22/12/2024
তাঁর মিষ্টি হাসির মায়াজালে জড়িয়েছে বাংলাদেশের সিনেমাদর্শক
---
কবরী। চিত্রনায়িকা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা। অসাধারণ অভিনয় নৈপুণ্যে সমৃদ্ধ এক মহানায়িকা, মহাতারকা ছিলেন তিনি। তাঁর ভুবনবিখ্যাত মিষ্টি হাসির মায়াজালে জড়িয়েছে তখনকার বাংলাদেশের সিনেমাদর্শক।
মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কবরী (মিনা পাল। ধর্মান্তরিত নাম সারাহ বেগম কবরী) ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল, মায়ের নাম শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় সুতরাং ছবির নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় জীবন শুরু হয় কবরীর। ব্যাপক ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি ছবিটি অর্জন করেছিল আন্তর্জাতিক পুরস্কার। অস্বাভাবিক সফলতার সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে মিষ্টি মেয়ে কবরীর অধ্যায়। তাঁর অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- বাহানা, হীরামন, সোয়ে নদীয়া জাগে পানি, নিশি হলো ভোর, সাত ভাই চম্পা, আবির্ভাব, বাঁশরি, অরুণ বরুণ কিরণমালা, আগন্তুক, নীল আকাশের নিচে, আঁকাবাঁকা, ক খ গ ঘ ঙ, বিনিময়, রং বদলায়, পিতা পুত্র, ঘূর্ণিঝড়, সাধারণ মেয়ে, কাঁচকাটা হীরে, লালন ফকির, রক্তাক্ত বাংলা, রংবাজ, খেলাঘর, তিতাস একটি নদীর নাম, বেঈমান, অবাক পৃথিবী, পরিচয়, চলো ঘর বাঁধি, রং বেরং, রক্তের ডাক, গুন্ডা, গোপন কথা, অঙ্গার, আগুনের আলো, সারেং বৌ, নওজোয়ান, সোনার হরিণ, সোনার তরী, কলমীলতা, দেমাগ, বিয়ের ফুল, আামাদের সন্তান, জীবনের গল্প, আয়না, মেঘের কোলে রোদ, পিতা মাতার আমানত, তুমি আমার স্বামী ইত্যাদি।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য নায়িকা কবরী যেসব পুরস্কার পেয়েছেন তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (সারেং বৌ, ১৯৭৮), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা ২০১৩, বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (লালন ফকির, ১৯৭৩), সুজন সখী (১৯৭৫), সারেং বৌ (১৯৭৮), দুই জীবন (১৯৮৮) ও বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা ২০০৯। এছাড়াও প্রযোজক সমিতি চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক নানা পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।
নায়িকা কবরী টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেছেন। তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র আয়না, মুক্তি পায় ২০০৬ সালে।
সরকারি অনুদানে এই তুমি সেই তুমি নামে আরেকটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করছিলেন তিনি। এই ছবিটির শুটিং শেষ করে সম্পাদনার কাজ করছিলেন।
২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কবরীর আত্মজীবনীমূলক বই স্মৃতিটুকু থাক প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের ইতিহাসের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন কবরী। বাংলা চলচ্চিত্রের অসম্ভব জনপ্রিয় নায়িকা ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তথা শিল্প-সংস্কৃতির এক উজ্জ্বলতম নক্ষত্র ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেও ছিল তাঁর অসামান্য অবদান। মরণব্যাধি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭১ বছর বয়সে ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
---
[ভাষাচিত্র প্রকাশিত ‘চলচ্চিত্রের ৫০ কিংবদন্তি’ বই থেকে সংক্ষেপিত]
---
প্রয়াত অভিনেত্রী কবরীসহ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ৫০ জন কিংবদন্তিকে নিয়ে এ. কে. আজাদ-এর গ্রন্থনা, সম্পাদনায় ‘চলচ্চিত্রের ৫০ কিংবদন্তি’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে ভাষাচিত্র থেকে।
তাদের কর্মবহুল জীবন সম্পর্কে জানতে বইটি অর্ডার করুন ভাষাচিত্র (BHASHACHITRA) পেজ ইনবক্সে অথবা হোয়াটস্অ্যাপ করুন 01930879794 নাম্বারে।
---
বইটি অনলাইন বুকশপ রকমারি থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন। রকমারি লিংক : https://www.rokomari.com/.../cholochitrer-50-kingbodonti