন্য‌ই নিজেকে গুছিয়ে রাখি। শুধু তার জন্য।
আমি কাদছি প্রিয় । তুমি কি দেখেছো না?
এতো নিষ্ঠুর কবে থেকে হলে তুমি??
আচ্ছা প্রিয়!
এটাই কি ভালোবাসা? আমি কি তাহলে এখন নিজেই বলতে পারব ভালোবাসার সজ্ঞা।
কিন্তু.......
জানো প্রিয়!
আমার এই ভালোবাসা বেশি দিন স্থায়ী হয় নি।এবার সত্যি করে সে হারিয়ে যায়।আবার অনুভবে , অজানায় তাকে ভালোবাসতে থাকি। তুমি কথা বলছো না যে প্রিয়?
ওহ! তুমি কথা বলবে কিভাবে। তুমিতো অদৃশ্য। তোমার কোনো চিন্তা নেই। আমি অস্পষ্টে তোমায় ভালোবেসে যাব দেখো।

বলতেই এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো কাষ্ঠের গায়ে । সেও আজ কাঁদছে।আমার প্রিয় টার জন্য সেও আজ অনুতপ্ত। সেও নেমেছে অজানা ভালোবাসার সন্ধানে।

~ অদৃশ্য ভালোবাসার অনুভব প্রিয় মানুষটাকে পাবার পূর্বে এবং পরেই বোঝা যায় তাই না?? তখন সে আর‌ এ ছোট্ট পৃথিবীতে থাকে না~
তবে পূর্বে এবং পরের মাঝে অনেকটাই পার্থক্য।

∆~••••♥️♥️••••~∆

🖋️* ফাহমিদা *

29/02/2024

সকালে রান্না করছিলাম ডিম আলু আর ফুলকপি।
উনাকে অফিসে খাবার দিয়েছি।
দুপুরে আমি খেতে বসেছি, তরকারি মুখে নিয়ে ফেলে দিছি। এমন বেহুদা টেস্ট হইছে।
তারে কল দিয়া বললাম, অফিসের জন্য হোটেল থেকে কিছু আনেন, তরকারি জঘন্য হইছে, খায়েন না ফেলে দেন।
কিন্তু সে না ফেলে খাইছে, খেয়ে বলে, আমার কাছে তো ভালো লাগছে।
বাকি তরকারি এখন আবার খেতে নিছে।

মানুষটা আসলেই অদ্ভুত, যেখানে খাবারে সামান্য লবন কম হলেই বেশিরভাগ স্বামীদের অভিযোগের শেষ থাকেনা, সেখানে ইনি আমার বানানো সব কুখাদ্য চুপচাপ খেয়ে হজম করে নেন।

একদিন বলছিলেন আমাকে, আমার খাবার খেতে কয়েক মিনিট লাগে কিন্তু এইটা বানাতে তোমার ঘন্টার মেহনত লাগে, তাহলে দোষ কিসের ভিত্তিতে ধরব।

আল্লাহ দুনিয়ার সকল স্বামীকে সুন্দর মানসিকতার তৌফিক দান করুন।

#ভালোবাসা

29/02/2024

জানেন প্রিয়!
মাঝে মাঝে অশান্ত মনটাকে শান্ত করে বলতে চায়,,
কোনো এক দিন কোয়াশা মাড়িয়ে মসজিদ থেকে আপনি বাড়িতে ফিরবেন। দরজার কপাট খুলেই আপনার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থেকে বলব,,
_আপনি কি পাগল? মাথা ভর্তি কোয়াশা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
যাবার সময় যে টুপি টা দিয়েছিলাম সেটা কোথায় রেখেছেন? যদি ঠান্ডা লেগে যায় তখন কি হবে বলুন তো।
আপনার মুখে কোনো শব্দ নেই।যেন এক অজানা মায়ায় পরবেন। কিছুক্ষণ আপনার পানে তাকিয়ে থেকে বলব,,
_এই যে মশায় । শুনছেন।
আপনার ধ্যান ভাঙ্গতেই ব্যাতি ব্যস্ত হয়ে বলবেন,,,
_না....মানে।
_কি?? টুপি কোথায় রেখেছেন।
_জানি না।
_তাহলে কে জানে?
_তুমি।
_আমি??
_হ্যা।
আপনি মুচকি মুচকি হাসবেন।
এদিকে আমি ভুলতে বসব আপনার অসুস্থ হবার খবর।
দ্রুত আপনার কাছে গিয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে আপনার উষ্ক খুষ্ক চুল গুলো মুছতে লাগব।
কড়া গলায় বলব,,
_আর কখনো যদি এভাবে টুপি ছাড়া কুয়াশায় বের হন তাহলে.….
আপনি আমার কোমর জড়িয়ে বলবেন,,
_তাহলে কি???
_তাহলে.....
_কি হ্যা?
_আমাকেও সাথে নিয়েন । দুজনে একসাথে কুয়াশায় ভিজবো।
আপনি বলবেন,,,
_চলো তাহলে।
_সত্যি?
_হ্যা।
_কিন্তু এখন তো অনেক সকাল হয়ে গিয়েছে। মানুষ তার কর্ম ক্ষেত্রে বেরিয়ে পরেছে।
_না বিবিজান। সকাল হয়েছে ঠিকই তবে কুয়াশা এখনো এই শহরটাকে ঢেকে রেখেছে। কারণ, আমি তাকে জানান দিয়ে এসেছি আমার বিবিসাহেবা আসছে।
_ধুর ছাড়ুন তো। শুধু ঠাট্টা করেন।

কুহেলিকা অরন্যে ভেসেছি
আমি । জানো, ঘাসের গায়ে লেগে থাকা ক্ষুদ্র কুয়াশা বিন্দু আমায় জানান দিয়ে যায়,
তার খেয়াল রেখো।
সে তোমায় বড্ড ভালোবাসে💜

29/02/2024

চাচাত ভাইয়ের গলা জড়িয়ে কেঁদে চলেছে ছোট্ট মেয়েটা। আটটা মাস যার আগমনের জন্য অপেক্ষা করল তার আগমনেই এই বিষাদ কান্না। ছোট্ট প্রাণটাকে ছুঁয়ে দিলো। আশ্চর্য! এমন নিষ্প্রাণ হয়ে আছে কেনো? মেয়েটার তো কাঁদারই কথা ছিল, তবে আদর ভাগাভাগি হওয়ার দুঃখে। এভাবে তো নয়! গুটি গুটি পায়ে হেঁটে আঁধার কক্ষে যেয়ে দেখে, চোখ মুখ ঢেকে বাবার কান্না। বোবা কান্না! নতুন শাড়ি ধুয়ে রাখা দাদীর বুক ভাঙ্গা কান্নার সাক্ষী হয় কোমল প্রাণ। বাড়ির আঙিনায় বাঁশ কাটা দেখে নির্নিমেষে। আচ্ছা ও এভাবেই চলে যাবে! একটাবার ডাকবে না? একটাবারও না? পেছন থেকে কেউ ডেকে বললো,

- আম্মু জিজ্ঞেস করলে বলবে ভাই অন্য হাসপাতালে। ঠিকাছে?

সদ্য গড়ে ওঠা মায়ার প্রলেপে বিষাদ জমিয়ে সায় জানায় মেয়েটা। প্রকৃতই যখন মাকে জানায় সে কথা মা চেয়ে থাকেন ওই দূর আকাশপানে। আচ্ছা মায়ের চোখটা এমন টলমলে লাগছে কেনো?

অপ্রার্থিত প্রত্যাগমন

29/02/2024

সকালে রান্না করছিলাম ডিম আলু আর ফুলকপি।
উনাকে অফিসে খাবার দিয়েছি।
দুপুরে আমি খেতে বসেছি, তরকারি মুখে নিয়ে ফেলে দিছি। এমন বেহুদা টেস্ট হইছে।
তারে কল দিয়া বললাম, অফিসের জন্য হোটেল থেকে কিছু আনেন, তরকারি জঘন্য হইছে, খায়েন না ফেলে দেন।
কিন্তু সে না ফেলে খাইছে, খেয়ে বলে, আমার কাছে তো ভালো লাগছে।
বাকি তরকারি এখন আবার খেতে নিছে।

মানুষটা আসলেই অদ্ভুত, যেখানে খাবারে সামান্য লবন কম হলেই বেশিরভাগ স্বামীদের অভিযোগের শেষ থাকেনা, সেখানে ইনি আমার বানানো সব কুখাদ্য চুপচাপ খেয়ে হজম করে নেন।

একদিন বলছিলেন আমাকে, আমার খাবার খেতে কয়েক মিনিট লাগে কিন্তু এইটা বানাতে তোমার ঘন্টার মেহনত লাগে, তাহলে দোষ কিসের ভিত্তিতে ধরব।

আল্লাহ দুনিয়ার সকল স্বামীকে সুন্দর মানসিকতার তৌফিক দান করুন।

29/02/2024

তেতলা একটা বাড়ির সদর দরজায় বসে আছেন মোসাদ্দেক হোসেন। কারও অপেক্ষায় নয়। নিজ কর্তব্য পালনে। গত চার বছর তিন মাস সতেরো দিন যাবত তিনি এখানে নিযুক্ত আছেন। যাকে বলে দারোয়ান। সমগ্র বাড়ির মানুষের কাছে মোসাদ্দেক দারোয়ান নামে পরিচিত এই লোকটার বাড়ি বরিশাল এলাকায়। বয়স পঁয়ত্রিশের ঘর ছাড়লেও যখন শক্ত পোক্ত কাজের সন্ধান পেলেন না তখন বউ বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে ঢাকামুখী হতে হলো। বউটাও খ্যাচ খ্যাচ শুরু করেছিলো। মোসাদ্দেক হোসেন বুঝতে পেরেছিলেন টাকা ছাড়া বাড়িতে তার মূল্য কমে যাচ্ছে। অবস্থাও দুঃসহ। বড়ো ছেলেটা মানুষের কাছে হাত পাতা শুরু করেছিলো। সেই দুঃসহ অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই তিনি ঘর ছেড়েছেন। এখন অবশ্যি বাড়ি গেলে তার খাতির যত্ন কম হয় না। বউ আহ্লাদী স্বরে থেকে যেতে বলে। তিনি মন মনে হাসেন। পরিবার ভালো আছে দেখতেও ভালো লাগে।

যেই বাড়িতে তিনি কর্মরত আছেন সেই বাড়ির নাম "মুসাফির"। অদ্ভুত নাম। তার জানামতে মানুষ হয় মুসাফির। কিন্তু বাড়িও যে মুসাফির হতে পারে তিনি জানতেন না। অবশ্য ঢাকা শহরের মানুষের মন বলে কথা। কতো কিছুই হতে পারে! এখানে আগে কর্মরত ছিলেন তারই গ্রামের এক মুরব্বী। লোকটার বয়স হয়ে যাওয়ায় আর পেরে উঠছিলেন না। তার সাথে কথা হলে নিজে থেকেই এই কাজের প্রস্তাব দেন। ডুবন্ত সাগরে নৌকা পেয়ে স্বস্তি পান মোসাদ্দেক হোসেন।

বাড়িটার সুমুখে বিশাল একটা গেট। তার একপাশে একটা পকেট গেট। গেট পেরুলেই বিশাল গ্যারেজ। মোট চারটা গাড়ির আবাস এই জায়গাটা। তারপরই তার জন্য বরাদ্দকৃত ছোট্ট একটা ঘর। পাশাপাশি আছে একটা বাথরুম। পকেট গেট দিয়ে সারাদিনই মানুষের যাতায়াত চলে। বিল্ডিংয়ের সকলেই তার চেনা। কাছাকাছি দেখলে তিনি নিজেই এগিয়ে তালাবদ্ধ পকেট গেট খুলে দেন। তাছাড়া বাসিন্দা সকলের কাছে চাবি আছে। মাঝে মাঝে তারাই খুলে ভেতরে আসে। বড়ো গেটের কাজ সকাল নয়টা সাইত্রিশে আর রাত দশটা সাতে। ঠিক এই দুটো সময়েই দুটো গাড়ি একসাথে হাজির হয়। রাতে মুখোমুখি হয় দুপাশের রাস্তা দিয়ে। বাকি দুটো গাড়ি ওভাবেই পড়ে আছে। ময়লা কাপড় দিয়ে ঢাকা। মোসাদ্দেক হোসেন দরজা খুলে নিরীহ ব্যক্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। সকালে এবং রাতে এই দুই গাড়ির ড্রাইভারদের মাঝে এক দফা দৃষ্টি চালাচালি হয়। সেটা অবশ্যই সাধারণ না। দুজন দুজনকে র'ক্ত চক্ষু নিয়ে দেখে। যেনো পান থেকে চুন খসলেই থলে থেকে পি'স্তল বেরিয়ে আসবে। কিন্তু এই অবস্থাও চলে ঠিক ঠিক চার মিনিট। শুভ দৃষ্টি শেষ হলে তিন তলার ভাড়াটিয়ার গাড়ি আগে ঢোকে তারপর দুই তলার ভাড়াটিয়ার গাড়িটা ঢোকে। গত চার বছর তিন মাস সতেরো দিন যাবত এটাই হয়ে আসছে। তবুও কেনো নিয়মের একচুল ব্যত্যয় ঘটে না তিনি বোঝেন না। ভাড়াটিয়া লোক দুটো একসাথে হেসে কথা বলে কিন্তু ড্রাইভার দুজন যেনো জনম জনমের শত্রু। কে জানে কেনো!

আজ শুক্রবার। গাড়ি ঘটনা আজ ঘটবে না। অফিস ঘাট বন্ধ। এদিন সকলেই দশটা পর্যন্ত নাক ডেকে ঘুমায়। এটা নাকি ঢাকাবাসীর অনিবার্য কাজ! পকেট গেট খুলে মোসাদ্দেক হোসেন ছোটো একটা টুল নিয়ে বসে আছেন। দৃষ্টি রাস্তার ওপাশের সজনে গাছটার দিকে। সামনের বাড়িটার নাম "দুনিয়া"। ঢাকা শহরে মানুষের থেকে বাড়ির দাম বেশি। নাম ছাড়া মানুষ থাকতে পারে তবে বাড়ি থাকবে না। কোনোভাবেই না।

"দুনিয়া" বাড়িটা বেশ অদ্ভুত। বাড়িটার সামনের দিকে কয়কেটা গাছ আছে। সবচেয়ে সামনে আছে এই সজনে গাছটা। তারপর আরো বেশ কিছু গাছ। তারপরই দুই রুমের একটা টিনশেড ঘর। প্রথম দিন দেখে তিনি ঠিক ছয়বার চোখ ডলেছিলেন। এর কারণও অবশ্যই আছে। টিনশেডের পেছনেই পাঁচ তলা একটা বিল্ডিং। জানালায় জানালায় এসি দেখা যায়। কিন্তু বিস্ময়কর ঘটনা এই বাড়ির মালিক থাকেন ঐ টিনের ঘরে। লোকটা আগে আইনজীবী ছিলো। দুই বছর হলো অবসর হয়েছে। তার নাকি এসব দালান কোঠায় থাকলে দম বন্ধ লাগে। তাই বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় এই ব্যবস্থা করেছেন। হাসতে হাসতে যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই কথা একজনকে বলছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন তখন চোখে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন। কেউ তার চোখের দিকে গভীর ভাবে তাকালে সেই ভাষা বুঝতো, "মানুষ যা পায় তা চায় না, যা চায় তা পায় না।"

মাঝে মাঝেই সুযোগ পেলে তিন তলার ছাদে উঠে তিনি দুনিয়ার টিনশেড ঘর দেখেন। সপ্তাহে দুইবার এই কাজটা করেন। দারোয়ান দরজায় না থেকে ছাদে উঠে কারও বাড়ি উকি দিচ্ছে বিষয়টা কেউ টের পেলে চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়তে পারে। অবশ্য টানাটানির তেমন কেউ নেই। বাড়ির মালিক ইতালি প্রবাসী। সেখানে নাকি তাদের বাড়িঘর আছে। ওখানেই থাকার ইচ্ছে। বছরে একবার এসে এই বাড়ি তারা পরিদর্শন করে যায়। তখন মোসাদ্দেক হোসেনের রুটিনে বাড়তি কাজ হিসেবে জমা পড়ে দুই বেলা বাড়িওয়ালাকে সালাম দেওয়া। তাতে খারাপ লাগে না বটে।

শুক্রবারের দিনটায় ঢাকাবাসীর মনে একটু মায়া জন্মায় বলে তার ধারণা। সেদিন ফকির আসলে তারা খালি হাতে ফেরায় না। এটা অবশ্য সব ক্ষেত্রে খাটে না। তবে তার ক্ষেত্রে একটা বিষয় ঘটছে। শুক্রবার দিনটায় তিন বেলাই কোনো না কোনো ভাড়াটিয়া খাবার দিয়ে যায়। সপ্তাহের অন্য সময় তাদের পাওয়া না গেলেও এইদিন তারা নিজ থেকে মোসাদ্দেক হোসেনকে খুঁজে নেন। এতে অবশ্য তার ভালোই হয়। নিজের হাতে তৈরি কুখাদ্য খেতে হয় না।

টুল থেকে উঠে গেট তালা দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। নিজের ছোট্ট ঘরের দিকে গেলেন। দরজার পাশেই একটা চেয়ার। তাতে নিজের কালো কুচকুচে ট্রাংক রাখা। তার পাশে ছোট একটা স্টোভ। সেটাতেই নিজের সমস্ত রান্না বান্নার কাজ করেন তিনি। পাশেই একটা বিছানা এবং একটা থালাবাসনের ঝুড়ি। ট্রাংক থেকে বেছে বেছে ঘিয়া রঙের পাঞ্জাবিটা নিলেন। এখন গোছল করে পড়ে বসে থাকবেন। রান্নার চিন্তা নেই। কেউ না কেউ দিয়ে যাবে। দরজা নিয়েও সমস্যা নেই। এগারোটা পর্যন্ত কেউ এদিকে আসছে না নিশ্চিত।

সেদিন রাতের দিকে মোসাদ্দেক হোসেন গেট দাঁড়িয়ে সজনে গাছ দেখছিলেন। রাতের অন্ধকারকে ছিদ্র করে শহরের কোণায় কোনায় আলো জ্বলেছে। তবে চাঁদের আলোর কাছে এসবই ম্লান। কিন্তু চাঁদ বোধহয় একটু অভিমান করেছে। অভিমান প্রকাশে জায়গা করছে সজনে গাছের পেছনে। সেই কখন থেকে ওখানেই বসে আছে। তবে তার আলো ছড়িয়ে দিতে কৃপণতা করছে না মোটেই। সজনে গাছের গোল গোল পাতার আড়াল থেকে ঝিকিমিকি কিরণ এসে রাস্তা ছুঁয়ে দিচ্ছে। পিচ ঢালা কালো রাস্তায় হলুদ হলুদ আলো এসে পড়ছে সাথে আছে সজনে পাতার ছায়া। দৃশ্যটা বড়ো সুন্দর লাগে মোসাদ্দেক হোসেনের কাছে। নির্নিমেষ চেয়ে থাকেন। তখন দুজন এসে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলো। ছোটো একটা ছেলে আর একটা মহিলা। সম্ভবত মা। এদের মোসাদ্দেক হোসেন চেনেন না। কি করবেন বুঝতে পারছিলেন না। তখনই নিচ তলার গেট খুলে একটা মেয়ে বের হয়ে আসে। চাবি নিয়ে তালা খুলে সাদর আমন্ত্রণ জানায় আগন্তুক দুজনকে। কথা বার্তায় বোঝা যায় আগন্তুক দুজন মেয়েটার মা এবং ভাই। উচ্ছসিত কথাবার্তার এক পর্যায়ে তারা এগিয়ে যায় ঘরের দিকে। ছেলেটা পেছনে ছিলো। বছর ছয় কি সাত। চেহারার গড়ন গোল। শ্যামলা রঙের মুখের মাঝে চকচক করতে থাকা চোখ জোড়া তার দিকে তাক করে হঠাৎ করেই বললো,

- আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল! কেমন আছেন?

থতমত খান মোসাদ্দেক হোসেন। আজ পর্যন্ত এই বাড়ির কেউ তাকে এভাবে কোনোদিন সালাম দেয়নি। মেয়েটা অবশ্য দিতো তবে এভাবে কোনোদিন চোখের দিকে তাকিয়ে নয়, মাটির দিকে চেয়ে। ছেলেটা তখনও তাকিয়ে আছে। উত্তরের আশায়। ইতস্তত মোসাদ্দেক হোসেন সামনে থাকা মা মেয়ের দিকে তাকান। তারা কথাবার্তায় ব্যস্ত। তিনি ভেবেছিলেন দারোয়ানের সাথে কথা বলার দরুন ছেলেটা হয়তো মায়ের কাছে বকা খাবে। তব তেমন কিছু ঘটলো না। বিক্ষিপ্ত অনুভূতিগুলোকে এক করে বরিশাল-ঢাকার সংমিশ্রণে বললেন,

- ওয়ালাইকুম সালাম। বালো আছি। তুমি বালো তো?

- জী আঙ্কেল, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনি কি সবসময় এখানেই বসে থাকেন?

- জে বাবা। এইহানেই আমার কাম কাইজ।

- ওও আচ্ছা। আপনার নাম কি আঙ্কেল?

- এখনও ওখানে কি করছো সিয়াম? এদিকে এসো।

মায়ের ডাকে ফিরে তাকায় সিয়াম। গল্পে বুদ হবার চেষ্টা করছিলো সে। ইতোমধ্যে মোসাদ্দেক হোসেনের টুলেও বসে পড়েছিলো। তৎক্ষণাৎ উঠে ছটফট করে বললো,

- যাই আঙ্কেল। আবার পরে আসবো ঠিকাছে?

মাথা নাড়েন মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি খানিকটা অস্থির পর্যায়ে আছেন। ছেলেটার পরপর কথায় থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন।

পরদিন সকাল হতেই সিয়াম ছেলেটা আবার তার কাছে চলে এলো। তখনও গাড়ি ঘটনা ঘটার সময় হয়নি। আরো মিনিট বিশেক বাকি ছিল। মোসাদ্দেক হোসেন প্রস্তুতি নিয়েই বসে ছিলেন। তবে ছেলেটাকে দেখে নড়েচড়ে বসলেন। চঞ্চল ছেলেটার কথার বিপরীতে থতমত খাওয়া যাবে না।

- আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল! কেমন আছেন?

সিয়াম হাসি হাসি মুখে প্রশ্ন করেছে। কাল রাতে এই প্রশ্নটাই একই ভঙ্গিতে করেছিলো। তখনও চোখ দুটো চকচক করছিলো এখনও করছে। সেই ঘটনার বারো ঘন্টাও এখনও পার হয়নি। এর মাঝে তার কি হতে পারে! হতে তো পারে অনেক কিছুই। মানুষের জীবনের মোড় ঘুরে যাওয়া মাত্র সেকেন্ডের ব্যাপার। হাসি সম্ভবত একটা বাতাসে রোগ। এই রোগ ছড়ানোর জন্য ছোঁয়া ছুঁয়ির দরকার হয় না। ভাইরাস বাতাসে ভেসে অপর পক্ষকে দ্রুত আক্রমণ করে। হাসির ভাইরাস মোসাদ্দেক হোসেনকেও আক্রমন করলো। ঝিকিমিকি করা একটা হাসি ঠোঁটে নিয়ে তিনি বললেন,

- ওয়ালাইকুম সালাম। বালো আছি বাবা। তুমি বালো তো?

- জি আঙ্কেল। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আঙ্কেল আমি আপনার লাল টুলে একটু বসি?

- বসো বাবা। বসো বসো।

বসতে গিয়েও থেমে গেলো সিয়াম। ঠোঁট দুটো একসাথে করে একটুখানি ফুলিয়ে,ভ্রু কুঁচকে কি যেনো ভাবতে বসলো। মোসাদ্দেক হোসেন টুলের দিকে তাকিয়ে সিয়ামের দিকে তাকালেন।

- কি হইলো বাবা? কুনো সমেস্যা?

- আঙ্কেল! এই যে আপনি সবসময় টুলের ওপর বসে থাকেন টুলের পিঠে কি ব্যথা হয় না?

প্রশ্ন শুনে চুপ করে থাকলেন মোসাদ্দেক হোসেন। তিন সেকেন্ড পর শব্দ করে হেসে উঠলেন। আকাবাকা হয়ে হাসলেন। তারপর হাসি থামিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললেন,

- এই প্রশ্নের জবাব আমার জানা নাই বাবা। টুল বানাইসে বসার জইন্যে তাই বসি। আসো বসো। চিন্তা আবার পরে কইরো।

চিন্তিত মুখেই বসলো সিয়াম। ঘাড় বাঁকিয়ে টুলের দিকে চাইলো। ওর কি কোনো মলম দরকার? সামনে তাকিয়ে আবার দাঁড়িয়ে পড়লো।

- আবার কি হইলো বাবা?

- আপনি কোথায় বসবেন আঙ্কেল?

- আমি সারাদিন বইসাই থাকি। একটু দাঁড়াইলে কুনো সমেস্যা হইবে না।

- না না! আপনি দাঁড়িয়ে থাকলে আমিও দাঁড়িয়ে থাকবো।

- আহা! আইচ্ছা আরেকটা টুল নিয়া আসি থামো।

আরেকটা টুল নিয়ে এসে বসলেন মোসাদ্দেক হোসেন। গত রাতে থেমে যাওয়া জায়গা থেকে গল্প শুরু করলো সিয়াম।

- আপনার নাম কি আঙ্কেল?

- মোসাদ্দেক হোসেন।

- আপনি থাকেন কোথায়?

- ঐ যে ঐ ঘরে থাকি।

ইশারায় নিজের থাকার ঘরটা দেখালেন মোসাদ্দেক হোসেন। বিস্মিত হয়ে সিয়াম বললো,

- ঐটাই আপনার বাড়ি?

- না না! আমার বাড়ি তো বরিশাল। এইখানে আমি থাকি ঐ ঘরে।

- ওও। আপনি বাড়ি যান কখন?

- এই ধরো তিন চাইর মাস পরপর।

ভ্রু কপালে উঠিয়ে দিতাম বলে,

- এতদিন পরপর? আমি তো আম্মুকে ছাড়া থাকতেই পারি না। এতো কান্না আসে! আম্মুকে রেখে কোথাও গেলেই একটু পর ফোন দিয়ে আম্মু বলে, "তুমি এক্ষুনি বাসায় আসবে সিয়াম। জরুরী দরকার।" এসব দরকার টরকার কিছু না বুঝলেন? আমি যেমন আম্মুকে ছাড়া থাকতে পারি না আম্মুও আমাকে ছাড়া থাকতে পারে না। আমি যাওয়ার কিছুক্ষণ পড় কান্নাকাটি করে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফোন দেয়। তারপর আমি চলে আসি।

মায়ের কথা ওঠায় কৌতূহলী হয়ে মোসাদ্দেক হোসেন জিজ্ঞেস করেন,

- তুমি যে এইখানে আমার সাথে বইসা আছো তোমার আম্মু কিছু বলবে না?

- আম্মুই তো পাঠালো। আমি একটু খেলছিলাম তাই বলেছে, "বাইরে যেয়ে দারোয়ান আংকেলের সাথে গল্প করে এসো সিয়াম। কিভাবে বাড়ি পাহারা দিত হয় দেখে রাখো। কিছু শেখা হবে।" তাই চলে এসেছি।

বিস্মিত হলেন মোসাদ্দেক হোসেন। কোনো মা যে এমন বলতে পারে এটা তার ধারণাতীত ছিলো। বিশেষ করে যখন সেই মা ঢাকার বাসিন্দা।

- আঙ্কেল আজকে সকালে আপনি কি খেয়েছেন?

- ডাইল ভাত খাইসি বাবা।

- কে রান্না করে দিলো?

- আমিই করলাম।

- আপনি রান্না করতে পারেন! কি অদ্ভুত কথা!

- অদবুত হইলেও কিসু করনের নাই। আমারে রাইন্দা দিবো কে?

- কি বললেন? অদবুত আবার কি?

খিলখিল করে হেসে উঠলো সিয়াম। ফোকলা দাঁতের সেই হাসির দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলেন মোসাদ্দেক হোসেন। নির্নিমেষ।

দুপুরে খাওয়ার ডাক পড়লে চলে গেলো সিয়াম। তার সাথে গল্প করতে করতে খাবার রান্নার কথা বেমালুম ভুলে বসেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। ঘরে গেলে সেই কথা স্মরণে আসে। ভদ্রলোক বিরক্ত হন খানিকটা। এখন রান্না করার একটুও মন নেই। সিদ্ধান্ত নেন রান্না না করার। এক বেলা না খেয়ে থাকা আহামরি কোনো বিষয় না। তবে ঘটনা তেমন ঘটলো না। দুপুর দুটো নাগাদ সিয়াম তার ঘরের খোলা দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো। হাসিমুখে বললো,

- আঙ্কেল আসি?

তার দুই হাতে দুটো প্লেট। মোসাদ্দেক হোসেন তার হাতের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিতে দেরি করলেন। সিয়াম ছটফট করে বলে উঠলো,

- ঢুকে পড়লাম আঙ্কেল। যখন তখন হাত থেকে পড়ে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। এমনিতেই এক কানে ডলা খেয়ে এসেছি। এখন আরেক কানে ডলা খেলে সারারাত দুই কান ধরে কান্নাকাটি করা লাগবে। ভয়ঙ্কর ব্যাপার।

কথা বলতে বলতেই মোসাদ্দেক হোসেনের মলিন বিছানায় আসাম করে বসে সিয়াম। ভাতে হাত দিতে যাওয়ার মুহূর্তে আঁতকে উঠে বলে,

- হাত ধুতেই তো ভুলে গেছি আঙ্কেল! এক মগ পানি দিন তো।

মোসাদ্দেক হোসেন তখনও স্টোভের সামনে বসে ছিলেন। সিয়াম ছেলেটা বড়োই হুটোপুটি করে। তার গতির সাথে ঋণী পেরে ওঠেন না। তার দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে তিনি বলেন,

- তুমি এইখানেই খাইবা বাবা? আমার ঘর তো একটু ময়লা।

বিব্রত হন মোসাদ্দেক হোসেন। হাত ধুয়ে এক নলা ভাত মুখে পুড়ে সিয়াম বলে,

- তাড়াতাড়ি শুরু করেন আঙ্কেল। আম্মু বলেছে কে বেশি সুন্দর করে খেতে পারে এটা আম্মু শুনবে। যদি আমি হেরে যাই তাহলে এক মগ দুধ খেতে হবে। ভয়ানক শাস্তি। আপনি একটু হেরে যাবেন প্লিজ?

হাসেন মোসাদ্দেক হোসেন। নিজেকে আজকাল তার বড়োই এলোমেলো লাগে।

•••

ঢাকা শহরে পানিও যে কিনে খেতে হয় এটা জানতো না সিয়াম। তার আসার কেবল তিনদিন পেরিয়েছে। এর মাঝেই এই অতি বিস্ময়কর বিষয়টা খেয়াল করে সে স্তব্ধ। উৎসাহের সাথে বের হয়েছিল পানি আনতে। মোসাদ্দেক হোসে এর কাছে এই কথা জানতে পেরে সে বলে,

- ঢাকার মানুষ তো খুব নিষ্ঠুর আঙ্কেল। একটু পানি নিবো তাই টাকা চাচ্ছে!

মোসাদ্দেক হোসেন হেসে বলেন,

- তোমাগো বাড়ি কই?

- আমাদের বাড়ি? আমাদের বাড়ি পাবনায়।

- পাবনার মানুষ তো পাগল।

- না আঙ্কেল ভুল কথা। আমরা পাগলদের সেবা শুশ্রূষা করি। সারা বাংলাদেশের মানুষ ওদের আমাদের কাছে রেখে আসে। আমরা কি ভালো দেখেছেন?

- কথা তো মন্দ না। কিন্তু পাবনার লোকে কি এমনে কথা কয়? তুমি এমনে কও ক্যান?

- আমি বাইরে গেলে এভাবে বলি। বাসায় তো বাসার মতো করেই বলি।

- একটু কও তো হুনি।

- উমমম কি বলি? পানি লি আমরা বাড়িত যাবো। তারপর আমাকে একটা চিপস কিনি দিতি হবি। দিবেন তো?

- আমি তো কুনো টাকা আনি নাই।

- তাইলে আমি আপনার সঙ্গে যাবো ল্যা।

- ল্যা?

খিলখিলিয়ে হাসে সিয়াম। হাসতে হাসতে বলে,

- ল্যা মানে না। বুঝেছেন? এই জন্যই আমি কোথাও গেলে এভাবে কথা বলি না। মানুষ তো তাহলে বুঝবেই না।

- আমি কিছু বুঝছি।

- বুঝলে ভালো। আপনার সাথে মাঝে মাঝে বলা যাবে। এতদিন নিজের মতো করে কথা বলতে না পারে হাফ লেগে গেছে।

পানি নিয়ে যাওয়ার পর ঘটলো আরেক ঘটনা। বাসায় পৌছে দেখে একটা বোতলের মুখ নেই। মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে থাকলো সিয়াম। এখুনি মা বকবে। মোসাদ্দেক হোসেনকে অনুনয় করে বলে,

- আপনি একটু বোতল দুইটা দিয়ে আসবেন আঙ্কেল? গেলে এক্ষুনি আম্মু আমাকে একটা মা'রবে। দিয়ে আসুন তারপর আমরা মুখটা খুঁজতে যাই।

- আইচ্ছা। ট্যানশন নাই। আমি দেখি কি করন যায়। ততক্ষণ তুমি দরজা পাহারা দ্যাও।

- আচ্ছা।

দরজায় কড়া নাড়লেন মোসাদ্দেক হোসেন। গম্ভীরমুখী এক মহিলাকে দেখা গেলো। দরজার বাইরে ছেলের বদলে দারোয়ানকে দেখেও তার মনের কোনো ভাব প্রকাশিত হলো না। কিন্তু দারোয়ান যখন মুখ ছাড়া বোতল রাখলেন তখন শান্ত কণ্ঠ মহিলা জিজ্ঞেস করলেন,

- সিয়াম কোথায়?

- আছে আপা। আসতাছে। আমি যাই হ্যাঁ?

উত্তরের অপেক্ষা না করেই পালালেন মোসাদ্দেক হোসেন। সিয়ামকে নিয়ে ছুটলেন আগের রাস্তায়। ছেলেটা মন খারাপ করে বললো,

- আমি যদি তখন বোতলের মুখটা হাতে না নিতাম তাহলে এমন হতো না। ভাল্লাগেনা।

- সমেস্যা নাই বাবা। মুখ পাওয়া যাইবো।

- কালকে আমি আপনার জন্য একটা চড় খেয়েছি আঙ্কেল।

- কি কও! আমি কি করলাম?

- কালকে আমি সমস্যা না বলে বলেছি "সমেস্যা" আর আম্মু ঠাস করে আমাকে একটা মে'রে দিয়েছে।

নিজের গালে হাত বুলায় সিয়াম। চড়টা ভালোই লেগেছে। অপরাধ বোধ করেন মোসাদ্দেক হোসেন। মলিন কণ্ঠে বলেন,

- তাইলে আর আমার কাছে আইসো না বাবা।

- না আঙ্কেল। আছিই আর কয়দিন? তারপর তো চলেই যাবো। তখন তো আর চাইলেও আসতে পারবো না।

- যাইবা মানে?

- আমরা তো আর দুইদিন পরে চলে যাবো।

- তোমরা ভাড়ায় আসো নাই?

- না। আমার আপু এখানে পড়তে এসেছে। ও থাকবে আরো এক মাস। তারপর ও নিজেও তো চলে যাবে। আমরা ওকে দেখতে এসেছিলাম। দুইদিন পরে চলে যাবো। ঐ যে আঙ্কেল! বোতলের মুখটা পেয়েছি।

দৌড়ে যায় সিয়াম। আজ আম্মুর মারের হাত থেকে হয়তো বেচেঁ যাবে। সেই খুশি মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন। দাঁড়িয়ে থাকেন আগের জায়গাতেই।

•••

এক বিকেলের কথা। সিয়াম তার বোনকে নিয়ে বের হচ্ছে। মোসাদ্দেক হোসেন শুয়ে ছিলেন নিজের ঘরে। দরজা হাট করে খোলা। মুখে হাত রেখে চেহারা আড়াল করে রেখেছেন বলে সিয়াম ভাবলো তিনি ঘুমিয়ে আছেন। বোনকে তার ঘরের দরজার কাছে নিয়ে যেয়ে আস্তে আস্তে বললো,

- এই দেখো আপু, উনাকে চিনে রাখো হ্যাঁ? বেচারা একা একা থাকে, নিজে রান্না করে খায়। যা খাবা একটু দিয়ে খাবা ঠিকাছে? বলো ঠিকাছে?

বিপরীতে সিয়ামের বোনের ক্ষীণ কণ্ঠস্বর শোনা গেলো। তারা চলে গেলে মুখ থেকে হাত নামিয়ে ছাদের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন। উপরের তলায় অনেক বড়ো বড়ো মানুষের বাস।

•••

সিয়ামরা চলে যাওয়ার দিন সি এন জির সামনে দাঁড়িয়ে ছেলেটা ছলছল চোখে মোসাদ্দেক হোসেনের দিকে তাকিয়ে থাকলো। ঠোটে ঠোট চেপে আছে। ফাঁকা করলেই সমস্যা। কান্নারা বের হয়ে আসবে। একটু পরপর মায়ের হাত ধরে ঝাঁকি দিলো। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে মা চোখ রাঙানি ফাইল সে থামলো। মোসাদ্দেক হোসেন ভাবলেন ছেলেটার কাছে যেয়ে একটু কথা বলতে। সাহস পেলেন না। ছেলের মা সাথে দাড়িয়ে আছে। কিছু মন করলে?

তার অপেক্ষাকে আর বাড়তে না দিয়ে সিয়ামের মা কাছে এসে বললেন,

- আমার ছেলেটা এই কয়দিন আপনাকে খুব জ্বালিয়েছে ভাই সাহেব। কিছু মনে নিবেন না। আমার মেয়েটা থাকলো। একটু দেখবেন। আর এটা দয়া করে রাখেন। না করবেন না।

হাতের মুঠো হতে একশো টাকার দুটো নোট বাড়িয়ে দিলেন মহিলা। সিয়ামের হাসি মুখটা মোসাদ্দেক হোসেনের নজরে এলো। হাত বাড়িয়ে নিলেন সেই টাকা। সি এন জিতে ওঠার আগে সিয়াম ছুটে এলো তার কাছে। হাপাতে হাপাতে বললো,

- আপনার নাম্বারটা দিন আঙ্কেল। আপনার কথা মনে হলেই ফোন করবো ঠিকাছে?

যন্ত্রমানবের মতো নাম্বার দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। বাড়তি কোনো কথা বললেন না।

- যাই আঙ্কেল। আসসালামু আলাইকুম।

যেতে যেতে কয়েকবার পেছন ফিরে তাকালো সিয়াম। শেষবার সামনে তাকিয়ে চোখ মুছলো। আর ফিরে তাকালো না সে। মোসাদ্দেক হোসেন চেয়ে রইলেন।

সেদিন রাতেও চাঁদ ছিলো। তবে খানিকটা বিষন্ন বোধহয়। চাঁদকে যেনো কেমন ঝাপসা দেখাচ্ছিলো। কেউ যেনো ক্যানভাসে আঁকানো চাঁদের হলুদ রঙকে হাত দিয়ে ডলে চারদিক ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই বিষন্ন চাঁদের দিকে তাকিয়ে মোসাদ্দেক হোসেনের মনে হলো আজ থেকে তার নিজের মনের দ্বাররক্ষক হওয়া প্রয়োজন। কেউ তার মনের চোরা গলিতে ঢুকে জমানো মায়া নিয়ে পালিয়ে গেলো আর তিনি ঠিকই পেলেন না। এমন চোর ধরে বুকের ভার কমাতে হলেও তাকে নিজের দ্বাররক্ষক হওয়া প্রয়োজন। ভীষণ প্রয়োজন!

সমাপ্ত

29/02/2024

পত্রপ্রেরক সংঘ থেকে ছোট্ট একটা আয়োজন করা হয়েছে। নিয়মিত কিছু সদস্যদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে আপন মানুষকে নিয়ে কিছু অনুভূতি লেখার। তারা সেটা সযত্নে পাঠিয়ে দেবে সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির কাছে,চিঠি হিসেবে। তমা সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইলো না। হতচ্ছাড়াটা দুই দিন আগে তার সাথে ঝগড়া করেছে। এখনও কথা বলেনি। ফোন দিলেও ওঠানোর নাম নেই। ভাবলো চিঠি দিয়ে মন গলানো যায় নাকি। যেই ভাবা সেই কাজ। অনুভূতি গুলো কাঁচা হাতে ফুটিয়ে তুলতে চাইলো।
___________________

আমার ভাইটা আমার জন্যে ছোট্ট প্যাকেজে বিশাল বড় এক উপহার! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! ওর জন্য আমি কখনোই শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারবো না। আম্মুর বাবুটা মারামারি করার সময় আমার ছোট, কথা শেয়ার করার সময় আমার সমবয়সী, রাস্তায় চলার সময় আমার বড় ভাইয়ের ভূমিকা পালন করে। ওর আর আমার এজ গ্যাপটা অনেক। তাও মাঝে মাঝে কি সুন্দর আমার বড় ভাই হয়ে যায়। মা শা আল্লাহ। সেদিন বাইরে থেকে এসেছে তখন আমি বললাম,

- ভাইয়া ক্ষুধা লাগছে।
সামনে কে যেনো একটা ছিলো। আফিয়া আপু হয়তো। হেসে বললো।
-ওরে বলসো কেনো?
আপুকে অবাক করে দিয়ে আমাকে বললো,
-কি খাবি বল।
এটুকু শুনেই আমার পেট, মন দুটোই ভরে গেলো।

আরেকদিন বড় খালামনির বাসা থেকে রিকশা করে আসছি। আমি আর আম্মু সিটে আর ও রিকশার উপরে আমার পেছনে বসা। একটা হাতে ব্যাগ আরেক হাতে ওর প্যান্ট শক্ত করে ধরে রেখেছি। ভয় লাগে, যদি রাস্তায় পড়ে যায়! হঠাৎ একটু জোরে বাতাসে নিকাব উড়ে যেতে লাগল। পেছন থেকে ভাইটা ঘাড়ের উপরে রাখা একটা হাত দিয়ে নিকাব নামিয়ে সেখানেই রেখে দিলো। আল্লাহ তোকে কবুল করুক ভাই। এই কাজটায় আমার অন্তরটা যে কতটা ঠান্ডা হয়েছে আমি বুঝাইতে পারবো না। আলহামদুলিল্লাহ।

একদিন পড়ে বাসায় দরজার সামনে দাড়ানো ছিলাম। ও তালা খুলতে এসে নিকাব ধরে একটা টান দিলো। আমি তখনও ভেতরে ঢুকিনি।চেঁচিয়ে উঠে বললাম,
- এটা কোন ধরনের কাজ!
- আরে কেউ দেখছে নাকি?!
- আমি তোমার থেকে এটা এক্সপেক্ট করিনি।

ব্যস এটুকুই বলছিলাম।আমার ঠান্ডা কথা মনে হয় ওর হজম হয়নি। যতক্ষণ স্বাভাবিক ভাবে কথা না বললাম ততক্ষণ পিছনে পড়ে থাকলো আর বলতে থাকলো, "আর এমন করবো না বুবু,সত্যি বলছি।"
বাহ্যিক দিক থেকে ওর আর আমার পার্থক্য স্পষ্ট। ও এক মেরু তো আমি বিপরীত। কিন্তু আজকে উপলব্ধি করলাম মনের দিক দিয়ে ও আমার কার্বন কপি! সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ ওকে আমার অন্তরের কলুষতাগুলো তুমি দিও না।

আমার পর্দা করা নিয়ে সবচেয়ে বেশি পসেসিভ ও। আমি মাঝে মাঝে ভাবি আমার ব্যক্তিগত পুরুষটা কি ওর মত পজেসিভ হবে আমার জন্য? এতো ভালোবাসা পেয়ে তো আমি বেশি তৃষ্ণার্থ হয়ে যাচ্ছি। অল্পতে যে পোষাবে না! এই যে এখন আমার পাশে শুয়ে আছে, আমার কালো মুখটা তো ও দেখতে পারে না। ভালো লাগে না ওর। ইচ্ছা করে বা স্বভাবতই আমি মুখ কালো করলে নিজের দুর্বলতা ঢেকে রেখে বলে,

- এহ, পাইসে এক ঢং! নে যা, কি করবি কর।
এই বলেই সম্মতি দিয়ে দেয়। কি মনে হয় আমি বুঝি না! হে হে আমিও বুঝি। আমিও তো তোর ওইটুকু মুখটা দেখে মাঝে মাঝে একেবারে পানিতে লবণ গলানোর মতো হলে যাই। তবে আমার সাথে তেড়িবেড়ি করলে আমিও হুমকি দিতে ভুলি না,

- আমার সাথে বুঝে শুনে কথা বলবি। তোর বউ কিন্তু আমিই খুজবো। মু হা হা হা।

পাগলটা আমারে যা নয় তাই বলবে কিন্তু আম্মু বা আব্বু কিছু বললে মানতে পারবে না। নিজে সারাদিন দোষ ধরবে কিন্তু মানুষ বললে ছ্যাত করে উঠবে। ওর চোখে আমি বিশ্ব সুন্দরী। আমার আঁকাবাঁকা দাতের হাসিই ওর প্রিয়। আমার শ্যাম্পু করে পাগলী হয়ে থাকা চুলগুলোই ওর কাছে অসাধারণ। তেলে চুবানো আমাকে কাজল আর লিপস্টিক পড়িয়েই অপলক তাকিয়ে থেকে বলে,

- তোকে কি সুন্দর লাগছে বুবু!

সমাপ্ত.

29/02/2024

রাতে বল্টু বাড়ি গিয়ে দেখলো তার বউ কান্না করছে...!!

বল্টু: জানু কান্না করো কেনো কেল্টু কি আজও তোমায় বিয়ের অফার দিছে?

বউ: না।

বল্টু: দুধ আলা কি আজও দুধের বদলে পানি দিছে?

বউ: না।

বল্টু: চোর কি তোমার জামাকাপড় চুরি করে নিয়ে গেছে?

বউ: না।

বল্টু: আমার মা কিছু বলেছে?

বউ: না।

বল্টু: তাহলে কি জন্য কান্না করছো?

বউ: কিরন মালার খুব বিপদ কিরন মালা কি পারবে কটকটিকে বিনাস করতে।

বল্টু বউয়ের কথা শুনে বেহুশ...!!

Address

Cortpara, Shailkupa
Jhinaidaha

Telephone

+8801408023774

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when At Tolib Media posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to At Tolib Media:

Videos

Share

Nearby media companies


Other Digital creator in Jhinaidaha

Show All