07/06/2021
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সারাদেশে প্রান্তিক পর্যায়ে সকল ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ‘এক দেশ, এক রেট’ ট্যারিফ উদ্ধোধন
সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য ৫০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা নির্ধারণ
ঢাকা, ০৬ জুন, ২০২১ খ্রিঃ-
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ‘ইন্টারনেটের মূল্য যুক্তি সংগত পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে’ এর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেশের সকল ইউনিয়নের গ্রাহকের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য প্রান্তিক পর্যায়ে এক দেশ, এক রেট ট্যারিফ অনুযায়ী ৫ (পাঁচ) এমবিপিএস শেয়ার্ড ব্যান্ডউইথ সর্বোচ্চ প্যাকেজ মূল্য ৫০০ টাকা, ১০ (দশ) এমবিপিএস প্যাকেজের মূল্য সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা এবং ২০ (বিশ) এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ প্যাকেজ এর মূল্য সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বিটিআরসির প্রধান সম্মেলনে কক্ষে কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোঃ মোস্তাফা জব্বার এর উদ্ধোধন করেন। প্রান্তিক পর্যায়ে সারাদেশের জন্য বিটিআরসি প্রথমবারের মত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ট্যারিফ নির্ধারণ করে। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের গ্রাহকগণ এই ট্যারিফ অনুযায়ী আইএসপিদের নিকট থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন, যা ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান করোনা মহামারীর সময় ইন্টারনেটের গুরুত্ব সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেটের সেবার পাশাপাশি ঘরে ঘরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেয়ার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের চরাঞ্চলে ও হাওড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে।
স্বাগত বক্তব্যে বিটিআরসি’র সিস্টেমস এন্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাসিম পারভেজ মোবাইল ইন্টারনেট এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তুলনা মূলক চিত্র উপস্থাপনের পাশাপাশি পুরো ট্যারিফ নির্ধারণ প্রক্রিয়া সর্ম্পকে একটি তথ্য বহুল উপস্থাপনা প্রদান করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ আফজাল হোসেন বলেন আগে ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করে না দেওয়ায় এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন প্যাকেজ বিদ্যমান ছিল। নতুন এক দেশ এক রেট নির্ধারণের ফলে প্রান্তিক গ্রাহকগণ নির্দিষ্ট মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পাবেন এবং এর ফলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হারও বাড়বে। তবে ইন্টারনেট সেবাদানকারীরা যেন প্যাকেজে নির্দিষ্ট গতি পান সে বিষয় নজরদারীর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, এক দেশে এক রেট ট্যারিফ নির্ধারণের ফলে ইন্টারনেট সেবা প্রদান ও গ্রহণের ক্ষেত্রে শৃংখলা ফিরে আসবে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব আমিনুল হাকিম এক দেশ এক রেট ট্যারিফ নির্ধারণকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এর ফলে আইএসপিদের সাথে ব্যবহারকারীদের দূরত্ব কমবে। এনটিটিএন ও আইআইজিদের ট্যাারিফ নির্ধারণের জন্য বিটিআরিসির প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়াও বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ মোঃ রফিকুল মতিন এবং এনটিটিএন ও আইআইজি অপারেটরদের প্রতিনিধিগণ বিটিআরসির এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানান এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং সেবা প্রাপ্তিকে আরো সহজ করার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, বিটিআরসি টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখে সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাবে।
বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার কোন ট্যারিফ না থাকায় শহর ও গ্রামের সেবার মান ও মূল্যে বিস্তর তফাৎ রয়েছে এবং গ্রাহক কম থাকায় অনেক আইএসপি ইউনিয়ন পর্যায়ে যেতে আগ্রহী হয় না অথবা গেলেও অধিক মূল্য ধার্য করেন। নতুন এক দেশ এক রেট ট্যারিফের মাধ্যমে সকল ইউনিয়নের জন্য ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ মূল্যের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করায় প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবহারকারীরা সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা পাবে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ট্যারিফ নির্ধারণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল অপারেটরদের ব্যয় ও বাজার বিশ্লেষণ, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) এর ব্যান্ডউইথ মূল্য, ন্যশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ( এনটিটিএন) এর ট্রান্সমিশন মূল্য, পয়েন্ট অব প্রেজেন্স (পপ), ইকুইপমেন্ট, ক্যাপাসিটি ব্যাক-আপ ব্যবস্থা ইত্যাদি মূল্যায়ন ও বিবেচনা করে প্রান্তিক পর্যায়ে সাশ্রয়ী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার জন্য একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য ইন্টারনেট ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশনস বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী মোঃ মুহিউদ্দিন আহমেদ, লীগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হুসেইন, স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার এ.কে.এম শহীদুজ্জামান, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসাইন, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শহীদুল আলম, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ এহসানুল কবির, লীগ্যাল এন্ড লাইসেন্স বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু, অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৈাশলী মোঃ মেসবাহুজ্জামানসহ পিজিসিবি, বাংলাদেশ রেলওয়ে, এনটিটিএন ও আইআইজিএবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।