05/08/2024
প্রিয় বন্ধুরা,
আমরা সকলে মিলে এক দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমাদের একটি দাবি আদায় করেছি। এই জয় আমাদের সকলের জন্য। কিন্তু এই জয়ের মধ্যে যেন কোনো অন্ধকার ছায়া না পড়ে সেদিকে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
দুঃখের সাথে বলতে হয়, আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ এখনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা ইসলামের কোনো শিক্ষার সাথে মিলে না। ইসলাম সকল মানুষকে সমান মর্যাদা দেয়, ধর্ম, জাতি বা গোত্র নির্বিশেষে।
আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিমকে নির্যাতন করে, তার অধিকার খর্ব করে, তাকে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয় বা তাদের অসম্মতিতে ধন-সম্পদ হরণ করে নেয়, কেয়ামতের দিন আমিই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।’ (আবু দাউদ: ২৫০৩)
উপরে উল্লেখিত হাদিসটি ইসলামে সংখ্যালঘুদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতার একটি স্পষ্ট নিদর্শন। এটি বোঝায় যে, কোনো মুসলমান যদি অন্য কোন ধর্মের ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে সে জান্নাতের ঘ্রাণ পর্যন্ত পাবে না। ইসলাম সকল মানুষকে সমান মনে করে। ধর্ম, জাতি বা গোত্র নির্বিশেষে সকলেরই সমান অধিকার রয়েছে। ইসলাম অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতি সহিষ্ণু হতে শেখায়। তাই আজকের এই বিজয়ের দিনে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অন্যায় করা যাবে না। মনে রাখবেন, ইসলাম সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পত্তি ও মর্যাদার সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ইসলাম শান্তি, সহিষ্ণুতা এবং ন্যায়বিচারের উপর জোর দেয়।ইসলামের দৃষ্টিতে সকল মানুষই আল্লাহর সৃষ্টি। ধর্ম, জাতি বা গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষেরই সমান অধিকার রয়েছে। কোরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, "হে মানবজাতি! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন গোত্র ও বংশের লোক করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সম্মানিত তোমাদের মধ্যে যিনি অধিকতর মাত্রায় পরহেজগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, খবরদার।" (সূরা হুজরাত: ১৩)
আমরা যারা মুসলমান, আমাদের দায়িত্ব হলো ইসলামের এই সুন্দর শিক্ষাগুলোকে অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমাদের সকলকে মিলে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করার জন্য কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের দেশকে শান্তিপূর্ণ ও সহিষ্ণু করে গড়ে তুলতে পারি।
লেখাঃ রৌসুল আজম সুমন