13/12/2024
আমাদের শায়খ মুফতী আমীনি রহঃ
******************************
বাংলাদেশের কিংবদন্তি আলেম,
জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ মাদরাসার সম্মানিত প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদীস ছিলেন।
উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দ্বীনি এই প্রতিষ্ঠানে জীবনের এক বড় অংশ (২০০২-২০১২)কাটানোর সৌভাগ্য হয়েছে।
কাছে দেখেছি বিপ্লবী বীর মুজাহিদ কে।
লালবাগ জামেয়ার জীবনের ছোট্ট এই সময়গুলোতে কত স্মৃতি।
সব বলা সম্ভব নয়।
২০০১ সালে সবে হিফজখানার ছাত্র।
ক্লাস ফাইভ শেষ করে হিফয ভর্তি হয়েছিলাম তাই পত্রিকার পাতাগুলো দেখলে পড়তে পারতাম।
বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল আদালতে ফতোয়া বিরোধী রায়।
মুসলিম দেশে মুসলিম বিচারকদের দ্বারা আল্লাহর কুরআনে বর্ণিত বিধানের বিরুদ্ধে রায়!!
ভাবা যায়!!!
আল্লাহর সাথে চ্যালেঞ্জ!!
হুম তাই হয়েছে আমাদের দেশে।
এদেশের উলামায়ে কেরাম ও তৌহীদি জনতা এর প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছিলো।
জালিমের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলো এদেশের তৌহীদী জনতা।
শহীদ হলেন বি বাড়ীয়া সহ অনেক স্থানে আল্লাহর প্রিয় কিছু বান্দা।
গ্রেফতার করা হলো উপমহাদেশের অন্যতম প্রবীণ কিংবদন্তি শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক সাহেব রহঃ। মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা মুফতী আমীনি রহঃ কে অসংখ্য উলামায়ে কেরাম কে।
হত্যা মামলা দেওয়া হলো।
ঐসময়গুলোতে পত্রিকার পাতায় জালিমের কারাগারে বন্দি আলেমদের ছবিগুলো দেখতে দেখতে আমার কিশোর মনও শুধু ছটফট করেছে।
প্রতিটা মসজিদ মাদরাসায় কুরআনের খাদেমদের দিবারাত্রির চোখের অশ্রু ঝরিয়েছে।
একথা সত্যি যেখানে রক্ত ঝরে
আর রবের দরবারে অশ্রু ঝরে
সেখানেই আল্লাহ বিজয়ের ঝান্ডা উড়ান।
আল্লাহ জালিমের পতন ঘটালেন
অনেকেই বিভিন্ন আন্দোলন, রক্ত ঝড়ানো, এগুলোকে তাছ্যিল্য করেন।
আল্লাহর কসম করে বলি সর্বযুগেই আল্লাহর দ্বীন দুনিয়ায় বাস্তবায়নের জন্য যাঁরাই রক্ত দিয়েছেন তাদের প্রতিদান আল্লাহ দিয়েছেন।
২০০১ সালে ফতোয়া বিরোধী রায় করা হলো
২০১০ সালে আবার সেই একই আদালতে একই বিচারক দ্বারা ফতোয়া বিরোধী রায় বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে
এটা অন্যের আদালতে নয়।
বরং নিজেরাই নিষিদ্ধ করেছে
আবার নিজেরাই বৈধতা দিয়েছে।
এটাই আল্লাহর মাইর রে ভাই।
এরপরেও না বুঝলে আমার কিছু করার নেই।
মুফতী আমীনি রহঃ এক বিপ্লবী সিপাহসালার।
*******************************
ফতোয়া বিরোধী রায়ে মুফতী আমীনি রহঃ বিচারকদের মুরতাদ ঘোষণা করেছিলেন।
কুরআন ও হাদীসের মতে বিচারকদের মুরতাদ হওয়ার ব্যাপারে এই ফতোয়া
কেউ খন্ডন করতে পারেনি।
মুফতী আমিনী রহঃ এমনই ছিলেন।
যতদিন ছিলেন বাতিলের যমদূত ছিলেন।
নাস্তিক মুরতাদ,বামপন্থী নাপাকগুলো মুখ খোলতে কিংবা কলমের কালি বের করতে আগে ভেবে নিত পরবর্তী এ্যাকশন কি হতে পারে।
মুফতী আমিনী রহঃ সেটায় বাস্তবতা দেখিয়েছিলেন।
মুফতী আমিনী রহঃ এর মৃত্যুর পর একটু বেশি খুশি হয়েছিল ইবলিসের চেলাচামুন্ডাগুলো।
আল্লাহ মুফতী আমীনি রহঃ আখেরাতে তার দারাজাত বুলন্দ করুন আমীন।
পৃথিবীতে চিরদিন হক বাতিলের অবস্থান থাকবেই
তাইতো মুফতী আমীনি নেই তবে যুগের আরও রাহবার আল্লাহ তৈরি করেছেন, করবেন।
তবে বাংলাদেশে যখন একজন মুফতী আমিনীর প্রয়োজন ছিলো
আল্লাহ দিয়েছিলেন।
মুফতী আমিনী একজনই
তার বিকল্প নেই।
মুফতী আমিনী রহঃ বেঁচে থাকতে আমরা যেভাবে চিনেছি।
কিছু মানুষ দ্বিমত পোষণ করলেও
মুফতী আমিনীর মৃত্যুর পরে তারাও বুঝতে পেরেছে।
আসলে মুফতী আমিনী বাংলাদেশের ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
ইলম আর আমল,রাজপথে,সংসদে সব স্থানে তাঁর পদচারণা সত্যিই আশ্চর্যান্বিত করে আমাদের।
দুআতে শিশুর মতো হাওমাও করে আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করা,
দুআর মধ্যে চাওয়া এক বিষয় আর দাবী করে নেওয়া আর এক বিষয়।
হুম আমরা সেটাই দেখেছি।
"আল্লাহ মাফ করে দাও...
দাওওওও.. দাওওওও..
জীবনের লম্বা সময় এ দৃশ্য দেখেছি।
শেষরাতে লালবাগ শাহী মসজিদের মেহরাবে, প্রতিদিন দরসের শেষে।
সপ্তাহে এক খতম কুরআন তিলাওয়াত,ভেবে নিন জীবনে কত খতম তিলাওয়াত করেছেন।
দানের হাত এতবড় ছিল সেটা অন্যকোন লিখায় বলব।
একইদিনে শেষ রাতের আমল।
ফজরের পরে আমল
সকলে দরস।
আবার দুপুরে সংসদে।
বিকালে আবার দরস।
রাতে দূর দূরান্তে মাহফিল।
এটা একদিন নয়
প্রতিদিনের আমল ছিলো
আল্লাহ আমাদের শায়খকে জান্নাতে মরতবা বুলন্দ করুন।