22/12/2024
পিটিয়ে মারা হয়েছিল ইসলামের তৃতীয় খলিফা কোরআন সংকলক, স্বয়ং নবীর দুই মেয়ের জামাই হজরত উসমান রা. কে। তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল, তিনি কুরআনের আইন অনুযায়ী খিলাফত চালাতে পারছেন না। অথচ আজকে যে কোরআন পড়ি,তার সংকলক তিনি। হত্যার ৪০ দিন আগ অবধি তাঁকে অবরুদ্ধ রাখা হয় সপরিবারে। জুমআর নামাজ পড়ার অনুমতিও দেয়া হয়নি তাকে। অথচ এই যে নামাজের ঘর মসজিদে নববী যেটি তার সমস্ত সম্পত্তি দানের উপর কেনা হয়েছিল রাসূলের সময়ে।
একটা অন্ধকার কক্ষে বন্দী থাকতে হয়েছিল এমন এক সাহাবীকে যাকে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল উপাধি দিয়েছিলেন- জুন্নুরাইন বা দুই আলোর মালিক। নবী দুই কন্যাকে তাঁর কাছে বিয়ে দেয়ার কারণে।
তাঁকে পাহারা দিচ্ছিলেন রাসূলের দুই নাতি ইমাম হাসান রা. ও ইমাম হোসেন রা.। গোপনে পানি এনে দিতেন রাসূলের আরেক মেয়ের জামাই হজরত আলী রা.। অথচ এই উত্তেজিত জনতার দাবী ছিল- রাসূলের শান থেকে বিচ্যুতি আর আল্লাহর আইন অনুযায়ী চলতে না পারার ব্যর্থতাই খলিফাকে পিটিয়ে মারার ঔচিত্য দেয়! তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে হাতের আংগুল কেটে ফেলেন খলিফার স্ত্রী নায়েলা। আর কোরআন পাঠরত খলিফা ওসমান রা. কে মেরে ফেলা হয় কোরআনের অবমাননার অপরাধে।
কারা মারে? এই ইসলামের হেফাজতকারী নামধারীগণ।
এই উত্তেজিত ইসলামের হেফাজতিরা কোরআন সংকলকের চেয়েও বড় কোরআন রক্ষাকারী, নবীর মেয়ের জামাই ও দৌহিত্রদের চাইতেও বড় নবীপ্রেমিক, আশারা মুবাশশরা বা নবীর পবিত্র জবানে বেহেশতের সুসংবাদ পাওয়া সাহাবী উসমানের চেয়েও আল্লাহর দ্বীন বেশী বুঝা।
যারা খলিফাকে মেরেছিল তারাও নামাজ পড়েই এসেছিল। তারাও কোরআনের হাফেজ ছিল। বিভিন্ন যুদ্ধে বীরত্বের পুরস্কারপ্রাপ্ত ছিল। কিন্তু তাদের সামনে ধর্ম - ধর্ম থাকে না, ক্ষোভ, ক্রোধ আর পৈশাচিকতা তাদের উপর ভর করে। এজন্যই কোরআন পাঠরত খলিফা উসমান রা. কে পিটিয়ে মারতেও তারা দ্বিধা বোধ করে নাই।
আমর বিন হামক উত্তেজিত তৌহিদি জনতার একজন খলীফা উসমান রা. এঁর নিস্তেজ মৃত বুকে নয়বার তরবারি দিয়ে আঘাত করেছিল। আর বলছিল, এই তিনটি আঘাত আল্লাহর জন্য। আর শেষের ছয়টি আমার মনের ক্ষোভ। উত্তেজিত তৌহিদি ইসলাম রক্ষাকারীদের ক্ষোভের সমীকরণ এটাই।
সংগৃহীত