21/05/2022
𝐍𝐄𝐖 𝐏𝐀𝐍𝐃𝐄𝐌𝐈𝐂 𝐃𝐈𝐒𝐄𝐀𝐒𝐄 : 𝐌𝐎𝐍𝐊𝐄𝐘𝐏𝐎𝐗
মাঙ্কিপক্স হল একটি বিরল রোগ যা মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়। মাঙ্কিপক্স মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে দেখা যায়, প্রায়ই গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেইন ফরেস্টের কাছাকাছি অঞ্চল গুলোতে এর প্রভাব বেশি।
করোনা আতঙ্কের মধ্যেই আবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। গত ৭ মে লন্ডনে প্রথম এক ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাসের খোঁজ মেলে। এরই মধ্যে ভাইরাসটি পর্তুগাল, স্পেন, ইউরোপ ও আমেরিকার মতো কয়েকটি দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
🔴 চিকেন পক্স নাকি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বুঝবেন যেভাবেঃ
মাঙ্কিপক্স সম্পর্কে অনেকেরই এখনো তেমন কোনো ধারণা নেই। ওখানকার চিকিৎসকরা বলছেন, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত রোগ। প্রাণীদেহের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ানোর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে, ইঁদুরের মাধ্যমে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ায়।
🔴 কতটা সংক্রামক মাঙ্কিপক্স?
মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বাড়তে পারে সংক্রমণের ঝুঁকি। শ্বাসনালি, শরীরে তৈরি হওয়া কোনো ক্ষত, নাক কিংবা চোখের মাধ্যমেও অন্যের শরীরের প্রবেশ করতে পারে মাঙ্কিভাইরাস।
বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে এটাই ধারণা করেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, সঙ্গমের মাধ্যমেও একে অপরের শরীরে ছড়াতে পারে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস।
🔴 মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের লক্ষণ কী কী?
একবার কোন ব্যাক্তি এ রোগে সংক্রমিত হলে তার ৪ দিন পরে লক্ষণগুলি বিকাশ শুরু করে।
১. কাঁপুনি দিয়ে জ্বর
২. বমি বমি ভাব বমি
৩. নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
৪. মাথা যন্ত্রণা,
৫. শরীরের মাংশ পেশিতে ব্যথা,
৬. শরীরের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি (লিম্ফনোড) ফুলে ওঠে
৭. ফুসকুড়ি, প্রধানত মুখ, বুকে শরীরের অন্যান্য অংশে
৮. স্কিন বাম্প হওয়া বা ফোলা
৯. তরল ভরা পুস্টুলস
১০. স্কিনে প্যাপিউলস বা ফোস্কা হওয়া
১১. ভূত্বক গঠন,
ধীরে ধীরে সেই ক্ষত আরও গভীর হয়ে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। গুটি বা জলবসন্তের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গে মিল আছে বলে অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগকে বসন্ত বা চিকেন পক্স বলে ভুল করছেন
🔴 চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
মাঙ্কিপক্সকে অনেকেই চিকেন পক্স বলে ভুল করছেন। চিকেন পক্সের মতো মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রেও শরীরে ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দিচ্ছে।
চিকেন পক্সের ক্ষেত্রে শরীরে লালচে রঙের ঘামাচি বা ব়্যাশের মতো গুটি গুটি বের হবে। মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটে। শরীরে ব্যথা, কাপুনি দিয়ে জ্বর ইত্যাদি লক্ষণে চিকেন পক্সের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের মিল আছে।
চিকেন পক্সের ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার ৫-৭ দিনের মধ্যে শরীরে ফুসকুঁড়ির সৃষ্টি করে। সেটা ধীরে ধীরে জলভরা ফোস্কার মতো আকার নেয়। পরে ফোস্কার ভিতরের রস ঘন হয়ে পুঁজের মতো হয়। ৭-১০ দিন পর থেকে তা শুকোতে থাকে।
অন্যদিকে মাঙ্কিপক্সের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৫-২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে। জ্বর দেখা দেওয়ার ১-৩ দিনের মধ্যে (কখনো কখনো আরও বেশি) রোগীর একটি ফুসকুড়ি তৈরি হয়। যা প্রায়শই মুখে শুরু হয়, তারপর শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে তা সারতে ২-৪ সপ্তাহ লাগতে পারে।
তরলযুক্ত এই ফুসকুড়িগুলো পরে ত্বকের দাগেরও সৃষ্টি করছে। উপসর্গগত সাদৃশ্য থাকলেও চিকেন পক্স ও মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলোর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো, মাঙ্কিপক্সের কারণে লিম্ফ নোডগুলো ফুলে যায় (লিম্ফ্যাডেনোপ্যাথি)। তবে গুটিবসন্ত বা চিকেন পক্স হলে আবার এ সমস্যা হয় না।
লিম্ফনোড হলো একটি ডিম্বাশয় বা কিডনি আকৃতির অঙ্গ। এটি লসিকাতন্ত্রের ও অভিযোজিত রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার একটি অঙ্গ। লিম্ফনোডগুলো সারা শরীর জুড়ে বিস্তৃতভাবে উপস্থিত থাকে। মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস শরীরে ঢুকলে লিম্ফনোডগুলো ফুলে ওঠে।
এলোপ্যাথিতে চিকেন পক্সের মতো রোগের প্রতিকার থাকলেও এই বিরল রোগ নিরাময়ের এখনো পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আফ্রিকায় মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
🔴 হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
হোমিওপ্যাথিতে রোগীর লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসার কারণে যেকোন রোগেরই সুন্দর স্থায়ী চিকিৎসা রয়েছে।
লক্ষণ সাদৃশ্যে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনঃ Rhustox, Sarracenia purpurea, Variolinum, Vaccininum, Malandrinum, Pulsatilla, Antim crud, Sulphur, Thuja, etc.
লেখকঃ
Dr-Bipul Chowdhury
Lecturer, Chandpur Homoeopathic Medical College & Hospital.
Sr. Consultant : CHOWDHURY HOMOEO MEDICAL CENTER