Right Way/ সঠিক পথ

Right Way/ সঠিক পথ ইসলামের সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়াই এই পেজে মূল লক্ষ The story Of ''Universal Truth''

11/10/2024

অমুসলিম‌দের ধর্মীয় উৎসব‌কে‌ন্দ্রিক
১৩টি জরু‌রি মাসআলা
১. অমুস‌লিম‌দের পূজায় শু‌ভেচ্ছা জানা‌নো জা‌য়িয নয়। এটি ঈমান‌বিধ্বংসী আচরণ।
২. অমুস‌লিমদের পূজায় চাঁদা দেওয়া হারাম। কিন্তু মান‌বিক প্রয়োজ‌নের মাসআলা ভিন্ন। দুর্যোগ কবলিত হলে তাদের অনুদান দেওয়া জা‌য়েয।
৩. কো‌নো মাসলাহাত (প্রজ্ঞাপূর্ণ কারণ) ছাড়া পূজায় উপ‌স্থিত হওয়া নাজা‌য়েয। এটি আল্লাহর ক্রো‌ধের কারণ।
৪. অমুস‌লিম‌দের জবাইকৃত হাস, মুর‌গি, খা‌সি, কবুতর ইত‌্যা‌দি খাওয়া সম্পূর্ণ হারাম। এটি কুরআন-হাদীসের আলোকে সুস্পষ্ট প্রমা‌ণিত।
৫. দেবতার উদ্দে‌শ্যে দে‌বীর বে‌দি‌তে ব‌লিকৃত পশু মারাত্মক হারাম।
৬. দে‌বীর বে‌দি‌তে প‌রি‌বে‌শিত মিষ্টান্ন, প্রসাদ, নাড়ু, স‌ন্দেশ খাওয়া নাজা‌য়েয। এমন‌কি এ উপল‌ক্ষে তৈ‌রিকৃত নাশতা ইত‌্যা‌দি খাওয়াও উচিত নয়।
দারুল উলূম দেওবন্দ, জা‌মিয়া বিন্নু‌রিয়া, মারকাযুদ্দা‌ওয়াহসহ উপমহা‌দেশের প্রায় সকল দারুল ইফতার এটাই ফত‌ওয়া। সে‌ৗদী আলিম শাইখ সা‌লিহ আলফাউযা‌নের ফতওয়াও অ‌ভিন্ন।
৭. ফ্যাসাদ প্রতি‌রো‌ধের উদ্দেশ‌্য ছাড়া এসব মণ্ডপ পাহারা দেওয়া জা‌য়িয নয়।
৮. যেসব জি‌নিস কেবলমাত্র অমুস‌লিম‌দের পূজা ও উৎস‌বের কা‌জে ব‌্যবহৃত হয়, যেমন পটকা, টায়রা, শাঁখা ইত‌্যা‌দি, সেগু‌লোর ব‌্যবসা করা বা সরবরাহ করা মুস‌লিম‌দের জন্য জা‌য়িয নয়।
৯. অমুস‌লিম‌দের দেখা‌দে‌খি পটকা ফোঁটা‌নো বা তা‌দের পোশাক প‌রিধান করা এবং তা‌দের মত আচরণ করা না-জা‌য়েয।
১০. অমুস‌লিম‌দের কাছ থে‌কে তা‌দের ধর্মীয় প্রতীক বা চিহ্ন গ্রহণ করা, যেমন কপা‌লে সিঁদুর, চন্দন‌তিলক, পৈতা, ক্রুশ গ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম! প্রসন্নচিত্তে গ্রহণ কর‌লে ঈমান নষ্ট হ‌য়ে যে‌তে পা‌রে।
১১. মুস‌লিম‌দে‌শে অমুস‌লিম‌দের পূজামণ্ডপে আক্রমণ করা বা তা‌তে বাধা সৃ‌ষ্টি করা না-জা‌য়েয।
১২. বিধর্মীদের পূজানুষ্ঠা‌নে কুরআন তেলাওয়াত করা ও গজল প‌রি‌বেশন করা নাজা‌য়েয।
১৩. দেব‌দেবীর গুণকীর্তণমূলক কিংবা ধ‌র্মের প্রশ‌স্তিমূলক বিবৃ‌তি দেওয়া হারাম ও কুফর।
© মুফতী

07/09/2024
https://youtu.be/wsFf7CwVBRo
21/08/2024

https://youtu.be/wsFf7CwVBRo

ছাত্ররা কিভাবে সফল হলো মূল রহস্য ফাসঁ করলেন।মুফতি শরীফ মোহাম্মাদ

পৃথিবীর মধ্যে অপরাধের সর্বোচ্চটা হচ্ছে মানুষ হত্যা বা খুন। মানুষ হত্যা জঘন্যতম ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এর শুরুটা হয় নারীক...
29/06/2024

পৃথিবীর মধ্যে অপরাধের সর্বোচ্চটা হচ্ছে মানুষ হত্যা বা খুন। মানুষ হত্যা জঘন্যতম ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এর শুরুটা হয় নারীকেন্দ্রিক। কাবিল হাবিলকে খুনের মধ্য দিয়ে মানবহত্যার ইতিহাস শুরু হয়। হাদিসে এসেছে—

গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন
‘কোনো মানুষ অত্যাচারবশত হত্যা হলে তার রক্তের কিয়দংশ আদমের (আ.) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তাবে। কারণ, তিনিই প্রথম মানবসমাজে হত্যাকাণ্ড চালু করেন (বোখারি ৩৩৩৫; মুসলিম ১৬৭৭)।

তাই প্রায় প্রতিটি খুনের পেছনে নারী বা সম্পদের হাত খুঁজে পাওয়া যায়। আজকাল তো মানুষ হত্যা পান্তাভাতের মতো হয়ে গেছে। উনিশ থেকে বিশ হলেই সরিয়ে দেওয়ার চিন্তা করা হয়। হত্যাকারী ভাবে না যে তাকেও একদিন মরতে হবে। আর কোনো হত্যার রহস্যই গোপন থাকে না।

ইসলামে হত্যা নিষিদ্ধ

ইসলামে সব রকম হত্যা, রক্তপাত, অরাজকতা, সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে শান্তি, স্থিতিশীলতা, সম্প্রীতি ও নিরাপত্তার মর্মবাণী ঘোষণা দিয়ে বিদায় হজের ভাষণে বললেন, ‘তোমাদের রক্ত তথা জীবন ও সম্পদ পরস্পরের জন্য হারাম। যেমন আজকের এই দিনে, এই মাসে ও এই শহরে অন্যের জানমালের ক্ষতিসাধন করা তোমাদের ওপর হারাম।’

কোনো মুসলিমকে গালি দেওয়া আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাকে হত্যা করা কুফরি। (বুখারি ৪৮; মুসলিম ৬৪)

মানবহত্যাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কতটা ভয়ানকভাবে উপস্থাপন করেছেন তা একটি আয়াতে ফুটে উঠেছে। আল্লাহ বলেন, ‘কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারও প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন সমস্ত মানুষের প্রাণরক্ষা করল (সুরা মাইদা, ৩২)।’

এর অর্থ হচ্ছে, দুনিয়ার প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে অন্য মানুষের প্রতি মর্যাদাবোধ যদি জাগ্রত থাকে এবং তাদের প্রত্যেকে অন্যের জীবনের স্থায়িত্বে ও সংরক্ষণে সাহায্যকারী হওয়ার মনোভাব পোষণ করে তাহলেই কেবল মানবজাতির অস্তিত্ব নিশ্চিত ও নিরাপদ হতে পারে। যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে সে শুধু ওই ব্যক্তির ওপর জুলুম করে না বরং সে এ কথাও প্রমাণ করে যে, তার অন্তরে মানুষের জীবনের প্রতি মর্যাদাবোধ ও সহানুভূতির কোনো স্থান নেই। কাজেই সে সমগ্র মানবতার শত্রু। কারণ, তার মধ্যে এমন একটা বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্ব বিরাজমান যা প্রতিটি মানুষের মধ্যে পাওয়া গেলে সারা দুনিয়া থেকে মানবজাতির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি মানুষের জীবন রক্ষায় সাহায্য করে সে আসলে মানবতার সাহায্যকারী ও সমর্থক। কারণ তার মধ্যে এমন গুণ পাওয়া যায়, যার ওপর মানবতার অস্তিত্ব নির্ভরশীল।

মানবহত্যার বিচার ও শাস্তিসমূহ
------------------------------------------
কিয়ামতের দিন নরহত্যার বিচার করা হবে সর্বাগ্রে, তারপর অন্যান্য অপরাধের শাস্তি হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মানবাধিকার সম্পর্কিত সর্বপ্রথম হিসেব হবে রক্তের।’
(বুখারি ৬৫৩৩; মুসলিম ১৬৭৮)

একজন মানুষকে হত্যা করলে শুধু ওই ব্যক্তিই নিহত হয় না, তার গোটা পরিবারের ওপর এর প্রভাব বিস্তার করে। সন্তানরা হয় এতিম। স্ত্রী হয় বিধবা। মা-বাবা হয় সন্তানহারা। দীর্ঘমেয়াদি এক ট্রমার মধ্য দিয়ে যায় ফ্যামিলিটি। স্বাভাবিক মৃত্যু আর খুন এক জিনিস নয়। স্বাভাবিক মৃত্যুতে মানুষের ব্রেনে একরকম সান্ত্বনা খুঁজে পাওয়া যায়; যা খুনের ঘটনায় অনুপস্থিত।

কাউকে অবৈধভাবে হত্যা করা কবিরা গুনাহ। ব্যক্তিবিশেষে অপরাধের দায় আরও বেড়ে যায়। কুরআন বলছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর আয়াত ও নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে, অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করে এবং মানুষদের মধ্য থেকে যারা ন্যায় ও ইনসাফের আদেশ করে তাদেরকে (হে নবি) তুমি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। তাদেরই আমলসমূহ ইহকাল ও পরকালে নষ্ট হয়ে যাবে এবং তাদেরই জন্য তখন আর কেউ সাহায্যকারী হবে না (
আলে ইমরান : ২১-২২)।

খুনি হবে জাহান্নামি।
কুরআন বলছে, ‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম। তার মধ্যে সে সদা সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হবেন ও তাকে অভিশাপ দিবেন। তেমনিভাবে তিনি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভীষণ শাস্তি।’
(নিসা : ৯৩)

কিয়ামতের দিনের একটি চিত্র হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে। হত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবে। শিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বে। সে আল্লাহ তা‘আলাকে উদ্দেশ্য করে বলবে, হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের অতি নিকটেই নিয়ে যাবে।
শ্রোতারা ইবনে আব্বাসকে (রা.) হত্যাকারীর তাওবা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উপরোক্ত সুরাহ নিসা’র আয়াতটি তিলাওয়াত করে বললেন, এই আয়াত রহিত হয়নি এবং পরিবর্তনও হয়নি। অতএব তার তাওবা কোনো কাজেই আসবে না।’
(তিরমিযী ৩০২৯; ইবনু মাজাহ ২৬৭০; নাসায়ী ৪৮৬৬)

মানবহত্যা এমন এক অপরাধ, যার গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেন না। হাদিসে এসেছে, ‘প্রতিটি গুনাহ আশা করা যায় আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেবেন। তবে দুটি গুনাহ যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। আর তা হচ্ছে, কোনো মানুষ কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে অথবা ইচ্ছাকৃত কেউ কোনো মুমিনকে হত্যা করলে।’
(নাসায়ী ৩৯৮৪; আহমাদ ১৬৯০৭; হা’কিম ৪/৩৫১)

অপরাধীর শাস্তি হিসেবে হত্যার বিধান
----------------------------------------------
এটা কেবল শাসক কর্তৃক বাস্তবায়িত হতে পারে। শরীয়ত সম্মত তিনটি কারণের কোনো একটি কারণে শাসক গোষ্ঠীর জন্য কাউকে হত্যা করা বৈধ। বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘এমন কোনো মুসলিমকে হত্যা করা জায়েয নয় যে এ কথা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং আমি (নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল।

তবে তিনটি কারণের কোনো একটি কারণে তাকে হত্যা করা যেতে পারে অথবা হত্যা করা শরীয়ত সম্মত। তা হচ্ছে, সে কাউকে হত্যা করে থাকলে তাকেও হত্যা করা হবে। কোনো বিবাহিত ব্যক্তি ব্যভিচার করলে। কেউ ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করলে এবং জামাতচ্যুত হলে।’
(বুখারি ৬৮৭৮; মুসলিম ১৬৭৬; আবূ দাউদ ৪৩৫২; তিরমিযী ১৪০২; ইব্নু মাজাহ্ ২৫৮২; ইব্নু হিববান ৪৪০৮ ইব্নু আবী শাইবাহ্, হাদীস ৩৬৪৯২; আহমাদ ৩৬২১, ৪০৬৫)

গর্ভধারণের চার মাস পর গর্ভপাত করা হত্যার শামিল
------------------------------------------------------------
ভ্রুণ হত্যা বা গর্ভপাত এখন চাট্টিখানি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেন চাইলেই এমনটি করা যায়। কোনো দায়বদ্ধতা নেই। নেই কোনো জবাবদিহিতা। আসলে কি তাই? অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে অসংখ্য বনি আদম আজ এই জঘন্য পাপে জড়িত। এটা ঠান্ডা মাথার খুনি বৈ কিছুই নয়।

হাদিসে এসেছে, ‘জনৈক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহ’র রাসুল! কোন পাপটি আল্লাহর নিকট মহাপাপ বলে বিবেচিত? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা; অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বলল: অতঃপর কি? তিনি বললেন, নিজ সন্তানকে হত্যা করা ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে খাবে বলে। সে বলল, অতঃপর কি? তিনি বললেন, নিজ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করা
(বুখারি ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, ৭৫৩২; মুসলিম ৮৬)।

গর্ভধারণের চার মাসে বাচ্চা মোটামুটি আকৃতিতে চলে আসে। এরপর গর্ভপাতের অর্থই হচ্ছে বাচ্চাটাকে খুন করা। আর চার মাসের আগে খামোখা গর্ভপাত করাও শরীয়তে বৈধ নয়। শরই ওজর থাকার শর্তে তা করা যেতে পারে। তবে এতে মায়ের ভীষণ ক্ষতি হয়।

শেষ কথা হলো, ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ হত্যা হচ্ছে একটি জঘন্যতম অপরাধ। এর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অর্থাৎ নিহত ব্যক্তির বদলায় ঘাতকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ইসলামের বিধান। এ ছাড়া ঘাতকের জন্য আল্লাহর রোষানলে পড়ে ধ্বংস হওয়া এবং তার লানতের শিকার হওয়ার মতো কঠোর শাস্তি তো রয়েছেই। আর আখেরাতে তার জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন শাস্তি। একমাত্র আল্লাহর ভয়ই পারে এ অপরাধ থেকে বাঁচাতে। পরকালীন জবাবদিহিতাই পারে মানবহত্যার মত নিকৃষ্ট পাপচার থেকে রক্ষা করতে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের গোটা জাতিকে এই জঘন্য কর্ম থেকে হেফাজত করুন

31/05/2024

ইমামুল ফিকহ, ইমামুল হুজ্জাহ ইদ্রিস আশ-শাফিঈ রাহিমাহুল্লাহ বলেন —
“শির্ক ব্যতীত অন্য যে কোন পাপ নিয়ে বান্দা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে, সেই সাক্ষাৎটি একজন বিদ'আতে বিশ্বাসকারীর সাক্ষাৎ এর চেয়ে উত্তম হবে” [১]
[১] আল-বায়হাকীর ‘আল-ই'তিকাদ’ (পৃ: ১৫৮)
বইঃ শারহুস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা : ১১০

30/03/2024
30/03/2024

যাকাতুল ফিতর দেয়ার নির্ধারিত খাদ্য ...
পনির যব কিসমিস খেজুর এই চারটা হলে 1 সা বা 3 কেজি 300গ্রাম ,,,
গম হলে অর্ধ সা বা 1কেজি 65 গ্রাম
------------------------------------
পূর্ব যুগে গমের দাম বেশি ছিল তাই অর্ধ সা বলেছিলেন,,
সামর্থ অনুযায়ী কম বা বেশি দামের খাদ্য বা সম মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা উচিত ....
দরিদ্রদের সহযোগীতার জন্য যেহেতু দেয়া যাকে যেভাবে দিলে ভাল হয় সেভাবে দিন , ..
টাকা দিলে সুবিধা হলে তা দিন খাদ্য দিলে ভাল হলে তা দিন ,,
দু ভাবেই দেয়া যাবে,,. উল্লেখিত পাচটি খাদ্য পূর্ব যুগের প্রধান খাদ্য ছিল,, বর্তমান যুগে দরিদ্ররা তা কম খায় তাই তারা যেটা খায় সেটা নির্ধারনের জটিলতা এড়াতে টাকা দিলেই তাদের রুচিবোধ প্রয়োজন অনুযায়ী কিনে নিবে অন্যথায় আপনার দেয়া খাবারটি ফেলে দেয়ার উপযুগী হতে পারে ..

28/03/2024

যে সাত শ্রেণীর লোককে আল্লাহ অপছন্দ করেন | Mizanur Rahman Azhari | পেনাং কনফারেন্স ২০২৩

26/03/2024

সুরা মুলকের আমল ও ফজিলত
---------------------------------------------------
নামকরণ:
সূরার প্রথম আয়াতাংশ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ (তাবারকাল্লাযি বিয়াদিহিল মুলক) এর আল মুলক শব্দটিকে এ সূরার নাম হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে।

মুলক (الْمُلْكُ) শব্দের অর্থ : রাজত্ব, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা ইত্যাদি। দুনিয়া ও আখেরাতের সকল প্রকার রাজত্ব ও ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার হাতে। তবে দুনিয়ার রাজত্ব ও ক্ষমতা ক্ষণিকের জন্য আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হাতে দিলেও তার প্রকৃত ও একচ্ছত্র মালিক একমাত্র তিনি। তিনি যখন ইচ্ছা কারো কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন। الْمُلْكُ শব্দটি অত্র সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত আছে। সেখান থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।

নাযিল হওয়ার সময়-কাল :

এ সূরাটি কোন্ সময় নাযিল হয়েছিলো তা কোন নির্ভরযোগ্য বর্ণনা থেকে জানা যায় না। তবে বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, সূরাটি মক্কী জীবনের প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাসমূহের অন্যতম।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য:

এ সূরাটিতে একদিকে ইসলামী শিক্ষার মূল বিষয়সমূহ তুলে ধরা হয়েছে। অন্যদিকে যেসব লোক বেপরোয়া ও অমনোযোগী ছিল তাদেরকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে সজাগ করে দেয়া হয়েছে। মক্কী জীবনের প্রথম দিকে নাযিল হওয়া সূরাসমূহের বৈশিষ্ট্য হলো, তাতে ইসলামের গোটা শিক্ষা ও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী করে পাঠানোর উদ্দেশ্য সবিস্তারে নয় বরং সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ফলে তা ক্রমান্বয়ে মানুষের চিন্তা-ভাবনায় বদ্ধমূল হয়েছে। সেই সাথে মানুষের বেপরোয়া মনোভাব ও অমনোযোগিতা দূর করা, তাকে ভেবে-চিন্তে দেখতে বাধ্য করা এবং তার ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়ে তোলার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

প্রথম পাঁচটি আয়াতে মানুষের এ অনুভূতিকে জাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, যে বিশ্বলোকে সে বাস করছে তা এক চমৎকার সুশৃংখল ও সুদৃঢ় সাম্রাজ্য। হাজারো তালাশ করেও সেখানে কোন রকম দোষ-ত্রুটি, অসম্পূর্ণতা কিংবা বিশৃঙ্খলার সন্ধান পাওয়া যাবে না। এক সময় এ সাম্রাজ্যের কোন অস্তিত্ব ছিল না। মহান আল্লাহই একে অস্তিত্ব দান করেছেন, এর পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও শাসনকার্যের সমস্ত ইখতিয়ার নিরংকুশভাবে তাঁরই হাতে। তিনি অসীম কুদরতের অধিকারী। এর সাথে মানুষের একথাও বলে দেয়া হয়েছে যে, এ পরম জ্ঞানগর্ভ ও যুক্তিসংগত ব্যবস্থার মধ্যে তাকে উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করা হয়নি। বরং এখানে তাকে পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার শুধু সৎকর্ম দ্বারাই সে এ পরীক্ষায় সফলতা লাভ করতে সক্ষম।

আখেরাতে কুফরীর যে ভয়াবহ পরিণাম দেখা দেবে ৬ থেকে ১১ নং আয়াতে তা বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তাঁর নবীদের পাঠিয়ে এ দুনিয়াতেই সে ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন। এখন তোমরা যদি এ পৃথিবীতে নবীদের কথা মেনে নিয়ে নিজেদের আচরণ ও চাল-চলন সংশোধন না করো তাহলে আখেরাতে তোমরা নিজেরাই একথা স্বীকার করতে বাধ্য হবে যে, তোমাদের যে শাস্তি দেয়া হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তোমরা তার উপযোগী।

১২ থেকে ১৪ নং আয়াতে এ পরম সত্যটি বুঝানো হয়েছে যে, স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে বেখবর থাকতে পারেন না। তিনি তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য প্রত্যেকটি কাজ ও কথা এমনকি তোমাদের মনের কল্পনাসমূহ পর্যন্ত অবগত। তাই নৈতিকতার সঠিক ভিত্তি হলো, মন্দ কাজের জন্য দুনিয়াতে পাকড়াও করার মত কোন শক্তি থাক বা না থাক এবং ঐ কাজ দ্বারা দুনিয়াতে কোন ক্ষতি হোক বা না হোক, মানুষ সবসময় অদৃশ্য আল্লাহর সামনে জবাবদিহির ভয়ে সব রকম মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে। যারা এ কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করবে আখেরাতে তারাই বিরাট পুরষ্কার ও ক্ষমালাভের যোগ্য বলে গণ্য হবে।

১৫ থেকে ২৩নং আয়াতে পরপর কিছু অবহেলিত সত্যের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে সে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার আহবান জানানো হয়েছে। এগুলোকে মানুষ দুনিয়ায় নিত্য নৈমিত্তিক সাধারণ ব্যাপার মনে করে সন্ধানী দৃষ্টি মেলে দেখে না। বলা হয়েছে, এ মাটির প্রতি লক্ষ্য করে দেখো। এর ওপর তোমরা নিশ্চিন্তে আরামে চলাফেরা করছো এবং তা থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় রিযিক সংগ্রহ করছো। আল্লাহ তাআলাই এ যমীনকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। তা না হলে যে কোন সময় এ যমীনের ওপর ভূমিকম্প সংঘটিত হয়ে তা তোমাদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারে। কিংবা এমন ঝড়-ঝঞ্চা আসতে পারে যা তোমাদের সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দেবে। মাথার ওপরে উড়ন্ত পাখীগুলোর প্রতি লক্ষ্য করো। আল্লাহই তো ওগুলোকে শূন্যে ধরে রাখেন। নিজেদের সমস্ত উপায়-উপকরণের প্রতি গভীরভাবে লক্ষ্য করে দেখো। আল্লাহ যদি তোমাদের শাস্তি দিতে চান তাহলে এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারে? আর আল্লাহ যদি তোমাদের রিযিকের দরজা বন্ধ করে দেন, তাহলে এমন কে আছে, যে তা খুলে দিতে পারে? তোমাদেরকে প্রকৃত সত্য জানিয়ে দেয়ার জন্য এগুলো সবই প্রস্তুত আছে। কিন্তু এগুলোকে তোমরা পশু ও জীব-জন্তুর দৃষ্টিতে দেখে থাকো। পশুরা এসব দেখে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। মানুষ হিসেবে আল্লাহ তোমাদেরকে যে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং চিন্তা ও বোধশক্তি সম্পন্ন মস্তিষ্ক দিয়েছেন, তা তোমরা কাজে লাগাও না। আর এ কারণেই তোমরা সঠিক পথ দেখতে পাও না।

২৪ থেকে ২৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, অবশেষে একদিন তোমাদেরকে নিশ্চিতভাবে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে। নবীর কাজ এ নয় যে, তিনি তোমাদেরকে সেদিনটির আগমনের সময় ও তারিখ বলে দেবেন। তার কাজ তো শুধু এতটুকু যে, সেদিনটি আসার আগেই তিনি তোমাদের সাবধান করে দেবেন। আজ তোমরা তার কথা মানছো না। বরং ঐ দিনটি তোমাদের সামনে হাজির করে দেখিয়ে দেয়ার দাবি করছো। কিন্তু যখন তা এসে যাবে এবং তোমরা তা চোখের সামনে হাজির দেখতে পাবে তখন তোমরা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলবে।

২৮ থেকে ২৯নং আয়াতে মক্কার কাফেরদের কিছু কথার জবাব দেয়া হয়েছে। এসব কথা তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সংগী-সাথীদের বিরুদ্ধে বলতো। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অভিশাপ দিতো এবং তাঁর ও ঈমানদারদের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য বদ দোয়া করতো। তাই বলা হয়েছে যে, তোমাদেরকে সৎপথের দিকে আহবানকারীরা ধ্বংস হয়ে যাক বা আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করুক তাতে তোমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন কি করে হবে? তোমরা নিজের জন্য চিন্তা করো। আল্লাহর আযাব যদি তোমাদের ওপর এসে পড়ে তাহলে কে তোমাদেরকে রক্ষা করবে? যারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে এবং যাঁরা তাঁর ওপরে তাওয়াক্কুল করেছে তোমরা মনে করছো তারা গোমরাহ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এমন এক সময় আসবে যখন প্রকৃত গোমরাহ কারা তা প্রকাশ হয়ে পড়বে।

অবশেষে মানুষের সমানে একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে এবং সে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে দেখতে বলা হয়েছে: মরুভূমি ও পবর্তময় আরবভূমিতে যেখানে তোমাদের জীবন পুরোটাই পানির ওপর নির্ভরশীল, পানির এসব ঝর্ণা ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে। এসব জায়গায় পানির উৎসগুলো যদি ভূগর্ভের আরো নীচে নেমে উধাও হয়ে যায় তাহলে আর কোন্ শক্তি আছে, যে এই সঞ্জীবনী-ধারা তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারে?

সূরা মুলকের ফজিলত:
সূরা মুলক একটি বিশেষ ফযীলতপূর্ণ সূরা। আবূূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :

إِنَّ سُورَةً فِي الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً شَفَعَتْ لِصَاحِبِهَا حَتّي غُفِرَ لَهُ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ

নিশ্চয়ই কুরআনে ত্রিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরা রয়েছে যা কিয়ামত দিবসে পাঠককে সুপারিশ করবে ফলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। তা হল সূরা মুলক। (আবূূ দাঊদ হা. ১৪০০, তিরমিযী হা. ২৮৯১, নাসায়ী হা. ৩১০, সহীহ)

আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : কুরআনে একটি সূরা আছে যা পাঠকের জন্য আল্লাহ তা‘আলার সাথে ঝগড়া করবে, এমনকি ঝগড়া করতে করতে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তা হল সূরা মুলক। (দুররুল মানসুর ৬/২৪৬, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৭/১২৩১, বণর্নাকারীগণ নির্ভরযোগ্য )

জাবের (রাঃ) বলেন : নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

(ال۬مّ۬ﭐﺆ تَنْزِیْلُ الْکِتٰبِ) (সূরা সিজদাহ) ও

(تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ)

(সূরা মুলক) না পড়ে ঘুমাতেন না। (তিরমিযী হা. ২৮১২, মিশকাত হা. ২১৫৫, সহীহ)

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ ضَرَبَ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خِبَاءَهُ عَلَى قَبْرٍ وَهُوَ لاَ يَحْسِبُ أَنَّهُ قَبْرٌ فَإِذَا فِيهِ إِنْسَانٌ يَقْرَأُ سُورَةَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ حَتَّى خَتَمَهَا فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي ضَرَبْتُ خِبَائِي عَلَى قَبْرٍ وَأَنَا لاَ أَحْسِبُ أَنَّهُ قَبْرٌ فَإِذَا فِيهِ إِنْسَانٌ يَقْرَأُ سُورَةَ تَبَارَكَ الْمُلْكُ حَتَّى خَتَمَهَا ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ هِيَ الْمَانِعَةُ هِيَ الْمُنْجِيَةُ تُنْجِيهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেনঃ কোন এক সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এক সাহাবী একটি ক্ববরের উপর তার তাঁবু খাটান। তিনি জানতেন না যে, তা একটি কবর। তিনি হঠাৎ বুঝতে পারেন যে, ক্ববরে একটি লোক সূরা আল-মুলক পাঠ করছে। সে তা পাঠ করে সমাপ্ত করলো। তারপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি একটি ক্ববরের উপর তাঁবু খাটাই। আমি জানতাম না যে, তা ক্ববর। হঠাৎ বুঝতে পারি যে, একটি লোক সূরা আল-মুলক পাঠ করছে এবং তা সমাপ্ত করেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সূরাটি প্রতিরোধকারী নাজাত দানকারী। এটা কবরের আযাব হতে তিলাওয়াতকারীকে নাজাত দান করে।

জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৮৯০

সুরা আল-মুলক। পবিত্র নগরী মক্কায় অবর্তীণ কুরআনুল কারিমের ৬৭তম সুরা। আয়াত সংখ্যা ৩০। রুকু ২। কুরআন তেলাওয়াতের আমলকারীদের জন্য সুরাটি অনেক ফজিলতপূর্ণ। যা তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার আগ পর্যন্ত সুপারিশ করত থাকে।

সুরা মুলক কেনো আমল করবো

মানুষকে গোনাহমুক্ত জীবন দানের জন্য কুরআন সুন্নায় অনেক আমলের বর্ণনা দিয়েছেন বিশ্বনবি। লক্ষ্য একটাই যাতে মানুষ গোনাহমুক্ত জীবন লাভ করতে পারে। এটিও তার একটি।

হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে– হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে বললেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি হাদিস শুনাব, যাহা শুনে তুমি খুশি হবে? উত্তরে সে বলল, হ্যাঁ শুনান। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তুমি নিজে সুরা মুলক পড় এবং পরিবারের সবাইকে ও প্রতিবেশীকে উহা শিক্ষা দাও।কারণ উহা মুক্তিদানকারী ও ঝগড়াকারী। কেয়ামতের দিন আল্লাহর সঙ্গে ঝগড়া করে উহার পাঠকারীকে সে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করবে এবং কবরের আজাব থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার একান্ত কামনা যে, এই সুরাটি আমার প্রত্যেক উম্মতের অন্তরে গেঁথে (মুখস্থ) থাকুক।’ (ইবনে কাসির)

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কুরআন মাজিদে ৩০ (ত্রিশ) আয়াত বিশিষ্ট একটি সুরা রয়েছে, যা তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার আগ পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতেই থাকবে। আর সুরাটি হলো تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ অর্থাৎ সুরা মুলক।’ (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

– রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমার মন চায় প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়ে যেন সুরা মুলক মুখস্ত থাকে।’ (বাইহাকি)

– হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘তোমরা সুরা মুলক শিখে নাও এবং নিজেদের স্ত্রী-সন্তানদের শেখাও। এটা কবরের আজাব হতে রক্ষা করবে এবং কেয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে এই সুরা পাঠকারীর পক্ষে কথা বলে তাকে মুক্ত করবে।’

– রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মুলক তেলাওয়াতের আমল করবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে।’ (তিরমিজি, মুসতাদরাকে হাকেম)

সুরা মুলক কখন পড়তে হয়?

সুরা মুলক রাতের বেলা পড়া উত্তম, তবে অন্য যেকোনো সময়ও পড়া যাবে। সুরাটি অর্থ বুঝে নিয়মিত পড়ায় রয়েছে অনন্য তাৎপর্য। এই সুরা নামাজের সঙ্গে পড়াও উত্তম। মুখস্ত না থাকলে দেখে দেখে অর্থ বুঝে পড়লে বিশেষ সাওয়াব পাওয়া যায়।

হাদিসে এসেছে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা মুলক তেলাওয়াত না করে রাতে ঘুমাতে যেতেন না।’ (তিরমিজি)

আরও এসেছে,
হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলিফ লাম মীম তানযিল ও তাবারাকাল্লাজি না পড়ে কখনো ঘুমাতে যেতেন না।’

– সুরা মূলক ৪১ বার (একচল্লিশ) তেলাওয়াত করলে সব বিপদ-আপদ হতে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ঋণ পরিশোধ হয়। এ সুরা পাঠে কবরের আজাব থেকেও বাঁচা যায়।

উল্লেখ্য যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা মুলক না পড়ে ঘুমাতে যেতেন না মর্মে বর্ণনার উপর ভিত্তি করেই আলেম-ওলামা ও বুজুর্গানে দ্বীনগণ ও ইসলামিক স্কলারগণ ইশার নামাজের পর সুরা মুলকের তেলাওয়াতের আমল করার কথা বলেন। এছাড়া রাতের যে কোনো অংশে সুরা মুলক পাঠ করা যায় ৷ সুতরাং রাতে ঘুমানোর আগে কিংবা ইশার নামাজের পরে বুঝে বুঝে সুরা মুলক পড়া যেতে পারে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুরা মুলকের আমল নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূরা মুলক অডিও-ভিডিও তেলাওয়াত

বর্তমানে কুরআন শেখা সহজ ৷ সুরা মূলক যে কেউ চাইলেই শিখতে ও আমল করতে পারে ৷ নেট দুনিয়া আমাদের সে সুযোগ করে দিয়েছে ৷ আমরা একটু কষ্ট করে সার্চ করে নিয়মিত এ সুরাটি শুনলে অল্প সময়ের ব্যবধানে তা মুখস্থ হয়ে যাওয়ার কথা ৷

লেখকঃ
হাফেজ মাওলানা দীদার মাহদী

24/03/2024

সাইয়েদুল ইস্তেগফার ----
-----------------------------------
للَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
--
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
-------------------------
হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই

24/03/2024
https://youtu.be/YjQj4kgGjwI
22/03/2024

https://youtu.be/YjQj4kgGjwI

তারাউইহ ২০ রাকাত, না কি ৮ - সহজ সমাধান - ️খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি:) #তারাবি #তারাবীহ #তারাবী #তারাবির_নামা.....

21/03/2024

রমজান মাস। এ মাসেই নাযিল করা হয়েছে আল কোরআন,যা মানবজাতির জন্য হিদায়াত ও সত্য মিথ্যার মধ্যে পার্থক্যকারী।
(আল বাকারা~১৮৫)

14/03/2024

জলজ প্রাণীর হালাল-হারামের বিধান সম্পর্কে কি বলছে ইসলাম?
-----------------------------------
--
কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি সমুদ্রকে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা (মাছের) গোশত খেতে পারো।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৪)
উক্ত আয়াতে ‘তাজা গোশত’ শব্দের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদ ইবনে জারির তাবারি (রহ.) লিখেছেন, ‘তাজা গোশত’ হলো সমুদ্র থেকে শিকারকৃত মাছ। (তাফসিরে তাবারি ১৭/১৮০)

হাদিসে আছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সমুদ্রপথে আসা-যাওয়া করি এবং সঙ্গে সামান্য মিঠা পানি নিই। যদি আমরা তা দিয়ে অজু করি তাহলে পিপাসার্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কি সমুদ্রের পানি দিয়ে অজু করতে পারি? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সমুদ্রের পানি পবিত্র ও তার মৃত জীব হালাল।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৬৯)

উক্ত হাদিসে বর্ণিত পানির মৃত জীব আসলে কী? এর ব্যাখ্যায় অন্য হাদিসে এসেছে, ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের জন্য দুই ধরনের মৃত জীব ও দুই ধরনের রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত জীব দুটি হলো মাছ ও টিড্ডি (পঙ্গপাল), আর দুই প্রকারের রক্ত হলো কলিজা ও প্লীহা।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩১৪)

মাছ খাওয়া সর্বসম্মতভাবে হালাল: উক্ত আয়াত ও হাদিসসমূহের আলোকে সব ইমামের ঐকমত্যে পানির জীবের মধ্যে মাছ খাওয়া হালাল। এমনকি মৃত হলেও তা খাওয়া হালাল, চাই তা যে কারণেই মারা যাক। যেমন—পানি থেকে ওঠানোর কারণে, কোনো আঘাত পাওয়ায়, পানিতে কোনো বিষ মিশানোর কারণে বা সরাসরি সূর্যের তাপ পড়া ইত্যাদি কারণে মারা যায় তা নষ্ট হওয়ার আগে খাওয়া হালাল।

হ্যাঁ, যে মাছ বিনা কারণে মারা যাবে তা খাওয়া মাকরুহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সাগরে নিক্ষেপকৃত মাছ, শুকনায় উঠে যাওয়া মাছ খাও। আর বিনা কারণে মৃত মাছ খেয়ো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮১৫)

অপর বর্ণনায় জাবের (রা.) বলেন, ‘বিনা কারণে ভেসে ওঠা মৃত মাছ খেয়ো না।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৮৬৬২)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আদমসন্তানের জন্য সমুদ্রের সব মাছ জবাই করে (হালাল করে) দিয়েছেন।’ (সুনানে দারাকুতনি, হাদিস : ৪৭১০)

মাছের সংজ্ঞা: মাছের সংজ্ঞা ফিকহবিদদের কাছে নির্ধারিত নেই; বরং সর্বসাধারণ বা মুসলিম মাছ বিশেষজ্ঞদের কাছে মাছ হিসেবে যে জলজীব পরিচিত, শরিয়তের দৃষ্টিতে সেটিই মাছ বলে গণ্য হবে এবং তা খাওয়াও হালাল হবে। আর যে জলজীব মাছ বলে পরিচিত নয়, তা হালাল হবে না। মুফতি আমিমুল ইহসান মুজাদ্দিদি (রহ.) লিখেছেন, ‘মাছ হলো মানুষের মধ্যে যে জলজ প্রাণীকে মাছ বলে গণ্য করা হয়। এটি এমন এক জলজ প্রাণী, যার অসংখ্য প্রকারভেদ ও আকৃতি রয়েছে।’ (আত্তারিফাতুল ফিকহিয়্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)

মাছ ছাড়া অন্য জলজ প্রাণী খাওয়া অবৈধ: জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া অন্য সব প্রাণী খাওয়া নাজায়েজ। (বাদায়েউস সানায়ে : ৫/৩৫) এটি ইমাম আবু হানিফা ও সুফিয়ান সাওরি (রহ.)সহ আরো অনেক ফকিহর মতামত। ইবনে হাজর আসকলানি (রহ.)-এর মতে, এটি শাফেয়ি মাজহাবেরও নির্ভরযোগ্য অভিমত। (ফাতহুল বারি ৯/৪১৯)

বর্তমানে অনেককে দেখা যায়, কাঁকড়া, ব্যাঙ ইত্যাদি খেয়ে থাকে, এগুলো খাওয়া নাজায়েজ। কেননা মহান আল্লাহ সফল মুমিনদের গুণাবলি উল্লেখ করতে গিয়ে ইরশাদ করেন, ‘এবং নিজেদের জন্য উৎকৃষ্ট বস্তু হালাল করে আর নিকৃষ্ট বস্তু হারাম করে।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)

ইমাম মারগিনানি (রহ.) লিখেছেন, জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া কোনো প্রাণী খাওয়া যাবে না। কেননা মহান আল্লাহ নিকৃষ্ট বস্তু হারাম করেছেন, আর মাছ ছাড়া পানির সব প্রাণীই নিকৃষ্ট। (হেদায়া ৪/৩৫৩)

হাদিস শরিফে এসেছে, জনৈক ডাক্তার ওষুধের মধ্যে ব্যাঙ মিশ্রিত করার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে অনুমতি চাইলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ব্যাঙ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৭১)

উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় ওলামায়ে কেরাম বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ব্যাঙ হত্যা করতে এ জন্য নিষেধ করেছেন যে যেহেতু ব্যাঙ হারাম প্রাণী, তাই তা হত্যা করলে তা খাওয়া বৈধ হবে না, যখন হত্যা করলে খাওয়া বৈধ হবে না, তাহলে অকারণে একটি প্রাণী হত্যা করে লাভ কী?
(আহকামুল কোরআন, জাসসাস ৪/১৯০, বিনায়া ১১/৬০৬)

সারকথা হলো, এটি প্রমাণসিদ্ধ কথা যে জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী খাওয়া জায়েজ নেই। কেননা জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছই একমাত্র উৎকৃষ্ট হালাল বস্তু, আর বাকিগুলো নিকৃষ্ট ও হীন বস্তু। আর মাছের বৈধতার মধ্যে কোনো ফকিহের কোনো দ্বিমত নেই। এ ছাড়া অন্যগুলোর বৈধতা-অবৈধতার ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।
আর শরিয়তের একটি সর্বসিদ্ধ মূলনীতি হলো, যে বস্তুর হালাল-হারাম নিয়ে দ্বিমত বা সন্দেহ হয়, সেখানে সতর্কতামূলক হারাম ও অবৈধতার দিকটিকেই প্রাধান্য দিতে হয়।

এ দৃষ্টিকোণ থেকেও ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও সুফিয়ান সাওরি (রহ.)সহ যেসব ফকিহ জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী খাওয়া জায়েজ নেই বলে ফতোয়া দিয়েছেন, তাঁদের কথাই সতর্কতামূলক আমলযোগ্য ও অগ্রাধিকারযোগ্য।
তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম : ৩/৫১১)

[৮ জুমাদাল উখরা রোজ জুমাবার মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়ায় বাদ আসর পাহাড়পুরী হুজুরের বয়ান থেকে।]আল্লাহ তাআলা যখন মানুষ...
08/03/2024

[৮ জুমাদাল উখরা রোজ জুমাবার মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়ায় বাদ আসর পাহাড়পুরী হুজুরের বয়ান থেকে।]

আল্লাহ তাআলা যখন মানুষ সৃষ্টি করার ইচ্ছা করলেন তখন ফেরেশতাদেরকে বললেন, আমি তো যমিনে আমার প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে চাই। তখন ফেরেশতাগণ বলেছিলেন, মানুষ তৈরি করার কী দরকার?! আমরাইতো আপনার প্রশংসা করি ও পবিত্র বর্ণনা করি। জবাবে আল্লাহ তাআলা বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জান না।

বুখারী শরীফের শেষ হাদীস-

كلمتان حبيبتان إلى الرحمن، خفيفتان على اللسان، ثقيلتان في الميزان : سبحان الله وبحمده سبحان الله العظيم.

দুটি কালিমা আল্লাহর কাছে খুব প্রিয়, কিন্তু পড়তে খুব সহজ, আর মীযানের পাল্লায় খুব ভারি : সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী সুবহানাল্লাহিল আযীম। তো তাসবীহ আল্লাহর বড় প্রিয়।

অন্য হাদীসে আছে-

من قال سبحان الله وبحمده في يوم مأة مرة حُطَّتْ عنه خطاياه وإن كانت مثل زبد البحر.

অর্থাৎ যে ব্যক্তি দৈনিক একশ বার সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী পড়বে তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৪০৫; মুসলিম, হাদীস : ২৬৯১

তো সুবহানাল্লাহ কত দামি!

মানুষ এমন এক সৃষ্টি যাকে আল্লাহ তাআলা শ্রেষ্ঠ বানিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

ولقد ولقد كرمنا بنى آدم

অর্থাৎ আমি বনী আদমকে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছি।

ফার্সী একটি কবিতা আছে-

از ملائك بهره دارى واز بهائم نيزهم

بكذر از حظ بهائم كز ملائك بكذرى

মানুষের মধ্যে ফেরেশতাদের স্বভাবও আছে, পশুর স্বভাবও আছে। মানুষ যদি পশুর স্বভাবগুলো দূর করতে পারে, এগুলোর ইসলাহ করতে পারে তাহলে সে ফেরেশতাদের থেকেও আগে বেড়ে যায়।

এক বুযুর্গ বলেন,

كر خواهى كه شود دل تو جون آينه

ده جيرز بيرون كن از درون سينه

حرص وأمل وغضب وكذب وغيبة

بخل وحسد وريا ء كبر وكينه

তুমি যদি চাও, তোমার দিলটা আয়নার মতো স্বচ্ছ, পরিষ্কার হয়ে যাক তাহলে দিলটাকে দশটি রোগ থেকে পরিষ্কার কর। মূল দশটা রোগ আছে এগুলোর চিকিৎসা কর। জানোয়ারের স্বভাবগুলো যদি এক এক করে ইসলাহ করতে পার তাহলে তুমি ফেরেশতাদের থেকেও আগে বেড়ে যাবে।

দিলের দশ রোগ
-------------------------------
দিলের রোগ তো অনেকগুলোই আছে। কিন্তু মৌলিক রোগ হল দশটা। ১. লোভ-দুনিয়ার লোভ। ২. দীর্ঘ আশা। আরবীতে বলা হয় ‘আমাল’। একটি বাড়ির মালিক হয়েছে, চলবে না, আরেকটি বাড়ির মালিক হতে হবে। একটি গাড়ির মালিক হয়েছে হবে না, আরেকটি গাড়ি লাগবে। একটি ফ্যাক্টরির মালিক হয়েছে, না, হবে না। আরেকটি ফ্যাক্টরির মালিক হতে হবে। আরো লাগবে, আরো লাগবে। ‘হাল মিন মাযীদ! হাল মিন মাযীদ!’ এটা হল দীর্ঘ আশা।

৩. গোস্বা, রাগ। সীমাহীন গোস্বা। এত গোস্বা হয় যে, ইনসান না জানোয়ার, বুঝা যায় না। এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন-

أوصيني يا رسول الله

আল্লাহর রাসূল! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

لا تغضب

গোস্বা করবা না। সে আবারও বলল, আল্লাহর রাসূল! আমাকে আরেকটি নসীহত করুন। রাসূল সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবারো বললেন, গোস্বা ত্যাগ কর। সাহাবী তৃতীয়বার অনুরোধ করার পরও রাসূলুলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই জবাব দিলেন। তো যতবারই সাহাবী নসীহতের কথা বলেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই কথা বলেছেন-গোস্বা ছাড়, গোস্বা ছাড়।

৪. চতুর্থ রোগ মিথ্যাবলা। মিথ্যা তো এখন অভ্যাস হয়ে গেছে আমাদের। আমরা কথায় কথায় মিথ্যা বলি। মিথ্যার আশ্রয় নেই।

৫. গীবত। এটা তো এখন ঘি-ভাত হয়ে গিয়েছে। নূরিয়া মাদরাসায় আমি যে কামরায় ছিলাম সেখানে লিখে রেখেছিলাম, ‘গীবতমুক্ত এলাকা’। তা এমন জায়গায় লাগিয়ে রেখেছিলাম, যেন সবার নজরে পড়ে। এর মানে এখানে গীবত করা যাবে না। এখানে এমনভাবে বসতে হবে যে, নিজেও গীবত করতে পারবে না, আরেকজনের গীবতও শুনতে পারবে না। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বলেছেন-

ايحب احدكم ان يأكل لحم اخيه ميتا فكرهتموه

তোমরা কি মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে?

তো গীবত হল মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতো। গীবতকে যেন আমরা ঘি-ভাত মনে না করি। সকাল থেকে সন্ধ্যা সারাদিন আমার সামনে কেউ যেন একটা গীবতও করতে না পারে। আমার সামনে কেউ গীবত করলে তাকে বলবেন, আমি নিয়ত করেছি, গিবত করব না। দুআ করবেন আমি যেন গীবত না করি, কারো গিবত না শুনি। এভাবে আস্তে আস্তে গিবত দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

৬. কার্পণ্য, কৃপণতা। কারীমায় একটি পংক্তি আছে-

بخل ار بود زاهد بحر وبر

بهشتى نباشد بحكم خبر

শেখ সাদী রাহ. বলেন, বখীল, কৃপণ যত বড় দরবেশই হোক, হাদীস বলে সে জান্নাতে যেতে পারবে না বড় বড় দান-খয়রাত করার দরকার নেই। ছোট ছোট দান-খয়রাত করা যেতে পারে। তবে যেন রিয়া না আসে। আজকের জুমআর কথাই বলি, যখন নামাযের সময় পয়সা উঠানোর জন্য রুমাল নিয়ে যায় তখন দেই নাই। তখন দিলে তো রিয়া এসে যেতে পারে। রুমালওয়ালা চল যাওয়ার পর আমার ডান পাশে যে ছিল তার হাতে দিয়ে বললাম, দান বাক্সে দিয়ে আস। সামর্থ্য যা-ই থাকুক, কার্পণ্যও থাকতে পারবে না।

৭. হিংসা-হাসাদ। হিংসা কাকে বলে? কারো মধ্যে কোনো গুণ দেখে এই কামনা করা যে, এটা নষ্ট হয়ে যাক। এটা হল হিংসা। আর এই আশা করা যে, তার মধ্যে যে গুণ আছে থাকুক তবে আল্লাহ! আমাকেও তা দান কর। এটা হিংসা না, এটাকে বলা হয় গিবতা বা ঈর্ষা। গিবতা জায়েয, কিন্তু হাসাদ বা হিংসা হারাম। হাদীস শরীফে আছে, হিংসুক জান্নাতে যাবে না।

৮. রিয়া। অর্থ লোক দেখানো। মানুষে দেখুক। মানুষের সামনে নামায পড়ার সময় যদি নিয়ত করি যে, মানুষে দেখুক তাহলে এটা হবে রিয়া। এর চিকিৎসা হল, যে কাজে রিয়া আসে তা মানুষের সামনে বেশি বেশি করা তাহলে দেখা যাবে, কাজটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আর অভ্যাস হয়ে গেলে তখন আর রিয়া থাকবে না। কাজটা থাকবে, কিন্তু রিয়া থাকবে না।

৯. কিবর, অহংকার। নিজেকে বড় মনে করা। এর চিকিৎসা হল, নিজেকে সব সময় ছোট মনে করা। হাকীমুল উম্মত হযরত থানভী রাহ. কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণীর নাম নিয়ে নিয়ে বলতেন, আমি এগুলোর চেয়েও খারাপ। আরো খারাপ। কিবর যদি আসতে চায় তাহলে চিকিৎসা করতে হবে।

১০. কীনা। কীনা কাকে বলে? এটাও হিংসার কাছাকাছি। মনে মনে জ্বলতে থাকা যে, এই গুণটা তাকে কেন দেওয়া হল! সে কেন এই জিনিসের মালিক হল! এই ইলম তাকে কেন দেওয়া হল ইত্যাদির নাম হল কীনা।

এগুলো হল রুহানী রোগ। রুহানী রোগ তো অনেক আছে। তবে এই দশটা হল মূল। এই দশটা রোগের চিকিৎসা করলে আল্লাহ তাআলা অন্যান্য সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি দিবেন ইনশাআল্লাহ।

আর তখনই মানুষ ফেরেশতাদের থেকেও আগে বেড়ে যাবে।

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Right Way/ সঠিক পথ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share