20/01/2024
★ #কে_তোর_আমার_চেয়ে_আপন (সিজন ৩)
★ #পর্ব : ১৬ (শেষ পর্ব)
★ #কাহিনী_ও_লেখনীতে : AH Rafi (হোসাইন)
রিতু : সত্যি আজ তুমি আমাকে বিয়ে করবে ??
রাফি : হুম !! এতোবছর পর তোমাকে যখন নিজের ভালোবাসার কথা বলতে পেরেছি, তাহলে আজ কেন তোমাকে বিয়ে করবো না ??
রিতু : আচ্ছা, ঠিক আছে !!
রাফি : হুম ! " কিন্তু এখানে নয় !! বরং রংপুরে গিয়ে আমরা বিয়ে হবে আমাদের !!
রিতু : কেন ??
রাফি : যাকে পাওয়ার জন্য সবার থেকে এতোটা বছর দূরে থাকলাম, আজ তাকে যখন বিয়ে করবো, তা অবশ্যই সবার সামনেই বিয়ে করবো !!
রিতু : ঠিক আছে, চলো তাহলে !!
★ এই বলে রাফি আর রিতু আমার সেই রংপুরে যাওয়ার জন্য রওনা দেয় !! আর এদিকে মিমের কথা রাফি একেবারেই ভুলে গিয়েছে !!
★★★ এদিকে মিমও রাফির কথা অনেক মনে পড়ছে, কারণ রাফিকে সে অনেক ভালোবাসে, আর তার এখন কোনো খোঁজই নেই !! রিদি ও নাইম চলে যাওয়ার এতো সময় হলো, তবুও রাফি আর সেখানে আসে না !!
তখন মিমের কাছে সেই ডাক্তার আসলো, আর বলল,,
ডাক্তার : ম্যাম, আপনার কি এখনো মন খারাপ ??
মিম : রাফি কি এখানে আর এসেছিলো ??
ডাক্তার : কালকে তো এসেছিলো, কিন্তু তার পর তো আর দেখেনি !!
মিম : তাহলে সে এখনো কেন, আসলো না !! ওর কিছু হলো না তো ??
ডাক্তার : তা তো, বলতে পারবো না !! তবে আমি কালকে শহরে দেখছিলাম যে .......
মিম : কি দেখছিলেন ??
ডাক্তার : ঠিক বলতে পারবো না৷!! তবে মনে হয় একটা মেয়ের সাথে দেখেছিলাম তাকে !!
মিম : কি বলছেন এসব ?? রাফি অন্য মেয়ের সাথে কি করে দেখবেন ?? আপনি নিশ্চয়ই ভুল কিছু দেখেছেন ??
ডাক্তার : হতে পারে !! তবে আমার মনে হয় সেটা রাফিই ছিলো !!
মিম : আপনি ভুলই দেখেছেন !! সে এমন ছেলে না !!
ডাক্তার : আপনি কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম !! আমি জানি আপনি মানুষ হিসেবে খুবই ভালো !! কিন্তু যেই মানুষটার একদিন হাত থেকেও হাত ছিল না , তাকে আপনি নিজ হাতে খাবার খাওয়াই দিলেন, আবার যতটুকু শুনেছি, আপনাদের বাড়িতেও ছিল !! তবুও কেন আপনি তাকে এতো ভালোবাসেন ??
মিম : সে আমার মনে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছে !! সে যেমনি হোক না কেন, তাকে সারাজীবন আমি ভালোবেসে যাবো !!
ডাক্তার : সে যদি আপনাকে না ভালোবাসে তাহলে কি করবেন ??
মিম : সে আমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসবে না, কারণ সে কখনো আমাকে ভুলতে পারবে না !!
ডাক্তার : আচ্ছা, তাহলে তাই হোক !! দোয়া করি আপনি যেন তাকে সারাজীবনের জন্য আপন করে পান !!
★ এরপর ডাক্তার চলে যাওয়ার পর মিম তারপরও অনেক সময় অপেক্ষা করার পর রাফি আর ফিরলো না, তাহলে মিম তাকে কোথায় খুঁজবে ?? এতো বড় শহরে সে কিভাবে রাফিকে খুজবে ??
★★★ মিম হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আবার তার বাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য বের হয় !! ঠিক তখনি মাসুদ তার কাছে পিস্তল তাক করে মিম এর উপর, কারণ মাসুদ তখন মনে করেছিল, মিম হয় তো বা তার নামে থানায় পুলিশের কাছে মামলা করতে যাবে !! আর মাসুদ তখন জেলে যাবে, কিন্তু সে মিমকে এমন কিছু করতে দিবে না !!
★★★ যখনি মিম বাইরে আসে , ঠিক সেই সময় মাসুদ মিমের উপর গুলি করে, মিমের বুকে এসে সেই গুলি লাগে !! , আর সাথে সাথে মিম সেখানে পরে যায় !! গুলির শব্দ পাওয়ার পর সবাই সেখানে ছুটে আসে !! আর মিমকে গুলিতে জখম হতে দেখে !!
★ তখনি কিছু লোক দেখতে পারে যে, মাসুদ দূর থেকে পালাচ্ছে , আর তার হাতে পিস্তল !! আর মাসুদও তা বুঝতে পেরে সেখান থেকে দৌড় দিয়ে পালায় !! কিন্তু সবাই মিলে পরে তাকে ধরে ফেলে ! আর সেখানে পুলিশকে ফোন করে, আর মাসুদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় !!
----- এদিকে মিমকে গুলি করার পর মিমের অনেক রক্তপাত শুরু হয় !! " হাসপাতাল বেশি দূরে না হাওয়ায় তাকে সবাই সাথে সাথে সেখানে নিয়ে যায় !!
---- হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেই ডাক্তার মিমের এমন অবস্থা দেখে বলে উঠে,,
ডাক্তার : এনার এই অবস্থা কি করে হলো?? ইনি তো এখানকার ডাক্তার !!
*---- একটা লোক তাকে গুলি করে , তাকে আমরা ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেই !! কিন্তু ইনি যে এখানকার ডাক্তার !! তাড়াতাড়ি এনার কিছু করেন, অনেক রক্তপাত তার হচ্ছে !!
★ তারপর মিমকে অপারেশন থিয়াটরে নিয়ে যাওয়া হয়, তার গুলি বের করার জন্য !! আর তার সাথে মিমের বাবা-মাকেও ফোন করে সব জানানো হয় !! তখন সাথে সাথে তারাও সেখানে চলে আসে !!
★★★ অন্যদিকে রোদেলা আর কোনো ভাবেই চুপ থাকতে পারলো না ! " সে রাফির বাবা-মার কাছে গিয়ে সরাসরি বলে উঠে,
রোদেলা : আপনাদের সাথে আমার কিছু কথা বলার ছিল !!
*---- হ্যা, বলো, কি বলবে ??
রোদেলা : আমি যা জিজ্ঞেস করবো, আশা করি আপনারা সব আমাকে নিজের মেয়ে মনে করে সত্যি বলবেন !! রাফি কে ??
----- এ কথা শুনে রাফি বাবা-মা দুজনেই অবাক হয়, কারণ রাফির ব্যাপারে রোদেলা কিছু জানতে পারলো কিনা ??
---- হঠাৎ তোমার এ ধরনের কথা কেন বলছো ??
রোদেলা : কারণ আমি এখানে এসে অনেক কিছুই তার সম্পর্কে জেনেছি !! সে আপনাদের ছেলে ছিল না ??
----- তুমি যে কি কি বলো ?? রিদয় হচ্ছে আমাদের একমাত্র ছেলে ?? আর তুমি কোন রাফির কথা বলছো ??
রোদেলা : আমি সেই রাফির কথা বলছি, যার সাথে আওনাদের হত ৮ বছর ধরে কোনো সম্পর্ক নেই !!
----- তুমি এতোকিছু কোথা থেকে জানলে ??
রোদেলা : আগে, আমাকে বলুন, রাফি কে ?? আর আপনারা কেন তাকে নিজের ছেলে বলে অস্বীকার করেছেন ??
----- তোমার কাছে যে কি করে বলি, তবুও সব যেহেতু জানতে পেরেছো, তাহলে শুনো !! আজ থেকে ৮ বছর আগে ও তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল ! " আর পরে ওরা আমাদের ফোন করে বলে যে , রাফি নাকি ওর মামাতো বোনের সাথে খারাপ কাজ করেছে !! কি বলতে চাইছি, তুমি তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো ?? আর তাই পরে পুলিশ তাকে নিয়ে যায় !! তাহলে তুমিই বলো, কি করে আমি সেই কুলঙ্গার সন্তানের পরিচয় তোমার সামনে দিই !!
* এই কথা গুলো শুনে রোদেলা সত্যিই ভীষণ অবাক হয় ! " আর বলে উঠে,
রোদেলা : তাই বলে আপনারা সেই কথা বিশ্বাসও করেন ??
----- তাছাড়া তো আর আমাদের কাছে কোন উপায় ছিল না !! আর ওরা এমনিতেই অনেক বড়লোক ছিল, তাই সবকিছু মেনে নিয়ে নিজের ছেলেকে সেদিমই মৃত বলেই মনকে বুঝ দিয়েছে !! আজ তুমি আবারও নতুন করে সেই 'রাফি' নামটা বললে !!
★★★ তারপর রোদেলা আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেল ! " সে রাফির ব্যাপারে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিল, কিন্তু এখন এসব জানার পর পুরো নিস্তব্ধ হয়ে যায় !! কারণ যার একসময় তার দেবর হওয়ার কথা ছিল, সে এমন একটা মানুষ ?? পরে রোদেলা আর এ নিয়ে কিছু ভাবলো না, কারণ সে তার প্রশ্নের জবাব পেয়ে গিয়েছে !!
★★ এদিকে মিমের অপারেশন হওয়ার ৬ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে !! আর তার জ্ঞান ফিরেই সে " রাফি " বলে জোরে চিৎকার করতে থাকে ! "
মিমের পাশে মিমের বাবা-মা ও সবাই পাশে থাকায় সবাই অবাক হয়ে যায় !!
মিমের বাবা : তোর কি হয়েছে মা ?? এমন করে উত্তেজিত হলে আরও অসুস্থ হয়ে যাবি !!
মিম : বাবা, রাফি কোথায় ?? আমি রাফিকে ছাড়া বাঁচবো না !!
মিমের বাবা : রাফি এখন কোথায়, তা কি করে বলবো ?? তুই এমন করে পাগলামি করিস না !!
মিম : রাফি আমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসে না !! ও শুধু আমাকেই ভালোবাসে !!
মিমের বাবা : আমি জানি তুই রাফিকে অনেক ভালোবাসিস !! কিন্তু রাফি এখানে নেই, সে কোথায় তাও জানি না !! আমাকে তুই মাফ করে দিস, আমি কখনোই বুঝতে পারিনি মাসুদ এতোটা খারাপ, যে কিনা তোকে মেরে ফেলার চেষ্টা করতেও একবার ভাবলো না !!
মিম : মাসুদ আমাকে মেরে ফেলে মানে ??
মিমের মা : মাসুদ তোর উপর গুলি চালিয়েছে ??
মিম : কিন্তু রাফি কোথায়৷?? আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না বাবা ??
ডাক্তার : ম্যাম, আপনার শরীরের অবস্থা বেশি ভালো না, আপনি যদি এমন করতে থাকেন, তাহলে আরও অসুস্থ হয়ে যাবেন !!
মিম : না, আগে রাফিকে আমার কাছে নিয়ে আসেন, ও আমাকে ছেড়ে যেতে পারে না ! " তোমরা যদি আমাকে রাফির কাছে যেতে না দাও, তাহলে কিন্তু আমি নিজেকে শেষ করে দিবো ! "
*** এই বলে, মিম তার পাশে থাকা ✂ কাঁচি দেখতে পারে, আর তা দিয়ে যখনি নিজেকে মারতে যাবে, তখনি সবাই মিলে মিমকে আঁটকায়, আর তাকে ঘুমের ইনজেকশন দেয়, আর এতে মিম ঘুমিয়ে পড়ে !!
★ তখন থেকে মিমের বাবা-মা বুঝতে পারে, তাদের মেয়ে রাফির জন্য এক প্রকার পাগল হয়ে গেছে !! কিন্তু তারাও বা কি করে জানবে রাফি এখন কোথায় ?? (Cut........ Cut)
★★★ এদিকে রাফি রিতুকে নিয়ে আবারও ৫ মাস পরে রংপুরে ফিরে আসে, তবে আজ তার কাছে তা মনে হচ্ছে না, কারণ আজ তার মনে হচ্ছে, আবারও সে ৮ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে !! যেখানে গত ৮ বছরে তাকে কেউ দেখতে পর্যন্ত আসেনি !৷ অথচ যার জন্য তার আপনজন সবাই তার থেকে দূরে ছিল, আজ তাকে নিয়ে আবারও সেই চির পরিচিত জায়গায় ফিরে আসে !!
(Cut ............ Cut)
★ রিতুসহ রাফি তাদের বাড়িতে আসলে সেই বাড়ির দারোয়ান বলে উঠে,
দারোয়ান : আপনাকে তো অনেক চেনা চেনা লাগছে ?? আপনি মনে হয় ৪-৫ মাস আগে আসছিলেন ??
রাফি : হ্যা , আমিই সে !! এখন কি ঢুকতে দিবেন ??
দারোয়ান : তা আগের বার না বলছিলেন, ভুল ঠিকানায় আসছিলেন ?? তাহলে আবার যে আসলেন ??
রাফি : হুম, আবারও আসলাম !! তা তোমার স্যারকে একটু ডাকো !!
★ ★ এবার দারোয়ানও একটু অবাক হয়, কারণ রাফি আবার ৫ মাস এসেছে এখানে ?? তাই সে তাড়াতাড়ি করে তার বাবা-মাকে ডাকতে আসে !!
দারোয়ান : স্যার, আপনার সাথে কে যেনো দেখা করতে এসেছে ??
রাফির বাবা : কে আবার এসময় আসলো ??
দারোয়ান : তা জানি না, তবে সে ৪-৫ মাস আগেও এখানে এসেছিলো !! তখন আপনারা হজে গিয়েছিলেন !!
রাফির বাবা : আচ্ছা, তাহলে চলো, গিয়ে দেখি কে আসলো !!
_** রোদেলাও দারোয়ানের কথা শুনে কৌতুহলবশত গিয়ে দেখে, এতো রাফি !!
রোদেলা : রাফি, আপনি এখানে ??
---- তখনি রাফির বাবা রিতুকে রাফির সাথে দেখতে পেয়ে বলে উঠে,
রাফির বাবা : রিতু তুমি এখানে ?? আর তোমার সাথে এই ছেলে কে ??
--** রিতু কিছু বলার আগেই রাফি গিয়ে ডার বাবাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
রাফি : আমি রাফি বাবা, যাকে তুমি ৮ বছর চগে ত্যায্য করে করেছিলে !!
_***** এসব দেখে রোদেলা সহ সবাই অবাক হয়ে যায় !! আর রাফির বাবাও বুঝতে পারছিল না, সে এখন কি করবে ??
রাফির বাবা : তুমি এসব কি বলছো, তুমি রাফি মানে ??
---- এখনি রিতু বলে উঠে,,
রিতু : সে রাফিই ফুফা !! আপনার ছেলে রাফি !!
রাফির বাবা : রাফি মানে ?? আমার ছেলে রাফি??? আর তুমিই রাফির সাথে কি করছো ??
রিতু : আমি আসলে আপনাদেরকে মিথ্যা কথা বলেছিলাম !!
রাফির বাবা : কি মিথ্যা কথা বলেছিলে ??
রিতু : রাফি আমাকে কোনো ধর্ষণ করে নি !! সেদিন আমি আপনাদেরকে মিথ্যা কথা বলেছিলাম, রাফি আমাকে অনেক ভালোবাসতো, কিন্তু আমি তখন রাফিকে ভালোবাসিনি !! আর সে যখন আমার অন্য একজনের সাথে খারাপ সম্পর্কের কথা জানতে পারে, তাই তখন আমি সবার সামনে মিথ্যা বলি, রাফি আমাকে ধর্ষণ করেছে, এতে করে কেউ কিছু জানতে না পারে !! আর তার ৮ বছরের জেল হয় !!
★★★ রিতুর মুখে এই কথাগুলো শুনে সবাই হতভম্ব !! রাফির বাবা সাথে সাথে রাফিকে আবার জরিয়ে অরে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে,,
রাফির বাবা : তুমি আবার ছেলেটার নামে এতোবড় অপবাদটা দিতে একবার ভাবোনি ?? আমার ছেলেটাকে কতোবছর পর আজ দেখে আমার কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে গেল !! তুমি এমনটা কিভাবে করতে পারলে ??
রাফি : বাবা, তুমি কেঁদো না, দেখো আমি আবারও ফিরে এসেছি !! আর কখনো তোমাদের ছেড়ে যাবো না !!
রাফির বাবা : তুই আমাকে মাফ করে দিস বাবা, আমি এতোবছর ধরে তোকে ভুল ভেবে এসেছি !! তোকে একবারের জন্যও দেখতে পারিনি এতোবছর !!
(Cut......... Cut)
*** এসব কথা শুনে রোদেলাও বুঝতে পারলো, রাফি এক মিথ্যা অপবাদের জন্য এতোবছর তার পরিবারের থেকে দূরে ছিল !! তখন রোদেলা বলল,
রোদেলা : কিন্তু তোমরা একসাথে এখানে কিভাবে ??
--- তখনি রিতু তার আত্নহত্যা করার চেষ্টা সহ সব কথা বলল ! " যা শুনে সবাই আরও অবাক হয় !! (Cut..... Cut)
★ তখন রাফি বলে উঠে ,,
রাফি : বাবা, তুমি যদি কিছু মনে না করতে তাহলে একটা কথা বলতাম ??
রাফির বাবা : তুই আজ একটা না, হাজারটা কথা বলবি, তুই এতোবছর পর আমার বুকে ফিরে এসেছিস !!
রাফি : আমি রিতুকে বিয়ে করতে চাই !!
রাফির বাবা : রিতুকে বিয়ে করবি মানে ?? যে তোকে আমাদের থেকে এতোবছর দূরে রাখলো, তার সাথে আমি তোর বিয়ে হতে দিবো না !!
রাফি : কিন্তু বাবা, রিতু তো তার ভুল বুঝতে পেরেছে !! আর তাকে ভালোবাসতে গিয়েই তো এতোবছর তোমাদের থেকে দূরে থেকেছি !! তাই আজ যদি তাকে নিজের করে পাই, তাহলে আমার জীবনে এতোবছর দূরের থাকার কষ্ট থাকবে না !!
রাফির বাবা : আচ্ছা, ঠিক আছে !! আজ আর তোর কোনো কথা ফেলবো না ! " তুই যা বলবি তাই হবে !!
(Cut............. Cut)
**** রাফিকে এমন হঠাৎ করে দেখে রিয়াজও অবাক !! রাফিকে দেখে সে বলে,৷
রিয়াজ : তুমি কিন্তু আর আমার সাথে পরে দেখা করতে আসোনি !! তুমি আমার দাদাবাড়ি খুঁজে পেলে কি করে৷??
রাফি : এই যে, তোমার সাথে দেখা করতে আসলাম, !!
রিয়াজ : তুমি আবারও কি চলে যাবে ??
রাফি : না, আর যাবো না !!
--** তখনি রোদেলা রাফির কাছে এসে বলে ,,
রোদেলা : তোমার পরিচয় যে কখনো এভাবে পাবো, তা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি !! আমাকে অন্তত তুমি তোমার এই কথাগুলো বলতে পারতে !!
রাফি : আসলে, আমিও বুঝতে পারিনি যে, আপনি ......
রোদেলা : হয়েছে, আর বলা লাগবে না ! " আর কোনো আপনি না, এবার থেকে ভাবি বলে ডাকবে বুঝলে ??
রাফি : আচ্ছা, ভাবি !!
রোদেলা : আর হ্যা , কালকে শুক্রবার কিন্তু তোমার বিয়ে রিতুর সাথে !!
রাফি : সত্যি ??
রোদেলা : তা মিথ্যা বলছি নিকি ?? কালকে তোমাদের বিয়ে হবে, বাবা সব আয়োজনও করছে !! এতো সাধনার পর ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করছো৷!!
রাফি : ভাবি তুমিও না কি যে বলো ??
(Cut.............. Cut)
★ এদিকে মিমকে ইনজেকশন দেওয়ার পর মিমের আর কোনো জ্ঞান নেই !! এদিকে মিমের বাবা-মার শুধু একটাই চিন্তা তারা এখন কি করবে ?? কারণ তাদের মেয়েকে সুস্থ রাখতে হলে রাফিকে তাদের লাগবেই !!৷
---- এসব নিয়েই ভাবার সময় সেই ডাক্তার এসে মিমের বাবাকে বলে,
ডাক্তার : স্যার, আমার মনে হয়, ম্যামকে এভাবে সুস্থ করা যাবে না ! " কারণ সে রাফি ছাড়া আর কিছুই বুঝতেছে না !!
মিমের বাবা : তাহলে এখন কি করা যায় ?? আমার একটা মাএ মেয়ে সে এভাবে বিছানায় শুয়ে আছে, আমি তা কি করে সহ্য করবো ??
ডাক্তার : তাহলে রাফিকে খুঁজে পেতে হবে !!
মিমের বাবা : কিন্তু তা কি করে ?. তার তো আমি কোনো ঠিকানাই জানি না !!
ডাক্তার : তা ঠিক বলেছেন, তবে আমার মনে হয়, একজন কিছু জানতে পারে , !!
মিমের বাবা : কে জানতে পারে ??
ডাক্তার : কিছুদিন আগে, একটা মেয়ে Accident করলে রাফি তাকে এখানে নিয়ে আসে !! সে কিছু জানলেও জানতে পারে !!
মিমের বাবা : তাহলে সে কোথায় ?? যদি সে রাফির ব্যাপারে কিছু জানে ??
ডাক্তার : আসলে, আমিও ঠিক জানি না, তার ব্যাপারে জানি না !! তবে আমি এখনি জানার চেষ্টা করছি, সে কোথায় ??
★ ★ এদিকে সময় যতই যাচ্ছে, রাফি আর রিতুর বিয়ের সময়ও ততই কাছে চলে আসছে !! এদিকে রাফির ফিরে আসার খবর শফিক চাচাও জানতে পারে ! " তাই হঠাৎ করে শফিক চাচার ডাক শুনে রাফি দেখতে পায়, তার শফিক চাচাই এসেছে !!
রাফি : চাচা, আপনি কেমন আছেন ??
শফিক চাচা : আগে ভালো না থাকলে, তোমার ফিরে আসাতে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়ে গিয়েছি ! "
রাফি : চাচা, আমি কিন্তু বলেছিলাম........
শফিক চাচা : শুনেছি, তিমি নির্দোষ ! " এতোদিন, সেই শাস্তি ভোগ করেছো !! কিন্তু আমরা কেউ তোমার কথা বিশ্বাস করিনি !!
★ তখনি রাফিকে লিজা সেখানে রাফিকে দেখতে পেয়ে বলে ,,
লিজা : আপনি এখানে কি করছেন ??
শফিক চাচা : কেন, একে চিনতে পারছিস না ?? এ রাফি ! "
লিজা : বাবা, তুমি সত্যি বলছো ?? ওনাকে আমি ফরিদপুরে দেখেছিলাম, কিন্তু কখনোও চিন্তা করতে পারিনি, ইনি রাফি ভাইয়া !!
শফিক চাচা : আমাদের চিনা মানুষগুলোও আজ কতো দূরে, রাফিও এতোদিন আমাদের থেকে ঠিক এভাবেই দূরে ছিল !!
লিজা : তুমি ঠিকই বলেছো, বাবা !! আমরা এতোদিন রাফি ভাইয়াকে কতোই না দোষী মনে করেছিলাম, কিন্তু তিনি আসলেই অনেক ভালো !!
--- দেখতে দেখতে অনেক সময় পার হয়ে গেল ! " রাফির হঠাৎ করে মিমের কথা মনে পড়ে গেল ! " কিন্তু আজ তার কাছে শুধু রিতুই মনে আছে !! যত বারই মিমের কথা ভাবে, তখনি রিতু তার মনে জায়গা করে নেয় !! এভাবেই কেটে যায়, আরও অনেকটা সময় !!
★★ এদিকে মিমের বাবা মিমকে নিয়ে অনেক চিন্তায় আছে ! " তারপর সে যখন মিমের কাছে গেল, তখন দেখতে পেল যে , মিম বিছানায় নেই !!
---- এটা দেখার পর, মিমের বাবা আরও চিন্তায় পরে যায় !! আর মিমকে খুঁজতে শুরু করে ! " তখনি সেই ডাক্তার এসে বলে,
ডাক্তার : মিম ম্যাডাম, রাফির কাছে গেছে !!
মিমের বাবা : রাফির কাছে গেছে মানে ?? আপনি তাকে এই অবস্থায় কেমন করে যেতে দিলেন ??
ডাক্তার : আমি যেতে দিই নি !! তার জেদের কাছে আমি হেরে গিয়েছি !! কে যেনো ম্যামের ফোনে ফোন দিল, তা রিসিভ করার পরই তিনি পাগলপর মতো আচরণ করা শুরু করলো !! আর এই অসুস্থ শরীরেই গাড়ি নিয়ে কোথায় যেনো গেল ??
মিমের বাবা : তা আপনি একবারও আমাকে বলতে পারলেন না ??
ডাক্তার : আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু তাকে আটকাতে পারিনি, আর তিনি বলেছিলেন, তাকে যেতে না দিলে সে আত্নহত্যা করবে !! তাই আর আপনাকে বলতে পারিনি !! তবে আপনি কিছু চিন্তা করবপন না, আল্লাহর রহমতে ম্যাম অনেকটাই সুস্থ , তার কিছু হবে না !!
★ মিমের বাবা কিছুই বুঝতে পারছে না, এখন কি হবে ?? আর কে বা মিমকে ফোন দিয়েছিল যে, মিম সেখানে ছুটে গেল??? (Cut......... Cut)
★ এদিকে রিতু আর রাফির বিয়ের সময় চলেই আসলো !! রাতের আধারে পুরো বাড়িতে বর্ণিল সাজে আজ যেন মহাখুশির এই মুহুর্ত !! (Cut........ Cut)
★ রাফিও কখনো ভাবতে পারেনি যে, রিতু সত্যিই তার একদিন এভাবে হতে চলেছে, এতো মূল্য দেয়ার পর !!
----- রাফি আর রিতুর বিয়ে হবে,
যখনি রাফি বিয়েতে রিতুকে আংটি পড়াতে যাবে, তখনি কে যেন দৌড়ে এসে ধাক্কা দিয়ে জরিয়ে ধরে !! আর রাফি সাথে সাথে পিছনে অনেকটা সরে যায় !!
★ রাফির সাথে কি হচ্ছে কি হচ্ছে , তা রাফি কিছুই বুঝতে পারছে না !!
★ রাফি দেখে যে, একটা মেয়ে তার বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে !! এটা দেখে সবাই হতভম্ব ?? কে এই মেয়ে ??
★ রাফি তখন দেখতে পারে, এই মেয়ে আর কেউ না এ যে মিম !! যা দেখে রাফি অবাক হয়ে যায় !! আর বলে,,
রাফি : তুমি এখানে মিম ??
মিম : তুই একটাও কথা বলবি না ! " তুই আমাকে ছেড়ে কোথায় চলে গিয়েছিলি ??
রাফি : তুমি এসব কি বলছো ??
মিম : এখন কিছু বুঝতে পারছিস না ?? আমার মনকে কেড়ে নিয়ে, এখন বলছিস তুই কি করেছিস ??
রাফির বাবা : রাফি এই মেয়ে কে ??
রাফি : আসলে বাবা,.............
মিম : বল, আমি কে হই ?? কে তোর আমার চেয়ে আপন ??
রাফি : তুমি এখানকার ঠিকানা কিভাবে পেলে ??
মিম : তুমি চলে যাওয়ার পর কতো অপেক্ষা করেছি, তোমার জন্য, কিন্তু তুই আমার ভালোবাসা বুঝলি না ?? রিদিকে লিজা বলেছিল, তোমার কথা !! আর পরে রিদি আমাকে ফোন করে বলল, তুই আজ বিয়ে করবি ??
রাফি : আমি তোমাকে আগেই বলেছি, তোমার সাথে আমার যায় না !! আর আমি রিদিকে আজ বিয়ে করবো .....
মিম : ঠাসসসস !! ঠাসসসসস !! আমার এতো ভালোবাসার এই অবদান দিলি ??
রাফি : নিশ্চুপ ........
রাফির বাবা : এই মেয়ে, তোমার সাহস কি করে হয় তুমি আমার সামনে আমার ছেলের গায়ে হাত তুলো ??
মিম : আপনি কাকে নিজের ছেলে বলেন ?? যাকে কিনা একটা মেয়ের কথার উপর বিশ্বাস করে তাকে এতোবছর মৃত হিসেবে জানেন !!
রিতু : রাফি, কে এই মেয়ে ?? আর তোমাকে এসব কি বলছে ??
মিম : রাফি, তুমি বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না !! তুমি যদি আমাকে এভাবে ছেড়ে যাও, তাহলে আমি তা নিজেকে কি করে বুঝাবো ??
রাফির বাবা : আজ রাফির বিয়ে, আর তুমি বলছো, তুমি ওকে ছাড়া বাচবে না ?? ওর বিয়ে এখন রিতুর সাথে হবে !!
মিম : রাফি তুমি এদের কিছু বলো !! আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি !!
রিতু : রাফি তুমি না আমায় ভালোবাসো, আজ আমাদের বিয়ে !! আর এই মেয়ে এখন এসে কি এসব বলছে ?? তুমি এখন তোমার সিধান্ত বলবে !!
রোদেলা : হ্যা, রাফি বলো, কে এই মেয়ে, আর তুমি রিতুকে বিয়ে করবে না ??
রাফি : আমি এতো সময় নিশ্চুপ থেকে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি !!
রাফির বাবা : কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিস বল ??
রাফি : আমি রিতুকে বিয়ে করবো না ! " আমি মিমকে ভালোবাসি, আর কাউকে যদি বিয়ে করি তাহলে শুধু মিমকেই করবো !!
★ রাফির এ কথা শুনে সেখানে থাকা সবাই অবাক হয়ে যায় !! কারণ রাফি তো রিতুকে অনেক ভালোবাসে !!
রিতু : রাফি তুমি এসব কি বলছো ?? তুমি না আমায় ভালোবাসো ?? আমাকে ভালোবাসার জন্য তুমি এতো বছর আমার মিথ্যা অপবাদে জেলে থাকলে, আর এখন তুমি আমাকে বিয়ে করবে না ??
রাফি : না করবো না !! আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি ! " আমি মিমকেই ভালোবাসি, ওকেই বিয়ে করবো !!
রাফির বাবা : কেন, তুই রিতুকে বিয়ে করবি না ??
রাফি : বাবা, জীবনে কখনো তোমার কথার অবাধ্য হইনি !! শুধু অবাধ্য হয়েছিলাম, রিতুকে ভালোবেসে !! তোমাকে আর মাকে যখন রিতুকে ভালোবাসার কথা বলেছিলাম, তখন তোমরা বলেছিলাম, ওরা অনেক বড়লোক আর আমরা ওদের সাথে যাই না !! তবুও আমি যেদিন রিতুকে অন্য ছেলের সাথে অন্তঃরঙগ মুহুর্তে দেখেছি, তাও তোমাদের সামনে কখনো বলিনি !! জানো কেন তখনো বলিনি, কারণ আমি কখনো চাইনি, আমি যাকে ভালোবাসি , সে যেন কখনো কারও কাছে ছোট হোক ! " কারণ তখনও আমি তাকে ভালোবাসি !!
রোদেলা : কিন্তু রাফি, রিতুও তো এখন তোমায় ভালোবাসে !! আর এতো মানুষের সামনে তুমি ওকে বিয়ে না করলে মানুষ কি ভাববে ??
রাফি : আমি যেদিন এতো মানুষের সামনে জেলে যাচ্ছিলাম, সেদিনও তো কারও কিছু হয়নি !! একটা মানুষের সবচেয়ে দরকারী অঙ্গ হাত, সেটা যেদিন আমার বিকল ছিল, সেদিন মিম তার নিজের হাত দিয়ে আমাকে খাবার তুলে খাওয়াই ছিল !! তোমরা আমরা নিজের বাবা-মা যেদিন আমার নামে ধর্ষক জানলে সেদিন থেকে ৮ বছর তোমরা আমার খোঁজটুকু নাওনি !! অথচ মিম আমার সম্পর্কে সবকিছু জেনেও আমাকে পাগলের মতো ভালোবেসেছে !! আর আজ সে আমার কাছে আসতে একবারও ভাবেনি !! শুধু আমায় ভালোবাসে বলে !!
রাফির বাবা : তাহলে তুই মিমকেই ভালোবাসিস ? রিতুকে না ??
রাফি : একটা সময় হয়তো বা ভালোবাসতাম !! কিন্তু আজ আর তার জন্য আমার মনে কোমো জায়গা নেই !! তুমি আমাকে মাফ করে দিও রিতু ! " তোমার জন্য অনেক ত্যাগ করেছি, যেদিন তোমাকে লাবিবের সাথে দেখেছিলাম, সেদিনও তোমাকে বলেছিলাম, সে তোমার জন্য নয় !! কিন্তু তুমি আমাকে তার জন্য অনেক বড় শাস্তি দিয়েছো, তাও মেনে নিয়েছি, কিন্তু আজ আর পারছি না !! কারণ আজ হয়তো বা অন্য কেউ আমার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য !! আমি মিমের মাঝেই আমার সবচেয়ে আপন মানুষটাকে খুঁজে পেয়েছি !!
রিতু : তুমি এমন করলে আমি কি করবো এখন ??
রাফি : তা জানি না ! " লাবিবকে বিয়ে যেমন তুমি আমাকে হারিয়েছিলে, তপমনি আমি আজ তোমাকে বিয়ে করে মিমকে হারাতে পারবো না !!
রিতু : তুমি ঠিকই বলেছো !! আমি আসলে কখনোই তোমার ভালোবাসা বুঝিনি, তাই আমি তার যোগ্য নই !!
রোদেলা : বাবা, রাফি যেহেতু মিমকে ভালোবাসে, তাহলে মিমের সাথেই না হয় রাফির বিয়ে হোক !!
রাফির বাবা : সেটা আবার বলা লাগবে ?? আজ আমি আমার আরেকটা মেয়েকে পেয়েছি !! মিমের সাথেই রাফির বিয়ে হবে ! "
★ তারপর রাফি আর মিমের ধুমধাম করে বিয়ে হলো ! " আজ সবাই আবারও রাফিকে আপন করে পেল ! "
★★★ রাফি মিম হাত ধরে বলে,,
রাফি : আবারও ৮ বছর পর নিজের আসল ভালোবাসা খুজে পেলাম তোমার কাছে !! আমার সবচেয়ে আপন মানুষটার মাঝে, যে কিনা সারাটা জীবন আমার পাচে থাকবে ! " যেই হাত দিয়ে আমাকে খাবার খাওয়াই দিয়েছিলে, এই হাত কখনো ছাড়বে না তো ??
মিম : কখনোই না !! যতদিন বেঁচে আছি, এই হাত আর কখনো ছাড়বো না !! I love you Rafi !!
রাফি : I love you too ❤
🔮The End 🔮