13/12/2024
হে বোন, তোমার কি মনে হয় না, আল্লাহর দেওয়া বিধানগুলো মেনে চলার মধ্যে রয়েছে মুক্তি ও মর্যাদা? মহান আল্লাহ আমাদের নারীজাতিকে সৃষ্টি করেছেন অসাধারণ সৌন্দর্য, মমতা এবং শক্তি দিয়ে। আর সৃষ্টির পর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু আমরা কি সেই মর্যাদার মূল্যায়ন করছি?
আমাদের সমাজে দেখা যায়, অনেক নারী ফ্রি মিক্সিং এড়িয়ে চলেন, মাহরাম ও নন-মাহরামের সীমানা বজায় রাখেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ছবি পোস্ট করে এমন কিছু মানুষের সামনে উন্মুক্ত হন, যাদের কাছে আমাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করা একেবারেই অনুচিত। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন:
"তোমরা তোমাদের দৃষ্টিকে সংযত করো এবং তোমাদের লজ্জাস্থানকে হেফাজত করো। এটি তাদের জন্য আরও পবিত্র।" (সূরা আন-নূর: ৩০-৩১)
তাহলে কেন আমরা এই আদেশকে ভুলে যাই? সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেওয়া বা নিজেকে প্রদর্শন করার মাধ্যমে আমরা কি আসলে নিজের সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছি না?
হিজাব নারীর জন্য শুধুমাত্র একটি পোশাক নয়, এটি তার চরিত্রের পরিচয়। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন:
"হে নবী! তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ এবং মুমিন নারীদেরকে বলো তারা যেন নিজেদের চাদরের প্রান্ত নামিয়ে দেয়। এটি তাদের চেনার জন্য উত্তম এবং এতে তাদেরকে কষ্ট দেওয়া হবে না।" (সূরা আল-আহযাব: ৫৯)
হিজাব নারীর সৌন্দর্য ও আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোকে এমনভাবে ঢেকে দেয়, যা তার প্রতি অযাচিত দৃষ্টি ও কু-প্রবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করে। এটি নারীকে সম্মানিত ও মর্যাদাশীল করে তোলে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“যে নারী আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন পরপুরুষের সামনে সুগন্ধি ব্যবহার করে বের না হয়।” (তিরমিজি)
এই হাদিস স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, এমনকি অপ্রয়োজনীয়ভাবে নিজের উপস্থিতি প্রকাশ করাও ইসলামের নির্দেশনার বিরুদ্ধে যায়।
পর্দা কোনো সীমাবদ্ধতা নয়; এটি নারীর মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সুরক্ষার প্রতীক। এটি একটি আত্মার শুদ্ধতার প্রতিফলন, যা নারীর ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
আজকের এই ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। যদিও এটি ভালো কাজ প্রচারের একটি শক্তিশালী মাধ্যম, তবে এটিকে ভুলভাবে ব্যবহার করলে এর প্রভাব হতে পারে বিধ্বংসী। আমরা কি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনভাবে নিজেদের উপস্থাপন করছি, যা আল্লাহ এবং রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আমাদের প্রতিটি কাজই অন্যের উপর প্রভাব ফেলে।
হিজাব পরিধান করা কেবল একটি পোশাক পরার বিধান নয়; এটি আমাদের জীবনের আদর্শ। এটি নারীর আত্মসম্মান এবং তার ঈমানের প্রতিফলন। যারা হিজাব পরিধান করেন, তারা আত্মিক শান্তি এবং সামাজিক নিরাপত্তা লাভ করেন।
হিজাব নারীর জন্য যে সম্মান নিয়ে আসে তা অতুলনীয়। এটি নারীদের সেই সব পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করে, যেখানে তাদের অযাচিত মনোযোগের শিকার হতে হয়।
আমরা কি আল্লাহর আদেশ মেনে চলছি? আমরা কি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের উপস্থিতি এমনভাবে প্রকাশ করছি, যা আমাদের লজ্জা এবং নম্রতার নীতি রক্ষা করে?
আল্লাহ হলেন সর্বশক্তিমান, তিনি আমাদের নিয়ত জানেন। নিজেদের নিয়ত শুদ্ধ করি, আল্লাহর নির্দেশনাকে প্রাধান্য দিই এবং তাঁর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করি
ইন শা আল্লাহ বি ইযনিল্লাহ