![# # # অন্ধকারের ফাঁদশহরের প্রান্তে একটি পুরানো বাড়ি ছিল, যা লোকের মুখে মুখে ভয়ের স্থান হিসেবে পরিচিত। কেউ বলত, বাড়িটিতে...](https://img5.medioq.com/177/710/446620861777102.jpg)
08/10/2024
# # # অন্ধকারের ফাঁদ
শহরের প্রান্তে একটি পুরানো বাড়ি ছিল, যা লোকের মুখে মুখে ভয়ের স্থান হিসেবে পরিচিত। কেউ বলত, বাড়িটিতে রাতের বেলা অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়, কেউ আবার দাবি করত, সেখানে ভুতের বসবাস।
একদিন, তিন বন্ধু—রাহুল, নিধি এবং সুমি—বাড়িটিতে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিল। তারা নিজেদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ রেখেছিল, "যে রাতে ভয় পাবে, সে হেরে যাবে।"
রাত ১১টার দিকে তারা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল। বাড়িটির দরজা creaked করে খোলার সাথে সাথে একটি অদ্ভুত ঠাণ্ডা বাতাস তাদের গায়েবি ভাব নিয়ে আসল। তারা ভিতরে প্রবেশ করল, অন্ধকারের মধ্যে তাদের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হতে লাগল।
“এখানে কিছু নেই,” রাহুল বলল, চেষ্টা করল সাহসী দেখানোর। কিন্তু সে জানত, তার মন ভয়ে কেঁপে উঠছে।
বাড়ির ভেতর থেকে তারা একটি পুরানো টেবিলের পাশে বসে পড়ল। সুমি বলল, “আমি শুনেছি, রাত ১২টা বাজলে এখানে এক নারী আত্মা এসে হাজির হয়।”
নিধি বলল, “তুমি এটা মজার জন্য বলছো? কোনো নারী আত্মার সঙ্গে কি আমাদের দেখা হবে?”
ঠিক তখনই ঘড়ির ঘণ্টা ১২ বাজতে শুরু করল। হঠাৎ, তারা একটি অদ্ভুত শব্দ শুনতে পেল। যেন কিছুর গড়াগড়ি করার আওয়াজ। তারা তিনজনই একসঙ্গে জিজ্ঞেস করল, “এটা কি ছিল?”
সুমির চোখে আতঙ্ক। “আমি মনে করি, আমাদের এখানে থাকা উচিত হয়নি।”
তারা দ্রুত উঠে দাঁড়াল। কিন্তু হঠাৎ করে টেবিলের উপর রাখা একটি পুরানো আয়না ফেটে গিয়ে ভেঙে গেল। তিনজনেই ভয়ের জন্য চিৎকার করে উঠল।
তারা যখন পালানোর চেষ্টা করছিল, তখন একটি অন্ধকার ছায়া তাদের সামনে এসে দাঁড়াল। একটি নারীর মুখ অস্পষ্ট, কিন্তু তার চোখগুলো যেন আগুনের মতো জ্বলছিল।
“কেন এসেছো আমার ঘরে?” নারীটির কণ্ঠে এক অদ্ভুত প্রতিধ্বনি ছিল।
রাহুল ভয়ে বলল, “আমরা এখানে শুধু… শুধু ঘুরতে এসেছিলাম।”
নারীটি হাসল। “তুমি জানো, এই বাড়িতে আসা মানে মৃত্যুকে স্বীকার করা। আমি এখানে একা থাকি, আর তুমি তোমাদের সাহসের জন্য এখানে এসেছো।”
নিধি ও সুমি দ্রুত বাড়ির দরজা খুলে বের হতে লাগল। কিন্তু দরজা সেকেন্ডে বন্ধ হয়ে গেল। তারা আতঙ্কিত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরল।
“আমরা বের হতে পারছি না!” সুমি চিৎকার করল।
নারীটি ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। “তোমাদের মধ্যে একজনকে আমার সঙ্গে থাকতে হবে। অন্যরা চলে যেতে পারবে। কিন্তু সেই একজনকে আমার জন্য ফেলে যেতে হবে।”
এখন তিন বন্ধু নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করল। কে দেবে নিজেদের জীবন?
রাহুল বলল, “আমি যেতে পারি। তোমরা নিরাপদে বের হয়ে যাও।”
নিধি ও সুমি রাহুলের দিকে তাকাল। “না, এটা ঠিক নয়। আমরা সবাই চলে যাব।”
হঠাৎ, নারীর কণ্ঠস্বর আরও গম্ভীর হলো। “সময় শেষ হচ্ছে। আমাকে একজন দাও।”
একটি অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে, সুমি রাহুলের দিকে তাকিয়ে বলল, “না! আমি তোমাকে হারাতে চাই না। আমরা একসঙ্গে থাকবো!”
ঠিক তখনই, নারীর মুখে এক বিশাল হাসি। “তাহলে তোমরা সবাই এখানে রয়ে যাচ্ছো।”
অন্ধকারের মধ্যে এক ঝলক শুরু হলো। রাহুল, নিধি এবং সুমি চিৎকার করতে লাগল। কিন্তু তাদের কণ্ঠস্বর গিলে নিল অন্ধকার।
এরপর থেকে, সেই বাড়িটি আবারো নিস্তব্ধ হয়ে গেল। কিন্তু কেউ জানত না, রাতের অন্ধকারে, তিন বন্ধু নতুনভাবে ভয়ের শিকার হলো—তারা চিরকাল ওই বাড়ির অন্ধকারে বন্দি হয়ে রইল।