04/11/2024
Name : Sabrina Rashid Mitul
Program : MBA
Intake : 59
প্রিয় সপ্নের রাজকুমারী ,
প্রতিটা মানুষের একটা সপ্নের জগত থাকে ,যেখানে একটা সপ্নের রাজকুমারী থাকে। যারেই আমরা ভেবে রাখি আমাদের ভবিষ্যত বউ এই টাইপের হবে। আমারো সেই ক্লাস ৬-৭ থেকে একটা সপ্নের জগত ছিলো যে জায়গায় আমার একটা সপ্নের মেয়ে ছিল , যাকে নিয়ে আমার সংসার ছিলো সপ্নের মাঝে। যাকে কোনো সময় দেখি নি শুধু কল্পনা করে এসেছি , তাকে খুজে এসেছি সারা জীবন। অবশেষে সেই সপ্নের মেয়েটার খোঁজ পেলাম ২০১৯ সালের বিইউবিটির পহেলা বৈশাখের মেলায়। প্রথম তাকে দেখেই আমি জাস্ট ভেবেছি এই মেয়েটাই আমার সেই সপ্নের রাজকুমারী , যাকে আমি এতো দিন মনে ধারণ করে এসেছি। এত সুন্দর চোখ , হাসি , ব্যক্তিত্ব, ইনোসেন্ট আর মায়াবী লুকস , এটাইতো আমার সেই সপ্নের মেয়ে। তো পিছু নিলাম ,আমি তার পিছে পিছে পুরোটা সময় ছিলাম বাট কথা বলার সাহস ছিল না। তাকে যত বার দেখছিলাম তত পাগল হচ্ছিলাম , এক সময় আমার বন্ধুদের বল্লাম দোস্ত পছন্দ হইসে একটা মেয়েকে।তারপর ওদের সবাইকে দেখালাম , সবাই বল্লো
আমার নাকি চয়েজ ভাল 😌, নাম্বার চা যেয়ে। আমি সাহস পেলাম না। পরে একটা সময় হারায় ফেল্লাম তাকে , অনেক খোজাখুজি করলাম পুরো বিইউবিটি তন্নতন্ন তন্নতন্ন করে বাট পেলাম না তাকে আর। ভেঙ্গে গেলো আমার মন। আমার বন্ধুরাও খুজলো তাকে বাট পেলো না ,পরে তারা বিরক্ত হয়ে যে যার বাসায় চলে যায়। আর আমি সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে খুঁজে ফিরি।
এর পর প্রতি দিন বিইউবিটিটে তাকে খুজে ফিরেছি বাট আর পেলাম না। এরপর কোভিড-১৯ শুরু হলো , ক্লাস অনলাইনে হয়ে গেলো , আমি ভাবলাম সব শেষ আর দেখা হবে না সেই সপ্নের রাজকুমারীর সাথে। বাট মনে মনে একটা আশা ছিলো হয়তো একদিন না একদিন তার সাথে আমার দেখা হবে।
এইভাবে আমার বিইউবিটি লাইফ শেষ হয়ে গেলো , বিইউবিটি লাইফ শেষ হওয়ার ২ বছর পর ভর্তি হলাম এমবিএ তে সে বিইউবিটি তেই। এমবিএ ১ম ক্লাসে ঢুকেই দেখি ১ম বেঞ্চে সেই সপ্নের মেয়েটা যাকে আমি সেই লাস্ট ২০১৯ সালে দেখেছি , খুঁজে এসেছি এত বছর ,সে বেঞ্চে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে। আমি জাস্ট দেখেই আমার বুক ধরফর শুরু করে দিলো। খুশিতে আমি আত্নহারা হয়ে গেলাম, পুরোটা ক্লাস আমি তার দিকে
চেয়ে রইলাম , স্যারের পড়া কিছুই মাথায় ঢুকলো না। আমি শুধুই তার দিকে তাকায় তার মায়ায় আটকে রইলাম, কথা বলার সাহস আমার নেই , তবুও কথা বলার তীব্র ইচ্ছা আমাকে ভিতরে ভিতরে শেষ করে দিচ্ছিলো। প্রতিটা ক্লাস আমি তার দিকে চেয়ে রইতাম , দেখতাম তাকে বাট সে কোনো সময় তাকায় নাই আমার দিকে। একদিন অপেক্ষা করতে না পেরে অনেক সাহস নিয়ে, দুয়া কালাম পরে বসলাম তার পাশে যেয়ে। আমার বুক ধুপ ধুপ করছে , নিজেকে শান্তনা দিচ্ছি মনে মনে যেভাবেই হোক কথা বলতে হবে। অনেক সাহস নিয়ে এসাইনমেন্টের ব্যাপারে কথা বল্লাম। যখন কথা বলছিলাম আমি আমার মধ্যে ছিলাম না, মনে হচ্ছিলো আমি সপ্ন দেখছি। বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে আমি আমার সপ্নের সেই রাজকুমারীর সাথে কথা বলতে পেরেছি।
বেশি কিছু বলবো না আর , শুধু বলতে চাই :
দেখা না দেখার চোখের বাইরের সেই তুমি, যাকে আবিস্কার করেছি কল্পনার ক্যানভাসে, তার কাছেই করি প্রাণের বন্দনা! কী এক অদ্ভুত প্রার্থনা আমার! তবু তুমি আমার প্রাণের ঈশ্বর! তোমার জন্যেই পাড়ি দিতে পারি সাত সমুদ্র, তেরো নদী, তেপান্তরের অথৈ পাথার!
তুমি এমনই আশ্চর্য এক কষ্টিপাথর, তোমার সান্নিধ্যে এলেই জেগে ওঠে না ঘুমানো শহর, পীড়িত রাত, দুঃখবতী মেঘ, ঘুমায় অনাহারী শিশু পরম মমতায় মায়ের কোলে! কেবল তোমার উপস্থিতিই ম্লান করে দিতে পারে সব হারানোর গ্লানি, হাসিমুখে গলায় পরে পরাজয়ের মালা। আনন্দ তুমি বাঁচাও বঞ্চিতেরে, বেদনার মর্মমূল স্পর্শ করে। তোমাকে লিখতে গেলে আমায় প্রগলভতায় পেয়ে বসে।জমিয়ে রাখা সব কথা আজ বলব..
তোমাকে সব বলব বলেই তো,
এতোটা পথ নিঃশব্দে একাকী হেঁটে আসা,
তোমার কাছে পৌঁছব বলেই তো,
বিরুদ্ধ স্রোতে তরী নিয়ে ভাসা।
তোমাকে দেবো বলেই আগলে রেখেছি,
আগুনঝরা ছাব্বিশটি ফাগুন।
জীবনের অগণন পথ একাকী হেঁটে হেঁটে আজ সত্যিই জিরোবার ঠাই চাই। যদি জানতাম, পথের শেষে শ্রান্তি ঘুচাতে তুমি আছো, ক্লান্তির ঘাম শুকোবে নিমেষে। জাগবো আবার, দিনগুলিকে রাতের কাছে নিয়ে যেতে! তারপর, কেবল অপেক্ষা! আলো ঝলমলে উৎসবের মতো সুদীর্ঘ এক আনন্দঘন মুহূর্তের। সেই অপেক্ষার যন্ত্রণাও মধুময়! এক অজানা শিহরণে, অপার মুগ্ধতায় থাকি মোহাবিষ্ট হয়ে। অজানা সেই আনন্দধামে একদিন পৌঁছব বলে।
তুমিও থেকো প্রতীক্ষায়, পথের শেষে যদি পথ মিলে যায় কখনও! জীবনের ওপারে যদি মৃত্যু থাকে, সে তো সীমাহীনের সীমানা! তোমার জন্য আমার অভিযাত্রার পরিধি না হয় সেই সীমানাই ছুঁয়ে গেলো! ক্ষতি কী তাতে? বলো তাতে কার ক্ষতি!
ইতি ,
ফুটা কপালওয়ালা একটি অভাগা ছেলে।