Udyokta Atik Hasan

Udyokta Atik Hasan বড় চাকর হওয়ার চেয়ে নিজে ছোট
মালিক হওয়া উত্তম,
দিন শেষে কাউকে জবাবদিহীতা করতে হবে না।

চলেন আমরা নিজেরা উদ্যোক্তা  হই এবংঅন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেই।
12/01/2025

চলেন আমরা নিজেরা উদ্যোক্তা হই এবং
অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেই।

কিছু স্বপ্ন কল্পনাতেই সুন্দর। আগে যদি জানতাম তাহলে.!My aim in life earn money.রচনাটি পরিক্ষার খাতায় লিখতাম। না বলা কথা গ...
12/01/2025

কিছু স্বপ্ন কল্পনাতেই সুন্দর।

আগে যদি জানতাম তাহলে.!
My aim in life earn money.
রচনাটি পরিক্ষার খাতায় লিখতাম।
না বলা কথা গুলো আর হোক না বলা।
🏣 মদিনা মডেল ফার্মেসী হবিগঞ্জ ।
Udyokta Atik Hasan

চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জ্যাক মা বলেন, "যদি তুমি বানরের সামনে কলা এবং টাকা রাখো। বানরটি কলা বেছে নেবে কারণ বানরটি জানে...
12/01/2025

চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জ্যাক মা বলেন,
"যদি তুমি বানরের সামনে কলা এবং টাকা রাখো।
বানরটি কলা বেছে নেবে কারণ বানরটি জানে না যে টাকা দিয়ে অনেক কলা কেনা যায়। "

আসলে, আপনি যদি মানুষকে কাজ এবং ব্যবসা প্রস্তাব করেন, তাহলে তারা কাজ করার সিদ্ধান্ত নেবে কারণ বেশিরভাগ মানুষ জানেননা যে একটি ব্যবসায় বেতনের চেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে।

দরিদ্রদের দরিদ্র হওয়ার একটি কারণ হল দরিদ্রদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না ।

তারা স্কুলে অনেক সময় ব্যয় করে,
আর স্কুলে যা শিখে তা হল নিজের জন্য কাজ না করে বেতনের জন্য কাজ করা ।

বেতন থেকে ব্যবসায়িক লাভ অনেক ভাল কারণ বেতন আপনাকে জীবন পরিচালনার জন্য সাপোর্ট দিবে কিন্তু ব্যসায়িক লাভ আপনাকে একটি ভাগ্য তৈরি করে দিবে।

উল্লেখ্য, জ্যাক মা'র নিজের জীবনই এর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ। একজন সাধারণ স্কুলশিক্ষক থেকে আজ তিনি বিশ্বের অন্যতম উদ্যোক্তা, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী। পুরোপুরি নিজের প্রচেষ্টায় আলিবাবার মতো একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে তিনি বিশ্বের অন্যতম সফল উদ্যোক্তাদের একজন হয়েছেন।

পোস্টটি ভালো লাগলে,
এরকম পোস্ট আরো পেতে ফলো দিয়ে পাশে থাকুন।
Udyokta Atik Hasan

আপনি জানেন কি- বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার প্রচলন হয় ১৯৭৩ সালে!১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৫, ১০, ২৫ ও ৫০...
10/01/2025

আপনি জানেন কি- বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার প্রচলন হয় ১৯৭৩ সালে!
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সা মূল্যের ধাতব মুদ্রার প্রচলন হয়। এরপর ১৯৭৪ সালে ১ পয়সা এবং ১৯৭৫ সালে ১ টাকা মূল্যের ধাতব মুদ্রা প্রচলন করা হয়।

08/01/2025

কাজে লজ্জা নেই লজ্জা অলসতায়

দুই ভাইয়ের আকাশে উড়ার স্বপ্ন উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট(১৮৭১-১৯৪৮) (১৮৬৭-১৯১২)যে সকল প্রতিভাবান অনুসন্ধিৎসু মানুষের চিন্তা...
07/01/2025

দুই ভাইয়ের আকাশে উড়ার স্বপ্ন
উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট

(১৮৭১-১৯৪৮) (১৮৬৭-১৯১২)
যে সকল প্রতিভাবান অনুসন্ধিৎসু মানুষের চিন্তা ও কর্ম মানব সভ্যতার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছে, উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট–এই দুই সহোদর তাদের মধ্যে অন্যতম। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় নামেই তারা সারা বিশ্বে পরিচিত।

আজকের পৃথিবীতে দূর হয়েছে নিকট পৃথিবী আজ আমাদের হাতের মুঠোয় বলতে গেলে। এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে মানুষের আবিষ্কৃত বিমানপোত।

আর তা আবিষ্কার করেছিলেন উইলবার ও অরভিল দুই ভাই। নিজেদের তৈরি যন্ত্রযানে চেপে তারাই প্রথম আকাশে উড়ে মানুষের ইতিহাসে নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন।

আমেরিকার ইন্ডিয়ানা প্রদেশে ১৮৬৭ খ্রি: উইলবারের জন্ম। অরভিলের জন্ম ১৮৭১ খ্রি:।

পিঠোপিঠি দুই ভাই ছেলেবেলা থেকেই ছোট যন্ত্রপাতি নিয়ে মেতে থাকতেন। কখনও নিজেরাই কিছু একটা বানাতেন। অসীম ধৈর্য নিয়ে নাওয়া খাওয়া ভুলে লেগে থাকতেন নিজেদের সেইসব কাজে।

পড়াশুনা শেষ করে দুই ভাই মিলে নিজেদের পছন্দমত একটা কারখানা তৈরি করলেন। প্রথমে ছাপার যন্ত্র ও পরে বাইসাইকেল নিয়ে কি করে এগুলোর আরো উন্নতি করা যায় তার চেষ্টা করলেন।

সেই সময় অটো লিলিয়েনথাল নামে একজন জার্মান ইঞ্জিনিয়ার উড়ন্তযান নিয়ে গবেষণা করছিলেন। কয়েক বছরের চেষ্টায় তিনি অনেকটা সফলও হলেন। কিন্তু হঠাৎ ভদ্রলোকের মৃত্যু হওয়ায় তাঁর গবেষণার কাজ সেখানেই বন্ধ হয়ে যায়। রাইট ভাইয়েরা তখন লিলিয়েনথালের অসমাপ্ত কাজের বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করলেন।

লিলিয়েনথালের উড়ন্ত যানের নক্সা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার ত্রুটি খুঁজে বার করলেন তাঁরা। তারপর আরম্ভ করলেন এই নিয়ে গবেষণার কাজ।

উড়ন্ত যান নিয়ে ইতিপূর্বে যত কাজ হয়েছিল প্রথমেই তারা সেই সব বিবরণ সংগ্রহ করলেন। সেসব পরীক্ষা করে বুঝতে পারলেন কেবলমাত্র বাতাসের গতিবেগের ওপর নির্ভর করে উড়ন্ত যান বেশিদূর চালানো সম্ভব নয়। এজন্য দরকার শক্তি চালিত ইঞ্জিনের। গতি সঞ্চার করতে না পারলে এই যানের কোন ব্যবহারিক মূল্য থাকবে না।

তারপর দুই ভাই মিলে চিন্তা শুরু করলেন ইঞ্জিনের বিষয় নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা নিরীক্ষা করলেন। কিন্তু কিছুতেই সফল হতে পারলেন না।

বারবার ব্যর্থ হয়ে হতাশ হয়ে পড়লেন দুজনে। তখন বুঝতে পারলেন এ বিষয়ে তাদের জ্ঞান যথেষ্ট সীমিত। সাফল্যের জন্য দরকার বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান।

আকাশযান সম্পর্কে ইতিমধ্যে যা কিছু বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, তাঁদের ব্যর্থতা, সাফল্য ও চিন্তাভাবনার ইতিবৃত্ত নিয়ে দুই ভাই অধ্যয়ন করলেন গভীর মনোযোগ দিয়ে।

এইভাবেই তারা ধীরে ধীরে বাতাসের গতিবেগ, নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে তার চাপ, ভারসাম্য নির্ণয়ের পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করলেন।

ইতিপূর্বে কি পদ্ধতিতে উড়ন্তযান নির্মাণ করা হয়েছে সেই কৌশলও তারা রপ্ত করে নিলেন।

সূদূর অতীতে নীল আকাশে পাখিদের ওড়া দেখে একদিন মানুষের মনেও সাধ জেগেছিল আকাশে উড়বার। কিন্তু পাখিরা আকাশে ওড়ে ডানার সাহায্যে, মানুষের তো ডানা নেই। সেই অভাব তো মানুষের পক্ষে পূর্ণ করা সম্ভব নয়। তবু, অনেক দুঃসাহসী মানুষ কৃত্রিম ডানা পিঠে বেঁধে আকাশে উড়বার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে ওড়া হল না। বাড়ল দুর্ঘটনা।

তারপর সেই চেষ্টা বন্ধ করে মানুষ বানাল বেলুন। কিন্তু বেলুনে চেপে শূন্যে ভাসা সম্ভব হলেও মানুষের আশা পূরণ হল না।

তারপর বানানো হল খেলনার আকৃতির গ্লাইডার। এই যন্ত্রগুলো নানান কৌশলে আকশে ওড়ানো সম্ভব হল বটে, কিন্তু তাতে চেপে মানুষের আকাশে ওড়ার সাধ পূর্ণ হল না।

মানুষের আকাশে ওড়ার ইতিহাস ঘাঁটতে ঘাটতে রাইট ভাইয়েরা এখানে এসে থামলেন। তাঁরা স্থির করলেন, এমন যন্ত্র বানাতে হবে যা চেপে মানুষ ইচ্ছামত আকাশে উড়ে বেড়াতে পারবে।

নিজেদের কারখানায় আবার শুরু হল পরীক্ষা-নিরীক্ষা। দীর্ঘ এক বছরের চেষ্টায় একটা বড় আকারের গ্লাইর বা উড়ন্ত যান তৈরি হল। গ্লাইডারের বিশেষত্ব হল এটি বাতাসে ভারসাম্য রেখে সহজেই উড়ে যেতে পারবে।

এই সাফল্যই নতুন প্রেরণার সঞ্চার করল দুই ভাইয়ের মধ্যে। এরপরই তারা তৈরি করলেন দুই পাখা বিশিষ্ট একটি ছোটখাট বিমান। ভারসাম্য রক্ষার জন্য এলিভেটর নামের একটি ছোট যন্ত্র এই বিমানের সামনে ও পিছনে জুড়ে দেয়ওয়া হল। এই যন্ত্রটি বিমানের গতি নিয়ন্ত্রণ করতেও পাইলটকে সাহায্য করবে।

সাফল্যের আনন্দ নিয়ে একদিন বিমান নির্মাণের কাজ শেষ হল। তারপর শহর থেকে দূরে খোলা এক মাঠে নিয়ে গিয়ে বিমানটিকে শূণ্যে উড়িয়ে দেওয়া হল।

এই কাজও ছিল পরীক্ষার পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় বুঝতে পারলেন, তাঁদের কলাকৌশলের কিছু পরিবর্তন দরকার।

আবার শুরু হল চিন্তাভাবনা ও সেই মত কাজ। বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গেল, পেট্রল চালিত হাল্কা ইঞ্জিনই বিমানটির পক্ষে উপযোগী।

সেই সময়ে বাজারে যেসব ইঞ্জিন পাওয়া যেত, সেগুলো বিমানের পক্ষে নিতান্তই অনুপযুক্ত। কাজেই বাধ্য হয়ে নিজেরাই বসে গেলেন বিমানের উপযুক্ত ইঞ্জিন তৈরি করতে।

কয়েক মাসের নিরলস চেষ্টায় তৈরি হল তিন পাউন্ড ওজনের এক অশ্বশক্তি সম্পন্ন। ইঞ্জিন।

তারপর উইলবার ও অরভিল যেদিন কেরোলিনা প্রদেশের কিটি হক শহরের এক মাঠে তাদের উদ্ভাবিত পরীক্ষামূলক বিমানটি নিয়ে উপিস্থত হলেন, সেই দিনটি ছিল ১৯৩০ খ্রি: ১৭ ই ডিসেম্বর।

আগেই শহরময় রাষ্ট্র হয়ে গিয়েছিল মানুষ বিমানে চেপে পাখির মত আকাশে উড়ে বেড়াবে। কথাটা কেউ বিশ্বাস করল, কেউ করল না। তবু কৌতূহলী কয়েকজন মানুষ হাজির হল মাঠে।

তখনো এরোপ্লেন নামটি উদ্ভাবিত হয়নি। রাইট ভাইরা তাদের উড়ন্ত যানের নাম দিয়েছিলেন রাইট ফ্লাইয়ার।

ইঞ্জিন যুক্ত করে দুই ভাই মিলে বিমানটিতে উড়বার জন্য প্রস্তুত করে নিলেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল বিমানে দু’জনের তো চড়বার ব্যবস্থা নেই। একজনকেই উড়তে হবে। দুজনে মিলেই বিমানটি নির্মাণ করলেও প্রথম আকাশে ওড়ার দুর্লভ সম্মান নিতে হবে একজনকেই।

কে প্রথম বিমান চালাবে শেষ পর্যন্ত টস করে তা ঠিক করা হল। টসে জিতে অরভিল বিমানে গিয়ে উঠলেন। উইলবার রইলেন নিচে। তাঁদের আবিষ্কারের সাফল্য দেখবার জন্য সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাত্র জনা পাঁচেক মানুষ। সেদিন কি তারা ভাবতে পারছিলেন কী যুগান্তকারী ঘটনা তারা প্রত্যক্ষ করবার সুযোগ পেয়েছেন?

বিমানে চেপে নিজের জায়গায় বসে অরভিল প্রপেলার চালু করলেন। দু’পাশ থেকে দুটি দড়ি নিচে বাঁধা ছিল। উইলবার এবারে সেগুলো খুলে দিলেন। তারপর প্রাণপন শক্তিতে বিমানটিকে ঠেলতে আরম্ভ করলেন।

কিছুদূর গিয়েই শূন্যে লাফিয়ে উঠে আকাশে উড়ে চলল মানুষের হাতে তৈরি আকাশান। কিছুদূর মসৃণভাবে এগিয়ে গিয়ে পাক খেয়ে ধীরে ধীরে মাটিতে নেমে এল।

সেদিন রাইট ভাইয়ের তৈরি বিমান প্রথম দফায় বারো সেকেন্ড আকাশে ভেসে ছিল।

মানুষের ইতিহাসে আকাশ জয়ের নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল ওই বারো সেকেণ্ড সময় নিয়ে। এ ছিল গতির যুগের শুভ সূচনা।

অরভিল নিরাপদে অবতরণ কররে আকাশে উড়লেন উইলবার। তিনি সবশুদ্ধ আকাশে ভেসে থাকলেন উনষাট সেকেন্ড, অতিক্রম করলেন ৮২০ ফুট দূরত্ব।

বাতাসের বেগ বাড়ছিল বলে সেদিন আর আকাশে ওড়া সম্ভব হয়নি।

ঐতিহাসিক ঘটাটি এমনভাবে ঘটল যে পৃথিবীর মানুষ তার কোন সংবাদই জানতে পারল না। কেবল কিট হক শহরে রটে গেল, দুজন মানুষ যাদু মন্ত্র বলে পাখির মত আকাশে উড়েছে।

সাফল্যের আনন্দের উত্তেজনা কাটিয়ে উঠতে দিন কতক লাগল। তারপর দুভাই মিলে কিছুদিনের চেষ্টাতেই আগের চাইতে অনেক বড় আর শক্তিশালী বিমান তৈরি করে ফেললেন।

এবারে তাঁরা স্থির করলেন, তাঁদের সাফল্যের কথা সমস্ত মানুষকে জানাতে হবে। এই উদ্দেশ্যে তারা আমেরিকার পত্রিকাগুলোকে আমন্ত্রণ জানালেন তাদের আকাশে ওড়ার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করবার জন্য।

মানুষ পাখির মত আকাশে উড়বে অধিকাংশ পত্রিকার লোকই বিশ্বাস করতে পারল না। তবুও কৌতূহল চরিতার্থ করবার জন্য পত্রিকার সাংবাদিকরা নির্দিষ্ট দিনে এসে উপস্থিত হলেন।

কিন্তু সেদিন সকাল থেকেই ছিল ঝড়ো বাতাস। এছাড়া নুতন ইঞ্জিনটাও ঠিকভাবে কাজ করছিল না। দুর্ভাগ্যের ফেরে রাইট ভাইদের তাদের পরিকল্পনা বাতিল করতে হল।

রাইট ভাইদের সমস্ত প্রচারই মিথ্যা এই ধারণা নিয়ে সাংবাদিকদের সকলেই ফিরে গেলেন।

বিপর্যয়টা ছিল আকস্মিক। তাই প্রথমে অপ্রস্তুত হলেও কাটিয়ে উঠতেও সময় লাগল না। রাইট ভাইরা নতুন উদ্যমে আবার কাজে নেমে পড়লেন।

ইঞ্জিনের গোলমাল সারাই করে নিজেরাই এবারে আকাশে ওড়া অভ্যাস করতে লাগলেন। প্রচারের কথা মাথায়ও আনলেন না তারা। সকলের অগোচরেই দুভাই মিলে ধীরে ধীরে আকাশে ওড়ার সময় বাড়াতে লাগলেন। কয়েকদিনের মধ্যেই এক মাইলের বেশি দূরত্ব বিমান নিয়ে অতিক্রম করে গেলেন তাঁরা।

বিমান নিয়ে আকাশে ওড়ার গবেষণার কাজটি রীতিমত ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। এই কাজ করতে গিয়ে দুই ভাই এতদিনে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ফলে বাধ্য হয়েই উড়াউড়ির কাজ কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখতে হল।

অর্থোপার্জন দরকার। দুইভাই মিলে ব্যবসায়ের কাজে নেমে পড়লেন।

সময় খুব বেশি লাগল না বাজারের ধার দেনা পরিশোধ করতে। কিছু অর্থ সঞ্চয়ও হল। দুভাই মিলে আবার ফিরে এলেন নিজেদের আগের কাজে।

সেই সময় ইউরোপের কয়েকজন বিজ্ঞানী উড়ন্ত যান নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তাই রাইট ভাইদের মনে আশঙ্কা ছিল, আবার কেউ না তাদের আগে তৈরি বিমান নিয়ে আকাশে উড়ে পৃথিবীকে চমকে দেয়। তাহলে তাদের সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়ে যাবে। বঞ্চিত হবেন আকাশযান তৈরির কৃতিত্বের গৌরবে।

অবশ্য তেমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটল না। রাইট ভাইরা তাঁদের আকাশে উড়া প্রত্যক্ষ করবার জন্য এবারে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিশিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানালেন।

নির্দিষ্ট দিনে সকলেই উপস্থিত হয়ে সবিস্ময়ে দেখলেন, নিজেদের তৈরি বিমানে রাইট ভাইরা একে একে পাখির মতই স্বচ্ছন্দে আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছেন।

যা ছিল এতদিন অবিশ্বাস্য অসম্ভব, এতদিনে তা সফল হল! মাটির মানুষের বিজয় অভিযান সম্প্রসারিত হল আকাশে। এই বিস্ময়কর সংবাদ বাতাসের মতই আমেরিকা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ল সমস্ত ইউরোপে। চর্তুদিকে পড়ে গেল জয়জয়কার। আসতে লাগল শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন।

এবারে রাইট ভাইরা পরিকল্পনা নিলেন আরো উন্নত ধরনের বিমান তৈরির। দেখা দিল অর্থের সমস্যা। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল সিন্ডিকেট। আমেরিকান সরকারের সঙ্গে তাদের চুক্তি স্বাক্ষরিত হল।

শর্ত অনুসারে অরভিল আমেরিকায় থেকে উন্নত ধরনের বিমান তৈরির কাজে মনোনিবেশ করলেন।

উইলবার গেলেন ফ্রান্সে। সেখানে বিমানে চেপে আকাশে ওড়ার কলাকৌশল দেখিয়ে চমৎকৃত করলেন সকলকে।

ফ্রান্সেই প্রথম উইলবার একজন সহযাত্রী নিয়ে আকাশে একঘণ্টা বিমান চালালেন। মানুষের আকাশ জয়ের ইতিহাসে সে-ও এক ঐতিহাসিক ঘটনা।

ফ্রান্সের এক বিখ্যাত কোম্পানি উইলবারের কাছ থেকে তাঁদের আবিষ্কৃত বিমানের পেটেন্ট কিনে নিলেন বিরাট অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে। এতদিনে বিমানের সুবাদে রাইট ভাইদের অর্থের সমস্যাও দূর হল।

অরভিল ছিলেন আমেরিকায়। একদিন একজন সামরিক অফিসারের সঙ্গে বিমানে আকাশে ঘুরে বেড়াবার সময় দুর্ভাগ্যক্রমে দুর্ঘটনায় পড়লেন তিনি। প্রপেলার ভেঙ্গে বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ল। সঙ্গী অফিসারটি দুর্ঘটনাস্থলেই মারা গেলেন। অরভিল আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেলেন। কিছুদিনের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেন।

ইতিমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ উপলব্ধি করতে পেরেছে আকাশযানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনের ব্যাপকতা। সকলেই ব্যস্ত হয়ে উঠল এরোপ্লেন কেনার জন্য। তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল দেশে দেশে পরিকল্পনা রচনা।

রাইট ভাইদের দীর্ঘ শ্ৰম অধ্যবসায় ও অনুশীলনের সাফল্যের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে এল গতির যুগ।

এই গতি ত্বরান্বিত করল সভ্যতার অগ্রগতিকে। বস্তুতঃ সামগ্রিকভাবে এই অগ্রগতি সম্ভব করে তুললেন রাইট ভাইরা দুজন।

অল্পসময়ের মধ্যেই দেশে তৈরি হল বিমান তৈরির কারখানা। নতুন নতুন বিমান তৈরি হতে লাগল পূর্ণোদ্যমে। দেশের উৎসাহী তরুণদের বিমান চালনার প্রশিক্ষণ দিতে লাগলেন অরভিল আর উইলবার।

১৯১২ খিঃ উইলবার মারা গেলেন। অরভিল বেঁচে ছিলেন আরও কয়েক বছর। বিমানের উন্নতি ও উৎপাদনের কাজেই তিনি আমৃত্যু নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছিলেন।

তথ্যসূত্রঃ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০ মনীষীর জীবনী – মাইকেল এইচ. হার্ট / সম্পাদনায় – রামশংকর দেবনাথ

শূন্য থেকে শীর্ষে কত পথ ঘুরে কেএফসি সফলতা, হতাশ না হয়ে লেগে থাকলে যে সফল হওয়া যায়, তার প্রমাণ কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন বা ...
06/01/2025

শূন্য থেকে শীর্ষে
কত পথ ঘুরে কেএফসি সফলতা,

হতাশ না হয়ে লেগে থাকলে যে সফল হওয়া যায়, তার প্রমাণ কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন বা কেএফসির প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল হারল্যান্ড ডেভিড স্যান্ডার্স। পৃথিবীখ্যাত একজন ব্যবসায়ী হওয়ার আগে স্যান্ডার্স কে ছিলেন? তিনি ছিলেন স্কুল থেকে ঝরে পড়া এক ছাত্র, একজন খেতমজুর, ট্রেনের ফায়ারম্যান, আইনজীবী, বিমা কোম্পানির সেলসম্যান, ডিঙি নৌকার উদ্যোক্তা, গাড়ির টায়ারবিক্রেতা, শখের ধাত্রীবিশারদ, একজন অসফল রাজনীতিক, ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী এবং সর্বশেষ একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী।
কর্নেল স্যান্ডার্সের জন্ম ১৮৯০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। যে বাড়িতে জন্মেছিলেন, সেখানে ঘর ছিল চারটি। আর বাড়িটা ছিল ইন্ডিয়ানার হেনরিভ্যালি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। উইলবার ডেভিড ও মার্গারেট অ্যানের তিন সন্তানের মধ্যে স্যান্ডার্স সবার বড়।
স্যান্ডার্সের বাবা ছিলেন অত্যন্ত স্নেহশীল এক মানুষ। এক দুর্ঘটনায় তাঁর বাবার পা ভেঙে যায়। পা ভাঙার আগ পর্যন্ত তিনি ৮০ একরের বিশাল এক খামারে কাজ করতেন। এরপর দুই বছর তিনি মাংসের দোকানে কাজ করেছেন। ১৮৯৫ সালের এক গ্রীষ্মের বিকেলে তিনি প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন এবং পরদিন মারা যান।
বাবা মারা যাওয়ার বেশ কয় বছর পর ১৯০২ সালে স্যান্ডার্সের মা আবার বিয়ে করেন এবং পরিবারসহ ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গ্রিনউডে চলে যান। সৎবাবার সঙ্গে স্যান্ডার্সের ছিল দা-কুমড়া সম্পর্ক। ১৯০৩ সালে স্যান্ডার্স স্কুল ছেড়ে দিয়ে পাশের এক খামারে কাজ নেন। এরপর তিনি ইন্ডিয়ানা পুলিশ বাহিনীর ঘোড়ার গাড়িতে রং করার চাকরি নেন। যখন তাঁর বয়স ১৪ বছর, তখন তিনি দক্ষিণ ইন্ডিয়ানার স্যাম উইলসনের খামারে যান এবং সেখানে খেতমজুর হিসেবে দুই বছর কাজ করেন। এরপর ১৯০৬ সালে মায়ের অনুমতি নিয়ে স্যান্ডার্স চলে যান তাঁর এক চাচার সঙ্গে দেখা করতে। চাচা থাকতেন ইন্ডিয়ানার অন্তর্গত নিউ আলবানিতে আর কাজ করতেন গাড়ি প্রস্তুতকারক এক কোম্পানিতে। এই চাচা স্যান্ডার্সকে তখন ওই প্রতিষ্ঠানে কন্ডাক্টরের চাকরি জুটিয়ে দেন।
এর বছর খানেক বাদে স্যান্ডার্স আবার চলে যান অ্যালবামার আরেক অঞ্চল সেফিল্ডে। সেখানেও তাঁর এক চাচা বাস করতেন। চাচার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ঘটে আরেক কাণ্ড। স্যান্ডার্সের আরেক ভাই সেখানে আগে থেকেই হাজির! ব্যাপার আর কিছুই নয়, সৎবাবার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতেই ভাইটি চলে এসেছে এই চাচার ডেরায়।
যাহোক, চাচা কাজ করতেন দক্ষিণ রেলরোডে। তিনি সেখানকার এক কামারশালায় স্যান্ডার্সকে ঢুকিয়ে দেন। স্যান্ডার্স কামারের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই স্যান্ডার্সের মন উড়ু উড়ু করতে শুরু করে। তিনি আবার পাড়ি জমান অ্যালবামার আরেক এলাকা জাসপারে। সেখানে কয়লাচালিত ট্রেনের ছাইয়ের ট্যাংক পরিষ্কার করার কাজে যোগ দেন তিনি। পরে কাজ পান ফায়ারম্যানের। তখন স্যান্ডার্সের বয়স মাত্র ১৬। তারপর কেটে যায় আরও দুই বছর। এর মধ্যে স্যান্ডার্স নর্থফোক ও ওয়েস্টার্ন রেলস্টেশনে দিনমজুরির কাজ জুটিয়ে নেন।
কিন্তু স্বভাবজাত উড়ু উড়ু মনের কারণে স্যান্ডার্স এখানেও বেশি দিন টিকতে পারেন না। তিনি আবার পাড়ি দেন ইলিনয় সেন্ট্রাল রেলরোডে। সেখানে আবার ফায়ারম্যানের চাকরি নেন। একই সময় স্যান্ডার্স আরও একটি কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি এক্সটেনশন ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়তে শুরু করেন।
কিন্তু উত্থান-পতন যাঁর বিধানলিপি, তাঁর জীবন নিস্তরঙ্গভাবে চলবে, তা হয় কী করে? তুচ্ছ এক বিষয় নিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধিয়ে চাকরি হারান স্যান্ডার্স। তবে আইন পড়াটা চালিয়ে যান। আইনের কোর্স শেষ হলে স্যান্ডার্স লিটল রক নামের এক আইন প্রতিষ্ঠানে তিন বছর প্র্যাকটিস করেন। এ সময় তিনি বেশ টাকাপয়সা উপার্জন করেন।
তাতে অবশ্য খুব একটা রকমফের হয় না! অর্থকড়ির শিকলে আটকা পড়ে না স্যান্ডার্সের উড়ু উড়ু মন। তিনি আইন পেশাকে বিদায় জানিয়ে ফিরে আসেন মায়ের কাছে। ১৯১৬ সালের দিকে আবার চলে যান জেফারসন ভ্যালিতে। সেখানে এক জীবনবিমা কোম্পানিতে চাকরি নেন। কিছুদিন পর ‘অবাধ্যতার’ অভিযোগে সেই চাকরিও হারান। তাতে অবশ্য কোনো সমস্যাতেই পড়তে হয় না স্যান্ডার্সকে। নিউজার্সিতে গিয়ে দিব্যি সেলসম্যানের চাকরি জুটিয়ে নেন।
১৯২০ সালের দিকে স্যান্ডার্স একটি ডিঙি নৌকার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানি থেকে তিনি ওহিও নদীতে চলমান ডিঙি নৌকা সরবরাহ করতেন। এর পাশাপাশি ১৯২২ সালে তিনি ইন্ডিয়ানার চেম্বারস অব কমার্সে চাকরি নেন। কিন্তু এক বছরের মাথায় চাকরিটা ছেড়ে দেন। ডিঙি নৌকার কোম্পানিটিও বিক্রি করে দেন ২২ হাজার ডলারে।
স্যান্ডার্স এবার পাড়ি জমান কেন্টাকি রাজ্যের উইনচেস্টারে। সেখানে এক টায়ার কোম্পানিতে সেলসম্যানের চাকরি নেন। কিন্তু ১৯২৪ সালে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় স্যান্ডার্সের সঙ্গে পরিচয় ঘটে কেন্টাকির স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে। ম্যানেজার ভদ্রলোক তাঁকে নিকোলাসভ্যালির এক সার্ভিস স্টেশনে চাকরি দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য! ১৯৩০ সালে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়।
অথই সাগরে পড়েন স্যান্ডার্স। এ সময় তিনি ভোক্তাদের খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন। তখন পর্যন্ত তাঁর কোনো রেস্তোরাঁ ছিল না। তিনি নিজ বাড়িতেই এ কাজ শুরু করেন। দ্রুত তাঁর খাবারের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
১৯৩৯ সালে নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশেভ্যালিতে তিনি একটি মোটেল নেন। ওই বছরের নভেম্বরে মোটেলটি এক অগ্নিকাণ্ডে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এবার স্যান্ডার্স মোটেলটিকে ১৪০ আসনের এক রেস্টুরেন্টে পরিণত করেন।
১৯৫২ সালে স্যান্ডার্স সিদ্ধান্ত নেন ‘চিকেন ফ্রাই’ ধারণাটাকে তিনি তাঁর আয়ের উৎসে পরিণত করবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি উপযুক্ত রেস্তোরাঁ খোঁজা শুরু করেন। শেষমেশ স্যান্ডার্স ও তাঁর স্ত্রী মিলে সেলবাইভ্যালিতে একটি রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। তাঁদের রেস্তোরাঁ ব্যবসাটা ব্যাপকভাবে সফল হয়। কে না জানে কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন-কেএফসি এখন বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ।
১৯৫৫ সালে স্যান্ডার্স কেএফসির ব্যাবসা সম্প্রসারণ শুরু করেন এবং ১০ বছরের মধ্যে কানাডা, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেএফসির ৬০০টি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি এ রেস্তোরাঁকে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এক আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন।
১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯০ বছর বয়সে এই বিশ্বখ্যাত ব্যবসায়ী মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: কর্নেল স্যান্ডার্সের ওয়েবসাইট ও

ইলন মাস্কের সফলতার গল্প, একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত ইলন মাস্ক। বেশ কয়েক বছর ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন...
06/01/2025

ইলন মাস্কের সফলতার গল্প,

একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত ইলন মাস্ক। বেশ কয়েক বছর ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন। তার ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব বিস্মিত করার মতো। স্পেসএক্স প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন ইলন মাস্ক। ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে তিনি এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যে, এখন বিল গেটস, স্টিভ জবসসহ অন্যদের সঙ্গে তাকে তুলনা করা হয়। ইলন মাস্কের এই পথচলার গল্প বলতে চাই।

ইলন মাস্ক ১৯৭১ সালের ২৮ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার বাবা একজন সফল প্রকৌশলী ছিলেন। তার মা ছিলেন মডেল ও পুষ্টিবিদ। তার ভাই কিম্বল মাস্ক একজন পরিবেশবাদী ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট। বোন টোসকা মাস্ক পুরষ্কার বিজয়ী পরিচালক ও প্রযোজক।

ইলন মাস্ক স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় এক বছর আগে স্কুলজীবন শুরু করেন। তার স্কুলজীবন শুরু হয় ওয়াটারক্লুফ হাউস প্রিপারেটরিতে। সেখান থেকে পরে প্রিটোরিয়া বয়েজ হাইস্কুলে যান। ইলন মাস্কের বয়স যখন ১০ বছর তখন তার বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তিনি অনেক মেধাবী হলেও স্কুলে তাকে বেশ কঠিন সময় পার করতে হয়েছিল। তার আফ্রিকান সংস্কৃতির খুব কম বন্ধু আছে। বড় হয়েও তিনি অনেক প্রতিকূলতার মুখে পড়েন। তবে তিনি মেনে নিয়েছিলেন, জীবনে বড় হতে হলে প্রতিকূলতা আসবেই।

হাইস্কুল জীবন শেষে ইলন মাস্ক পদার্থবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে আগ্রহী হন। তিনি কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে দুই বছর পড়াশোনা করেন। এই দুই বছর পর পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান। সেখানে তিনি দুটি মেজর বিষয়ে ডিগ্রি নেন। ইলন মাস্ক পেনসিলভেনিয়ার ওয়ার্টন স্কুল থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি অর্থনীতিতে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। এই দুটি ডিগ্রি ইলনকে তার ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করেছিল। এগুলো তাকে কয়েকটি ব্যবসায়িক ধারণা ও ধারণাগুলোর সাফল্য পরিমাপে সহায়তা করেছিল।

মাস্কের বয়স যখন ২৪ বছর তখন তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি করতে ক্যালিফোর্নিয়া চলে যান। সেখানে বেশ আগ্রহ নিয়েই পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু করেছিলেন। কিন্তু, মাত্র ২ দিনের মধ্যে বাদ দেন। মূলত সিলিকন ভ্যালিতে ইন্টারনেটের উত্থানের কারণে তিনি পিএইচডি ছাড়েন। তারপর উদ্যোক্তা হিসেবে ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত আইডিয়ার বিকাশ করতে শুরু করেন।

ইলন মাস্ক বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যেগুলো থেকে তিনি সফল হন।
জিপ২।

১৯৯৫ সালে ইলন মাস্ক ও তার ছোট ভাই কিম্বল মাস্ক জিপ২ নামে একটি কোম্পানি শুরু করেন। জিপ২ সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের কাছে লাইসেন্সযুক্ত সফটওয়্যার সরবরাহ করত। ১৯৯৯ সালে কমপ্যাক কম্পিউটার করপোরেশনের কাছে ৩০০ মিলিয়ন ডলারে জিপ২ বিক্রি করে দেন মাস্ক। এই বিক্রি মাস্কের জন্য নতুন সম্ভাবনা খুলে দিয়েছিল এবং তিনি এক্স.কম শুরু করেন।

এক্স.কম

হ্যারিস ফ্রিকার, এড হো এবং ক্রিস্টোফার পেইনের সঙ্গে ইলন মাস্ক এক্স.কম প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি অনলাইন ব্যাংক ছিল। এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক মডেলটি তার সময়ের জন্য নতুন উদ্ভাবন ছিল। যা পরে কনফিনিটি ইনকরপোরেটেডের সঙ্গে একীভূত হয়। এই একীভূত হওয়ার মাধ্যমে আরও একটি দুর্দান্ত প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছিল পেপাল।

পেপাল

এক্স.কম কনফিনিটি ইনকরপোটেড এক হয়ে পেপালের জন্ম হয়। পেপাল অনলাইন পেমেন্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি। পেপাল তার সবচেয়ে সফল কোম্পানির একটি হতে যাচ্ছিল। কিন্তু, কনফিনিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা পিটার থিয়েলসহ মাস্ক ও অংশীদাররা ২০০২ সালে এটিকে ১.৫ বিলিয়ন স্টক ডিলের জন্য ই-বেতে বিক্রি করে দেন। পেপালকে একপর্যায়ে ১৯৯৯ সালের 'সবচেয়ে বাজে ব্যবসায়িক আইডিয়া' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। ২০০০ সালে হানিমুনে থাকাকালীন মাস্ককে সিইও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

টেসলা মোটরস

পেপাল থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ইলন মাস্ক ভবিষ্যতের বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকে দৃষ্টি দেন। তিনি টেসলার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন এবং ২০০৩ সালে কোম্পানিটি চালু করেন। টেসলা মোটরসের মূল লক্ষ্য ছিল অটোমোটিভ শিল্পকে জ্বালানি ব্যবহার থেকে বের করে সবুজ শক্তিতে পরিণত করা। অবশেষে টেসলার প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি চালু হয়। ২০০৮ সাল থেকে ইলন মাস্ক টেসলার সিইও। টেসলার মডেল-৩ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি। বিশ্বব্যাপী প্রায় এক মিলিয়নেরও বেশি বিক্রি হয়েছে।

স্পেসএক্স

ইলস মাস্কের আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। এই প্রতিষ্ঠানের রকেট ডিজাইনের জন্য তিনি মার্কিন বিমান বাহিনী এবং নাসার সঙ্গে বড় চুক্তি করেছিলেন। তিনি সামরিক মিশন পরিচালনার প্রকল্পও গ্রহণ করেন। ২০২৫ সালের মধ্যে মাস্ক নাসার সহায়তায় মহাকাশে একজন নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন। গত ২০ বছরে স্পেসএক্স রকেট উৎক্ষেপণের ব্যর্থতা ও স্টারশিপ বিস্ফোরণের ঘটনা মোকাবিলা করেছে। স্পেসএক্সের নাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেটের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছে।

সোলারসিটি

২০০৬ সালে মাস্কের চাচাতো ভাইয়েরা মিলে প্রতিষ্ঠা করেন সোলারসিটি। এই প্রতিষ্ঠানে মাস্ক পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন, তিনি ছিলেন তাদের প্রধান আর্থিক সহায়তাকারী। এটি একটি সৌর শক্তি কোম্পানি, ২০১০ দশকের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আবাসিক সোলার কোম্পানি হয়ে ওঠে। কোম্পানিটি সৌর শক্তি সিস্টেম চালু করে আবাসিক ব্যবহারকারীদের ইজারা দিয়েছিল। মাস্ক টেসলার মাধ্যমে ২০১৬ সালে সোলারসিটিকে ২.৬ বিলিয়ন ডলারের স্টকের বিনিময়ে কিনে নেন। পরে টেসলা এনার্জি নামে তার কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করেন।

টুইটার

২০২২ সালে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার উদ্যোগ নেন ইলন মাস্ক। পরে দীর্ঘ ছয় মাস নানান নাটকীয়তার শেষে টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেন ইলন মাস্ক।

এছাড়াও মাস্ক ২০১৫ সালে অলাভজনক সংস্থা ওপেনএআই প্রতিষ্ঠা করেন, ২০১৬ সালে তিনি নিউরালিংক এবং বোরিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠান করেন।

যাই হোক, ইলন মাস্ক একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। উদ্যোক্তাদের জন্য তার পরামর্শ, সফলতার কোনো শর্টকার্ট রাস্তা নেই। সফল হতে পরিশ্রম করতে হবে এবং নিজের লক্ষ্য অটুট থাকতে হবে।


সূত্র: টাইমস, বিজনেস ইনসাইডার, সিইও টুডে

নারী তুমি হীনা জগৎ সংসারে নর যে বড় অসহায় জন্মের লগ্ন থেকে বেঁচে আছি তোমারি করুণায়। জননী হইয়া গড়েছো জীবন,রমনী হইয়া সাজাও ...
06/01/2025

নারী তুমি হীনা জগৎ সংসারে নর যে বড় অসহায়
জন্মের লগ্ন থেকে বেঁচে আছি তোমারি করুণায়।
জননী হইয়া গড়েছো জীবন,
রমনী হইয়া সাজাও দৃষ্টি চরাচরে,
হৃদয় অগোচরে জানি না তুমি যে কি চাও।

📷 Abdullah Vlog 21

আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবংসুদকে হারাম করেছেন।(সূরা-বাকারা: ২৭৫)
01/01/2025

আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং
সুদকে হারাম করেছেন।

(সূরা-বাকারা: ২৭৫)

24/12/2024

আমরা যারা নতুন পুরাতন ইউজার আছি একে অন্যকে সহযোগিতা করি এবং একসাথে সবাই এগিয়ে যাই অনেক দূরে ।

18/12/2024

ফেসবুকের সকল ভাই-বোনদের কে বলছি আপনারা ভালো কনটেন্ট নিয়ে কাজ করেন অবশ্যই আপনাদের কে সাপোর্ট করবো।
ইনশাআল্লাহ

18/12/2024

কিছু কাজের দ্বারা পৃথিবীতে নিজের নাম রেখে যেতে চাই এবং সেটাই হবে আমার পৃথিবীতে আসার স্বার্থকতা ।

ভালো হোক বা মন্দ হোক বছরেরশেষ দিনটাতেও আলহামদুলিল্লাহ।নিজের প্রতি ছাড়া অন্য কারো প্রতি কখনোই কোন Expectation নেই, দায়বদ...
16/12/2024

ভালো হোক বা মন্দ হোক বছরের
শেষ দিনটাতেও আলহামদুলিল্লাহ।
নিজের প্রতি ছাড়া অন্য কারো প্রতি কখনোই কোন Expectation নেই, দায়বদ্ধতা শুধু নিজের প্রতি। 😔
ভালো থাকতে চাই সবাইকে ভালো রাখতে চাই ।
Muhammad Atikur Rahman

শেষ বিকেলের আলোয় কিছু কুড়িয়ে পাওয়া ছবিটুকরো টুকরো মন খারাপের কোলাজ জলছবি ।📷 আমি নিজেই Muhammad Atikur Rahman
13/12/2024

শেষ বিকেলের আলোয় কিছু কুড়িয়ে পাওয়া ছবি
টুকরো টুকরো মন খারাপের কোলাজ জলছবি ।

📷 আমি নিজেই Muhammad Atikur Rahman

Address

Habiganj Sadar
3300

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Udyokta Atik Hasan posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category