06/12/2023
*ফরজ সালাতের পর পঠিতব্য দোয়াসমূহ বা যিকির :*
(১) আস্তাগফিরুল্লাহ (৩বার)
অর্থ:আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
মুসলিম, ইফা, হা/১২১০, হাএ হা/১২২১ মিশকাত হাএ হা/৯৬১)
(২) আল্লাহুম্মা আনতাস সালা-মু, ওয়া মিনকাস সালা-মু, তাবা-রাকরা ইয়া যালজালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।
অর্থ:হে আল্লাহ! তুমি শান্তি বিধায়ক। আর তোমার থেকেই শান্তির ধারা প্রবাহিত হয়। তুমি বরকত দান কর, তুমি মহিমান্বিত ও সম্মানের অধিকারী। (মুসলিম ইফা হা/১২১১, হাএ হা/১২২২, আবুদাউদ হা/১৫১২, নাসায়ী হা/১৩৩৭, ইবনে মাজাহ হা/৭৫২, মিশকাত হা /৯৬০)
(৩) আল্লা-হুম্মা আ'ইন্নি 'আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিয়া ওয়া হুসনি 'ইবা-দাতিক।
অর্থ::হে আল্লাহ! আমাকে তোমার স্মরণ এবং তোমার শুকরিয়া জ্ঞাপন ও ভালোভাবে তোমার ইবাদত করার জন্য সাহায্য কর।
(আবুদাউদ হা/১৫২২, নাসায়ী হা/১৩০৩, মিশকাত হাএ, হা/৯৪৯)
(৪) লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর।
অর্থ:আল্লাহ ব্যতীত (সত্য) কোন মা'বুদ নেই। যিনি একক ও তাঁর কোনই অংশীদার নেই। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তারই জন্য যাবতীয় প্রসংশা। আর তিনিই সব কিছুর ওপর ক্ষমতাশীল।
(বুখারী হা/৮৪৪, ইফা হা/৮০৪, আপ্র হা/৭৯৬, মুসলিম হাএ হা/১২২৫, ইফা হা/১২১৪, মুসলিম হা/৫৯৪,মিশকাত হা/৯৬২)
(৫) লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ। আল্লা-হুম্মা আ'ইন্নী 'আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি 'ইবা-দাতিক।
অর্থ:"নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি, আল্লাহ ব্যতীত।" "হে আল্লাহ! আপনাকে স্বরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য, এবং সুন্দরভাবে আপনার ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন "। ( মুসলিম হা/৫৯৪, আবুদাউদ হা/১৫২৩)
(৬) লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ।
অর্থ:আল্লাহ ছাড়া কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই। (বুখারী হা/৬৪০৯,মুসলিম হা/৭০৪৩, আবুদাউদ, তিরমিজি)
ফজিলত : এটি জান্নাতের ভান্ডারসমূহের একটি ভান্ডার। (বুখারী হা/৬৪০৯)
(৭) আল্লা-হুম্মা লা মা-নি'আ লিমা আ'ত্বয়তা ওয়ালা মু'ত্বিয়া লিমা মানা'তা ওয়ালা ইয়ানফা'উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু।
অর্থ:হে আল্লাহ! আপনি যা দিতে চান,তা রোধ করার কেউ নেই এবং আপনি যা রোধ করেন, তা দেওয়ার মত কেউ নেই। কোন সম্পদশালী ব্যক্তির সম্পদ কোন উপকার করতে পারে না আপনার রহমত ব্যতীত। (বুখারী হা/৮৪৪, বুখারি ইফা হা/৮০৪, মুসলিম ইফা হা/১২১৪, মিশকাত হা/৯৬২)
(৮) লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ। লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা না'বুদু ইল্লা ইইয়াহু। লাহুন নে'মাতু ওয়ালাহুল ফাযলু ওয়ালাহুছ ছানাউল হাসান। ,লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলেছীনা লাহুদ্দীন। ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরুন।
অর্থ:'নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি, আল্লাহ ব্যতীত। নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত। আমরা কেবল তাঁরই ইবাদত করি। সকল নে'মত তাঁরই,সকল অনুগ্রহ তাঁরই এবং তাঁরই জন্য উত্তম প্রসংশা। নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত। তাঁর জন্যই আমরা একনিষ্ঠচিত্তে দ্বীন পালন করি। যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। ( মুসলিম হা/৫৯৪)
(৯) আয়াতুল কুরছি। (১ বার).। ( বাক্বারাহ ২/২৫৫, ছহীহ তারগীব হা/১৫৯৫)
আয়াতুল কুরসীঃ আল্ল-হু লা ইলা-হা ইল্লা-হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ুমু লা-তা’খুযুহু সিনাতুউ ওয়া-লা-নাওম লাহু মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরযি মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ ইনদাহু ইল্লা-বিইযনিহী ইয়া’লামু মা-বাইনা আইদীহিম ওয়ামা-খলফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূ-না বিশাইয়িন মিন ইলমিহী ইল্লা-বিমা-শা-আ ওয়াসিআ কুরসিইউহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ালা-ইয়াউদুহু হিফযুহুমা ওয়াহুওয়াল আলীইউল আযীম। (সূরা বাকারাহ-২৫৫
আয়াতুল কুরসী’র ফযিলতঃ (ক) রাসূল (সাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরজ সালাত শেষে আয়াতুল কুরছী পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাধা নেই।(সহীহাহ হা/৫৯৭,মিশকাত-৯৭৪,নাসাঈ কুবরা-৯৯২৮, সিলসিলাতুল আহাদীসিস সাহীহা হা/৯৭২, সহীহ সনদে,)।
(খ) শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হ’তে না পারে। (নাসাঈ কুবরা হা/৯৯২৮,সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২,মিশকাত হা/৯৭৪,মুসলিম,বুখারী,মিশকাত হা২১২২-২৩, বুখারী ইফা,অনুচ্ছেদ ১৪৩৮ হা/২৩১১)।
(১০) সূরা ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস (১বার)(আবুদাউদ হা/১৫২৩, নাসায়ী হা/১৩৩৬ সহীহ সনদে)
ফজর ও মাগরিবের সালাতের পর ৩ বার করে (তিরমিজি হা/৩৫৭৫)
ফজিলত : সকাল সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস ৩ বার করে পড়লে যাবতীয় অনিষ্ট হতে নিরাপদ থাকা যায়। ( মিশকাত হা/২১৬৩ সহীহ)
(১১) সুবহা- নাল্ল-হ (৩৩ বার)
আলহামদুলিল্লা-হ (৩৩ বার)
আল্ল-হু আকবার (৩৩ বার)
লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর। (১ বার)। অথবা আল্ল-হু আকবার (৩৪ বার)।
অর্থ:পবিত্রতাময় আল্লাহ। যাবতীয় প্রসংশা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত ;যিনি এক,যাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। ( মুসলিম হা/৫৯৬,৫৯৭, মুসলিম হাএ হা/১২৩৯, আবুদাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী, মিশকাত হা/৯৬২)
ফজিলত : রাসূল (সা:) বলেন, যে ব্যক্তি উক্ত দো'আটি পাঠ করবে, তার গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনারাশি সমতুল্য হয়। (মুসলিম হা/১২৩৯,আবুদাউদ হা/১১০৪)।
(১২) আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ'ঊযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আ'ঊযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আ'ঊযুবিকা মিন আরযালিল 'উমুরি; ওয়া আ'ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিদ দুনিয়া ওয়া 'আযা-বিল ক্বাবর।
অর্থ:হে আল্লাহ! (১) আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ'তে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ'তে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হ'তে এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিতনা হ'তে ও (৫) কবরের আযাব হ'তে। ( বুখারী হা/৬৩৭৪, সহীহুল বুখারী হা/২৮২২, মিশকাত হা/৯৬৪)
(১৩) রযীতু বিল্লা-হি রব্বাঁও ওয়া বিল ইসলা-মি দীনাঁও ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিইয়া।
অর্থ:'আমি সন্তষ্ট হয়ে গেলাম আল্লাহর উপরে প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামের উপর দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মাদের উপরে নবী হিসাবে। (ইবনুমাজাহ হা/৭২১, আবুদাউদ হা/১৫২৯)
(১৪) আল্ল-হুম্মা আদখিলনিল জান্নাহ, ওয়া আজিরনী মিনান না-র। (তিরমিজি হা/২৫৭২)
অর্থ:হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও! (তিরমিজি হা/২৫৭২)
(১৫) সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী 'আদাদা খলক্বিহী ওয়া রিযা নাফসিহী ওয়া ঝিনাতা 'আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালিমা-তিহ (৩বার)
অর্থ:মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রসংশা তাঁর জন্য। তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তষ্টির সমপরিমাণ এবং তাঁর আরশের ওযন ও মহিমাময় বাক্য সমূহের ব্যাপ্তি পরিমাণ '। (মুসলিম হা/৬৮০৬, মিশকাত হা/২৩০১)।
(১৬) আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ'ঊযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল 'আজঝি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়া যালা'ইদ দায়নি ওয়া গালাবাতির রিজাল।
অর্থ:'হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দু:খ-বেদনা হ'তে, অক্ষমতা ও অলসতা হ'তে, ভীরুতা ও কৃপণতা হ'তে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের যবরদস্তি হ'তে। (বুখারী হা/৬৩৬৯,মুসলিম হা/২৭০৬,মিশকাত-২৪৫৮))
(১৭) ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলুবি ছাব্বিত ক্বলবি 'আলা দীনিকা, আল্ল-হুম্মা মুছারিরফাল ক্বুলুবি ছাররিফ ক্বুলুবানা 'আলা ত্ব'আতিক।
অর্থ:'হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপরে দৃঢ় রাখ।' 'হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও'। (তিরমিজি হা/২১৪০)
(১৮) আল্ল-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াত তুক্বা ওয়াল 'আফা-ফা ওয়াল গিনা। সুবহা-নাল্ল-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহা-নাল্ল-হিল 'আযীম।
অর্থ:'হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে সুপথ, আল্লাহ ভীরুতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি। 'মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রসংশা তাঁর জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান। (মুসলিম হা/২৭২১, বুখারী হা/৬৬৮২)
(১৯) আল্ল-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা 'আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাযলিকা 'আম্মান সিওয়া-ক।
অর্থ: 'হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট কর এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন কর! (তিরমিজি হা/৩৫৬৩)
ফজিলত : যদি কোন ব্যক্তির পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণমুদ্রা ঋণও থাকে, তাহলে আল্লাহ (উক্ত দু'আর মাধ্যমে) তার থেকে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিবেন।(তিরমিজি হা/৩৫৬৩, মিশকাত হা/২৪৪৯)
(২০) আস্তাগফিরুল্ল-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ুমু ওয়া আতূবু ইলাইহ'।
'আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি'। ( আবুদাউদ হা/১৫১৭,তিরমিযী-৩৫৭৭,মিশকাত-২৩৫৩)।
ফজিলত : রাসূল (সা:) বলেন, 'যে ব্যক্তি উক্ত দোয়া পড়বে, আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন যদিও সে রণক্ষেত্র হতে পলায়ন করে থাকে।(যা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত) (আবুদাউদ হা/১৫১৭)
খালেছভাবে তওবা করলে আল্লাহ তাঁর বান্দার বিগত সকল গোনাহ মাফ করে দেন। (সূরা আল ফুরক্বান ২৫/৭১, সূরা যুমার ৩৯/৫৩
শেয়ার করুন । শেয়ার করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন। এবং আপনিও সাদকায়ে জারিয়ায় অংশ নিন। এগুলো আমি নিজের হাতে অনেক কষ্ট করে লিখেছি যারা জানে না তাদের জন্য। প্লিজ শেয়ার করুন অথবা কপি করে বিভিন্ন গ্রুপে পোষ্ট করে দিন। আপনার শেয়ারে বা আপনার কপিতে না জানা লোকদের হয়তো উপকার হতে পারে।
“প্রচার কর, যদি একটিমাত্র আয়াতও হয়”। (বুখারী হা/৩৪৬১)।